নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইবনে শামস

রায়হানা তনয় দা ফাইটার

আমি। কেউ না। তবে মাঝে মাঝে আমার দুষ্ট মনটা কানে কানে এসে বলে, তুমি মহাকালের উচ্ছল সমুদ্রে ভেসে বেড়ানো এক কচুরিপনা । কালের ঊর্মিমালার সাথে সাথে নাচা ছাড়া তোমার আর কোন কাজই নেই.....

রায়হানা তনয় দা ফাইটার › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুলাঙ্গারের কড়চা ( কিছু বিচ্ছিন্ন কথাবার্তা )

০৯ ই মে, ২০১৬ সকাল ১১:৪৪

কয়েকদিন ধরে মা অসুস্থ ভীষণ। কিছুদিন আগে গাড়িতে উঠার সময় পড়ে গিয়ে পায়ের পাতায় হাড্ডিতে ভাঙন ধরেছে। ভাল করে হাটতে পারেনা। ব্যাথাটা কমছেই না উনার। গতকাল ফোন দিয়েছিলাম। ওপাশ থেকে মা'র কান্নার আওয়াজ চারপাশের শোরগোল কাঁপিয়ে দিয়েছিলো। বালিশ ভিজে গেছে আমার। মা'র সাথে বাবারো আজকাল শরীর ভাল যাচ্ছেনা। বাবার মতো তাগড়া পুরুষ অল্প কদিনেই কেমন বৃদ্ধ হরিণের মতো হয়ে গেছে। নিজেকে সন্তান হিশেবে বড় বেখাপ্পা লাগছে। যারা তিল তিল করে আমাদের লালন পাল করেছে সেই তারা আজ চরম অবসাদের দিনে আমাদের ছেড়ে গ্রামে পড়ে আছে। শুধু আমাদের অপরাধে; আমাদের দোষে। আমাদের সাথে অভিমান করে আমাদের সাথে থাকতেই চাইছেননা। বড় বেশী ভালবাসি মা তোমাদের। আমি তো বাসার সবচেয়ে ছোট আমার কথা কে শুনে। কিছু বলতে গেলে শুনি "আমার চেয়ে বেশী বুঝস? বড়দের ব্যাপারে নাক গলাবিনা" ইত্যাদি কথা।
আমরা পাঁচ বোন তিন ভাই। হু, হা আর আ আমরা তিন ভাই। বড় ভায়ের বিয়ের কিছুদিন আগ থেকে কেমন জানি হয়ে গেছে বড় ভাই আর মা-বাবার মধ্যকার সম্পর্ক্য। কতো অটুট আর সুন্দর ছিলো এ বন্ধন। বড় ভাই আমাদের আদর্শ পুরুষ ছিলো। ইদানিং বাবার সাথে কোন পরামর্শ করা হয়না। জানি বাবা একটু রাগি। সবকিছু মেনে নেয়না সহজভাবে। কিন্তু আমাদের উচিৎ কিছু করার আগে বাবাকে জানানো। বাবা ঐদিন বলছিলো যে, " ছেলেরা তো এখন বড় হয়েগেছে। ওরা এখন পরিবারের ভার কাঁধে নিয়েছে। এখন আমরা চুপটি করে তাকিয়ে থাকার দিন চলে এসেছে। পরিবারের বড় ছেলের বিয়ে অথচ আমাকে জানানো হয়নায় পরিকল্পনা কি।" এসব বলতে বলতে ঠোঠের কোণের হাসির উত্তাপে চোখের জল বাষ্পায়িত করে চিরায়ত ভঙ্গিমায় হাটতে হাটকে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। বড় বেশী আঘাত করেছিলো সেসব কথা আর অভিমানী শব্দগুলো। আমার নিজের অস্তিত্বই কেমন ধ্বসে পড়ছিলো বালির প্রাসাদের মতো।

ঈশ্বরের দৃষ্টিতে না দেখে তুমি তোমার চোখে দেখলে, মা-বাবারা কখনো ভুল হয়না; তারা সর্বদা সঠিক এবং নির্ভেজাল কল্যাণকামী।

একসময় আমাদের ঘরে চুলাতে ভাত চড়াতো দূরের কথা চুলাতে আগুন দেয়ার জন্যে দিয়াশলাইয়ের কাঠি ছিলোনা। সেই বিপর্যস্ত আর করুণ দশা থেকে একমাত্র জন্মদাত্রীর চোখের জল, পরিশ্রম আর ভালবাসার বিনিময়ে আমরা মাথা গুজার ঠাই পেয়েছি। সমাজে সম্মান পেয়েছি। ভালো কাপড় পড়ছি। ভাল ভাল খাবার দিয়ে উদরফূর্তি করছি। সেই জননী আজ ফোনের ওপাশ থেকে কাঁদতে কাঁদতে বলে যায়, " তোমরা যদি আমার কথামতো চলতে না পারো তো তোমরা থাকো ওখানে। তোমারদের তো কোন অভাব নেই। ভালো বেতনের চাকরি আছে । ভালবাসার মানুষ আছে। পাকা দালানের ঘর আছে। থাকো বাবা তোমরা ওখানে। আমরা বরং এখানেই থাকি। আমাদের কিচ্ছুর দরকার নেই। ঈশ্বর আছেন আমাদের সাথে।" কথা বলেই লাইন কেটে গেলো। আমার কথাটা শুনলোইনা? - মা, আমারতো কিচ্ছু চাইনা। তোমার ভালবাসা আর আদর চাই। তোমার শাসন চাই। তোমার বকা চাই। আর কিচ্ছু চাইনা। একজন কথা দিয়েছে আমাদের সংসারে মা' ই সব। বাকি সবকিছু গৌণ। মা আমাদের সংসারের মেটা সাবজেক্ট। সে আমাকে কথা দিয়েছে যদি মাকে শান্তি আর সুখে রাখতে না পারি তো খোদার গজব পরুক আমাদের উপর। মা সত্যি বলছি আমি তোমার সাথে থাকবো। আর কোথাও থাকবোনা। কারো সাথে না। আর তোমার কথার বিপরীতে চলবেনা তোমার খোকা। প্লীজ মা। তুমি আমার সাথে থেকো। - আমার সব কথা শুণ্যে মিলিয়ে গেলো। কেউ শুনলনা। আমার গর্ভধারিণী মাও শুনলোনা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.