নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রংধনু প্রকৃতি

শাবা

হাসতে হাসতে বেদনা ভোলা চাই.... আমি হেঁটে বেড়াই সীমাবদ্ধ পৃথিবী ফুরিয়ে যায়। সত্যের ভূবনে সবই সত্য শুধু মিথ্যা আমার অস্তিত্ব। * শামীমুল বারী নামে আমার অন্য একটি ব্লগ রয়েছে।

শাবা › বিস্তারিত পোস্টঃ

৮ম পর্ব : আসুন শব্দ বানাই

২৫ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:৩২

আপনি লেখালেখি করেন। আপনি একজন শব্দ কারিগর। শব্দের চাষ করাই আপনার কাজ। শব্দ বুনুন করতে গিয়ে মাঝে মাঝে নতুন শব্দের প্রয়োজন হয়। বিভিন্ন বিদেশি শব্দ আপনার সামনে চলে আসে, কিন্তু তার বাংলা শব্দ আপনি জানেন না। অভিধানেও পেলেন না। তখন আর কি করা? শব্দটি বানিয়ে ফেলুন। ইচ্ছা করলে বাংলা শব্দেরও কিছু প্রতিশব্দ বানিয়ে ফেলুন। নতুন নতুন যুৎসই চমৎকার শব্দ প্রয়োগে আপনার লেখা হয়ে ওঠবে সুখপাঠ্য। আসুন শব্দ বানানোর কলাকৌশল জেনে নেই :



পৃথিবীর অন্যান্য ভাষার মতো বাংলা ভাষায়ও কতকগুলো সুনির্দিষ্ট নিয়মের মাধ্যমে নতুন নতুন শব্দ তৈরি হয়। এই শব্দ তৈরির প্রক্রিয়াও যথেষ্ট বৈচিত্র্যময়। বৈচিত্র্যময় শব্দ তৈরির এই প্রক্রিয়াসমূহকেই সাধারণভাবে শব্দ গঠন বলা যেতে পারে। শব্দ গঠনের উল্লেখযোগ্য প্রক্রিয়াগুলো হলো—সন্ধি, সমাস, প্রত্যয়, উপসর্গ, বিভক্তি, বিদেশি শব্দের বিকৃত উচ্চারণ, অনুবাদ, ভাবানুবাদ ইত্যাদি।



শব্দের গঠন অনুসারে সকল শব্দকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। এই ভাগ দুটি হলো মৌলিক শব্দ ও সাধিত শব্দ।



১. মৌলিক শব্দ :

যে সব শব্দকে বিশ্লেষণ করলে আর কোন শব্দ পাওয়া যায় না, তাকে মৌলিক শব্দ বলে। অর্থাৎ, যে সব শব্দকে ভাঙলে আর কোন অর্থসঙ্গতিপূর্ণ শব্দ পাওয়া যায় না, তাকে মৌলিক শব্দ বলে।এই জাতীয় শব্দ বিভাজিত করলে, ওই বিভাজিত অংশগুলো পৃথক কোনো অর্থ প্রকাশ করে না। এই শব্দের অপরাপর নামগুলো হলো— সিদ্ধ শব্দ, স্বয়ংসিদ্ধ শব্দ। যেমন- গোলাপ, নাক, লাল, তিন, মা, সবুজ ইত্যাদি।



এই শব্দগুলোকে আর ভাঙা বা বিশ্লেষণ করা যায় না। আর যদি ভেঙে নতুন শব্দ পাওয়াও যায়, তার সঙ্গে শব্দটির কোন অর্থসঙ্গতি থাকে না। যেমন, উদাহরণের গোলাপ শব্দটি ভাঙলে গোল শব্দটি পাওয়া যায়। কিন্তু গোলাপ শব্দটি গোল শব্দ থেকে গঠিত হয় নি। এই দুটি শব্দের মাঝে কোন অর্থসঙ্গতিও নেই। তেমনি নাক ভেঙে না বানানো গেলেও নাক না থেকে আসে নি। অর্থাৎ, এই শব্দগুলোই মৌলিক শব্দ। ‘গোলাপ’ শব্দটির সঙ্গে ‘ই’ প্রত্যয় যোগ করে আমরা ‘গোলাপী’ শব্দটি বানাতে পারি। তেমনি ‘নাক’-র সঙ্গে ‘ফুল’ শব্দটি যোগ করে আমরা ‘নাকফুল’ শব্দটি গঠন করতে পারি।



২. সাধিত শব্দ:

দুই বা ততোধিক মৌলিক শব্দ মিশ্রিত হয়ে বা ব্যাকরণগত উপাদন (প্রত্যয়, উপসর্গ) যুক্ত হয়ে যখন কোন নতুন শব্দ গঠিত হয়, তখন তাকে সাধিত শব্দ বলা হয়। অর্থাৎ যে সব শব্দকে বিশ্লেষণ করলে অর্থসঙ্গতিপূর্ণ ভিন্ন একটি শব্দ পাওয়া যায়, তাদেরকে সাধিত শব্দ বলে। মূলত, মৌলিক শব্দ থেকেই বিভিন্ন ব্যাকরণসিদ্ধ প্রক্রিয়ায় সাধিত শব্দ গঠিত হয়।

মৌলিক শব্দ সমাসবদ্ধ হয়ে কিংবা প্রত্যয় বা উপসর্গ যুক্ত হয়ে সাধিত শব্দ গঠিত হয়। যেমন-

• সমাসবদ্ধ হয়ে- চাঁদের মত মুখ = চাঁদমুখ

• প্রত্যয় সাধিত- ডুব+উরি = ডুবুরি

• উপসর্গযোগে- প্র+শাসন = প্রশাসন



গঠন প্রকৃতি অনুসারে সাধিত শব্দকে ৪টি ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন—



১. সমাসজাত শব্দ : সংস্কৃত এবং বাংলা ব্যাকরণের বিধি অনুসারে, দুইটি শব্দের ভিতর যখন একটি ব্যাস বাক্য দ্বারা অর্থপূর্ণ সংযোগ ঘটে এবং একটি ভিন্নতর অর্থবোধক শব্দ গঠন করে, তখন তা সমাসবদ্ধ পদ বলা হয়। এই সমাসের বিধি দ্বারা উৎপন্ন শব্দ হিসেবে সমাসজাত শব্দ বলা হয়। যেমন— ’গুরুর কন্যা’ ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাসে হয় গুরুকন্যা। এই গুরুকন্য হলো সমাসজাত শব্দ।



২. সন্ধিজাত : সংস্কৃত এবং বাংলা ব্যাকরণের বিধি অনুসারে, দুটি শব্দের ভিতরে মিলন ঘটে নতুন শব্দ গঠিত হয়। এক্ষেত্রে মিলন ঘটে পূর্বপদের শেষ বর্ণ এবং পরপদের প্রথম বর্ণের মধ্যে। যেমন : সিংহ +আসন=সিংহাসন। এখানে সিংহাসন সন্ধিজাত শব্দ। অনেক সময়ই সন্ধিজাত শব্দকে সমাস দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায়।



৩. প্রত্যয়জাত : কোনো শব্দের সাথে যখন কোনো প্রত্যয় যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ তৈরি করে, তখন তাকে প্রত্যয়জাত শব্দ বলা হয়। যেমন- কপট +য (ষ্যঞ্)=কাপট্য । প্রত্যয় শব্দের আগে বা পরে বসে। শব্দের পরে প্রত্যয় থাকলে তাকে তদ্ধিত প্রত্যয় বলে। কিন্তু শব্দের আগে বসলে তা উপসর্গ হিসেবে বিবেচিত হয়। আবার কিছু শব্দের আগে পরে প্রত্যয় বসেও নতুন শব্দ তৈরি করে। এই বিচারে প্রত্যয়জাত শব্দকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন—

i) প্রত্যয়জাত : কোনো শব্দের শেষে যখন কোনো প্রত্যয় যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ তৈরি করে, তখন তাকে প্রত্যয়জাত শব্দ বলা হয়। যেমন- কপট +য (ষ্যঞ্)=কাপট্য ।

ii) উপসর্গজাত : কোনো শব্দের পূর্বে কোনো উপসর্গ যুক্ত হয়ে যখন নতুন শব্দ তৈরি হয়। যেমন- উপ+গ্রহ= উপগ্রহ

iii) প্রত্যয়-উপসর্গজাত : কোনো শব্দের পূর্বে এবং পরে কোনো উপসর্গ ও প্রত্যয় দ্বারা সাধিত হয়ে যখন নতুন শব্দ তৈরি হয়। যেমন- মানব+ঈয় (ছ)=মানবীয়। এই শব্দের পূর্বে অ উপসর্গ যুক্ত হয় সৃষ্ট শব্দ হলো ‘অমানবীয়’।



৪. মুণ্ডমাল (Abbreviation): একাধিক শব্দ নিয়ে গঠিত কোনো শব্দগুচ্ছের প্রথম বর্ণ বা ধ্বনি দিয়ে গঠিত শব্দ তৈরি হলে তাকে মুণ্ডমাল শব্দ বলা হয়। যেমন- বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা = বাসস, বঙ্গ বিজয়ী তারকা= ববিতা ইত্যাদি।



এছাড়া আরো কতগুলো উপায়ে বাংলা শব্দ তৈরি হতে পারে। যেমন,



দ্বিরুক্ত শব্দ বা দ্বিরাবৃত্তির মাধ্যমে: দ্বিরুক্ত শব্দ বা দ্বিরাবৃত্তির মাধ্যমে বাংলায় প্রচুর শব্দ তৈরি হয়। যেমন: ঠনঠন, শনশন, মোটামুটি, তাড়াতাড়ি ইত্যাদি।



বিদেশি শব্দের উচ্চারণ বিকৃতি: বিদেশি শব্দের উচ্চারণ বিকৃতি ঘটেও বেশ কিছু শব্দ বাংলা ভাষায় তৈরি হয়েছে। যেমন:টিউবয়েল (Tubewell) টিপকল, আপিস (Office) ইত্যাদি।



অনুবাদের মাধ্যমে: বিদেশি শব্দের অনুবাদের মাধ্যমেও বাংলা ভাষায় অনেক শব্দ হয়েছে।যেমন: Lions share=সিংহভাগ, Son of soil= ভূমিপুত্র ইত্যাদি।



আবার শব্দ গঠন প্রক্রিয়াকে অর্থগতভাবে ভাগ করা যায়। তাই শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ও ব্যবহারিক অর্থ বলতে কী বুঝায় তা জানা যাক।



ব্যুৎপত্তিগত অর্থ: কোন শব্দ যে শব্দ বা শব্দমূল হতে গঠিত হয়েছে তার অর্থ দিয়ে শব্দটির যে অর্থ ধারণ করার কথা, তাকে শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ বলে। অর্থাৎ, উৎপত্তিগত ভাবে শব্দটির যে অর্থ দাঁড়ায়, তাকেই ব্যুৎপত্তিগত অর্থ বলে। যেমন, ‘মধুর’ শব্দটি গঠিত হয়েছে ‘মধু+র’ অর্থাৎ ‘মধু’ শব্দ হতে। তাই ‘মধুর’ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হওয়া উচিত মধু সংশ্লিষ্ট কোন অর্থ। আর ‘মধুর’ শব্দের অর্থ ‘মধুর মত মিষ্টি গুণযুক্ত’। অর্থাৎ, ‘মধুর’ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ বজায় থেকেছে।



আবার, ‘হস্তী’ শব্দটি গঠিত হয়েছে ‘হস্ত+ইন’ অর্থাৎ ‘হস্ত’ শব্দ হতে। তাই ‘হস্তী’ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হওয়া উচিত হস্ত বা হাত সংশ্লিষ্ট। কিন্তু ‘হস্তী’ বলতে একটি বিশেষ পশুকে বোঝায়, যার আদপে কোন হাত-ই নেই। অর্থাৎ, শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ বজায় থাকে নি।



ব্যবহারিক অর্থ: কোন শব্দ প্রকৃতঅর্থে যে অর্থে ব্যবহৃত হয়, বা যে অর্থ প্রকাশ করে, তাকে সেই শব্দের ব্যবহারিক অর্থ বলে। যেমন, উপরের উদাহরণগুলোতে, ‘মধুর’ শব্দটির ব্যবহারিক অর্থ ‘মধুর মত মিষ্টি গুণযুক্ত’, আর ‘হস্তী’র ব্যবহারিক অর্থ ‘একটি বিশেষ পশু’।



অর্থগত ভাবে শব্দসমূহকে ৪ ভাগে ভাগ করা যায় -



১. যৌগিক শব্দ : যে সব শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ও ব্যবহারিক অর্থ একই, তাদের যৌগিক শব্দ বলে। অর্থাৎ, শব্দগঠনের প্রক্রিয়ায় যাদের অর্থ পরিবর্তিত হয় না, তাদেরকে যৌগিক শব্দ বলে। যেমন-



মূল শব্দ শব্দ গঠন (অর্থ) অর্থ

গায়ক > গৈ+অক > যে গান করে

কর্তব্য > কৃ+তব্য > যা করা উচিত

বাবুয়ানা > বাবু+আনা> বাবুর ভাব

মধুর > মধু+র > মধুর মত মিষ্টি গুণযুক্ত

দৌহিত্র > দুহিতা+ষ্ণ্য (দুহিতা= মেয়ে, ষ্ণ্য= পুত্র)> কন্যার মত, নাতি

চিকামারা > চিকা+মারা > দেওয়ালের লিখন



২. রূঢ় বা রূঢ়ি শব্দ : প্রত্যয় বা উপসর্গ যোগে গঠিত যে সব শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ও ব্যবহারিক অর্থ আলাদা হয়, তাদেরকে রূঢ় বা রূঢ়ি শব্দ বলে। যেমন-



মূল শব্দ শব্দ গঠন ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ব্যবহারিক/ মূল অর্থ

হস্তী > হস্ত+ইন > হাত আছে যার > একটি বিশেষ প্রাণী, হাতি

গবেষণা> গো+এষণা > গরু খোঁজা > ব্যাপক অধ্যয়ন ও পর্যালোচনা

বাঁশি > বাঁশ+ইন > বাঁশ দিয়ে তৈরি > বাঁশের তৈরি বিশেষ বাদ্যযন্ত্র

তৈল > তিল+ষ্ণ্য> তিল থেকে তৈরি স্নেহ পদার্থ> উদ্ভিদ থেকে তৈরি যে কোন স্নেহ পদার্থ

প্রবীণ > প্র+বীণা > প্রকৃষ্টরূপে বীণা বাজায় যিনি> অভিজ্ঞ বয়স্ক ব্যক্তি

সন্দেশ > সম+দেশ > সংবাদ > মিষ্টান্ন বিশেষ



৩. যোগরূঢ় শব্দ : সমাস নিষ্পন্ন যে সব শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ আর ব্যবহারিক অর্থ আলাদা হয়, তাদেরকে যোগরূঢ় শব্দ বলে। যেমন-



মূল শব্দ
শব্দ গঠন ব্যবহারিক অর্থ

পঙ্কজ > পঙ্কে জন্মে যা > পদ্মফুল

রাজপুত > রাজার পুত্র > একটি জাতি বিশেষ, ভারতের একটি জাতি

মহাযাত্রা > মহাসমারোহে যাত্রা > মৃত্যু

জলধি > জল ধারণ করে যা /এমন > সাগর



৪. নবসৃষ্ট বা পরিশব্দ বা পারিভাষিক শব্দ : বিভিন্ন বিদেশি শব্দের অনুকরণে ভাবানুবাদমূলক যেসব প্রতিশব্দ সৃষ্টি করা হয়েছে, সেগুলোকে নবসৃষ্ট বা পরিশব্দ বা পারিভাষিক শব্দ বলে। মূলত প্রচলিত বিদেশি শব্দেরই এ রকম পারিভাষিক শব্দ তৈরি করা হয়েছে।

যেমন-

পারিভাষিক শব্দ মূল বিদেশি শব্দ পারিভাষিক শব্দ মূল বিদেশি শব্দ

অম্লজান > Oxygen. সচিব > Secretary

উদযান > Hydrogen . স্নাতক > Graduate

নথি > File. স্নাতকোত্তর > Post Graduate

প্রশিক্ষণ > Training. সমাপ্তি > Final

ব্যবস্থাপক > Manager. সাময়িকী > Periodical

বেতার > Radio. সমীকরণ > Equation

মহাব্যবস্থাপক > General Manager.





শব্দের গঠন প্রক্রিয়া আলোচনা করে আমরা দেখতে পেয়েছি, একটি শব্দ তৈরি হয় বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। অনেক সময় শব্দটির আভ্যন্তরীণ অর্থ হারিয়ে নতুন অর্থ ধারণ করে। এ শব্দ তৈরিতে বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে প্রত্যয়, উপসর্গ, বিভক্তি, সন্ধি, সমাস প্রভৃতি আনুসাঙ্গিক উপাদান। অনেক বড় বড় কবি-সাহিত্যিক মূল শব্দের সাথে প্রত্যয়, উপসর্গ, বিভক্তি যোগ করে বা সন্ধি ও সমাসের মাধ্যমে কয়েকটি শব্দকে এক করে সুন্দর সুন্দর নিত্য নতুন শব্দ তৈরি করে থাকেন। তাইতো তাদের সাহিত্য হয়ে থাকে উচ্চ মানের।



পরিভাষা-প্রতিশব্দ আলোচনায় আমি নতুন শব্দ বানানোর কথা বলেছিলাম। এ আলোচনায় আমি দেখিয়েছি কীভাবে একটি শব্দ তৈরি হয়, যাতে করে সহজেই আমরা নতুন শব্দ বানাতে পারি। আসুন আমরাও এভাবে সুন্দর সুন্দর শব্দ তৈরি করি।



কৈফিয়ত

এবারও ২য় সিরিজ শুরু করা হলো না। বিশ্বকাপে আক্রান্ত সারাদেশ। গুরুগম্ভীর অথচ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় পাঠকদের মন বসবে না, অনুশীলনী যথাযথভাবে হয়ে ওঠবে না। আশা করি, বিশ্বকাপের পরেই এ সিরিজ শরু করবো। ইচ্ছা আছে, প্রতি সপ্তাহে একটি করে পোস্ট দেওয়ার। সে সিরিজের নাম দেওয়ার কথা ছিল 'বানান ক্লাস', কিন্তু এখন আরো দুটো নাম চিন্তায় এসেছে, 'বানানপাঠ' বা 'বানান আসর'। পাঠকরাই পছন্দ করবেন, কোনটি ভাল হবে। এতে প্রত্যেক পর্বে বানানের কিছু নিয়ম আলোচনা করবো, শেষে অনুশীলনী থাকবে। এভাবে চর্চা করলে আশা করা যায়, বাংলা বানান সবার কাছে সহজ হয়ে যাবে এবং শুদ্ধ বানানে বাংলা লেখতে সবাই অভ্যস্ত হয়ে পড়বে। আশা করবো, সামু কর্তৃপক্ষ এ লেখাগুলো স্টিকি করবে।





পূর্বের পর্বগুলো:

১ম পর্ব - আমরা বাংলা বানান কতটুকু শুদ্ধ করে লেখি? View this link

২য় পর্ব - বাংলা বানান : আসুন এক ছাতার নিচে View this link

৩য় পর্ব- বাংলা বানানে যত বিভ্রান্তি View this link

৪র্থ পর্ব : বাংলার শব্দভাণ্ডার View this link

৫ম পর্ব : বিকৃতির সয়লাবে আমার মাতৃভাষা View this link

৬ষ্ঠ পর্ব : বাংলা আমার অহঙ্কার View this link

৭ম পর্ব - ভাষার ভূষণ : পরিভাষা ও প্রতিশব্দ View this link



তথ্যসূত্র :

[১] সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়; ভাষা-প্রকাশ বাঙ্গালা ব্যাকরণ; রূপা; বৈশাখ ১৩৯৬

[২]হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়; বঙ্গীয় শব্দকোষ

[৩] ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ; বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত; মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, মার্চ ২০০৬

[৪] ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ; বাঙ্গালা ব্যাকরণ; মাওলা ব্রাদার্স; আগষ্ট ২০০৩

[৫] ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ; বাংলা সাহিত্যের কথা; মাওলা ব্রাদার্স;

[৬] ডঃ রামেশ্বর শ; সাধারণ ভাষা বিজ্ঞান ও বাংলা ভাষা

[৭] সুবলচন্দ্র মিত্র; সরল বাঙ্গালা অভিধান

[৮] সুকুমার সেন; ভাষার ইতিবৃ্ত্ত; আনন্দ পাবলিশারস্ প্রাইভেট লিমিটেড; নভেম্বর ১৯৯৪

[৯] বাংলা একাডেমী ব্যাবহারিক বাংলা অভিধান

[১০] জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস; বাঙ্গালা ভাষার অভিধান



মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৮

ব্লগার রানা বলেছেন: নতুন শব্দের উদাহরণ দেন কয়েকটা

২৫ শে জুন, ২০১৪ রাত ৯:৪৩

শাবা বলেছেন: রবীন্দ্রনাথের নির্মিত কয়েকটি নতুন শব্দ হচ্ছে প্রতিবেদন, অপহরণ, অভিযোজন, অনীহা, প্রতিলিপি, জনপ্রিয়, যথাযথ, মহাকাশ ইত্যাদি।
হাল আমলে মুঠোফোন, উড়ালসেতু, নীড়পাতা ইত্যাদি নতুন নতুন শব্দ তৈরি হয়েছে এবং হচ্ছে।
এ ব্যাপারে এ সিরিজের ৭ম পর্ব পড়ার অনুরোধ করছি।
মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

২| ২৬ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:১০

জাফরুল মবীন বলেছেন: বরাবরের মতই আপনার পোষ্ট ফলো করছি নিজ স্বার্থে।

পোষ্টে+++++++

২৬ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:০১

শাবা বলেছেন: উৎসাহ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

৩| ২৭ শে জুন, ২০১৪ রাত ১০:২১

ভারসাম্য বলেছেন: এই লেখা পড়বার পর বিক্ষিপ্তভাবে চিন্তা করছিলাম দুই-একটা নতুন শব্দ বানাবার ব্যাপারে। লাভ হয় নি। তবে এবারকার লেখা খানি অনেক বেশি তত্ব সম্পন্ন। তাত্বিক হলেও বোরিং ( ?) লাগে নি।

+++

২৮ শে জুন, ২০১৪ সকাল ১১:৪৫

শাবা বলেছেন: চেষ্টায় কেন ক্ষান্ত হলেন? আমাদেরকে বলেন, আমরাও চেষ্টা করি। রবীন্দ্রনাথ ৯১৩টি শব্দ বানিয়েছিলেন, কিন্তু অল্প কয়েকটি টিকেছিল মাত্র।

প্রবন্ধ সাধারণত বোরিং হয়ে থাকে, প্রবন্ধ লেখার ব্যর্থতা এখানেই।পড়তে পড়তে পাঠকের ঘুম এসে যায়। প্রবন্ধের পাঠকও কম, জনপ্রিয়তাও কম। আমরা তো আর মুজতবা আলীর মত লেখক নই যে সবাই গল্প পাঠের মতই প্রবন্ধ পড়বে।

মন্তব্য পেয়ে খুশি হয়েছি। আপনার লেখাতে আমি একটা কমেন্ট করেছিলাম, মনে হয় আপনার দৃষ্টিতে আসে নি।

সতত শুভেচ্ছা।

৪| ২৮ শে জুন, ২০১৪ রাত ৩:২৬

ডি মুন বলেছেন: খুবই দারুণ পোস্ট।
প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম।

শুভেচ্ছা জানবেন।

২৮ শে জুন, ২০১৪ সকাল ১১:৫২

শাবা বলেছেন: ধন্যবাদ ডি মুন।

মন্তব্য পেয়ে ভাল লাগলো।

ভাল থাকুন প্রতিনিয়ত।

৫| ২৮ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ২:২৫

ভারসাম্য বলেছেন: দৃষ্টি এড়ায়নি ( আমি 'নি' এর আগে স্পেইস না দেবার পক্ষে :D ) । তবে শুধু ধন্যবাদ আর শুভকামনা জানিয়েই দায় সারতে চাই না। এদিকে সময়ও হয়ে ওঠে না ঠিক মত, তাই রেখে দিয়েছি ওভাবেই। :#>

তার চেয়ে আপনার এখানে খেজুরে ( এই শব্দটা কী ভাবে যে তৈরী হয়েছিল! তবে টিকে গিয়েছে মনে হয়) আলাপ করলেও, সেটার প্রভাবে আরো দুয়েকজন এখানে ঘুরে গেলেও যেতে পারে, যা লেখার গুরুত্ব বিচারে অধিকতর ফলদায়ক হবে মনে করছি। :)

২৮ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:৪১

শাবা বলেছেন: আমি আসলে আলাদাভাবে ‌'নি' লেখার পক্ষে। নি শব্দটি সাধু নাই শব্দের চলিত রূপ। নি যারা একত্রে রাখার পক্ষে তাদের (থোরা) যুক্তি আমার প্রথম পর্বে দেখিয়েছিলাম।

কিছু কিছু শব্দ ভাষায় ধীরে ধীরে প্রবেশ করে। যুবসমাজ ব্যাঙ্গার্থে এসব শব্দ ব্যবহার করে, পরে আম জনতার ব্যবহারে আসে। তখন অভিধানে ওগুলো অশিষ্ট বা slang শব্দ হিসেবে স্থান পায়। বহুল ব্যবহারের কারণে পরবর্তীতে অভিধান থেকে অশিষ্ট কথাটা উঠে যায়। যদিও বাংলা অভিধানে সংস্কারের অভাবে উঠে যাওয়াটা বিরল, কিন্তু ইংরেজি অভিধানে সব সময় এটা ঘটে থাকে। এত কথা বললাম খেজুরে শব্দটার কারণে। এটা খাজুরে আলাপ হিসেবেও ব্যবহার হয়ে থাকে, এটা অভিধানে স্থান পেল কি না আমার জানা নেই।

এ পোস্টে পুন আগমনের কারণে আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।

৬| ২৮ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ২:৩২

ডি মুন বলেছেন: আপনার এমন পরিশ্রমী পোস্ট সত্যিই ভীষণ আনন্দ দেয়।
এমন পোস্ট দিয়ে আমাদেরকে সমৃদ্ধ করে চলুন নিরন্তর।

ভালো থাকুন সর্বদা। শুভকামনা।

২৮ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৬

শাবা বলেছেন: ধন্যবাদ ডি মুন।

বানান আসরে যাওয়ার আগে আরো এক-দুটি দেয়ার ইচ্ছা আছে। আসলে সব সময় এ ধরনের লেখার জন্য যে মুড থাকার সেটা না থাকার কারণে দেরিতে পোস্ট দেয়া হচ্ছে।

৭| ২৮ শে জুন, ২০১৪ রাত ৮:৪৪

ডি মুন বলেছেন: আপনার সাথে পরিচিত হওয়ার কি কোনো সুযোগ আমাকে দেওয়া যায়?
ফেসবুক লিঙ্ক, ইমেইল অথবা মুঠোফোন নাম্বার, সেকোনো কিছু

বাংলা ভাষাকে ভালোবাসেন এমন মানুষদের আমি ভীষণ শ্রদ্ধা করি। তাদের সাথে পরিচিত হতে পারলে আনন্দিত হই।

ভালো থাকুন সর্বদা।

২৯ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৭

শাবা বলেছেন: হ্যাঁ, অবশ্যই পরিচিত হওয়া যাবে। আমার ইমেইল এড্রেস-
[email protected]

সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনায়--

৮| ০৬ ই জুলাই, ২০১৪ ভোর ৪:৪৭

জাফরুল মবীন বলেছেন: “শব্দটি বানিয়ে ফেলুন। ইচ্ছা করলে বাংলা শব্দেরও কিছু প্রতিশব্দ বানিয়ে ফেলুন। নতুন নতুন যুৎসই চমৎকার শব্দ প্রয়োগে আপনার লেখা হয়ে ওঠবে সুখপাঠ্য।”- আমি যে বিষয়গুলো নিয়ে লেখালেখি করি তা অনেকটাই অনুবাদ নির্ভর।প্রায়শঃ সঠিক অর্থের মানানসই শব্দ খুঁজে পেতে কষ্ট হয়।এখন থেকে আপনার এই পরামর্শটা কাজে লাগাতে চেষ্টা করবো।ধন্যবাদ অাপনাকে।

০৭ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:৪৮

শাবা বলেছেন: আশা করি আপনি সুন্দর সুন্দর শব্দের জন্ম দিতে পারবেন।

৯| ০৭ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:০০

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
আপনার পোস্ট দেখেছি আগেই কিন্তু যতটুকু ধৈর্য্য ও সময় প্রয়োজন তা বর্তমানে অপ্রতুল ৷ আপনার চেষ্টাকে শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন জানাই ৷ যেহেতু অনুসরণে আছেন তাই আবারো আসব সময় করে সাথে কিছু বলাও ইচ্ছা আছে ৷


মঙ্গল কামনা সব সময় ৷

০৭ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৪২

শাবা বলেছেন: ধন্যবাদ জাহাঙ্গীর আলম। আপনার আন্তরিকতায় সত্যি আমি মুগ্ধ।
আপনাদের মত এমন সুহৃদ ব্লগারদের প্রচেষ্টা, সতর্ক পদচারণা এবং জোড় সমর্থনে বিশ্বায়ণের ঠেলায় হুমকির মুখে পতিত আমার মাতৃভাষা ঠিকই টিকে যাবে অনন্তকালের জন্য।

১০| ০৭ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:০২

আমি স্বর্নলতা বলেছেন: খুব ভালো পোস্ট।

বানানপাঠ' বা 'বানান আসর' দুটি নামই কিন্তু সুন্দর।

০৭ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৪

শাবা বলেছেন: হ্যাঁ, চিন্তা করছি ‌'বানান আসর'-ই নাম দিব।

ধন্যবাদ স্বর্নলতা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.