নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমালোচনা

জামিউল আলম

সমালোচনা

জামিউল আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসার গল্প (নাবিল-চৈতী):পর্ব-১

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ২:৪৫

প্রায় কুড়ি মিনিটের মত হয়ে গেলো নাবিলকে ফোন দিচ্ছে চৈতী। রাতের ১০-১১ টার মধ্যে কখনই ঘুমায় না নাবিল। হয়তো টিভির সামনে বসে আছে। এই সময়টাতে মোবাইল ওর হাতের কাছেই থাকার কথা।
চৈতী বিরক্ত হয়ে গেছে। আজ রাতের মত ওকে ফোন দেয়া শেষ। একদিকে রাগ অন্যদিকে বিষন্ন মন নিয়ে বিছানায় যাবার আগে শেষ একবার চেষ্টা করতে গেলো-
এবার আর অপেক্ষা করতে হলো না, ওপাশ থেকে-
-সরি, আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
-ফোনটা ধরলে কেনো? আর কয়েকবার দিতাম। হাফ সেঞ্চুরিটা করতে দিলে নাহ।
-ওহ, আচ্ছা। ঠিক আছে।
-ঠিক আছে মানে? কেটে দিবা?
-তুমিই তো বললে!
-আচ্ছা, তুমি আমাকে কেনো এতো ইগনোর করো? এইরকম গা ছাড়া ভাব নিয়ে কথা বলো কেনো?
-গা ছাড়া ভাবের কি আছে, তুমি চাইলে তাই বললাম।
-তুমি কি শুধু আমার সাথেই এরকম করে কথা বলো নাকি সবার সাথেই?
-ভালো লাগছে না তর্ক করতে। আমার শরীর খারাপ। ঘুমাবো আমি। পরে কথা হবে। গুড নাইট।
-ওয়েট, ওয়েট......কি হয়েছে? শরীর খারাপ কেনো?
-জানি না, বললাম তো পরে কথা হবে!
-আচ্ছা, ঠিক আছে। ঘুমাও, পরে কথা বলতে হবে নাহ। আমার নাইটও গুড হতে হবে নাহ।
লাইন কাটার শব্দ।

চৈতী এখনও ঘুমায় নি। ওর বিশ্বাস নারীর মনের রাগ দিয়ে ভালোবাসা আদায় করা যায়। তাই নাবিল এর অভিমান ভাঙ্গানো ফোনের অপেক্ষায় জেগে রইলো।
কিন্তু অভিমানটাও ইদানিং ঠিকঠাক মত কাজ করছে নাহ।
ছেলেটা কিছুই বোঝে না নাকি? এর সাথে সারাটা জীবন ঘর করবো কিভাবে?
ওর শরীর বোধহয় খুব খারাপ। অথবা অফিসে আজ কাজের প্রেসার ছিলো হয়তো। তানাহলে এরকম তো করার কথা নাহ। চৈতী নিজেই নিজেকে সান্তনা দিলো।

রাত ২ টা বেজে গেছে।
চৈতী আর অপেক্ষা না করে ঠিক করলো নিজেই একবার ফোন দিয়ে দেখি কি অবস্থা।

ফোনটা দিতেই ওয়েটিং।
এতো রাতে!
আবার ফোন দিলো চৈতী।
এখনও ওয়েটিং। কার সাথে কথা বলছে এতো রাতে?
অধৈর্য্য হয়ে পড়লো চৈতী। যতক্ষণ না ফোন ধরছে ততক্ষণ ফোন দিতেই থাকলো।
অনেকক্ষণ এরকম চলার পর-
-দেখছো তো কথা বলছি? এতবার ফোন দেয়ার কি দরকার ছিলো?
-এতো রাতে কার সাথে কথা বলছিলে? আমি এতগুলো ফোন দিলাম দেখেও রিসিভ করার দরকার মনে করলে নাহ! এতো কি ইম্পরটেন্ট কথা বলছিলে?
-পরে বলবো। আজ প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে।
-পরে নাহ, কার সাথে কথা বলছিলে সেটা বলতে এতটা অপেক্ষার কিছুই নেই। কে ছিলো?
-রুপা।
-কোন রুপা?
-তুমি ভালো করেই চেনো।
-ঐ যে তোমার বাসার পাশের মেয়েটা? ভার্সিটিতে থাকতে যাকে নিয়ে পুরো ঢাকা চড়ে বেরাতে?
-প্লিজ, ব্যাঙ্গ করো নাহ।
-ব্যাঙ্গ করছি নাহ। ওর সাথে এতদিন পর কিসের কথা? কে ফোন দিয়েছে, তুমি নাকি ও?
-ও দিয়েছে।
-কি বলেছে?
-তুমি তো সবকিছুই জানো।
-সবকিছু মানে!!
-দেখো, তোমাকে তো সবই বলেছিলাম। আমাদের অনেকদিনের রিলেশন ছিলো। কিছুটা ভুল বোঝাবুঝির কারনে আমরা একত্রে থাকতে পারি নি।
-ও আচ্ছা, তাই! তো আজ রাত দুইটা বাজে বুঝি ভুল শুধরানোর কথা বলছিলে দুই জনে মিলে!
-আসলে তা নাহ। ও এখনও আমাকে ভুলতে পারে নি। জিগ্যেস করলো কেমন আছি, ওকে মনে আছে কি না।
-তো! মনে আছে?
-মনে না থাকার কি হলো। আফটারঅল আমার জীবনের প্রথম ভালোবাসা।

রুপাকে চৈতী চেনে। নাবিলের বাসার পাশেই বাসা। নাবিলের মুখেই শুনেছে একসময় নাবিলের ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু ছিলো মেয়েটা। ওর সাথে নাবিলের যোগাযোগ ছিন্ন হয়েছে বছর দুয়েকের মত হবে হয়তো। আজ হঠাৎ ওর বিষয়টা কেনো ফিরে এলো সেটাই বুঝতে পারছে নাহ।
চৈতী আজ খুব সাহস নিয়ে কথা বলছে। ওর কাছে কেনো জেনো মনে হচ্ছে আজকের রাতটা অনেক বড়। কাল থেকে প্রতিটা রাতই বোধহয় এরকম দীর্ঘ হবে।
নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো। তবে অনেক কষ্ট করে হলেও গলার সরটা স্বাভাবিক রাখলো।
-তুমি কি সরাসরি বলবে কি বলতে চাও।
-কোন ব্যাপারে?
-তোমার ভুল শুধরানোর ব্যাপারে।
-দেখো, আমি ওকে এখনও ততটাই ভালোবাসি যতটা আগে বাসতাম। সত্য ভালোবাসা কখনও ফুড়ায় না।
-আচ্ছা, তাই? তো আমার সাথে ২ বছর যেটা ছিলো সেটা নিশ্চয়ই নাটক?
-নাটক হবে কেনো! তবে তুমি আমার চেয়ে অনেক ভালো ছেলে ডিজার্ভ করো। তোমার উচিৎ নিজের ভালোটা বুঝে নেয়া। আমি চাই না তুমি আমার জন্য নিজের লাইফটা নষ্ট করো।
-আমার লাইফ নষ্ট হবে!! সে চিন্তা তোমায় করতে হবে নাহ। আমি মরি আর বাঁচি, কেউ তোমাকে গিয়ে ধরবে নাহ আমার লাইফের জন্য। কি ভেবেছো তুমি? আমি ঐ ৮-১০ টা মেয়ের মত ধোকা খেয়ে জীবন দিয়ে দিবো!! আমি মেয়ে হয়েছি তাই বলে কি এইটুকু সাহসও আমার নেই যে এই ধোকাটা সইতে পারবো নাহ?
-আমি আসলে সব কিছুর জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
-ক্ষমা কেনো চাইবে? একজনকে ভুলার জন্য আমাকে ইউজ করেছো, আর আজ যখন সে ফিরে এসেছে তখন আমার প্রয়োজন শেষ। এটাই তো স্বাভাবিক, তাই না?
-এভাবে বলো নাহ। আমি তোমাকে অনেকবার বোঝাতে চেয়েছি কিন্তু সাহস করে বলতে পারি নি।

নাবিল অনুশোচনার ইতিহাস লম্বা করতে চাইলো। চৈতী ওর কথার মাঝেই লাইন কেটে দিলো। ফোনটা রেখে একমুহুর্ত নীরবে চোখ বুজে রইলো।
একটা সম্পর্ক হতে এতটা সময় প্রয়োজন, এতটা ভালবাসতে হয় সম্পর্কে জড়াতে হলে, এতটা বিশ্বাস বুকে রাখতে হয় তারপরেও কেনো সেটা ভেঙ্গে ফেলতে শুধু একটা মুহুর্তই যথেষ্ট হয়?

নাবিল এখনও ফোন দিচ্ছে। রিসিভ করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই চৈতীর। ফোনটা বন্ধ করে দিলো সে। ঘুম আসবে না জেনেও আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়লো। অন্ধকারের মাঝে সব আবেগ লুকিয়ে রাখলেও কান্নার আওয়াজটা লুকাতে পারলো নাহ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:০১

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: শিরোনামে নাবিলা হয়েছে ! নাবিল হবে না ?

ভালো থাকবেন :)

২| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:৩০

জামিউল আলম বলেছেন: :P বিসমিল্লাহি গলদ।
ধন্যবাদ। B-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.