নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি।

সুদীপ কুমার

মন যা চায়।

সুদীপ কুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

সোনার শিকল

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১৬


শিল্পী অনেকক্ষণ ধরে কলিং বেল টিপছে,কিন্তু কেউ দরজা খুলে দিচ্ছেনা। সাড়ে নয়টা বাজে। এরপর তারা লাষ্ট বাসটাও মিস করবে। আজ আবার মেহেদী স্যারের ক্লাস। ফিজিক্সের এই ক্লাস ও একদম মিস করতে চায়না। কেন যে সেলিনা দেরি করছে। শিল্পী শেষ বারের মত কলিং বেল টিপতে যায়। আর এই সময় সেলিনার মা দরজা খুলে দেয়। শিল্পী লক্ষ্য করে সেলিনার মায়ের মুখ চোখ একদম শুকনো।

- শিল্পী মা,আজ সেলিনা কলেজ যাবেনা।
- কেন কি হয়েছে খালাম্মা? সেলিনা বাড়িতে নেই?
- বাড়িতে আছে।ওর শরীর খারাপ। কয়েকদিন পর ও কলেজ যাবে।
- আমি একবার সেলিনার সাথে দেখা করে যাই।
- তোমার দেরী হয়ে যাচ্ছে। তুমি বাস মিস করবে। পরে এসে দেখে যেও।
- আচ্ছা। আজ তবে আসি।
শিল্পী বাসস্টপের দিকে হাঁটা শুরু করে।

এরপর শিল্পীর সাথে সেলিনার কয়েক বছর আর দেখা হয়না। সেলিনার যে ফোন নম্বর শিল্পীর কাছে ছিল সেই ফোন নম্বর সে বন্ধ পায়। শিল্পী সেলিনার মায়ের কাছে বার বার সেলিনার কথা জানতে চেয়েছে, কিন্তু তিনি মুখ খোলেননি। সেলিনার বাবা সোনালী ব্যাংকের বড় কর্মকর্তা আর ওর মা স্থানীয় সরকারি প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষিকা। একদিন শিল্পী খেয়াল করে,খালাম্মারা বাসা বদলাচ্ছেন। শিল্পী দৌড়ে যায় উনাদের কাছে।

- খালাম্মা,আপনারা চলে যাচ্ছেন?
- হ্যাঁ মা,ভাল থেকো।
- কোথায় চলে যাচ্ছেন।
- মানিকগন্জ। আমাদের দেশে।

দেখতে দেখতে পার হয়ে যায় কয়েকটি বছর। শিল্পী কলেজ জীবন শেষ করে। ভর্তি হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে। মেডিক্যাল কলেজে থাকতেই ওর বিয়ে হয়ে যায় পারিবারিকভাবে। পাত্র আগে থেকেই চেনাজানা। একই পাড়াতে ওরা থাকে। পাড়ার বড় ভাই সোহেল ভাই। উনি পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। সোহেল ভাইয়ের সাথে ওর আর সেলিনার খুব ভাব ছিল। ছাত্র জীবনে সোহেল পাড়ায় খুব নাম করা ছিল।

পেশাগত জীবনে শিল্পীর প্রথম পোস্টিং হয় মানিকগন্জে। সোহেল প্রথমে রাজি ছিলনা। পরে রাজি হয়ে যায়, শিল্পীকে যেতে দেয়। ছেলে পাভেলকে নিয়ে সেলিনা মানিকগন্জে আসে। মানিকগন্জ সদর হাসপাতালে আউট ডোরে ওর ডিউটি পড়ে।

শীতের রাত। শিল্পীর ইমার্জেন্সিতে ডিউটি। ও ফোনে পাভেলের সাথে কথা বলছিল।

- বাবুসোনা তোমাকে ছাড়া রাতে খেতে চাইবে তো?
- হ্যাঁ গো,হ্যাঁ। তোমার ছেলে না। একদম বাধ্য। আমার সব কথা শোনে।
- আমি তোমার সব কথা শুনি?
- শোনইতো। না শুনলে খুন করে ফেলবোনা।
সোহেল হেসে ফেলে।
- শোন রাখি। রুগী এসেছে।
- আচ্ছা।

আগুনে পোড়া এক রুগিনী নিয়ে এসেছে এক মহিলা। শিল্পী রুগী দেখে ঔষধের স্লিপ লিখে রুগিনীর অভিভাবিকার দিকে এগিয়ে দিতে গিয়ে স্থির হয়ে যায়।
- সেলিনা তুই।
ঔষধের স্লিপ নিতে নিতে সেলিনা উচ্ছসিত গলায় বলে
- শিল্পী!

পরের দিন শিল্পীর কোয়াটারে বেড়াতে আসে সেলিনা। শিল্পীর ছেলে পাভেলকে বুকে জড়িয়ে ধরে।
- কতদিন পর? শিল্পী বলে।
- হ্যাঁ,বহুদিন পর!
- তুই ওভাবে উধাও হয়ে গেলি কেন?

সেলিনার কষ্টের কথা শুনে শিল্পী স্তম্ভিত হয়ে যায়। মনে মনে ভাবে সেলিনার সাথে যদি কোনদিন না দেখা হতো তবেই ভাল হতো।

প্রতি শুক্রবার শিল্পী ঢাকায় আসে সোহেলের কাছে। রাতে পাভেল ঘুমিয়ে গেলে সোহেল শিল্পীর শরীর নিয়ে মেতে উঠে। আজ শিল্পীর অন্যরকম সোহাগ রাত। ওর মনে হতে থাকে ওকে সোহেল ক্রমাগত ধর্ষণ করে যাচ্ছে। আর মনে হয় সেদিনের কথা যেদিন সেলিনাকে সোহেল একা পেয়েছিল ওর বাড়িতে। ওইদিন সেলিনার প্রচন্ড ব্লিডিং হয়েছিল।

১১/০২/২০১৭

ময়মনসিংহ

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:২৩

টুনটুনি০৪ বলেছেন: ভালো লাগল ।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:১৪

সুদীপ কুমার বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:২২

কালীদাস বলেছেন: কষ্ট লাগল লেখাটা পড়ে :(

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:১৫

সুদীপ কুমার বলেছেন: পড়বার জন্যে ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.