নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি।

সুদীপ কুমার

মন যা চায়।

সুদীপ কুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পের চরিত্র

১২ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:১৭


সফিক বলার চেষ্টা করে,আসলে সে সময় কাটানোর জন্যে লেখে । কিন্তু মুক্তি মানতে নারাজ । মুক্তির ধারণা সফিক ইচ্ছা করেই তার লেখা বই আকারে ছাপাতে চাচ্ছেনা ।মুক্তি তার স্বামীকে অভিযোগের সুরে বলে ,তুমিও তো সফিক ভাইকে বলতে পারো বই বের করার জন্য। আশরাফ স্ত্রীর কথায় মাথা ঝাঁকায় ,সফিককে বলে ,আরে তাইতো সফিক আপনি সত্যিই খুব ভাল লেখেন । আমার সাথে বেশ কয়েকজন প্রকাশকের পরিচয় আছে। আপনি চাইলে আমি আপনার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে পারি। সফিক লাজুক হেসে মাথা ঝাঁকায়।তবে ঠিক মনে করতে পারেনা ,আশরাফ স্যার কবে ওর লিখা পড়েছে।আদপে উনি কোন ব্লগ পড়েন না বলেই সফিক জানে । হ্যাঁ তবে ভাবি পড়েন।ব্লগে সফিকের সব লেখাই পড়েন । মন্তব্যও করেন। ভাবিও লিখেন,তবে মাঝে মাঝে। ওদেরকে রেখে আশরাফ নামাজে যায়। ভাবির সাথে একা বসে থাকতে সফিক মনে মনে অসস্তি বোধ করে।তার আচরণে অবশ্য তা প্রকাশ পায়না।মুক্তির সাথে গল্প চালিয়ে যায়।
-ভাই,আপনাকে একটি কথা বলি,কিছু মনে করেন না।
-ছিঃ ছিঃ ভাবি কি যে বলেন !
-শোনেন ভাই আপনি রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কিছু লিখেন না আর ।চারিদিকে যেভাবে ব্লগার খুন হচ্ছে। ভয় লাগে ভাই।
সফিক লাজুক হাসে।
-তবে ভাই আপনার রোমান্টিক লেখাগুলি পড়তে বেশ ভাল লাগে। আপনি লেখায় যৌনতা খুব খোলামেলা ভাবে উপস্থাপন করেন।বাস্তবেও কি এমন?
ভীষণ লজ্জা পায় সফিক। লেখালেখির এই এক সমস্যা লেখককে লেখার চরিত্রের সাথে গুলিয়ে ফেলে অনেকে। সফিকের উত্তরের অপেক্ষায় না থেকে মুক্তি কথা চালিয়ে যায়।
-আপনার লেখায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের টানা-পোড়ান,পরকীয়া আর যৌনতার প্রাধান্য বেশী। আচ্ছা ভাই,সম্পর্কের স্থায়ীত্ব কি যৌন সম্পর্কের উপর নির্ভরশীল?
নামাজ শেষে আশরাফ ঘরে প্রবেশ করে। সফিক হাঁফ ছেড়ে বাঁচে।

রাতের খাবার শেষ করে আশরাফ আর সফিক একসাথে ঘরে গিয়ে বসে।মুক্তিও খেয়ে নিয়ে খাবারের টেবিল পরিস্কার করে নিজের ঘরে চলে যায়। আগামীকাল হেড অফিসে মিটিং ,সেই বিষয়ে আলাপ সেরে আশরাফও ঘুমোতে চলে যায়।সফিক কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকে।সিগারেট ধরায়। সফিকের মনে প্রশ্ন জাগে,স্যারের এখনও ছেলেমেয়ে নেই কেন ? সমস্যাটা কার ? ভাবীর না স্যারের ? একদিন স্যারকে প্রশ্ন করতে হবে। সিগারেট শেষ করে জানালা দিয়ে ঢাকার আকাশ দেখে সফিক। দেখে প্রায় নির্জন গুলশান। সারি সারি কংক্রিটের ইমারত। ঢাকার মানুষের মধ্যে খেলোয়াঢ় সুলভ মনোভাব প্রকট আর প্রফেশনালও বটে। ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে সফিক।
-ভাই ঢাকায় আসলে আমাদের বাড়িতেই উঠবেন। হোটেলে উঠবেন না কিন্তু।
-ঠিক আছে ভাবি ।
সফিক আর আশরাফ বেড়িয়ে পরে অফিসের দিকে।বড় রাস্তার মোড় পর্যন্ত হেঁটে যায় দু’জন।মোড় ঘুরার সময় সফিক ঘার ঘুরিয়ে পিছন দিকে চায়।জানালায় মুক্তি ভাবি এখনও ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন।যেন নিঃসঙ্গ এক নারীর তৈলচিত্র।

সুনন্দা উষ্মা প্রকাশ করে স্বামীর দেরিতে।
-আর অল্প বাঁকী আছে।আসছি।
-আমি ঘুমালাম।তুমি থাকো তোমার লেখালেখি নিয়ে।সারাদিন অফিসে আর বাসায় ফিরেই লেখালেখি।আমিওতো একটা মানুষ।
প্রনব কম্পিউটার বন্ধ করে বিছানায় চলে আসে।
-মেয়ে ঘুমিয়েছে ?
-হ্যাঁ।
প্রনব বুকের মধ্যে টেনে নেয় স্ত্রীকে ।চুমোতে চুমোতে ভরিয়ে দেয় স্ত্রীকে।
-এ মাসে ঢাকায় মিটিং নেই?
-আছে।
-বসের বাসায় উঠবে ?
-না, হোটেলে উঠবো।

প্রনব লেখা শেষ করে। একবার পড়ে দেখে।এরপর ব্লগে পোষ্ট করে দেয়। শেষে ভাবতে থাকে সফিক চরিত্রটাকে কতদূর টানা যেতো ?

মার্চ,২০১৭

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.