নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি।

সুদীপ কুমার

মন যা চায়।

সুদীপ কুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবীর জন্যে ভালোবাসা ( চার)

০২ রা জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:১৭


http://www.somewhereinblog.net/blog/SudipKumar/30200939



কয়েক মিলিয়ন পরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে এই গল্প। গল্প- সে তো কাল্পনিক হতে পারে বা বাস্তব ঘটনাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে পারে।কিম্বা এই দুইয়ের মিশেল হতে পারে। এই গল্পের শুরুর চরিত্রগুলি বেড়ে উঠেছে প্লানেট- এক্সকে কেন্দ্র করে। ঠিক তখন জীবন ব্যবস্থা কেমন হতে পারে? কেনই বা মানুষ কয়েকটি গ্যালাক্সী পেরিয়ে ওখানে গেলো? কিভাবে সম্ভব হলো এই মহাযাত্রা? আমরা এর মধ্যে জেনেছি এক মহাবিপর্যয় কর যুদ্ধের সম্ভবনা ও যুদ্ধ মানুষকে মঙ্গলে যেতে প্রেরণা জুগিয়েছে। তবে মঙ্গল ও প্লানেট- এক্স এর জীবন যাত্রা সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্লানেট- এক্স এ প্রযুক্তির বিস্ময়কর ব্যবহার সম্ভব হয়েছে। বিস্ময়কর না বলে ঐশ্বরিক বলাই শ্রেয়। মানুষ প্লানেট- এক্স এ খাদ্য গ্রহণ করে।তবে সে খাদ্য আমাদের জানা বা কল্পনার কোন ফর্মে নয়, তার চেয়েও ব্যতিক্রমী। প্লানেট- এক্স হতে দশ আলোক বর্ষের সীমানার ভেতর যতগুলি গ্রহ আছে তার কয়েকটি তারা ব্যবহার করে খাদ্য উৎপাদনের কাঁচামাল হিসাবে। কি সে খাদ্য? নাই বা জানলাম।ওই গ্রহগুলির মধ্যেই একটি গ্রহ ছত্রপতি। যেখানে শিক্ষা সমাপ্ত করার পর বাস্তব জীবনে প্রবেশ করার আগে ব্যবহারিক শিক্ষা দেওয়া হয় কঠোর নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে। নিয়ম ভঙ্গ করার শাস্তি ভয়াবহ। হ্যাঁ,মৃত্যদন্ড দেওয়া হয়না। কিন্তু গ্রহান্তরিত করা হয়।

নোটিস আসার সাথে সাথে এক ব্যটেলিয়ান রোবটিক কমান্ডো ঘিরে ফেলে ব্রক্ষপুত্রের ছাত্রাবাস। মাকারোভা,সুহার্তো ও এডওয়ার্ডকে মাথায় হাত তুলে বেরিয়ে আসতে নির্দেশ দেয়।

- এইটা কি হলো ব্রক্ষ্মপুত্র? আমরা কি অন্যায় করলাম? সুহার্তো পুত্রকে বলে।
- তথ্য জানতে চাওয়া অন্যায়! এডওয়ার্ড খুব আশ্চর্য হয়
- দেখো বন্ধুরা,আমি অনেকদিন যাবৎ কিছু প্রশ্নের উত্তর মেলাতে পারছিলাম না। বাবাকে কোন প্রশ্ন করলে উনি কথা ঘুরিয়ে ফেলতো অথবা বলতো তোমার ফোকাস সরে যাচ্ছে।শিক্ষকগণ বলতেন তুমি কি ইনফর্মেশন টেকনোলজিতে পড়ছো? কেউ উত্তর দিত না। শোন সবাই কিছু একটা অসঙ্গতি আছে আমাদের সমাজে, এটা বের করো তোমরা।
- কেন তুমি কি চলে যাচ্ছো? মাকারোভা বলে।
- জানিনা। আইনে কি আছে তাও জানি না। সুহার্তো, তুমি আমাদের ডি এন এ নমুনা নিয়ে যাও। যদি কোন অসঙ্গতি ধরা পড়ে তবে তা দূর করার চেষ্টা করো।
- কেন,তোমার হঠাৎ এ কথা মনে হচ্ছে কেন? সুহার্তো বলে।
- খেয়াল করো,আমিই শুধু তিতাসকে বাবা ডাকি। তোমরা কেউ কি তোমাদের জন্মদাতাকে বাবা কিম্বা মা ডাকো? এই প্রশ্ন তোমাদের মাথায় আসেনি? পুত্র সবার দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়।

বাহির হতে আবার রোবট কমান্ডোর ঘোষণা ভেসে আসে।সুহার্তো সবার চুল আর নখের টুকরো সংগ্রহ করে বেরিয়ে যায়। সবশেষে বিষণ্ণ মনে পুত্র বেরিয়ে আসে। পুত্রকে দেখে রোবট কমান্ডার এগিয়ে আসে।
- স্যার,আপনাকে আমাদের সাথে যেতে হবে।
- কোথায়?
- আমাদের ক্যাম্পে।

পুত্রকে খুব সমাদরে নিয়ে যাওয়া হয় ক্যাম্পে। ওর থাকার জন্যে খুব সুন্দর একটি ঘর দেওয়া হয়। তবে সমস্ত টেকনোলজিকেল সাপোর্ট হতে তাকে বঞ্চিত করা হয়। সন্ধ্যায় এক অফিসার এসে তাকে ক্যাম্পের ইনফর্মেশন হাইওয়ের ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
- তিতাস স্যার আপনার সাথে কথা বলবেন। রোবট কমান্ডার তাকে বলে।
তিতাসের হলোগ্রাম ওদের মাঝখানে দাঁড়ায়।
- কেমন আছো আমার প্রিয় ব্রক্ষ্মপুত্র?
- জানিনা। আমার অপরাধ কি?
হলোগ্রাফিক তিতাস একটু ঝাপসা হয়ে যায়।
- পুত্র,তুমি আমাদের নিয়ম ভেঙ্গেছো। আমাদের জীবন যাত্রা কতিপয় বিধি- নিষেধ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তুমি হ্যাকিং করে একটি বিধি ভঙ্গ করেছো।
- আমার এখন কি হবে?
- পুত্র, এন্ড্রোমিডার বয়স কত আমরা কেউ জানিনা। উনি তোমার নাম রেখেছিলেন। আমি উনাকে এমন অদ্ভুত নাম কেন প্রশ্ন করলে বলেছিলেন, হিন্দু মাইথোলজির এক ঈশ্বর ছিলেন যার নাম ছিল ব্রক্ষ্মা তার নামে নাম রাখলাম। পরে তিনি এও বলেছিলেন রোবটিকজিন আচমকা কাজ করতে ব্যার্থ হয় যখন তোমার সৃষ্টি হচ্ছিল। ওই জিন ছাড়াই কোন এক অজানা উপায়ে তোমার ডি এন এ এর রেপ্লিকেশন কমপ্লিট হয়।
- আমি জানি।পুত্র বলে।
- তুমি জানো? তিতাস খুব আশ্চর্য হয়।
- বাবা,বিবাহ কি? নতুন সৃষ্টিতে একজন পুরুষ আর একজন নারীর কেন একত্রে থাকার প্রয়োজন হতো? এখনকার মতো ল্যাবে নয় কেন?

হলোগ্রাফিক চিত্রটি চলে যায়। পুত্র রোবটকে প্রশ্ন করে কি সমস্যা হলো? সম্প্রচার বন্ধ হলো কেন? রোবট তার অপারগতা জানায়।

পরদিন সুপ্রিম কাউন্সিল এর সভায় পুত্রকে নিয়ে যায় রোবটের একটি দল। এক বিশাল কাঁচের ঘরে পুত্রকে রেখে রোবটের দল চলে যায়।কিছুক্ষণ পর ঘর অন্ধকার হয়ে যায়। এরপর পাঁচটি হলোগ্রাফিক ছবি ভেসে উঠে।চারজন শীর্ণ বৃদ্ধের ছবি। সবাই সার বেঁধে বসে আছে। মধ্যের জন শুরু করে।

- ব্রক্ষ্মপুত্র,তোমার জন্মের সময় আমরা তোমাকে টারমিনেট করতে চেয়েছিলাম।কিন্তু এন্ড্রোমিডার আশ্বাসে আমরা সিদ্ধান্ত বদল করি। এখন দেখা যাচ্ছে আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল।

দ্বিতীয় বৃদ্ধ বলে- তোমার জিনগত বৈশিষ্ট্য এই গ্রহের সাথে যায় না।

তৃতীয় বৃদ্ধ বলে- তুমি অন্যায় ভাবে হ্যাকিং করেছো।

চতুর্থ বৃদ্ধ বলে- নিয়ম ভঙ্গ করা অপরাধ।

পঞ্চম বৃদ্ধ বলে- এই অপরাধের শাস্তি হলো তোমাকে গ্রহান্তরিত করা হবে। তোমাকে মঙ্গলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তুমি এখান হতে এন্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি পর্যন্ত জেনেটিক পাসপোর্ট সুবিধা পাবে। তারপর আর পাবেনা।

- আমি তাহলে মঙ্গলে যাবো কিভাবে? মঙ্গল তো মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে।

- তোমাকে সেলফ কন্ট্রোল স্পেসশিপে উঠিয়ে দেওয়া হবে এন্ড্রোমিডার ইবলিশ গ্রহ হতে।ওই স্পেসশিপ তোমাকে মঙ্গলে নিয়ে যাবে।

- আমি যদি ফিরে আসি?

- সম্ভব নয়। তোমার জেনেটিক পাসপোর্ট ড্রেসট্রয় হয়ে যাবে এন্ড্রোমিডার ইবলিশে পৌঁছা মাত্র। আর যে স্পেসশিপ তোমাকে নিয়ে যাবে সেটা এক বারই ব্যবহার করা যায়।

- আমাকে কবে যেতে হবে?

- আজই।

- একটা প্রশ্নের উত্তর দেবেন আপনারা?

- কি প্রশ্ন? মধ্যের বৃদ্ধ বলেন।

- আপনারা কি মানুষ?

ঘরে লাল আলো জ্বলে উঠে। হলোগ্রাফিক ছবি মিলিয়ে যায়।
রোবট কমান্ডার এসে পুত্রকে বলে- চলুন স্যার আমাদের যেতে হবে।
পুত্র কিছুক্ষণ বসে থাকে চুপ করে। তারপর চিৎকার করে কারও উদ্দেশ্যে বলে- আমি আবার ফিরে আসবো।

(চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.