নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নব নব সৃষ্টি

সোলায়মান সুমন

সৃষ্টির আনন্দে ঈশ্বর এ মন

সোলায়মান সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমালোচনা ও আলোচনায় ‘ডুব’

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৪৯

‘ডুব’ নিয়ে দর্শকদের প্রত্যাশা ছিল অনেক। এর কারণ পরিচালকের ইন্টেনশন। তাছাড়া ইরফান খান বিশ্বের সেরা অভিনেতাদের একজন। ‘দ্যা লাইফ অব দ্যা পাই’, ‘লাইফ ইন মেট্রো’, ‘পিকু’ সিনেমায় তিনি তার অনবদ্য অভিনয় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেছেন বিষয়টা দর্শকদের জন্য ছিল বেশ কৌতুহলের। রোকেয়া প্রাচী বাংলা সিনেমার একজন ধ্রুপদী অভিনেত্রী। পর্নো মিত্র কলিউডের চার্মিং গাল হিসেবে এরই মধ্যে পরিচিতি পেয়েছেন। ‘রঞ্জনা আমি আর আসব না’ সিনেমাতেও তিনি একজন বয়স্ক অভিনেতার (অঞ্জন দত্ত) বিপরীতে অভিনয় করেছেন। তৃষা একজন টিপিক্যাল অভিনেত্রী। তিনি এক ধরনের চরিত্রেরই সাবলিল। পরিচালকও তাঁকে সেই ধরনের চরিত্রের জন্য নির্বাচিত করেন।
এবার আসি গল্পে। শুরুতেই দেখি পরিচালক জাভেদ হাসান ( ইরফান খান) তার স্ত্রী মায়ার (রোকেয়া প্রাচী) সাথে আটপৌরে জীবনে অনেকটাই ক্লান্ত। মায়া চাওয়া-পাওয়াগুলো আট-দশটা সাধারণ বাঙালি গৃহিণীর মতই। এদিকে কন্যা সাবেরির (তৃষা) সাথে বাবা জাভেদ হাসানের সম্পর্কটা বন্ধুত্বের। সাবেরির বান্ধবী নীতু সাবেরিকে তার প্রতিপক্ষ ভাবে। সে মনে করে, সাবেরির চেয়ে সে যোগ্য হবার পরও একটি কারণে সে সাবেরির কাছে হেরে যাচ্ছে। তা হল সাবেরি বিখ্যাত বাবার মেয়ে। বিখ্যাত পরিচালক জাভেদ হাসানের মেয়ে হওয়ার কারণে সব জায়গায় সাবেরি বেশি ইন্টেনশন পায়। যেহেতু নীতু কন্যা হিসেবে জাভেদের আপনার একজন হতে পারবে না তাই সে স্ত্রী হিসেবে জাভেদের আপনজন হতে চেষ্টা করে। নানা কৌশলে সফলও হয়। নীতু এভাবে তার প্রতিশোধ স্পৃহাকে চরিতার্থ করে। কিন্তু এই নতুন সম্পর্ক জাভেদের জীবনে এক ধরনের শূন্যতা সৃষ্টি করে। সে তার আপনজনদের হারায়। তার স্ত্রী, পুত্র, কন্যা নানা ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়ে সমাজের সাথে, নতুন পরিস্থিতির সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেয়ার চেষ্টা করে চলে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারে কী? অবশেষে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে জাভেদ খান আবার তার হারানো পরিবারের কাছে ফিরে আসে।
সিনেমাটি রিলিজ হবার আগে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রচার পায় যে এটি হুমায়ূন আহমেদের উপর নির্মিত বায়োপিক। কিন্তু বায়োপিকের মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলো এখানে অনুপস্থিত। তবে বলা চলে হুমায়ূন আহমেদের জীবনের ছায়া অবলম্বনে সিনেমাটি নির্মিত। ‘ডুব’-এর গল্পটি সুন্দর কিন্তু আনাড়ি চিত্রনাট্যের কারণে তা সফল হয়নি। একটি দৃশ্যের সাথে আরেকটি দৃশ্যের কোনো সূত্র খুঁজে পাওয়া যায় না। অনেকটা ইউরোপিও ঘরানার সিনেমার মত দৃশ্যগুলোর মাঝে স্পেস রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু করতে গিয়ে পরিচালক মোস্তফা সারয়ার ফারুকী কতটা সফল হয়েছেন সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। সিনেমাটিক বিষয়গুলোও এখানে অনুপস্থিত। সব চেয়ে বিব্রতকর বিষয়টি হচ্ছে প্রধান চরিত্র জাভেদ হাসানের উচ্চারণ। সে হিন্দি টানে বাংলা বলে পুরো সিনেমা জুড়ে। যা বাংলাদেশে জন্ম নেয়া একজন পরিচালকের মুখে সত্যি বেমানান।
পরিচালক মস্তফা সারয়ার ফারুকী এই সিনেমাটিতেও ‘ব্যাচেলর’, ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’, ‘টেলিভিশন’, ‘পিঁপড়াবিদ্যা’ সিনেমার মত নিরীক্ষা করার চেষ্টা করেছেন। এটি তাঁর একটি ইতিবাচক দিক। সিনেমার চিত্রায়ন ও ক্যামেরার কাজ খুব অভিনব ও আকর্ষণীয়। সুস্থ ধারার ছবি নির্মাণে নবীন পরিচালকদের মাঝে উৎসাহ যোগাবে ‘ডুব’।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.