নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অরূপকথার জাদুকর আমি!!
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রমনা পার্কের বটবৃক্ষ ছায়াতলে বসিয়া আছেন। তাঁহার ডানদিকে বসিয়াছেন দীর্ঘকেশী যুবক নজরুল এবং বামদিকে আছেন বুদ্ধদেব বসু। তাঁহাদেরকে ঘিরিয়া আরো অনেকে কবি আসর মহিমান্বিত করিয়া তুলিয়াছেন।
রবীন্দ্রনাথ কুটকুট করিয়া সুপারি চিবাইতে আরম্ভ করিলেন। তাঁহাকে সুপারি চিবাইতে দেখিয়া যতীন্দ্রমোহন বাগচী উশখুশ করিতে লাগিলেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁহাকে দু টুকরা সুপারি দিয়া কহিলেন, যতি তুমি কবিতায় এবার গতি আনো দিকি।
যতি অতি বিস্মিত হইয়া গতির মর্ম উদ্ধারে লিপ্ত হওয়ায় সুপারি মুখে পুরিয়া তা চিবাইতে ভুলিয়া গেলেন। রবীন্দ্রনাথ মর্মমুক্তি দিয়া কহিলেন, নজরুলের বিদ্রোহী কবিতাখানা পাঠ করো।
নজরুল একটু ফুলিয়া উঠিলো। যতি পাঠ আরম্ভ করিলেন। সুপারির থেকে কবিতার শব্দ তাঁহার নিকট কঠিন ঠেকিতে লাগিলো।
এমন সময় এই পুরাকালের কবি সমাবেশে কিছু নব্যকালের কবি আসিয়া হানা দিলো। রবীন্দ্রনাথ তাহাদের দেখিয়া আপ্লুত হইলেন। জীবনানন্দ দাশ ভীত হইলেন ভেতরে ভেতরে। নব্য কবিদের ভেতর তিনি দেখিতে পাইলেন ঘৃণা এবং বিভেদের ধূসর পাণ্ডুলিপি।
জীবনানন্দের ভয় ভয়াল সত্যের রূপ নিলো দ্রুতই। নব্য কবিদের আগমনে বটবৃক্ষে ফাঁটল ধরিলো। তাহারা কেহ কেহ সুধীন্দ্রনাথকে টানিয়া লইলো। কেহ কেহ বিষ্ণু দে কে টানিয়া লইলো। কেহ কেহ নজরুলকে টানিয়া লইয়া নব নব দল উপদলে বিভক্ত হইয়া আমতলা, জামতলা, কাঁঠালতলার নীচে মজিয়া বসিলো।
এই নব্যকালের কবিদল আমতলা, জামতলা, কাঁঠালতলায় বসিয়া কি চর্চা করে তাহার কিঞ্চিৎ আমরা অনুমান করিতে পারি, তবে এক তলার কবি যে আরেক তলায় কখনো যায় না তাহা অনুমানের অপেক্ষা রাখে না।
©somewhere in net ltd.