নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুখে আছি, সুখে আছি সখা, আপন মনে।

সখা, নয়নে শুধু জানাবে প্রেম, নীরবে দিবে প্রাণ, রচিয়া ললিতমধুর বাণী আড়ালে গাবে গান। গোপনে তুলিয়া কুসুম গাঁথিয়া রেখে যাবে মালাগাছি। এই ব্লগের©শান্তির দেবদূত।

শান্তির দেবদূত

নিজের কথা কি আর বলবো ...... নিজে সুখী মানুষ, পৃথিবীর সবাই সুখী হওক এই কামনা করি...... কয়লার মধ্যে কালো খুঁজি না, হীরা খুঁজে বেড়াই .......

শান্তির দেবদূত › বিস্তারিত পোস্টঃ

(কল্প-গল্প) - ক্লোরোপ্লাস্টিক মেসেজ

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৪



এক.

ক্লাসে অনেক যত্ন নিয়ে পড়ান প্রফেসর তোফাজ্জল হোসেন, পারতপক্ষে ভাল ছাত্রছাত্রীরা এই বিষয় পড়তে চায় না, নিতান্ত বাধ্য হয়ে মেধা তালিকার শেষের দিক থেকে এই ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হয় তারা। আজকাল সবার ইঞ্জিনিয়ারিং, ডাক্তারি অথবা হাল আমলে উড়ে এসে জুড়ে বসা বিবিএ, এমবিএর দিকে ঝোক বেশি, উদ্ভিদবিদ্যার মত প্রাচীন ও মৌলিক বিষয়গুলোতে তাদের আগ্রহ নেই বললেই চলে। আশ্চার্য! মানুষ গাছ নিয়ে কিভাবে উদাসীন হতে পারে ভেবে পান না তোফাজ্জল হোসেন, এসব নিয়ে তার মনে বেশ আক্ষেপ। হঠাৎ লেকচার থামিয়ে ছাত্রছাত্রীদের দিকে ঘুরে তাকালেন ষাটোর্ধ প্রফেসর। বাহাতে চশমার ফ্রেমটা একটু টেনে নাকের অগ্রভাগে নিয়ে এসে তার উপর দিয়ে ক্লাসের শেষ বেঞ্চের দিকে চোখ পাকিয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকেন। এতক্ষণ ক্লাস জুড় মৃদু গুঞ্জন চলছিল এখন পিনপতন নিস্তব্ধতা, কি ঘটতে যাচ্ছে সবাই মুটামুটি আঁচ করতে পেরেছে।



“এই ছেলে! এই! উঠে দাঁড়াও। কি করছ তুমি ?”, বেশ রাগান্বিত স্বরেই বলেন তিনি।



আনমনে লিখেই যাচ্ছে সে, কোন দিকে তার খেয়াল নেই। ঘোরের মধ্যে আছে এখন সে, তার চোখের সামনে অদ্ভুত অদ্ভুত সব সমীকরণ নেচে বেড়াচ্ছে, সে এখন অন্য জগতের বাসিন্দা। বেশ কয়েকদিন ধরে এমন হচ্ছিল, আজ মনে হয় চূড়ান্ত পর্যায়ে উঠে গেছে। অবচেতন মন বলছে সমাধানের খুব কাছ দিয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে সে। অনেক দূর থেকে কে যেন “এই ছেলে, এই ছেলে বলে চিৎকার করছে”, আজব! মানুষের কোন কান্ডজ্ঞান নেই না কি! বিজ্ঞানের এই চূড়ান্ত আবিষ্কারের সন্ধিক্ষণে এভাবে কেউ বাধা দিতে পারে? না দেওয়া উচিত। আরে! অদ্ভুত তো! সে এত অপ্রাসঙ্গিক চিন্তা করছে কেন? তাকে এখন সমীকরণের দিকে মননিবেশ করতে হবে যেভাবেই হোক। আবার কে যেন জোরে ডেকে উঠল, “এই ছেলে, এই ছেলে”। হঠাৎ কাঠপেন্সিলের তীক্ষ্ণ খোঁচায় মোহভঙ্গ হয় তার, মৃদু চিৎকার দিয়ে বা হাতে ডান বাহু খামচে ধরে ডলতে ডলতে পাশের ছাত্রের দিকে অবাক হয়ে তাকায় সে।



- এই ছেলে, দাঁড়াও বলছি, কি নাম তোমার?



স্যার, রায়হান



- “পুরো নাম কি, রোল নাম্বার কত?”, কিছুটা রাগত স্বরেই বলেন তিনি।



মোহাম্মদ রায়হান ভুঁঞা, ৯৮৭৪১



- সেই শুরু থেকে দেখছি লেকচারের দিকে তোমার কোন মনযোগ নেই, শুধু খাতায় কি যেন লিখে যাচ্ছ! এত ইমপোর্টেন্ট ক্লাস যদি মনযোগ দিয়ে না শোন তাহলে পরীক্ষায় পাস করবে কি করে? এতক্ষণ কি পড়াচ্ছিলাম বলতে পরবে?



“না স্যার”, আমতা আমতা করে বলে রায়হান, কিছুটা বিরক্ত হয় সে, অস্থির লাগছে তার; বেশি দেরি হলে মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকা সমীকরণটা হারিয়ে যেতে পারে। সবচেয়ে ভাল হয় স্যার যদি এখন ক্লাস থেকে বের করে দেয়, মনে মনে ভাবে সে।



আজ সবকিছুই যেন তার অনুকুলে; তোফাজ্জল হোসেন বলেল, “নিউকোভিচ* ক্লোরোপ্লাস্টিক প্যাটার্ন। গাছের ক্লোরোপ্লাস্টের* এই প্যাটার্ন প্রথম আবিষ্কার করেন রুস উদ্ভিদ বিজ্ঞানি নিউকোভিচ, ১৯৩৫ সালে। তুমি এই বিষয়ের উপর বিস্তারিত রিপোর্ট দিবে আমাকে এক সপ্তাহের মধ্যে, এটা তোমার এসাইনমেন্ট। এখন সোজা বের হয়ে যাও ক্লাস থেকে”।



খুব মন খারাপ হয়েছে এমন ভাব করে মাথা নিচু করে ক্লাস থেকে বের হয়ে যায় রায়হান। শুরু থেকেই মানব সভ্যতা অগ্রসর হয়েছে ধীরে ধীরে ধাপে ধাপে, কিন্তু শতাব্দিন্তর আর্কিমিডিস, নিউটন, আইনস্টাইন বা হকিং এর মত কিছু মহামানবের আবির্ভাব হয় যারা সভ্যতাকে এক লাফে কয়েক শতাব্দি এগিয়ে নিয়ে গেছেন, আজ প্রফেসর তোফাজ্জল হোসেন “নিউকোভিচ ক্লোরোপ্লাস্টিক প্যাটার্ন” এসাইনমেন্ট দিয়ে এমনি একজনকে ক্লাস থেকে বের করে ইতিহাসে অংশ হয়ে গেছেন নিজের অজান্তেই।



তিনদিন ধরে ঘর থেকে বের হচ্ছে না রায়হান, টেবিলে মাথা গুঁজে ক্রমাগত লিখেই যাচ্ছে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা, মাঝেমাঝে শুধু বিপুল বেগে মাথা নেড়ে কয়েকগাছি কাগজ একত্র করে ছিঁড়ে ফেলে দিচ্ছে, তারপর আবার প্রথম থেকে শুরু করছে লেখা। এ নিয়ে দশবার হল, ধৈর্য্যের শেষসীমায় পৌছে গেছে, এবার না হলে আর হবে না, মনে মনে ভাবে রায়হান; এত কাছে এসেও কি শেষ করতে পারবে না? ভুলটা কোথায় করছে ভেবেই পাচ্ছে না। হঠাৎ মনে পড়ে তোফাজ্জল স্যারের এসাইনমেন্টের কথা, আর তিনদিন পরেই জমা দিতে হবে, কিন্তু একটুও এগোয়নি কাজ। ধ্যাৎ, যা হয় হবে, ডান হাত হাওয়ায় চালিয়ে তাচ্ছিল্যের সাথে উড়িয়ে দেয় সে; নিউকোভিচ না টিউকোভিচ প্যাটার্ন নিয়ে এখন মাথা ঘামালে চলবে না। আবার প্রথম থেকে শুরু করে সে।



একটানা ছয় ঘন্টা ধরে প্রায় পনের বিশ পৃষ্ঠা লেখার পর থামে সে, হা করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে সমাধানগুলোর দিকে; একটু মনক্ষুণ্ন হয়; এত খাটাখাটুনির কোন লাভ হল না তাহলে! বোসনিক স্ট্রিং থিউরি* অনুযায়ী ইউনিভার্স ছাব্বিশ মাত্রার কিন্তু সুপার-স্ট্রিং থিউরি* অনুসারে ইউনিভার্স এগার মাত্রার এ দুই থিউরির সীমাবদ্ধতাগুলোকে সমাধান করে ইউনিফাইড-স্ট্রিং* থিউরি ইউনিভার্সকে ছয় মাত্রায় সংজ্ঞায়িত করে। কিন্তু রায়হানের সমীকরনের সমাধান অনুসারে ইউনিভার্স মাত্র পাঁচ মাত্রার; একটা মাত্রা কিছুতেই মিলছে না। আবার ভুলটা কোথায় সেটাও বুঝতে পারছে না। আর পারছে না সে, মাথা ভার ভার লাগছে, বসেই টেবিলে মাথা এলিয়ে দিয়ে মুহূর্তেই ঘুমিয়ে পড়ে।



মৃদু খিলখিল হাসির শব্দে ঘুম ভেঙে যায় রায়হানের, উঠেই দেখে একটা সবুজ মাঠে শুয়ে আছে, চারদিক আলো ঝলমল করছে কিন্তু আকাশটা কাল। যতদুর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ! এ কোথায় চলে এসেছে সে? খিল খিল হাসির শব্দে পিছনে ফিরে তাকায় সে, দেখে চোদ্দ-পনের বছরের একটা বাচ্চা মেয়ে দৌড়াচ্ছে। দৌড়ে যাচ্ছে অনবরত। দৌড়াতে দৌড়াতে প্রায় দৃষ্টির আড়ালে চলে যায় সে, এমন সময় মেয়েটি বলে উঠল, “তুমি আসবে না? আর কতদিন অপেক্ষা করতে হবে আমাদের?”। এত দূর থেকে কোন শব্দ শুনতে পারার কথা না, কিন্তু রায়হান স্পষ্ট শুনতে পেল মেয়েটার কথা, কণ্ঠে নিশ্চিত ঝরে পড়ছিল আকুতি। ধড়মড়িয়ে ঘুম থেকে উঠে সে, ঘেমে একেবারে জবজব অবস্থা, প্রচন্ড ভয় পায় সে, ভয় পাওয়ার কারন হল মেয়েটির গায়ের রং একেবারে গাড় সবুজ, চুলের রঙ এমনকি চোখের রঙ পর্যন্ত। কি উদ্ভট স্বপ্ন! কয়েকদিন ধরে খুব বেশিই চাপ নিয়ে ফেলেছে। জগ থেকে ঢকঢক করে পানি খায় সে, ঘড়িতে বিকাল তিনটা বাজে, পুরা সকাল ঘুমিয়ে কাটিয়েছে! এখন বেশ ঝরঝরে লাগছে। মুখহাত ধুয়ে, মুখে খোচাখোচা দাড়ি নিয়েই লাইব্রেরীর উদ্দেশ্যে রুম থেকে বের হয় সে।



“নিউকোভিচ ক্লোরোপ্লাস্টিক প্যাটার্ন” নিয়ে ত পুরা লঙ্কাকান্ড ঘটে যাচ্ছে উদ্ভিদবিজ্ঞান জগতে! ২০০০ সালে ওয়াল্ড সাইন্স পত্রিকা একে শতাব্দির সেরা রহস্যময় আবিষ্কারের তিন নাম্বারে রেখেছে। পড়তে পড়তে একেবারে ডুবে যায় রায়হান, মোহগ্রস্থের মত পৃষ্ঠার পত পৃষ্ঠা পড়তে থাকে সে। বিভিন্ন বিজ্ঞানি একে বিভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করতে চেয়েছে, কিন্তু কেউই পুরোপুরিভাবে করতে পারনি। কেউ বলেছে এর পিছনে ঈশ্বরের কীর্তি আছে আবার কেউ বলছে এটা বৃক্ষের শৈল্পিক মনের বহিঃপ্রকাশ, কেউ কেউ নিউটনের মহাকর্ষ আবার কেউ কেউ আইনষ্টাইনের রিলেটিভিটি থিউরী দিয়ে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছে। মাথার মধ্যে ভয়ংকর গতিতে চিন্তা চলতে থাকে রায়হানের, মনে হচ্ছে যেন মস্তিষ্কের সবগুলো নিউরোন একযোগে চরম কর্মযজ্ঞ শুরু করে দিয়েছে। ঘোরের মধ্যে চলে যায় সে, চোখের খুব কাছে নিয়ে প্যাটার্নটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। অদ্ভুত একটা ব্যাপার, আপাত দৃষ্টিতে এটাকে প্যাটার্ন বলার কোন কারন নেই, বিক্ষিপ্তভাবে পাতার তল বরারব কোষের ভিতর ক্লোরোপ্লাস্টগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, কিন্তু মজার ব্যাপার হল এই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার মধ্যেও একটা প্যাটার্ন আছে, যে কোন গাছের পাতার একটা কোষে ক্লোরাপ্লাস্টের সংখ্যা ৭৫ থেকে ১০০ এর মধ্যে। একটা কোষে যেভাবে ক্লোরোপ্লাস্টগুলো বিন্যাস্ত ঠিক সাতটা কোষের পর আট নাম্বার কোষে একই ভাবে ক্লোরোপ্লাস্টগুলো বিন্যস্ত হয়ে আছে। এই প্যাটার্নগুলো আবার উপর থেকে নিচে ও নিচ থেকে উপরেও একই রকম। যদি প্রথম কোষের ক্লোরোপ্লাস্টের বিন্যাসকে A, পরেরটিকে B এভাবে ক্রমান্বয়ে চিহ্নিত করি তাহলে প্যাটার্নটা হবে,



........ ABCDEFG ABCDEFG ABCDEFG AB .........

........ BCDEFGA BCDEFGA BCDEFGA BC .........

........ CDEFGAB CDEFGAB CDEFGAB CD.........

........ DEFGABC DEFGABC DEFGABC DE.........



বাহির থেকে কোন শক্তি প্রয়োগ করে এই প্যাটার্নকে বিশৃঙ্খল করে দিলে মুহূর্তেই আবার আগের অবস্থায় চলে আসে ক্লোরোপ্লাস্টগুলো। ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক পালস দিয়ে, হাই পাওয়ার লেজার, ফোটন ট্রিটমেন্ট দিয়ে; এমন কি কৃত্রিমভাবে শূণ্য গ্র্যাভেটি তৈরি করে তার মধ্যে এই প্যাটার্নটিকে বিশৃঙ্খল করে পরীক্ষা করা হয়েছে, কিন্তু ফলাফল সেই একই, মুহূর্তেই আগের অবস্থায় চলে আসে ক্লোরোপ্লাস্টগুলো। আবিষ্কারের পর থেকে প্রায় নব্বই বছর ধরে তাবৎ উদ্ভিদ বিজ্ঞানিসহ বিভিন্ন শাখার সব বাঘা বাঘা বিজ্ঞানিদের কাছে চরম দুর্বোধ্য হয়ে আছে এই নিউকোভিচ ক্লোরোপ্লাস্টিক প্যাটার্ন। অনেকক্ষণ ধরে চোখের সামনে ধরে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে থাকতে চোখ ব্যাথ হয়ে যায় রায়হানের, মাথা ডিপডিপ করে হালকা ব্যাথার পূর্বাভাস দিচ্ছে, তবুও একদৃষ্টিতে তাকিয়েই থাকে সে। হঠাৎ লাফ দিয়ে উঠে পরে চেয়ার থেকে, কোন শব্দ বের হয় না গলা দিয়ে, চোখ বড় বড় করে বই এর খোলা পাতাটার দিকে তাকিয়ে থাকে সে। হঠাৎ বইটা বগলদাবা করে হুড়মুড় করে লাইব্রেরি থেকে বের হয়ে আক্ষরিক অর্থেই এক দৌড়ে রুমে ফিরে আসে সে। এসেই গত তিন দিনে ইউনিফাইড স্ট্রিং থিউরী নিয়ে করা সমীকরনগুলো বের করে সে। পাগলের মত পৃষ্ঠা উল্টাতে ও লিখতে থাকে, মাঝেমাঝে ক্যালকুলেটর টিপে হিসাব করতে থাকে, ঘন্টা চারেক পর থামে, মৃদু হাপাচ্ছে চরম উত্তেজনায়। কিছুক্ষণ মায়াবী চোখে তাকিয়ে থাকে সমাধানটার দিকে রায়হান যেন সদ্য ভুমিষ্ঠ শিশু!, প্রচন্ড ঝড়ের পর যেন চরম নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে চারিপাশ, অদ্ভুত রকমের এক মমত্ববোধ অনুভব করতে থাকে সমাধানটার প্রতি। রায়হান বুঝতে পারে সে এমন এক সমাধান বের করেছে যেটা সমগ্র পৃথিবী জন্য চরম বিপর্যয় অথবা চরম উৎকর্ষ বয়ে নিয়ে আসতে পারে। করনীয় ঠিক করে নেয় রায়হান, চোয়াল শক্ত করে টেনে নেয় কম্পিউটারেরে কিবোর্ডটি দৃঢ অকম্পিত হাতে।



দুই.

ক্লাস থেকে এই মাত্র বের হয়েছে পিপার, আকাশে দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ একটা শ্বাস নেয় চারকোনা বুক ফুলিয়ে। গাঢ় সবুজ কৃত্রিম আকাশ, মৃদু ক্রোধ মাথা চাড়া দিয়ে উঠে তার; সবুজ চোখদুটো মুহূর্তে ঘন কাল হয়ে যায়। দ্রুত পা চালায় সে। আজ এমনিতেই দেরি হয়ে গেছে ক্লাস শেষ করতে। একজন সহজ একটা জিনিস শুধু প্যাচাচ্ছিল, শেষে এক ধমক দিয়ে পরে রুমে এসে বুঝে নিতে বলেছে। খুব সন্তর্পণে হাঁটছে সে, মাঝেমাঝেই পিছেনে ফিরে ও আশপাশ সূক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করে তবেই এগুচ্ছে; সাবধান হওয়া খুব জরুরী, আজকাল ফোটন কাউন্সিলের স্পাইগুলো বেশ তৎপর; আর ওদের আছে সর্বোচ্চ ক্ষমতা, সবচেয়ে ভয়ের কথা জবাবদিহিতার কোন বালাই নেই তাদের। হাঁটতে হাঁটতে শহরের একপ্রান্তের প্রায় নির্জন অঞ্চলে চলে আসে সে। তার পরেই বনাঞ্চল শুরু; কমলা রং* এর বিশাল বিশাল গাছের ঘন বন, চারপাশ একবার দেখে নিয়ে টুপ করে ঢুকে পড়ে বনে।



কিছুক্ষণ হেঁটে আরও গভীরে চলে যায় পিপার; বড় একটা গাছের নিচে এসে থামে সে, একটু নিচু হয়ে গাছের এক জায়গায় পুরাটা হাত ঢুকিয়ে দেয়। মুহূর্তেই মাটি ফুঁড়ে একটি দরজা বের হয়ে আসে। এগিয়ে গিয়ে দরজার সামনে অল্পক্ষণ দাঁড়ায় সে, বুঝতে পারছে তাকে স্ক্যান করা হচ্ছে, কিছু সময়ের মধ্যেই দরজাটা খুলে যায়। একটি পেঁচানো সিঁড়ি মাটির অনেক গভীরে চলে গেছে। ধীরে ধীরে নিচের দিকে নেমে যায় পিপার। কিছুদূর এগিয়ে বিশাল একটা হল ঘরের মত জায়গায় পৌছায় সে। উপস্থিত প্রায় একশ এর মত লোক মুহূর্তেই যে প্রাণবন্ত হয়ে উঠে, কয়েকজন উঠে দাঁড়িয়ে যায়। পিপার সবাইকে আশ্বস্ত করে, “তোমরা কাজ করে যাও, আমি আমি রুটিন ভিজিটে এসেছি, কিছুক্ষণ থেকেই চলে যায়।” বলেই সেন্ট্রাল ট্রান্সমিটিং রুমের দিকে এগিয়ে যায় সে। তার পিছন পিছন ঢুকে বেইজ কমান্ডার লিলি।



সেন্ট্রাল ট্রান্সমিটিং রুমে শ্রেণীবদ্ধ টিউবের মধ্যে শুয়ে আছে দশজন পুরুষ ও দশজন মহিলা, তাদের প্রত্যেকের মাথায় একটা করে হেলমেট লাগানো তা থেকে নানান আকৃতির ও সবুজ রং এর ইলেক্টিক্যাল তার বের হয়ে বিশাল আকারের একটা ডিভাইসের মধ্যে ঢুকেছে। প্রত্যেকটি টিউবের উপর মনিটরের মত একটা ডিভাইসে যাবতিয় ডাটা দেখাচ্ছে সবার, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস, হার্টবিট, লিকুইড ফ্লো-রেট ইত্যাদি নানান ইনফরমেশন। একজন টেকনিসিয়ান কর্মী সর্বক্ষণ সেগুলো মনিটর করছে। কাছে এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করে পিপার, “আর কতক্ষণ আছে এদের সেশন?”



- এই ত স্যার আর কিছুক্ষণ মাত্র, উত্তর দেয় টেকনিসিয়ান মেয়েটি।

পরের টিম রেডি ত? উত্তর যদিও জানেন তবুও জিজ্ঞেস করেন তিনি।



- জ্বি স্যার, তারা সবাই রেডি আছে।



ভাল, হঠাৎ খুব মায়া হয় তার এই সকল স্বেচ্ছাসেবীদের জন্য। কিসের আশায় এরা এত ত্যাগ স্বীকার করছে? বেশিভাগই তো চরম মেধাবী; না হয় অভিজাত পরিবারে ও ধনীর দুলাল, ইচ্ছা করলেই তো হেসে খেলে জীবন পার করে দিতে পারত এরা! ভাবতে ভাবতে নিজের রুমে চলে যান পিপার। পিপার কিকি-এন্টি-ফোটন-কাউন্সিল* এর সুপ্রিম লিডার। সংগঠনটিনর বিভিন্ন শাখা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, এটা তার কেন্দ্রীয় কার্যালয়, খুবই গোপন একটি সংগঠন তবে অন্যান্য এন্টি-ফোটন-কাউন্সিলের মত সহিংস বা উগ্র নয়। এদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রযুক্তির উৎকর্ষের মাধমে শত বছরের এই অভিশপ্ত ফোটন কাউন্সিলের গ্রাস থেকে সমগ্র জাতিকে মুক্ত করা।



পিপারের একমাত্র মেয়ে টুটুর গতকাল মৃত্যুবার্ষিকী গিয়েছে দিনের শুরু থেকে তাই মনটা তার ভার ভার, দীর্ঘ দিন রোগে ভুগে একটু একটু করে মৃত্যুবরণ করে টুটু, এ শোক আজও মেনে নিতে পারেনি সে। টুটুর মৃত্যুই তার মত সহজ সরল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জন শিক্ষককে বিদ্রোহী নেতা হিসাবে দাঁড় করিয়েছে। কিই বা করার ছিল তার! ভয়ংকর জীবানু টিক্সোনে আক্রান্ত হয়েছিল টুটু, এই জীবানু তার শরিরের ক্লোরোপ্লাস্টকে ভেঙ্গে দিচ্ছিল ক্রমাগত, কোন প্রতিষেধক নেই এই রোগের, একটাই চিকিৎসা ক্রমাগত ফোটন থ্যারাপি দেওয়া, যা এখনকার ব্যবস্থায় অসম্ভব ব্যয়বহুল। কিন্তু তার মত মধ্যম আয়ের একজন শিক্ষক এত ক্রেডিট কোথা থেকে পাবে? কাউন্সিলের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে, কেউ এগিয়ে আসেনি। তিলেতিলে মৃত্যু! কিন্তু কেন? প্রকৃতি যে জিনিস বিনামূল্যে দিয়েছে সেটা কেন ক্রেডিটের বিনিময়ে কিনতে হবে! ভয়ংকর ক্রোধ মাথাচাড়া দিয়ে উঠে তার, তারপর ধীরে ধীরে শিক্ষকতা পেশার আড়ালে চরম গোপনীয়তায় গড়ে তোলে এই বিদ্রোহী সংগঠন।



প্রায় বিশ টার্পিক আবর্তন* ধরে সংগঠনটি অহিংস এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, তবে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি নেই শুধু মাত্র সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি ছাড়া। তবে পিপারের বিশ্বাস চূড়ান্ত সাফল্যের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে তারা। খুব তাড়াতাড়িই তাদের এই আন্দোলন বড় ধরণের কোন সাফল্যের মুখ দেখবে। নিজের রুমে বসে নতুন কর্মপন্থা নিয়ে চিন্তা করছিল সে, এমন সময় বেজে ওঠে সপ্তম মাত্রার সাইরেন! এই বেইজে বিশ টার্পিক আবর্তনের প্রথম এত উচ্চমাত্রার সাইরেন! লাফ দিয়ে উঠে সেন্ট্রাল ট্রান্সমিটিং রুমের দিকে দৌড়ে যায় পিপার। সবাই ইতমধ্যে পৌঁছে গেছে সেখানে। নিজের কানকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছে না, আসলেই কি তারা এই এলার্ম শুনতে পাচ্ছে? কাঁপাকাঁপা হাতে মনিটরের উপর কয়েকটা বাটন দ্রুত টিপে দেয় পিপার। সাথেসাথে সামনের স্ক্রীনে ভেসে উঠে অনেকগুলো সংখ্যা,



1 1 2 2 3 2 1 4 2 2 5 2 3 6 2 4 7 2 5 8 2 6 9 2 7 10 2 8 11 2 8 1 12 2 8 2 13 2 8 3



সংখ্যাগুলোর দিকে কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে, হঠাৎ চোখের কোণে কাল একটা আভা মুহূর্তে দেখা দিয়েই মিলিয়ে যায়, কিকি গ্রহের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ পদার্থবিজ্ঞানী পিপার বুকে হাত বুলাতে বুলাতে চেয়ারে বসে পড়েন। সবাই স্তম্ভিত হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে কিছু শোনার আশায়।



“বন্ধুগন বন্ধুগন বন্ধুগন, আমরা শেষ পর্যন্ত আলোর দেখা পেয়েছি”, কণ্ঠ কিছুটা কেঁপেকেঁপে উঠে তার “এত টার্পিক আবর্তন ধরে আমরা যে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি অচিরেই তার অবসান হতে যাচ্ছে এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। তবে চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আমি কোন প্রকার ঝুঁকি নিতে রাজি নই, আমাদের এখনো অনেক পথ যেতে হবে, মনে রাখতে হবে আমাদের লক্ষ্য ফোটন কাউন্সিল হলেও আমাদে মূল লক্ষ্য কিন্তু সিলিকন আমভ্রেলা সিস্টেম, কারন একটি ফোটন কাউন্সিলকে ধ্বংস করলে আরেকটা কাউন্সিল দাঁড়িয়ে যাবে, তাই শোষণের মূল হাতিয়ারের বিরুদ্ধে আমাদের এই যুদ্ধ। আমি আজ আপনাদের জানাতে চাই, আমরা অসীম এই মহাবিশ্বে এমন এক বুদ্ধিমান প্রাণের সন্ধান পেয়েছি যারা জ্ঞান-বিজ্ঞানে প্রায় আমাদের সমকক্ষ। এটাই আমাদের মূল শক্তি হিসাবে ব্যবহৃত হবে ফোটন কাউন্সিলের বিপক্ষে।”, কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে আবার বক্তব্য শুরু করেন পিপার, “এখন অনেক কাজ বাকি, সবাই সাধ্যের শেষ বিন্দুটুকু দিয়ে এগিয়ে আসতে হবে, প্রয়োজনে মৃত্যুকেও চোখ রাঙ্গাতে হবে। মনে রাখতে হবে ইতিহাসের শিক্ষা হল ‘প্রকৃত বিপ্লবী বিপ্লবের স্বাদ গ্রহণের জন্য বেঁচে থাকে না’। আমাদের বিপ্লব আগামী প্রজন্মের জন্য, শোষণহীন সমাজের জন্য।”। দীর্ঘ বক্তৃতা দিয়ে একটু হাঁপিয়ে উঠেন পিপার, গালভরে পানি পান করে একটু স্বস্তি পান, তারপর দ্রুত হাতে কাছে টেনে নেন ছোট আকারের তার প্রিয় কম্পিউটার; অনেক কাজ বাকী, আজ থেকে বিপ্লবে যুক্ত হলো নতুন মাত্রা।



তন্ময় হয়ে শুনছিল সবাই সুপ্রীম কমান্ডারের কথা, বক্তৃতা শেষ হতেই ছেড়ে দেওয়া স্প্রিং এর মত লাফিয়ে উঠে তারা, মৌচাকের মত কর্মচঞ্চল হয়ে উঠে সম্পূর্ণ বেইজ মুহূর্তের মধ্যে। সবার চোখে মুখে দীপ্ত প্রত্যয়ের স্পষ্ট ছাপ।



তিন.

সুন্দর গোছানো ড্রয়িং রুম, ঝকঝক তকতক করছে প্রতিটি আসবাব; কোথাও বিন্দু পরিমান ধুলোকনা নেই; দেয়ালের ঘড়িটাও টিকটিক করে চলছে সেকেন্ডের সাথে তাল মিলিয়ে, ছয়টা বেজে দশ। দেয়ালে কিছু অদ্ভুত রকমের পেন্টিং ঝুলে আছে, এটা আজকাল আভিজাত্যের লক্ষন। বোঝাই যাচ্ছে প্রফেসর সাহেবের রুচি আছে। নিজের পায়ে স্যান্ডেল-সু এর দিকে আড়চোখে তাকায় সে, হালকা রং চটে গেছে, পায়ের আঙ্গুলগুলো মাথা দিয়ে বের হয়ে আছে, বৃদ্ধাঙ্গুলের নখটা হালকা বড় হয়ে উদ্ভট ভঙ্গীতে বেকে আছে, এত ছিমছাম ঘরের মধ্যে নিজেকেই কেমন যেন উটকো লাগে রায়হানের। কাজের মেয়ে সেই যে কতক্ষণ আগে বসিয়ে রেখে গেছে আর কোন খবর নেই, আদৌ কী তার কথা ভিতরে বলেছে সে? কে জানে! অভিজাত শ্রেণীর অন্দরমহলের পরিচারিকাদের স্ট্যাটাস অন্যদের চেয়ে ঢের উপরে, তাদের ঠাটবাটই আলাদা। এত ভোরে কারও বাসায় এসে বিরক্ত করাটাও শোভন দেখায় না, তাকে যে ঢুকতে দিয়েছে এইত বেশি, অবশ্য সে জন্য একটু মিথ্যা কথা বলতে হয়ছে গেটে। রিকশা থেকে নেমে খুব প্রত্যয়ের সাথে বলেছে প্রফেসর চাচা আছেন? গ্রাম থেকে এসেছি, উনি আমার চাচা হন। গেটে দারোয়ান আর কিছু বলেনি। বোঝাই যাচ্ছে গ্রাম থেকে প্রায়ই এমন কেউ না কেউ আসে।



পাক্কা এক ঘন্টা বিশ পর নিচে নেমে আসেন ডঃ প্রফেসর কামরুল হাসান, এই সময়ের ঢাকা ইউনিভার্সিটির ফিজিক্সের হেড ও স্ট্যাটিস্টিক্যাল-কোয়ান্টাম-মেকানিক্সের সেরা শিক্ষক। শুধু সেরা শিক্ষক বললে কম বলা হবে, বর্তমান সময়ে হাতেগোনা যে কজন কোয়ান্টাম মেকানিক্সের স্ট্রিং-থিউরী শাখায় কাজ করছেন তিনি তাদের অন্যতম। চেহারার মধ্যে আভিজাত্যের ছাপটা স্পষ্ট, মোটা ফ্রেমের হাই পাওয়ারের চশমা, টিকোল নাক, তার ঠিক নিচেই ভয়ংকর দর্শন পুরু দারোগা টাইপ গোঁফ, প্রফেসরদের এমন গোঁফ থাকতে পারে না দেখলে বিশ্বাস করত না রায়হান; ব্যাকব্রাশ করা ঘন কাঁচা পাকা চুলের সংমিশ্রিণ, যা তার চেহারায় জ্ঞানী জ্ঞানী ভাব ফুটিয়ে তুলেছে।



উঠে দাঁড়িয়ে সালাম দেয় রায়হান।



- আরে বস, বস; সালামের উত্তর দিয়ে বলেন তিনি। চুল থেকে পা পর্যন্ত তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করেন তিনি রায়হানকে। কপালে মৃদু ভাঁজ ফেলে বুঝতে চেষ্টা করছেন এত সকালে তার এখানে আসার উদ্দেশ্য। এমন উটকো ঝামেলায় প্রায়ই তাকে পড়তে হয় ডিপার্টমেন্টে। কোথা থেকে হাজির হয় উদ্ভট সব প্রকল্প নিয়ে, ‘বিনা জ্বালানীতে বিদ্যুৎ উৎপাদন, অথবা কোন শক্তি ছাড়া কন্টিনিয়াস যন্ত্র, অথবা ফুয়েলবিহীন গাড়ি’ যেগুলো সবগুলোই ভুয়া না হয় আউটপুট থেকে ইনপুট বেশি, কিন্তু তারা কখনো বাসায় আসে না। ছেলেটাকে দেখে সেরকম মনে হচ্ছে না তার।



স্যার আমি আপনার একজন ভক্ত।



- একটু বিরক্ত হয় প্রফেসর কামরুল। এই সাত সকালে ভক্তের দেখা পাওয়ায় তিনি মোটেও প্রীত হননি। আর তিনি তো কোন সেলিব্রেটি না, না কোন রাজনীতিবিদ যে তার অগনিত ভক্ত থাকবে। ইউনিভার্সিটির বাইরে তাকে কেউই তেমন একটা চেনে না, এমনকি ঢাবির তার মত হাজার হাজার শিক্ষক আছে, নিজের ডিপার্টমেন্ট ছাড়া কে কার খবর রাখে? তিনি হালকা হাসি দিয়ে বিরক্তভাবটা গোপন করে জিজ্ঞাসু নয়নে তার দিকে তাকিয়ে থাকেন, যেন ‘ঠিক আছে, বুঝলাম; এখন তোমার আর কিছু কি বলার আছে?’ এমন ভাব।



আসলে রায়হান আলাপচারিতা এভাবে শুরু করতে চায়নি, কিন্তু সারা রাত না ঘুমিয়ে ক্লান্তিকর ট্রেন ভ্রমন করে সে ঢাকায় এসেছে, তাই মাথাটা একটু ধরা ধরা লাগছে। “স্যার আমি আসলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষে পড়ি। ছোট বেলা থেকে আমার ইচ্ছা ছিল ফিজিক্সে পড়া, জন্মগতভাবে আমার ব্রেনের গঠন এমন এ আমি খুব সহজেই ফিজিক্সের অনেক কিছু বুঝে যাই, আর নিজেকে সেভাবেই প্রশিক্ষিত করি ছোট বেলা থেকেই। যেকোন ঘটনাকে আমি সমীকরনের মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারতাম, চোখ বুজলেই আমার সামনে নানান সমীকরন নেচে বেড়াতে থাকে। কিন্তু দেশের এডমিশন পরীক্ষার সিস্টেমের যে অবস্থা! ঢাবিতে চান্স পাইনি। এমন কি ফিজিক্স পাইনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়েই। শেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদবিদ্যার চান্স পেয়ে সেখানে পড়ছি। কিন্তু আমি রুমমেট বেছে বেছে নিয়েছি ফিজিক্সের ছাত্র সেই সুবাদের ফিজিক্সের ক্লাসগুলো করছি, আর লাইব্রেরী ও ইন্টারনেট ত আছেই। সারাদিন ফিজিক্স নিয়েই থাকতাম, আমার পছন্দের বিষয় হল স্ট্রিং থিওরী, এই বিষয়ে যত নতুন নতুন রিসার্চ পেপার বের হত সব আমার পড়া”, প্রাথমিক ধাক্কাটা কাটিয়ে কিছুটা গুছিয়ে বলে রায়হান।



- এবার কিছুটা কনফিউসড হয়ে যান প্রফেসর কামরুল হাসান। ছেলেটা কি চাচ্ছে? সে কি ফিজিক্সে এডমিশনের কোন সুযোগ খোঁজছে? না কি অন্য কোন কাহিনী? ভাবলেশহীন চোখে তার দিকে তাকিয়ে থাকেন তিনি।



কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে আবার শুরু করে রায়হান, “হঠাৎ করে অনেকটা ভাগ্যগুনেই কয়েকদিন আগে নিউকোভিচ ক্লোরোপ্লাস্টিক প্যাটার্ন সম্পর্কে জানতে পারি, ঠিক সেই সময় আমি ইউনিফাইড-স্ট্রিং থিউরী নিয়ে কাজ করছিলাম। বিচিত্র কিছু কারনে আমার সমীকরন ইউনিফাইড-স্ট্রিং সমীকরনের সাথে মিলছিল না। আমি ভেবেছিলাম কোথাও নিশ্চয় ভুল করছি, কিন্তু পরে বুঝতে পারি এটা আমার ভুল না, পূর্বের সমীকরনই ভুল ছিল, আমি শুধু ইউনিফাইড-স্ট্রিং থিউরীর সমীকরনই বের করেনি, সেই সাথে এটা দিয়ে নিউকোভিচ ক্লোরোপ্লাস্টিক প্যাটার্ন এই সমস্যার সমাধান করে তা প্রমাণও করেছি”।



- এইবার প্রফেসর বুঝতে পারেন রায়হানকেও সেই পাগলামোতে পেয়েছে যারা কিছুদিন পরপর উদ্ভোট প্রকল্প নিয়ে হাজির হয়। কিছুটা বিরক্ত ফুটিয়ে তুলে তিনি বলেন, “যতটুকু জানি ‘নিউকোভিচ ক্লোরোপ্লাস্টিক প্যাটার্ন’ এটা উদ্ভিদবিদ্যার অন্তর্ভুক্ত; তাহলে ফিজিক্সের টিচার হিসাবে আমি তোমার জন্য কি করতে পারি?”



স্যার, আগামী মাসে মিউনিখে স্ট্রিং থিউরী নিয়ে যে আন্তর্জাতিক একটা সম্মেলন হবে আপনি সেখানে প্রথম সারিতেই থাকবেন, আমি চাই আপনি সেখানে এই ফলাফল প্রকাশ করেন। আর বিষয়টা মোটেও উদ্ভিদবিদ্যার অন্তভূক্ত নয়, আমি ‘নিউকোভিচ ক্লোরোপ্লাস্টিক প্যাটার্ন’ ব্যাবহার করেছি শুধু মাত্র আমার থিউরি প্রমাণ করার জন্য, এটা মূলত কোয়ান্টাম-ম্যাকানিক্সের স্ট্রিং থিউরির অন্তভুক্ত।



-এবার বিরক্তিটা আর চেপে না রেখে তিনি বললেন, “তুমি কীভাবে ভাবলে এটা প্রকাশের যোগ্য, তার উপর সেখানে কি উপস্থাপন করা হবে সে সব তো অনেক আগেই চূড়ান্ত হয়ে গেছে, আর তোমার ফলাফল আমি কেন প্রকাশ করব?”



ব্যাগ থেকে এক বান্ডিল প্রিন্ট করা কাগজ বের করে রায়হান বলল, “স্যার, আপনি শুধু এইগুলো একবার পড়ে দেখেন, বাদবাকী আপনার ইচ্ছা। এ ফলাফল প্রকাশ করার মত প্লাটফর্ম আমি পাব না, আমার কথা কেউ শুনতেই চাইবে না বিশ্বাস করা তো পরের ব্যাপার, আর এই সেনসেটিভ বিষয়টা আমি ভুল হাতে পড়ুক তা চাই না, কেন চাই না সেটা রিপোর্টটা পুরোটা পড়লেই আপনার কাছে ক্লিয়ার হয়ে যাবে।”



- “আচ্ছা, রেখে যাও, আমি সময় করে পড়ে দেখব।”, বলেই হাতঘড়িতে সময় দেখে, বা হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল আর তর্জনি পুরু গোফ বরাবর চালিয়ে থুতুনি পর্যন্ত বুলাতে বুলাতে চোখ নাচিয়ে যেন বলতে চাইলেন যে বাছা আর কিছু কি চাই তোমার ? না হলে আমি খুব ব্যস্ত আছি তুমি এবার আসতে পার।



সালাম দিয়ে বের হয়ে আসে রায়হান, প্রথম ইম্প্রেশনটা একেবারে খারাপ হয়নি। বের হতে হতে শুনতে পায় প্রফেসর সাহেব কাজের মেয়েটিকে ডেকে তার রিপোর্টটা বেড সাইড টেবিলের উপর রেখে আসতে। ঠোঁটের কোনে হাসি মৃদু উকি দিয়ে মুহূর্তেই মিলিয়ে যায় তার। আজ ‘নিউকোভিচ ক্লোরোপ্লাস্টিক প্যাটার্ন’ এর উপর এসাইনমেন্ট জমা দেওয়ার কথা প্রোফেসর তোফাজ্জল হোসেনের কাছে, স্যার নিশ্চয় তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন আর পরীক্ষায় কিভাবে সায়েস্তা করবেন তা ভাবছেন।



বাসায় ফিরতে ফিরতে প্রায় মধ্যাহ্ন, সকাল থেকে আজ বেশ ধকল গেছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে মিটিং ছিল, এই সকল সরকারি মিটিং গুলোতে যা হয়, কাজের চেয়ে অকাজই বেশি, তৈলমর্দন ও অহেতুক সময়ক্ষেপণ; প্রফেসর কামরুল হাসান সাহেব এধরনের মিটিং গুলোতে সবসময় অনেক আকাঙ্খা নিয়ে আসেন আর একরাস আশাভঙ্গের বেদনা নিয়ে বের হন। আজ প্রথম থেকেই অন্যমনষ্ক ছিলেন, মাথার মধ্যে সকালের ঘটনাই ঘুরে ফিরে আসছিল বারবার; ছেলেটার চোখে অন্যরকম কী যেন একটা আছে। কোন রকমে লাঞ্চ সেরেই বিছানায় শুয়ে শুয়ে রায়হানের রিপোর্ট পড়তে শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে বসে পড়েন তিনি, তারও কিছুক্ষণ পর প্রায় দৌড়িয়ে নিজের স্টাডিরুমে ঢুকেন, দরজা বন্ধ করে পড়তে থাকেন রায়হানের রিপোর্ট। মাথা ঘুরছে তার, কী পড়ছেন তিনি এটা! নিজের চোখকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না!



বোসনিক স্ট্রিং থিউরী অনুযায়ী ইউনিভার্স ছাব্বিশ মাত্রার কিন্তু সুপার-স্ট্রিং থিউরি* অনুসারে ইউনিভার্স এগার মাত্রার; এ দুই থিউরির সীমাবদ্ধতাগুলোকে সমাধান করে ইউনিফাইড-স্ট্রিং* থিউরির মাধ্যমে ইউনিভার্সকে ছয় মাত্রায় সঙ্গায়িত করেন এই শতকের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী স্যার জোহান কোনাল, এর জন্য তিনি নোবেল পুরুষ্কার পান গতবছর। আর রায়হান এই ইউনিফাইড-স্ট্রিং* থিউরিকে সংশোধীত করে ইউনিভার্সকে নিয়ে এসেছে পাঁচ মাত্রায় আর অবশিষ্ঠ একটি মাত্রাকে গ্র্যাভেটি স্ট্রিং হিসাবে দেখিয়েছে। ব্রিলিয়েন্ট অবজার্বেশন! এই গ্র্যাভেটি স্ট্রিং কখনো মাত্রা হিসাবে আবার কখনো স্ট্রিং হিসাবে আচরন করে। রায়হানের সমীকরন অনুসারে স্ট্রিং দুই প্রকার, অবজেক্ট স্ট্রিং ও গ্র্যাভেটি স্ট্রিং। একমাত্রার অবজেক্ট স্ট্রিং গুলো; X, Y, Z এই তিনটি মাত্রা বরাবর বিভিন্ন কম্পাঙ্কে প্রকম্পিত হয়ে স্থান (স্পেস) তৈরি করে, আর সময় মাত্রা T বরাবর প্রকম্পিত হয়ে একত্রে চার মাত্রার স্থান-সময় (স্পেস-টাইম) তৈরি করে। আর গ্র্যাভেটি স্ট্রিং গুলো এই চার মাত্রার স্পেস-টাইমের মধ্য দিয়ে সময় মাত্রাকে স্থির রেখে, শুণ্য সময়ে অসীম দূরত্ব অতিক্রম করে অথবা স্থানকে স্থির রেখে শুণ্য স্থানে অসীম সময় অতিক্রম করে।



দুকান দিয়ে যেন আগুনের হলকা বের হচ্ছে প্রফেসর কামরুল হাসান সাহেব, বাঁ হাতের কব্জি উল্টিয়ে সময় দেখেন তিনি, রাত সাড়ে নয়টা বাজে! ইন্টারকমে ড্রাইভারকে গাড়ি বের করতে বললেন তিনি। সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করার মত অবস্থা তার অবশিষ্ট নেই। পথিমধ্যে গাড়ি থামিয়ে রাস্তার পাশের একটা গাছ থেকে একডালা পাতা পেড়ে নেন তিনি। এত রাতে কামরুল স্যারকে হাতে করে গাছের ডাল নিয়ে ল্যাবে আসতে দেখে মোটেও অবাক হয় নি নাইটগার্ড, তার বিশ বছরের নাইটগার্ড জীবনে প্রফেসরদের অনেক পাগলামো দেখেছে, যেন কিছুই হয়নি এমন ভাবলেসহীন ভাবে সে ল্যাবের দরজা খুলে দিয়ে বাহিরের টুলে বুসে ঝিমুতে থাকে যথারীতি।



প্রায় পাঁচ ঘন্টা টানা কাজ করার পর সবকিছু সেট হয়, তিনটি পৃথক পাতাকে একটা বায়ুশুন্য টিউবে রেখে কয়েকটা তার এর মধ্যে জুড়ে দেন তিনি। এবার তিনি পরমানুর পিরিউডিক টেবিল খুলে বসেন, যদিও প্রত্যেকটি পরমানুর ইলেকট্রন সংখ্যা ও বিন্যাস তার মুখস্ত তবুও কোন ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। আরও একবার তার সেট করা মেসেজটার সাথে পিরিওডিক টেবিলে পরমানুর অর্বিট অনুসারে ইলেকট্রনের বিন্যাস মিলিয়ে দেখেন তিনি,



সিরিয়েল ----পরমানু ------ ইলেক্ট্রোন সংখ্যা অর্বিট অনুসারে

১ ---------- হাইড্রোজেন ---------- ১

২ ---------- হিলিয়াম -------------- ২

৩ ---------- লিথিয়াম -------------- ২,১

৪ ---------- ব্যারিলিয়াম ----------- ২,২

৫ ---------- বোরন ------------------২,৩

৬ ---------- কার্বন ------------------২,৪

৭ ---------- নাইট্রোজেন ----------২,৫

৮ ----------অক্সিজেন ------------ ২,৬

৯ ---------- ফ্লোরিন ----------------২,৭

১০ ----------নিয়ন -----------------২,৮

১১ ----------সোডিয়াম ----------- ২,৮,১

১২ ----------ম্যাগনেশিয়াম ------- ২,৮,২



হুমম, সব ঠিক আছে, তার ম্যাসেজটা দাঁড়ায়,

১,১,২,২,৩,২,১,৪,২,২,৫,২,৩,৬,২,৪,৭,২,৫,৮,২,৬,৯,২,৭,১০,২,৮,১১,২,৮,১,১২,২,৮,২



লম্বা করে একটা দম নিয়ে কিছুক্ষণ তা আটকে রাখেন, তারপর পাওয়ার সুইচটা অন করে মনিটরের দিকে তাকিয়ে থাকেন এক দৃষ্টিতে। ইলেকট্রনিক মাইক্রোস্কোপের* ভিডিও আউটপুট আসছে এই মনিটরে, একেক মুহূর্ত যেন একেক যুগের মত লাগছে তার কাছে, নিজের নিঃশ্বাসের শব্দও তার কানে আসছে। ঠিক একশ সত্তর সেকেন্ড পর; মনিটরে পাতার কোষের ক্লোরপ্লাস্টগুলোকে নড়ে উঠতে দেখেন তিনি। কিছুক্ষণ বিক্ষিপ্তভাবে ঘুরতে থাকে ক্লোরপ্লাস্টগুলো, আরও কিছুক্ষণ পর একটা প্যাটার্নে রূপ নেয় তা, ‘নিউকোভিচের প্যাটার্ন’ অনুযায়ী কিছুক্ষণের মধ্যে তা আবার আগের প্যাটার্নে ফিরে আসার কথা; কিন্তু যদি রায়হানের থিউরি ঠিক হয় তাহলে নতুন কোন প্যাটার্ন পাওয়া যাবে। চোখের পাতা নাড়াতেও ভয় পাচ্ছেন প্রফেসর সাহেব। আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর পাওয়ার সাপ্লাই বন্ধ করে দেন তিনি। অবাক হয়ে দেখেন এখনো কোন পরিবর্তন নেই প্যাটার্নে। ক্লোরপ্লাস্টগুলো তার কোডিং করা প্যাটার্নেই আছে, নতুন কোন প্যাটার্নে রুপ নিচ্ছে না আবার নিউকোভিচ প্যাটার্নও হচ্ছে না। এসির ঠান্ডার মধ্যেও রীতিমত ঘামতে থাকেন তিনি, সার্টের উপরের দিকের কয়েকটি বোতাম খুলে দিয়ে নিজের অজান্তেই হাতের কাগজগুলো দিয়ে বাতাস করতে থাকেন তিনি। প্রায় পনের মিনিট পর; ভিডিওতে হঠাৎ ক্লোরপ্লাস্টগুলো তৎপর হয়ে উঠে, কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্লোরপ্লাস্টগুলো নড়েচড়ে একটা প্যাটার্নে দাঁড়িয়ে যায়, অবাক হয়ে কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করেন তিনি প্যাটার্নটা। মাই গড! ও মাই গড!! বলতে বলতে তিনি চেয়ারটায় বসে পড়েন।



চার.

বিকাল বেলায় রাস্তায় হাঁটছে পিপার। মনটা একটু বিষন্ন, যে গতিতে তাদের কার্যক্রম চলবে বলে তিনি আশা করেছিলে সেভাবে চলছে না। আজ একটা গোপন মিটিং আছে বেইজ কমান্ডার লিলির সাথে, মেয়েটা বেশ চটপটে আর ব্রিলিয়ান্ট, একটাই সমস্যা একটু বেশি ইমোশনাল, সেই ভাল; ইমোশন না থাকলে কি কেউ বিপ্লবপন্থীদের দলে নাম লেখাতে পারে? মাথা নিচু করে হাঁটছেন তিনি, চোখে তার মুক্তির স্বপ্ন, তার মন বলছে আর বেশি দেরি নেই, খুব তাড়াতাড়িই আসবে তাদের বহুকাঙ্খিত সফলতা। রেস্তোরাঁয় ঢুকেই তিনি দেখেন এক কোণায় চেয়ার পেতে বসে আছে লিলি। হাত নাড়িয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে সে। কাছে আসতেই তাকে জড়িয়ে ধরে দুগালে হালকা চুমু খায়, যেন কোন এক প্রেমিক জুটি, ডেটিং এ এসেছে।



- কি খবর লিলি? পরিবার কেমন আছে?



এইত ভাল, পরিবারও ভাল চলছে।



- তোমাদের প্রোগ্রেস কতটুকু?



তারা আমাদের তুলনায় বার টার্পিক বছর পিছিয়ে আছে। আপনি যে সময়টাতে গ্র্যাভেটি স্ট্রিং থিউরির প্রবর্তন করেন তারা এখন সেই স্টেজে আছে। তাদের কাছ থেকে খুব একটা সাহায্য পাব বলে তো আমার মনে হচ্ছে না!



- সভ্যতা ও বুদ্ধিমত্ত্বার বিকাশটা কিন্তু খুবই অদ্ভুত, এই যে আমরা এই গ্রহে আধিপত্য স্থাপন করে আছি, আমরা কি সর্ববিষয়ে বাদবাকি প্রাণীদের চেয়ে বুদ্ধিমত্তায় এগিয়ে? তাদের কাছ থেকে হয়ত গতানুগতিক প্রযুক্তিগত কোন সাহায্য হয়ত পাব না, তবে এমন কোন সাহায্য হয়ত পেয়ে যাব যেটা আমাদের ধারনারও বাইরে। তবে বিনিময়ে তারা কি চায় সেটাই এখন আমাদের বের করতে হবে। তোমার যাই মনে হোক, আমার বিশ্বাস খুব অচিরেই সবকিছুর অবসান ঘটবে। কি নিবে বলো?



না পিপার, তুমিত জান আমি চফয় কিছু নেই না। আর এত দামী রেস্তোরাঁয়ত প্রশ্নই উঠে না।



- কিছু না নিলে সন্দেহ করবে, আমি স্পেশাল ফোটন ভেনিলা অর্ডার দিচ্ছি। তাদের সাথে যোগাযোগ এখন কোন পর্যায়ে আছে?



সেটাই এখন এক বিশাল সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে, তাদের সাথে আমাদের ভাষা ও কালচারের বিস্তর তফাৎ। তাদের প্রথম মেসেজ ছিল এক থেকে বার পর্যন্ত পরমানুর ইলেক্ট্রোন বিন্যাস আর আমাদের ফিরতি রিপ্লাই ছিল তের থেকে চব্বিশ পর্যন্ত পরমানুর ইলেক্ট্রোন বিন্যাস। সেদিন তো আপনিও বেইজে ছিলেন। আমাদের এখন একটা কমন ভাষা বের করতে হবে, যার মাধ্যমে আমার মেসেজ আদান প্রদান করতে পারব। আপাতত আমরা প্রাইম সংখ্যা ও বিভিন্ন সিরিজ আদান প্রদান করছি।



- কতদিন লাগতে পারে কমন ভাষা বের করতে?



সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না, তবে আমাদের প্রাইমারি অবজেকটিভ এখন এটাই, আমি সব রিসোর্স এই কাজেই লাগিয়েছি।



- তাড়াতাড়ি কর; কাজের গতি আরও বাড়িয়ে দাও, আর আমরা যে এই গ্রহের বিপ্লবী গ্রুপ এটা তাদের এখনই জানানোর দরকার নেই। ভাষাটা ঠিক মত আয়ত্ব হয়ে গেলে তাদের সর্বোচ্চ প্রতিনিধির সাথে আমার একটা আলোচনার ব্যবস্থা করবে।



ঠিক আছে; আমি রেগুলার তোমাকে সব খবর জানাব। তোমাকে কেমন যেন একটু চিন্তিত মনে হচ্ছে?



- একটা ঝামেলা হয়ে গেছে। আমাদের তিন নাম্বার বেইজের একজন টেকনিক্যাল এনালিস্ট ধরা পড়ে গিয়েছিল, তবে কোন ইনফরমেশন নিতে পারেনি, তার আগেই সে হিপ্পোমানির* ক্যাপসুল ফাটিয়ে দেয়। সে সহ তিনজন এজেন্ট মারা যায় সাথে সাথে। ঐ এনালিষ্ট আমার প্রাক্তন ছাত্র ছিল বলে আজ সকালে কয়েকজন কাউন্সিলের এজেন্ট তার ব্যাপারে খোঁজখবর করতে এসেছিল। সতর্ক থেকো আগামী কয়েকদিন। অবশ্য সাবধানের থেকেও কোন লাভ নেই, মনে দুঃশ্চিন্তটা আবার ভর করে পিপারের মনে। সামনে অনেক মৃত্যু, অনেক ধ্বংস অপেক্ষা করছে, ফোটন কাউন্সিল সহজে ছেড়ে দেবে না।



রেস্তোরাঁ থেকে হাত ধরাধরি করে বের হয়ে আসে পিপার ও লিলি। আকাশের দিকে মুখ তুলে তাকায় পিপার। পুরো আকাশ ঢেকে আছে সিলিকামভ্রেলার* চাদরে। সে জীবনে মুক্ত আকাশ দেখেনি, দাদার কাছে গল্প শুনেছিল মুক্ত আকাশ নাকি ভয়ংকর অকল্পনীয় সুন্দর আর নীলাভ রঙের। যে করেই হোক এই মুক্ত আকাশ আবার মুক্ত করতে হবে তাকে; যে করেই হোক।



পাচ.

মিউনিখে আজ স্ট্রিং থিউরির দ্বাদশ কনফারেন্সের শেষদিন। এধরনের কনফারেন্সে নতুন তেমন কিছু হয় না আজকাল, কালেভদ্রে দুএকজন নতুন কিছু উপস্থাপন করতে পারে, বাকি সবই চর্বিতচর্বন; আর শেষের দিনে সাধারনত হাই-হ্যালো, খবরা খবর নেওয়া, খাওয়া দাওয়া ও সবশেষে সভাপতির সমাপনি বক্তৃতা এই তো হয়। কিন্তু এই শেষের দিনেই যে শতাব্দির সেরা চমক অপেক্ষা করছিল সেটা মনে হয় কেউ ঘুনাক্ষরেও টের পায়নি। সবাই ছোট ছোট গ্রুপে গল্প করছিল, কয়েকজন খাওয়া দাওয়ায় ব্যস্ত, এমন সময় ধীরে ধীরে স্টেজে উঠলেন প্রফেসর কামরুল হাসান। মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে তিনি বলেল, “প্রিয় বন্ধু ও সহকর্মীবৃন্দ, আমরা মনে হয় এই দ্বাদশ কনফারেন্স খুব সফলভাবেই শেষ করতে পেরেছি। কিন্তু আমি আপনাদের এখন যে কথাটা বলতে স্টেজে উঠেছি সেটা না বলা পর্যন্ত এই সম্মেলন পূর্ণতা পেতে পারে না আমি নিশ্চিত।”, সবাই একটু নড়েচড়ে বসে তার কথায়; তৃতীয় বিশ্বের প্রতিনিধি হলেও প্রফেসর কামরুল হাসানের নাম উচ্চারন হয় বিশ্বে অনেক বাঘা বাঘা বিজ্ঞানীর সাথে একটু দম নিয়ে তিনি আবার শুরু করেন, “আমি আজ এমন একটি বিষয় নিয়ে উপস্থিত হয়েছি যা আধুনিক বিজ্ঞানের কোয়ান্টাম ফিজিক্সের ভিত্তি নাড়িয়ে দিবে আরও স্পেসিফিক্যালি বলতে গেলে স্ট্রিং থিউরি সম্মন্ধে আমাদের এতদিনের ধারনা আমূল পাল্টে দিবে।”, উপস্থিত বিজ্ঞানিদের মধ্যে মৃদু গুঞ্জন শুরু হয়। “আমি আর সময়ক্ষেপণ না করে স্টেজে ডাকছি রায়হান ভূঁঞা কে, আমার দৃঢ় বিশ্বাস আপনারা নিরাশ হবেন না”।



মাথা নিচু করে ইতস্থত পা ফেলে স্টেজের দিকে এগিয়ে যায় রায়হান। বিশ্বের এত বড় বড় নামকরা বিজ্ঞানীদের মাঝে তার থিউরি উপস্থাপন করতে হবে ভাবতে তার ঘাম ছুটে যাচ্ছে, সম্পূর্ণ হল সেন্ট্রালি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হলেও তার কপালে মৃদুমৃদু ঘামের ফোঁটা চিকচিক করে ওঠে। প্রফেসর তার চোখের দিকে তাকিয়ে তাকে আশ্বস্ত করে, অভয় দেয়। বুকে কিছুটা বল ফিরে পায় রায়হান। ধীরে ধীরে তার থিউরি উপস্থাপন শুরু করে সে; কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রাথমিক জড়তা কাটিয়ে প্রচন্ড আত্মবিশ্বাস ফিরে আসে তার, সারা হল জুড়ে তখন শুধু রায়হানের কণ্ঠ প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। একে একে ব্যাখ্যা করতে থাকে তার মাত্রার সমীকরনগুলো, গ্র্যাভেটি স্ট্রিং ও অবজেক্ট স্ট্রিং নিয়ে তার সমীকরনের পর্যায়গুলো, কিভাবে X,Y ও Z মাত্রায় অবজেক্ট স্ট্রিং গুলো নির্দিষ্ট কম্পাংকে প্রকম্পিত হয়ে ‘স্পেস, মৌলিক কণা ইলেক্ট্রোন, প্রোটন, নিউট্রন’ ইত্যাদি গঠন করে, আর T বারার স্ট্রিং গুলো নির্দিষ্ট কম্পাংকে প্রকম্পিত হয়ে ‘টাইম’ গঠন করে, কীভাবে এই চারমাত্রা একীভূত হয়ে স্পেস-টাইম তৈরি করে। পিনপতন নিঃস্তব্ধতা বিরাজ করছে হল জুড়ে। সবাই যেন নিঃশ্বাস ফেলতেও ভুলে গেছে। লেকচারের শেষের পর্যায়ে এসে সে ব্যাখ্যা করতে থাকে কিভাবে গ্র্যাভেটি স্ট্রিং গুলো এই চার মাত্রার স্পেস-টাইমের মধ্যে ঘুরে বেড়ায় শুন্য সময়ে অসীম দূরুত্ব অথবা শূন্য দূরত্বের অসীম সময়ে, কিভাবে এই গ্র্যাভেটি স্ট্রিং গুলো টাইম ও স্পেসের মধ্যে ভ্রমন করে অবজেক্ট স্ট্রিং গুলোকে প্রভাবিত করে স্পেসের গঠন বদলে দিতে পারে; এই সব নিয়েই আমাদের পঞ্চমাত্রার ইউনিভার্স। প্রায় ঘন্টাখানেক পর শেষ হয় তার প্রেজেন্টশনের প্রথম পর্ব।



সবাই মনে হয় ঘোরের মধ্যে চলে গেছে। একে অপরের দিকে তাকাছে জিজ্ঞাসু নয়নে, কোন কথা বের হচ্ছে না তাদের মুখ দিয়ে; শুধু ভাবছে “কি বলছে এই ছেলে?”



সাময়িক বিরতির পর শুরু হয় লেকচারের দ্বিতীয় পর্যায়। আমি এবার আপনাদের একটা পরীক্ষার ফলাফল ব্যাখ্যা করব যেটা আমাদের এই থিউরি কে প্রমাণ করবে। খুবই সহজ একটা পরীক্ষা। আমরা সবাই জানি প্রায় চার যুগ ধরে আমরা মহাশূন্যে বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সির সিগনাল প্রেরণ করে যাচ্ছি এই আশায় যে ভিনগ্রহের কোন বুদ্ধিমান প্রাণী হয়ত আমাদের মেসেজ পেয়ে আমাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করবে, কিন্তু এই মহা মহাশূন্যে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ আলোক বৎসর পার হয়ে এই মেসেজ কেউ পাবে আবার রিপ্লাই দিলেও আমরা রিসিভ করতে পারব সেটা একেবারে সুদূরপরাহত চিন্তা। আসলে প্রায় আট যুগ ধরে আমরা নিজেরাই একটা সিগলান রিসিভ করে যাচ্ছি তবে এটার অর্থ বের না করতে পারার কারনে যোগাযোগ স্থাপণ সম্ভব হয়নি। জ্বী, আপনারা ঠিকই ধরতে পেরেছেন, আমি ‘নিউকোভিচ ক্লোরপ্লাস্টিক প্যাটার্নের’ কথাই বলছি।



উপস্থিত শ্রোতাদের মধ্যে একটা গুঞ্জণ শুরু হয়, কী বলছে এই ছেলে! এও কী সম্ভব?



ভিনগ্রহের কোন বুদ্ধিমান প্রাণী হয়ত হাজার বছর ধরে আমাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে যাচ্ছে, এই নিউকোভিচ প্যাটার্নের মাধ্যমে, আর আমরা এই প্যাটার্ন দেখতেই পেয়েছি ১৯৩৫ সালে আর এখন এর মর্মোদ্ধার করতে পেরেছি। ঐ বুদ্ধিমান প্রাণীরা গ্র্যাভেটি স্ট্রিং এর মাধ্যমে আমাদের পৃথিবীর গাছের পাতার মধ্যে যে ক্লোরপ্লাস্ট আছে সেগুলোকে একটা প্যাটার্নের মত করে সাজিয়ে রেখেছে। গ্র্যাভেটি স্ট্রিং যেহেতু শূন্য সময়ে অসীম দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে তাই আমার এই প্যাটার্ন বিশৃঙ্খ করে দিলেও মুহূর্তেই আবার আগের প্যাটার্নে ফিরে আসে। ভিন গ্রহের প্রাণীরা গ্র্যাভেটি স্ট্রিং গুলোকে যে ফ্রিকোয়েন্সিতে কম্পিত করে আমাদের এই প্যাটার্ন পাঠাচ্ছে আমার সেই একই ফ্রিকোয়েন্সিতেই যদি অন্য প্যাটার্ন পাঠাই তখন তারা আমাদের মেসেজ রিসিভ করতে পারবে এবং পুনরায় রিপ্লাই দিবে। এখন একটি পাতার পাশাপাশি সাতটি কোষের ক্লোরপ্লাস্টগুলোকে বাইনারিতে কনভার্ট করলে এই রকম দাঁড়ায়,

A = 1001 0001 1000 0100 1110 0111 0010 1010 0000 0000 0000 = 12^14



B = 0011 0110 0001 1010 1101 1101 1101 0110 0000 0101 = 232,378,979,845



C = 1011 0111 1110 0110 0111 1011 0010 0011 0110 1101 = 789,845,844,845



D = 1000 1100 0101 0110 0100 0110 1011 1110 = 2,354,464,446



E = 1000 0001 0101 0011 1011 0101 1111 0111 1100 0011 = 555,455,215,555



F = 0101 0100 1110 0000 1001 0111 0010 1000 1000 1010 = 364,545,255,562



G = 1101 0111 0000 0010 1101 1100 0011 = 225,455,555



প্রথম আমি বুঝতে পারছিলাম না তারা কিভাবে আমাদের কে ফ্রিকোয়েন্সি পাঠাবে, কারন তাদের সময়ের একক আর আমাদের একক একই রকম নাও হতে পারে। ফ্রিকোয়েন্সি হল প্রতি সেকেন্ডের কম্পন সংখ্যা, কিন্তু এই ‘সেকেন্ড’ তো আমাদের নিজস্ব ব্যাপার। তাদের কাছে সেকেন্ড হয়ত অন্য রকম। তারা যেহেতু আমাদের চেয়ে বুদ্ধিমত্বায় এগিয়ে সেহেতু তারা নিশ্চয় এই বিষয়টা ভেবেছে, তাই তারা মেসেজের মধ্যেই নিশ্চয় এই সময়ের এককটা দিয়ে দিয়েছে। পরে পর্যবেক্ষণ করে দেখলাম অবজেক্ট স্ট্রিং গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে চারটি মাত্রা, একটি গ্র্যাভেটি স্ট্রিং ও একটি যে নতুন গঠনে রুপান্তত করা হবে সেইটা মোট ছয়টা ফ্রিকোয়েন্সি লাগে ,কিন্তু তাদের মেসেজে মোট সাতটা ফ্রিকোয়েন্সি। নিশ্চয় প্রথমটা হবে স্ট্যান্ডার্ড কোন সময়ের একক। তারা নিশ্চয় এমন কিছুকে সময়ের একক হিসাবে ব্যাবহার করবে যেটা ইউনিভার্সের সর্বত্র এক। তাই প্রথমেই অনুমান করে নিলাম এটা পরমানুর ভাইব্রেশন ফ্রিকোয়েন্সি, যেটা মহাবিশ্বের সব জায়গায় এক। আমাদের সময় হিসাবে পরমানুর ভাইব্রেশন ফিকোয়েন্সি হল ১০^১৩ হার্জ আর তাদের প্রথম মেসেজটাকে যদি তাদের হিসাব মতে পরমানুর ভাইব্রেশন ফিকোয়েন্সি ধরি তাহলে সেটা দাঁড়ায় ১০^১৪ হার্জ, অর্থাৎ আমাদের এখানে ১০ সেকেন্ড মানে ওদের ১ সেকেন্ড, আমাদের ১০ বছর মানে ওদের ১ বছর। এই অনুপাতে বাকি ফ্রিকোয়েন্সিগুলো সহজেই বের করা যায়। একটু থামে রায়হান। গলা শুকিয়ে এসেছে তার এতক্ষণ কথা বলতে বলতে। হলরুম যেন মৃত্যুপুরী, সবাই নিশ্চুপ; যেন পাথরের মূর্তি একেক জন।



সময়ের এই বাঁধা সমাধান হওয়ার পর আমরা একটা পাতার মধ্যে ছয়টি ফ্রিকোয়েন্সি ফাংশন চার্জ করে পিরিয়ডিক* টেবিলের প্রথম ১২টি পরমানুর ইলেকট্রনের বিন্যাস প্যাটার্ন মেসেজ হিসাবে পাঠাই, কিছুক্ষণের মধ্যে ক্লোরপ্লাস্টগুলো নিউকোভিচ প্যাটার্নে ফিরে না এসে নতুন এক প্যার্টানে রূপ নেয়, সেটা পুনরায় ডিকোড করে দেখতে পাই, ১২ থেকে ২৪ পর্যন্ত পরমানুর ইলেকট্রনের বিন্যাস। পরমানুর ইলেক্ট্রোন বিন্যাস মেসেজ হিসাবে পাঠানোর কারন হল আমরা এমন একটা ডাটা পাঠাতে চেয়েছিলাম যেটা মহাবিশ্বের সর্বত্র একই রকম। সেক্ষেত্রে এই পরমানুর বিন্যাসের চেয়ে ইউনিফর্ম আর কোন ডাটা বা সিরিজ হতে পারেনা। আমরা মনে হয় শেষ পর্যন্ত ভিনগ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণীর সন্ধান পেয়েই গেলাম, বলেই তার গলাটা একটু উদাস হয়ে যায়। শুধু তাই না, আমাদের হাতে এখন এমন প্রযুক্তি আছে যেটার সাহায্যে আমরা অসীম দূরুত্বের কোন বস্তুকে কোয়ান্টাম লেভেলে পরিবর্তন করতে পারব। শেষে এসে রায়হানের গলাটা কেমন যেন একটু ধরে আসে; জানি না আমি সভ্যতার জন্য কোন বিপর্যয় ডেকে আনলাম, ভাবে সে।



ছয়.



ভিনগ্রেহের বুদ্ধিমান প্রাণীদের সাথে পৃথিবীর মানুষের যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে আজ প্রায় দুই বছর। প্রথম দিকে ব্যাপক হৈচৈ পড়ে গিয়েছিল বিশ্বজুড়ে, সে কি আবেগে উদ্বেলিত বিশ্ব! যেন এক মুহূর্তে বিশ্বের সকল মানুষকে নিয়ে এসেছিল এক মঞ্চে এই একটি ঘটনা; বৃহত্তর আশায় এক লহমায় ভুলে গিয়েছিল ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয়গুলো, সব বড় বড় দৈনিকগুলোতে সপ্তাহে সপ্তাহে নিয়মিত আপডেট ছাপা হত। ধীরে ধীরে স্থিমিত হয়ে আসে আবেগ, একে একে সবাই আবার ব্যস্ত হয়ে পড়ে দৈনন্দিন রুটিরুজির প্রতিযোগিতায়, যার যার অবস্থান থেকে; যথারীতি। তবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ প্রথম থেকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে, বিশ্বের বাঘা বাঘা বিজ্ঞানী, সামরিক ও বেসামরিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি স্পেসাল সেল গড়ে তোলে অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে। রায়হানকে চিফ ট্যাকনিক্যাল কনসালটেন্ট হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয় এ সেলের। এই দুটি বছর দিনরাত পরিশ্রম করেছে সে, আজ সেটা সম্পূর্ণ হবাব দিন।



- ঋভু, সব ঠিকঠাক আছে ত?”, কণ্ঠে উৎকণ্ঠা ঝড়ে পড়ে রায়হানের।

দাদা, আমি নিজে সব কয়েকবার চেক করেছি, আপনি কোন দুশ্চিন্তা করবেন না। সপ্রতিভ জবাব দেয় ঋভু।



ঋভু মুখোপাধ্যায়, এই সময়ের শ্রেষ্ঠ ভাষাবিদ। বিশ্বের অনেক ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারে, মানবভাষা ও যান্ত্রিকভাষা নিয়ে তার মৌলিক কিছু গবেষণা আছে, পশ্চিম বঙ্গের মেয়ে, একটু কাঠখোট্টা কিন্তু কাজর ব্যাপারে অসাধারন। রায়হান নিজের তাকে সিলেক্ট করেছিল এই প্রোজেক্টের জন্য। ওর কথার উপর ভরসা করা যায়। তবুও আশ্বস্ত হয় না রায়হান, সকাল থেকেই বেশ টেনসন হচ্ছে, আজ যে ভিনগ্রহের প্রাণীদের প্রতিনিধিদের সাথে পৃথিবীর প্রতিনিধিদের আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ! পৃথিবীর প্রতিনিধিত্ব করবেন জাতিসংঘের মহাসচিব, সাথে অনেক দেশের এম্বাসেডরও থাকবেন। শেষ পর্যন্ত না কোন ঝামেলা পেকে যায়! রীতিমত ঘামতে থাকে রায়হান।



সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ঠিক সময়েই শুরু হয় সম্মেলন। প্রথমে বড় স্ক্রীনে ভেসে উঠে কিছু সংখ্যা, তার পর মুহূর্তেই ভেসে উঠে ডিকোডেট ম্যাসেজ।



- কিকি গ্রহের নিপীড়িত, বঞ্চিত ও ক্ষুধার্ত কিকিবাসির পক্ষ থেকে মুক্ত স্বাধীন ও উদারমনষ্ক পৃথিবীবাসির প্রতি জানাই আমাদের প্রাণঢালা অভিনন্দন; সেই সাথে বাড়িয়ে দিচ্ছি চিরবন্ধুত্বের হাত। আমি এন্টি ফোটন কাউন্সিলের সুপ্রীম কমান্ডার ও পদার্থ বিজ্ঞানী পিপার বলছি।



কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে যায় জাতিসংঘের মহাসচিব। চোখের ইশারায় ঋভুকে কাছে ডেকে ফিসফিস করে বলেন, “ম্যাসেজ ঠিক মত ডিকোড হয়েছে তো? কোথাও কোন ভুল হয়নি তো? আমরা প্রথমেই কি ঐ গ্রহের বিদ্রোহী গ্রুপের সাথে যোগাযোগ করলাম?” ঋভু তাকে আস্বস্থ করলে তিনি পালটা ম্যাসেজ পাঠান, “শান্তিপ্রিয় ও বন্ধুভাবাপন্ন পৃথিবীবাসির পক্ষ থেকে আমি জাতিসংঘের মহাসচিব ডার্ভিস ক্যামাল। আমাদের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা”



-আমরা খুবই আনন্দিত যে পৃথিবীবাসির মত মিত্র সাথে পেয়েছি। আমরা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা চালিয়ে যাব অদূর ভবিষ্যতেও। আমরা ১২৫ বছর ধরে অত্যধিক গোপনে পৃথিবীবাসির সংগে যোগাযোগের চেষ্টা করে চলেছি, অবশেষে আমরা সফল; আমরা একটা উদ্দেশ্য নিয়েই এই চেষ্টা চালিয়েছি। আমরা বঞ্চিত কিকিবাসি পৃথিবীবাসির নিকট সাহায্য প্রত্যাশী।



আমরা শান্তির উদ্দেশ্যে সামর্থের মধ্যে যে কোন সাহায্য করতে প্রস্তুত।



- আমরা ফোটন কাউন্সিলের বিরুদ্ধে অহিংস সংগ্রাম করে যাচ্ছি, আর আমাদের উদ্দেশ্য যে শান্তি স্থাপন তার পক্ষে সবচেয়ে বড় প্রমান হল আমাদের কাছে ১২৫ বছর ধরে এমন প্রযুক্তি আছে যেটার সাহায্যে অসীম দূরত্বের যে কোন বস্তুকে পারমানবিক লেভেলে পরিবর্তন করা সম্ভব, আমরা এই প্রযুক্তি শুধু মাত্র শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানোর কাজে ব্যবহার করেছি। এই গ্রহে আমিই প্রথম এই থিউরির প্রবর্তন করি, এখন পর্যন্ত আমি সহ শুধু মাত্র তিন জন এই থিউরির ব্যাপার জানে; যদি আগ্রাসী ও উগ্রপন্থী ফোটন কাউন্সিলের হাতে এই প্রযুক্তি পড়ে যায় তাহলে তার শান্তিপ্রিয় ব্যবহারের কোন গ্যারন্টি আমরা দিতে পারব না। তবে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে যেন তাদের হাতে এই প্রযুক্তি না পড়ে।



আমরা কিভাবে আপনাদের সহযোগিতা করতে পারি?



- কিকিবাসী ২০০০ বছর ধরে গুটি কয়েক স্বার্থবাদীর হাতে বন্দী হয়ে আছে। এ গ্রহের যাবতীয় শক্তির উৎস আমাদের নক্ষত্র টার্পিক। আমাদের টার্পিকের আলো থেকে সরাসরি খাদ্য গ্রহণ করি। পৃথিবীর ভাষায় যাকে বলা হয় সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া। খাদ্যের জন্য আমাদের কোন কষ্ট করতে হত না। কিন্তু ২০০০ বছর আগে আমাদের কিছু বিজ্ঞানীরা সমগ্র গ্রহের স্থলভাগকে সিলিকনের আবরনে ঢেকে দেয় ছাতার মত করে, উদ্দেশ্য ছিল টার্পিক থেকে আসা আলোকে পরিশোধিত করে খাদ্যের মান উন্নত করা। কিন্তু কিছুদিন যেতেই এই সিলিকামভ্রেলা হয়ে উঠে শোষনের হাতিয়ার। গুটিকয়েক প্রভাবশালী কিকিবাসি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রন করে এই সিলিকামভ্রেলাকে। যে খাদ্য আমরা অনায়াসে পেয়ে যেতাম, সে খাদ্য ফোটন এখন আমাদের ক্রেডিট দিয়ে কিনতে হয়। ক্রেডিট দিলেই তবে ফোটন মেলে। অনেক ব্যয়বহুল ফোটন রেষ্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে যেগুলো অভিজাত কিকিবাসিদের নিত্য আনাগোনা। কিছু কিছু পাব হয়েছে পোষা প্রাণীদের; যেখানে কিকিবাসি একফোঁটা আলোর জন্য দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে ক্রেডিট আয়ের জন্য সেখানে অনেকে পোষা প্রাণীর জন্য ব্যায় করছে অসংখ্য ফোটন। আমাদের আন্দোলন সাধারন কিকিবাসির বিরুদ্ধে নয়, এমন কি অভিজাত কিকি বাসির প্রতিও আমাদের আলাদা কোন ক্ষোভ নেই। আমাদের উদ্দেশ্য একটাই, সিলিকামভ্রেলা ধ্বংস করে আলোকে আবার মুক্ত করে দেওয়া কিকিগ্রহের জন্য।



নিঃসন্দেহে আপনাদের এই আন্দোলন প্রশংসনীয়। কিন্তু এই সিলিকামভ্রেলা ধ্বংসের ব্যাপারে আমরা কীভাবে সাহায্য করতে পারি?



- আপনাদের কাছে এখন গ্র্যাভেটি স্ট্রিং প্রযুক্তি আছে, যেটার মাধ্যমে অসীম দূরত্বের বস্তুকে পারমানবিক লেভেলে পরিবর্তন করা সম্ভব। সেটার জন্য আপনাদের লাগবে সিলিকামভ্রেলার সঠিক ফ্রিকোয়েন্সি। সেটা আমরা আপনাদের দিব। আমাদের কাছে এই প্রযুক্তি অনেক বছর ধরে থাকলেও সিলিকামভ্রেলা ধ্বংস করার জন্য যে পরিমান বৈদ্যুতিক শক্তি লাগবে তা আমাদের নেই।



পাশে বসা সামরিক উপদেষ্টার দিকে তাকায় মহাসচিব ডার্ভিস ক্যামাল; জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে। উপদেষ্টা বলেন, “স্যার যতটুকু ইনফরমেশন পাওয়া যায় তা নিয়ে নেন, আমরা কি করব সেটা পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে”। “আমরা নীতিগত ভাবে শান্তির জন্য সাহায্য করতে প্রস্তুত তবে আমাকে কাউন্সিলের পারমিশন নিতে হবে, আর যে পরিমান বৈদ্যুতিক শক্তি লাগবে এই কাজে সেটাও থাকতে হবে। আপনারা টেকনিক্যাল সব ডাটা পাঠান।”, উৎকণ্ঠার সাথে বললেন মহাসচিব। ঝানু এই এডমিনিস্ট্রেটরকে কিছুটা বিহ্বল মনে হচ্ছে।



সাত.

তুমুল বিতর্ক চলছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে টেকনিক্যাল সম্মেলনে। নিরাপত্তা কাউন্সিলে ভোটের মধ্যমে নির্ধারন হয় যে কিকি গ্রহবাসির বিদ্রোহী গ্রুপকে সাহায্য করা হবে। কিন্তু এর জন্য যে বিদ্যুৎ প্রয়োজন প্রায় ৮৫,২৫০ টেরা-ওয়াট-ঘন্টা সেটা নিয়েই এই বিতর্ক। এটা সমগ্র পৃথিবীর সম্মিলিত বিদ্যুৎ এর ৫০ মিনিটের উৎপাদনের সমান। এত বিশাল আকারের বিদ্যুৎ কিভাবে একত্রে পাওয়া যাবে সেটাই এখন মূল সমস্যা! আলোচনা চলছে, কিন্তু কোন উপায় বের হচ্ছে না। একেকজন একেক উপদেশ দিচ্ছে কিন্তু কার্যত সম্ভবপর নয় প্রায় সবগুলোই।



এতক্ষণ চুপ করে সবার কথা শুনছিলেন, সবাই যখন মুটামুটি হতাশ তখন রায়হান দাঁড়িয়ে বললেন, “আর্থ-আওয়ার কে ব্যবহার করতে পারি”



সবাই জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় তার দিকে।



- প্রতি বছর মার্চের শেষে আর্থ-আওয়ার নামের একটা আন্দোলন পরিচালনা করে একটি সংগঠন। এক ঘন্টার জন্য সব লাইট নিভিয়ে প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়ার প্রচেষ্টা সেই সাথে পৃথিবীর প্রতি দরদ প্রদর্শন। আমরা এটাকে জাতিসংঘ থেকে স্বীকৃতি দিয়ে গ্লোবালি আরও বড় পরিসরে স্যান্ডার্ড একটা সময়ে একসাথে পালন করতে পারি। সমগ্র বিশ্বের এক ঘন্টায় উৎপন্ন বিদ্যুৎ শক্তি দিয়ে অনায়াসে সিলিকামভ্রেলাকে পানিতে রুপান্তরিত করা সম্ভব। সমস্যা একটাই ছয়টি মহাদেশের সবগুলো দেশকে একত্রে অংশগ্রহণ করতে হবে।

কথাগুলো নিজের কানেই যেন কেমন কেমন লাগছিল রায়হানের। প্রয়োজনে পৃথিবীর জন্য ক্ষুদ্র স্বার্থের উর্ধ্বে উঠতে পারে না যে দেশগুলো তারা কীভাবে ভিনগ্রহের কোণ অজানা জাতির জন্য এমন ত্যাগ স্বীকার করবে!



আট.

সাইরেন বেজে উঠেছে সমগ্র বেইজ জুড়ে, কি ভয়ংকর হৃদয় কাঁপান সাইরেন! এমন সময় আসবে সেটা ঠিকই আঁচ করতে পেরেছিল পিপার, গত একমাসে একে একে তিনটি বেইজের পতন হয়েছে। বাকী ছিল এই মূল বেইজটি। একসপ্তাহ আগেই বেইজের সবাইকে আত্মগোপনে চলে যেতে অর্ডার দেন তিনি। জরুরী কার্যক্রম চালানোর জন্য তিনি সহ আর দুইজনকে থেকে যেতে বলেন তিনি। বেইজ কমান্ডার লিলি থেকে যায় তার সাথে। পৃথিবীবাসির সাহায্যের আশায় বসে আছেন তিনি, কিন্তু তাদের আর কোন খবর নেই, তারা কি আমাদের ত্যাগ করল! মনে মনে ভাবে পিপার। যাই হোক, ধরা পরার আগে এই বেইজের সব ডাটা নষ্ট করে দিতে হবে, যেভাবেই হোক এই প্রযুক্তি তাদের হাতে পড়তে দেওয়া যাবে না।



চারদিক থেকে লেজার গান তাক করে একে একে ভিতরে প্রবেশ করে ফোটন কাউন্সিলের স্পেশাল ক্র্যাকডাউন ফোর্স। কোন প্রতিরোধের মুখেই পড়তে হয়নি তাদের, নির্লিপ্তভঙ্গীতে হাসিমুখে সোফায় বসে আছেন প্রফেসর পিপার, লিলি ও একজন এনালিষ্ট। জানে ধরা পরা মানেই নিশ্চিত যন্ত্রনাদায়ক মৃত্যু, প্রকাশ্যে তাদের চরম অত্যাচার করে হত্যা করা হবে যাতে অন্য কেউ এই সিস্টেমের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। এমনই চলে আসছে যুগযুগ ধরে; তবে তারা কি পেরেছে বিপ্লবের স্পৃহাকে দমাতে! না! তারা ভুলে যায় বিপ্লবীর প্রতিটি রক্তের ফোঁটা রক্তবীজ হয়ে হাজার বিপ্লবী প্রসূত হয়। তাইত পিপার অপেক্ষা করে কখন তাকে রক্তাক্ত করে শাষকশ্রেনী বিপ্লবের স্পৃহার বারুদে আরও একবার ছেড়ে দেবে স্ফুলিঙ্গের ছটা।



নয়.

অসাধ্য সাধন হয়েছে। স্থান নিউইয়োর্ক, ৩০শে মার্চ, রাত ০০:০০ অপারেশন কিকি-সিলিকামভ্রেলা-০০১ এর কোন্ট্রোল রুম। অপারেটর মাইক্রোফোনে বলে যাচ্ছে,



এশিয়া মহাদেশ অফলাইন, কোর্ডিনেট চার্জড;

আফ্রিকা মহাদেশ অফলাইন, কোর্ডিনেট চার্জড;

অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ অফলাইন, কোর্ডিনেট চার্জড;

ইউরোপ মহাদেশ অফলাইন, কোর্ডিনেট চার্জড;

দক্ষিন আমেরিকা মহাদেশ অফলাইন, কোর্ডিনেট চার্জড;



উত্তর আমেরিকা মহাদেশ অফলাইন, “স্যার কোর্ডিনেট কি চার্জ করবো?” লিভারের উপর হাত রেখে বলে অপারেটরের, কণ্ঠে স্পষ্ট উৎকণ্ঠা। কি এক মহাসৃষ্টির উল্লাসে একত্রিত হয়েছে সমগ্র বিশ্ববাসি!



স্থির হয়ে নিজ চেয়ারে বসে আছেন এই মিশনের কমান্ডার ইন চিফ, জেনারেল পল সিলভা, এক মুহূর্ত ভাবলেন, শেষে গমগম করে উঠে তার ভরাট কণ্ঠ, “চার্জ দ্যা কোর্ডিনেট”। অপারেটর বিন্দু মাত্র দেরি না করে টেনে নিচে নামিয়ে দেয় লিভার। সমগ্র পৃথিবী এখন অন্ধকার, অন্য কোথাও আলো জ্বালাবে বলে;



- মেঝেতে শুইয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে পিপার, লিলি ও ঐ এনালিষ্টকে। এনালিষ্ট ও লিলির সমগ্র শরীর হালকা হলুদ বর্ণের হয়ে গেছে, ঠোঁটে মৃদু হাসি, মৃত্যুর ঠিক আগে মুহূর্তের তাচ্ছিল্যেই সেই হাসি। ভাল থেক লিলি মনে মনে বলে পিপার। জানে তাকে এত সহজে হত্যা করা হবে না, তীব্র যন্ত্রণা দিয়ে তাকে খুব ধীরে ধীরে হত্যা করা হবে। সিলিকামভ্রেলা চার্জ হচ্ছে, কৃত্রিম আকাশের মাঝখানের জায়গাটা রক্তিম বর্ণের হয়ে গেছে, তা থেকে সাই করে নেমে আসে তীব্র লেজার পিপারের দুপা লক্ষ্য করে। তাদের এই মৃত্যুদন্ড কিকিগ্রহের প্রতিটি ঘরে ঘরে, রেস্টুরেন্টে, মাঠে, পাবে লাইভ সম্প্রচার হচ্ছে। সবাই দেখছ একজন প্রতিভাবান পদার্থবিজ্ঞানী কি অবলীলায় মৃত্যুকে আলিঙ্গন করছে। শিউরে উঠে সবাই; কিছুক্ষণের মধ্যে তার সবুজ পায়ের সবগুলো ক্লোরপ্লাস্ট জ্বলে হলুদাভাব বর্ণ হয়ে যায়। সারা কিকি গ্রহ উফ করে উঠে, গুটি কয়েক বাদে! কিছুক্ষণের জন্য চেতনা হারায় সে। জ্ঞান ফিরলে কিছক্ষণ পর আবার লেজার বিম তার দুই হাত লক্ষকরে নেমে আসে, অল্প সময়ের মধ্যে দুহাতও তার হলুদাভাব ধারন করে। অনেক কষ্টে চেতনা টিকিয়ে রাখে পিপার। পৃথিবীর মানুষ কি আমাদের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করল? বুঝতে পারছে না পিপার! তাদের আচরনে তো এমন মনে হয়নি! অল্পবিরতি দিয়ে আবার চার্জ হচ্ছে লেজার। এবার বুক বরারর। সাঁই করে নেমে আসে লেজারের তীব্র আলো। একেএকে মরে যেতে থাকে পিপারের বুকের ক্লোরপ্লাস্টগুলো। তীব্র ব্যাথায় কঁকিয়ে উঠে সে, বুক চিড়ে সুতীব্র চিৎকার বের হয়ে আসতে চায়, অনেক কষ্টে তা আটকায় সে। হঠাৎ! শান্তি! চির শান্তি! অবাক হয় পিপার! ধীরে ধীরে চোখ খোলে সে! অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখে খোলা আকাশ, উজ্জল টার্পিক! চোখের সামনে ঝুলছে যেন স্বর্গ হয়ে, যেমনটি দাদার মুখ থেকে শুনেছিল ছোট বেলায়! বাস্তবে তার চেয়েও অনেক অনেক সুন্দর!! সহস্র বছর পার করে দেওয়া যায় এমন আকাশের দিকে তাকিয়ে। হঠাৎ শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি। আকাশ ছাপিয়ে সে কি বৃষ্টি!



- সমগ্র কিকি বাসি আজ বের হয়ে গেছে যার যার ঘর থেকে, যে এখানে ছিল সেখানেই ভিজছে মুক্তির আনন্দে, ভালবাসার বৃষ্টিতে। তারা জানে না পিপারের ত্যাগ, তারা জানে না পৃথিবীবাসির ভালবাসার কথা। প্রকৃত বিপ্লবীরা আড়ালেই থেকে যায়।



- শরীরের বেশিভাগ ক্লোরপ্লাস্ট জ্বলে গেছে পিপারের; সেলিকামভ্রেলার রূপান্তরিত পানিতে ভিজতে ভিজতে ঠোঁটের কোন মৃদু হাসি ঝুলিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বিপ্লবী পিপার।



--------------------------------- সমাপ্ত -------------------------------



কৃতজ্ঞতাঃ একজন নিভৃতচারী হিতাকাঙ্ক্ষী; অনেক কষ্ট করে শখানেকের মত বানান ঠিক করে দিয়েছেন, বলেছেন আরও ভুল আছে। বাংলা ভাষাটা আসলেই অনেক কঠিন। অদৃশ্য মানুষগুলোর দৃশ্যত ভালাবাসায় সত্যি আপ্লুত হয়ে আছি।

মন্তব্য ১৩০ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১৩০) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৮

শান্তির দেবদূত বলেছেন: টীকাঃ

কিকিঃ (কাল্পনীক) – গ্রহের নাম, যেখানে মানুষের মত বুদ্ধিমান প্রাণীর অবির্ভাব হয়েছে। এর অবস্থান আমাদের গ্যালাক্সির কোন জায়গায় তা অজানা, আদৌ আমাদের গ্যালাক্সিতেই নাকি অন্য কোন গ্যালাক্সীতে বা অন্যকোন ইউনিভার্সে সেটাও অজানা।

ফোটন কাউন্সিল: (কাল্পনীক) – কিকি গ্রহের কর্পোরেট গ্রুপ ও শাষকগোষ্টী। এরা এই গ্রহের সকল আলোক শক্তি নিয়ন্ত্রণ করে।

টার্পিকঃ (কাল্পনীক) - কিকি গ্রহের নক্ষত্র, আমাদের সূর্যের অনুরুপ।

টার্পিক আবর্তনঃ (কাল্পনীক) - কিকি গ্রহের নক্ষত্র টার্পিকে ঘিরে এক বার আবর্তনকে এক টার্পিক আবর্তন বলে। কিকি গ্রহের ১ টার্পিক আবর্তন = পৃথিবীর ১০ বছর।

সিলিকামভ্রেলাঃ (কাল্পনীক) – কাঁচের আবরন যেটা কিকি গ্রহের প্রতিটি শহর ও স্থলভাগের উপর ছাতার মত বিস্তার করে আছে। এটার মাধ্যমেই ফোটন কাউন্সিল এই গ্রহের নক্ষত্র, টার্পিক থেকে আগত সকল সকল আলো নিয়ন্ত্রণ করে।

টিক্সোনঃ (কাল্পনীক) – কিকি গ্রহের এক প্রকার জীবানু, এটার আক্রমনে তাদের শরিরের ক্লোরোপ্লাস্টগুলো ভেঙ্গে যায়, অনেকটা আমাদের কেন্সার রোগের মত।

স্পেশাল ফোটন ভেনিলাঃ (কাল্পনীক)- কিকি গ্রহের রেস্ট্রুরেন্টর একটি আলোর খাবার। অনেক দামী ও পুষ্টিকর এটি।

পিরিয়ডিক* টেবিলঃ পরমানুর পর্যায় সারনী

২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০০

আম্মানসুরা বলেছেন: বাহ!!! চমৎকার! একটানে পড়লাম। খুব ভালো লেগেছে। প্লাস প্লাস প্লাস প্লাস

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১৮

শান্তির দেবদূত বলেছেন: এমন উচ্ছসিত প্রশংসা ! অনেক ধন্যবাদ এত বড় গল্প পড়ার জন্য। শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

৩| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২০

মামুন রশিদ বলেছেন: উদ্ভিদ বিজ্ঞানের মত বিষয় নিয়ে কল্পগল্পের ধারনা অভিনব । এতদিন রোবটিক সাইফাই পড়ে আসছি । মাঝখানের সমিকরন গুলো একটু জটিল লাগলেও গল্পের মজা ঠিকই পেয়েছি ।

চমৎকার গল্পে প্লাস ।

+++

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩২

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, প্রিয় ব্লগার; আপনাদের ভাল লাগে বলেই ত লেখা এই বৃথা চেষ্টা আর কি। :)

চেষ্টা ছিল সমিকরন, মাত্রা এই বিষয়গুলোকে সহজ করে উপস্থাপন করার, কতটুকু সফল সেটা বুঝতে পারছি না। আর অনেক বেশি বড় হয়ে গেছে গল্পটা, অনেক কাটছাট করে আকার এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। :)

আবারও অনেক ধন্যবাদ, শুভেচ্ছা রইল।

৪| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩৫

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: পরিচারিকাদের স্যাটাস অন্যদের চেয়ে ঢের উপরে
এবার কিছুটা কনফিউসড হয়ে যায় প্রফেসর কামরুল হাসান।[/sb
এখানে স্ট্যাটাস আর যায় শব্দটা একটু ঠিক করে নেবেন ।

অনেক দিন পর অসাধারণ একটা সাই - ফাই পড়লাম ।
গল্পে পুরো মজে ছিলাম । রুদ্ধশ্বাসে পড়েছি । ।
আমার পড়া সাই - ফাই গুলোর মধ্যে এটা অন্যতম সেরা । আইডিয়াটা অভিনব ।
আমি পড়ে খুব তৃপ্তি পেয়েছি ।
গল্পের দৃশগুলো যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম । শেষ টায় যে এত খারাপ লাগল । আপনার শেষ অংশটুকু অসাধারণ হয়েছে ।
সমগ্র কিকি বাসি আজ বের হয়ে গেছে যার যার ঘর থেকে, যে এখানে ছিল সেখানেই ভিজছে মুক্তির আনন্দে, ভালবাসার বৃষ্টিতে। তারা জানে না পিপারের ত্যাগ, তারা জানে না পৃথিবীবাসির ভালবাসার কথা। প্রকৃত বিপ্লবিরা আড়ালেই থেকে যায়।


সব কিছুকে ছাপিয়ে গেছে একদম । আসলেই , প্রকৃত বিপ্লবীরা আড়ালেই থেকে যায় ।

আপনি খুব ভাল লিখেন , আমি আগ হতেই ঠিক করে রাখছি আপনার সব
লিখা পড়ব , সময় করে উঠতে পারছি না । দেখি , একদিন সময় করে আপনার সব লিখা পড়তে হবে ।

ভাল থাকুন দেবদূত ভাই , অনেক অনেক ।

শুভকামনা নিরন্তর । :)

ও আরেকটা কথা - আপনার ফেবু লিঙ্ক কি দেয়া যাবে ?

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০৪

শান্তির দেবদূত বলেছেন: প্রিয় মনোযোগী পাঠক, অনেক অনেক ধন্যবাদ বানান ভুলগুলো দেখিয়ে দেওয়ার জন্য। ঠিক করে নিয়েছি সাথেসাথে। :) :)

যেভাবে উচ্ছসিত প্রশংসা করলেন, লজ্জায় লাল হওয়া ছাড়া গতি নেই।

আর বিপ্লবিদের কথা যেটা বলেছি সেটাত চরম সত্য, বিশেষ করে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে। শুধু দীর্ঘশ্বাস।

কোন সমস্যা নেই, যখনই সময় করতে পারবেন তখনি পড়বেন, তাড়াহুড়ার কোন প্রয়োজন নেই, কমেন্টও আবশ্যক নয়, আপনারা পড়লেই আমি খুশি। :) :)

শুভেচ্ছা ও শুভকামনা আপনার জন্য।

হোয়ায় নট, আমার ফেবু আইডি একদম সোজা
https://www.facebook.com/debdut :) :)

৫| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০৮

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: সমীকরণগুলা কিছুই বুঝলাম না.........তবে গল্প ভালো লাগছে!!!!


:) :) :)

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৩

শান্তির দেবদূত বলেছেন: হা হা হা , ছেলে বলে কি! সমিকরন ত কেটে ছেটে দিয়েছি, ভাগ্যিস কেটেছেটে দিয়েছি, না হলেত ব্লগারধোলায় খেতে হত। :) :) ............... হা হা হা
অনেক শুভেচ্ছা প্রিয় বর্ষণ ভাই।

৬| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৬

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এক নিঃশ্বাসে পড়লাম। অভিনব এবং বিশাল পরিসীমার একটা থিমকে খুব কম জায়গার মাঝে আটকে ফেলেছেন, এবং বৈজ্ঞানিক অংশটুকু বাদ দিয়ে ধরলেও পড়ে বুঝতে কষ্ট হয়নি। দারুণ একটা সাই ফাই পড়লাম। পরিচ্ছন্ন এবং পরিপূর্ণ।

'সেলিকামভ্রেলা' শব্দটা কি 'সিলিকা আমব্রেলা' হবে? দুই একটা জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন বানান দেখলাম।

গল্পে মুগ্ধতা রইল প্রিয় গল্পকার।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩৯

শান্তির দেবদূত বলেছেন: প্রিয় প্রোফেসর, ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্যের জন্য। আসলেই অনেক বড় একটা থিমের গল্প এটা, কত কিছুযে কাটছাট করতে হয়েছে! তার পরেও ব্লগের রেসপেক্টে অনেক বেশি বড় হয়ে গেছে।

চেষ্টা ছিল বৈজ্ঞানিক অংশটুকু সহজ করে তোলে ধরার, কিন্তু ঐ যে ! লেখনীর সীমাবদ্ধতা! একটা জিনিস খুব পিড়া দেয়, মনে হচ্ছে চোখের সামনে ভাসছে সবকিছু কিন্তু লেখায় প্রকাশ করতে পারছি না! খুব অসহায় লাগে তখন। এখানেই মনে হয় লেখক আর ভাল লেখকের পার্থক্য!

আপনার পর্যবেক্ষণ যথার্থ, এটা আসলে, সিলিকা + আমব্রেলা = সিলিকামব্রেলা হবে। কোথায় কোথায় এই প্রমাদ ঘটেছে খুঁজে দেখে সময় করে ঠিক করে নিতে হবে। ধন্যবাদ আবারও।

গল্পে ও কমেন্টে প্রোফেসরদের ছড়াছড়ি। :)

শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

৭| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪১

পারভেজ বলেছেন: অভিনন্দন, আবার লেখার খাতা খোলার জন্যে।
অনেক খাটুনি দেয়া লেখা, তার প্রমান মিলে বিস্তারিত ব্যাখ্যাগুলি পড়ে।
সমাপ্তিটা বেশী প্রত্যাশিত হয়ে গেছে।
আমার মনে হয় এটা একটা চমৎকার উপন্যাসের রূপ পেতে পারে।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০৩

শান্তির দেবদূত বলেছেন: বস, আপনাকে এখানে পেয়ে যে কি ভাল লাগছে !! পুরানো ব্লগারদের খুবই মিস করি।

খাটুনি তেমন একটা হয়নি, আইডিয়াটা মাথায় ছিল অনেকদিন ধরে, শুধু টাইপ করতে যা খাটুনি লেখেছে এই যা। তবে কিছু কিছু বিষয় নিয়ে একটু গুগলিং করতে হয়েছে।

একটা জিনিস বলার লোভ সামলাতে পারছি না, এই গল্পের অনেক ইনফরমেশন কিন্তু বাস্তবের খুব কাছাকাছি থেকে নেওয়া, যেমন, বোসনিক স্ট্রীং থিউরি, ২৬ ডাইমেনশন, ১১ ডাইমেনশন, ক্লোরোপ্লাস্টের সংখ্যা ৭৫ থেকে ১০০ এর মধ্যে, আর্থ আওয়ার, পৃথিবী মোট উৎপাদিত বিদ্যুৎ শক্তি প্রায় ২৬,০০০ TWh, কিন্তু চাহিদা যেহারে বাড়ছে তাতে আগামী ১০/১৫ বছরের মধ্যে আমার গল্পে উল্লেখিত পাওয়ারের কাছাকাছিই চলে যাবে। তারপর জাতিসংঘের মহাসচিব ও কিন্তু সম্ভাব্য মহাসচিব আগামি ২/৩ টার্মের জন্য :), আর অপারেসন ইন চার্চ জেনারেল এখন আমিরিকার এয়ারফোর্সের কমান্ডার পদে আছে, আমার গল্পের পটভুমিতে যে সময়ের তখন সে জেনারেল হয়েও যেতে পারে :)

সমাপ্তি নিয়ে যা বলেছেন সেটার সাথে একমত, এই দিকটায় আরেকটু নজর দিতে হবে।

শুভেচ্ছা রইল বস। এই লেখায় সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি আপনাকে ফিরে পাওয়া, আর কি চাই। :) :)

৮| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৯

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: দূর্দান্ত একটা গল্প। সত্যি বলতে এত চমৎকার লেখায় নতুন করে কিছু বলার নেই। সায়েন্সফিকশন নিয়ে ব্লগে আমি যতগুলো লেখা পড়েছি আপনার এই লেখা গুলোর আশেপাশে কোনটাই নেই। খুব ভালো লাগছে আপনার মত গুনী একজন গল্পকার আবার আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন এবং নতুন করে লিখছেন। বিষয়টি সত্যিকার ভাবে অনেক আনন্দের। এই ধরনের যারা লিখতে চান, আশা করি তারা আপনার গল্প থেকে অনেক অনুপ্রেরনা পাবে।

এখন আসি ব্যক্তিগত ভালো মন্দ লাগা থেকে। আমি আসলে পাঠক হিসেবে মনে হয় খুব একটা সুবিধার নই। যদিও নাম কাল্পনিক, তথাপি, কাল্পনিক জগতের প্রতি কেমন যেন আকর্ষন নেই আমার। হাহা! তাই সাই ফাই কিছুটা কমই পছন্দ করি। তবে আনন্দের বিষয়, বেছে বেছে যা পড়েছি তার প্রায় সবই খুব চমৎকার।

কিছু কিছু জায়গায় আমার বুঝতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল। পরে আপনার টিকা পড়ে বুঝে নিয়েছি। গল্পটি প্রিয়তে নিলাম।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৩

শান্তির দেবদূত বলেছেন: প্রিয় কাল্পনিক ভালবাসা, আপনার কমেন্ট পড়ে সত্যি আপ্লুত হয়ে গেলাম। আমার মনে হয় প্রাপ্যের চেয়ে বেশিই প্রশংসা বা ভালবাসা পেয়ে যাচ্ছি।

নিজের ব্যাপারে যা বললেন, সত্যি গর্বিত হলাম, সাই-ফাই কম পছন্দ করেন তারপরেও যেভাবে আমার লেখার প্রশংসা করে যাচ্ছেন এর চেয়ে আর কি চাওয়ার থাকতে পারে! তারউপর এত বড় বড় লেখা! ব্যাপক থ্যাংক্স আপনাকে।

অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

৯| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১১

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: মুগ্ধ হয়ে পড়লাম ভাইয়া কোথাও এতটুকু না থেমে। চমৎকার। অসাধারণ।

সায়েন্স আর ফিকশনকে খুব সুনিপুন করে মিশিয়ে দিয়েছেন সমান মাত্রায়।


গল্পটা পড়ে খুব ভালো লাগছে। ভালো লেগেছে রায়হানকে প্রাপ্য মর্যাদা পেতে দেখে, ভালো লেগেছে ডঃ প্রফেসর কামরুল হাসানকে রায়হানের অবদান স্বীকার করতে দেখে। ভালো লেগেছে জাতিসংঘকে কার্যকরী ভুমিকা পালন করতে দেখে। বিশ্বের সব নেতৃবৃন্দকে এক মঞ্চে আসতে দেখে, মোহাম্মদ রায়হান ভুঁঞা আর ঋভু মুখোপাধ্যায়কে পাশাপাশি কাজ করতে পেরেছে দেখেও খুব আশান্বিত হয়েছি। আমাদের ভবিষ্যত যেন এমনই চমৎকার হয়।


প্রকৃত বিপ্লবী বিপ্লবের স্বাদ গ্রহণের জন্য বেঁচে থাকে না। আমাদের বিপ্লব আগামী প্রজন্মের জন্য, শোষণহীন সমাজের জন্য এমনটাই দেখলাম।

সবাই বেড়ে উঠুক শোষণ বঞ্চণাহীন সমাজে এই কামনা করি।



অ.ট. - ভাইয়া আপনি যে মাঝের তিন বছর আমাদের বঞ্চিত করেছেন তার বিরুদ্ধে বিপ্লব করা যায় কিনা ?? সে ব্যাপারে ভাবছি ;) ;) ;) ;) ;)

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২৬

শান্তির দেবদূত বলেছেন: ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্যের জন্য। এত বড় গল্প, লেখার পর ভাবছিলাম আদৌকি কেউ পড়বে এত বড় লেখা! ধারন ভুল ছিল, পাগলা পাঠক এখনো আছে ;) হা হা হা

এটা ঠিক বলছেন, গল্পের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে নেগেটিভ দিকে যেতে পারত, তবে সেই সেন্স থেকে লিখিনি, একটা পজেটিভ দৃষ্টি ভঙ্গি থেকে লেখাটা লিখেছি।

সবাই বেড়ে উঠুক শোষণ বঞ্চণাহীন সমাজে এই কামনা করি।
-- আপনার সুরে সুর মিলিয়ে এই কামনা করি।

অঃটঃ হা হা হা, সেটা করা যেতে পারে, তবে প্রকৃত বিপ্লবিদের অবস্থার কথা মনে আছে ত ;) ;)

১০| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪১

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: আমাদের বিপ্লব আগামী প্রজন্মের জন্য, শান্তির দেবদূত ভাইয়ার সাই-ফাই যুক্ত সামুর জন্য ;) ;) ;) ;)

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৮

শান্তির দেবদূত বলেছেন: হা হা হা ........ পুলাপান ত দেখি শান্তি দেবদূতের শান্তি কাইরা নিতে চায় ! হা হা হা । কাল্পনিক ভাই ত দেখি ফেসবুকে প্রশংসা করে, সেয়ারটেয়ার দিয়ে অস্থির! কয়েকদিন পালিয়েই থাকতে হবে দেখছি।

১১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৫

মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: একটানে পড়ে ফেললাম, গল্পে প্লাস রইল

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫২

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, মোমেরমানুষ,

কি চমৎকার নিক; মোমের মত নরম, গলে গলে পড়ছে, অথচ অন্তরে অগ্নিশিখা!

ভাল থাকুন, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

১২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৫

শামীম সুজায়েত বলেছেন: ভাল লেগেছে।যদিও দীর্ঘ গল্প। কয়েকদিন সময় নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে দিলে আকর্ষণ বেশি থাকতো বলে আমার মনে হয়।

আপনার গল্পে বেশি ভাল লাগার দিক হচ্ছে সমিকরণ। বিজ্ঞানের নানা টার্মসও জানা গেছে।

একজন পাঠক হিসাবে যেকোন গল্প নিয়েই আমি প্রত্যাশা করি, সেখান থেকে শিক্ষণীয় কিছু যেন পাওয়া যায়। আর একজন ব্লগার বা ব্লগ লেখক হিসেবে আমি সতর্ক থাকি যেন পাঠকের ধৈর্য্যচ্যুতি না ঘটে।

ভাল থাকবেন। শুভ কামনা রইলো।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১০

শান্তির দেবদূত বলেছেন:
ধন্যবাদ ব্লগার শামীম ভাই, আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য। ঠিক বলছেন পর্ব পর্ব করে দেওয়াটাও একটা অপসন হতে পারে বড় লেখার ক্ষেত্রে।

আপনার প্রত্যাশা কিছুটাও যদি পুরন হয় আমার এই গল্প পড়ে, সেটাই আমার স্বার্থকতা।

ভাল থাকুন নিরন্তর, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

১৩| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: ঘুমঘুম চোখে একটু জটিল লাগলো! আরেকবার পড়ে কমেন্ট করবো

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২১

শান্তির দেবদূত বলেছেন: ব্যাপার না, ঝাড়া একটা ঘুম দিয়া উঠ। পরে সময় নিয়ে পইড়। এত বড় গল্প তুমি ঘুমঘুম চোখে কেমনে পড়তে গেলা ! হা হা হা

১৪| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৮

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ভাল লেগেছে। গর্পটা পড়েই লগ ইন করলাম। চমৎকার।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২৫

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ, প্রিয় সেলিম আনোয়ার। আপনাদের এমন উৎসাহ পেয়েই ত লেখার সাহস পাই।

অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

১৫| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২১

তুষার কাব্য বলেছেন: অনেক দিন পর সামুতে সায়েন্স ফিকশন পড়লাম।ভাল লেগেছে।যদিও দীর্ঘ গল্প।
গল্পে প্লাস+++

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৪৩

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ তুষার কাব্য, আপনাদের ভাল লাগাই আমার লেখার অনুপ্রেরনা। ভাল থাকুন সবসময়। শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

১৬| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৩১

মর্গের লাশ বলেছেন: মারাত্মক লিখেছেন। অসাধারান..।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৪২

শান্তির দেবদূত বলেছেন:
অনেক ধন্যবাদ, ( আপনার নামের আগের প্রিয় লিখতে অস্বস্তি লাগছে! "প্রিয়" মর্গের লাশ! শুনতে কি ভয়ংকর লাগছে!) মর্গের লাশ, মারাত্মক সুন্দর কমেন্টের জন্য।

আপনাদের ভাল লাগে বলেই তো এই গুলা লেখার সাহস পাই।

অনেক শুভেচ্ছা রইল, ভাল থাকুন মর্গের লাশ নিকের পিছনের মানুষটি।

১৭| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৪

অপু তানভীর বলেছেন: আপনে মিয়া একটা কাম করছেন ? আপনার নামে তো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মামলা করা উচিৎ ! সাড়ে পাঁচ বছর ধরে ব্লগিং করে মাত্র ৭০ টা পোষ্ট ?
এমন দুর্দান্ত গল্প লেখেন এইটা কি আপনে জানেন না ? পাঠক দের এমন দুর্দান্ত লেখা থেকে বঞ্চিত করা মহা অপরাধ ! ভেরি ভেবি মহা অপরাধ !
/:) /:)

যাহা হোক, এখনও সময় আছে ! এখন থেকে নিয়মিত গল্প দিবেন ! মাসে একটা গল্প লিখলে চলবে না ! আরো বেশি করে লিখতে হবে ! না হলে কিন্তু সত্যি মামলা করে দিবো ! হুমম !! :-0 :-0

মাঝখানে ব্লগে পড়ার মত কিছু পেতাম না ! যাক কদিন আপনার ব্লগ নিয়ে ব্যস্ত থাকবো !

এমন দুর্দান্ত গল্প লেখার জন্য অপনাকে ধন্যবাদ দিবো না ! আগে আর একটা লিখেন তারপর দিবো ! আপনার সব পোষ্ট গুলো শেষ করার আগেই কিন্তু নতুন গল্প চাই ! মনে থাকে যেন !!

+++++

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০০

শান্তির দেবদূত বলেছেন: ওকে ওকে, অপরাধ স্বীকার করে নিলুম, শাস্তি যা দেবার তাও মাথা পেতে নিলুম।

প্রিয় অপু তানভীর ভাই,
সাড়ে পাঁচ বছরে ৭০টা পোষ্ট, মাত্র মনে হচ্ছে; আমার ত মনে হচ্ছে আমি এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা লেখে ফেলছি, হা হা হা। কি করব বলেন! গরীবের হাত দিয়ে এত লেখা বের হয় না যে :(

আপনার কমেন্ট পড়ে সত্যি খুব ভাল লাগছে, মনে হচ্ছে নাহ, আসলেই কেউ না কেউ আমার এই অহেতুক বড় বড় লেখাগুলো পড়ে, আনন্দ পায়, উপভোগ করে।

হা হা হা, মামলা মকুদ্দমার ভয় দেখিয়ে গল্প লেখা আদায় করার আইডিয়াটা অভিনব, হা হা হা । ভাবছি এটাকেই পরবর্তি সাই-ফাই এর প্লট বানিয়ে ফেলব কিন, হা হা হা।

এত উচ্ছোসিত প্রশংসা, এত চমৎকার কমেন্ট বার বার পড়তে ইচ্ছা করে।

অনেক ভাল থাকুন, প্রিয় রোমান্টিক ব্লগার। শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

১৮| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৮

সুমন কর বলেছেন: অনেক শ্রম ও সময়ের বিনিময়ে আপনার কাছ থেকে একটি অসাধারণ লেখা পেলাম।
অনেক ভালো লাগল।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০২

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ, সুমন ভাই; আপনাদের অনুপ্রেরনাই লেখার মুল স্পিরিট। ভাল লাগে বার বার পড়তে আপনাদের সুন্দর সুন্দর কমেন্ট।

শুভেচ্ছা ও শুভকামনা নিরন্তর।

১৯| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনার কল্পনাশক্তি দেখে বিস্মিত হলাম। সায়েন্স ফিশনের সাথে বিপ্লব, মানবিকতা ফিজিক্সের সাথে বোটানির অভূতপূর্ব সংযোগ সবমিলিয়ে একটা মাস্টারপিস নিঃসন্দেহে। তবে কিছুটা কঠিন ছিলো, টিকাগুলো অনেক সাহায্য করেছে। থাম্বস আপ!

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৬

শান্তির দেবদূত বলেছেন: তোমাকে বিস্মিত করতে পারা ভাগ্যের ব্যাপার! বুকে ছাতি ফুলে গেছে হাত খানেক, থ্যাংক্স।

কল্পনা শক্তির দেখছ কি আর! খালি লিখে প্রকাশ করতে পারিনা বলে! নাহলে দেখতে, হা হা হা ।

তুমি ইইই এর না? তাহলে তো কঠিন লাগার কথা না! অনেক চেষ্টা ছিল সহজ করে লিখার, মাথার মধ্যে জটিল জটিল ব্যাপার স্যাপার ছিল, অনেক কষ্ট করে কাটছাট করে বাদ দিতে হইছে। তারপরেও ভালই জটিল হয়ে গেছে, সেই কারনে টীকাগুলোও দিয়ে দিয়েছি। কাজে লাগল মনে হচ্ছে।

তোমার প্রশংসা পেয়েত হাওয়া উড়ছি :) :) শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।

২০| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৮

পারভেজ বলেছেন: খাটুনি নিয়ে ঠিক এই রকমটাই ভেবেছিলাম। কারণ, গল্পে থিওরিগুলি যেভাবে এসেছে, বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থাকে না।
যদি উপন্যাসের দিকে কখনো নিয়ে যাও, তাহলে আরেকটু চেনা উপমা দিয়ে বিষয়গুলি একটু সহজ করা যায় কিনা ভেবে দেখো, সেই সাথে কিঞ্চিত হিউমার। আবেগ এর একটা অংশ কিন্তু মানুষ রসবোধের ভেতর দিয়েও প্রকাশ করতে চায়।
তোমাকে দিয়ে এটা সম্ভব বলেই বলছি। আমি এই গল্পে বিস্মিত, শিহরিত হতে চাই, কখনো হাসি কিংবা সুক্ষ কষ্টের ছোঁয়া পেতে চাই বাক্যে বাক্যে।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৮

শান্তির দেবদূত বলেছেন: চমৎকার একটা পর্যবেক্ষণ বস। এই কারনেই ত আপনারে বস মানি। এত কম শব্দে গল্পের দূর্বল দিক গুলো ভাল ভাবেই দেখিয়ে দিয়েছেন।

উপন্যাসের চিন্তা মাথায় ছিল না, ছোট সাই-ফাই হিসাবেই লেখা শুরু করেছলাম। হয়ত তাই হিউমারটুকু অনুপস্থিত। পরের গল্পটা একেবারে হাত খুলে, দরকার হলে আরও সময় নিয়ে লিখতে হবে। আপনার এই মন্তব্য পরের গল্পের পাথেয় হয়ে থাকবে।

অনেক ধন্যবাদ বস, খাস্তগীরের নতুন পর্বটা পড়েছেন না কি? ঐটাতে একটু বেশিই হিউমার দিয়ে ফেলেছি মনে হয় :)

২১| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০০

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: বাহ!!! চমৎকার!
হাসান মাহবুব ভাইয়ের দ্বিতীয় কমেন্টের সাথে একমত !
শুভকামনা জানবেন !

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২৮

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ স্বপ্নবাজ অভি। এত বিশাল আকারের গল্প ধৈর্যসহকারে পড়েছেন, উপভোগ করেছেন, চমৎকার ইন্সপায়ারিং কমেন্ট করেছেন; আর কি চাই, আমার কষ্টটুকু স্বার্থক।

শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

২২| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩৩

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
গল্পটা পড়েছিলাম গতকাল রাতেই। নেট ঝামেলার কারনে মন্তব্য করতে পারিনি।

গল্প পড়ছিলাম আর তন্ময় হয়ে ভাবছিলাম কি খাটুনি গেছে আপনার গল্পটা দাঁড় করাতে! তবে টেকনিক্যাল যায়গাগুলো বোঝা একটু কঠিন ছিল। আমি বিজ্ঞানের ছাত্রনা। ফিজিক্স, পোগ্রামিং আর ম্যাথ এর কিছু জ্ঞান থাকলেও উদ্ভিদবিদ্যায় একেবারেই অজ্ঞ। অনেক কিছুই শিখলাম গল্প থেকে!

আমি একটা জিনিস খেয়াল করেছি, সাইফাই গল্পে টেকনিক্যাল ব্যাপারগুলো একটু বেশি চলে এলে, যারা সাইফাই পরতে অভ্যস্ত নয় তাদের জন্য গল্পটা বোঝা একটু কঠিন হয়ে যায়। এটা আমার কোন সাজেশন ভাববেন না, জাস্ট নিজের চিন্তাভাবনা। তবে টীকাগুলো থাকায় ভাল হয়েছে।

থিমটা খুবই চমৎকার। চাইলে এর মুলটা ধরে রেখে দুই একটা চরিত্র নিয়ে কিছু স্পিন অফ গল্প লিখে ফেলতে পারেন। ভাল হবে :)

একটা সাইফাই লিখছিলাম, শেষে এসে ঝুলে গেছে। :(

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৩১

শান্তির দেবদূত বলেছেন: কি কোইন্সিডেন্ট! আমি আপনার হরর গল্পটা পড়ে এসে দেখি আপনি আমার ঘরের মেহমান, হা হা হা।

আসলে গল্পের থিমটাই এমন যে কিছু কিছু সাইন্টিফিক টার্ম চলে আসে। অনেক চেষ্টা ছিল যত কম সায়েন্স ব্যবহার করা যায়; শেষশমেষ এইটা দাড়াল। যদি একেবারে হাত পা খুলে লিখে যেতাম তাহলে ত মনে হয় পাবলিক দৌড়ানি দিয়া ব্লগ ছাড়া করত, হা হা হা।

আসলে আমার চেষ্টা থাকে যথাসম্ভব বাস্তবের কাছাকাছি থেকে সাই-ফাই লেখা, গল্পের অনেক কিছুই এমন (যেটা উপরে পারভেজ ভাই এর কমেন্টে একটু ব্যাখ্যা করেছি, ৭নং কমেন্টে আরও আছে) বাস্তব থেকে নেওয়া। সেই কারনে আমার সাই-ফাই গল্পে সায়েন্টিফিক টার্ম বেশি থাকে। পরের গল্পগুলোতে এই দিকটায় আরও নজর দেওয়া জরুরী হয়ে গেছে। আর সাজেশন দিবেন না কেন? আমি আমার লেখার ব্যাপারে খুবই খোলামেলা, যে কোন আলোচনা, সমালোচনা, সাজেশনের জন্য একেবারে উম্মুক্ত। সো, নির্দিধায় কাটা ছেড়া করে যান।

স্পিন অফ জিনিসটা বুঝি নাই, অনেক গ্যাপে আবার ব্লগে এসেছি ত তাই অনেক ব্লগিও ভাষা এখনো আয়ত্ব করতে পারিনি :)

জলদি লিখে ফেলুন, ঝুলে গেলে টেনে নামিয়ে ফেলেন।

২৩| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৫৯

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
স্পিন অফ ব্লগিও কিছুনা, গল্পের ভাষাই, বিশেষ করে সাইফাই গল্পের। :)
এর মানে হচ্ছে মুল গল্পে যেসব চরিত্র আছে তাদের মধ্যে কোন একটা চরিত্রকে ফোকাস করে সম্পূর্ণ আলাদা একটা গল্প লিখা যেখানে মুল গল্পের থিম কিছুটা চলে আসতে পারে আবার নাও পারে। এখানে ক্যারেক্টারটা মেজর ক্যারেক্টার হতে পারে বা মাইনর সেটা সমস্যা না। আবার একাধক ক্যারেক্টারও এসে গেলে ক্ষতি নেই। এই ধরনের গল্পের মুল উদ্দেশ্য থাকে মুল গল্পের থিমটাকে আরও বিস্তৃতি দেওয়া বা আরও এস্টাবলিস করে ফেলা। বাইরের লেখকরা অহরহ করছেন। মুভিতেও দেখছি। আমাদের দেশে একটু অপ্রতুল। এই গল্পটার থিম থেকে আরও কিছু স্পিনঅফ বেরতে পারে বলে মনে হয়েছে। :)

আর যেহেতু আমি অনুজ, আমাকে "তুমি" করে বললে খুশী হব ভাইয়া :)

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:০৬

শান্তির দেবদূত বলেছেন: বাহ! কত্ত অজানারে !! জানার কোন শেষ নাই !
আইডিয়াটা মাথায় থাকল, ভেবে দেখতে হবে। এর জন্য অবশ্য বিশাল একটা থ্যাংক্স পাওনা, তুমি।

২৪| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:০৫

বোকামন বলেছেন:





পঞ্চমাত্রার ইউনিভার্স !
আসলে প্রায় আট যুগ ধরে আমরা নিজেরাই একটা সিগলান রিসিভ করে যাচ্ছি তবে এটার অর্থ বের না করতে পারার কারণে যোগাযোগ স্থাপণ সম্ভব হয়নি !
হূম .. গল্পটি পড়ে ঘোরের মধ্যে থাকতে থাকতেই মন্তব্য লিখছি-

কৌতুহল- রায়হানের পৃষ্ঠায় কৌতূহল জেগে উঠলো পর পৃষ্ঠা ..
অতঃপর কৌতূহল মেটাতে থিউরীর পুকুরে ডুব দিলুম। চোখ খোলা রেখেই যদি থিউরীগুলোর কর্মযজ্ঞ দেখি তবে আমাকে সায়েন্সের অগ্রগতি নিয়ে আর্টিকেল পড়তে বলবেন গল্পের রায়হান চরিত্রটি। কারণ সায়েন্স ফিকশনের ডায়মেনশন অগ্রগতি ও পশ্চাৎ-গতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। গতি ও সময়ের ভারসাম্য মেনটেইন করে জাস্ট প্রাণীর উপস্থিতি ট্রিটমেন্ট করতে পারাটাই হয়তো সাই-ফাই-এর মূল লক্ষ্য। সো ! বোকামনের দৃষ্টিকোণ থেকে গল্পটি অবশ্যই সফল। তবে চালাক/বিজ্ঞান জানা মনটি উঁকি দিতে চাইছিলো সেন্ট্রাল ট্রান্সমিটিং রুমে টিউবের উপর মনিটরের 5 8 2 6 9 2 7 10 ..
নো ওয়ে ! বোকামন বাদ সাধলো। হা হা :-) তবে ফোটন কাউন্সিলের স্পাইগুলোর মত হিসেব নিকেশ কিছুটা চলছিলো অবশ্য। পাঠকের চিন্তাজগতে পঞ্চমাত্রার ইউনিভার্স তৈরি করতে বেশ কিছু উপাদানসমূহের প্রয়োজন ছিলো। আমার মনে হয় সাই-ফাই গল্প লিখার সবচাইতে চ্যালেন্জিং কাজ হইলো ঐখানা ! অর্থাৎ সমীকরণ সহজ প্রতিবোধনে নিয়ে আসা। আমরা সবাইতো আর বিজ্ঞানের ছাত্র নই ! বিশেষ প্রশংসা করবো সহজ এবং প্রাঞ্জল উপস্থাপনের জন্য।
লম্বা করে একটা দম নিয়ে কিছুক্ষণ আটকে রাখলুম। গল্পটা বেশ ধীরে-সুস্থে আগাচ্ছিলো, ক্লিয়ার ভিউ যাকে বলে তাই যদি গল্পের সাইজ আরো বড় হতো তবে পাঠতৃপ্তি পরিপূর্ণ হতো বোধহয়। পুরো থিম এবং প্লট সেটিংস টি পুরোপুরি উপন্যাস(আকৃতি) সহায়ক। বোকামন অতি নগণ্য সাধারণ, কমজানা পাঠক- সমালোচনা কী আর করবে ! লেখকের মাথায় অনেককিছুই আছে(গল্পের থিম এবং বিশেষ জ্ঞান) সেগুলোকে যদি আরো কিছুটা সময় নিয়ে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেন তবে নিশ্চিত পাঠক এবং লেখক উভয়ের ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসির রেখা দেখা যাবে- পরিতৃপ্তির :-)


দৈনন্দিন রুটিরুজির প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত তাই খুব যত্ন সহকারে পড়া বা মন্তব্য করা সম্ভবপর হয়না সবসময় :-(
আজকেও পুরোপুরি পারলাম না ..
তবে শুভকামনা রইলো সবসময়ের জন্য- ভালো থাকুন, সবুজ থাকুন, মুক্ত আকাশে লেখালেখি করুন:-)

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:৪৩

শান্তির দেবদূত বলেছেন: প্রিয় বোকামন, প্রথমে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এত ব্যস্ততার মধ্যেও এত বিস্তারিত ও চমৎকার একটা কমেন্ট করার জন্য। কমেন্টে অনেক অনেক প্লাস। :)

হা হা হা, ঠিকই বলেছেন। ডায়মেনশন টাইমেনশন এগুলো চোখ বন্ধ করেই দেখতে হয়। অনেক চেষ্টা ছিল সহজ করে বিজ্ঞানের বিষয়টা ফুটিয়ে তুলে, কতটুকু পেরেছি সেটা বুঝতে পারছি না। আমার কাছে ত মনে হচ্ছে পানি ভাত, হা হা হা ।

অনেক জটিল হয়ে গেছে, কি করব বলেন, আমি দিব্যচোখে যেভাবে দেখতে পারছি সেভাবে লেখনীর মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে পারছি না; লেখক হিসাবে এটাই মনে হয় সবচেয়ে বেশি পীড়াদায়ক ব্যাপার। দেখতে পারছি, বুঝতে পারছি কিন্তু শুধু লিখে পাঠকের কাছে পৌছুতে পারছি না। ভাল লেখকরা পারেন, তাই ত তারা ভাল লেখক :) । আমাকে হয়ত এই কষ্টটা নিয়ে থাকতে হবে।

আমারও মনে হচ্ছে এই গল্পটার প্লট অনেক বড় আকারেও সম্ভব। আসলে আমার সাই-ফাই গুল এমনি। অনেক গুলো প্লট নিয়ে একটা লেখি। সেই কারনে অনেক বড়ও হয় আবার জটিলও হয়ে যায়। :( :( আবারও লেখনীর অক্ষমতা :( :(

আপনার মত গুণী পাঠকরা কষ্ট করে বুঝে নেয়, কষ্ট করে আনন্দটুকু খুটে খুটে বের করে নেয়, এটাই পরম পাওয়া।

আবারও অনেক অনেক ধন্যবাদ, প্রিয় পাঠক ও গুণী লেখক; ভাল থাকুন, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা নিরন্তর।

২৫| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:৫১

খেয়া ঘাট বলেছেন: এরকম ওস্তাদী লিখা পড়লে নিজেক ব্যাক বেন্চে বসা ছাত্র মনে হয়।
যে ছাত্র পেছন থেকে বসে স্যারের দিকে শুধু অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে।

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:০৩

শান্তির দেবদূত বলেছেন: কি কন বস! আপনার মত দরদ দিয়ে কয়জন লিখতে পারে!
লজ্জাই পেলাম, এমন উচ্ছসিত প্রশংসা পেয়ে। ধরনী দ্বিধা হও।

অনেক ভাল থাকুন প্রিয় লেখক। শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

২৬| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:৫৮

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:
অসাধারণ!!!!

প্রিয়তে নিলাম।


++++++++++++++++++

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:০৬

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় স্নিগ্ধ শোভন ভাই। আপনাদের প্রশংসা পেয়েই ত এইসব লেখার চেষ্টা করি মাত্র, কেমন হয় কে জানে!

কৃতজ্ঞতা ও সেই সাথে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।

২৭| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:১৬

বোকামন বলেছেন:
লগিন করলুম !
উত্তরে দুইখানা হাসি- ইমো চারখানা দুঃখী- ইমো দেখে ..

অনেক জটিল হয়ে গেছে, কি করব বলেন, আমি দিব্যচোখে যেভাবে দেখতে পারছি সেভাবে লেখনীর মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে পারছি না; লেখক হিসাবে এটাই মনে হয় সবচেয়ে বেশি পীড়াদায়ক ব্যাপার। দেখতে পারছি, বুঝতে পারছি কিন্তু শুধু লিখে পাঠকের কাছে পৌছুতে পারছি না। ভাল লেখকরা পারেন, তাই ত তারা ভাল লেখক :) আমাকে হয়ত এই কষ্টটা নিয়ে থাকতে হবে

মন্তব্যখানা কষ্ট করে করলুম তাতে লেখা ছিলো -
বিশেষ প্রশংসা করবো সহজ এবং প্রাঞ্জল উপস্থাপনের জন্য।

আমার কাছে এই গল্পটি একদমই জটিল লাগেনি। আর সায়েন্স ফিকশন গল্প জটিল হবেই !কম অথবা বেশী !! কোন ক্ষেত্রে পাঠক ধারণ করতে পারেন কোন ক্ষেত্রে পারেন না। বোদ্ধা সায়েন্স ফিকশন পাঠকরা কিন্তু জটিলভাবে লেখা গল্পগুলোতে অধিক মজা পায় :-) কখনো সাধারণ পাঠকের জন্য লিখবেন(আমার মত) কখনো ভারী হবে সাইন্টিফিক টার্ম -এর ব্যবহার তাতে সমৃদ্ধই হবে বাংলা সায়েন্স ফিকশন :-) তাই না ?

গুণী লেখক !!!! ভাইজান কেন যে লজ্জা দেন ওভাবে বলে। বোকামন কী আর লেখালেখি করতে পারে ..

[দ্বিতীয়বার মন্তব্যে বিরক্ত হবেন না যেন :-)]



১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:৩১

শান্তির দেবদূত বলেছেন: প্রিয় বোকামন ভাই, আরে আপনাকে বলিনি তো! ঐটা আমারই আক্ষেপ ছিল।

মানে বলতে চেয়েছি, আমার নিজের কাছেই কিছুটা জটিল মনে হচ্ছে; মানে এখনো অনেক কিছু চোখ বন্ধকরলে ভেসে উঠে কিন্তু লিখে প্রকাশ করতে পারি না, এই আর কি।

এই যে এখানেও নিজের অনুভুতিটা ঠিক মত বুঝাতে পারছি না! ঐ একই, লেখনীর দূর্বলতা। হা হা হা , বেটা লেখনী ত ভালোই বিড়ম্বনা দিচ্ছে ! হা হা হা :) :)

আপনি সাধারন পাঠক ? হুমম, ঠিক আছে তবে সামনে শুধু একটা প্রত্যায় যোগ করতে হবে আর কী! :) :)

বিরক্ত কি বলছেন ! আপনার আগমন সবসময় আনন্দদায়ক।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩২

শান্তির দেবদূত বলেছেন: আর সায়েন্স ফিকশন গল্প জটিল হবেই !কম অথবা বেশী !! কোন ক্ষেত্রে পাঠক ধারণ করতে পারেন কোন ক্ষেত্রে পারেন না। বোদ্ধা সায়েন্স ফিকশন পাঠকরা কিন্তু জটিলভাবে লেখা গল্পগুলোতে অধিক মজা পায় :-) সেই রকম লাগল আপনার এই কথাটা। আমি এভাবে ভেনে দেখেনি আগে। ভরসা পাইলাম জটিল সাই-ফাই লেখার :)

ভাল থাকুন প্রিয় পাঠক ও লেখক।

২৮| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:২৭

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

ভাই লম্বা মন্তব্য করতে পারিনা শুধু বলব দুর্দান্ত একটা গল্প পড়লাম।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩২

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ, প্রিয় কান্ডারী অথর্ব ভাই; এত দীর্ঘ লেখাটা পড়েছেন, ভাল লেগেছে, ভাল লাগা জানিয়েছেন, এই তো চাই।লম্বা মন্তব্য কোন ব্যাপার না, পাঠের আনন্দ লম্বা হলেই হলো, হা হা হা।

অনেক ভাল লাগল আপনার প্রশংসা পেয়ে। শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

২৯| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩২

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: বোটানী আর ফিজিক্সের মেলবন্ধন দেখে কিঞ্চিত বিস্মিত হলাম! কম্পু নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে করতে ফিজিক্স ভুলে বসে আছি। বায়োলজি আবার আমার পছন্দের সাবজেক্ট!

গল্পটা আমার কাছে কিন্তু মোটেও বড় লাগেনি ভাইয়া। এতটুকু গল্পের কলেবর ঠিকমত তুলে আনার জন্যে লাগতই। বরঞ্চ আরো বড় হতে পারতো।

অনেকদিন পর একটা মনের মত স্যায়েন্স ফিকশন পড়লাম!

ফিরে আসায় নিরন্তর শুভকামনা! ভালো থাকবেন সবসময়।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:২২

শান্তির দেবদূত বলেছেন:
প্রিয় ব্লগার ছোট ভাই, মনের মত সাইন্স ফিকশন! কউ কি? ব্লগে আবার ভাল ভাল সাইন্স ফিকশন লেখা শুরু করছে কয়েক জন ভাল ব্লগার। আমি তো অনেক গ্যাপদিয়ে লেখাশুরু করলাম, অনেক ভুল হচ্ছে।

ভাল লেগেছে শুনে বেশ ফুড়ফুড়ে লাগছে, কষ্টটা সফল হয়ছে।
ভাল থাক সবসময়, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

৩০| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৯

অপু তানভীর বলেছেন: নতুন গল্প কবে দিবেন ????

আজকে থেকে প্রতিদিন এই একটা লাইন লিখবো যতদিন না নতুন গল্প আসে !

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:২৭

শান্তির দেবদূত বলেছেন: খাইছে ! ছেলেপিলে তো ডান্ডা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে গল্প লেখার জন্য! ভয় পাইলাম!

প্রিয় ব্লগার ভাই, চেষ্টায় আছি ২/৩ দিনের মধ্যে একটা গল্প লিখার। তারপর ২/৩ দিন চলে যাবে রিভিউ, বানান চেক, মডিফাই করা :) । আশা করছি ৫/৬ দিনের মধ্যে একটা লেখা দিব।
ভাল থাকুন, প্রিয় রোমান্টিক ব্লগার।

৩১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: সমীকরণের হিসেব যদিও মাথায় ঢোকেনি তবুও বলছি পড়তে বেশ ভালো লেগেছে।
শুভকামনা প্রিয় লেখক ।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৭

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ, আপনার কমেন্ট ও প্রশংসা সবসময় উপভোগ্য।
"প্রিয় লেখক" --- কেমন যেন লাগল; আমি কি এখন আসলেই লেখক, কেমন যেন একটা ভাল লাগা ছড়িয়ে গেল মন জুড়ে!
ভাল থাকুন সবসময়, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা সবসময়ের জন্য।

৩২| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২৬

আট বছর আগের এক দিন বলেছেন:
ক্রেডিট ছাড়াই ফোটন ভ্যানিলা খাইতে মনচায় :) । ফোটন কাউন্সিলের স্পাই, সিলিকামভ্রেলা নামদুইটায় মজা পাইসি । ৮৫,২৫০ টেরা-ওয়াট-ঘন্টা? মাই গুডনেস :-*

তিন এর ডেস্ক্রাইপশন টা বেশ নার্ভি হৈসে । আটটা অংশের প্রতিটাতেই বর্ণনা বেশ সাবলীল । পাঠের ফ্লো ছিল স্মুথ । ননলিনিয়ার স্টোরিটেলিং এর এই প্যাটার্নটা আমার ভাল লাগে ।

প্লাস্টিড প্যাটার্ন আর স্ট্রিং থিউরির কম্বিনেশন-এই কন্সেপ্টটাই নতুন । মুল প্লটে এই কনসেপ্ট এর দুর্দানতিস ইমপ্লিমেনটেশন হৈসে, পুরোটাই ক্রেডিবল মনে হৈতেসে । তবে আইডিয়াটার পরিব্যপ্তি বিশাল । সে হিসাবে আরো বিস্তৃত করে লিখার স্কোপ আছে, যেমন কিকি্র ক্লোরফিল ফ্লুরোসেনস সহ অ্যামবিয়েনসের আরো কিছু ডেস্ক্রাইপশন আস্তে পারে । টুইষ্টগুলো সারপ্রাইজিং আর ফিনিশিংটা পারফেক্ট ।

হুম, প্রকৃত বিপ্লবী বিজয়ের স্বাদ গ্রহণের জন্য বেঁচে থাকে না…
ভাল একটা লেখা পড়ার পর সেটার রেশ থেকে যায় । সেই খান থেকে বলতেসি-একটা মাস্টারপিস পড়ার ফিলিংস পাইতেসি ।

টুপি বিয়োজন ।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৮

শান্তির দেবদূত বলেছেন: হা হা হা, ক্রেডিট ছাড়াই ফোটন ভ্যানিলা এখন পাবা কিকি গ্রহে গেলে। যাবা না কী ?

৮৫,২৫০ টেরা-ওয়াট-ঘন্টা? মাই গুডনেস -- হুম, একটু গড়বড় হয়ে গেছে এইখানে। আসলে ২০০৯ সালের হিসাবে পৃথিবী মোট প্রোডাকশন 20,053TWh. কিন্তু গল্পের পটভুমির সময়ে (প্রায় ১৫,২০ বছর পর) এটা প্রেডিক্ট করেছি প্রায় 85250TWh। এখানে যে ভুলটা করেছি এই পরিমান উৎপাদন হয় বছরে, আর গল্পে দেখিয়েছি ঘন্টায়। হোয়াট এ অবজার্বেশন, স্যারজ্বী!! মনে করে নাও আগামী বিশ বছরে এমন কোন টেকনোলজি আবিষ্কার হয়েছে যার কারনে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে এক্সপোনেনশিয়ালি।

ঠিকই বলেছ, কিকি গ্রহের আরও বিশদ বিবরন আসতে পারত। যদি কখনও মডিফাই করি লেখাটা তাইলে এই অংশে ব্যাপক কাজ করা যাবে।

ভাল লেখা হোক আর কমেন্ট, সেটার রেশ থেকে যায়, যেমন তোমার কমেন্টের উত্তর দেওয়া সময় আমার হাসি প্রায় কান পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল পুরোটা সময়। :)

মাস্টার পিস ! কি জানি! তবে মাস্টার হোক আর না হোক পিস একটা হইছে এটা নিশ্চিত। :)

কি টুপি দিছ ? আমি আবার হ্যাট ছাড়া নেই না, আর জিন্নাহ-টুপিতে এলার্জি আছে ;)

আরে একটু মজা করলাম, টুপি সানন্দে গৃহিত হইল। ভাল থাক সব সময়, প্রিয় ছোট ভাই। :) :)

৩৩| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২৭

আট বছর আগের এক দিন বলেছেন: *নয়টা অংশ

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৯

শান্তির দেবদূত বলেছেন: আরে বুঝছি তো :)

৩৪| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০৯

রাজসোহান বলেছেন: ২০ মিনিট লাগলো, শেষ কবে এতো বড় গল্প অনলাইনে পড়েছি মনে করতে পারছি না! ভালো লাগলো দেবদূত ভাই। :)

ভালো আছেন? চিনতে পেরেছেন আমাকে? ;)

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৪৯

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ রাজসোহান ভাই। আপনার কমেন্ট পড়ে সম্মানিত বোধ করছি ।

বলেন কি চিনতে পারবো না কেন? পত্তুম প্লাসরে কি ভোলা যায়! :) :)

ভাল থাকুন, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

৩৫| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০৯

আদনান শাহ্‌িরয়ার বলেছেন: কাটাফাটি, ফাটাকাটি রকম ভালো লাগলো । এইটা নিয়ে একটা উপন্যাস হয়ে যেতে পারে !!!!! :) :)

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৮

শান্তির দেবদূত বলেছেন: কাটাফাটি, ফাটাকাটি! বাহ, আবেগের কি উচ্ছসিত বহিঃপ্রকাশ! আপনার কাছে ভাল লেগেছে দেখে ভাল লাগল, অনেক শুভেচ্ছা রইল। ভাল থাকুন নিরন্তর।

৩৬| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৩

অপু তানভীর বলেছেন: নতুন গল্প কবে দিবেন ????

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৫৪

শান্তির দেবদূত বলেছেন: ওরে !! বাচ্চাটা কি কিউট!!
কিভাবে তাকিয়ে আছে! নাছোড়বান্দা চাহোনী :)

লিখছি ভাই, ৩/৪ দিনের মধ্যে দিব, ইনশাআল্লাহ।

৩৭| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:৫০

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: জেনেটিক্যাল সায়েন্সের সাথে সাব এটমিক ফিজিক্সের এরকম ইন্টারফেস মাথায় আসেনি কখনো। যদিও কখনো হবার নয় এরকম ধারনা, কিন্তু গল্পটা পড়ার সময় মনে হয়েছিলো সম্ভব তো হতে পারে!

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৫:০৪

শান্তির দেবদূত বলেছেন: ভাল লাগল আপনার মন্তব্য পেয়ে।

যদিও ক্লিয়ার ধারনা নেই এই ব্যাপারে; স্কুল কলেজ লেভেলে যতটুকু জ্ঞান আছে সেটার উপর ভিত্তি করে বলছি, আসলে সাবএটমিক লেভেলে তো সবকিছু একাকার হয়ে যাওয়ার কথা। ফিজিক্স, ক্যামেস্ট্রি, প্রাণী বিদ্যা, মেটালার্জি, ভুগোল বলেন আর জেনিটিক্স; সব তো একটা জায়গার মার্য করার কথা।

যেহেতু সাই-ফাই লেখি, তাই চেষ্টা থাকে বাস্তবের কাছাকাছি রেখে কিছু লেখা। যাতে একেবারে রুপকথার গল্প হয়ে না যায়, আপনার মত একজন এক্সপার্টের মতামত পেয়ে মনে হয়েছে সে উদ্দেশ্য কিছুটা হলেও স্বার্থক হয়েছে।

অনেক শুভেচ্ছা রইল।

৩৮| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:০৪

অরুণাচল দত্ত চৌধুরী বলেছেন: দেবদূত, প্রথম দর্শনেই প্রেমে পড়লাম। আজ্ঞে, না, আপনার না। আপনার লেখা গল্পটার। আর আপনার জন্যও আছে। সে'টা হল ভিখিরির মত প্রত্যাশায় এ'রকম গল্পের জন্য বাড়িয়ে দেওয়া আমার হাত। ফিজিক্সের প্রফেসরের গোফের বর্ণনা আমার খুব প্রিয় এক সাইন্স ফিকশন লেখকের ছবির সাথে মিলে গেল। সে কি আমার কল্পনা?
আপনারা সবাই ছদ্মনামের আড়ালে থাকেন। কিন্তু আপনাদের চিনতে অসুবিধা হয় না। ঠিকই বেছে নিতে পারি। রায়হান যেমন বেছে নিতে পারে ঋভুকে।
যতদিন না ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো টাইপের মহান কেউ বাংলা স্পেল চেক ফ্রিতে বিলি করবেন, তদ্দিন রহস্যময়ী এই ভাষায় বানানের সাথে লেখকদের লড়াই জারি থাকবে।
ভালো থাকবেন। অনেক অনেক লিখবেন আমার জন্য।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৯

শান্তির দেবদূত বলেছেন: প্রথমেই বলি, আপনার ব্লগ ঘুরে এলাম, এত কম কমেন্ট করেন আপনি, এমন কি সময়ের অভাবে কমেন্টের রিপ্লাই দিতে পারেন না; সেই আপনি আমার জন্য এত বড় একখানা কমেন্ট করলেন! সত্যি বলছি একেবারে আপ্লুত হয়ে গেলাম। সম্মানিত বোধ করছি।

গল্পের ঋভুদের খুঁজে পাওয়া যায়, লেখকদের কলমই তাদের খুঁজে নেয়, কিন্তু নিভৃতচারী আপনি আমার এই লেখার খোঁজ কিভাবে পেলেন সেটা একটা সহস্য আমার জন্য।

প্রফেসরের গোফের বর্ণনা মিলে যাওয়াটা কাকতালিয় হলেও হতে পারে। অবচেতন মনে উনি ছিলেন না সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই, আকন উনি যে আমারও খুব প্রিয় একজন সাই-ফাই লেখক!

স্পেল চেকারের আসলেই অনেক বেশি দরকার, হয়ত অচিরেই পেয়ে যাব এমন কোন সফটওয়ার।

আপনার প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ করতে পারব জানি না, তবে চেষ্টা জারি থাকবে। ভালো থাকুন সবসময়, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

৩৯| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৭

অরুণাচল দত্ত চৌধুরী বলেছেন: আমি ফেসবুকে বাস করি সচরাচর। যদি ওই খানে দেখা হয়!

নইলে এখানেও হতে পারে, আমি আসব আপনার টানেই।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৭

শান্তির দেবদূত বলেছেন: সম্মানিত বোধ করছি। ফেসবুকে এড করে নিয়েছি।
শুভেচ্ছা রইল।

৪০| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০২

মারুফ মুকতাদীর বলেছেন: কয়েকদিন আগেই পড়েছিলাম, মন্তব্য করতে পারিনি চেষ্টা করেও। আজকে আবার পড়লাম। আপনার সব গল্প পড়ে ফেলবো কিছুদিনের মধ্যেই।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:১২

শান্তির দেবদূত বলেছেন:
গল্প পড়েছেন এতেই আমি আনন্দিত, কমেন্ট, প্রশংসা এগুলো তো উপরি পাওয়া। কোন সমস্যা নেই, সময় করে পড়ে নিবেন। আপনাদের পড়ার জন্যেই তো লেখা।

অনেক ভাল থাকুন, শুভেচ্ছা রইল।

৪১| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০৭

দি ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো বলেছেন: ভাল লিখেছেন

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:১৩

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো ভাই। ভাল থাকুন সবসময়। শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

৪২| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৬

বর্ণালী পাল বলেছেন: কল্প গল্প আমার খুবই প্রিয় । আপনার গল্পটা পড়ে খুবই ভাল লাগল । আশা করছি আপনার কাছ থেকে আরও অনেক গল্প পাব । :) :) :) :) :) :)

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:১৭

শান্তির দেবদূত বলেছেন: কল্প গল্প আপনার খুব প্রিয় শুনে ভাল লাগল, যাক আরেকজন সাই-ফাই এর পোকা পাওয়া গেল :) :)
গল্প ভাল লেগেছে শুনে আমারও ভাল লাগল। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

৪৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৯

নক্ষত্রচারী বলেছেন: দারুণ লিখেছেন ভাইয়া

এত চমৎকার সব আইডিয়া কি করে যে পান !!!

আইজ্যাক এসিমভের কিছু সাইফাই আছে অত্যন্ত জটিল, আপনার গুলো জটিল হলেও পাঠোদ্ধার করা যায় ।

শুভকামনা রইল :)

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২৩

শান্তির দেবদূত বলেছেন:
আইজ্যাক আসিমভ তো বস পাবলিক। উনার গল্প প্রায় সবগুলোই পড়া :) :)

আইডিয়া এমনিতেই চলে আসে :) সারাদিন মাথার মধ্যে নতুন আইডিয়ার খুজঁ দ্যা সার্চ চলতে থাকলে আপনারও আসবে :) :)

অনেক ধন্যবাদ নক্ষত্রচারী, ভালো থাকুন। শুভেচ্ছা রইল।

৪৪| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:২১

কয়েস সামী বলেছেন: অসাধারন! অনেক দেরীতে পড়া হল বলে খারাপ লাগছে!

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩২

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, প্রিয় লেখক। ভাল লেগেছে শুনে ভাল লাগলো। এত বড় গল্প পড়েছেন এটাই তো আমার জন্য আনন্দের; কমেন্ট, ভাল লাগা জানানো এগুলো তো বোনাস পাওয়া।
ভাল থাকুন, শুভকামনা রইল।

৪৫| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩৩

অপু তানভীর বলেছেন: ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৫৪
লেখক বলেছেন: ওরে !! বাচ্চাটা কি কিউট!!
কিভাবে তাকিয়ে আছে! নাছোড়বান্দা চাহোনী :)

লিখছি ভাই, ৩/৪ দিনের মধ্যে দিব, ইনশাআল্লাহ।


তিন চার দিনের ভিতর গল্প দেওয়ার কথা ছিল সেই ১৮ তারিখে !

আজকে ২৫ তারিখ ! সেই হিসাব কি আছে ?

গল্প কবে দিবেন ?? /:) /:) /:)

হরতাল দিমু কইলাম !!

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৫০

শান্তির দেবদূত বলেছেন: :( একটু দৌড়ের উপর আছি যে ভাই!
চেষ্টা করছি :)
দিব ইনশাআল্লাহ, ৩/৪ দিনের মধ্যেই :)

৪৬| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:২৭

ব্রাইটসেন্ট্রাল বলেছেন: +

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৯

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ, এত গল্প পড়েছেন, ভাল লেগেছে, প্লাস দিতে না পেরে কমেন্টে প্লাস লিখে দিয়েছেন, আর কি চাই! শুভেচ্ছা রইল।

৪৭| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৩১

ব্রাইটসেন্ট্রাল বলেছেন: + বাটনে ক্লিক করা পরে আধা ঘন্টা ধরে চাক্কা শুধু ঘুরছেই .... আপডেট আর হচ্ছে না .... :(

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৪৩

শান্তির দেবদূত বলেছেন:
জানিতো ভাই। প্রায় মাস খানেক ধরে এই সমস্যা!! ভালো ভালো কিছু পোষ্টে প্লাস না দিতে পারার বেদনাসিক্ত হয়ে আছি অনেক দিন ধরে :( :(

৪৮| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৮

ভোরের বাতাস বলেছেন: ভাই খুবই সুন্দর হয়েছে। :)

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৫৮

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভোরের বাতাস। ভাল থাকুন, শুভকামনা রইল।

৪৯| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:০৪

এক্স রে বলেছেন: সর্বশেষ কল্পকাহীনি পড়েছিলাম এস এস সি দেয়ার আগে .। সেটা ছিল ২০১২ সাল .। ইন্টারমিডিয়েটে উঠে ৭ টা সাই ফাই পড়লাম এবং ৭টার (খাস্তগীর সমগ্র সহ ৯টা) লেখক শান্তির দেবদূত .। ভালোলাগা রেখে গেলাম এবং মোটেও এর পরিমান কম নয় .।

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:২০

শান্তির দেবদূত বলেছেন:
প্রিয় এক্স রে ভাই, আপনার কমেন্ট পড়ে কিছুক্ষণ ভাবলাম চুপচাপ; কি রিপ্লাই দিব বুঝতে পারছিলাম না। এত সময় দিয়ে ধৈর্য নিয়ে গল্পগুলো পড়েছেন, সেই সাথে উপভোগ করেছেন, কৃতজ্ঞতা মিশ্রিত ধন্যবাদ ছাড়া আর কিই বা দিতে পারি!

ভালো থাকুন সবসময়, শুভকামনা রইল।

৫০| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৯

এক্স রে বলেছেন: আরেকটা জিনিস লক্ষ্য করলাম আপনার আইডি নেম এ এক্সরে শব্দটা আছে .। প্রিটেস্ট টা হয়ে যাক, আমিও কিছু ছাইপাশ লেখার চেষ্টা করব .। দোয়া করবেন

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৯

শান্তির দেবদূত বলেছেন: হুম, আমাদে আইডিতে একটা অংশ কমন আছে :)
আপনার সাই-ফাই এর অপেক্ষায় থাকলাম।
সাই-ফাই হলেই ঝাপিয়ে পরি। সো, নো টেনশন। নির্দিধায় লিখে ফেলুন। শুভকামনা রইল।

৫১| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০৬

বশর সিদ্দিকী বলেছেন: ভাল লাগল পরতে।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩৬

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই। পড়ে আনন্দ পেয়েছেন শুনে আমারও ভাল লাগল।

ভাল থাকুন, শুভকামনা রইল।

৫২| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:২৭

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: অনেক তথ্য সমৃদ্ধ বিগ পোস্ট
ভাললাগা থাকল

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৭

শান্তির দেবদূত বলেছেন: জ্বি, ঠিকই ধরেছেন; অনেক তথ্য সমৃদ্ধ বিগ পোষ্ট, তবে এগুলোকে সত্য ধরে কোন এক্সপেরিমেন্ট করতে যায়েন না। অন্যথায় লেখক দায়বদ্ধ নয়। :)

"ডোন্ট ট্রাই এট হোম" ;) ;)

ভালো থাকুন সবসময়। শুভকামনা রইল।

৫৩| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:২২

নিমতিতা বলেছেন: চমৎকার

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০৯

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ নিমতিতা ভাই। আপনাদের কাছে উপভোগ্য হলে লেখার আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে যায়।
ভাল থাকুন, শুভকামনা।

৫৪| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩৫

অণুজীব বলেছেন: ফিরে আসার জন্য ধন্যবাদ।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪১

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ, মনে রেখেছেন :)
ভাল থাকুন, শুভকামনা।

৫৫| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫০

অপু তানভীর বলেছেন: আপনে তো আর গল্প দিলেন না ! আবারও সাইফাই লেখায় হাত দিলাম !

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৪৮

শান্তির দেবদূত বলেছেন: লেখছি :) কিন্তু টানা লেখতে পারি না :(
ওয়াও!! গ্রেট, অপেক্ষায় রইলাম।

৫৬| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪০

শায়মা বলেছেন: সাই ফাই অনেক অনেক ভালোলাগা।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৩:২৬

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ শায়মা আপু। আপনার ভাল লেগেছে শুনে কষ্টটা স্বার্থক হয়েছে। ভাল থাকুন সবসময়, শুভকামনা রইল।

৫৭| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:০১

ইলুসন বলেছেন: অনেক কিছুই আছে যেগুলো সম্পর্কে আমি বিস্তারিত জানি না, তাই কী লিখেছেন তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে পারলাম না। অনেক বড় গল্প তবে পড়ার সময় ভাল লেগেছে। শুভ কামনা রইল।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৪৪

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ইলুসন ভাই, চেষ্টা ছিল ট্যাকনিকেল ব্যাপারগুলো যথা সম্ভব সহজ করে লেখা, কিন্তু তারপরেও অনেক কঠিন হয়ে গেছে কিছু কিছু জায়গায় :( আর আকারের কথা কি বলব! নিজের ই পিলে চমকে উঠার অবস্থা! এত বড় গল্প লেখলাম কেমনে!!

তারপরেও ধৈর্য নিয়ে পড়েছেন, ভাল লাগা জানিয়েছে ! আমার কষ্ট স্বার্থক। আবারও অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

৫৮| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৩

অপু তানভীর বলেছেন: /:) /:) /:) /:) /:)

এর পরে কত দিন গেল হিসাব আছে !! :(:(:(:(


গল্প এখনও পাইলাম না !!

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৪

শান্তির দেবদূত বলেছেন: :) লেখা শেষ করছি। এখন রিভিশন চলছে।
২/৩ দিনের মধ্যে খাস্তগীরের নতুন পর্ব দিতে পারবো আশা করছি :)
দেরী হয়ে যাওয়ার জন্য দুঃখিত, আসলে খুব ব্যস্ত ছিলাম গত ২/৩ সপ্তাহ।

৫৯| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৪৬

লেখোয়াড় বলেছেন:
আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি এই ভেবে যে, এতদিন আপনার এখানে আসিনি বা কথা বলিনি। কি দূর্ভাগ্য আমার, যেন চোখ থাকতেই অন্ধ। এত ব্লগারের ওখানে যাই অথচ আপনাকে এড়িয়ে গেলাম কি করে বুঝতে পারছি না, আগে কখনো এসে কথা বলেছি কিনা মনে নেই।

আপনার লেখা এতদিন না পড়ে ক্ষতি হযেছে আমারই।
এখন থেকে সে ক্ষতি আর হতে দিতে চাই না।

অনেক অনেক ভাললাগা।
ভাল থাকুন।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৪৩

শান্তির দেবদূত বলেছেন: প্রিয় বন্ধু ব্লগার, আপনি যেভাবে বললেন লজ্জাই পেলাম :!> :!>
আপনার নিকটা কি অদ্ভুত! লেখোয়াড়! যে শুধু লিখতেই জানে!! মুগ্ধ!
আপনার ব্লগে এক নজর চোখ বুলিয়ে এলাম! মাই গড! গুণী ব্লগার মনে হয় একেই বলে! আমিই অবাক হলাম যে এত দিন ব্লগে আছি আপনার সাথে পরিচয় হয়নি! এখন তো মনে হচ্ছে আমারই সমুহ ক্ষতি হয়ে গেল!

ভাল লেগেছে জেনে খুব ভাল লাগছে, কষ্টটা কিছুটা হলেও স্বার্থক হয়েছে মনে হচ্ছে। আপনার উৎসাহ পেয়ে লেখার স্পিহা আরও বেড়ে গেল। সেই সাথে সম্মানিত বোধ করছি। আপনার মত গুণী লেখকের কাছ থেকে সুন্দর সমালোচনা প্রত্যাশা করছি।

ভাল থাকুন, শুভকামনা রইল।

৬০| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৪০

অচিন্ত্য বলেছেন: নামখানা দেখে খুব পড়তে ইচ্ছা করছে। অফিসে :(
কপি করে নিয়ে যাচ্ছি। বাসায় পড়ার জন্য।

কথা হবে
ভাল থাকুন
:)

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৫২

শান্তির দেবদূত বলেছেন: প্রিয় লেখক অচিন্ত্য ভাই, নাম দেখে আপনার আগ্রহ জেগেছ শুনে ভালো লাগল, মলাটেরও যে গুরুত্ব আছে আজ টের পেলাম, হা হা হা ।

গল্প পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে, তৃপ্তি পান সেটাই হবে আমার পরম পাওয়া। যদি কষ্ট করে গল্পের দুর্বলতাগুলো নিয়ে সমালোচনা করেন তবে সেটা হবে বোনাসের উপর বোনাস। :) আপনার সুচিন্তিত সমালোচনার অপেক্ষায় :)

ভাল থাকুন, শুভেচ্ছা।

৬১| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৫

অচিন্ত্য বলেছেন: মাই গড ! কী লিখলেন আপনি ! বিলিভ মি, আমি পড়ার পর বেশ কিছুক্ষণ একেবারে চুপ করে ছিলাম। সাগরের কাছে গেলে যেমন আনন্দের অতিমাত্রায় মানুষ চুপ হয়ে যায়, তেমন।

প্রথমেই বলি, আপনার গল্পের পুরো মর্ম বোঝার সাধ্য আমার নেই। আপনার যে ব্যাপক পড়াশোনা তা গল্পখানাকে এক অনন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে। আমি এসবের কিছুই জানি না। স্ট্রিং থিওরি, গ্র্যাভিটি স্ট্রিং, নিউকোভিচ ক্লোরোপ্লাস্টিক প্যাটার্ন এসব কথা আমি এই প্রথম শুনলাম, বিস্মিত হলাম। শুধু বিস্মিত হলাম। আপনার কল্পনার দিগন্ত স্পর্শ করার মত বিশালতা আমার নেই। শুধু মুগ্ধতা ! নিঃশব্দ মুগ্ধতা !

গল্পখানিতে কত বিচিত্র বৈভব ! বিজ্ঞানমনস্কতার পাশাপাশি এমন মানবিক আবেদন ! পৃথিবীর সব আলো নিভে গেল অন্য কোথাও আলো জ্বালাবে বলে ! গ্রেট ! স্যালুট

আপনি আমাকে বলছেন গল্পের দুর্বলতা নিয়ে আলোচনা করার জন্য। হ্যাঁ, একটা দুর্বলতার কথা আমাকে বলতেই হবে। এই গল্পখানা আমার আজ সকালে অফিসের পথের বাস ভ্রমণের সময়টুকু একটুও গান শুনতে দেয়নি। সুতরাং এর দুর্বল দিক হল এই যে এটি পাঠকের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে বিলম্ব করিয়ে দিতে পারে।

ভাল থাকুন।

১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:১৩

শান্তির দেবদূত বলেছেন: আপনার কমেন্ট খানা পড়েও আমি কিছুক্ষণ থ মেরেছিলাম, এমন উচ্ছসিত প্রশংসা! একটু লজ্জা লজ্জাও লাগল।

আসলে এই গল্পের জন্য বেশি কষ্ট করতে হয়নি টাইপিং টুকু ছাড়া। এই গল্পের পুরা প্লটটা মাথায় ছিল গত তিন বছর ধরে, শুধু লিখতে পারছিলাম না।

আর প্রায় সব থিউরীই কাল্পনিক, যেমন "গ্র্যাভিটি স্ট্রিং, নিউকোভিচ ক্লোরোপ্লাস্টিক প্যাটার্ন, ইউনিফাইড স্ট্রিং থিওরি, একমাত্রার অবজেক্ট স্ট্রিং, স্ট্রিং গুলোর কম্পাঙ্কের মাধ্যমে টাইম-স্পেস তৈরি"। তাই তেমন পড়াশুনাও করতে হয়নি। আর আমার পড়াশুনা ও প্রফেশনের সাথে তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যার বিস্তর ফারাক। তাই ব্যাপক পড়াশুনার যে কৃতিত্ব আমাকে দিচ্ছেন সেটার আসলে প্রাপ্য আমি নই, এটা আপনার মহানুভবতা। তবে শুধু দিবা স্বপ্ন দেখার কৃতিত্ব দিতে পারেন। হা হা হা।

আমি অনেক কিছুই কল্পনায় দেখি সেগুলো লিখতে পারলে অনেক জটিল জটিল সাই-ফাই লিখতে পারতাম; কিন্তু লেখক হিসাবে তেমন সুবিধার না হওয়াতে যত সমস্যা হয়েছে। কল্পনায় যা দেখি লিখে সেগুলোকে প্রকাশ করতে পারি না। ভাল লেখকরা করতে পারেন মনে হয়। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি দেখি টাইম-স্পেস কোথায় নিয়ে দাড়া করায়, হা হা হা।

গল্পের দুর্বলতা নিয়ে যা বলছেন কি বলব, শুধু বলব, এগুলো আপনাদের মহৎ হৃদয়ের প্রকাশ। লজ্জায় আবার লাল হলাম।

ভালো থাকুন প্রিয় লেখক, শুভকামনা রইল অনেক অনেক।

৬২| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৪:২৯

ম্যাভেরিক বলেছেন: কল্পকাহিনী অনন্য হয়েছে। সবগুলো মিলিয়ে বই ছাপিয়ে ফেলুন, ভালো হবে খুব।

কিছু বৈজ্ঞানিক সমালোচনা করা যাক।
১। হকিংকে নিউটনের মতো শতাব্দী এগিয়ে নেয়ার কাতারে ফেলা যায় না মোটেও।
২। সুপার-স্ট্রিং থিউরি* অনুসারে ইউনিভার্স ১০ মাত্রার, এম থিওরি অনুযায়ী ১১।
৩। গ্রাভিটিকে মাত্রা হিসেবে দেখানো বিষয়টি বেশ অদ্ভুত, এমনকি কল্পকাহিনী হলেও।
৪। রায়হানের থিওরিতে মাত্রা পাঁচটি+গ্রাভিটি, তাহলে অবজেক্ট স্ট্রিং শুধু X, Y, Z মাত্রায় আবদ্ধ কেন? সময় ছাড়া বাকি ১ মাত্রার কাজ কী?
৫। T বরাবর স্ট্রিং গুলো নির্দিষ্ট কম্পাংকে প্রকম্পিত হয়ে ‘টাইম’ গঠন করে। এখানে সময়কে তো মাত্রা ধরেই ফেলেছেন, সুতরাং স্ট্রিং কেঁপে কীভাবে টাইম গঠন হবে?
৬। পরমাণুর ভাইব্রেশনাল ফ্রিকোয়েন্সি পুরোপুরি স্থির নয়, যদিও একটি নির্দিষ্ট স্থানের তার পরিবর্তনের হার তেমন ধর্তব্য নয়।

১১ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৯

শান্তির দেবদূত বলেছেন: প্রিয় ম্যাভেরিক ভাই!! কতদিন পর আপনাকে দেখলাম! ইস! আপনার পোষ্টগুলোর কথাতো ভুলেই গিয়েছিলাম! অন্যায় হয়ে গেছে বিশাল। আবার পড়া শরু করতে হবে, কয়েকটা প্রিয়তে নিয়ে রেখেছিলাম সময় করে পড়বো বলে, সেগুলোর কথাও বেমালুম ভুলে বসে আছি :(

ওয়াও, একাডেমিক দৃষ্টিকোন থেকে এই গল্পের মূল্য একেবারে শুণ্য, বরং নেগেটিভও হয়ে যেতে পারে। তারপরও কিছু জিনিস ক্লিয়ার করার চেষ্টা করছি, অবশ্যই নিজস্ব ব্যাখ্যা। :)

১। হকিংকে নিউটনের মতো শতাব্দী এগিয়ে নেয়ার কাতারে ফেলা যায় না মোটেও। -- ঠিকই বলেছে। তবে এখনকার সময়ে এককভাবে শতাব্দী এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মত মৌলিক আবিষ্কার করা কি কারও পক্ষে সম্ভব? কারন বিজ্ঞান আজ যেভাবে এক্সপান্ড করেছে নানান শাখায় তার তল পাওয়াই তো দুষ্কর। নিউটনের মত গাছ তলায় বসে যুগান্তকারী আবিষ্কারের সময় অনেক আগেই পার হয়ে এসেছি আমরা। তাই নিউটনের মত নানান শাখায় একক আবিষ্কার আর দেখা যায় না;,দেখা যাওয়ার সম্ভবনাও নেই বলতে গেলে। এখানে হকিং কে নিয়ে এসেছি যুগের ক্রেজ হিসাবে। অন্ততপক্ষে তাকে আমার ইয়াং জেনারেসনের সবাই কমবেশি চিনি। তার শারিরিক সীমাব্ধতা নিয়ে এভাবে কাজ করাও অনেকের কাছে ইন্সপায়ারিং।

২। সুপার-স্ট্রিং থিউরি* অনুসারে ইউনিভার্স ১০ মাত্রার, এম থিওরি অনুযায়ী ১১। --- এখানে গল্পে আমি বলেছি "সুপার-স্ট্রিং থিউরি* অনুসারে ইউনিভার্স এগার মাত্রার", আসলেই এখানে হবে ১০ মাত্রার। ভুলটি ধরেছেন জায়গামতোই। এটা জানা ছিল, এ ভুল কিভাবে করলাম বুঝতে পারছি না। থ্যাংক্স, ঠিক করে নিবো।

৩। গ্রাভিটিকে মাত্রা হিসেবে দেখানো বিষয়টি বেশ অদ্ভুত, এমনকি কল্পকাহিনী হলেও। -- আসলে এখানে গ্রাভিটিকে মাত্রা হিসাবে দেখাইনি। আমার গল্পের থিউরি মতে স্ট্রীং দুই প্রকার অবজেক্ট স্ট্রীং ও গ্রাভেটি স্ট্রীং। গ্রাভেটি স্ট্রীং টাই মাত্রা হিসাবে কাজ করে। এটা শুধুই একপ্রকারের স্ট্রীং এর নাম। অরিজিনাল গ্রাভেটির সাথে এর কোন সংযোগ নেই।

৪। রায়হানের থিওরিতে মাত্রা পাঁচটি+গ্রাভিটি, তাহলে অবজেক্ট স্ট্রিং শুধু X, Y, Z মাত্রায় আবদ্ধ কেন? সময় ছাড়া বাকি ১ মাত্রার কাজ কী? --- এটা আগের ৩নং পয়েন্টের সাথে রিলেটেড। রায়হানের থিওরিমতে মাত্রা ৫ + গ্রাভিটি স্ট্রীং। গ্রাভিটি স্ট্রিং নিজেই মাত্রা হিসাবে আচরন করে। ম্যাথামেটিক্যালি প্রেজেন্ট করা হয়তো আমার পক্ষে অসম্ভব কিন্তু কল্পনায় কী না সম্ভব? বাকি ১ মাত্রার কাজ আমার পক্ষে জানা সম্ভব না, ২৬ মাত্রা, ১১ মাত্রা ১০ মাত্রা এগুলো আমার কাছে বিমূর্ত, অতিরিক্ত এই মাত্রাগুলো মাত্রা হিসাবেই থাক না, কাজ নিয়ে মাথা ঘামালে আমি শেষ, হা হা হা :)

৫। T বরাবর স্ট্রিং গুলো নির্দিষ্ট কম্পাংকে প্রকম্পিত হয়ে ‘টাইম’ গঠন করে। এখানে সময়কে তো মাত্রা ধরেই ফেলেছেন, সুতরাং স্ট্রিং কেঁপে কীভাবে টাইম গঠন হবে?
-- এখানে আসলে ভাষাগত একটু গড়বড় হয়েছে, আসলে বুঝাতে চেয়েছিলাম, একক মাত্রায় প্রকম্পিত হয়ে ‘টাইম’ T গঠন করে। একিভেবা X,Y,Z মাত্রাগুলোও।

৬। পরমাণুর ভাইব্রেশনাল ফ্রিকোয়েন্সি পুরোপুরি স্থির নয়, যদিও একটি নির্দিষ্ট স্থানের তার পরিবর্তনের হার তেমন ধর্তব্য নয়। -- এটা জানা ছিল, কিন্তু গল্পের খাতিরে ধরে নিয়েছিলাম যে পরমাণুর ভাইব্রেশনাল ফ্রিকোয়েন্সি পুরোপুরি স্থির। সিজিয়াম পারমানবিক ঘড়ির আইডিয়া, এটাও নাকি কয়েক বিলিয়ন বছরে ১ সেকেন্ড গড়বড় করে দেয় :)

শেষে, অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ম্যাভেরিক ভাই। এই সাধারন একটি কল্প-গল্পকে এত গুরুত্ব দিয়ে ( তাও আবার আমার মত সাইন্স-অজ্ঞ লোকের লেখা :( ) পর্যবেক্ষণ করেছেন, আলোচনা সমালোচনা করেছে, সত্যি বলছি গর্বিতবোধ করছি, একেবারে আপ্লুত হয়ে গেছি, সত্যি বলছি। খুব খুব খুশি হয়েছি। আশা করি আগামী গল্পগুলোতেও এভাবে কাছে পাব।

৬৩| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৪৩

ম্যাভেরিক বলেছেন: আপনার গল্পটি আসলেই অসাধারণ হয়েছে। একটানে পড়েছিলাম। নিউকোভিচ ব্যাটারও খোঁজ লাগিয়ে ফেলেছিলাম। :)

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৫৭

শান্তির দেবদূত বলেছেন: আপনার ফিরতি কমেন্ট পেয়ে ভাল লাগল। আপনার ভাল লাগা ছুঁয়ে গেল আমাকে :) অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ম্যাভেরিক ভাই।

হা হা হা, নিউকোভিচ ক্লোরোপ্লাস্টিক প্যাটার্ন পুরাটাই আমার কল্পনায়। :) খোঁজে না পাওয়ারই কথা। আসলে এই প্যাটার্নটি নিয়ে আরও বিস্তারিত লেখার সুজোগ ছিল, গল্পের আকারের কথা চিন্তা করে আর সাহস পাইনি। পরবর্তিতে যদি কখনও এই গল্পটা আরও বড় পরিসরে লেখি তখন ইচ্ছা আছে এই জায়গায় আরও কাজ করার।

অনেক ভাল লাগল আপনাকে সাথে পেয়ে। ঈদের শুভেচ্ছা রইল।

৬৪| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৩৫

আজম বলেছেন: গল্পটি বেশ কিছু দিন আগেই পড়েছি। কতদিন পর ব্লগে সাই ফাই পড়লাম!
সাইয়েন্টিফিক ফ্যাক্টস আর কল্পনার ফ্যাক্টস অবচেতন মনে মিলাতে গিয়ে মাঝে মাঝে একটু অসস্ত্বি হচ্ছিল যদিও। কল্পবিজ্ঞানে কল্পনাকে পাঠক হিসাবে প্রাধান্য দিলাম :) বিস্ত্বত কল্পনার দেবদূতীয় উপস্থাপনের জন্যই দারুন লাগল।

কল্পনার আকাশে উরুক আরো হাজার ঘুড়ি :)

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:৩৬

শান্তির দেবদূত বলেছেন: তোমাকে আবার ব্লগে পেয়ে ভাল লাগল। তোমাকে এখানে টেনে আনতে পারা, আর এর দিন পরে ব্লগে সাই-ফাই পড়াতে পারাটাই মনে হয় এই গল্পের স্বার্থকতা। আশা করি আবার পুরোদমে সাই-ফাই লেখা শুরু করবে! ইস, এক সময় ব্লগে কত্ত কত্ত বাঘা বাঘা সাই-ফাই লেখক ছিল! ধীরে ধীরে সবাই কোথায় চলে গেল!

এই গল্পে সাইয়েন্টিফিক ফ্যাক্টস খুঁজতে গেলে আমার নিজেরই নিখোজ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল! সেটাকে পাশ কাটিয়ে কল্পবিজ্ঞানের কল্পনাকে প্রাধান্য দেওয়াতে এ যাত্রায় বেচে গেলাম :)

আর কল্পনার আকাশেই যখন উড়াবো তো এত কম কেন? লক্ষ লক্ষ ঘুড়িই উড়াই, কি বলো? :) :) হা হা হা।

দেবদূতীয় উপস্থাপন! ওয়াও! বুক তো আমার হাত খানেক ফুলে উঠলো! থ্যাংক্স :) :)

আবার ফিরে আস, সেই কামনা করছি।

৬৫| ১০ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:৩৫

ইশতিয়াক মাহমুদ বলেছেন: অসাধারণ লেখা, অসাধারন গল্প বুনন। এতটা পরিশ্রম করতে পারতাম যদি!! হাহাহা

অপেক্ষায় থাকলাম।

১৯ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৩:৫২

শান্তির দেবদূত বলেছেন: প্রিয় লেখক, অনেক ভালো লাগলো আপনার চমৎকার মন্তব্য পেয়ে। অনেক ভালো থাকুন, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল নিরন্তর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.