নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অফিস থেকে বেরোতে বেশ দেরি হয়ে গেল আনিসের। লাঞ্চের পর হালকা নাস্তা তার রোজকার রুটিন। আজ কাজের এত চাপ ছিল যে নাস্তাটা আর করা হয়নি। হাতে সময়ও নেই। পিসিটা অফ করে বেরোতে বেরোতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় আনিস। এক্সেক্টলি আট মিনিট আছে। তিন মিনিটের মধ্যে রাজিবের দোকান পর্যন্ত চলে যেতে হবে। তারপর একটা কলা আর একটা টোস্ট বিস্কুটের প্যাকেট নিয়ে দৌড় দিতে হবে। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস। অফিস বাসটা মিস করলে মুশকিলে পড়তে হবে।
রাস্তায় তীব্র যানজট। যানজটের কারণে ভীড়ও মাত্রাতিরিক্ত। স্টুডেন্ড লাইফে আনিস যথেষ্ট ভাল ফুটবল খেলত। সেই গুণের যতটুকু এখনো অবশিষ্ট আছে তাই সম্বল করে একে ওকে পাশ কাটিয়ে অসম্ভব ভীড়ের মধ্যে আনিস দ্রুত এগোতে থাকে। রাজিবের দোকানে সে সাধারণত অফিসে ঢোকার আগে এক কাপ চা খায় আর মাঝে মধ্যে বড়জোর দুপুরে খাবার পর একটা সিগারেট। তাই এই অসময়ে আনিসকে দেখে রাজিব একটু অবাকই হল। সেদিকে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ না করে একটা কলা আর টোস্ট বিস্কুটের একটা প্যাকেট ছোঁ মেরে নিয়েই দৌড়। পেছন ফিরে একবার শুধু কোনমতে বলতে পারল টাকাটা কাল দেব।
বাসটা চলতে শুরু করে দিয়েছে। আনিস এখনো কয়েক মিটার দূরে। বাসে কোন হেল্পারও নেই যে ডেকে থামতে বলবে। আনিস এতক্ষণ দৌড়েই আসছিল। এবার একশ মিটার স্প্রিন্ট।
হাঁপাতে হাঁপাতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে সিটে বসল আনিস। এতক্ষণের ধকল কাটানোর জন্য তার কিছুটা সময় দরকার। বাসটা চলছে মিরপুর রোড ধরে। হঠাৎ করেই এই শহরের রাস্তাঘাট, যানজট, মানুষের কোলাহল সব কেমন আপন মনে হল আনিসের। বাসটা আরেকটু এগোল। হালকা একটু বাতাস। কোলাহল যেন আরেকটু বাড়ল। স্ট্রিট লাইটগুলো জ্বলতে শুরু করল। প্যাকেট থেকে টোস্ট বের হল।
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত এল। আনিসকে নামিয়ে দিয়ে বাস চলে গেল। আনিস তার রুটিন কর্মগুলো সম্পন্ন করে রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়ল।
একটা বাচ্চা ছেলে রাস্তা পার হচ্ছে। ছেলেটি কে ? তার সাথে কেউ নেই কেন ? এখন কয়টা বাজে ? কে যেন এসব প্রশ্ন আওড়াচ্ছে। উত্তরের অপেক্ষা না করেই বাচ্চা ছেলেটি রাস্তার মাঝখানের ডিভাইডারে গিয়ে দাঁড়াল। এই ছেলে, তোমার নাম কী ? তোমার বয়স কত ? কোন শ্রেণীতে পড়। রোল কত ? বাচ্চা ছেলেটি ডিভাইডার থেকে রাস্তায় নামল। একটি বিআরটিসির ডাবল ডেকার। গতি খুব বেশি নয়। তবে বাচ্চা ছেলেটিকে একটু দ্রুতই পার হতে হবে। এই ছেলে দৌড়াও। এবার ছেলেটি সত্যিই শুনল। দৌড়াতে গিয়ে বাচ্চাটি রাস্তার মাঝখানে পড়ে গেল। বাসটা ক্যাঁচ শব্দ করে হার্ড ব্রেক কষতে কষতে এগোতে লাগল।
সরি আনিস। দরজাটা এত আওয়াজ করে, সরি। আনিস বিছানায় কিছুক্ষণ বসে থাকল। বাচ্চা ছেলেটি পড়ে গিয়েছিল কেন ? ওহ ইয়েস, কলার খোসায় পা পিছলে গিয়েছিল তার। খোসাটা তো আনিসই ফেলেছিল। হ্যাঁ, টোস্ট কলা খাওয়ার পর। আনিস তক্ষুণি উঠে কাউকে কিছু না বলে দৌড়ে বেরিয়ে গেল। তার রুমমেটরা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকল। কারণ রাত বারটা বাজে। আনিসের পরনে শুধুমাত্র একটা ত্রি কোয়ার্টার।
আনিস দৌড়োচ্ছে। বাচ্চাটাকে বাঁচাতে হবে। বাঁচাতেই হবে। সে তো স্পোর্টসম্যান ছিল। আরো জোরে দৌড়োতে হবে। আনিস দৌড়োচ্ছে। ওই তো। ওই তো বিআরটিসি'র ডাবল ডেকারটা।
শ্যামলী ওভার ব্রিজের কাছে আনিস একটা কলার খোসায় পা পিছলে মেইন রোডের ওপর পড়ে গেল।
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:১২
অচিন্ত্য বলেছেন: ইয়েস বস
২| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:২৫
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
হায়রে আনিস ...
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:১৪
অচিন্ত্য বলেছেন:
৩| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:৫০
অদ্বিতীয়া আমি বলেছেন: ....
অনেক দিন পর গল্প লিখলেন ।
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:১৫
অচিন্ত্য বলেছেন: গল্প লেখা শুরুই হল সেদিন, তায় আবার 'অনেক দিন পর'।
৪| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:৩৫
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: গল্পের নামকরণ এবং ধাক্কাটা - দুটোই হঠাৎ করে মাথার ভেতরে যেন অনুরণন সৃষ্টি করে গেল।
প্রিয়তে নিলাম। শুভেচ্ছা।
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:২২
অচিন্ত্য বলেছেন: প্রিয়তে!!
ধন্যবাদ। ব্যস্ততার কারণে আপনার এবং আরো অনেক প্রিয় ব্লগারের অনেক লেখা পড়া হয়ে ওঠে না। তারপরও যখন দেখি আপনি আপনারা আমার পোস্ট পড়ছেন, ভাবছেন, মন্তব্য করছেন, খানিক লজ্জিত হই
। নিজেকে কিঞ্চিৎ বাচাল মনে হয়।
(আমি কিন্তু শঙ্কুর দারুণ ভক্ত।)
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৬
হাসান মাহবুব বলেছেন: অবচেতনের ধীর রিফ্লেক্স। বিবেকঘড়ির কাঁটাটা আরেকটু ফাস্ট করে দিতে হবে।