নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রনির জগতে স্বাগতম

আমি আহসান রনি। লিখতে খুবই ভালবসি। আমার চিন্তাভাবনা এখানে খুঁজে পাবেন।

আহসান রনি

আমি আহসান রনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়ছি। আমি দৈনিক ইত্তেফাকে কাজ করছি ফিচার রিপোর্টার হিসেবে।

আহসান রনি › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঋতুপর্ণ ঘোষের আবহমান: শেষ হইয়াও হইলো না শেষ

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৩৯





ঋতুপর্ণ ঘোষের আবহমান। এই চলচ্চিত্রটির জন্য সেরা পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার পেয়েছেন ঋতুপর্ণ। চলচ্চিত্রটিতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যেন এক ঘোরে আটকে রেখেছেন দর্শকদের। গল্পের মাধ্যমে তিনি দর্শকদের সরাসরি বলতে চাননি আসলে গল্পের মূল অভিনেতা অনিকেত কি আসলে তার সিনেমার নায়িকা শিখার সাথে অবৈধ প্রেমে লিপ্ত নাকি না। এখানে দেখানো হয়েছে একজন পরিচালক ও তা চলচ্চিত্রের একজন নায়িকাকে। শিখা নামের এই সাধারণ মেয়েটির নায়িকা হয়ে ওঠা মূলত অনিকেত ও তার স্ত্রী দীপ্তির হাত ধরে। দীপ্তি এক সময় ঠিক এই চলচ্চিত্রের জন্য অডিশন দিতে আসে। অনিকেত তাকে অনেক বেশি পছন্দ করে ফেলে এবং বিয়ে করে। আবার যখন একই চলচ্চিত্র তৈরীর কাজ শুরু করেন অনিকেত তখনই শিখার আবির্ভাব। অনিকেত য়ে শিখার সাথে গতানুগতিক কোন শারিরীক সম্পর্কে জড়ায়নি তা বোঝা যায় যখন অনিকেত তার মেকআপ তোলার কথা বলে শিখার গায়ে হাত দেয় এবং শিখা রুম থেকে মেকাপ ম্যানকে বের করে দিয়ে অনিকেতকে তার শরীর দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে এবং অনিকেত তাকে চড় মারে। কিন্তু একসময় দেখা যায় অনিকেতের পরিবারের সকলে মনে করছে সেই শিখা বা শ্রীমতির সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক। এদিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় একটি নাচের দৃশ্যে শ্রীমতির চোখ টিপ দেওয়ার শটটি অনিকেত বার বার দেখে। এর দ্বারা বোঝা যায় অনিকেত শ্রীমতির অভিনয়ের প্রেমে পড়েছে। এদিকে তার পরিবারের সদস্য তার বৌ দিপ্তী তাকে প্রতিনিয়ত সন্দেহের চোখে দেখছে অথচ অনিকেত কখনই তার সাথে শ্রীমতি সম্পর্কের কথা স্বীকারও করেনি আবার মানাও করেনি। অনিকেতের বারবার শ্রীমতির বাড়িতে যাওয়ার মাধ্যমে যেমন সন্দেহের উন্মেষ ঘটে তেমনি, একবার ফোন আসলে দিপ্তী মনে করে শ্রীমতি ফোন করেছে কিন্তু ফোন করে মূলত বিনোদন পত্রিকার সম্পাদক। তাহলে এখান থেকে আবার মনে হয় দিপ্তীর সন্দেহ সঠিক নাও হতে পারে। সম্পাদক ফোন করে বলে তার ছেলে অপ্রতিম তার সম্পর্কে অনেক বাজে কথা লিখেছে পত্রিকার প্রকাশের জন্য। অনিকেত বলে এতে তার কোন সমস্যা নেই। এখানে অনিকেতকে দেখানো হয়েছে একজন চুপচাপ শৈল্পিক মানুষরুপে যিনি নিজের সম্পর্কে খুব উদাসীন। অন্যরা তার সম্পর্কে কি ভাবছে সে বিষয়ে তার কোন চিন্তা ভাবনা নেই। পরিচালক তার চলচ্চিত্রে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গল্পটি অনেক ভাবে বোঝাতে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আসল ঘটনা যে কি তার দর্শকের উপর ছেড়ে দিয়েছেন, ভেবে নেওয়ার জন্য। এ যেন, ছোট গল্প। শেষ হইয়াও হইলো না শেষ।



চলচ্চিত্রটির নেগেটিভ এবং পজেটিভ দিক আমার কাছে মনে হয়েছে একই। গল্প বলার ধরণ। গল্পটি এমনভাবে বলা হয়েছে যা সাধারণ মানুষের কাছে অনেক গোলমেলে মনে হবে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত না দেখলে বোঝা যাবে না পরিচালক আসলে কি গল্প দর্শকদের সামনে তুলে ধরতে চাচ্ছেন। ঠিক একই কথা পজেটিভ দিক দিয়ে বললে পরিচালক একটি গল্পকে অনেক চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি গল্পটিকে একটু ভিন্নভাবে তুলে ধরেছেন। সবচেয়ে ভাল লেগেছে প্রতিটি চরিত্রের অভিনয়। তাদের মধ্যে দীপঙ্কর দে এবং অনন্যা অন্যতম। অনন্যা এই চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারও পেয়েছেন। তবে সেরা পরিচালক হিসেবে ঋতুপর্ণ আসলেই পুরষ্কার পাওয়ার যোগ্য। তিনি অনন্যা থেকে শুরু করে তার বোন চরিত্রে অভিনয় কারী লাবণী সরকার বা ছোট চরিত্রে অভিনয়কারী রিয়া সেনের কাছ থেকেও অসাধারণ অভিনয় বের করে এনেছেন। ডায়লগ একটু বেশিই শৈল্পিক। ঋতুপর্ণের অন্য চলচ্চিত্র দেখলে এই চলচ্চিত্রের ডায়লগকে অপরিচিত মনে হবে না।



খবর ঢাউর হয়েছিল কিংবদন্তী সত্যাজিত রায় আর নায়িকা মাধবী মুখার্জীর গল্প এটি। কিন্তু তার চলচ্চিত্রের গল্পের মতো এটিতেও ধোয়াশা রেখেছেন পরিচালক। ঋতুপর্ণ ঘোষের ভাষায় সিনেমা নির্মানের উদ্দেশ্যটা ছিল “My main interest was to unfold, for myself as much as for my actors and my audience, the finer nuances of the relationship between the creator and the created, what are the elements that sustain it, and why such relationships finally do not hold in time"।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:২৫

আরজু পনি বলেছেন:
আবহমান নিয়ে আপনি বেশ বিস্তারিত লিখেছেন। ভালো লাগা রইল ।

আমি কয়েকটা সিনেমা একসাথে দিয়ে পোস্ট করেছিলাম ।

♣ভাবনার জগতকে নাড়িয়ে দেয়া ঋতুপর্ণ ঘোষের সিনেমাগুলো-প্রথম কিস্তি♣

অনেক শুভকামনা রইল ।।

২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪৩

অন্ধবিন্দু বলেছেন:
অভিজাত পরিপাটি নির্মাণে ঋতুপর্ণ সার্থক নির্মাতা।
লেখাটি পড়লুম, আহসান। ধন্যবাদ।

৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৫৭

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: ম্যুভিটি দেখেছিলাম। রিভিউ ভালো লাগলো।


এই চলচ্চিত্রে পিতা পুত্রের সম্পর্কটাও কিন্তু ভিন্ন আঙ্গিকের।

৪| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০২

আহসান রনি বলেছেন: ধন্যবাদ আরজুপনি। আপনার লেখাটিও ভালো লাগলো। আপনার জন্যও শুভকামনা রইলো।

৫| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০৪

আহসান রনি বলেছেন: অন্ধবিন্দু, ঋতুপর্ণের চলচ্চিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ঠ্য তার চলচ্চিত্রের আভিজাত্য। আমি আপনার সাথে একমত। ধন্যবাদ।

৬| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০৫

আহসান রনি বলেছেন: মহামহোপাধ্যায়, আমি আগেও চলচ্চিত্রটি দেখেছি। আবার দেখলাম এবং লেখার চেষ্টা করলাম। আপনার ভালো লেগেছে শুনে ভালো লাগলো।

৭| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:১৩

আমি ইহতিব বলেছেন: পুরো মুভির কাহিনিটা বুঝতে আসলেই অনেক কষ্ট হয়েছে, কিন্তু অভিনেতা অভিনেত্রীদের অভিনয় শেষ পর্যন্ত মুভিটি দেখতে বাধ্য করেছে। আরো বেশী ভালো লেগেছে মুভির শেষের দিকের লোকেশন। বারবার মনে হয়েছে এত অসাধারন সুন্দর একটা জায়গায় যাওয়ার সৌভাগ্য আমার কবে হবে।

দারুন রিভিউ। +++

৮| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৩৬

সুমন কর বলেছেন: রিভিউ ভালো লাগলো। মুভিটি দেখেছিলাম।

৯| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:২১

জেন রসি বলেছেন: রিভিউ ভালো লাগলো।
ঋতুপর্ণ ঘোষের ভাষায় সিনেমা নির্মানের উদ্দেশ্যটা জানা ছিল না।

১০| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৪৯

আহসান রনি বলেছেন: ধন্যবাদ সবাইকে :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.