নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আন্‌ওয়ার এম হুসাইন। বাংলাদেশী লেখক। দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক বাংলা ও কিশোর বাংলায় গল্প লিখি।

আনু মোল্লাহ

আন্‌ওয়ার এম হুসাইন এর ব্লগ

আনু মোল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঊনপ্রহর

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১১:০৪

‘তুই নিজে দেইখছত?’

‘দেখুম না ক্যান? হেতাগো বাগিচার পেছনে আমি তো পেরাই ঘাস কাডি। আইজকাও সেই সমে ঘাস কাডনে আছিলাম। ঘাস কাডনের সমে আতিক্কা ছাগলের চিক্কইর হুনি।’

‘হেতারা তোরে কিছু কয় নাই?’

‘হেতারা আমারে দ্যাখে নাই।’

‘অলি কই আছিল?’

‘হেই বাদাইম্মা কই আছিল, কে জানে? বিহান বেলাথন কাজিয়া লাগছিল। হালায় মনে অয় তখন গোসল-গা-ধুইতে গেছিল।’

অলি আর বলী একই বাড়ির শরিক। আর শরিকদের ঝগড়া-ফ্যাসাদ কখনো শেষ হয় না। সেদিনও চলছিল তেমন করে। বলীরা আক্ষরিক অর্থেই বলী। গায়ে-গতরে যেমন, পয়সা-কড়িতেও তেমন। মুখের জোরও পাঁচটনি ট্রাকের মতো হর্ন দিয়ে দুনিয়াদারির খবর করে ফেলে। আর অলি দিনে আনে দিনে খায়, কোনো কোনোদিন খায় না। গায়ের জোর, গলার জোর কোনোটাই নেই। নেড়িকুকুরের মতো কাঁইকুঁই করাটাই সার। স¤পত্তি বলতে তার বাড়ির ভিটা আর একটা খাসি ছাগল।

সেদিনের ঝগড়া যখন শেষ হয়েছে (পুরাঘটিত বর্তমান কাল, শেষ হইলেও রেশ রয়ে গেছে), তখন ছাগলটা কোত্থেকে দৌড়ে এসে বলীদের রান্নাঘরে ঢুকে পড়ে তাদের নুনের বয়ামটা উল্টে ফেলে দিয়ে রান্নার তরে অপেক্ষা করা কুটা তরকারিতে মুখ দেয়। নুনের বয়ামটা তেলের বোতলে ধাক্কা দিলে তেলের বোতল পড়ে গিয়ে একটা লঙ্কাকা-ের পরিস্থিতি তৈয়ার করে। বেয়াক্কেল কিসেমের ছাগল হুঁশ-দিশ নাই কার সঙ্গে ঝগড়া, কার রান্নাঘরে যাওয়া যায়, কার ঘরে যাওয়া যায় না- এসব জ্ঞান আল্লাহপাক তাকে দেয় নাই। কিন্তু যাদের হুঁশ-জ্ঞান আছে, তারা তাদের কর্তব্যপালনে দ্বিধা করেনি। বলীর বড় ছেলে ওবায়দুল একটা লাঠি দিয়ে তাড়া করলে ছাগল রান্নাঘর থেকে বের হয়ে বাগানের দিকে ছুট দেয়। বাগান মানে বলীদেরই বাগান। সেখানে তাদের মেজো ছেলে আর একজন কাজের ছেলে কাজ করছিল। মেজো ছেলের হাতে একটা দা ছিল। সেটা ছাগলের দিকে ছুড়ে মারলে সেটা গিয়ে ছাগলের পা কেটে ফেলে। ছাগল চিৎকার শুরু করলে কাজের ছেলে এসে লাঠি দিয়ে মাথায় একটা বাড়ি দিলে তার ইহলীলা সাঙ্গ হয়ে যায়। ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শীও পাওয়া গেছে, বজলু। সে গিয়েছিল তার ধলী অর্থাৎ কালো গাই গরুটার জন্য ঘাস কাটতে। বলীদের বাগানের পেছনে ক্ষেতের আইলে সে ঘাস কাটতে গিয়ে মজাটা দেখে ফেলে। সূর্য যখন যথেষ্ট পরিমাণে কাত হয়ে মানুষের ছায়ার দৈর্ঘ্যে ঘনত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে, সাদুল্লা তখন দুপুরের খাবার সেরে একটা স্যান্ডো গেঞ্জি কাঁধে ঝুলিয়ে চা-দোকানে লম্বা টুলের এক কোনায় বসে বসে পিঠের দুর্গম এলাকা চুলকানোর কসরত করতে করতে বজলুর কাছে ঘটনার বৃত্তান্ত শুনে শুনে সত্য-মিথ্যা যাচাই করে নিচ্ছিল। সত্য-মিথ্যার জ্ঞান নিয়ে সাদুল্লার ব্যাকরণ আলাদা ধরনের। ধীরে ধীরে আরও অনেকে এসে পড়ে দোকানে। শুক্রবার বিকেলবেলা লোকের যখন কাজ থাকে না, তখন চায়ের দোকানের ভেতরে-বাইরে বসে বসে গপ-গুজারি করে এসব খবরা-খবরের বিচার করে নিতে হয়। পিঠ চুলকানো স্থগিত রেখে সকলের উদ্দেশ্যে সাদুল্লা বলে, এক জাতের মানুষ আছে এইরকম বেরহম। এই যেমন আংগো মুন্সি বাড়ির ফজইল্লা। কোঁচ দিয়া বিলাই মারি ফালাইছিল। হুইনছি কোঁচ দিয়া আগে বিলাইর চোখ গালায়া দিছিল। তারপর কোঁচ মারি মারি বিলাইর জান শেষ কইচ্ছে। মানুষ এই রকম বেজাইতও হইতে ফারে, বাপরে বাপ!

দুপুরবেলা শোল মাছের ঝাল ঝাল ঝোল দিয়ে ভাত খেয়ে বাইরে বসে ঢেঁকুর তুলছিল অজুল্লা, দোকানের বাইরে পাছায় ভর দিয়ে ঘাসের ওপর বসেছিল, সে একটু ঘুরে সাদুল্লার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘ফজইল্লা এত খারাপ ন। হ্যাতে খাইতে বসছিল। বিলাই ওপরের থন খাবারে মুতি দিল। রাগ হই হ্যাতে এই কাম কইচ্ছে। রাগ হইলে তুমিও কইত্তে ফার।’

শোন্, ফজইল্লা বহুত খারাপ। হিগা বহুত মাইনসের হাঁস-মুরগি জবাই দি দি খাই ফালাইছে। বদুকেরানির খাসি ছাগল আনি রাতারাতি হজম করি ফালাইছে। এমনকি আমার ঘরের মোরগ পইযযন্ত চুরি কইচ্ছিল দুই দিন।

তোমার মোরগ চুরি করছে ফজইল্লা, আর তুমি ছাড়ি দিছ? ফজইল্লার বাড়ি গিয়া ফজইল্লারে ফিডাইছ। ফজইল্লা জ্বরে ফড়ি আছিল দুই দিন।

আমার মোরগ চুরি কইল্লে আমি ছাড়ি দিমু? তুমি দিতা?

ফজইল্লা যে কইচ্ছে তার কোনো পরমান তোমার কাছে আছে?

চোরের আবার পরমান কী?

পরমান কী মানি? তুমি আরেকজনের বাড়িত যাই পিডায়া আধমরা করি ফেইলবা আর তার কোনো পরমান লাইগব না?

ফজইল্লা চোর এই কথা বেবাকেই জানে। হের লাই তোমার এত জ্বলে ক্যান?

একজন চোরের জন্য সাফাই করে এই অভিযোগে অজুল্লা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। সে উত্তেজিত হয়ে কিছু বলতে চায় কিন্তু তা না করে সে চুপচাপ হয়ে থাকে। সে ঠিক বুঝতে পারে না, সবাই কি তবে সাদুল্লার মতো তাকে ফজইল্লার সহযোগী মনে করে! সে ভাবে ফজইল্লা চুরি করে এইটা ঠিক, কিন্তু যত মার সে খায়, তার যোগ্য সে না। এই গাঁয়ে ছোট-বড় যত চুরি-চামারির ঘটনা ঘটুক, তার দায় ফজইল্লার। আর যখন তখন যে যার মতো করে ফজইল্লাকে মেরে আসতে পারে। এর জন্য সালিশ-বিচারের দরকার পড়ে না। রাস্তার নেড়িকুকুরের মতো যার যখন খুশি লাথি মারতে পারে। আবার তলে তলে কিছু দরকার পড়লে ফজইল্লার লগে গিয়া ভাব ধরে, ফজইল্লা যদি জোগাড় করি দিতে পারে! ক’দিন আগে বিসি বাড়ির (বিএসসি বাড়ির) নাজিম মিয়া এডভান্স দুই হাজার টেহা দিয়া কইল, একটা মোবাইল পাইলে দিয়া যাইস। অবশ্য এখানে ফজলইল্লারও দোষ আছে। তার পোলায় পেটের বেদনায় টিকতে পারছিল না। মাটিতে গড়াগড়ি খায়। সেই সময় ফজইল্লা গেছিল নাজিম মিয়ার কাছে টেহা ধার করতে। নাজিম মিয়া টাকা ধার দিছে, আর কইছে জুতমতো পাইলে একটা মোবাইল সে নিবার চায়। নাজিম মিয়া এছাড়া আর কী করতে পারে? চোরকে টাকা ধার দিয়া তো আর এমনি এমনি ফেরত পাওয়া যাইত না। অজুল্লার মাথায় যখন এইসব চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিল, কিন্তু সে ঠিকমতো শব্দজুড়ে বাক্য তৈয়ার করতে পারছিল না। কাজেই চুপচাপ থেকে সে আরও বিভ্রান্তিতে পড়ে যায়, পাছে সবাই তাকে চোরের কাছের কেউ মনে করে। এইসব ভাবতে ভাবতে তার আবার ঢেঁকুর আসে। ঢেঁকুরে শোল মাছের ঝোলের টক টক গন্ধ। শোল মাছ সে নিয়েছিল সকালবেলা, ফজইল্লার কাছ থেকে। সস্তাতেই পেয়েছিল। শোল মাছ তাকে আরও বেশি বিভ্রান্ত করে দ্যায়।

এদিকে ফজইল্লাকে নিয়ে তর্কাতর্কিতে বাকিরা বিরক্ত হয়। হাবজ আলী দোকানের এক কোনায় বসে একটা খেজুরের ডাল দিয়ে দাঁত ব্রাশ করতেছিল। সে মুখ থেকে একদলা রক্তমাখা থুতু ফেলে বলে, ‘আজাইরা আলাপ বাদদাও’। তার পর বজলুর দিকে মুখ কইরা বলে, ‘তুমি নিজ চোখে দেইখছ?’

না দেখমু ক্যান? আর হেতারা তো লুকালুকি করি কাজ করে নাই। বলীগো পোলাপাইন লুকালুকি করে কাজ করার লোক না।

লুকালুকি না করার জন্য বজলুর গলায় একটু প্রশংসা ঝরে পড়ে।

সাদুল্লা তখন আবার বলে, ‘লুকাই বো ক্যান হেরা তো আর ফজইল্লার মতো চোর বদমাইশ না।’

’ঠিকাছে, কিন্তুক বলীগো মতোন জ্যান্ত ছাগল তো আর মাইরা ফালাই নাই। যাই কও হালারা বহুত হারামি। জবাই কইরা খাই ফ্যাল। জ্যান্ত মারনের কাম কী? অবলা জানোয়ার।’- হাবজ আলী বলে।

বাকিদেরও মনে হয় মেরে ফেলাটা ঠিক হয় নাই। খেয়ে ফেলতে পারত। তাতে ছাগলটাও কাজে লাগত। বিশেষ করে ছাগলটা যখন অলির। তখন খেয়ে ফেলাটা অতটা দোষের ছিল না। পিটিয়ে মানুষ মারাও সহ্য হয়, তাই বলে ছাগলও পিটিয়ে মারবে? অবলা জানোয়ারের জন্য কেউ কেউ চুকচুক করে।

তবে সমবেত লোকজনের সবাই এই নিয়েও একমত হয় যে, বলীদের পক্ষে আসলে এই ধরনের কাজ করা অস্বাভাবিক কিছু না। এর আগে মইজ্জার টেকের মাবুল্লার মাথা ফাটিয়েছিল তারা। মাবুল্লা যে একেবারে নির্দোষ, সেটা বলা যাবে না। মাবুল্লার গরু সেবার বলীদের ক্ষেতে ঢুকে ধান খেয়ে ফেলেছিল। তার বিনিময়ে বলীরা মাবুল্লাকে যথাযথ পরিমাণে গালিগালাজ করছিল। রজব বলী সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিল। তার মাথা একটু গরম বেশি। বস্তুত বলীদের সবারই মাথা গরম। মাবুল্লার ছোট পোলা এসে তাড়াতাড়ি গরু নিরাপদে সরিয়ে নেয়। গরু সরিয়ে নিলেও রজবের মেজাজ সেদিন ঠা-া হতে সময় নিচ্ছিল। সুতরাং সে মাবুল্লার বাপ-মা থেকে শুরু করে তার চৌদ্দগোষ্ঠীর ইতিহাস টেনে টেনে তার সঙ্গে মনের মাধুরী মিশিয়ে বাকোয়াজ বকা-বাদ্য করে যাচ্ছিল। গালিগালাজ করার মধ্যে একটা সুখ আছে, সুযোগ যখন পাওয়া গেছে, রজব সেটার পূর্ণ ব্যবহার করে নিচ্ছিল। শেষতক মাবুল্লা আর চুপ থাকতে পারেনি, সে বাড়ির বাইরে এসে দুয়েকটা জবাব দিয়ে ফেলে। এতে রজব বলীর মেজাজ আরও বিগড়ে যায়, যাওয়াই স্বাভাবিক। তার হাতে ছোট একটা নিড়ানির কোদাল ছিল। সে তখন করে কি, আতিক্কা সেই কোদালটাই ছুড়ে মারে মাবুল্লাকে লক্ষ্য করে। কোদালটা গিয়ে যখন মাবুল্লার মাথায় হিট করে, তখন রজবের মাথা ঠা-া হয়, বরফ শীতল ঠা-া। সে তখন একটা সিগারেট জ্বালায় আর সেইটা টানতে টানতে বলীদের অঞ্চলে ফিরে আসে। মাবুল্লার মাথা ফেটে গিয়ে ছটফটানি শুরু হলে তার বাড়ির লোকজন ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়া যায়। সেখানে দুই মাস থাকার পর সে ছাড়া পেয়ে যায়।

শুধু মইজ্জার টেকের মাবুল্লা না, আরও অনেকেই তাদের শিকার। লুলা রইজ্জাও নাকি ছোটবেলায় ওদের বাগানে ফল চুরি করতে গিয়া লুলা হয়। এদিক থেকে হিসাব করলে অলির ভাগ্য ভালোই বলতে হবে।

আলোচনা শেষ হয় না। হাবজ, মুন্সি, মোয়াজ্জেম, মাস্টর সবাই মিলে অলির ছাগল আর বলীদের নিয়ে আলোচনা চালায়। এক পর্যায়ে হাকিম মাস্টার বিরক্ত হয়ে ওঠে। বিরক্ত হয়ে সে দোকানদারকে বলে- চা দাও। চা দিতে বলে সে সিগারেট ধরায়। ধরিয়ে সে চিন্তা করে, বলীদের নিয়ে সমালোচনা করা সবাই বলীদের বুদ্ধি ও জোরের সামনে মশা মাছির বেশি না। এটা সে যেমন জানে, তেমনি উপস্থিত সবাই জানে। বলী বস্তুত বলীই। তার বিরাট দিঘি আছে, সেই দিঘিতে জাল ফেলে বড় মাছ উঠলে একটা যায় টিএনও সাবের বাসায়, আরেকটা যায় ওসি সাবের বাসায়। কানি কানি জমি আছে, সেই জমির জন্য শত শত গাউর-মিন্নতি আছে, লাঠিয়াল আছে। হাকিম মাস্টার অন্য বিষয়ে একটু চিন্তিত হয়ে পড়ে। স্কুলের জায়গার ভেতরে নাকি বলীদের দুই শতাংশ জায়গা ঢুকে গেছে। সেই জমির জন্য স্কুলের বাউন্ডারি দেওয়া যাচ্ছে না। স্কুল কমিটি হাকিম মাস্টারকে দায়িত্ব দিয়েছে বলীকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে জমি স্কুলে দিতে রাজি করিয়ে নিতে। মাস্টার এই নিয়ে বলীকে মোটামুটি রাজি করিয়ে এনেছে। এইসব ছোটলোকদের সঙ্গে ছাগলের বাচ্চা নিয়ে ছোটলোকি আলাপ-আলোচনার জন্য নিজের ভেতরে নিজের প্রতি দিকদারী লাগে তার। কোন কথা যে কখন কার কানে যায়, তার কোনো ঠিক আছে?

এই পর্যায়ে হঠাৎ করে বড় বলীর আবির্ভাব হয় দোকানে। সে এলে পর্যাপ্ত পরিমাণে সালাম-কালাম ব্যয় হয়। ব্রিটিশ আমলের শক্ত-সামর্থ্য কালভার্টের মতো শরীর। বয়স হলেও ঝুলে পড়েনি। নকশি করা শাদা ফতুয়া গায়ে। ডান হাতের কব্জিতে একটা ঘড়ি। সে খুব একটা দোকানে আসে না। বছরে-ছয় মাসে দু-একবার আসে। দোকানি চা এগিয়ে দেয়। আর কেউ চা খাবে কিনা, জানতে চায় বলী। কেউ খেতে চায় না। অন্য সময় হলে খেত। মনে মনে সবাই হিসাব করে, এতক্ষণ কি বলাবলি করেছে। নিজের মুখ দিয়ে বের হওয়া প্রতিটি কথা রিপ্লে করে নিজের কানে কানে। আবার রিপ্লে করে। ক্রিকেট ম্যাচের ব্রডকাস্টের মতো স্লো মোশান ক্লোজ শট। সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম এনালাইসিস চলে দ্রুত। বলীর অসন্তুষ্ট হওয়ার মতো কোনো তথ্য কি বেরিয়েছে এই নাপাক জবান দিয়ে? ঠিক বুঝে ওঠে না। কে জানে, কোন কথা কখন কার কানে যায় আর তার কী মানে দাঁড়ায়। সুতরাং সবাই ভাবে, এতক্ষণের আলাপে যদি কোনো ভুলবাল কিছু হয়েও থাকে, তবে তা এখন পুষিয়ে দিই না কেন। উপস্থিত সবার হৃদয় এইখানে এক হয়ে যায়। সুতরাং সাদুল্লা বলে, ভাইসাব, অলি নাকি সকালবেলা কি নিয়া ঝামেলা করছিল? হাকিম মাস্টার বলে, ছোটলোকের বাচ্চারা বেশি বাইড়া যাইতেছে, দিন দিন। চায়ের ফাঁকে ফাঁকে বলী শুধু উঁ আঁ করে। ভিক্ষাপ্রার্থী ভিক্ষুকের অযাচিত প্রশংসা লোকে যেমন চুপচাপ উপেক্ষা করে।

কেউ নিশ্চিন্ত হতে পারে না। বলী কি তবে তাদের কথা শুনে ফেলেছে? প্রশ্নটা সবার ভেতরে, সবাইকেই মনে মনে নাজেহাল করে দ্যায়। অলির বাচ্চারে পরিমাণমতো গালিগালাজ করা দরকার। কিন্তু ঠিক কীভাবে কী দিয়ে শুরু করা যায়, সূত্র খুঁজে পায় না কেউ।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১:৩২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: সুন্দর ।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:৩১

আনু মোল্লাহ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা নেবেন।

২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৩

অজ্ঞ বালক বলেছেন: কঠিন লেখার হাত ভাই আপনের। স্যালুট। কঠিন। এক নিঃশ্বাসে পড়লাম। এইরম লেখা পইড়াও সুখ। শুধু শেষটা আধামাধা লাগলো। ইঙ্গিতটা বুঝতে পারছি তাও আরেকটু পলিশড এন্ডিং হইলে ভাল্লাগতো। বাট ম্যান, হোয়াট এ রীড।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:৪২

আনু মোল্লাহ বলেছেন: আপনার মন্তব্যে আপ্লুত হলাম, ভাই। এ ধরনের মন্তব্যে লেখার উৎসাহ বেড়ে যায়।
আপনিও অনেক ভাল গল্প লিখেন।
শুভেচ্ছা নেবেন। ভাল থাকবেন।

৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: আমার হাত বান্ধিবি,
পা বান্ধিবি,
মন বান্ধিবি কেমনে...
আমার চোখ বান্ধিবি,
মুখ বান্ধিবি,
পরান বান্ধিবি কেমনে...!

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৫

আনু মোল্লাহ বলেছেন: রাজীব ভাই, আজকাল যেন মন পরান দুইটাও বান্ধা হয়ে আছে।

৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৩

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: পবিত্র মুখে নাপাক কখনও স্থান পায় না।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৪

আনু মোল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।
মন্তব্য টা মনে হয় ঠিক বুঝে উঠতে পারিনি।

৫| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৪৮

শায়মা বলেছেন: হা হা পোস্ট আর কমেন্ট পড়ে হাসছি।

কেমন আছো ভাইয়া?

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১:২৭

আনু মোল্লাহ বলেছেন: হা হা হা।
পোস্টটি এডিট করতে গিয়ে এই অবস্থা। গল্পটি দৈনিক আমাদের সময়ে প্রকাশিত হয়েছিল। লিংক দিলাম। এইখানেও পোস্টটি ঠিক করে দিলাম। http://www.dainikamadershomoy.com/post/272695
অনেক ধন্যবাদ আপু।
আমি ভাল আছি। আশা করছি তুমিও ভাল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.