নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বল বীর চির উন্নত মম শির !

শাহারিয়ার ইমন

শাহারিয়ার ইমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

গ্রাম্য হাট ও শৈশব স্মৃতি

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:০৮


সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হতে বের হলাম ।তখন এক বন্ধু ফোনে গ্রাম নিয়ে একটা গান বাজাচ্ছে ।গানের একটা লাইন ছিল গ্রামের হাট নিয়ে । ঠিক তখনই মনে পড়ল ছোটবেলায় সেই গ্রামের হাটগুলোর মধুর স্মৃতি । তখন মনেহল এই নিয়ে সামুতে একটা লেখা ত দেয়াই যায় ।

ছোটবেলায় আমাদের গ্রামটা ছিল অনেক সুন্দর ,সত্যিকারের গ্রামের স্বাদ পাওয়া যেত ।এখন গেলে আর গ্রাম গ্রাম মনে হয়না আমার কাছে । সবকিছু উন্নত হয়ে গেছে শহরের মতই । আমাদের গ্রামের বাজার আমাদের বাড়ি থেকে ৫ মিনিটের হাঁটা পথ ।এখানে প্রতিদিন বাজার বসে হাট যাকে বলে সেটা বসে না ।কারন আশেপাশে নদী নেই ।প্রতিদিনের বাজারে সবকিছু পাওয়া যায়না ।তাই হাটে যাওয়া লাগত মানুষের ।

আমাদের গ্রামের আশেপাশে চারদিকে ৪-৬ কিলোমিটার দূরে দূরে চার থেকে পাঁচটা হাট জমত । সপ্তাহে প্রতিদিনই প্রায় হাট ছিল এসব জায়গায় ।তার মধ্যে দুটি হাট খুব জনবহুল ও জনপ্রিয় ছিল ।যখন খুব ছোট ছিলাম বাবা-চাচাদের সাথে হাটে যাবার বায়না ধরতাম ,কিন্তু নিতনা । হাটে এত মানুষ হত ছোট ছেলে পেলে নিয়ে গেলে বিপদ ।তখন ত আর এত কিছু বুঝতাম না ।

তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি ।আমাদের বাড়ির থেকে কিছু দূরে একটা বাউন্ডেলে টাইপের ছেলের সাথে বন্ধুত্ব হয় । টিফিনের সময় স্কুল পালিয়ে ওর সাথে প্রথম হাটে যাই ।হাটটি ছিল ৪ কিলো দূরে । সোজা রাস্তায় আরো একটু বেশি দূরে হবে । আমরা কোলা (ধানক্ষেত যখন শুকিয়ে যায় ) দিয়ে হেটে তাড়াতাড়ি পোঁছে গেলাম । কি যে সে আনন্দ বলে বুঝানো যাবেনা ।স্কুলের পাশেই একটা পরিত্যক্ত বাড়ি ছিল সেখানে বই খাতা গুঁজে রেখে গিয়েছিলাম । হাটে গিয়ে খুব ক্ষুধা পাইছিল । পকেটে ২ টাকা ছিল মনে হয় । তা দিয়ে কিছু খেয়েছিলাম ।

হাটে লোকে লোকারন্য ।কত রকমের যে জিনিস তা বলে শেষ করা যাবেনা ।পুরো হাটের এমাথা থেকে ওমাথা যেতে আধার ঘন্টার উপরে লাগত । পাশেই নদী ।নদী না থাকলে হাট বসত না কোথাও ।মালামাল আনা নেয়ার জন্য তখন নৌকাই ভরসা ।আমরা হাটে ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম । ও আমাকে নিয়ে গেল কবুতরের পাইকারির কাছে ।

ও তখন কবুতর পালত । কবুতর সম্পর্কে আমার খুব আগ্রহ জাগল ।এক জোড়া কবুতর দেখলাম ১০০ টাকা করে । এত টাকা কি পাই ?
এ সমস্যার সমাধানও ও করে দিল ।আমাদের বাড়িতে প্রচুর নারিকেল গাছ ছিল ।হাতে বেশ ভাল দামেই এক জোড়া নারিকেল বেঁচা যায় ।তাও ১০০ টাকা বানাতে ৫-৬ জোড়া নারিকেল বেঁচতে হবে ।বাসায় গিয়ে এখন নারিকেল বেঁচার অনুমতি নিতে হবে ।আর আমার ঐ বন্ধু তখন নারিকেল গাছে উঠতে ওস্তাদ ।

দুই ঘন্টা ঘোরাঘুরি করে বাসায় যেতে যেতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে আসছিল ।বাড়িতে মিথ্যা টিথ্যা বলে পার পেলেও পরদিন স্কুল পালানোর দায়ে বেতের বাড়ি মিস হয়নাই ।

বাড়িতে বলে কয়ে নারিকেল বেঁচার জন্য রাজি করালাম ।আরো বললাম কবুতর কিনব ।তাতেও মত দিল ।ঐখানে হাট হয় সপ্তাহে দুইদিন ।সোম আর শুক্রবার ।শুক্রবারে নারিকেল পেড়ে আমরা দুইজন নারিকেল সাজিতে নিয়ে হাটে বেঁচতে গেলাম । সব গুলি বেঁচছিলাম যদিও সময় অনেক লাগছিল ।

টাকা দিয়ে প্রথমে এক জোড়া কবুতর কিনলাম । তারপর দুজন মিলে দধি আর ভেজানো চিড়া খেলাম ।হাটের দধি আর ভেজানো চিড়া খুব মজাদার খাবার ছিল ।অনেক মানুষের প্রিয় খাবার ছিল এইটা । আমদের তখন পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি মানুষ বলে মনে হল ।

এরপরে প্রায়ই হাটে যেতাম ।নারিকেল ,চাল বিক্রি করতাম ।এটা সেটা কিনতাম । সব সময় আমার ঐ বন্ধুটি যেত ।এখনও সেসব জায়গায় হাট বসে কিন্তু এখন আর আগের মত রমরমা নেই । রাস্তাঘাট সব পাকা হয়ে গেছে । মটর গাড়ি চলে ,গ্রামের আসল স্বাদ এখন আর পাওয়া যায়না । বাড়িতে গেলে যাওয়া পড়ে কিন্তু কেন জানি আগের মত স্বাদ আর পাইনা ।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:২৯

অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: এরকম হাটা দেখলে ছোটবেলার অনেক কথাই মনে পড়ে যায়।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৭

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: ্পড়াটাই স্বাভাবিক

২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৬

রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: শরীর শিওরে ওঠা
এ যেন হারিয়ে
গেছে অনেক দিনের
আগে ।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:০৭

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: সময় নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ রোকন ভাই

৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:০০

কালীদাস বলেছেন: নস্টালজিক পোস্ট!
এখন জিনিষপত্রের দাম আরও বেশি হবার কথা :|

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:০৮

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: এখন তো অনেক বেশি হবেই ।এ প্রায় ১২ বছর আগের কথা

৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:০১

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: গ্রামীণ হাট বাজারের কোলাহলে আমাদের অস্তিত্ত হেঁটে বেড়ায়। +++

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:০৯

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: তা ভালই বলেছেন

৫| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: গ্রামের হাট আমার ভিষন পছন্দ।
এখনও গ্রামে গেলে হাট এ যাই।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:০৯

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: গ্রামের হাট মানেই ত অন্যরকম অনুভব

৬| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:১২

সুমন কর বলেছেন: স্মৃতিময় পোস্ট। ভালো লাগল।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৪৬

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: সময় নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ সুমন ভাই

৭| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:৪৪

জগতারন বলেছেন:
আমি ছোট্টবেলায় হাটে যেতাম;
১৯৬০ সালের মাঝ থেকে স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত;
হাটের আমার প্রধান আকর্ষণ;
বড় সামিয়ান টানিয়ে আয়ুর্বেদিক ঔষধ বেচত এক কবিরাজ;
দেখতে একট সারিবাদি সালসা অন্যটি সূজির হালুয়ার মতো তবে কালো রংগের।
তাদের একদল শিল্পী ছিল,
তারা বিভিন্ন প্রকার জারী, সারী, পল্লিগীতি গান গাইতো।
সেই গান শোনা ছিল আমার নেশা।

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৪৫

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: এখন এসব গান আর হয়না

৮| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৯:৫৯

হাঙ্গামা বলেছেন: আহ শৈশব !!
নষ্টালজিক হইলাম। :((

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৪৬

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: শৈশব ফুরিয়ে গেছে কতকাল আগেই

৯| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৮

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:


হাট আমাদের ঐতিহ্য! এটা নষ্ট করা হচ্ছে।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩১

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: নষ্ট হয়ে গেছে অনেকটা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.