নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বল বীর চির উন্নত মম শির !

শাহারিয়ার ইমন

শাহারিয়ার ইমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সংগ্রামী তরুন -রাজীব হোসেন ; চলে গেলেন না ফেরার দেশে

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৪



আমরা অনেক সংগ্রামী মানুষের জীবনী পড়েছি । আমরা তাদের জীবনী পড়ি যারা সংগ্রাম করে সফল হয়েছে ।মাঝ পথে হোঁচট খেয়ে পড়া
ব্যর্থদের জীবনী কেউ পড়েনা । নিয়তি সবাইকে সফল হতেও দেয়না ,যদিও নিয়তিতে বিশ্বাস কাজের কথা নয় । তবুও পৃথিবীতে এমন কিছু
বিষয় আছে যেগুলো যুক্তির বেড়াজালে আবদ্ধ নয় ।

রাজীব হোসেন তিতুমীর কলেজের স্নাতকের (বাণিজ্য) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র । তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় মা ও অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবাকে হারিয়েছিলেন ।এর পর ছোট দুই ভাই মেহেদি ও আবদুল্লাহকে নিয়ে জীবনযুদ্ধে নেমেছিলেন।কখনও খালার বাসায় থেকে, কখনও টিউশনি করে ও কাজ করে নিজে পড়াশোনা করেছেন এবং দুই ভাইকে পবিত্র কোরআনের হাফেজ বানিয়েছেন।

রাজীবের স্বপ্ন ছিল- বিসিএস দিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দিয়ে নামকরা শিক্ষক হবেন। ছোট দুই ভাইকে পড়াশোনা করিয়ে বড় করবেন। থাকবেন তিন ভাই মিলে। অন্যান্য আত্মীয়স্বজন- যাদের জীবন অন্ধকারের মুখে, আলোকিত করবেন তাদেরও। একজন আদর্শ ছাত্র ,একজন আদর্শ মানুষ বলতে আমরা যা বুঝি । খুব বেশি তো চাওয়া ছিলনা জীবনের কাছে তার ? নিজেকে আলোকিত করা ,নিজের দুইভাইকে উপযুক্ত মানুষ করা ,এইটুকুই স্বপ্ন ছিল ।

কিন্তু সেই স্বপ্নদ্রষ্টা রাজীবই রাজধানীতে দুই বাসচালকের নিষ্ঠুর খেয়ালখুশির শিকার হয়ে প্রথমে হাত হারিয়েছেন । এরপর ১৪ দিন জীবনমৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে সোমবার রাতে না ফেরার দেশে চলে গেছেন।

তার মৃত্যুতে শোক ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশের মানুষের মনে । তার চিকিৎসকরাও গভীর শোক অনুভব করেন ।


রাজীব হোসেনের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামে।গত ৩ এপ্রিল বিআরটিসির একটি দোতলা বাসের পেছনের গেটে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন তিনি। ওই সময় তার হাতটি সামান্য বাইরে বেরিয়ে ছিল। হঠাৎই পেছন থেকে একটি বাস বিআরটিসির বাসটিকে পেরিয়ে যাওয়ার বা ওভারটেক করার জন্য বাঁ দিকে গা ঘেঁষে পড়ে।

দুই বাসের প্রচণ্ড চাপে রাজীবের হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দু-তিনজন পথচারী দ্রুত তাকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকরা চেষ্টা করেও বিচ্ছিন্ন সেই হাতটি রাজীবের শরীরে আর জুড়ে দিতে পারেননি।

শমরিতা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাজীবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সাময়িক উন্নতির পর গত সোমবার থেকে তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রাজীবের মস্তিষ্ক অসাড় হয়ে যায়। সেই থেকে আর জ্ঞান ফিরেনি তার।

মৃত্যুর আগে অজ্ঞান অবস্থায় রাজীবকে রাখা হয়েছিল ঢামেকের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র-আইসিইউতে। ভাইয়ের জ্ঞান ফেরার আগে আইসিইউর সামনে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে দেখা গেছে রাজীবের ছোট দুই ভাই হাফেজ মেহেদি হাসান (১২) ও হাফেজ আবদুল্লাহকে (১১)।

সেখানে তারা থেমে থেমে দুই হাত তুলে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করেছিলেন যেন তাদের ভাই বেঁচে ফেরেন। প্রায় প্রতিদিনই তারা স্বজনদের কাছে জানতে চেয়েছে- ‘ভাই ভালো হবে তো?’ কিন্তু এতিম মেহেদি ও আবদুল্লাহকে রেখে চলে গেলেন রাজীব।

আইসিইউর সামনে কথা হয়েছিল রাজীবের ছোট ভাই হাফেজ মেহেদি হাসানের সঙ্গে। সে বলছিল, মা-বাবা মারা যাওয়ার সময় সে ও তার ছোট ভাই আবদুল্লাহ খুব ছোট ছিল। মা-বাবা বলতে তারা বড় ভাই রাজীবকেই বুঝত।

মেহেদি জানিয়েছিল, দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার পর বড় ভাই রাজীবের জন্য দুই ভাই মিলে কোরআন পড়েছে। মসজিদে দোয়া পড়িয়েছে। ওই সময় ভাইয়ের কিছু হলে আমরা বাঁচব না- বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে ভাইয়ের সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছিল এ কিশোর হাফেজ।

রাজীব হোসেনের মৃত্যুর জন্য কে দায়ী ? বাসের ড্রাইভার না আমাদের ট্রাফিক সিস্টেম নাকি নিয়তি ? সড়ক দূর্ঘটনায় প্রতিবছর শতশত রাজীব , শতশত পরিবারের সম্বল ,বেঁচে থাকার স্বপ্ন এভাবে ধ্বংস হয়েছে এদেশে ।কারো তাতে একবিন্দু টনক নড়েনা ।

[তথ্য ও ছবি সূত্র ; প্রথম আলো ]

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৫০

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন: অভিযুক্ত গাড়ির চালকদের হত্যা মামলার আসামি করে খুব দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। চালকদ্বয়ের ফাঁসি চাই।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: এদেশে ড্রাইভারদের ফাসি দিলে সারাদেশ অচল করে দেয় চালক-মালিক সমিতি

২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:০০

রাজীব নুর বলেছেন: কোনো আনন্দের খবর নেই।
চারিদিকে শুধু দুঃখের খবর।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:১৬

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: দু;খ যখন আসে চারদিক থেকেই আসে

৩| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:১৭

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এত এত দু:সঙবাদ
বড় কষ্ট লাগে বুকে :(

৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:২৬

যুক্তি না নিলে যুক্তি দাও বলেছেন: ছেলেটি আমার কেও নয় তবুও ছবিতে মুখ পানে তাকালে কেমন মায়াবী আপন মনে হত। এমন অকালে চলে যাওয়াটা হৃদয়ে মোচড় দিয়ে গেলো।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৩

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: সারা দেশ এর মানুষ শোকাহত

৫| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৪

অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: রাজিবেরা কোনভাবে এই বিশৃংখল সমাজে জয়ী হতে পারবে না। :(

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩১

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: সেটা সমাজের দায়

৬| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


মনে হয়, সে যাত্রী হিসেবে সাধরণ ঢাকাবাসী থেকে কম দক্ষ ছিল; এবং ঢাকার এই ভয়ংকর যানবাহনের শিকার কাউকে না হয়, কাউকে হতে হবে।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩০

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: কতদিন এভাবে চলবে আর

৭| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৬

ক্স বলেছেন: মরে গিয়ে বাস চালকদের বাঁচিয়ে দিয়ে গেছে। বেঁচে থাকলে বাসওয়ালাদেরও সমস্যা, সাংবাদিকদেরও ঝামেলা। মরে গেছে, কয়েকদিন হাউ কাউ হবে - একসময় সবাই ভুলে যাবে। তারপর কোন বাসওয়ালা এমনিভাবে আরেক পথচারির উপর চড়াও হয়ে তাকে নায়ক বানাবে। সে হতে পারে আপনি বা আমি।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৮

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: এই জুলুমের প্রতিকার কি হবেনা তবে ?

৮| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:১৩

সোহানী বলেছেন: হায়রে দেশ........ এতো কষ্ট কেন সাধারন মানুষের। একটু ও কি বাচাঁর অধিকার নেই।

একটু কি জানবেন ওর ছোট ভাই দুটোকে সাহায্য করার উপায় কি?

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৫০

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: তারা এখন তার মামা মামির আয়ত্তে আছেন সম্ভবত , সাহায্য দিলেও না নেয়ার কথা

৯| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:০৩

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন:

গাড়ীচালকের উপর যতো না রাগ হচ্ছে, তার চাইতে বেশী মেজাজ খারাপ হচ্ছে গবেট ডাক্তারগুলোর উপরX(

রাজীব তুই ভাল থাকিস।:(

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৫১

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: ডাক্তারদের নিয়ে অভিযোগ করলে ,লিখে আর শেষ করা যাবেনা

১০| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: দু;খ যখন আসে চারদিক থেকেই আসে

ঠিকই বলেছেন।

১১| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:২৩

অক্পটে বলেছেন: ছোটবেলায় বাবা মা হারিয়েছেন, আর এখন বড় ভাইটি চলে গেলেন! ভাবতেই ভেতরটা ভেঙ্গেচুড়ে যাচ্ছে!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.