নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হিমু হবার ইচ্ছে আমার নেই, ইমু হয়েই না হয় থাকলাম।হরহামেসা খরচ হওয়া বড় নোটটগুলি না হয় হতে পারলাম না, হৃদয় নামক মাটির ব্যাংকে না হয় জমা হলাম কিছু খুচরো পয়সা হয়ে।

ন্যানো ব্লগার ইমু

ঘর পোড়া গরু হয়েও সিঁদুরে মেঘকেই ভালবাসি।।

ন্যানো ব্লগার ইমু › বিস্তারিত পোস্টঃ

"আমি ধর্মভীরু মুক্তমনা, নাস্তিক কিংবা মৌলবাদী নই"

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১০

'অভিজিৎ রায়' নামটির সাথে পরিচিত হয়েছিলাম আমার বড় ভাইয়ের কম্পিউটারে ই-বুক ফোল্ডারের মাঝে "মুক্তমনা" নামক অপর একটি সাব-ফোল্ডারে অবস্থিত কিছু ই-বুক থেকে। তখন সম্ভবত ২০০৯ সাল। ব্লগ নামক জিনিসটার সাথে তখনো সেভাবে পরিচিত নয়। তাই বড় ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করে বিস্তারিত শুনলম মুক্তমনা বিষয়টি কি? শুনে যা বুঝলাম সংক্ষেপে তা হচ্ছে মুক্তমনা হচ্ছে একটি অনলাইন ওয়েবসাইট যেখানে মুক্ত চিন্তাধারা লোকজন তাদের চিন্তাগুলিকে বিজ্ঞানের উদ্ধৃিতির আলোকে শেয়ার করে থাকেন এবং এই সাইটটির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক অভিজিৎ রায়। আরো জানতে পারি এই সাইটির লেখকগন অস্তিত্ববাদে বিশ্বাসী নয়। অভিজিৎ রায়ের মতো কিছু পদার্থবিদ যারা তাত্বিক পদার্থটিকে ব্যবহারিক পদার্থে রুপান্তরিত করতে চেয়েছেন মহাবিশ্বের উৎপত্তি, সম্প্রসারণ, প্রানের উৎপত্তি ও বিকাশের মতো বিষয়গুলিকে প্রাকৃিতিক নিয়মে ঘটা বিষয় প্রমান করতে পদার্থের কোয়ান্টাম মেকানিক্স, বিগ ব্যাং, প্যারালাল ইউনিভার্স, ইনফিনিটি সাইক্লিক ইউনিভার্স, কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন, ভ্যাকুয়াম ফ্লাকচুয়েশন, ডারইউনিজম ইত্যাদি তাত্বিক জ্ঞানের মাধ্যমে।। যেখানে এগুলোকে প্রমান করতে উনারা সবাই খোদার অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রমান করতে চেয়েছেন যে খোদা বলে কিছু নেই, যা কিছু ঘটছে বা ঘটবে তা সবই প্রাকৃিতিক।

যাই হোক কৌতুহলবসত ভাইয়ার পিসি থেকে মুক্তমনা ফোল্ডারটি নিয়ে আসি শুধুমাত্র নাস্তিকবাদগনের মনোভাব যুক্তি এবং দর্শন জানার জন্য। ই-বুকগুলি কয়েকটি তৎকালীন সময়ে পড়তে গিয়ে কিছু লেখা যুক্তিযুক্ত এবং বিজ্ঞানসম্মত মনে হলেও কিছু লেখা ধর্মীয় অনূভূতিতে তীব্রভাবে আঘাত ফেলার কারনে আর পড়া হয়নি। কারন অনেকগুলি লেখাই পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে ধর্মের কিছু চরিত্র নিয়ে চটি লেখা হয়েছে। যেমনঃ "আকাশ মালিক" নামক একজন হযরত আয়েশা (রাঃ) -কে নিয়ে ৫ পর্বের একটি লেখনি লেখেছেন "হজরত আয়েশার (রাঃ) সাক্ষাৎকার" নামে যা মূলত ধর্মীয় মহানুভতার কাউকে নিয়ে চটি লেখা হয়েছে মাত্র।

মানুষের সবচেয়ে সংবেদনশীল জায়গাগুলো অন্যতম জায়গাটি হচ্ছে ধর্ম। আচ্ছা ধর্মের কথা না হয় বাদ-ই দিলাম। ধরুন আপনার খুব প্রিয় একজন ব্যাক্তিত্ব, আপনার গুরু, এমনকি ধরুন আপনার মা-কে নিয়ে কেউ বিনা কারনে চটি রচনা করে গেল। আপনি কি সেটা সহজে মেনে নিতে পারবেন? যেমনটি করেছেন 'মুক্তমনা'র জনৈক কিছু ব্লগার। আর সম্পাদক পর্ষদ তা নির্বিচারে পোষ্ট দিয়েগেছেন বা মোডারেট করেননি যা মানুষের মানবতায় আঘাত হেনে যায়। ঈশ্বর আছেন। ঈশ্বর নেই। এই নিয়ে তর্ক বিতর্ক আজ নতুন কিছু নয়। টেলিওলজিক বিজ্ঞানীগন প্রমান করতে চেয়েছেন ঈশ্বর আছেন, আবার এন্টিটেলিওজিক বিজ্ঞানীগন ম্যাথ, ইকুয়েশন, থিওরী, হাইপোথিসিস দ্বারা প্রমান করতে চেয়েছেন ঈশ্বর নেই। সবই প্রকৃতির অজানা রহস্য। যা হোক এই তর্ক বিতর্ক চলবেই। সেটা নিয়ে আশা করি কারোর-ই তেমন সমস্যা হয়নি, কিংবা হবেও না। যখন এই অস্তিত্ববাদ প্রমান করতে গিয়ে ধর্মের মতো সংবেদনশীল জায়গাটিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সমস্যাটি বাধে তখনি। ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকতে না পারে, তাই বলে ধর্মের বিভিন্ন চরিত্র নিয়ে তো আপনি চটিগল্পের ন্যায় তাদের উপস্থাপন করতে পারেন না।

যা হোক বলতে চাই, ধর্ম একটি সতন্ত্র জায়গা। যে জায়গাটুকু জুড়ে রয়েছে প্রবল অনূভুতি আর বিশ্বাস। প্রত্যেকটা ধর্মের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়ে গিয়েছে। এ সীমাবদ্ধতার জন্য খোদাকে দোষী নয়, প্রতিটা সভ্যতা, সম্প্রদায় ধর্মকে যেভাবে বরণ করে নিয়েছে, সেভাবেই তা বিস্তৃতি লাভ করেছে। অপরপক্ষে নাস্তিকদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, যদি বিজ্ঞান দ্বারা ঈশ্বরের অস্তিত্বকে ভুল প্রমান করা যায় তবে প্রমান করে দেখিয়ে দিচ্ছেন না কেন ঈশ্বর নেই? আপনাদের "ভ্যাকুয়াম ফ্লাকচুয়েশন" কিংবা "বিগ ব্যাং এক্সপ্লোশন" দ্বারা-ই সৃষ্টি করুন না একটা নতুন মহাবিশ্ব? ডারইনিজম তত্বে বিশ্বাসীরা জন্ম দিন না একটা নতুন মানব শিশু? তা না পাড়লেন, অন্তত্ব ডারউইন তত্ত্বানুসারে আবার গজিয়ে দিন একটা করে লেজ?

পরিশেষে একটি কথা বলতে চাই। আর তা হচ্ছে মানুষের জ্ঞান সীমাবদ্ধ। আর এই কথাগুলি পবিত্র কুরআন শরীফের আয়াতুল কুরসীতে বেশ স্পষ্ট করেই বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এই চরম সত্যটি মানুষ কখনোই স্বীকার করে না কিংবা করবেও না। এই নির্মম সত্যটির জন্য-ই হয়তো মানুষের মাঝে এতো দল, মতভেদ। কেউ নাস্তিক, কেউ আস্তিক। আর তার জন্যই কেউ উগ্র মৌলবাদী, আবার কেউ তার্কিক গবেষক। তবে একজন মানুষকে তার প্রগতিশীল চিন্তাভাবনার জন্য যে কুপিয়ে মারতে হবে সেটা অবশ্যই কোন ধর্ম শিক্ষা দেয়নি।

অভিজিৎ রায়ের মৃত্যুর পর সেই মুক্তমনা'র বইগুলো আরেকবার হাতিয়ে দেখলাম। লোকটা জ্ঞানী তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু তার লজিক গেটগুলো ধর্মের প্রতি অষাড় চিন্তাভাবনায় নিমগ্ন করে নিজেকে তার উদ্দেশ্যের বাহিরে দূরে সড়িয়ে ফেলেছিলেন। তাই হয়তো কিছু কিছু ধর্মীয় গোড়ার হাতে তাকে এভাবে জীবন উৎসর্গ করতে হলো। আর জনসম্মুখে বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ডের ন্যায় আমরা এবারো তা চেয়ে চেয়ে দেখছিলাম আর ছবি তুলছিলাম। এই আমাদের ধর্ম চেতনা, এই আমাদের বিবেকবোধ, আর এই আমাদের আত্মশিক্ষা।।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:৫৯

স্বপ্নাতুর পুরব বলেছেন: যুক্তিসম্মত কথা বলেছেন । ধন্যবাদ এমন লিখা উপহার দেবার জন্য ।

০১ লা মার্চ, ২০১৫ রাত ২:০৯

ন্যানো ব্লগার ইমু বলেছেন: ধন্যবাদ :) :) :) :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.