নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাজার সনেটের কবি।

ফরিদ আহমদ চৌধুরী

বিষয় যতই জটিল হোক,ভাবতে ভালো লাগে

ফরিদ আহমদ চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আল্লাহ স্বীয় সত্ত্বায় সর্বত্র বিরাজমান

০১ লা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৯



আল্লাহ বলেন, ‘অসিয়া কুরসিউহুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি – তাঁর কুরসি আকাশ ও জমিন ব্যাপ্ত’-আলক্বোরআন-২ঃ২৫৫।
আকাশ ও জমিনের সর্বত্র যার কুরসি তিনি সর্বত্র নেই সেটা কেমন কথা? মহানবীর (সঃ) দাসী বলেছে আল্লাহ আকাশে থাকেন, তো আকাশ কি সর্বত্র এর বাইরে? দাসী আল্লাহর থাকার একটা স্থানের কথা বলেছে অন্যটি বলেনি। মহানবী (সঃ) তার সাথে কথা বাড়াতে জাননি। সহজ বাংলায় কুরসি হলো বসার জায়গা। বসার জায়গা হয় বসলে, না বসলে নয়। বসে থাকা মানে শক্তপোক্তভাবে থাকা। তারমানে আল্লাহ সর্বত্র শক্ত পোক্ত ভাবে বিদ্যমান। স্বীয় সত্ত্বায় না হলে কুরসির প্রয়োজন কি? যদি আপনি বলেন আল্লাহর দৃষ্টি সর্বত্র বিরাজমান. তো দৃষ্টির জন্য কুরসির প্রয়োজন আছে কি? সুতরাং আয়াতুল কুরসি খ্যাত আয়াত দ্বারা আল্লাহ স্বীয় সত্ত্বায় সর্বত্র বিরাজমান প্রমানীত।
আহলে জাহেল. আহলে খবিশ, আহলে হাদীস, গাইরে মুকাল্লিদ, লামযহাবী, ওহাবী, আলবানী, সালাফী ও জাকির নায়েকের দল বলছে আল্লাহ স্বীয় সত্ত্বায় সর্বত্র বিরাজমান নয়। এটা বিশ্বাস করলে নাকি মুশরিক হবে। ভিষণ আশ্চর্য! ক্বোরআন বিশ্বাস করলে মুশরিক হবে! মুলত ওরা ক্বোরআন অস্বীকারকারী কাফির। সুতরাং মুসলমানের কোন কাফিরের ফতোয়া আমলে নেওয়ার দরকার নেই।
কতিপয় বলছে আল্লাহ কি তবে টয়লেটেও আছে? আচ্ছা সে টয়লেটে গেলে তার আত্মাকি বাইরে রেখে যায়? আর তার সাথে যদি আত্মাও টয়লেটে যায় তবে আত্মায় কোন নাপাক লাগানো সম্ভব? নর্দমায় যে বড় বড় শিংমাছ হয়, সেগুলার আত্মায় কি নর্দমার বাইরে থাকে। যদি সেগুলোর আত্মা সাথেই থেকে থাকে তবে সেগুলোর আত্মায় নর্দমার কিছু লাগে কি? আল্লাহকে বলা হয় পরম আত্মা। কাজেই আল্লাহ যেখানেই থাকেনা কেন কোন কিছু তাঁকে অপবিত্র করতে পারেনা। সেজন্য তাঁকে সোবহান বা পবিত্র বলা হয়। মূলত আল্লাহ স্বীয় স্বত্ত্বায় সর্ব শক্তিমান। আর শক্তির গায়ে বস্তু জাতীয় কিছু মাখানো যায় না। আপনি আলোর গায়ে কোন কিছু মাখাতে পারবেন না।
একেক কালে মুসলমানের ঈমান পরীক্ষার জন্য একেক ফিতনার উদ্ভব হয়। আমাদের কালের সেই ফিতনা হলো এরা। যারা ইন্টার নেট ব্যাবহার করছেন, তারা এদের ব্যাপারে সাবধান না হলে এরা যেকোন সময় আপনার ঈমান নষ্ট করে ফেলবে। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক পথে অবিচল রাখুন - আমিন।


লামাজহাবী ভুল ফতোয়া
ইসলামের মেয়াদ যেহেতু কেয়ামত পর্যন্ত সেহেতু এতে ফের্কা সৃষ্টির মেয়াদও কেয়ামত পর্যন্ত। সুতরাং এখনি তিহাত্তর ফের্কা গননা সঠিক নাও হতে পারে।
হাদীস অনুযায়ী মুসলমানদের সঠিক একদল সব সময় থাকবে। তো এমন এক সময় ছিল যখন সামান্য কিছু সংখ্যক ছাড়া সবাই কোন না কোন মাযহাবের অনুসারী ছিল। যারা মাযহাবের অনুসারি ছিলনা তারা ছিলেন মুজতাহিদ, আর মুজতাহীদের মাজহাব মানার শর্ত ছিলনা। আর সেই সব মুজতাহিদ মাজহাবের বিরোধীতা করেননি। আর সেইসব মুজতাহিদের অনুসারী ছিলনা। সুতরাং তখন চার মাজহাবের অনুসারী এবং মাজহাব না মানা মুজতাহীদ সহ সবাই আহলে ছুন্নাত ওয়াল জামাত এবং সঠিক হিসেবে গন্য ছিলেন। তো সেই সময় যারা সঠিক ছিলেন এখন তারা বেঠিক হবেন কোন কারণে? এখন তারা বেঠিক গন্য হবেনকি লা মাজহাবীরা বেঠিক বলেছে সেই কারণে? কিন্তু আমরাতো লামাজহাবীদের উম্মত নই, তবে আমাদের নিকট তাদের এ ফতোয়ার কোন গুরুত্ব আছে কি? সুতরাং আহলে ছুন্নাত ওয়াল জামায়াত আগেও সঠিক ছিল, এখনও সঠিক আছে। কাজেই লামাজহাবী ফতোয়ায় বিভ্রান্ত হওয়ার সংগত কোন কারণ নেই। আল্লাহ এদের বিভ্রান্তি থেকে আমাদের হেফাজত রাখুন-আমিন।

মন্তব্য ৪৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৪৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মে, ২০১৭ রাত ১০:৫২

মিঃ আতিক বলেছেন: যুক্তি ভিত্তিক বিশ্লেষণ দলিল সহ, ভালো লাগলো।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:৫০

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ভাল লাগার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

২| ০১ লা মে, ২০১৭ রাত ১১:৪০

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: যে খানে আলো এবং বাতাস নেই সেখানেও আল্লাহ আছেন।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৮

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: কিন্তু ওরা সেটা মানতেই চায়না ইন্টরনেটে প্রতিনিয়ত বিভ্রান্তি ছড়িয়েই চলছে।

৩| ০২ রা মে, ২০১৭ রাত ১২:৫৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


সব ধর্মের লোকেরা নিজেদের বইকে ব্যাখ্যা করে কোটী বই লিখেছে; প্রতি বছর ৩০ মিলিয়ন কপি কোরান, ৪০ মিলিয়ন কপি বাইবেল প্রিন্ট হয়; এগুলোর কাছাকাছি পরিমাণ সংখ্যক সম্পুরক বই বের হয়; এত বই লিখতে গিয়ে কি পরিমাণ "ভাব সম্প্রসারণ" হচ্ছে? কিভাবে ১৬০ কোটী লোক একভাবে চিন্তা করবে?

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৬

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: তাই সবার সবাইকে সম্মান দিয়ে কথা বলা উচিৎ। অথচ ওরা ওদের মনগড়া ফতোয়া দিয়ে সব সময় আমাদেরকে হিট করে। ভাবলাম এক্কেবারে ভদ্র হয়ে বসে থাকলেও হয়না। একটু হলেও প্রতিবাদ করা দরকার। ৭ নং ও ৮ নং মন্তব্যে তাদের দু’জন হাজিরা প্রদান করেছে। পড়ে দেখতে পারেন। এ পোষ্টে আপনার অন্তত আরেকটা মন্তব্য দরকার যেহেতু আপনি সবার ভাল চান।

৪| ০২ রা মে, ২০১৭ রাত ৩:১৮

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: একদম সত্য কথা। ভালো লাগলো পোষ্ট।

শুভকামনা আপনার জন্য।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৭

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: বঙ্গবন্ধু করেছেন ইসলামী ফাউন্ডেশন। তার কন্যা ইচ্ছে করলে এ সমস্যার সমাধানে অবদান রাখতে পারেন।

৫| ০২ রা মে, ২০১৭ ভোর ৬:৫৬

সোহাগ আহসান বলেছেন: আল্লাহ তাআলা কোথায় আছেন?
আল্লাহ তাআলা কোথায় আছেন?



আল্লাহ তাআলা কোথায় আছেন?

আল্লাহ তাআলা আমাদের রর ও ইলাহ। একমাত্র তিনিই ইবাদত আরাধনার উপযোগী। সে হিসেবে তিনি কোথায় সে বিষয়ে সম্যক ধারণা অর্জন আমাদের জন্য ওয়াজিব, যাতে আমরা তাঁর প্রতি একাগ্রচিত্তে ধাবিত হতে পারি, যথার্থরূপে ইবাদত-বন্দেগি পালনে সক্ষম হই।
আল্লাহ কোথায় আছেন? এ প্রশ্নের সরাসরি উত্তর হল তিনি আরশের উপরে আছেন। আরশের উপরে থাকা আল্লাহ তাআলার একটি অন্যন্য সিফাত, আল কোরআন ও সহিহ হাদীসে এ বিষয়ে স্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে, যেমন রয়েছে আল্লাহ তাআলার শ্রবন করা, দেখা, কথা বলা, অবতীর্ণ হওয়া এবং এ জাতীয় অন্যান্য সিফাতসমূহ। সালাফে সালেহীনদের আকিদা আর মুক্তিপ্রাপ্ত দল বা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআত এ আকিদাই পোষণ করেন কোনোরূপ পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সৃষ্টির সাথে তুলনা ব্যতীত। কারণ, আল্লাহ তাআলা বলেন:
لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ ﴿الشوري11﴾
তাঁর মত কিছু নেই আর তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।(সূরা শুরা,৪২: ১১ আয়াত)

এ কারণে যখন ইমাম মালেক রহ. কে (আর-রহমান, যিনি আরশের উপরে উঠেছেন) এ আয়াত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিল। উত্তরে তিনি বলেছিলেন: استواء তথা আরশের উপরে ওঠার বিষয়টি জানা, কিন্তু তার ধরণ অজানা, আর এ বিষয়ের উপর ঈমান আনা ওয়াজিব। হে মুসলিম ভাই, ইমাম মালেক রহ. এর বক্তব্যের প্রতি খেয়াল করুন। কারণ, তিনি আল্লাহ যে উপরে আছেন, তার উপর ঈমান আনাকে প্রতিটি মুসলিমের জন্য ওয়াজিব বলেছেন। কিন্তু কিভাবে আছেন, তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।
এ জন্যই আল্লাহ তাআলার যেসমস্ত সিফাত কোরআন ও সহিহ হাদীসে আছে, তার কোনটাকে অস্বীকার করলে, (যেমন আল্লাহ যে আরশের উপরে আছেন) সে ঐ আয়াত বা হাদীসকে অস্বীকারকারী হল। কারণ, এ সিফাত হচ্ছে পূর্ণতার, সম্মানের ও সর্বশীর্ষতার। তা কোন ক্রমেই আল্লাহর ব্যাপারে অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু পরবর্তী জামানার কিছু ওলামা যারা দর্শনের (philosophy) দ্বারা প্রভাবিত, তারা কিছু কিছু আয়াত ও সিফাতকে তাবিল বা দূরব্যাখ্যা দিয়ে ভিন্ন অর্থে নিয়ে যান। এধরনের তাবিলের কারণে বহু লোকের আকিদা নষ্ট হয়ে যায়। তারা আল্লাহ তাআলার এই পূর্ণ সিফাতকে পর্যন্ত অস্বীকার করে বসে। তারা সালাফগণের পথের বিরোধিতা করে। কিন্তু মূলে সালাফগণের রাস্তাই হচ্ছে বিশ্বাসযোগ্য, জ্ঞাননির্ভর ও হিকমতপূর্ণ। ঐ ব্যক্তির কথা কতোই না উত্তম যিনি বলেন: প্রতিটি ভালোই রয়েছে সালাফগণের রাস্তা অনুসরনের মধ্যে, আর প্রতিটি খারাবীই রয়েছে পরবর্তীগণের বিদআতকে মূল কথা বলে মেনে নিয়ে তা অনুসরনের মধ্যে।
কোরআন ও সহিহ হাদীসে আল্লাহ তাআলার যেসমস্ত সিফাতের কথা বলা হয়েছে তার উপর ঈমান আনা ওয়াজিব। তাঁর সিফাতসমূহের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করা, অথবা তার কিছু সিফাতকে যেভাবে আছে সেভাবেই স্বীকার করা আর কিছুকে পরিবর্তন করে বিশ্বাস করা কিছুতেই জায়েয হবে না। যে ব্যক্তি বিশ্বাস করে যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা শ্রবনকারী ও দর্শনকারী, তার মানে এই নয় যে, তার শ্রবন ও দর্শন যন্ত্র আমাদেরই মত।
তার জন্য এটাও বিশ্বাস করা দরকার যে, আল্লাহ আসমানের উপর আছেন, তার সম্মান অনুযায়ী, কোন সৃষ্টির সাদৃশ্য হয়ে নয়। কারণ এ সিফাতসমূহ আল্লাহ তাআলার পূর্ণতা প্রকাশ করে। তা আল্লাহ তাআলা স্বয়ং তাঁর কিতাবে স্পষ্ট করে ব্যক্ত করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর হাদীসেও তা বিদৃত করেছেন। আর সত্যিকারের ফিতরতও তা স্বীকার করে, আর সত্যিকারের বুদ্ধি বিবেচনাও তা মেন নেয়।
ইমাম বুখারীর রহ. এর উস্তাদ নাইম ইবনে হাম্মাদ রহ. বলেছেন: যে ব্যক্তি আল্লাহকে তাঁর সৃষ্টির সাথে তুলনা করল সে যেন কুফরী করল। আর আল্লাহ তাআলা নিজের সম্বন্ধে যা বলেছেন তা যে ব্যক্তি অস্বীকার করল সে যেন কুফরী করল। আর আল্লাহ তাআলা তাঁর নিজের সম্বন্ধে কিংবা তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সম্বন্ধে যা বলেছেন তাতে কোন তুলনা নেই। (শরহে আকিদাহ্ তাহাবিয়া)।

আল্লাহ আরশের উপর আছেন

কোরআন, সহীহ হাদীস, সৎ বুদ্ধি, সহীহ অনুভূতি সমস্ত কিছুই উপরোক্ত কথাকে সমর্থন করে।
১। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা বলেন:
الرَّحْمَنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوَى ﴿طه5﴾
পরম করুণাময় আরশের উপর আছেন।(সূরা তাহা, ২০: ৫ আয়াত।)
২। অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন:
أَأَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يَخْسِفَ بِكُمُ الْأَرْض(الملك 16)
তোমরা তার থেকে নির্ভয় হয়ে গেলে যিনি আসমানে আছেন, আর তিনি তোমাদের সহকারে জমিনকে ধ্বসিয়ে দিবেন না?।(সূরা মূলক ৬৭: ১৬ আয়াত)।
ইবনে আব্বাস রা. এই আয়াতের তাফসীরে বলেন: তিনি হলেন আল্লাহ। (তাফসীরে ইবনুল জাওযি)।
৩। আল্লাহ তাআলা আরও বলেন:
يَخَافُونَ رَبَّهُمْ مِنْ فَوْقِهِمْ(النحل50)
তারা তাদের উপরস্থ রবকে ভয় করে। (সূরা নাহল,১৬: ৫০ আয়াত)।
৪। আল্লাহ তাআলা ইসা আ. সম্বন্ধে বলেন:
بَلْ رَفَعَهُ اللَّهُ إِلَيْهِ(النساء 158)
বরং আল্লাহ তাকে তাঁর নিকটে উত্তলন করে নিয়েছেন। (সূরা নিসা, ৪: ১৫৮ আয়াত)।
৫। তিনি আরও বলেন:
وَهُوَ اللَّهُ فِي السَّمَاوَاتِ(الأنعام3)
আর তিনিই আল্লাহ যিনি আসমানে আছেন। (সূরা আনআম ৬: ৩ আয়াত)।
এ সমস্ত আয়াতের তাফসীরে ইবনে কাসীর রহ: বলেন: তাফসীরকারকগণ এ ব্যপারে একমত পোষণ করেন যে, “তারা আল্লাহ সম্বন্ধে ঐভাবে বর্ণনা করবেন না যেভাবে জাহমীয়ারা (একটি ভ্রষ্ট দল) বলে যে, আল্লাহ সর্বত্র আছেন। আল্লাহ তাআলা তাদের এ জাতীয় কথা হতে পাক পবিত্র ও অনেক ঊর্ধ্বে।”
আল্লাহ তাআলার বাণী:
وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنْتُمْ(الحديد 4)
তোমরা যেখানেই থাক না কেন, তিনি তোমাদের সাথেই আছেন। (সূরা হাদীদ, ৫৭: ৪ আয়াত)।
অত্র আয়াতের ব্যখ্যা হল; নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা আমাদের সাথে আছেন দেখার দ্বারা, শ্রবনের দ্বারা, যা বর্ণিত আছে তফসীরে জালালাইন ও ইবনে কাসীরে। এই আয়াতের পূর্বের ও শেষের অংশ এ কথারই ব্যখ্যা প্রদান করে।
৬। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সপ্তম আসমানের উপর উঠানো হয়েছিল, তাঁর রবের সাথে কথোপকথনের জন্য। আর সেখানেই পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করা হয়েছিল। (বুখারী ও মুসলিম)।
৭। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
ألاَ تأمَنُونيِْْ وَأنا أمِينُ مَنْ فيِ السَّمَاء (وهو اللهُ) (ومعني في السَّماء: علي السَّمَاء) (متفق عليه)
তোমরা কি আমাকে আমিন (বিশ্বাসী) বলে স্বীকার কর না? আমি তো ঐ সত্ত্বার নিকট আমিন বলে পরিগণিত যিনি আসমানের উপর আছেন। (আর তিনি হলেন আল্লাহ)। (বুখারী ও মুসলিম)।
৮। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন:
ارْحَمُوا مَنْ فيِ الارضِ يَرْحَمكٌمْ مَنْ في السَّمَاء (أي هو الله) (الترمذي وقال حسن صحيح)
যারা জমিনে আছে তাদের প্রতি দয়া কর, তবেই যিনি আসমানে আছেন তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। (তিরমিযী হাসান সহীহ)।
৯। অন্য হাদীসে এসেছে:
سأَلَ رَسُولُ الله صلي الله عليه وسلَّمَ جَارِيَةً فَقَالَ لَهَا: أيْنَ اللهَ؟ فَقَالَتْ في السَّماءِ قَالَ مَنْ أنا؟ قَالَتْ أنْتَ رَسٌولُ اللهِ قَالَ: أعْتِقْهَا فإنَّها مُؤْمِنَةً . (مسلم)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ক্রীতদাসীকে জিজ্ঞেস করলেন: বলতো আল্লাহ কোথায়? সে বলল, আসমানে। তারপর তিনি বললেন: বলতো আমি কে? সে বলল: আপনি আল্লাহর রাসূল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, একে মুক্ত করে দাও, কারণ সে মুমিনা। (মুসলিম)।
১০। অন্যত্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
وَالْعَرْشُ فَوْقَ الْمَاء وَاللهُ فَوْقَ عَرْشِهِ وَهُوَ يَعْلَمُ مَا انتُمْ عَلَيْهِ. (حسن رواه أبو داود)
আরশ পানির উপর আর আল্লাহ আরশের উপর। তৎসত্তেও, তোমরা কি কর বা না কর তিনি তা জ্ঞাত আছেন। (আবু দাউদ হাসান)।
১১। আবু বকর রা. বলেছেন:
ومَنْ كَانَ يَعْبُدُ اللهَ فإنَّ اللهَ فيِ السماء حَيٌّ لا يمُوتُ (رواه الدارمي في الرد غلي الجهمية باسناد صحيح)
যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদত করে (সে জেনে রাখুক) নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা আসমানের উপর জীবিত আছেন, কখনোই মৃত্যুমুখে পতিত হবেন না। (সুনানে দারেমী সহীহ সনদ) জাহমীয়াদের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
১২। আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহ.-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আমরা কিভাবে আমাদের রব সম্বন্ধে জানতে পারব? উত্তরে তিনি বলেছেন: তিনি আসমানে আরশের উপর আছেন, সৃষ্টি হতে আলাদা হয়ে। অর্থাৎ আল্লাহ পাকের জাত আরশের উপর আছেন, সৃষ্টি থেকে আলাদা হয়ে। তার এই উপরে থাকা সৃষ্টির সাথে কোন সামঞ্জস্য নেই।
১৩। চার ইমামগণই এ ব্যাপারে একমত যে, তিনি আরশের উপর আছেন, তিনি তাঁর কোন সৃষ্টির সাথে তুলনীয় নন।
১৪। মুসল্লী সিজদায় বলেন: (আমরা মহান উঁচু রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি)। দোয়া করার সময় সে তার হস্তদয়কে আসমানের দিকে উত্তলন করে।
১৫। যখন বাচ্চাদের প্রশ্ন করা হয়, বলত আল্লাহ কেথায়? তখন তারা তাদের স্বভাবজাত প্রবৃত্তির বশে বলে: তিনি আসমানে।
১৬। সুস্থ বুদ্ধি, বিবেক, আল্লাহ যে আসমানে আছেন তা সমর্থন করে। যদি তিনি সর্বত্রই বিরাজমান হতেন তবে অবশ্যই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা জানতেন এবং সাহাবীদের শিক্ষা দিতেন। দুনিয়ার বুকে এমন অনেক নাপাক অপবিত্র জায়গা আছে যেখানে তাঁর থাকার প্রশ্নই উঠে না।
১৭। যদি বলা হয়, আল্লাহ তাআলা তার জাত সহকারে আমাদের সাথে সর্বস্থানে আছেন, তবে তার জাতকে বিভক্ত করতে হয়। কারণ, সর্বত্র বলতে বহু জায়গা বুঝায়। এটাই ঠিক যে আল্লাহ তাআলার পবিত্র জাত এক ও অভিন্ন। তাকে কোন অবস্থাতেই বিভক্ত করা যায় না। তাই ঐ কথার কোন মূল্য নেই, যে তিনি সর্বত্র বিরাজমান। আর এটা প্রমাণিত যে, তিনি আসমানে আরশের উপর আছেন। তবে তিনি তাঁর শ্রবেনর, দেখার ও জ্ঞানের দ্বারা সকল বিষয় সম্পর্কে সম্যক অবহিত ।


সমাপ্ত


লেখক: আখতারুজ্জামান মুহাম্মদ সুলাইমান
সম্পাদনা: চৌধুরী আবুল কালাম আজাদ
সূত্র: ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ, সৌদিআরব


আরও পড়ুনঃ আল্লাহর অবস্থান বিবরণে আল কুরআন
আরও পড়ুনঃ আল্লাহ্‌ কি সর্বস্থানে বিরাজমান?
আরও পড়ুনঃ আল্লাহ কি নিরাকার ?
আরও পড়ুনঃ আল্লাহর দর্শন

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৩:২৮

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ১। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা বলেন:
الرَّحْمَنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوَى ﴿طه5﴾
পরম করুণাময় আরশের উপর আছেন।(সূরা তাহা, ২০: ৫ আয়াত।)
এর দ্বারা একই সময় তিনি অন্য কোথাও নেই সেকথা প্রমাণ করেনা। কাজেই আপনি আমাদেরকে ভুল বুঝাতে চাচ্ছেন।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৩১

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ২। অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন:
أَأَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يَخْسِفَ بِكُمُ الْأَرْض(الملك 16)
তোমরা তার থেকে নির্ভয় হয়ে গেলে যিনি আসমানে আছেন, আর তিনি তোমাদের সহকারে জমিনকে ধ্বসিয়ে দিবেন না?।(সূরা মূলক ৬৭: ১৬ আয়াত)।
ইবনে আব্বাস রা. এই আয়াতের তাফসীরে বলেন: তিনি হলেন আল্লাহ। (তাফসীরে ইবনুল জাওযি)।
এর দ্বারা এটা প্রমাণ হয়না যে তিনি জমিনে নেই। তিনি সর্ব শক্তিমান তিনি একসাথে সর্বত্র থাকতে সক্ষম। আর তিনি যমিনে না থাকলে আপনি সেজদা করেন কাকে? সুতরাং এটাও আপনার ক্বোরআনের অপ ব্যাখ্যা।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৬

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ৩। আল্লাহ তাআলা আরও বলেন:
يَخَافُونَ رَبَّهُمْ مِنْ فَوْقِهِمْ(النحل50)
তারা তাদের উপরস্থ রবকে ভয় করে। (সূরা নাহল,১৬: ৫০ আয়াত)।
ফা আইনামা তুয়াল্লু উযুহাকুম ফাছাম্মা অজহুল্লাহি- তুমি যে দিকে মুখ ফিরাবে সে দিকেই আল্লাহর মুখ পাবে। সুতরাং উপর দিকে তিনি থাকলে তিনি নিচের দিকে নেই। এটা প্রমাণ করা যায়না বরং আমার উপস্থাপিত আয়াত দ্বারা আপনার ক্বোরআনের অপব্যাখ্যা সাব্যস্ত।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৮

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ৪। আল্লাহ তাআলা ইসা আ. সম্বন্ধে বলেন:
بَلْ رَفَعَهُ اللَّهُ إِلَيْهِ(النساء 158)
বরং আল্লাহ তাকে তাঁর নিকটে উত্তলন করে নিয়েছেন। (সূরা নিসা, ৪: ১৫৮ আয়াত)।
আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান থাকলে তাঁর নিকট কোথায় হারায়ে যায়? আপনি কি বুঝালেন বুঝলামনা।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৭

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ৫। তিনি আরও বলেন:
وَهُوَ اللَّهُ فِي السَّمَاوَاتِ(الأنعام3)
আর তিনিই আল্লাহ যিনি আসমানে আছেন। (সূরা আনআম ৬: ৩ আয়াত)।
এ সমস্ত আয়াতের তাফসীরে ইবনে কাসীর রহ: বলেন: তাফসীরকারকগণ এ ব্যপারে একমত পোষণ করেন যে, “তারা আল্লাহ সম্বন্ধে ঐভাবে বর্ণনা করবেন না যেভাবে জাহমীয়ারা (একটি ভ্রষ্ট দল) বলে যে, আল্লাহ সর্বত্র আছেন। আল্লাহ তাআলা তাদের এ জাতীয় কথা হতে পাক পবিত্র ও অনেক ঊর্ধ্বে।”
আল্লাহ তাআলার বাণী:
وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنْتُمْ(الحديد 4)
তোমরা যেখানেই থাক না কেন, তিনি তোমাদের সাথেই আছেন। (সূরা হাদীদ, ৫৭: ৪ আয়াত)।
অত্র আয়াতের ব্যখ্যা হল; নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা আমাদের সাথে আছেন দেখার দ্বারা, শ্রবনের দ্বারা, যা বর্ণিত আছে তফসীরে জালালাইন ও ইবনে কাসীরে। এই আয়াতের পূর্বের ও শেষের অংশ এ কথারই ব্যখ্যা প্রদান করে।

প্রথম আয়াতে ইবনে কাছির ভুল তাফসির করেছেন। আল্লাহ আসমানে আছে বল্লে জমিনে নেই এটা প্রমাণ হয়না।
তোমরা যেখানেই থাকনা কেন তিনি তোমাদের সাথেই আছেন। তো আমরা আছি জমিনে আল্লাহ আমাদের সাথে জমিনে আছেন। তো এতক্ষণ আরশ আসমান এসব কথা কি বুঝাইলেন? আপনার তাফসির কারক জামাখশারী মুতাজিলা, আমরা তার তাফসির পড়ি তবে তাকে মানিনা। তাফসির কারকের বা আপনার ভুল ফতোয়া আমি মানতে বাধ্য নই।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৫১

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ৬। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সপ্তম আসমানের উপর উঠানো হয়েছিল, তাঁর রবের সাথে কথোপকথনের জন্য। আর সেখানেই পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করা হয়েছিল। (বুখারী ও মুসলিম)। তখন আল্লাহ অন্যত্র গরহাজির ছিলেন এমন প্রমাণ মিলন। বরং সর্বশক্তিমান হিসেবে তিনি তখন অন্যত্রও থাকতে সক্ষম। আল্লাহরে দেখি শেষ পর্যন্ত আপনারা মানুষ বানাইয়া ছাইড়া দিবেন!

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৪

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ৮। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন:
ارْحَمُوا مَنْ فيِ الارضِ يَرْحَمكٌمْ مَنْ في السَّمَاء (أي هو الله) (الترمذي وقال حسن صحيح)
যারা জমিনে আছে তাদের প্রতি দয়া কর, তবেই যিনি আসমানে আছেন তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। (তিরমিযী হাসান সহীহ)। তিনি আসমানে আছেন বলে জমিনে নেই ঘটনা এমন নয়। আপিনিতো ক্বোরআনের আয়াত দিলেন যাতে আছে আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন তবেতো তিনি জমিনেও আছেন। ক্বোরআন হাদীস এ ভাবে ভুল বুঝলে কি আর মুসলমান থাকা যায়?

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৭

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ৯। অন্য হাদীসে এসেছে:
سأَلَ رَسُولُ الله صلي الله عليه وسلَّمَ جَارِيَةً فَقَالَ لَهَا: أيْنَ اللهَ؟ فَقَالَتْ في السَّماءِ قَالَ مَنْ أنا؟ قَالَتْ أنْتَ رَسٌولُ اللهِ قَالَ: أعْتِقْهَا فإنَّها مُؤْمِنَةً . (مسلم)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ক্রীতদাসীকে জিজ্ঞেস করলেন: বলতো আল্লাহ কোথায়? সে বলল, আসমানে। তারপর তিনি বললেন: বলতো আমি কে? সে বলল: আপনি আল্লাহর রাসূল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, একে মুক্ত করে দাও, কারণ সে মুমিনা। (মুসলিম)।
সেই এক কথা আসমানে আছেন বলে জমিনে নেই ঘটনা এমন নয় বরং জমিনেও থাকার কথাি আপনি নিজেউ প্রমাণ করেছেন। আসলে কি জানেন? মানুষ একাধারে মিথ্যা বলতে পারেনা ঠাস করে সত্যটা বেরিয়েই পড়ে।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৯

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ১০। অন্যত্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
وَالْعَرْشُ فَوْقَ الْمَاء وَاللهُ فَوْقَ عَرْشِهِ وَهُوَ يَعْلَمُ مَا انتُمْ عَلَيْهِ. (حسن رواه أبو داود)
আরশ পানির উপর আর আল্লাহ আরশের উপর। তৎসত্তেও, তোমরা কি কর বা না কর তিনি তা জ্ঞাত আছেন। (আবু দাউদ হাসান)।
আল্লাহর এক জায়গায় থাকা মানে অন্য জায়গায় না থাকা নয়। নআয়াতুল কুরসি তার যোগ্য প্রমাণ।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:০৩

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ১১। আবু বকর রা. বলেছেন:
ومَنْ كَانَ يَعْبُدُ اللهَ فإنَّ اللهَ فيِ السماء حَيٌّ لا يمُوتُ (رواه الدارمي في الرد غلي الجهمية باسناد صحيح)
যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদত করে (সে জেনে রাখুক) নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা আসমানের উপর জীবিত আছেন, কখনোই মৃত্যুমুখে পতিত হবেন না। (সুনানে দারেমী সহীহ সনদ) জাহমীয়াদের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আমরা যারা আল্লাহকে সর্বত্র বিরাজমান মানি এমন কথা আমরাও বলি। কারণ আল্লাহর নিয়ন্ত্রণ পয়েন্ট সমূহ আসমানে। মানে আল্লাহর কার্যালয় আসমানে সে সব কার্যালয় থেকে তিনি দাপ্তরিক কার্য সমাধা করেন। বোধ ঘাটতির কারণে সেটাকেই আপনারা একমাত্র আল্লাহর থাকার জায়গা ধারণা করে বসে আছেন। কিন্তু আপনাদের ধারণা সঠিক নয়।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:০৬

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ১২। আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহ.-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আমরা কিভাবে আমাদের রব সম্বন্ধে জানতে পারব? উত্তরে তিনি বলেছেন: তিনি আসমানে আরশের উপর আছেন, সৃষ্টি হতে আলাদা হয়ে। অর্থাৎ আল্লাহ পাকের জাত আরশের উপর আছেন, সৃষ্টি থেকে আলাদা হয়ে। তার এই উপরে থাকা সৃষ্টির সাথে কোন সামঞ্জস্য নেই। আপনার এবক্তব্য আমাদের বক্তব্য প্রমাণ করে। যেখানে সেখানে আমরা সেখানে যেতে পারিনা সেহেতু তিনি সেখানে আমাদের থেকে আলাদা আছেন। আর ক্বোরআন অনুযায়ী জমিনে তিনি আমাদে সাথে আছেন।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:১১

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ১৫। যখন বাচ্চাদের প্রশ্ন করা হয়, বলত আল্লাহ কেথায়? তখন তারা তাদের স্বভাবজাত প্রবৃত্তির বশে বলে: তিনি আসমানে। মনে করিয়ে দিচ্ছি আপনার প্রদত্ত ক্বোরআনের আয়াতে আছে আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:১৩

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ১৩। চার ইমামগণই এ ব্যাপারে একমত যে, তিনি আরশের উপর আছেন, তিনি তাঁর কোন সৃষ্টির সাথে তুলনীয় নন। ইমাম আবু হানিফার মত তিনি সর্বত্র বিরাজমান। যার বিরোধীতা আহলে হাদীস করে থাকে। ইমাম আপনাগ কথা কইলে আর আপনাগ সাথে আমাগো বিরোধটা কোথায়?

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:১৫

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ১৪। মুসল্লী সিজদায় বলেন: (আমরা মহান উঁচু রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি)। দোয়া করার সময় সে তার হস্তদয়কে আসমানের দিকে উত্তলন করে। সর্বত্র কি উঁচুর বাইরে নাকি? কি বলতে কি বলে?

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:১৮

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ১৫। যখন বাচ্চাদের প্রশ্ন করা হয়, বলত আল্লাহ কেথায়? তখন তারা তাদের স্বভাবজাত প্রবৃত্তির বশে বলে: তিনি আসমানে। আসমান সংক্রান্ত এতো কথার একটাই কারণ আর তা’হলো আল্লাহর দপ্তর আরশ কার্যালয় নিয়ন্ত্রণ পয়েন্ট সব আকাশে। এটা দরা তাাঁর সর্বত্র বিকরাজমান না হওয়া প্রমাণ করেনা।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:২৩

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ১৬। সুস্থ বুদ্ধি, বিবেক, আল্লাহ যে আসমানে আছেন তা সমর্থন করে। যদি তিনি সর্বত্রই বিরাজমান হতেন তবে অবশ্যই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা জানতেন এবং সাহাবীদের শিক্ষা দিতেন। দুনিয়ার বুকে এমন অনেক নাপাক অপবিত্র জায়গা আছে যেখানে তাঁর থাকার প্রশ্নই উঠে না। নর্দমায় শিংমাছ থাকে তার ভিতরে প্রাণ থাকে যাতে কোন নাপাক লাগানো যায়না। আল্লাহ সর্বশক্তিমান শক্তির গায়ে নাপাক লাগানো যায়না। আপনি আলো ও শব্দের গায়ে নাপাক লাগতে পারবেননা। আপনার আজানের শব্দকি টয়লেটের বাইরে থাকে তাতে নাপাক লাগে কি?

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:২৭

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ১৭। যদি বলা হয়, আল্লাহ তাআলা তার জাত সহকারে আমাদের সাথে সর্বস্থানে আছেন, তবে তার জাতকে বিভক্ত করতে হয়। কারণ, সর্বত্র বলতে বহু জায়গা বুঝায়। এটাই ঠিক যে আল্লাহ তাআলার পবিত্র জাত এক ও অভিন্ন। তাকে কোন অবস্থাতেই বিভক্ত করা যায় না। তাই ঐ কথার কোন মূল্য নেই, যে তিনি সর্বত্র বিরাজমান। আর এটা প্রমাণিত যে, তিনি আসমানে আরশের উপর আছেন। তবে তিনি তাঁর শ্রবেনর, দেখার ও জ্ঞানের দ্বারা সকল বিষয় সম্পর্কে সম্যক অবহিত । আল্লাহ অসীম সর্বশক্তিমান তার স্বত্ত্বা বিভক্তির প্রশ্নই আসেনা। আয়াতুল কুরসির আয়াত দ্বারা আল্লাহর স্বীয় সত্ত্বায় সর্বত্র বিরাজমান থাকা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণীত। সুতরাং ক্বোরআন অস্বীকার করার দায়ে আপনারা কাফির।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:৩০

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: সৌদি ওহাবীরাই তবে আপনাদের মাথাটা খেয়েছে। ইসরাইলের ভয়ে যাদের ল্যাজে গোবরে অবস্থা তারা যে কোন পদের মুসলীম সেটা বলাই বাহুল্য।

৬| ০২ রা মে, ২০১৭ সকাল ৭:১৮

হাফিজ রাহমান বলেছেন: ১। আল্লাহ কোথায় এটি একটি স্পর্শকাতর প্রশ্ন। এ জাতীয় বিষয় নিয়ে কথা বলতে এবং ঘাটাঘাটি করতে পূর্বসূরি মনীষীগণ নিষেধ করেছেন। ইমাম মালেক রহ. বলেন, আল্লাহ তা‘আলার আরশে 'ইস্তিওয়া' এর বিষয়টি জ্ঞাত। তবে এর রূপরেখা, প্রকৃতি, ধরণ অজ্ঞাত। এবং এ বিষয়ে প্রশ্ন করা বিদাত। এবং এ বিষয়ে ঈমান রাখা আবশ্যক। তাবাকাতুল মুহাদ্দিসীন বি ইসবাহান২/৪৯, আলমুদাওয়ানাতুল কুবরা২/৪৯৪। সুতরাং এ বিষয়ে অযথা কথনে লিপ্ত হওয়া কাম্য নয়। আল্লাহ তা‘আলা আছেন এবং তিনি সবকিছু দেখছেন এবং তিনি আমাদের উপর ক্ষমতাবান- এগুলোই হলো আমাদের ঈমানের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। তিনি কোথায় আছেন, কোন অবস্থানে আছেন, কিভাবে আছেন- এগুলো আমাদের ঈমাদের মূল বিষয় নয়। তাই এ বিষয় নিয়ে অনর্থক বাকালাপে লিপ্ত হওয়া কিছুতেই উচিৎ নয়। আল্লাহ তা‘আলা কোথায় আছেন এটি বস্তুত আল-কুরআনের মুতাশাবিহ তথা রূপক ও দ্ব্যর্থবোধক আয়াতের অন্তর্গত একটি বিষয়। আমাদের পূর্ববর্তী বিদগ্ধ গবেষক মনীষীগণ এ ব্যাপারে অতি গবেষণা থেকে নিজেদেরকে বিরত রেখেছেন। এ জাতীয় আয়াত সম্বন্ধে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তিনিই আপনার প্রতি এ কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। তাতে কিছু আয়াত রয়েছে মুহকাম তথা সুদৃঢ় এবং সুস্পষ্ট। সেগুলোই এ কিতাবের মূল। আর অন্যগুলো হলো, মুতাশাবিহ তথা রূপক ও দ্ব্যর্থবোধক। যাদের অন্তরে সত্য-লঙ্ঘন প্রবণতা রয়েছে শুধু তারাই ফেতনা এবং ভুল ব্যাখ্যার উদ্দেশে মুতাশাবিহাতের অনুসরণ করে। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা সুগভীর জ্ঞানের অধিকারী তারা বলে, আমরা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করি। এসবই আমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আগত হয়েছে। আর বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ ব্যতীত অন্য কেউ শিক্ষা গ্রহণ করে না। সূরা আলে ইমরান ৭। সুতরাং প্রশ্নোল্লেখিত বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যায় না গিয়ে কুরআন হাদীসের কয়েকটি উদ্ধৃতি উল্লেখ করছি।
* তোমরা যেখানেই থাক না কেন তিনি তোমাদের সাথেই আছেন। সূরা হাদীদ ৪
* আমি মানুষের গ্রীবাস্থিত ধমনি অপেক্ষাও নিকটতর। সূরা ক্বাফ ১৬
* তার কুরসী আকাশ ও পৃথিবী পরিব্যাপ্ত। সূরা বাকারা ২৫৫
* পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। সুতরাং যেদিকেই তোমরা মুখ ফিরাও না কেন সেদিকই আল্লাহর দিক। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ। সূরা বাকারা ১১৫
* দয়াময় আরশে সমাসীন। সূরা তাহা ৫
* মুআবিয়া ইবনে হাকাম সুলামী রা. বলেন, আমার একটি বাদী ছিল। সে উহুদ এবং জাওয়ানিয়া এলাকার নিকটে আমার বকরীর পাল চড়াত। একদিন আমি জানতে পারলাম, আমার বকরীর পাল থেকে একটি বকরী নেকড়ে বাঘে নিয়ে গেছে। আমি একজন আদম সন্তান। তাই অন্যদের মত আমিও এ ঘটনায় দুঃখিত হলাম। তবে আমি বাদীকে একটি চড় মারলাম। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে ব্যাপারটি বললাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার এ কাজটিকে বড় অন্যায় হিসেবে দেখলেন। তখন আমি বললাম, আল্লাহর রাসূল! তবে কি আমি তাকে মুক্ত করে দিব না? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে আমার নিকট নিয়ে আসো। আমি বাদীকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে আসলাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহ কোথায়? বাদিটি বলল, আকাশে। এরপর জিজ্ঞেস করলেন, আমি কে? সে বলল, আপনি আল্লাহর রাসূল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি তাকে মুক্ত করে দাও। কারণ সে মুমিন। সহীহ মুসলিম, হাদীস ১২২৭। উপরোক্ত আয়াত ও হাদীসগুলোর প্রকৃত ব্যাখ্যা, সমন্বয় এবং সমাধান একমাত্র আল্লাহ তাআলাই ভাল জানেন। যদিও বিভিন্ন গ্রন্থে এর বিভিন্ন ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়। কিন্তু সঠিক ব্যাখ্যা একমাত্র আল্লাহই জানেন।

২। ফরিদ ভাই ! ভাষায় আরেকটু শালীনতাবোধ জাগ্রত করা হলে আরো ভাল হবে।

৩। কাউকে কাফের বলে আখ্যায়িত করা চরম স্পর্শকাতর একটি ব্যাপার। তাই এ ব্যাপারে চরম পর্যায়ের সংযমশীলতার পরিচয় দিতে হবে। হাদীসের ভাষ্য মতে কাউকে কাফের আখ্যায়িত করা হলে সে যদি বাস্তবিক অর্থে কাফের প্রমাণিত না হয় তাহলে সেটা বুমেরাং হয়ে কাফের আখ্যা দানকারী ব্যক্তিকেই আক্রান্ত করবে। অর্থাৎ আখ্যা দানকারী ব্যক্তিই কাফের বলে গণ্য হবে।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:৪০

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জবাব ৭ নং মন্তব্যে জবাবে বলা হয়েছে। তো ভাই তারা আমাদেকে মুশরিক বল্লে আমরা তাদের কাফির বল্লে ক্ষতি কি? শুধু কি আমাদেরটাই বুমেরাং হবে? তাদেরটা কি বুমেরাং হবেনা? আমি চাই উভয় পক্ষ বসুক। সরকার রেফরির ভুমিকা গ্রহণ করুক। অন্তত বাংলাদেশে সবাই হয় আহলে হাদীস নয় হানাফী হয়ে যাক। ভাই এসব ফিতনা নিয়ে শেষে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে এ জাতি এর ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেনা। করি ইবাদত ওরা বলে শির্ক ও বিদয়াত। অথচ তা’ নির্জলা মিথ্যাচার। এরপর ওরা আমাদের ইমামকে যখন আহলে রায় জয়িফ মুশরিক বলে তখন মনচায় জিদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওদেরকে জুতাপিটা করি। ভাইরে ওরা আমাদেরকে হিট করে কথা বল্লে আমরা না বলে থাকি ক্যামনে। সবারতো রক্ত মাংসের দেহ।

০৭ ই মে, ২০১৭ রাত ১২:১১

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: সম্পর্কে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আক্বীদা।
ইমাম ত্বহাবী (রহমাতুল্লাহি আ’লাই) [মৃত: ৩২১ হি:] বলেন-
.
ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻋﻦ ﺍﻟﺤﺪﻭﺩ ﻭﺍﻟﻐﺎﻳﺎﺕ ، ﻭﺍﻷﺭﻛﺎﻥ ﻭﺍﻷﻋﻀﺎﺀ
ﻭﺍﻷﺩﻭﺍﺕ ، ﻻ ﺗﺤﻮﻳﻪ ﺍﻟﺠﻬﺎﺕ ﺍﻟﺴﺖ ﻛﺴﺎﺋﺮ ﺍﻟﻤﺒﺘﺪﻋﺎﺕ
.
অর্থাৎ মহান আল্লাহ তায়ালা সব ধরনের সীমা-পরিসীমা, অঙ্গ- প্রতঙ্গ, সহায়ক বস্তু ও উপায়-উপকরণ থেকে পবিত্র। অন্যান্য সৃষ্ট বস্তুর ন্যায় ছয় দিক তাকে বেষ্টন করে না।
(অর্থাৎ আল্লাক তায়ালা সব ধরনের দিক থেকেও পবিত্র) ইমাম ত্বহাবী (রহমাতুল্লাহি আ’লাই) তার বিখ্যাত আক্বীদার কিতাব “আক্বীদাতুত ত্বহাবী” এর ভূমিকাতে
বলেছেন, এটি আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের আক্বীদা।
এটি ইমাম আবু হানিফা (রহমাতুল্লাহি আ’লাই), ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মাদ (রহমাতুল্লাহি আ’লাই) এর আক্বীদা।
তিনি এই কিতাবের শেষে লিখেছেন, এই কিতাবে যেসব আক্বীদা লেখা হয়েছে, সেগুলোই আমরা বিশ্বাস করি। এর বাইরে যতো আক্বীদা আছে, সেগুলো ভ্রষ্টতা ও গোমরহী।
ইমাম ত্বহাবী (রহমাতুল্লাহি আ’লাই) লিখেছেন-
ﻓﻬﺬﺍ ﺩﻳﻨﻨﺎ ﻭﺍﻋﺘﻘﺎﺩﻧﺎ ﻇﺎﻫﺮﺍ ﻭﺑﺎﻃﻨﺎ ، ﻭﻧﺤﻦ ﺑﺮﺍﺀ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻠﻪ . ﻣﻦ
ﻛﻞ ﻣﻦ ﺧﺎﻟﻒ ﺍﻟﺬﻱ ﺫﻛﺮﻧﺎﻩ ﻭﺑﻴﻨﺎﻩ ، ﻭﻧﺴﺄﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﺃﻥ ﻳﺜﺒﺘﻨﺎ ﻋﻠﻰ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ، ﻭﻳﺨﺘﻢ ﻟﻨﺎ ﺑﻪ ، ﻭﻳﻌﺼﻤﻨﺎ ﻣﻦ ﺍﻷﻫﻮﺍﺀ ﺍﻟﻤﺨﺘﻠﻔﺔ ، ﻭﺍﻵﺭﺍﺀ ﺍﻟﻤﺘﻔﺮﻗﺔ ، ﻭﺍﻟﻤﺬﺍﻫﺐ ﺍﻟﺮﺩﻳﺔ ، ﻣﺜﻞ ﺍﻟﻤﺸﺒﻬﺔ ﻭﺍﻟﻤﻌﺘﺰﻟﺔ ﻭﺍﻟﺠﻬﻤﻴﺔ ﻭﺍﻟﺠﺒﺮﻳﺔ ﻭﺍﻟﻘﺪﺭﻳﺔ ﻭﻏﻴﺮﻫﻢ ؛ ﻣﻦ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﺧﺎﻟﻔﻮﺍ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﻭﺍﻟﺠﻤﺎﻋﺔ ، ﻭﺣﺎﻟﻔﻮﺍ ﺍﻟﻀﻼﻟﺔ ، ﻭﻧﺤﻦ ﻣﻨﻬﻢ ﺑﺮﺍﺀ ، ﻭﻫﻢ ﻋﻨﺪﻧﺎ ﺿﻼﻝ ﻭﺃﺭﺩﻳﺎﺀ ، ﻭﺑﺎﻟﻠﻪ ﺍﻟﻌﺼﻤﺔ .
.
“ অর্থাৎ মৌখিক ও আন্তরিকভাবে এগুলোই আমাদের দ্বীন ও আক্বীদা। আমরা যেসব আক্বীদা উল্লেখ করেছি, এর বিপরীত যারা আক্বীদা পোষণ করে আমরা আল্লাহর নিকট তাদের থেকে মুক্ত। আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদেরকে ইমানের উপর অটল-অবিচল রাখেন। এরপরই আমাদের যেন মৃত্যু হয়। বিভিন্ন মতবাদ, প্রবৃত্তিপূজা, উদভ্রান্ত লোকদের অনুসরণ এবং নিকৃষ্ট দলসমুহ থেকে তিনি যেন আমাদেরকে রক্ষা করেন। যেমন, মুশাব্বিহা [যারা আল্লাহ তায়ালাকে সৃষ্টির সাথে সাদৃশ্য দেয়], মু’তাজিলা, জাহমিয়া, জাবরিয়া ও অন্যান্য ফেরকা। এরা সবাই আহলে সুন্নতের বিরোধিতা করেছে। ভ্রষ্টতা গ্রহণ করেছে। আমরা এদের থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র। আমাদের দৃষ্টিতে তারা পথভ্রষ্ট ও নিকৃষ্ট। একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই রক্ষাকর্তা।
[ আক্বীদাতুত ত্বহাবীর সর্বশেষ আলোচনা]
ইমাম আবু হানিফা রহ. তার আল-ফিকহুল আবসাতে বলেছেন-
“: ﻗﻠﺖُ : ﺃﺭﺃﻳﺖَ ﻟﻮ ﻗﻴﻞ ﺃﻳﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ؟ ﻓﻘﺎﻝ ـ ﺃﻱ ﺃﺑﻮ ﺣﻨﻴﻔﺔ ـ : ﻳﻘﺎﻝ ﻟﻪ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻭﻻ ﻣﻜﺎﻥ ﻗﺒﻞ ﺃﻥ ﻳﺨﻠﻖ ﺍﻟﺨﻠﻖ، ﻭﻛﺎﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻭﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﺃﻳﻦ ﻭﻻ ﺧَﻠْﻖ ﻭﻻ ﺷﻰﺀ، ﻭﻫﻮ ﺧﺎﻟﻖ ﻛﻞ ﺷﻰﺀ ”
অথ- যদি আপনাকে প্রশ্ন করা হয় আল্লাহ তায়ালা কোথায়?
এর উত্তরে তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে, সৃষ্টির অস্তিত্বের পূর্বে, যখন কোন স্থানই ছিলো না, তখনও আল্লাহ তায়া’লা ছিলেন। আল্লাহ তায়া’লা তখনও ছিলেন যখন কোন সৃষ্টি ছিলো না, এমনকি ‘কোথায়’ বলার মতো স্থানও ছিলো না। সৃষ্টির একটি পরমাণুও যখন ছিলো না তখনও আল্লাহ তায়ালা ছিলেন। তিনিই সব কিছুর সৃষ্টা”
.
[আল-ফিকহুল আবসাত, পৃ.২০]।
ইমাম শাফেয়ী [মৃত: ২০৪ হি:] রহ. বলেন-
“ ﺇﻧﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻛﺎﻥ ﻭﻻ ﻣﻜﺎﻥ ﻓﺨﻠﻖ ﺍﻟﻤﻜﺎﻥ ﻭﻫﻮ ﻋﻠﻰ ﺻﻔﺔ ﺍﻷﺯﻟﻴﺔ ﻛﻤﺎ ﻛﺎﻥ ﻗﺒﻞ ﺧﻠﻘﻪ ﺍﻟﻤﻜﺎﻥ ﻻ ﻳﺠﻮﺯ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺘﻐﻴﻴﺮ ﻓﻲ ﺫﺍﺗﻪ ﻭﻻ ﺍﻟﺘﺒﺪﻳﻞ ﻓﻲ ﺻﻔﺎﺗﻪ ”
অর্থাৎ যখন কোন স্থান ছিল না তখনও আল্লাহ তায়ালা ছিলেন। এরপর আল্লাহ তায়ালা স্থান সৃষ্টি করেন। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তার অনাদি গুনেই গুণান্বিত রয়েছেন, যেমন স্থান সৃষ্টির পূর্বে ছিলেন। আল্লাহ তায়ালার সত্ত্বায় কোন পরিবর্তন হয় না, তার কোন গুণেও কোন পরিবর্তন বৈধ নয়।
[ ইতহাফুস সাদাতিল মুত্তাকিন, খ.২, পৃ.২৪]
আল্লাহর আকার নেই । তিনি এইসব গুন থেকে মুত্ত ও পবিত্র । অনেকে কোরআনের কিছু আয়াতের বাহ্যিক অর্থ নিয়ে বলে আল্লাহর আকার যেমন চোখ হাত পা আছে প্রমান করতে চায় (নাউজুবিল্লাহ) অথচ . ‘‘আল্লাহকে যারা আকার বিশিষ্ট দাবী করে,
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহ.) তাদের কথা অস্বীকার,
বিরোধিতা এবং প্রতিবাদ করে বলেন:
কারণ নাম তো শরীআ ও ভাষার ব্যবহার থেকে
গ্রহণ করতে হবে।
ভাষার ব্যবহারে দেহ বলতেই গণ্ডি, সীমা, দৈর্ঘ,
সংযোজন ইত্যাদির সমাহারকে বুঝানো হয়।
আল্লাহ এসব কিছুর উর্ধ্বে। সুতরাং মহান আল্লাহ’র দেহ আছে বা তিনি দেহ বিশিষ্ট এরকম কথা বাতিল।’’
. [আল আকীদাহ, ইমাম আহমাদ; রেওয়ায়াতঃ আবূ বকর খাল্লাল। পৃ. ১১১; শামেলা]
অনেক নির্বোধ একথা মনে করে থাকে, আল্লাহ তায়ালাকে স্থান ও দিক থেকে পবিত্র বিশ্বাস করলে তো আল্লাহ কোথাও নেই এটা বলা হয়। এর দ্বারা আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্বই না কি অস্বীকার করা হয়। এই নির্বোধকে জিজ্ঞাসা করা হবে, যখন কোন স্থান বা দিকই ছিলো না, তখন আল্লাহ কোথায় ছিলেন? সে যদি এটা বিশ্বাস না করে যে, আল্লাহ তায়ালা স্থান ও দিক সৃষ্টির পূর্বে ছিলেন, তাহলে সে নিশ্চিত কাফের হয়ে যাবে। কোন সৃষ্টির অস্তিত্বের পূর্বে আল্লাহর অবস্থানের জন্য যখন কোন স্থানের প্রয়োজন হয়নি, তাহলে এখন কেন আল্লাহ তায়ালাকে স্থানের অনুগামী বানানো হবে?
আর আল্লাহ তায়ালা স্থান থেকে পবিত্র একথা বললে আল্লাহর অস্তিত্বই অস্বীকার করা হবে?
এসব নির্বোধের হেদায়াতের জন্য বিখ্যাত তাবেয়ী ইমাম আবু হানিফা (রহমাতুল্লাহি আ’লাই) তার ছোট্ট একটি বক্তব্য দিয়েছেনঃ
“ ﻭﻟﻘﺎﺀ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻷﻫﻞ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﺑﻼ ﻛﻴﻒ ﻭﻻ ﺗﺸﺒﻴﻪ ﻭﻻ ﺟﻬﺔٍ ﺣﻖٌّ
” অর্থ- জান্নাতবাসীর জন্য কোন সাদৃশ্য, অবস্থা ও দিক ব্যতীত আল্লাহ তায়ালার দর্শন সত্য।
.
[কিতাবুল ওসিয়্যা, পৃ.৪, শরহে ফিকহুল আকবার, মোল্লা আলী কারী, পৃ.১৩৮]
ইমাম ইবনে জারীর তবারী (রহমাতুল্লাহি আ’লাই) (মৃত: ৩১০ হি) বলেন-
.
“ ﻓﺘﺒﻴَّﻦ ﺇﺫًﺍ ﺃﻥ ﺍﻟﻘﺪﻳﻢ ﺑﺎﺭﻯﺀ ﺍﻷﺷﻴﺎﺀ ﻭﺻﺎﻧﻌﻬﺎ ﻫﻮ ﺍﻟﻮﺍﺣﺪ ﺍﻟﺬﻱ ﻛﺎﻥ ﻗﺒﻞ ﻛﻞ ﺷﻰﺀ، ﻭﻫﻮ ﺍﻟﻜﺎﺋﻦ ﺑﻌﺪ ﻛﻞّ ﺷﻰﺀ، ﻭﺍﻷﻭﻝ ﻗﺒﻞ ﻛﻞ ﺷﻰﺀ، ﻭﺍﻵﺧﺮ ﺑﻌﺪ ﻛﻞ ﺷﻰﺀ، ﻭﺃﻧﻪ ﻛﺎﻥ ﻭﻻ ﻭﻗﺖ ﻭﻻ ﺯﻣﺎﻥ ﻭﻻ ﻟﻴﻞ ﻭﻻ ﻧﻬﺎﺭ، ﻭﻻ ﻇﻠﻤﺔ ﻭﻻ ﻧﻮﺭ ﻭﻻ ﺳﻤﺎﺀ ﻭﻻ ﺃﺭﺽ ﻭﻻ ﺷﻤﺲ ﻭﻻ ﻗﻤﺮ ﻭﻻ ﻧﺠﻮﻡ، ﻭﺃﻥ ﻛﻞ ﺷﻰﺀ ﺳﻮﺍﻩ ﻣﺤﺪَﺙ ﻣﺪﺑَّﺮ ﻣﺼﻨﻮﻉ، ﺍﻧﻔﺮﺩ ﺑﺨﻠﻖ ﺟﻤﻴﻌﻪ ﺑﻐﻴﺮ ﺷﺮﻳﻚ ﻭﻻ ﻣُﻌﻴﻦ ﻭﻻ ﻇﻬﻴﺮ، ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﻣِﻦْ ﻗﺎﺩﺭ ﻗﺎﻫﺮ
.
” অর্থ- স্পষ্টত: কাদীম বা অনাদী সত্ত্বা একমাত্র আল্লাহ তায়ালা, তিনিই সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। তিনিই সব কিছুর অস্তিত্বের পূর্বে ছিলেন। তিনিই সব কিছু ধ্বংসের পরেও থাকবেন। তিনিই সবকিছুর পূর্বে, তিনিই সবকিছুর পরে। তিনি তখনও ছিলেন যখন কোন সময় ছিলো না। রাত দিন, আলো-আধার, আসমান-জমিন, চন্দ্র-সূর্য, তারকারাজি কিছুই ছিলো না। আল্লাহ তায়ালা ছাড়া সবকিছুই আল্লাহর সৃষ্টি, তার নিয়ন্ত্রণাধীন। কোন অংশীদার, সাহায্যকারী বা সহযোগী ছাড়া তিনি একাই সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। মহান ক্ষমতাধর ও কর্তৃত্বপরায়ণ সব সৃষ্টি থেকে পবিত্র” [তারীখে তবারী, খ.১, পৃ.৩০]
মুসলিম শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ “শরহে মুসলিম” কিতাবের ১ম খণ্ডের ৯৯ নং পৃষ্ঠায় আল্লামা ইমাম নবভী (রহঃ) উম্মতের ইজমাহ উল্লেখ করে লিখেছেন যে,
ﻭﻣﻦ ﺍﻟﻤﺴﺘﺤﻴﻞ ﺍﻥ ﺗﻜﻮﻥ ﺫﺍﺕ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻨﻮﺭ . ﺍﺫﺍ ﺍﻟﻨﻮﺭ ﻣﻦ ﺟﻤﻠﺔ ﺍﻻﺟﺴﺎﻡ . ﻭﺍﻟﻠﻪ ﻳﺠﻞ ﻋﻦ ﺫﺍﻟﻚ . ﻫﺬﺍ ﻣﺬﻫﺐ ﺟﻤﻴﻊ ﺍﺋﻤﺔ ﺍﻟﻤﺴﻠﻤﻴﻦ .
অনুবাদ, “আল্লাহ তায়ালার জাত বা সত্তা নূরের বলা যাবেনা। কারণ নূরেরও আকৃতি রয়েছে। অথচ আল্লাহপাক দেহ বা আকার- আকৃতির গণ্ডী থেকে উর্ধ্বে। এটাই মুসলিম উম্মাহার সকল উম্মতের মাযহাব।”
.
হযরত আলী (রাদ্বীআল্লাহু আনহু) বলেন- “
.
. ﻣﻦ ﺯﻋﻢ ﺃﻥ ﺇﻟﻬﻨﺎ ﻣﺤﺪﻭﺩ ﻓﻘﺪ ﺟﻬﻞ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ ﺍﻟﻤﻌﺒﻮﺩ ”
.
অর্থ: যে বিশ্বাস করলো যে আল্লাহ তায়ালা সসীম, সে আমাদের মা’বুদ আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞ” [ হিলয়াতুল আউলিয়া, খ.১, পৃ.৭৩]
হযরত আলী (রাদ্বীআল্লাহু আনহু) আরও বলেন-
“ ﻛﺎﻥ ـ ﺍﻟﻠﻪ ـ ﻭﻻ ﻣﻜﺎﻥ، ﻭﻫﻮ ﺍﻵﻥ ﻋﻠﻰ ﻣﺎ ـ ﻋﻠﻴﻪ ـ ﻛﺎﻥ
.
” অর্থ: যখন কোন স্থান ছিলো না, তখনও আল্লাহ তায়ালা ছিলেন। তিনি এখনও স্থান থেকে পবিত্র অবস্থায় আছেন।
.
[আল-ফারকু বাইনাল ফিরাক, আবু মনসুর বাগদাদী, পৃ.৩৩৩]
.
হযরত আলী (রাদ্বীআল্লাহু আনহু) আরও বলেন-
“ ﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﺧﻠﻖ ﺍﻟﻌﺮﺵ ﺇﻇﻬﺎﺭًﺍ ﻟﻘﺪﺭﺗﻪ ﻻ ﻣﻜﺎﻧًﺎ ﻟﺬﺍﺗﻪ
” অর্থ: আল্লাহ তায়ালা নিজের কুদরত প্রকাশের জন্য আরশ সৃষ্টি করেছেন, নিজ সত্ত্বার স্থান হিসেবে নয়।”
.
[আল-ফারকু বাইনাল ফিরাক, আবু মনসুর বাগদাদী, পৃ.৩৩৩]
.
বিখ্যাত তাবেয়ী ইমাম যাইনুল আবেদীন (রহমাতুল্লাহি আ’লাই) [মৃত: ৯৪ হি:] বলেন- “
ﺃﻧﺖ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺬﻱ ﻻ ﻳَﺤﻮﻳﻚ ﻣﻜﺎﻥ ”
অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি সেই সত্ত্বা, কোন স্থান যাকে পরিবেষ্টন করতে পারে না।
.
[ইতহাফুস সাদাতিল মুত্তাকিন, আল্লামা মোর্তজা জাবিদী, খ.৪, পৃ.৩৮০]
.
তিনি আরও বলেন-
“ ﺃﻧﺖ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺬﻱ ﻻ ﺗُﺤَﺪُّ ﻓﺘﻜﻮﻥَ ﻣﺤﺪﻭﺩًﺍ
” অর্থ: আপনি সেই সত্ত্বা যার কোন হদ বা সীমা নেই। সীমা থাকলে তো আপনি সসীম হয়ে যাবেন।
.
[ইতহাফুস সাদাতিল মুত্তাকিন, খ.৪, পৃ.৩৮০]
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে হেফাজত করুন। সেই সাথে আল্লাহ পাক সবাইকে সহীহ্ আকিদা তথা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকিদা গ্রহণের তৌফিক দান করুন। আমীন।

০৭ ই মে, ২০১৭ রাত ১২:১৫

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আল্লাহ তাআলা কোথায় আছেন? একটি বিদআতি আলোচনা!

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

#আমাদের_কৈফিয়ত

এ বিষয় নিয়ে লেখার কোন ইচ্ছেই আমাদের নেই। বাধ্য হয়ে লিখতে হচ্ছে। আল্লাহ তাআলা ভুলত্রুটি ক্ষমা করুন।

এটি খুবই সঙ্গীন বিষয়। এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে পূর্ববর্তী মনীষীগণ নিষেধ করেছেন। বলা যায় এটি একটি বিদআতি আলোচনা। এ বিষয়ে কথা বলা বিদআত। এমনটিই আমরা পূর্ববর্তী মুহাক্কিক আলেমগণ থেকে দেখতে পাই।

হযরত ইমাম মালিক রহঃ বলেন,

الاستواء معلوم والكيفية مجهولة، والسؤال عنه بدعة، والايمان به واجب،

“আল্লাহ তাআলার আরশে ইস্তিওয়া এর বিষয়টি জানা যায়, কিন্তু অবস্থা অজানা। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা বিদআত। আর এ বিষয়ে ঈমান রাখা ওয়াজিব”।

এজন্য এ বিষয়ে অযথা কথনে লিপ্ত হওয়া কিছুতেই কাম্য নয়। আমরাও এ বিষয়ে কোন কথা বলতে চাচ্ছিলাম না। যেহেতু এটি খুবই সঙ্গীন একটি বিষয়। আর আল্লাহ তাআলা আছেন, তিনি সব কিছু দেখছেন, তিনি আমাদের উপর ক্ষমতাশীল এসব আমাদের মূল ঈমানের বিষয়। তিনি কোন অবস্থায় আছেন? এসব আমাদের ঈমানের মূল বিষয় নয়। তাই এটি নিয়ে অযথা ক্যাচালে লিপ্ত হওয়া কিছুতেই উচিত কাজ নয়। খুবই গর্হিত কাজ।

কিন্তু কুরআনের মুতাশাবিহ তথা অস্পষ্ট আয়াত নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করা এসবকে মূল প্রাতিপাদ্য বিষয় বানানো এক শ্রেণীর ফিতনাবাজদের মূল মিশন তা আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনেই জানিয়ে দিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে-

هُوَ الَّذِي أَنزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَاتٌ مُّحْكَمَاتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتَابِ وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ ۖ فَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَاءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَاءَ تَأْوِيلِهِ ۗ وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُ إِلَّا اللَّهُ ۗ وَالرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ يَقُولُونَ آمَنَّا بِهِ كُلٌّ مِّنْ عِندِ رَبِّنَا ۗ وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّا أُولُو الْأَلْبَابِ [٣:٧]

তিনিই আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন। তাতে কিছু আয়াত রয়েছে সুস্পষ্ট,সেগুলোই কিতাবের আসল অংশ। আর অন্যগুলো রূপক। সুতরাং যাদের অন্তরে কুটিলতা রয়েছে,তারা অনুসরণ করে ফিৎনা বিস্তার এবং অপব্যাখ্যার উদ্দেশে তন্মধ্যেকার রূপকগুলোর। আর সেগুলোর ব্যাখ্যা আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না। আর যারা জ্ঞানে সুগভীর, তারা বলেনঃ আমরা এর প্রতি ঈমান এনেছি। এই সবই আমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। আর বোধশক্তি সম্পন্নেরা ছাড়া অপর কেউ শিক্ষা গ্রহণ করে না। {সূরা আলে ইমরান-৭}

আল্লাহ তাআলা কোথায় আছেন? এটি কুরআনের একটি মুতাশাবিহাত তথা রূপক শব্দের অন্তর্ভূক্ত। তাই আমাদের পূর্ববর্তী মুহাক্কিকগণ এটির ব্যাপারে অতি গবেষণা থেকে নিজেদের বিরত রেখেছেন। কিন্তু যাদের মনে কূটিলতা আছে তারা ফিতনা বিস্তারের জন্য এসবকেই প্রচারণার মূল টার্গেট বানিয়ে কাজ করে যায়।

সেই কূটিল সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত প্রচলিত বিদআতি ফিরক্বা কথিত আহলে হাদীস। যাদের কাজই হল মুতাশাবিহ এবং মতভেদপূর্ণ বিষয়কে মানুষের সামনে তুলে ধরে ফিতনা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা।

যেহেতু একের পর এক মেইল আমাদের কাছে আসছে এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য। তাই বাধ্য হয়ে এ বিষয়ে কলম ধরলাম। আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল। আমাদের ভুলগুলো ক্ষমা করে দিয়ে তার প্রিয়ভাজন হবার পথে অগ্রসর হবার তৌফিক দান করুন। আমীন।

আল্লাহ তায়ালা সর্বত্র বিরাজমান

কথিত আহলে হাদীস সম্প্রদায় প্রচার করে থাকে, আল্লাহ তায়ালা সর্বত্র বিরাজমান নয়। তারা দলিল হিসেবে পেশ করে থাকে সূরা হাদীদের ৩ নং আয়াত। যেখানে ঘোষিত হয়েছে আল্লাহ তায়ালা আরশে সমাসিন। ওরা কিছু আয়াত দিয়ে আরো অসংখ্য আয়াতকে অস্বীকার করে নাউজুবিল্লাহ। যেই সকল আয়াত দ্বারা বুঝা যায় আল্লাহ তায়ালা আরশসহ সর্বত্র বিরাজমান।
কিছু আয়াতকে মানতে গিয়ে আরো ১০/১২টি আয়াত অস্বীকার করার মত দুঃসাহস আসলে কথিত আহলে হাদীস নামী ফিতনাবাজ বাতিল ফিরক্বাদেরই মানায়।
অসংখ্য আয়াতে কারীমাকে অস্বীকার করে আল্লাহ তায়ালাকে কেবল আরশে সীমাবদ্ধ করার মত দুঃসাহস ওরা দেখাতে পারলেও আমরা পারি না। আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহ তাআলার কুরসী আসমান জমিন সব কিছুকে পরিবেষ্টন করে রেখেছে। তিনি স্থান কাল থেকে পবিত্র। আল্লাহর গোটা রাজত্বের সর্বত্র তিনি রয়েছেন।

আল্লাহ তাআলা আরশে রয়েছেন একথা আমরা অস্বীকার করি না। তিনি আরশে রয়েছেন। তিনি এছাড়াও সর্বত্র রয়েছেন। তাহলে আমরা সকল আয়াতকেই মানি। আর ওরা শুধু আরশ সংশ্লিষ্ট কিছু আয়াত মানে, বাকিগুলোকে অস্বীকার করে।

কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকা দেহধারী সত্তার বৈশিষ্ট। আল্লাহ তায়ালার মত নিরাকার সত্তার জন্য এটা শোভা পায় না। এই আহলে হাদীস বাতিল ফিরক্বাটি এতটাই বেয়াদব যে, আল্লাহ তায়ালার দেহ আছে বলে বিশ্বাস করে। দেহ থাকাতো সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য। সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী সকল সৃষ্টির স্রষ্টার জন্য দেহ সাব্যস্ত করা এক প্রকার সুস্পষ্ট শিরক। এই শিরকী আক্বিদা প্রচার করছে ইংরেজ সৃষ্ট কথিত আহলে হাদীস সম্প্রদায়। আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই ভয়াবহ মারাত্মক বাতিল ফিরক্বার হাত থেকে আমাদের দেশের সরলমনা মুসলমানদের হিফাযত করুন। বক্ষমান প্রবন্ধে আল্লাহ তায়ালা সর্বত্র বিরাজমান নিয়ে একটি দলিল ভিত্তিক আলোচনা উপস্থাপন করা হল। পরবর্তী প্রবন্ধে আল্লাহ তায়ালা যে দেহ থেকে পবিত্র, আল্লাহ তায়ালার দেহ সাব্যস্ত করা সুস্পষ্ট শিরকী, এই ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা প্রকাশ করা হবে ইনশাআল্লাহ।

১-

ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ
অতঃপর তিনি আরশের উপর ক্ষমতাশীল হোন। {সূরা হাদীদ-৩}

২-

قوله تعالى {وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ}
Page: 11

আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে বস্তুতঃ আমি রয়েছি সন্নিকটে। যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করে নেই, যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে। {সূরা বাকারা-১৮৬}

৩-

قوله تعالى {وَنَحنُ أَقرَبُ إِلَيهِ مِن حَبلِ الوَرِيدِ} [ق 16]
আর আমি বান্দার গলদেশের শিরার চেয়েও বেশি নিকটবর্তী।{সূরা কাফ-১৬}

৪-

فَلَوْلا إِذَا بَلَغَتِ الْحُلْقُومَ (83) وَأَنْتُمْ حِينَئِذٍ تَنْظُرُونَ (84) وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْكُمْ وَلَكِنْ لا تُبْصِرُونَ (85)
অতঃপর এমন কেন হয়না যে, যখন প্রাণ উষ্ঠাগত হয়। এবং তোমরা তাকিয়ে থাক। এবং তোমাদের চেয়ে আমিই তার বেশি কাছে থাকি। কিন্তু তোমরা দেখতে পাওনা।{সূরা ওয়াকিয়া-৮৩,৮৪,৮৫}

৫-

{ وَللَّهِ الْمَشْرِقُ وَالْمَغْرِبُ فَأَيْنَمَا تُوَلُّواْ فَثَمَّ وَجْهُ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ وَاسِعٌ عَلِيمٌ } [البقرة-115]
পূর্ব এবং পশ্চিম আল্লাহ তায়ালারই। সুতরাং যেদিকেই মুখ ফিরাও,সেদিকেই রয়েছেন আল্লাহ তায়ালা। নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা সর্বব্যাপী সর্বজ্ঞাত {সূরা বাকারা-১১৫}

৬-

قوله تعالى { وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَمَا كُنتُمْ } [ الحديد – 4 ]
তোমরা যেখানেই থাক না কেন, তিনি তোমাদের সাথে আছেন {সূরা হাদীদ-৪}

৭-

وقال تعالى عن نبيه : ( إِذْ يَقُولُ لِصَاحِبِهِ لا تَحْزَنْ إِنَّ اللَّهَ مَعَنَا (التوبة من الآية40
যখন তিনি তার সাথীকে বললেন-ভয় পেয়োনা, নিশ্চয় আমাদের সাথে আল্লাহ আছেন {সূরা হাদীদ-৪০}

৮-

قوله تعالى مَا يَكُونُ مِن نَّجْوَى ثَلاثَةٍ إِلاَّ هُوَ رَابِعُهُمْ وَلا خَمْسَةٍ إِلاَّ هُوَ سَادِسُهُمْ وَلا أَدْنَى مِن ذَلِكَ وَلا أَكْثَرَ إِلاَّ هُوَ مَعَهُمْ أَيْنَ مَا كَانُوا ثُمَّ يُنَبِّئُهُم بِمَا عَمِلُوا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّ اللَّهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ ( المجادلة – 7
কখনো তিন জনের মাঝে এমন কোন কথা হয়না যাতে চতুর্থ জন হিসেবে তিনি উপস্থিত না থাকেন, এবং কখনও পাঁচ জনের মধ্যে এমন কোনও গোপন কথা হয় না, যাতে ষষ্ঠজন হিসেবে তিনি উপস্থিত না থাকেন। এমনিভাবে তারা এর চেয়ে কম হোক বা বেশি, তারা যেখানেই থাকুক, আল্লাহ তাদের সঙ্গে থাকেন। অতঃপর কিয়ামতের দিন তিনি তাদেরকে অবহিত করবেন তারা যা কিছু করত। নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছু জানেন {সূরা মুজাদালা-৭}

৯-

وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ
আল্লাহ তায়ালার কুরসী আসমান জমিন ব্যাপৃত {সূরা বাকারা-২৫৫}

একটি মৌলিক প্রশ্ন

প্রথমে একটি বিষয় সুনির্দিষ্ট করে নিতে হবে। সেটা হল, আল্লাহ তাআলার সর্বত্র বিরাজমানতার আয়াতগুলোকে ব্যাখ্যাসহ মানা হবে? না শুধু শাব্দিক অর্থের উপর রাখা হবে?

দুই পদ্ধতির যে কোন একটি পদ্ধতি অবশ্যই অবলম্বন করতে হবে। যদি ব্যাখ্যাসহ মানা হয়, তাহলে সকল আয়াতের ব্যাখ্যাই করতে হবে। এক আয়াতের ব্যাখ্যা আর অন্য আয়াতের শুধু শাব্দিক অর্থ নেয়া যাবে না। আর যদি শুধু শাব্দিক অর্থই গ্রহণ করা হয়, ব্যাখ্যা ছাড়া। তাহলে এ সম্পর্কীয় সকল আয়াতকেই তার শাব্দিক অর্থের উপর রাখতে হবে। কোনটারই ব্যাখ্যা করা যাবে না।

সেই হিসেবে যদি ব্যাখ্যা নেয়া হয়, তাহলে সব আয়াতের ব্যাখ্যা নিতে হবে। তাই ,

আর আমি বান্দার গলদেশের শিরার চেয়েও বেশি নিকটবর্তী। {সূরা কাফ-১৬}

তোমরা যেখানেই থাক না কেন, তিনি তোমাদের সাথে আছেন {সূরা হাদীদ-৪}

ইত্যাদি আয়াতের ব্যাখ্যায় যেমন কথিত আহলে হাদীস ভাইয়েরা বলে থাকেন যে, এর মানে হল আল্লাহ তাআলা ইলম ও ক্ষমতা হিসেবে সবার সাথে আছেন। ঠিকই একই ব্যাখ্যা নিতে হবে ,

অতঃপর তিনি আরশে সমাসিন হন [কর্তৃত্বশীল হোন] {সূরা হাদীদ-৩}

এ আয়াতের। অর্থাৎ তখন আমরা বলবো, এ আয়াতের ব্যাখ্যা হল আল্লাহ তাআলা ইলম ও ক্ষমতা হিসেবে আরসে সমাসিন।

আর যদি বলা হয়, না আয়াতের শাব্দিক অর্থ গৃহিত হবে। কোন ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ গ্রহণযোগ্য হবে না। তাহলে ,

অতঃপর তিনি আরশে সমাসিন হন [কর্তৃত্বশীল হোন] {সূরা হাদীদ-৩}

এ আয়াতের শাব্দিক অর্থ হিসেবে যেমন আমরা বলি আল্লাহ তাআলা আরশে। ঠিক একইভাবে ,

আর আমি বান্দার গলদেশের শিরার চেয়েও বেশি নিকটবর্তী। {সূরা কাফ-১৬}

তোমরা যেখানেই থাক না কেন, তিনি তোমাদের সাথে আছেন {সূরা হাদীদ-৪}

ইত্যাদি আয়াতের শাব্দিক অর্থ হিসেবে বলতে হবে যে, আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন। সর্বত্র আছেন। কোন ব্যাখ্যা করা যাবে না। যেমন সূরা হাদীদের ৩ নং আয়াতের কোন ব্যাখ্যা করা হচ্ছে না।

আশা করি এ মূলনীতি অনুসরণ করলে আর কোন সমস্যা থাকার কথা নয়। এক আয়াতের ব্যাখ্যা আরেক আয়াতের শাব্দিক অর্থ মনগড়াভাবে করলে তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান হলে আকাশের দিকে কেন হাত উঠিয়ে দুআ করা হয়?

আদবের জন্য। যদিও আল্লাহ তায়ালা সর্বত্র বিরাজমান। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার শান হল উঁচু, তাই আদব হিসেবে উপরের দিকে হাত উঠিয়ে দুআ করা হয়।
যেমন কোন ক্লাসরুমে যদি লাউডস্পীকার ফিট করা হয়। চারিদিক থেকে সেই স্পীকার থেকে শিক্ষকের আওয়াজ আসে। তবুও যদি কোন ছাত্র শিক্ষকের দিকে মুখ না করে অন্যত্র মুখ করে কথা শুনে তাহলে শিক্ষক তাকে ধমক দিবেন। কারণ এটা আদবের খেলাফ। এই জন্য নয় যে, অন্য দিক থেকে আওয়াজ শুনা যায় না। তেমনি আল্লাহ তায়ালা সর্বত্র বিরাজমান থাকা সত্বেও উপরের দিকে মুখ করে দুআ করা হয় আল্লাহ তায়ালা উচু সর্বশ্রেষ্ঠ। তাই আদব হিসেবে উপরের দিকে হাত তুলে দুআ করা হয়।

জিবরাঈল উপর থেকে নিচে নেমে আসেন মানে কি?

এর মানে হল-যেমন পুলিশ এসে কোন অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে কারণ বলে যে, উপরের নির্দেশ। এর মানে কি পুলিশ অফিসার উপরে থাকে? না সম্মান ও ক্ষমতার দিক থেকে যিনি উপরে তার নির্দেশ তাই বলা হয় উপরের নির্দেশ? তেমনি আল্লাহ তায়ালা ফরমান নিয়ে যখন জিবরাঈল আসেন একে যদি বলা হয় উপর থেকে এসেছেন, এর মানেও সম্মানসূচক ও পরাক্রমশালীর কাছ থেকে এসেছেন। তাই বলা হয় উপর থেকে এসেছেন। এই জন্য নয় যে, আল্লাহ তায়ালা কেবল আরশেই থাকেন।

আল্লাহ তায়ালা কি সকল নোংরা স্থানেও আছেন? নাউজুবিল্লাহ্

এই উদ্ভট যুক্তি যারা দেয় সেই আহাম্মকদের জিজ্ঞেস করুন, তার ক্বলবে কি দু’একটি কুরাআনের আয়াত কি সংরক্ষিত আছে? যদি বলে, 'আছে' তাহলে বলুন তার মানে সীনায় কুরআনে কারীম বিদ্যমান আছে। কারণ সংরক্ষিত সেই বস্তুই থাকে, যেটা বিদ্যমান থাকে, অবিদ্যমান বস্তু সংরক্ষণ সম্ভব নয়। তো সীনায় যদি কুরআন বিদ্যমান থাকে, সেটা নিয়ে টয়লেটে যাওয়া কিভাবে জায়েজ? কুরআন নিয়েতো টয়লেটে যাওয়া জায়েজ নয়। তখন ওদের আকল থাকলে বলবে-কুরআন বিদ্যমান, কিন্তু দেহ থেকে পবিত্র কুরআন। তেমনি আমরা বলি আল্লাহ তায়ালা সর্বত্র বিরাজমান। কিন্তু তিনি দেহ থেকে পবিত্র। সেই হিসেবে সর্বত্র বিরাজমান। সুতরাং কুরআন যেমন সীনায় থাকায় সত্বেও টয়লেটে যেতে কোন সমস্যা নেই। কুরআনে কারীমের বেইজ্জতী হয়না, সীনায় সংরক্ষিত কুরআনের দেহ না থাকার কারণে, তেমনি আল্লাহ তায়ালার দেহ না থাকার কারণে অপবিত্র স্থানে বিদ্যমান থাকাটাও কোন বেইজ্জতীর বিষয় নয়।

স্ববিরোধী বক্তব্য

কথিত আহলে হাদীস নামধারী আখতারুজ্জামান মুহাম্মদ সুলাইমান নামক এক ভাই একটি প্রবন্ধ লিখেছেন “আল্লাহ তাআলা কোথায় আছেন” নামে।
উক্ত প্রবন্ধটির শুরুতে লেখক বলেন-
“কোরআন ও সহিহ হাদীসে আল্লাহ তাআলার যে সমস্ত সিফাতের কথা বলা হয়েছে তার উপর ঈমান আনা ওয়াজিব। তাঁর সিফাতসমূহের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করা, অথবা তার কিছু সিফাতকে যেভাবে আছে সেভাবেই স্বীকার করা আর কিছুকে পরিবর্তন করে বিশ্বাস করা কিছুতেই জায়েয হবে না”।

তিনি দাবি করছেন, কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কোন সিফাত যেভাবে বর্ণিত হুবহু সেই অবস্থায় বিশ্বাস করতে হবে, পরিবর্তন করে ব্যাখ্যা করা যাবে না।
কিন্তু আফসোস ও হাস্যকর বিষয় হল তিনি নিজেই প্রবন্ধের শেষ দিকে আল্লাহ তাআলার সর্বত্র বিরাজমানতার স্পষ্ট প্রমাণবাহী আয়াতকে মূল অর্থ পাল্টে মনগড়া ব্যাখ্যার আশ্রয় নিয়ে বলেন-
“আল্লাহ তাআলার বাণী:
وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنْتُمْ(الحديد 4)
তোমরা যেখানেই থাক না কেন, তিনি তোমাদের সাথেই আছেন। (সূরা হাদীদ, ৫৭: ৪ আয়াত)।
অত্র আয়াতের ব্যাখ্যা হল; নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা আমাদের সাথে আছেন দেখার দ্বারা, শ্রবনের দ্বারা, যা বর্ণিত আছে তফসীরে জালালাইন ও ইবনে কাসীরে। এই আয়াতের পূর্বের ও শেষের অংশ এ কথারই ব্যখ্যা প্রদান করে”।

বিজ্ঞ পাঠকগণ! লক্ষ্য করুন! আয়াতে স্পষ্ট বলা হচ্ছে যে, আমরা যেখানেই থাকি না কেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সাথেই আছেন, যার স্পষ্ট অর্থ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সর্বত্র রয়েছেন।

কিন্তু এ স্পষ্ট অর্থবোধক আয়াতকে ব্যাখ্যা ছাড়া হুবহু বিশ্বাস না করে পাল্টে তিনি ব্যাখ্যা দাঁড় করালেন যে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সর্বত্র বিরাজমান নন, বরং দেখা ও শ্রবণ শক্তি রয়েছে সর্বত্র।
“দেখা ও শ্রবণ দ্বারা বিরাজমান” ব্যাখ্যা করার দ্বারা তিনি তার নিজের ফাতওয়া অনুযায়ীই নাজায়েজ কাজটি করেছেন। তাই নয়কি?
কারণ তিনিইতো আগে বললেন যে, আল্লাহর সিফাত সম্বলিত আয়াত বা হাদীসকে হুবহু বিশ্বাস করতে হবে, ব্যাখ্যা করা জায়েজ নেই। অথচ তিনি নিজেই স্ববিরোধী হয়ে সূরা হাদীদের ৪নং আয়াতকে “দেখা ও শ্রবণ দ্বারা বিরাজমান” শব্দে ব্যাখ্যা করে নাজায়েজ কাজ করলেন।

আল্লাহ তাআলা শুধুই আসমানে আছেন বলাটা আল্লাহ তাআলার বড়ত্বকে খাটো করা

আমরা জানি, কোন বস্তু যখন অন্য বস্তুর উপর থাকে, তখন যে বস্তুর উপর বস্তুটি রাখা হয়, তা বড় থাকে, আর যা রাখা হয় তা হয় ছোট। যেমনঃ যদি বলা হয় যে, কলমটি টেবিলের উপর আছে, তখন বুঝতে হবে যে, টেবিলটি বড় আর কলমটি ছোট, কারণ কলম বড় হলে কলমটি টেবিলের উপর থাকতে পারে না।
এটাই মুহীত ও মুহাতের পার্থক্য। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুহীত তথা সর্ব কিছুকে পরিবেষ্টনকারী। তাকে পরিবেষ্টনকারী কিছু নেই। যদি বলা হয় যে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন শুধু আরশের উপর আছেন, তাহলে আরশ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে মুহীত করে ফেলছে, তথা পরিবেষ্টন করে ফেলছে, তথা আরশ হয়ে যাচ্ছে বড়, আর আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হয়ে যাচ্ছেন ছোট নাউজুবিল্লাহ্। যা কেবল নাস্তিকরাই বলতে পারে, কোন মুমিন মুসলমান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে এভাবে খাটো করতে পারে না।

তাই সহীহ আক্বিদা হল-আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সর্বত্র বিরাজমান। তিনি যেমন আরশে আছেন, তেমনি আসমান জমীন সর্বত্র বিরাজমান।

কথিত আহলে হাদীসদের কাছে আমাদের প্রশ্ন

১.

আল্লাহ তাআলা আরশেই অবস্থান করলে আরশ সৃষ্টির আগে আল্লাহ তাআলা কোথায় ছিলেন?

২.

কিয়ামতের সময় সব কিছু যখন ধ্বংস হয়ে যাবে তখন আল্লাহ তাআলা কোথায় থাকবেন?

৩.

আল্লাহ তাআলা আরশেই অবস্থান করলে মুসা আঃ কে দেখা দেয়ার জন্য তূর পাহাড়ে কেন ডেকে নিলেন?

৪.

বিভিন্ন সহীহ হাদীস দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, শেষ রাতে আল্লাহ তাআলা প্রথম আসমানে এসে বান্দাদেরকে ইবাদত করার জন্য আহ্বান করে থাকেন, যেন বান্দা ইবাদত করে।

এখন প্রশ্ন হল, সারা পৃথিবীতে একই সময়ে শেষ রাত হয় না, এক দেশ থেকে আরেক দেশের সময়ের পার্থক্য রয়েছে। এক ঘন্টা থেকে নিয়ে বার তের ঘন্টা এমনকি বিশ বাইশ ঘন্টাও। তাহলে কি আল্লাহ তাআলা বাংলাদেশের আসমানে শেষ রাতে একবার আসেন, তারপর তিন ঘন্টা পর আবার সৌদিতে যান, তারপর এভাবে একের পর এক দেশের প্রথম আসমান ঘুরতেই থাকেন?

কুরআন ও সহীহ হাদীসের শব্দসহ উক্ত বিষয়ের সমাধান চাই।

যেই সকল ভাইয়েরা আল্লাহ তায়ালার সর্বত্র বিরাজমানতাকে অস্বীকার করে আল্লাহ তায়ালাকে নির্দিষ্ট স্থানে সমাসিন বলে আল্লাহ তায়ালার সত্তার বেয়াদবী করছে ওদের অপপ্রচার থেকে, বাতিল আক্বিদা থেকে আল্লাহ তায়ালা আমাদের হেফাজত করুন। আমীন।
এসব অপ্রয়োজনীয় বিষয়ের আলোচনা থেকে আমাদের বিরত থাকার মত পরিবেশ সৃষ্টি করে দিন। আমীন।

৭| ০২ রা মে, ২০১৭ সকাল ৮:০৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: আল্লার আরস আসমান হতে জমিন পর্যন্ত বিস্তৃত । তিনি যেখানে খুশী সেখানে বিচরণ করতে পারেন । আল্লাহ সদা পাক ও পবিত্র তা তিনি যেখানেই যান না কেন । কেও যদি এটা অবিশ্বাস করে তবে তিনি তা নীজেও নীজকে দিয়ে এর নমুনা দেখতে পাবেন । যিনি নমুনাটি দেখতে চান তিনি একটি পরিস্কার পাত্রে তার নীজের মুত্র ভরে রেখে তা স্থিত হলে পরে সেই মুত্র ভরা পাত্রের পানির দিকে তাকালে নীজের মুখচ্ছবি দেখতে পাবেন । এখন প্রশ্র ঐ ছবির মুখে কোন মুত্র লেগেছে কিনা তা পরীক্ষাকারী নীজের মুখ হাতরিয়ে দেখতে পারেন । তিনি দেখতে পাবেন তার মুখে কোন মুত্র লাগে নাই । তাই মহান রাব্বুল আলামিন তাঁর নীজস্ব কুদরতেই নীজকে যে কোন অবস্থায় পুত পবিত্র রাখতে সক্ষম ।

আল্লাহ সকলের সহায় হোন , আমীন

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:৪১

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: মহোদয় এক্ষেত্রে আপনার আরো কিছু মূল্যবান মন্তব্য দরকার।

৮| ০২ রা মে, ২০১৭ সকাল ৯:৩২

কাউয়ার জাত বলেছেন: মানুষকে ধর্মীয় জ্ঞান দেয়ার জন্য উপযুক্ত লোক যথেষ্ট বিদ্যমান। এ বিষয়ে আপনার নাক না গলানোই ভাল।

আপনি বরং সনেট লিখুন। আর হিট কামানোর নিত্য নতুন ধান্ধা আবিষ্কার করুন।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৩:১৯

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আমি আল্লাহর নিরাকার হওয়াতে বিশ্বাসী আর আহলে হাদীস আল্লাহর আকারে বিশ্বাসী। আমার মত উপস্থাপনে তাদের মত পেলাম। যা আমার বিশ্বাস যাচাইয়ে কাজে লাগবে। দেশে মোট মুসলমানের শতকরা নিরানব্বই জন হানাফী আল্লাহর নিরাকারে বিশ্বাসী। আহলে হাদীস বলছে আল্লাহর নিরাকারে বিশ্বাস করলে মুশরিক হবে। আবার হানাফিরা বিশ্বাস করছে আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান কিন্তু আহলে হাদীসরা বলছে আল্লাহ আরশে বিদ্যমান। এক্ষেত্রেও একই সমস্যা তারা বলছে আল্লাহ স্বীয় সত্তায় সর্বত্র বিরাজমান এটা বিশ্বাস করলে মুশরীক হবে। কেউ মুশরিক হলে সে আর মুসলিম থাকেনা। তারা জাতীয় সংগীত গাইলেও মুশরিক হওয়ার কথা বলছে। এ নিয়ে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে। তাদের অস্ত্র ও টাকা যোগানদাতা অবশ্যই রয়েছে। যারা বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশকে টেক্কা দিতে চায় তারা চাইবে এখানে গোলযোগ সৃষ্টি হোক। তাহলে এখানে বিনিয়োগ আসবেনা। এখানে কেউ খেলতে আসবেনা। এখানে কোন পর্যোটক আসবেনা।
এরা যদি ভুয়া প্রমাণ হয় তবে এরা তরুণদের জান্নাতের কলা দেখিয়ে বিভ্রান্ত করতে পারবেনা। শায়েখ আব্দুর রহমান ও বাংলাভাই এদের দলের লোক। আপনার এসব জানা থাকার কথা। কাজেই আমি যা করছি দেশ প্রেম থেকেই করছি। এখানে অনেক ভাল লেখক আছে যারা জাতিকে পথ দেখাতে পারেন। যেমন ডঃ আলী ভাই। এ বিষয়ে তিনি আগেও লিখেছেন। আমি তাঁর লেখা পড়ে উদ্ভুদ্ধ হয়েছি। আমার কথা হলো জাতির সর্বনাশ হওয়ার আগেই সরকার একটা উদ্দোগ গ্রহণ করতে পারে। সরকারের ইসলামী ফাউন্ডেশন রয়েছে। সেখানে সরকার দুই পক্ষকে ডেকে বাহাসের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতে পারে।
ওরা হানাফীদের মুরতাদ মনে করে তাদের হত্যা জায়েজ মনে করে বলেই সিরিজ বোমা হামলা চালাতে পারে। নতুবা যে খানে মুসলমানের জন্য মুসলমানের রক্তপাত হারাম সেখানে তারা এমন কর্ম কিভাবে করে? আমি বলি শুধু আমি নই আপনিও এ ব্যাপারে কলম ধরুন বিষয়টা সরকারের নজরে আসুক। গৃহযুদ্ধের ক্ষতি কাটিয়ে উঠা আমাদের জাতির পক্ষে সম্ভব নয়। আলোচনার মাধ্যমে একটি দল সঠিক সনাক্ত হওয়ার পর সবাই সেই মত সবাই গ্রহণ করলে সেটা হবে জাতির জন্য মঙ্ঘল জনক। অন্য ব্লগে আমি আপনার মন্তব্য আমি দেখেছি। আপনি খুব সুন্দর মন্তব্য প্রদান করে থাকেন। আমি আশাকরি আপনিও আমাকে কষ্ট করে আরো কিচূ সুন্দর পরামর্শ দিয়ে উপকৃত করবেন।
আমি ব্লগে আসি সময় কাটাতে। নানাজনের কথায় আমার যা জ্ঞান সঞ্চয় হয় তা থেকে আমিও হয়ত পোষ্ট দেওয়ার চেষ্টা করছি।
আচ্ছা আমার কবিতাকি মান সম্পন্ন হয়েছে? আপনি কি মনে করেন এ লেখার মান নেই? আসলে কি জানেন ওরা যখন আমাদের ইমামকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করে তখন মাথা ঠিক থাকেনা। তখন হয়তো কিছু কড়া কথা বেরিয়ে যায়।
যাক আমি চাই আপনি অভিবাবকের মতো আমাকে প্রতিনিয়ত গাইড লাইন প্রদান করুন। আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন-আমিন।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৫:০১

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: শতকরা পনের ভাগ আহলে হাদীস সৌদিতে ওহাবী বিপ্লব সফল করে ৮৫% হাম্বলিকে শাসন করছে। আমাদের দেশের এরা আছে তাদের অর্থায়নে তাদের চর হয়ে। এখানে শতকরা দশভাগ হলেই ওদের বিপ্লব সফল হবে এবং এখানেও রাজতন্ত্র কায়েম হবে। এমন কিছু হয়তো তারা ভাবছে। কিন্তু একটা যুদ্ধ বাধিয়ে যদি তারা হারেও তবে দেশের কি হবে? তবে ওরা সহজে হারবে না। কারণ ওদের পিছনে থাকবে বৃহৎশক্তি। আমাদের দেশটা ধ্বংস হবে। আর আমাদের অসহায় মেয়েগুলা ওদের ভোগের জন্য ব্যাবহার হতে থাকবে। চোর গেলে বুদ্ধি হওয়ার চেয়ে সে বুদ্ধি আগেই হওয়া দরকার নয়কি?

৯| ০২ রা মে, ২০১৭ দুপুর ১২:০৯

আহলান বলেছেন: এসব নিয়ে তর্ক বা আলোচনা সেখানেই করা উচিৎ যেখানে এই বিষয়ে বিজ্ঞ আলেম উলামাগন উপস্থিত থাকেন। নয়তো ঈমান নিয়ে সংশয়ে পড়তে হবে।

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৩:২৩

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আমাদের এখানে কিছু বিজ্ঞলোকের সন্ধান পেয়েছি। যেমন ডঃ এম এ আলী। ইনি ইসলামী বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞানের অধিকারী। এ সব নিয়ে বিভিন্ন ফোরামে তর্ক-বিতর্ক চলছে। কিন্তু সমাধান মিলছেনা। কিন্তু এ নিয়ে একটা গৃহযুদ্ধ হলে তার ধাক্কা সামলানোর ক্ষমতা আমাদের জাতির নেই। লালন বলেছেন, সময় গেলে সাধন হবেনা। কাজেই সময় থাকতে পথ খুঁজে পেতে হবে।

১০| ০২ রা মে, ২০১৭ দুপুর ১:৩১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ‘অসিয়া কুরসিউহুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি

:)

++++++

০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৩:২৪

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ঠিক বলেছেন প্রিয় কবি। আপনার মন্তব্যে ধন্য হলাম।

১১| ০৩ রা মে, ২০১৭ রাত ২:১৪

ANIKAT KAMAL বলেছেন: ভা‌লোলাগা এবং শ্রদ্ধা দু'‌টোই

০৩ রা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৪

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আর আপনার প্রতি রইল অফুরন্ত শুভেচ্ছা।

১২| ০৩ রা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০০

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: মাযহাবী ঝগড়াই যে মুসলিম সমাজের পতনের আসল কারণ একথার ঐতিহাসিক প্রমাণ রয়েছে। মাযহাবের অনুসারীগণ অস্বীকার করলেও ইতিহাস কোন দিন তা অস্বীকার করবে না। এই মাযহাব পন্থীদের গোঁড়ামি, ঝগড়া-বিবাদ আর হঠকারিতার ফলেই যে তাতারীরা সুযোগ পেয়ে মুসলিম সম্রাজ্য ধবংশ করেছিল, নিযামিয়া ইউনিভারসিটি ভেঙ্গে চুরমার করেছিল, সাড়ে পাঁচশত বছরের সঞ্চিত দূর্লভ গ্রন্থরাজী জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছিল, চল্লিশ লক্ষ মুসলমান নর-নারীকে কতল করেছিল-একথা ইতিহাসের পাতায় পাতায় ছড়িয়ে রয়েছে। রাসায়েলে কুবরার ২য় খন্ডের ৩৫২ পৃষ্ঠায় লেখা রয়েছেঃ
পূর্বদেশগুলোয় তাতারীদের যে প্রভাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তার কারণ হলো মাযহাব নিয়ে ফির্কা পরস্তদের অতি মাত্রায় গন্ডগোল। ইমাম শাফেয়ীর সাথে যারা সম্পর্ক রাখে তারা যারা ইমাম আবু হানিফার সাথে সম্পর্ক রাখে তাদের উপর ভীষনভাবে বিদ্বেষ পরায়ণ, এতদূর পর্যন্ত যে তারা হানাফীদেরকে ইসলাম থেকেই খারিজ করে রেখেছে। আমার হানাফীরাও নিজেদের মাযহাবের অন্ধ গোঁড়ামির দরুন শাফেয়ীর প্রতি বিদ্বেষ পরায়ণ। এমনকি তাদেরকেও হানাফীরা ইসলাম থেকে খারিজ করে রেখেছে। আবার ইমাম আহমদের সাথে যারা সম্পর্ক রাখে তারাও মুসলমানদের অন্যান্য মাযহাবের উপর ভীষন চটা। ঐরূপ পশ্চিম দেশগুলোর ইমাম মালেকের সাধে যারা সম্পর্ক রাখে তারাও নিজেদের মাযহাবের অন্ধ গোঁড়ামির দরুন অন্যান্য মাযহাবের লোকদের প্রতি বিদ্বেষ-পরায়ণ, আর অন্যান্য মাযহাবপন্থিদের মালেকীদের উপারও কম নয়।

শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলবী তাঁর ইযালাতুল খাফা গ্রন্থে লিখেছেনঃ বনী উমাইয়াদের শাসনের অবসানকাল (১৫০ হিঃ) পর্যন্ত কোন মুসলমান নিজেকে হানাফী শাফেয়ী বলতেন না। স্ব-স্ব গুরুজনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কুরআন ও সুন্নাহর ব্যাখ্যা করতেন। আব্বাসী খলিফাদের শাসন যুগের মধ্য ভাগে প্রত্যেকেই নিজের জন্য একটি করে নাম নির্দিষ্ট করে বাছাই করে নিলেন। আর আপন গুরুজনের কথা না পাওয়া পর্যন্ত কুরআন ও হাদীসের নির্দেশ পালন করার নীতি বাদ দিয়ে দিলেন। কুরআন ও হাদীসের ব্যাখ্যা নিয়ে যে মতভেদ দেখা দিয়েছিল, এখন সেই মতভেদ মাযহাবের বুনিয়াদে পরিনত হলো। আরব রাজত্বের অবসানের পর (৬৫৬হিঃ) সুললমানগণ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়লেন, প্রত্যেক নিজ নিজ মাযহাবের যতটুকু খেয়াল রাখতে পেরেছিলেন-তাকেই ভিত্তিরূপে গ্রহণ করলেন। আর যা পূর্ববর্তীদের কথার দ্বারা পরিকল্পিত হয়েছিল, এখন তা আসল সুন্নারূপে গৃহীত হলো। এদের বিদ্যা হচ্ছে এক অনুমানের উপার আর এক অনুমান, এক পরিকল্পনার উপর আর এক পরিকল্পনা। আবার সেই অনুমানকে গ্রহণ করে আর এক অনুমান। এদের রাজত্ব অগ্নিপূজকদের ন্যায়, তফাৎ শুধু এটুকু যে, এরা নামায পড়ে, কলেমা উচ্চারণ করে।

২২০হিঃ হইতে ন্যূন্যাবিধ ৩০০হিঃ পর্যন্ত উক্ত সংগৃহিত হাদীস মসূহকে যাচাই বাছাই করিয়া রসূলুল্লাহর খাঁটি হাদীসগুলি বাহির করিয়া সংরক্ষণ করার উদ্যোগ চরম জোরদার হয়। ফলে সহিহ বুখারী, সহিহ মুসলিম, আবুদাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ ও ইবনে মাজা এই ছয়খানা ছহিহ হাদীসের কেতাব যথারীতি লিপিবদ্ধ হইয়া রসূলূল্লাহর রেখে যাওয়া সহি হাদীসগুলি সুসংরক্ষণের ব্যবস্থা হয়।

কিন্তু দুঃখের বিষয় পূর্বে সৃষ্ট দল বা মাযহাবগুলি এই সহি হাদীসের প্রতি আকৃষ্ট না হইয়া তাহাদের নিজ দলের প্রাধান্য বৃদ্ধির কাজে লিপ্ত থাকে। পরবর্তী কালে মালেকী ও হানাফী মাযহাবের লোকদের মধ্যে মাযহাবী কোন্দল লইয়া বাগদাদেও অনরূপ ভিন্ন ভিন্ন মাযহাব পন্থিদের মধ্যে বহু স্থানে রক্তয়ী সংঘর্ষ হয়।

অতঃপর ৮০৯ হিজরিতে কাবার ইব্রাহিমী মুসাল্লাতে দাঁড়াইয়া ইমামতি লইয়া ১০/১১টি মাযহাবী দলের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ বাঁধে। তাহাতে বহু মুসলমান হতাহত হয়। জাহল বাদশা ফারহা ইবনে বয়কুফ সংঘর্ষ মিটাবার উদ্দেশ্যে বিবাদরত দলগুলির মধ্যে হইতে চারটি দলকে কাবার চার পার্শ্বে খাড়া করিয়া দিলেন। অন্যান্য দল এই চার মাযহাবের মধ্যে মিশিয়া গেল। ফলে কাবাঘরের চার কোণে চার মাযহাবের চারখানা ভিন্ন ভিন্ন মুসাল্লাহ তৈরী হইল। প্রতি ওয়াক্তে চার মাজহাবের চার ইমাম চার মুসাল্লায় দাড়াইয়া পর্যায়ক্রমে নামাজ আদায় করিতে থাকেন। এই নিয়ম প্রায় ৫০০ বৎসর পর্যন্ত চালু থাকে। এই ভাবে এক ইসলামের মধ্যে জাহেলিয়াত ঢুকিয়া নুতন চার মাযহাবের সৃষ্টি করে।

এইসব স্পস কাতর ব্যাপার দলাদলি বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। আমাদের সবার আগে পরিচয় আমরা মুসলিম।

০৩ রা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৩

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আপনার আলোচনা চমৎকার হয়েছে। তবে মাজহাব বাদ দিয়ে যে সব হাদীসকে ছহী হাদীস বলা হয় সেই সব হাদীসে আকৃষ্ট হওয়ার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। যেমন বোখারীর সব হাদীস আমি ছহী মানি তবে এর মধ্যে কিছু হাদীস মানসুখ মানি। আর মানসুখ হাদীসের আমল মূলত রহিত যা নামাজে করলে রহিত কাজ আমলে কাছির হিসেবে গন্য হবে এবং নামাজ নষ্ট হবে। আর নামাজ জান্নাতের চাবী। এ জন্য শয়তান এসব মানসুখ হাদীসকে চলমান সাজিয়ে মানুষের নামাজ নষ্ট করতে চায়।
মুসলমানদের নামাজ বরাবর চলমান আছে। যা তারা দৈনিক পাঁচ বার আদায় করে থাকে। ঘটনা এমন নয় যে পঞ্চাশ একশ বছর নামাজ বন্ধ ছিল। হঠাৎ নামাজ আবার চালু হওয়ায় হাদীস দেখার দরকার হল। আলী (রাঃ) মহানবীর (সঃ) ঘরের লোক। তিনি মহানবীর (সঃ) নামাজ পড়েন নাই বোখারীর (রঃ) কথায় এমনটা কি মানা যায়? বোখারী (রঃ) কি আলী (রাঃ) থেকে বড়? তো কুফাবাসী হজরত আলীর (রাঃ) দেখাদেখী নামাজ পড়েছেন। সেই নামাজ ইমাম আবু হানিফা লিখেছেন মাত্র। এখন সেই নামাজের বিরুদ্ধে আপনি হাদীস দাঁড় করালে সেই হাদীস মানে কে? তবে কি আপনি বলতে চাচ্ছেন আলী (রাঃ) হাদীসের খেলাফী ছিলেন? আমরাতো বোখারীর সব হাদীস ছহী মেনে কিছু হাদীস মানসুখ মানি। কিন্তু হজরত আলীর অপর অনুসারী শীয়া সম্প্রদায় মোটে বোখারী শরীফকে হাদীস গ্রন্থই মানেনা। এমনকি ইবাদীরাও মানেনা। বোখারীর সব হাধসি পালনীয় এটা মানে শুধু মোট মুসলমানের শতকরা এক ভাগের কম লোক। কাজেই আহলে হাদীসের অদ্ভুত আব্দার অগ্রহণযোগ্য।
হজরত আলীর (রাঃ) ইবাদতের সাথে গরমিল কোন হাদীস কোন মানুষ ছহী এবং পালনীয় ঘোষণা করলেই তা ছহী এবং পালনীয় হবেনা। কারণ হজরত আলী (রাঃ) হাদীস খেলাফী ছিলেন না। আর হজরত আলীর খেলাফী মাসয়ালা প্রদান করলে ইমাম আবু হানিফা (রঃ) ও তাঁর দলের পিঠের চামড়া থাকার কথা নয়। আহলে হাদীস যদি বেশী বাড়াবাড়ি করে তবে হানাফিরা প্রয়োজনে বোখারী পরিত্যাগ করবে কিন্তু তাদের হানাফী পরিচয় ত্যাগ করবেনা। এটা কি এখনো আহলে হাদীসদের বুঝার বাইরে আছে কি?
আমরা সহজ কথায় পাবলিককে বুঝিয়ে দিলাম যে বোখারীর মানসুখ হাদীস নামাজে পালন করলে মোটে নামাজই হবেনা। আহলে হাদীসরা কি এটা বুঝেনা যে মেধাবী ইমাম আবু হানিফার দলে যারা আছে তারাও প্রচন্ড মেদাবী। আহলে হাদীস মানুষকে উল্টা দিকে ঘুরায় আমরা আবার সঠিক দিকে ঘুরিয়ে দেই। কারণ সব মসজিদের ইমাম যে হানাফী। আমি আহলে হাদীস সঠিক নয় এবং হানাফী সঠিক এমন বহু প্রমাণ দিয়েছি এবং সামনে আরো বহু প্রমাণ দেব ইনশাআল্লাহ। সুতরাং আশাকরি আপনিও কোন ভুল মতে কোন মানুষকে আহবান করবেন না। হানফী সঠিক বলেই বিশ্বের শতকরা আশিভাগ আলেম ও মুসলমান এটা মানে।

০৭ ই মে, ২০১৭ রাত ১২:২০

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন:

১৩| ১১ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৪

সমাজের থেকে আলাদা বলেছেন: Click This Link
http://www.somewhereinblog.net/blog/boredwithsociety/30193765
http://www.somewhereinblog.net/blog/boredwithsociety/30193705

১৮ ই মে, ২০১৭ রাত ৯:৫৫

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আপনার লিং পড়েছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.