নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইকবাল সুমন

"ঘোড়ার ডিমের খোঁজে নয়, ডিমওয়ালা-ঘোড়ার খোঁজে...

ইকবাল হোসাইন সুমন

আমি ইকবাল সুমন। মাঝে মাঝে টুকটাক লিখা লিখি করি। এছাড়া কোন কিছু করি না।

ইকবাল হোসাইন সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক মিনিটের গল্প

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১১

সম্পর্কের_অন্য_মাত্রা‬

"হঠাৎ করে মনে হল, চারদিক থেকে শোরগোলের শব্দ আসছে। বর পক্ষ থেকে আসা আমার কাছাকাছি বসা ২ জন গেস্ট যেন হঠাৎ অন্য রূপ ধারণ করল। তাদের ২ জনের যে কোন একজন আমাকে সাঁড়াশীর মত আমার মুখ চেপে ধরল। তারপর আমার আর কিছু মনে নেই।
আমার চারদিকের আলোটা আস্তে আস্তে বাড়ছে। মাথাটা বেশ ঝিমঝিম করছে। চোখ মেলেই দেখলাম আমি একটা মাইক্রোবাস টাইপ গাড়ির পিছনের সিটে শুয়ে আছি। মাইক্রো-বাসটা বেশ জোরে চলছে। রাস্তাঘাটগুলোকে শহরের রাস্তার মত লাগছে না। সম্ভবত আমি গ্রামের কোন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি। আমার পাশেই একজন বসে আছে। ড্রাইভারের পাশের সিটে আরেকজন। বুঝলাম, আমি ছাড়া এই মাইক্রোবাসে আরও ৩ জন মানুষ আছে। সবাই মুখোশ পড়া।
চারদিকে একটু নজর দিয়ে বুঝে নিলাম আমাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে, আমাকে আমার গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান থেকে তুলে আনা হয়েছে।
আমি হেলান থেকে উঠতে চাইলে আমার পাশে থাকা লোকটা বলে উঠল, “চুপচাপ শুয়ে থাকুন। কোন কথা বলবেন না”
কিন্তু আমি অনেকটা ভয় পেয়ে গেলাম। প্রায় চিৎকার দিয়ে বলে উঠলাম, “আমি কোথায়। আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?”
সাথে সাথে বেশ জোরে একটা থাপ্পড় পড়ল আমার মুখে। আমি প্রায় ছিটকে পড়লাম। আমি আর কিছুই বললাম না।
কতক্ষণ ঘুমিয়ে আছি বলতে পারব না। ঘুম থেকে উঠে দেখি “আমি একটা বিছানায় শুয়ে আছি”। আমার একটু দূরে মুখোশ পড়া ২ জন লোক বসে আছি। তাদের দৃষ্টি আমার দিকে। আমার বেশ ভয় লাগছিল। এরপর দেখলাম একজন ওখান থেকে উঠে আমার বেশ কাছে আসল। আসেই বলল, “আপনি দয়া করে কোন চিৎকার চেঁচামেচি করবেন না, আর করলেও লাভ নাই। এখানে কেউ আপনাকে শুনতে পাবে না। আপনার কোন কিছু প্রয়োজন হলে আমাদের বলবেন, আমরা আপনাকে দিয়ে যাব। আর একটা অনুরোধ, কোন প্রশ্ন করবেন না”।
এরপর লোক দুটো রুম থেকে বের হয়ে গেল। বাহির থেকে তালা মেরে দেয়ার শব্দ হল।
আজ কয়টা দিন আমি বন্ধী আছি, ঠিক বুঝতে পারলাম না। কিন্তু ৪-৫ দিন তো হবেই। তারা আমাকে বেশ কয়েকটা পোশাক দিয়ে গেল এর মধ্যে। কোন কিছুর অভাব নাই, সময়ে সময়ে সব দিয়ে যেত তারা।
এই কয়দিন এদের কথায় বুঝে নিলাম, তারা মূলত ভাড়াটিয়া কিডন্যাপার। অন্য কেউ এর পিছনে আছে। সে এখন দেশের বাহিরে আছে। আরও বুঝে নিলাম এদের মধ্যে লম্বাটে লোকটাই এদের দলনেতা। এই লোকটা অন্য ২ জন থেকে আলাদা। রুমে খুব বেশী আসে না। যে কয়বারই এসেছে। আমার সাথে খুবেই নম্র এবং ভদ্রভাবে আচরণ করেছে। কিন্তু অন্য ২ জন এমন না। বিভিন্ন ছুতোয় তারা আমার সাথে খুচরা আলাপ করার চেষ্টা করেছে। তারা ২ জনের মধ্যে যে কোন জন কোন কারণে রুমে ঢুকলে, দলনেতা লোকটা বাহির থেকে তাদের বের হয়ে আস্তে বারবার তাগাদা দিত। বেশ অদ্ভুত ধরণের একটা ক্যারেক্টার এই দলনেতা লোকটার। তার হাতে বেশ সুন্দর একটা রিং পরা, খুব সম্ভব এংগেজম্যানট রিং হতে পারে। তাদের কথা বার্তায় বুঝে নিলাম। দলনেতা লোকটার কোথাও বিয়ে ঠিক হয়ে আছে।
অনেক রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেল। রুমটা তখন বেশ অন্ধকার। মনে হল কেউ আমার রুমে ঢুকেছে। আমি বেশ ভয় পেয়ে কে কে বলে একটু চিৎকার দিলাম। সাথে সাথে ২য় কে যেন রুমে ডুকে আলো জ্বেলে দিল। এই প্রথম আমি তাদের ২ জনের মুখ দেখলাম। লম্বাটে দলনেতা লোকটাকে আমি হাতের রিং দেখেই চিনতে পারলাম। যে লোকটা প্রথমে লুকিয়ে আমার রুমে ঢুকেছিল তাকে দলনেতা লোকটা বলল, “সালাম, আপনি বের হন, এখনই রুম থেকে বের হন”।
প্রথম লোকটা বেশ বিতৃষ্ণা নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল। এরপর দলনেতা লোকটা আমার বেশ কাছে এসে বলল, “সরি ম্যাডাম, আমাকে ক্ষমা করবেন”।
এই বলে সেও রুম থেকে বের হয়ে গেল।
খুব সকালে বেশ কয়েকটা গুলির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল। খুব আতংকিত হয়ে পড়লাম। বুঝতে পারছিলাম না বাহিরে কি হচ্ছে। বেশ কিছুক্ষণ পরে বাহির থেকে লক খুলার শব্দ পেলাম। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করলাম কিন্তু রুমে কেউ ঢুকল না। পায়ে পায়ে একটু একটু এগিয়ে দরজা খুললাম। দরজা খুলেই আমার চোখ বিস্ফোরিত হয়ে গেল। দেখলাম অনেকগুলো লাশ মেঝে পড়ে আছে। গুনে দেখলাম ৩ টা লাশ। একটু দূরে দলনেতা লোকটা একটা চেয়ারে বসে আছে। গায়ে রক্তের বেশ ছিটেফোঁটা দেখা যাচ্ছে। হাতে একটা রিভলভার। সে আমার দিকে তাকাচ্ছিল না। তাকিয়ে আছে লাশগুলোর দিকে। আমিও যেন কেমন হয়ে গেলাম। তখন এই লোকটাকে আমার মোটেই ভয় লাগছিল না। আমি আস্তে আস্তে হেঁটে লোকটার খুব কাছে চলে আসলাম। তার অনেকক্ষণ পরে লোকটা আমার দিকে তাকাল। আমি অনেকটা অবাক হলাম, এত নীরব একটা দৃষ্টি এর আগে আমি কখনো দেখিনি। আর যাই করা হোক, এ দৃষ্টিটাকে ভয় করা যায় না, যেন অনেকটা আস্থা আছে।
একটু পরে লোকটা উঠে আমার সামনে আসল। আমার হাতে ছোট্ট একটা বেগ ধরিয়ে দিল। বলল, “এটা রাখুন। এটা দিয়ে আপনি প্রমাণ করতে পারবেন আপনার কোন ক্ষতি হয়নি”।
আমি ব্যাগটা ধরে রোবটের মত দাড়িয়ে থাকলাম। যেন মুখ দিয়ে কিছুই বের হচ্ছে না।
এর মধ্যে লোকটা চলে যাচ্ছিলো। আমি বললাম, “শুনুন”
লোকটা বেশ থমকে দাঁড়ালো।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “আপনি কি এদের সবাইকে মেরে ফেলেছেন?”
লোকটা হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ল।
আমি আবার লোকটাকে জিজ্ঞাসা করলাম, “কেন এদের আপনি মারলেন, কেনই বা আমাকে কিডন্যাপ করলেন, আবার ছেড়ে দিচ্ছেন?”
লোকটা একটু সরে এসে একটা লাশের মাথাকে পা দিয়ে আমার দিকে সরিয়ে আনল। আমি লাশটা চেহারা দেখেই আঁতকে উঠলাম। এই লোকটা গত কয়েক বছর আগে আমার জীবনটাকে প্রায় অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। পথে ঘাটে দেখানে যেতাম আমাকে বিরক্ত করত। পরে শুনেছি দেশের বাহিরে চলে যায়। বেশ কয়েকবার দেশের বাহির থেকেও আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে।
আমার আর কিছু বুঝতে বাকি থাকল না।
দলনেতা লোকটা বলল, “আপনি এখন নিশ্চয় বুঝতে পারছেন। হুম, এই লোকটাই আপনাকে কিডন্যাপ করার জন্য আমাদেরকে হায়ার করেছিল। আজকে সকালেই ও ফ্রান্স থেকে দেশে আসে। আজকেই আপনাকে ওর হাতে তুলে দেয়ার কথা ছিল।
-আরেকটা কথা জিজ্ঞাসা করবো?, আমি বললাম।
-হুম।
-আপনি আমাকে বাঁচালেন কেন?
লোকটা অনেকক্ষণ ধরে মাথা নিচু করে থাকল। কিছু বলল না।
একটু পরে মাথা উঁচু করে স্থির দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকাল। হাত থেকে রিঙটা খুলে আমার হাতে দিল। পকেট থেকে একটা কলম বের করে একটা কাগজে একটা ফোন নাম্বার লিখে তাও আমার হাতে দিল।
এর পর আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “রিনার সাথে আমার পরিচয় হয় প্রায় ১ মাস আগে। আমাদের বিয়েটা ঠিক হয় গত কয়েকদিন আগে। রিনাও না করেনি। সব কিছুই ভালভাবে চলছিল। কিন্তু গত ২ দিন আগে থেকে রিনা আমার সাথে আর কোন যোগাযোগ করেনি। পরে শুনেছি, এর আগে রিনার একটা ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিল, তার সাথে সে চলে গেছে। কাগজে নাম্বারটা দেয়া আছে, পারলে আপনি রিঙটা রিনাকে পৌঁছে দিয়েন।
-আরেকটা কথা, আপনি এতগুলো খুন করে আমাকে বাঁচালেন কেন?, আমি জিজ্ঞাসা করলাম।
এবার লোকটা আমার দিকে আরও স্থির দৃষ্টিতে তাকাল। বলল, “আসলে সম্পর্ক ব্যাপারটাই আমার কাছে সবসময় লোভনীয়। ছোটকাল থেকে অনেক অভাবে বড় হয়েছি, বাড়ি ছাড়ার পর থেকে মা বাবার সাথেও কোন যোগাযোগ হয়নি। কিছুদিন BDR এ সৈনিক হিসেবে ছিলাম। পুরোপুরি মানুষ হতে পারিনি হয়তো এই কারণে ভাল ব্যাপারটা আমার সহ্য হয়নি। তাই ওখান থেকে চলে আসি। এটা সত্য যে, আমার ভিতরের অপরাধ-বোধটা ছিল শুধুমাত্র ভালভাবে জীবন ধারণ করার জন্য। কিন্তু কিছু ভাল ব্যাপারের উপর লোভ সবসময় থেকে গেছে। রিনাকেও আমি সে ধরণের একটা ব্যাপার ভেবেছিলাম, অন্তত সম্পর্কের ব্যাপারটা। কিন্তু সেটা তো ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। তাই আরেকটা সম্পর্ককে বাঁচিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলাম। আমি ভেবেছিলাম। আপনাকে যে লোকটা কিডন্যাপ করছে তাকে মেরে দিলেই আপনি বেঁচে যাবেন। কিন্তু ওদের ২ জনের বাড়াবাড়িতে ওদেরকেও মেরে দিতে হল। আপনি ভাববেন না যে, আপনার প্রতি আমার বিন্দুমাত্র দয়া বা মায়া আছে। আসলেই নেই। কিন্তু যে কোন সম্পর্কের প্রতি আমার মমতা আছে। সে জন্য আপনাকে বাঁচালাম, মানে একটা সম্পর্ককে বাঁচালাম”।
এই বলে লোকটা হনহন করে চলে গেল।
কিছুক্ষণ পরে আমি দলনেতা লোকটার দেয়া ছোট্ট ব্যাগটা খুললাম। ওখানে একটা ফোন পেলাম। আব্বুকে ফোন দেয়ার আধাঘণ্টার মধ্যে কাছে থানা থেকে পুলিশ আসল। বাসায় পৌঁছতে পৌঁছতে সেদিন সারাদিন লেগে গেল। ব্যাগটার মধ্যে একটা পেন-ড্রাইভ পেলাম, সেখানে গত ৬ দিনের আমার রুমের প্রায় সারাক্ষণের ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেল।
আমি এখন অনেক ভাল আছি। কিন্তু আমি ১ সেকেন্ডের জন্যও সেই দলনেতার দেয়া রিঙটির কথা ভুলিনি, আমার দায়িত্বটির কথা ভুলিনি। আমিও সম্পর্কগুলোকে অন্যভাবে মূল্যায়ন করি। সেই দলনেতার সাথে আমার আর কোনদিন দেখা না হলেও একটা সম্পর্ক হয়ে গেছে। এটাও আমার অন্য মাত্রিক আত্মিক একটা সম্পর্ক।
(শেষ)

প্রকাশঃ ০৯-১০-২০১৫

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: যদিও কাহিনীটা পড়ে সিনেমাট্যিক লাগছিলো তবুও বলবো সম্পর্কের মাঝে বা মানুষের মাঝে ভালো বা খারাপ কিছু ব্যাপার থাকে।

২| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৮

ইকবাল হোসাইন সুমন বলেছেন: অবশ্যই সম্পর্কের মধ্যে ভাল খারাপ দিক থাকতে পারে।
এখানে কিছুটা ভাল ব্যাপারটাকে উল্লেখ করা হয়েছে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য.।

৩| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: যে কোন সম্পর্কের প্রতি আমার মমতা আছে।:)

এই মমতাটাই সম্পর্কের প্রাণ।
ভাল মেলোড্রামাটিক গপ্প :)

+++

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৫:০৬

ইকবাল হোসাইন সুমন বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।
চেষ্টা করি। জানি না কতটুকু পারি।

৪| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৬

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সুন্দর লেগেছে| সিনেম্যাটিক

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৫:০৯

ইকবাল হোসাইন সুমন বলেছেন: মাথায় আসলো লিখে ফেললাম।
অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৫| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২৭

সুমন কর বলেছেন: অনেক দিন পর, আপনার গল্প পড়লাম। বর্ণনা এবং গল্প ভালো হয়েছে।

+।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৫:১২

ইকবাল হোসাইন সুমন বলেছেন: দাদা, সিএ পরীক্ষা ছিল। এই বুড়া বয়সেও দিতে হয়। তাই দেয়ই। হা হা। তাই রিগুলার ছিলাম না।
অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা।

৬| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৩৭

বনলতা-সেন বলেছেন: প্লট সুন্দর ছিল, কিন্তু ছোট গল্প আন্দাজে বেশি ছোট হয়ে গেছে। সাসপেনশন আর গল্পের ভেতরে ডুবে যাওয়া ব্যাপারটা অনুভব করতে পারিনি। আরেকটু ডিটেইলস দিয়ে লিখলে ভালো হতো

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৫:১৫

ইকবাল হোসাইন সুমন বলেছেন: আপনি একদম ঠিক ধরেছেন। ব্যাপারটা আমারও অনুধাবনে ছিল।
ভবিষ্যৎ গল্পে ইনশাআল্লাহ আরও বিস্তারিত বর্ণনা থাকবে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ গল্পটি পড়া এবং সাজেশনের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.