নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন একটা কৌতূহলী যাত্রার নাম- স্রষ্টা, সৃষ্টি, উদ্দেশ্য এবং এই সব কিছুর সত্যতা কে ঘিরে... আর আমি সেই পথের একজন সাধারণ যাত্রী। নিজের জায়গা থেকে সব স্থান, কাল, পাত্রে আপন অস্তিত্বকে কল্পনা করতে ভালোবাসি আর সেই অনুযায়ী প্রত্যেকটা কাজ করে যাই...

মাহফুজ আলআমিন ( Auspicious Fate )

মাহফুজ আলআমিন ( Auspicious Fate ) › বিস্তারিত পোস্টঃ

#মূল্যায়ন

১৩ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:১৭


খুব সহজে পেয়ে যাওয়া জিনিসের মূল্যায়ন অন্যদিকে অনেক ত্যাগ, প্রতীক্ষা কষ্টের বিনিময়ে পাওয়া জিনিসের মূল্যায়ন কখনো এক হয় না।

এই একটা বিষয় থিউরিটিকালি মেনে নিলেও আমরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাস্তব জীবনের বাস্তবতার সাথে কোনভাবেই মানতে চাইনা।

নিজের জীবন থেকেও ব্যাপারটা অনেকবার প্রমাণ পেয়েছি। যেমন কিছুদিন আগে আমার উচ্চবিত্ত মোবাইল খানা (জে ৭) নিজের অসাবধানতার কারণবশত বর্তমানে অকার্যকরভাবে কোমায় পড়ে রয়েছে! এতে আমি নিজে যতটা না দুঃখ পেয়েছি, তার চেয়ে বেশি পেয়েছেন আমার বড় আপু। কেনোনা সেট টা তিনি ই কিনে দিয়েছিলেন, আমি শুধু তার উপযোগিতা ভোগ করেছি মাত্র। এই একই সেট কিনতে আমার এক মেসমেট কে দেখেছি অনেকদিন চাকরির পর নিজের জমানো টাকায় ক্রয় করতে। তার কষ্টের বিনিময়ে পাওয়া বস্তুটি যতখানি মূল্যায়নের আবদার রেখেছে, আমার ক্ষেত্রে হয়তো ততটা রাখেনি, এবং সমস্যটা সেখানেই। তার অবস্থানে আমি হলে হয়তো ব্যাপারটা উলটো হতেও পারতো।

যাই হোক, এই একই শিক্ষা নারী পুরুষের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বরাবর খাটানো যায়। কিভাবে? খুবই সহজ হিসেব। নারী পুরুষের সম্পর্ক যতটা না মানসিক ততটা শারীরিক ও বটে। যখন একজন মানুষ বিপরীত লিঙ্গের একজন মানুষ কে শারীরিক এবং মানসিকভাবে আপন করে পেতে মানে বিয়ে করতে বছরের পর বছর ধৈর্য ধরে কাটায় তার কাছে সেই মানুষটির মূল্যায়ন যতটা ভালোবাসাময় হয়, সেই ভালোবাসার সিকিভাগ ও ওইসকল সম্পর্কে থাকে না যেখানে বিয়ের আগেই সকল প্রয়োজন সহজ কিস্তিতে মিটে যায়! এই ব্যাপারটা খুব সহজেই অনুধাবণ করা যায় পাশ্চাত্যের দিকে লক্ষ্য করলে। তাদের কাছে নারী পুরুষের সম্পর্ক গুলো অনেকটা সহজলভ্য খেলনার মত। যতক্ষণ মন চাইলো খেললাম পরে ছুড়ে ফেলে দিলাম। তাই তাদের মাঝে নারী পুরুষের স্বাভাবিক সম্পর্কগুলো তেমন আর বিদ্যমাণ নেই বললেই চলে। যেই বিষয়টির উপযোগিতা ভোগ করার জন্য ধীর্ঘ ধৈর্য প্রহর কাটানোর কথা, নিয়ম কানুন মেনে নিজেকে সৎ রাখার কথা, আল্লাহ কে ভয় করে কাঙ্ক্ষিত মানুষের জন্য অপেক্ষা করার কথা, সেখানে সেই সব কিছু উপেক্ষা করে শুধু হরমোনের টানে জৈবিক চাহিদা বা সামান্য মানসিক একাকিত্ব দূর করার ব্যাপারটি তাদেরকে বেশিদিন স্বাভাবিক রাখতে পারে না। যার ফলে এক সময় তারা ঝুকে পড়ে সমকামিতা থেকে শুরু করে প্রশান্তি লাভের বিভিন্ন পৈশাচিক উপায়ে।

এই একই দিকে ঝুকে পড়ছে আমাদের সমাজটাও। মানুষ মনে করে বিয়ের আগে এই সম্পর্কগুলো তাদের প্রকৃত ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, ব্যাপারগুলো সম্পূর্ণ উলটো। বিয়ের আগে নিজেকে সর্বাত্মক উপায়ে সুন্দর, সাবলীল, বৈচিত্র্যময়, আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করার চিরাচরিত বৈশিষ্ট্যগুলো বিয়ের পর অনেকটাই বিপরীত বিশেষণ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয় বলে তখন শুধুমাত্র সাংসারিক দায়িত্ববোধ ছাড়া আর কিছুই থাকে না। ভালোবাসা তো দূর কি বাত!

প্রত্যেক টা জিনিসের একটা নির্দিষ্ট সিস্টেম রয়েছে। সিস্টেমের বাইরে গিয়ে কাজ টা করলে হয়তো সাময়িক উপযোগিতা মেটানো যায়, তবে তার স্বাভাবিক কার্যকারিতা এবং আনন্দ দীর্ঘ মেয়াদে আর টিকে থাকে না।

কষ্ট, ত্যাগ, ধৈর্য, অপেক্ষা শব্দগুলো অতি পরিচিত হলেও আমরা অধিকাংশ মানুষ ই তা ঘৃণাভরে এড়িয়ে যাই। কিন্তু প্রত্যেক্টি আকাংখিত বিষয়ে যত বেশি এই বিশেষণগুলো জড়িত থাকে, তার ফলাফল এবং ভোগের আনন্দ তত বেশি ই পাওয়া যায়।

এমনকি সস্তায় জান্নাত আশা করা মানুষদেরকে যদি তা দিয়েও দেয়া হয়, হয়তো এই জান্নাতের কদর ও তাদের কাছে থাকবে না, প্রকৃত আনন্দটাও তারা কখনো খুজে পাবে না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.