নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আকিলিকস

আকিলিকস › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্মনিরপেক্ষতার আড়ালে লুকিয়ে থাকে ইসলামকে ধ্বংস করবার মরনাস্ত্র।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:০১

সাম্প্রদায়িক আর অসাম্প্রদায়িক। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ এবং মৌলবাদ। এই চারটি শব্দের মধ্যে বিশ্বের অধিংকাংশ দেশের রাজনৈতিক কর্মকান্ড আড়ষ্ঠ। যদিও এই চারটি শব্দই বিতর্কিত শব্দ।

কারণ অসাম্প্রদায়িকতার ধ্বজা তুলে বিশ্বের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরন চলছে। সুশীল নামধারী এবং এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবিরা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেন। যা শুধু ইসলামের সাথেই সাংঘর্ষিক। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের দাবিতে তারা শহীদ মিনারে ‘মঙ্গল প্রদীপ’ জ্বালিয়ে প্রতিবাদ সভা করেন। কিন্তু এই মঙ্গল প্রদীপও যে একটি সাম্প্রদায়িকত শক্তির অংশ সেই কথাটি তারা ভুলেই যান। তখন আর শহীদ মিনারের অবমাননা হয় না। কিন্তু সেই শহীদ মিনারেই কোন বুদ্ধিজীবির জানাযা পড়ানো হলে একটি বিশেষ গোষ্ঠি গেল গেল জাত গেল বলে উলু ধ্বনি দিতে শুরু করেন। সেই উলুধ্বনি নাকি অসাম্প্রদায়িকতার পক্ষের ধ্বনি। শহীদ মিনারে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালালে অসাম্প্রদায়িকতার বিশ্বাস অক্ষুন্ন থাকে আর জানাযা পড়ালেই সে চেতানা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে! তখনই প্রমাণ হয়ে যায়, এই অসাম্প্রদায়িকতার ধ্বনি তোলা গোষ্ঠি মতলববাজ গোষ্ঠি। সুবিধাবাদের গোষ্ঠি। তারাই মূলত অসাম্প্রদায়িকতার ধ্বনি ‍তুলে সাম্প্রদায়িকত দাঙ্গা সৃষ্টির লক্ষ্যে বাজ পাখির মত ওৎ পেতে থাকে। এতেই প্রমাণিত হয়, প্রত্যেকেই সাম্প্রদায়িক। অসাম্প্রদায়িক বলে কোন শব্দের অস্তিত্ব কোত্থাও নেই।

এবার আসি নিরপেক্ষতাবাদে। সেই ছোটবেলা থেকেই দেখতাম এই নিরপেক্ষ গোষ্ঠির লোকজন বিশেষ সুবিধাবাদী দলের লোক। তারা নিরপেক্ষতার আদলে নিজেদেরকে আড়াল করে দু’পক্ষ থেকেই সুবিধা আদায় করে নেয়। স্কুলে পড়ার সময় দেখতাম, ফরম ফিলাপের টাকা কমানো নিয়ে এক দল আন্দোলন করছে। তার মধ্যে অল্প কিছু ছাত্রছাত্রী নিজেদেরকে সেই আন্দোলন থেকে দূরে সরিয়ে রাখছে। তারাই আবার ভাল ষ্টুডেন্টের তকমাধারী। এই ভাল ছাত্রছাত্রীরা স্যারদের কাছে খারাপও হতে চায় না আবার অতিরিক্ত টাকা দিতেও নারাজ। আবার এরাই শিক্ষকদের নিকট নিরপেক্ষ মতাদর্শের ষ্টুডেন্ট বলে সমাদর পাচ্ছে। এইবার বুঝলেন তো, নিরপেক্ষ কাকে বলে। আসলে নিরপেক্ষ বলে কোন শব্দের বাস্তবিক অস্তিত্ব নেই। হয় আপনি পক্ষে অথবা বিপক্ষে। আপনি ধর্মের পক্ষে অথবা ধর্মের বিপক্ষে। এটাই মূল ফ্যাক্ট।

আর এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ভারতে। ধর্মনিরপেক্ষতার আওয়াজ তোলা এই রাষ্ট্রটিতেই ১৯৯২ সালের এই দিনে কালের ইতিহাসের সাক্ষি ‘বাবরি মসজিদ’ ধব্বংস করা হয়।



১৫২৭ সালে সেখানে বাবর শাহের আদেশে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়, যে কারণে মসজিদটির নাম জনমুখে বাবরি মসজিদ। আবার এ-ও শোনা যায়, গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকের আগে এই মসজিদ 'মসজিদ-ই-জন্মস্থান' বলেও পরিচিত ছিল।

বৃটিশ বেনিয়াদের হাত থেকে ভারত স্বাধীনের মাত্র দুই বছর পরেই ১৯৪৯ সালের ২৩শ ডিসেম্বর- বেআইনিভাবে বাবরি মসজিদের অভ্যন্তরে রাম-সীতার মূর্তি স্থাপন করা হয়। তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী গোবিন্দ বল্লভ পন্থ-কে চিঠি লিখে হিন্দু দেব-দেবীদের মূর্তি অপসারণ করার নির্দেশ দেন, কেননা ''ওখানে একটি বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করা হচ্ছে''। সবচেয়ে বড় কথা, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস), বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং অন্যান্য হিন্দু সংগঠন আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া-র যে সব বিবরণের ওপর নির্ভর করে তাদের দাবি পেশ করে থাকে, মুসলিম দৃষ্টিকোণ থেকে সেই সব রিপোর্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

১৯৯২ সালে ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস সুপ্রীম কোর্টের আদেশ নিয়ে, বাবরি মসজিদ প্রাঙ্গনে সমাবেশের আয়োজন করে। “কোন গোলযোগ হবে না” এই মর্মে শর্তারোপ করেই সুপ্রীম কোর্ট সমাবেশের অনুমতি প্রদান করেন। কিন্তু উগ্রবাদী হিন্দু সন্ত্রাসী সংগঠন সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেড় লক্ষাধিক মানুষের জনসমাবেশ ঘটায়। সেই উগ্র হিন্দুনেতারা দেড় লক্ষ লোকের এই বিপুল জনশক্তিকে বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার জন্য লেলিয়ে দেন। বিপরীত দিকে পুলিশ নিজের হাতের বন্দুকটিকে ঘাড়ে ফেলে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে যায়। এভাবেই কালের ইতিহাসের সাক্ষী ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ প্রায় ধব্বংস প্রাপ্ত হয়। আজ শুধু সেখানে দাড়িয়ে আগে গুটি কয়েক পিলার এবং কিছু ভাঙ্গা দেয়াল। বাকি সব সেই হিন্দু সন্ত্রাসীদের উগ্রবাদের কাছে বিলীন হয়ে গেছে।

বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার সাথে সাথে গোটা ভারতে গোলযোগ ছড়িয়ে পড়ে। হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। সেই দাঙ্গায় প্রায় ২ হাজার মুসলিম নারী ও শিশুকে হত্যা করা হয়। বহু মুসলিম তরুনীকে ধর্ষণ করা হয়। কিন্তু সেসব অন্যায়ের বিচার আজও হয় নি। বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে অযোধ্যার মানুষরা কি পেল?

সে ঘটনার দুই দশক পরের অযোধ্যা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতের বেসরকারি নিউজ চ্যানেল জি নিউজ। এতে বলা হয়েছে, “দাঙ্গার পরেই মুখ থুবড়ে পড়েছিল ধর্মনগরী অযোধ্যার অর্থনীতি। অশান্তির আশঙ্কায় দিনে দিনে কমেছে পর্যটকের সংখ্যা। তুলসীর মালা বা সাদা পাথরের মূর্তি কিনতে আজ আর ভিড় চোখে পড়ে না দোকানের সামনে। স্বচ্ছল থেকে ক্রমশ সম্বলহীন হয়ে পড়েছেন এইসব শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন। এক সময় পর্যটকরা আসতেন। মন্দির নগরীতে তাঁরা থাকতেন, ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করতেন দেব-দেবীর মূর্তি, তুলসী বা রূদ্রাক্ষের মালা। কিন্তু ৯২ সালের ৬ ডিসেম্বরের পর সবই অতীত। এখন আর পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় নেই অযোধ্যা। তুলসীর মালা আজও অবশ্য বিক্রি হয় অযোধ্যা শহরের পথের ধারের দোকানে। কিন্তু আগের তুলনায় চাহিদা অনেকটাই কম। তাই ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেককেই গ্রাস করেছে হতাশা।

ধাক্কা খায় দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তি। আজ ২০ বছর পর প্রশ্ন উঠছে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যেই কি সেদিন অযোধ্যায় ধর্মের জিগির তুলেছিল বিজেপি? উত্তর খুঁজছেন দুই সম্প্রদায়ের মানুষই।
দু’দশক পরেও বন্ধ হয়নি কমুণ্ডলের রাজনীতি। গো-বলয়ে তাদের পৃথক অস্তিত্বের লড়াইয়ে বিজেপি এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ রাম মন্দির ইস্যুকে এখনও জাগিয়ে রাখতে চাইছে। যদিও, তারা স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দু’দশক আগের আন্দোলন বর্তমানে অনেকটাই প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে। রাম মন্দির একসময় ছিল বিজেপির অন্যতম প্রধান ইস্যু। ধর্মের ভিত্তিতে ভোটারদের মেরুকরণ ঘটানোর উদ্দেশ্যও অনেকটাই সফল হয়েছিল। মসজিদ ভেঙে মন্দির নির্মাণের উন্মাদনা উস্কে দিয়ে একসময় যে তারা রাজনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছিল, তা মেনে নিচ্ছে বিজেপি।”

আমি আগেই বলেছি, নিরপেক্ষ বলে কোন শব্দ নেই। হয় আপনি পক্ষে অথবা বিপক্ষে। হয় আপনি অন্যায়ের পক্ষে তবে আপনি চুপ করে অন্যায়গুলো দেখবেন। আর যদি আপনি অন্যায়ের বিপক্ষে হোন তবে প্রতিবাদ করবেন। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ভারতের মানুষেরা সেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেনি। অতএব, তারা সকলেই এই অন্যায়কে সমর্থন করে। এবং ধর্মনিরপেক্ষতার ফাঁকা আওয়াজ তুলে ইসলামকে ধ্বংসের পায়তারা করছে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৪৩

আশরাফ ও নীল বলেছেন: সেবা প্রকাশনীর কাজী আনোয়ার হোসেনকে একজন পাঠক প্রশ্ন করেছিল, কখনো আপনাকে শামসুদ্দিন নামে কখনো বা বিদ্যুৎ মিত্র নামে লিখতে দেখা যায়। আসলে আপনি কি হিন্দু না মুসলমান?

এর উত্তরে তিনি লিখেছিলেন, আমি নির্দিষ্ট কোন ধর্মে বিশ্বাস করিনা - আমি ধর্মনিরপেক্ষ।

কাজী মোতাহার হোসেনের 'হাদিসের গল্প' বইটি পড়ে আমি ছোটবেলায় হাদিস চর্চায় আগ্রহী হয়ে উঠি, আর তার ছেলের মুখে এ ধরণের কথা শুনলে কেমন লাগে বলুন তো?

২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৯

কলাবাগান১ বলেছেন: যে ভাবে শিয়ারা সুন্নীদের মারছে আর আবার সুন্নীরা শিয়াদের মসজিদে বোমা দিয়ে হত্যা করছে, তাতে আর কাউকে লাগবে না ইসলাম ধ্বংস করতে।

একজন ক্যাথলিক খৃিস্টানকে তো এখন দেখি না কোন প্রোটেস্ট্যান্ট খৃিস্টানের গির্জায় গিয়ে বোমা মারতে!!!!! অন্যদের দোষ না নিয়ে একটা শব্দ মুখস্ত করুন দেখুন সব ঠিক হয়ে যাবে। শব্দ টা হল
"Tolerance"

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.