নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য সব সময় সুন্দর ■ www.facebook.com/niazuddin.sumon

নিয়াজ সুমন

ভালোলাগে ভ্রমন করতে। প্রকৃতির সাথে মিশে গিয়ে ছবির ফ্রেমে নিজেকে আবদ্ধ করতে। অবসর কাটে সাহিত্যের আঙিনায় পদচারনা করে। ব্যস্তময় যান্ত্রিক জীবনের মাঝেও চেষ্টা করি নিজের অব্যক্ত কথামালা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে।

নিয়াজ সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিষ্টি হলুদ রঙের মায়াবতী সূর্যমুখী

০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:০০


বসন্ত এসেছে, র্জীণ প্রকৃতি তার নব রূপের পসরা উন্মুক্ত করে দিয়েছে। হলুদের বর্ণছটায় সবুজ প্রকৃতির সাথে সাথে মানব মন ও সবুজ আর হলদে আভায় নিজেকে মেলে ধরতে চাইছে। আর সেই জন্যই বসন্তে ফসলের ক্ষেতের এমন দৃশ্য টানছে সৌন্দর্য পিপাসুদেরও। প্রকৃতিতে অসাধারণ এক রূপবান উদ্ভিদ সূর্যমুখী। পাগল করা সুন্দর তার ফুল। ফুল ও প্রকৃতিপ্রেমী যে কেউ এই ফুলের নান্দনিক হলদে আভায় মুগ্ধ না হয়ে পারবে না। দূর থেকে দেখলে মনে হবে বিশাল আকারের হলুদ গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। কাছে গেলে চোখে পড়ে হাজার হাজার সূর্যমুখী ফুল। সূর্যমুখী হাসে, আর তার হাসিতে প্রকৃতি অপরূপ রূপে সাজে। ফুলগুলো বাতাসে দোল খেয়ে যেন আমন্ত্রণ জানাচ্ছে সৌন্দর্য উপভোগ করার। হলুদ রংয়ের হাজারো ফুল মুখ করে আছে সুর্যের দিকে। এমন দৃশ্য চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বারি-তিন সুর্যমুখী প্রকল্পে। হাটাজারীর মতো সূর্যমুখী ফুলের এত বড় আকারের বাগান আগে চট্টগ্রামে আর কোথায় দেখা যায়নি। চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার পশ্চিম দেওয়ানপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র এলাকায় সুপারি বাগান সড়কের পাশে ১ একরের বেশি জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। সূর্যমুখীর হলুদ আভায় ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। তাই দিনভর সূর্যমুখী বাগানে ভিড় করছে হাজারো মানুষ।


সূর্যমুখীর তেল কোলেস্টেরলমুক্ত, ভিটামিন ‘ই’, ভিটামিন ‘কে’ ও মিনারেল সমৃদ্ধ। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনি রোগীর জন্যও সূর্যমুখীর তেল নিরাপদ। আর চাষও লাভজনক। বারি তিন খাটো জাতের সূর্যমুখী, এর কান্ডও বেশ শক্ত,ফলে ঝড় ঝঞ্ঝায় ক্ষতি কম হয়।তাই এটিকে চট্টগাম অঞ্চলে চাষ উপযোগী হিসেবে শণাক্ত করেছেন কৃষিবিজ্ঞানীরা ।


পরিচিতি:
সূর্যমুখী একধরনের একবর্ষী ফুলগাছ। সূর্যমুখী গাছ লম্বায় ৩ মিটার (৯.৮ ফু) হয়ে থাকে, ফুলের ব্যাস ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত হয়। এই ফুল দেখতে কিছুটা সূর্যের মত এবং সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলে এর এরূপ নামকরণ।

এর বীজ হাঁস মুরগির খাদ্যরূপে ও তেলের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই বীজ যন্ত্রে মাড়াই করে তেল বের করা হয় ৷ তেলের উৎস হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সূর্যমুখীর ব্যাপক চাষ হয়। সমভুমি এলাকায় শীত ও বসন্তকালে, উঁচু লালমাটি এলাকায় বর্ষাকালে ও সমুদ্রকুলবর্তী এলাকায় শীতকালীন শস্য হিসাবে চাষ করা হয়। ১৯৭৫ সাল থেকে সূর্যমুখী একটি তেল ফসল হিসেবে বাংলাদেশে আবাদ হচ্ছে।
বর্তমানে রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া, নাটোর জেলা, পাবনা, দিনাজপুর, গাজীপুর, টাংগাইল প্রভৃতি জেলাতে এর ব্যাপক চাষ হচ্ছে।


সূর্যমুখীর ব্যবহার
ক) সূর্যমুখীর বীজ পশুখাদ্য হিসেবে হাঁস মুরগিকে খাওয়ানো হয়।
খ) এই বীজ যন্ত্রে মাড়াই করে তেল বের করা হয় ৷ তেলের উৎস হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সূর্যমুখীর ব্যাপক চাষ হয়।
গ) ঘিয়ের বিকল্প হিসেবে সূর্যমুখীর তেল ব্যবহৃত হয়, যা বনস্পতি তেল নামে পরিচিত।
ঘ) সূর্যমুখীর তেল অন্যান্য রান্নার তেল হতে ভাল এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যন্ত কম। এছাড়া এতে ভিটামিন এ, ডি ও ই রয়েছে।
ঙ) ভিটামিন-ই এর উত্তম উৎস হলো এই সুর্যমুখী ফুলের বীজ।
চ) ভিটামিন-ই এর অনেক উপকারী দিক রয়েছে। ভিটামিন ‘ই’ এর ফ্রী র্যাডিক্যাল প্রতিরোধী বা এ্যান্টি অক্সিডেন্ট ভূমিকাই কাজ করে। ভিটামিন ‘ই’এর ক্ষমতার মধ্যে আরও দুটো বৈশিষ্ট্য অর্ন্তভুক্ত করা যায় যেগুলো হৃদরোগের ক্ষেত্রে যথেষ্ট উপকারী ভূমিকা পালন করে। এ দুটো বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রদাহ নিবারণ ও মসৃণ মাংস পেশীর কোষ প্রবৃদ্ধিতে সাহায্য করা। মাংস পেশীর কোষ উৎপাদন ক্ষমতার সাথে সাথে প্রদাহ নিবারণ ক্ষমতা এ দুটো গুণ রক্তনালীর সংকীর্ণ হওয়াকে প্রতিরোধ করে। ভিটামিন ‘ই’ এর ক্যান্সাররোধী গুণাবলীর কথাও জানা গেছে।


● চলুন জেনে নিই, সূর্যমুখী বীজের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে-

অ্যাজমা ও বাতরোগ নিরাময় হয়ঃ
সূর্যমুখীর বিচিতে রয়েছে উন্নতমানের ভিটামিন-ই, যা এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে ও শরীরের বিভিন্ন অংশের জ্বালাপোড়া কমায়। নিয়মিত এটি খেলে অস্টিওআর্থারাইটিস, অ্যাজমা ও বাতরোগ নিরাময় হয়।

হাড় শক্তিশালী করেঃ
হাড়ের সুস্থতার জন্য ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম দুটোই খুব জরুরি। সূর্যমুখীর বিচি খনিজ পদার্থের খুব ভালো উৎস, তাই এটি সুস্থ হাড় গঠনে সহায়তা করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধকঃ
এই বীজে আছে উচ্চমানের ফাইটোস্টেরল ও লিগন্যানস, যা ক্যান্সার প্রতিরোধক। এসব উপাদান শরীরে ক্যান্সারের কোষ তৈরি হতে দেয় না।

বয়সের ছাপ দূর করেঃ
এতে আছে এন্টি-এজিং প্রপার্টিজ, যা ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। এর মধ্যকার ভিটামিন-ই ও বিটা ক্যারোটিন ত্বককে তারুণ্যদীপ্ত করে ও ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখে। বিটা ক্যারোটিন ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে মুক্ত রাখে এবং ভিটামিন-ই ত্বকে বলিরেখা পড়তে দেয় না।

চুল পড়া রোধ করেঃ
সূর্যমুখীর বীজে রয়েছে ভিটামিন বি-৬, যা মাথার স্কাল্পে অক্সিজেন সাপ্লাই করে চুলপড়া রোধ করে এবং স্বাস্থ্যোজ্জ্বল নতুন চুল জন্মাতে সাহায্য করে। এতে আরও রয়েছে কপার, যা চুলের স্বাভাবিক রং ধরে রাখে।

ত্বক কোমল রাখেঃ
সূর্যমুখীর বিচি ফ্যাটি এসিডের ভালো উৎস হওয়ায় ত্বকের এলাস্টিক ধরে রেখে ত্বককে মসৃণ ও কোমল রাখে।

দাগ দূর করেঃ
সূর্যমুখীর বিচির মধ্যকার ফ্যাটি এসিড ত্বকে কোলাজেন ও এলাস্টিন তৈরি করে দাগ দূর করে। এতে আরও রয়েছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিজ, যা জীবাণুর সংক্রমণ থেকে বাঁচায়।

কোলেস্টেরল কমায়ঃ
এই বীজে রয়েছে ফাইটোস্টেরল, যা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।

স্নায়ুতন্ত্রকে ভালো রাখেঃ
এর মধ্যকার ম্যাগনেসিয়াম নার্ভ সেলের অতিরিক্ত ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমিয়ে স্নায়ুতন্ত্রকে সঠিকভাবে কাজ করাতে সাহায্য করে।

মানসিক স্বাস্থ্যঃ
সূর্যমুখীর বিচিতে রয়েছে ট্রিপটোফেন নামক এক প্রকার এমিনো এসিড, যা শরীরে সেরোটোনিন উৎপাদনে সাহায্য করে। সেরোটোনিন হচ্ছে এমন একটি উপাদান, যা ক্লান্তি, দুশ্চিন্তা ও হতাশা দূর করে।


সূর্যমুখী কেন সবসময় সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে
প্রতিদিন ভোরে সূর্যমুখী বাগানের সকল গাছ অনেকটা প্যারেড দলের মতো পূর্বদিকে মুখ করে থাকে। ঐ দিকে সূর্য দেখা দেয় এবং ধীরে ধীরে উপরে উঠতে থাকে। সূর্যের সাথে সাথে সূর্যমুখীগুলোও ধীরে ধীরে নিজেদের দিক পাল্টাতে থাকে। সূর্য যেদিকে যায় তারাও সেদিকে যায়। সবসময়ই এগুলো সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে। সূর্য যখন পশ্চিম দিকে অস্ত যায় তারাও তখন পশ্চিমদিক বরাবর থাকে। অস্ত যাবার পরে তারা সারারাত ব্যাপী আবার উলটো দিকে ঘুরে পূর্বমুখী হয়। নতুন একটা দিনে আবার সূর্যের মুখোমুখি হয়। এভাবে চক্রাকারে চলতেই থাকে। বুড়িয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের এই চক্র চলতেই থাকে।


সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের একটি দল সূর্যমুখীর এই দিক পরিবর্তন সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্যের রহস্য উন্মোচন করেছেন। তাঁদের গবেষণা থেকে বেরিয়ে আসে সূর্যমুখীরা তাদের নিজস্ব সার্কাডিয়ান চক্রে আবদ্ধ। এই চক্র সচল থাকার কারণে সূর্যমুখীরা সবসময় সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে। গবেষকরা সায়েন্স জার্নালে তাদের গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশ করেছেন।

সার্কাডিয়ান চক্র বা সার্কাডিয়ান ঘড়িকে অনেক সময় ‘দেহ ঘড়ি’ নামেও ডাকা হয়। মানুষের মাঝেও এই চক্র বিদ্যমান। যেমন প্রত্যেক মানুষেরই দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম চলে আসে। একটা উদাহরণ দেই। কোনো একজন লোকের সবসময় রাত ১১ টায় ঘুমিয়ে অভ্যাস। একদিন তার অজান্তে ঘড়ি নষ্ট হয়ে গেল। দুই ঘণ্টা পিছিয়ে পড়লো ঘড়ির কাটা। এমতাবস্থায় ৯ টায়-ই ঘুম ধরবে ঐ লোকের। যান্ত্রিক ঘড়ির সময় যাই হোক, দেহের নিজস্ব ঘড়ি ঠিকই উপযুক্ত সময়ে ঘুমের কথা জানান দিয়ে দিবে। এই আভ্যন্তরীণ ঘড়ি বা চক্রই হচ্ছে সার্কাডিয়ান চক্র।


সূর্যমুখীর কাণ্ড দিনের বেলা সূর্যকে অনুসরণ করে এবং রাতের বেলা বিপরীতমুখী হয়ে আবার সূর্যের জন্য অপেক্ষা করে।
উদ্ভিদের মাঝে সাধারণত এই চক্রের উপস্থিতি থাকে না। খুব অল্প সংখ্যক ব্যতিক্রমের মাঝে একটি হচ্ছে সূর্যমুখী। এই চক্রকে ব্যবহার করে সূর্যমুখী ফুল সবসময় সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে। সূর্যের দিকে মুখ করে থাকলে ফুল আকারে বড় হয় এবং পরাগায়নের জন্য মৌমাছিকে আকৃষ্ট করতে সাহায্য করে। এই বৈশিষ্ট্য সূর্যমুখীকে টিকে থাকতে সহায়তা করেছে। যে ফুল আকৃতিতে বড় হবে এবং পরাগায়নের জন্য অধিক পরিমাণ মৌমাছি পাবে সেই ফুলের বীজ হওয়া তথা টিকে থাকার সম্ভাবনা অবশ্যই বেশি।


সূর্যমুখীদের এই বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে নিশ্চিত হতে বিজ্ঞানীরা বেশ কয়েকটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। প্রথমে তাঁরা গাছকে কাঠির সাথে আটকে রাখেন যেন নড়াচড়া করতে না পারে। পাশাপাশি গাছ যে সময় পূর্বদিকে মুখ করে থাকার কথা ঐ সময় জোর করে গাছকে পশ্চিমমুখী করে দেয়া হয়। এতে দেখা যায় গাছেরা এই পরিবর্তনকে কাটিয়ে উঠতে পারে। আবার চক্রে ফিরে যেতে পারে।


তারপর তাঁরা ফুল গাছগুলোকে ঘরের ছায়ায় নিয়ে আসেন। এখানে দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টা কোনো বিরতি ছাড়াই কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করেন। সূর্যমুখীর কাছে সূর্যের বিরামহীন অবস্থা উপস্থাপন করা হয়। এতেও দেখা যায় গাছেরা আগের মতোই চক্রাকার দোলায় দুলছে। গবেষকরাও এদের কাছে এমন আচরণই আশা করছিলেন।


এরপর তাঁরা কৃত্রিমভাবে দিন-রাতের চক্রের সৃষ্টি করলেন। পূর্ব দিক থেকে আলোকের উদয় হয় এবং নিয়ম মেনেই ধীরে ধীরে পশ্চিম দিকে অস্ত যায়। এই চক্র যখন সূর্যের চক্রের অনুরূপ ছিল অর্থাৎ প্রতি ২৪ ঘণ্টায় একবার করে চক্র সম্পন্ন হয় তখন পর্যন্ত সূর্যমুখীরা তাল মিলিয়ে চলতে পেরেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে বিজ্ঞানীরা চক্রের মাঝে কিছু পরিবর্তন আনেন। ২৪ ঘণ্টার বদলে চক্র নিয়ে যান ৩০ ঘণ্টায়। যখন থেকে চক্র পালটে ৩০ এ চলে গেল তখন থেকে সূর্যমুখীদের মানিয়ে নিতে সমস্যা হতে লাগলো। তাদের আভ্যন্তরীণ সার্কাডিয়ান ঘড়িতে বিঘ্ন ঘটতে লাগলো।


একইসাথে সূর্যকে অনুসরণ করা এবং আভ্যন্তরীণ ঘড়ি মিলিয়ে চলা সম্ভব হয়ে উঠে না এদের বেলায়। তাই ৩০ ঘণ্টার চক্রে এরা তালগোল পাকিয়ে ফেলে। হয় ২৪ ঘণ্টার চক্রে সূর্যের আলো দাও নয় সারাদিনই দাও, এতে সমস্যা নেই, গাছেরা মানিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু বিভ্রান্তিমূলকভাবে ৩০ ঘণ্টা বা তার থেকে বেশি সময় ব্যাপী চক্র উপস্থাপন করলে তাতে খাপ খাইয়ে নিতে সমস্যা হবে।


মানুষের বেলাতেও এরকম হয়। কেউ যদি রাতের বেলায় সবসময় লাইট জ্বালিয়ে রাখে তাহলে তার চক্র ২৪ ঘণ্টায় সম্পন্ন না হয়ে ধীরে ধীরে ২৫ ঘণ্টায় আবর্তিত হয়। আজ ১১ টায় ঘুমালে আগামীকাল ১২ টায় ঘুমাবে। পরের দিন ১ টায়। এরকম করে এগোবে।
তবে এখানে একটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, চক্র হোক আর যাই হোক, ঠিক কোন কার্যপ্রণালীর উপস্থিতির কারণে গাছের এমন পূর্ব থেকে পশ্চিমমুখী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়?


গবেষকরা দেখতে পান এর পেছনে দায়ী আছে সূর্যমুখীর এক পেশে বৃদ্ধি। একপেশে বলতে বোঝানো হচ্ছে গাছের কাণ্ডের এক দিক অন্য দিকের চেয়ে বেশি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। দিনের বেলা কাণ্ডের পূর্ব পাশে তুলনামূলকভাবে বেশি বিভাজন হয়, ফলে বেশি বৃদ্ধি হয়। দুই দিকে একটা তারতম্যের সৃষ্টি হয় এবং এতে করে কাণ্ড পূর্বদিক থেকে ধীরে ধীরে পশ্চিমমুখী হয়। সন্ধ্যার পর থেকে আবার এই চক্র উল্টোভাবে সম্পন্ন হয়। কাণ্ডের পশ্চিম পাশের অংশ পূর্বপাশের তুলনায় বেশি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। ফলে ধীরে ধীরে কাণ্ড পূর্বমুখী হয়ে যায়। ভোর হবার আগেই এই চক্র সম্পন্ন হয়ে যায় এবং সূর্য উঠার সাথে সাথে নতুন আরেকটি চক্রের শুরু হয়।


এই চক্রের উপস্থিতির কারণে এরা কিছুটা সুবিধা পায়। গবেষকরা দেখেছেন যে সকল ফুলদেরকে ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রাখা হয় বা চক্রে বিঘ্ন সৃষ্টি করা হয় তারা স্বাভাবিকের চেয়ে শতকরা ১০ ভাগ ছোট হয়ে থাকে।


সূর্যের দিকে মুখ করে থাকার ফলে শুধু সূর্যমুখীই না, উল্লেখ করার মতো প্রায় সকল উদ্ভিদই সূর্যের দিকে মুখ করে থাকতে চায়। হয়তো সূর্যমুখীর মতো প্রতিদিন দিক পাল্টায় না কিন্তু সবসময়ই সূর্যের দিকে মুখ করে থাকতে চায়। উদ্ভিদের এই বৈশিষ্ট্যকে বলে আলোকমুখীতা বা Heliotropism। টবে গাছ লাগিয়ে ঘরে রেখে দিলে দেখা যাবে গাছগুলো জানালামুখী হচ্ছে। যেদিকে সূর্যের আলো আসে সেদিক দিয়ে বাড়তে চায় গাছগুলো। উদ্ভিদ সূর্যের আলোর মাধ্যমে কার্বন ডাই-অক্সাইড ও পানি ব্যবহার করে নিজেদের খাদ্য তৈরি করে।


তবে অন্যান্য উদ্ভিদগুলোতে সার্কাডিয়ান চক্র না থাকাতে সূর্যমুখীর মতো এরা দিন-রাতে নিজেদের অবস্থান পাল্টাতে পারে না।

বাগানের ভিডিও দেখতে ক্লিক করুনঃ
[yt|সুর্যমুখী ফুলের বাগান ভিডিও]


তথ্যসূত্রঃ
https://bn.vikaspedia.in/
https://bn.wikipedia.org
https://bangladeshtimes.com

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:১০

শায়মা বলেছেন: আমার প্রিয় ফুলদের একটা। যেমনই ভালো লাগা তেমনই প্রিয়তে এই পোস্ট!

০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:১৯

নিয়াজ সুমন বলেছেন: আপনার প্রিয় ফুলের বাগান এই প্রথম নিজ চোখে দেখে মুগ্ধ হয়েছি। দারুন ফুল।
আপনার জন্য সূর্যমুখীর হলদে শুভেচ্ছা রইলো আপুনি। :)

২| ০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৬

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




সূর্যমুখী ফুল আমার প্রিয় ফুল। আসলে ফুলের জন্য হয়তো প্রিয় না, আমার কাছে সূর্যমুখী প্রিয় তৈলের জন্য। পোস্টটি প্রিয়তে রাখছি। শুভ কামনা রইলো।

০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৮

নিয়াজ সুমন বলেছেন: আপনার সাথে একমত, এর তেলের দেখছি যতেষ্ট উপকারীতা আছে মানব দেহের জন্য। ‍কিন্তু দাম টা তুলনামুলক বেশি অন্য তৈলের চেয়ে।
ভাইয়া আপনার জন্যও শুভ কামনা।

৩| ০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৩০

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর।+

০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৩৩

নিয়াজ সুমন বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় কবি ভাইয়া।

৪| ০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:১৪

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: খুব সুন্দর পোস্ট।
আমার প্রিয় ফুল

জাজাকাল্লাহ খাইরান

০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:২৮

নিয়াজ সুমন বলেছেন: ধন্যবাদ ছবি আপু, এই ফুল দেখছি অনেকের কাছে প্রিয়।

৫| ০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: সূর্যমুখির তো গুনের শেষ নেই।

তবে এই ফুল মেয়েরা খোপায় পরতে পারে না।

০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:৪৮

নিয়াজ সুমন বলেছেন: তা ঠিক। তবে বেলকনিতে রেখে মেয়েরা অপরূপ সুন্দর উপভোগ করতে পারে...।

৬| ০১ লা মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:০১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আমার একটা লেখা আছে এই বগ্লে "সূর্যমুখী ও সময়ের শেষ সংলাপ "

০৩ রা মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:১২

নিয়াজ সুমন বলেছেন: ঠিক আছে, পড়ে দেখবো আপনার ব্লগ..।

৭| ০১ লা মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: তা ঠিক। তবে বেলকনিতে রেখে মেয়েরা অপরূপ সুন্দর উপভোগ করতে পারে...।

টবে এই ফুল হয়?

০৩ রা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১২:৫৩

নিয়াজ সুমন বলেছেন: সব ফুল যেহেতু হয়। িএটি ও না হওয়ার কিছু দেখি না। চেষ্টা করলে সম্ভব।

৮| ০১ লা মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫২

ওমেরা বলেছেন: ছবিতেই সূর্যমুখি ফুলের বাগান কত সুন্দর লাগছে আর বাস্তবে দেখতে না জানি কত সুন্দর।
সূর্যমুখির গুণকীর্তন ভালো লাগছে, তবে আমি আরো একটু বলি,
- সূর্যমুখীর বীজ পশুখাদ্য হিসেবে হাঁস মুরগিকে খাওয়ানো হয়।

সূর্যমুখি ফুলের বীজ শুধু পশু পাখি না, মানুষও খেতে পারবে ।

এটা আমার পড়ার টেবিলে এটা থাকে, এর প্যাকেট আমার ব্যাগে ও ।

০৩ রা মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:৩২

নিয়াজ সুমন বলেছেন: সুযোগ পেলে কখনো বাগান ঘুরে আসবেন। মুগ্ধ হওয়ার মতো।
এটির স্বাদ কেমন?
মিষ্টি কুমড়ার বীচির মতো না কি?
না অন্যরকম, ??

৯| ০২ রা মার্চ, ২০২১ রাত ৩:১৩

কাছের-মানুষ বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট। এই ফুলগুলো দেখতে অনেক ভাল লাগে।

০৪ ঠা মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:২৩

নিয়াজ সুমন বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আপনার মতো আমারও সেমই অনুভুতি ।

১০| ০২ রা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৪৪

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সূর্যমুখীর বাগানে কখনো যাওয়া হয়নি। দূর থেকে দেখেছি, কাছে যাওয়অর সুযোগ হয়নি। আপনার লেখা ও ছবি চমৎকার হয়েছে।

আপনার কালো রং এর মনোগ্রাম ছবির সৌন্দর্য কিছুটা ম্লান করেছে।

০৯ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:৫৭

নিয়াজ সুমন বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার পরামর্শের জন্য। পরবর্তীতে এই বিষয়টি লক্ষ্য রাখবো।

১১| ০৩ রা মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:৩৫

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আমি একটা সূর্যমুখী ফুলের ছবি দিয়েছি। কী সুন্দর কালার । অফিসের বাগান থেকে তুলছিলাম

০৯ ই মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:১৭

নিয়াজ সুমন বলেছেন: জি আপু, আপনার ছবি ব্লগটি ঘুরে এসেছি।

১২| ০৩ রা মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:৫৪

মিরোরডডল বলেছেন:




এই ফুলটা চারদিক আলোকিত করে রাখে ।
নামটা শুনলেই প্রিয় অভিনেত্রী সোফিয়া লরেনের সানফ্লাওয়ার মুভির লাভ থিমটা মনে পড়ে ।
থ্যাংকস নিসু ।






২৯ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৩:৩০

নিয়াজ সুমন বলেছেন: দুঃখিত অনেক দেরীতে উত্তর দিতে আসলাম।
নোটিফিকেশন সমস্যার কারণে এই মন্তব্যটি এতদিন দৃষ্টিগোচর হয়নি। :((

হুম। ফুলের সাথে এই ছবিটি মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।
ভালো থাকবেন। শুভেচ্ছা রইলো।

১৩| ০৬ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১:১৬

ঢুকিচেপা বলেছেন: বর্ণনাসহ ফুলের ছবি দারুণ হয়েছে।
অনেকদিন হলো আপনি অনিয়মিত কারণ কি ?

২৯ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৪:৫১

নিয়াজ সুমন বলেছেন: সাথে থাকার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা ।
মাঝে বেশ কিছুদিন অনিয়মিত ছিলাম।
তাই এই মন্তব্যের প্রতিউত্তর দিতে দেরী হলো..। :(( সরি আপু মনি।

এখন নিয়মিত আছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.