নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঐক্য এবং সংগ্রাম= মুক্তি

পাঠক লাল গোলদার

শোষণ-বৈষম্য হীন একটা মানবিক সমাজ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনে কাজ করি আমি। বুর্জোয়া আধিপত্যের বিপরীতে রাজেনৈতিক, সামাজিক, আর্থিক, সাংস্কৃতিক ও মনজাগতিক ক্ষেত্রে শ্রমিক কৃষক মেহনতী মানুষের পাল্টা আধিপত্য গড়ে তোলাই প্রথম কাজ।

পাঠক লাল গোলদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

আসাম সংকট!! রোহিঙ্গা সংকটের চেয়ে অনেক বড় সংকট কি বাংলাদেশের দুয়ারে???

৩০ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৫

আসামে ৪০ লাখ মানুষকে বাংলাদেশী সন্দেহে জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনের (এনআরসি) তালিকার বাইরে রাখা হয়েছে। আজ ৩০ জুলাই ২০১৮ বহুল প্রত্যাশিত এনআরসি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এনআরসিতে নাম নাই এর অর্থ হচ্ছে এই চল্লিশ লাখ মানুষ আর আসামের বা ভারতের নাগরীক নন, তারা বিদেশী। আর সহজ কথায় বললে তারা বাংলাদেশ থেকে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী। ১৯৭১-এর ২৪ মার্চকে এনআরসি তৈরির প্রক্রিয়ায় আসামে নাগরিকত্বের মানদণ্ড হিসেবে ধরা হয়েছে। অর্থাৎ যারা ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পরে আসামে প্রবেশ করেছেন তাদেরকে বিদেশী (বাংলাদেশী) হিসাবে চিহ্নিত করতেই এই এনআরসি। এখানে বিজেপির কথা উল্লেখ না করলেই নয়। আসামে বাংলাদেশী খেদাও আন্দোলন দীর্ঘদিনের হলেও এ নিয়ে সরকারী-বেসরকারী জোরদার তৎপরতা শুরু হয় মূলত ২০১৬ সালে। আসমের বিধানসভার নির্বাচনী প্রচরনায় বিজেপির রাজনৈতিক অঙ্গিকার ছিলো, ক্ষমতায় গেলে তারা আসাম থেকে বাংলাদেশিদের বের করে দেবে। নরেন্দ্র মোদি যখন নির্বাচনী প্রচারে আসামে আসেন তখনও জনসভাগুলোতে জোর গলায় আসাম থেকে বাংলাদেশী খেদানোর অঙ্গীকার করেন তিনি। বিজেপি বিপুল ভোটে নির্বাচনে জিতে আসামে সরকার গঠন করলে এনআরসি তৈরীর প্রক্রিয়া বেগবান হয়। শুধু একটু পার্থক্য হচ্ছে, বিজেপির আন্দোলনের মূল দাবী ছিলো মুসলমান বাংলাদেশীদের খেদানো। কিন্তু এনআরসি-তে হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে বাদ দেয়া হয়েছে যারা ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পর আসামে গিয়েছিলেন। কেনো এই ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ?? কারণটা বেশ সোজা! ২৫ মার্চ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে গণহত্যা শুরু করে এবং এর সাথে সাথে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ বাঁচাতে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিতে শুরু করে। মুক্তিযুদ্ধের কারণে যারা আসামে গিয়েছিলো এবং স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশে ফেরত আসে নি তাদেরকেই আসামের সরকার এখন বিদেশী তকমা দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর পাঁয়তারা করছে। অন্যদিকে মজার ব্যাপার হচ্ছে পাশের রাজ্য ত্রিপুরাতে এখন একই বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এবং সেখানের মূখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশী বাপ-মায়ের সন্তান বিপ্লব দেব। এই বিপ্লব দেবের বাবা-মা ৭১-এ বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বিপ্লব দেব তখন তার মায়ের পেটে। বিপ্লব দেবের কি সৌভাগ্য... আসামে জন্ম নিলে তিনি এখন বিদেশী (বাংলাদেশী) হিসাবেই পরিগণিত হতেন!

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশের এতে কি সমস্যা, কি আশঙ্কা!! কেউ কেউ বলবেন ভারত তো আর মায়ানমার না! হ্যা, এটা সত্য, ভারত আর মায়ানমায়ের মধ্যে রাজনৈতিক পার্থক্য অনেক! কিন্তু ‘পুসব্যাক’ শব্দটা জনপ্রিয় হয়েছিলো সেটা তো খুব বেশিদিনের কথা না। ভারতই তো শত শত বাংলাদেশিদের ধরে কাটাতারের বেড়া গলিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়ে পুসব্যাক শব্দটাকে জনপ্রিয় করে তুলেছিলো।

মিডিয়ায় খবর এসেছে, ইতিমধ্যে আসামে ৩০০ ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল খোলা হয়েছে ‘বিদেশিদের বিষয়ে। এসব ট্রাইব্যুনাল প্রায় ২০ হাজার ব্যক্তিকে বিদেশি (বাংলাদেশী) চিহ্নিত করার কাজ শেষ করেছে। আরও লাখ লাখ মোকদ্দমা সেখানে মীমাংসার জন্য ঝুলছে। ছয়টি কারাগারে বিদেশিদের আটক রাখার জন্য যে ডিটেনশন সেন্টার রয়েছে, সেগুলো ইতিমধ্যে উপচে পড়ছে। কেন্দ্রীয় সরকার নতুন ডিটেনশন সেন্টার খোলার জন্য বড় আকারের বরাদ্দ দিয়েছে।

আসামে বাংলাদেশী বিরোধী হাওয়া বেশ জোরালো। লক্ষ লক্ষ অসমীয়া বাংলাদেশীদের খেদাতে চায়। যদি বাংলাদেশী বিরোধী অসমীয়ারা লুটপাট শুরু করে, নির্যাতন শুরু করে, এনআরসিতে যাদের নাম নাই তাদের চিহ্নিত করে হয়রানী শুরু করে?? প্রাণের ভয়ে, নির্যাতন-হয়রানী-ডিটেনশনের ভয়ে যদি হাজার হাজার মানুষ আবারও কক্সবাজার সীমান্তে রোহীঙ্গাদের মতো আসাম-বাংলাদেশ সীমান্তে এসে জড়ো হয়?? বাংলাদেশ কি তাদের আশ্রয় দিবে না?? রোহিঙ্গাদের তো কোন ব্যাখায়ই বাংলাদেশী বলা যায় না। কিন্তু আসামের এই বিদেশীরা তো বাংলাদেশের বা বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত! ১০ লাখ রোহিঙ্গাদের থাকার জায়গা দেয়া যাচ্ছে না, ৪০ লাখ অসমীয়া বাংলাদেশীর কি হবে???

আমার মনে হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগে বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ এব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে বিষয়টা নিয়ে গুরুত্বের সাথে আলোচনা করা এবং সম্ভব হলে এব্যাপারে যৌথ কোন এগ্রিমেন্টে আসা। আসামের বাংলাদেশী বিরোধী সমস্যাটা বহুদিনের। তাই এর স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন এবং এর সাথে বাংলাদেশের স্বার্থও জড়িত। একমাত্র ভারত-বাংলাদেশ সরকারের যৌথ আন্তরিক প্রচেষ্টাই পারে এই সমস্যার সঠিক সমাধান করতে।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৫২

আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেছেন: Click This Link

২| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


বিশ্বের যে কোন দেশ থেকে কোন হিন্দু ভারতে প্রবেশ করলে, ভারত তাকে নাগরিকত্ব দেয়; ৪০ লাখে কতজন মুসলমান?

৩| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৩

ঢাকার লোক বলেছেন: এ এক আশনি সংকেত ! লেখকের সাথে সহমত, বাংলাদেশ সরকারের উচিত জরুরি ভিত্তিতে ভারত সরকারের সাথে এ বিষয়ে একটা সুষ্ঠ সমাধানের চেষ্টা করা ।

৪| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


@ঢাকার লোক ,

এটা বাংলাদেশের সমস্যা নয়, এটা ভারতীয় ফেডারেল সরকার ও প্রাদেশিক সরকারের মধ্যে সমস্যা; কিছু একটা দেখে ভুত ভুত করাটা রাজনৈতিক ভাবনার মাঝে পড়ে না।

৫| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২০

হাঙ্গামা বলেছেন: ৪০ লাখকেই সাদরে গ্রহন করে গেরিলা ট্রেনিং দেয়া হোক।
এরা যুদ্ধ করে পশ্চিম বাংলা দখল করবে।
এতে বাংলাদেশ ও আয়তনে বাড়বে, ওরা ও নিজের স্থলে ফেরত যেতে পারবে।

৬| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


@হাঙ্গামা বলেছেন, "
৪০ লাখকেই সাদরে গ্রহন করে গেরিলা ট্রেনিং দেয়া হোক।
এরা যুদ্ধ করে পশ্চিম বাংলা দখল করবে।
এতে বাংলাদেশ ও আয়তনে বাড়বে, ওরা ও নিজের স্থলে ফেরত যেতে পারবে। "

-বিএনপি উলফাকে সাহায্য করেছিলো, তারেক উলফার সাথে অস্ত্র ব্যবসা করেছিলো; ফলাফল আপনি দেখেছেন, নাকি মাথায় ঢোকেনি?

৭| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩০

আল আমিন সেতু বলেছেন: বাংলাডেশ তো মুলত ভারতের ই কলোনি। অতএব অসমীয়া বাংগালিদের দেশ থেকে বের করে দেওয়ার দরকার কী

৮| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: বাংলাদেশের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির যে হাল, তাতে এই অসমিয়া বাঙালিদের গ্রহন করতেই হবে। প্রতিবাদ করে কোন লাভ হবে না। আর বর্তমান সরকার প্রতিবাদই করবে না। ভারত এসব জানে।

৯| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৩

ঢাকার লোক বলেছেন: গাজী ভাই, আমি কোনো রাজনীতি বা পার্টি করিনা, তাই যা লেখা হয়েছে তা ই সহজ ভাবে নিয়ে লেখকের লেখায় দেখেছি নরেন্দ্র মোদী নিজেও আসামে নির্বাচনী প্রচারে বাঙালি খেদানোর আহবান করেছেন । এবিষয়ে আমি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এবং আসামের প্রাদেশিক সরকারের মাঝে কোনো বিরোধ দেখি নি বরং অভিন্ন মিলই দেখেছি, তাই বের করতে হলে ভারতের অন্য প্রদেশে বাঙালিদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে এমন ধারনা করা অবাস্তব মনে হয়েছে, বাকি একটাই পথ, ঠেলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া! কাজেই বাংলাদেশের এ বিষয়ে আগে ভাগে সতর্ক হওয়া এবং এবিষয়ে ভারতের সাথে আলোচনা করে একটা সুষ্ঠ সমাধানের চেষ্টা করায় ক্ষতি কি ? ধন্যবাদ

১০| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মাথা নত করা পররাষ্ট্রনীতিতে আর কি করবে! দাদা দাদা বলে গ্রহণ করবে!

আর সরকারেরতো এই ব্যাপারে মাথা ব্যাথা নেই বলেই মনে হচ্ছে! থাকলেতো আন্ত: রাষ্ট্রীয় কুটনীতি বহু আগে থেকেই চলমান থাকার কথা!
আর সুবিধাভোগীরা যদি আবার ইউএন ফান্ডের লোভে উনাকে মানবতার মাতা ঘোষনা করায়ে গ্রহণ করে নেয়! তবেতো লে হালুয়া!
অতি চালাকিতে মিয়ানমার নিয়ে এখন যেমন গলার কাটা- আরো বড় কাটা হবার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে!

দেখা যাক কোথাকার জল কোথায় গড়ায়!
নাকি অতি বাড় বাড়তে বাড়তে বিজেপি ভারতকেইনা আবার ৪৭এর পথে ঠেলে দেয় কে জানে???

১১| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪০

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:


এতো সহজ নয় যত সহজ করে বলা হচ্ছে!

১২| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:০৬

বনসাই বলেছেন: আজ কেন এপ্রিল মাস হবে!

৩১ শে জুলাই, ২০১৮ ভোর ৪:৩৮

পাঠক লাল গোলদার বলেছেন: বনসাই, ভুলটি ধরিয়ে দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ! আমি এখনই এডিট করে দিয়েছি। চিন্তা করছি... জুলাইকে এপ্র্রিল লিখলাম কিভাবে!!

১৩| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:১৫

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: আপনি যেমনটা বলেছেন এমন হলে সত্যিই ভয়ের ব্যাপার, আমাদের সরকারকে আগে থেকেই সতর্ক থাকতে হবে।

১৪| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: ১৯৬২ সালে আমার নানা নানীকে আসাম থেকে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছি।
তারা তড়িঘড়ি করে ব্যবসা বানিজ্য ফেলে, বাড়ি ঘর ফেলে চলে এসেছিল।

১৫| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:১১

প্রামানিক বলেছেন: বাঙালি খেদাও আন্দোলন ব্রিটশ আমলের, সেই সময়ে হাতি দিয়ে অহমীয়রা বাঙালিদের ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়েছিল। ভাসানি তখন তাদের এই জঘন্য অত্যাচারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন। এখনতো আর ভাসানী নাই এখন প্রতিবাদ করবে কে?

১৬| ৩১ শে জুলাই, ২০১৮ ভোর ৪:৪৭

খনাই বলেছেন: দশ নং বিপদ সংকেত কিন্তু এটা হতেই পারে I @ বিদ্রোহী ভৃগু, বিদ্রোহের কোনো লাশ না থাকলেও আপনার মন্তব্যটা ঠিক আছে I দাদা দাদা করে লিয়ে লেব আমরা প্রসাদ সব !!!

১৭| ৩১ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৮:৪৩

প্রশ্নবোধক (?) বলেছেন: কিছুদিন আগে পত্রিকায় দেখলাম, ফিলিপাইনের এক মহিলার ডেড বডি পাওয়া গেছে কুয়েতের এক বাড়িতে। তাতেই পুরো ফিলিপাইন আন্দোলিত হয়েছে। রাষ্ট্রিয় ভাবে প্রতিবাদ করা হয়েছে।

বুঝে নেন আমরা কোন দেশে বাস করি????

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.