নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

.

ইতিহাসের পাতিহাঁস

ইতিহাসের পাতিহাঁস › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডেস্টিনি ডিসরাপ্টেড- মুসলিম বিশ্ব ইতিহাস (০১৩)

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:১৪

খিলাফত এর জন্ম (৫)
দ্বিতীয় খলিফা
১৪ – ২৪ হিজরি

খলিফা ওমর (র) কে লোকজন 'আমিরুল মু'মিনিন' (বিশ্বাসীদের নেতা) বলে সম্বোধন করতে শুরু করে। পরবর্তিতে সব খলিফার নামের সাথেই এই পদবীটি স্থায়ীভাবে জুড়ে যায়। এই শব্দটি তাঁর রাজনৈতিক এবং সামরিক এই দুই ধরনের নেতৃত্বকে একত্রে ধারন করে। সামরিক কৌশলবিদ (স্ট্রাটেজিস্ট) হিসাবে ওমরের তুলনা হতে পারে আলেকজান্ডার এবং জুলিয়াস সিজারের সাথে। কিন্তু তিনি ঠিক কোথা থেকে এই বিদ্যা শিখলেন তা পরিষ্কার না। ইসলামের আবির্ভাবের আগে তিনি একজন সাধারন বণিক ছিলেন। ইসলামের প্রাথমিক দিকের ঐতিহাসিক যুদ্ধগুলোতে (বদর, উহুদ ইত্যাদি) তিনি অংশ নিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু শুধুমাত্র সামরিক দিক দিয়ে বিবেচনা করলে সেগুলো খুব জটিল কোনও যুদ্ধ ছিল না। এখন হঠাৎই দেখা গেল তিনি সারা পৃথিবীর মানচিত্র বিশ্লেষন করছেন, সাসানিদ এবং বাইজান্টাইনদের সৈন্য সামন্তের গতিপ্রকৃতি হিসাব করছেন, ভূগোলবিদ্যার আলোকে যুদ্ধকৌশল বিচার করছেন, কোন স্থানে শত্রুর মুখমুখি হওয়া ভাল হবে আর কোন এলাকা থেকে পিছিয়ে আসাটা কৌশলী হবে সেটা স্থির করছেন। হটাৎ করেই যেন তিনি হয়ে গেলেন আন্তর্জাতিক লেভেলের খেলোয়াড়।

সৌভাগ্যক্রমে সেই ঐতিহাসিক সময়ে উম্মাহর মাঝে বেশ কয়েকজন তুখোড় সেনাপতির এক অসাধারন সম্মিলন ঘটে। যেমন- রি’দা যুদ্ধের নায়ক খালিদ-বিন-ওয়ালিদ, মিশর বিজেতা আমর ইবনে আল-আ’স, এবং সা’দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস, যিনি ফার্সিদের পরাজিত করেছিলেন।

দায়িত্ব নিয়েই ওমর একটি বিশেষ সামরিক অভিযান সমাপ্ত করেন যেটা আবু বকর (র) শুরু করে গিয়েছিলেন। আবু বকর এর সময় আরবের সংঘাতময় পরিস্থিতির সুযোগে বাইজান্টাইনরা সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ করেছিল। তাদের মতলব ছিল গণ্ডগোলের সুযোগে এই এলাকাটি দখল করে নেয়া। তাদেরকে প্রতিহত করার জন্য আবু বকর একটি সেনাদল প্রেরণ করেছিলেন এবং তাঁর মৃত্যুর আগেই মুসলিমরা বাইজান্টাইনদের তাদের নিজেদের এলাকায় ভাগিয়ে দিতে পেরেছিল। ওমর খলিফা হওয়ার পরেই মুসলিমরা দামাস্কাস শহর (আজকের সিরিয়ার রাজধানী, তখনকার দিনে বাইজান্টাইন এলাকা) অবরোধ করে। এরপর থেকে মুসলিমরা বাইজান্টাইনদের দৌড়ের উপর রাখে এবং ৬৩৬ খৃষ্টাব্দে ইয়ারমুক নামক স্থানে (আজকের দিনের সিরিয়া এবং জর্ডানের সীমান্তে) বাইজান্টাইনদের মুল সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করে দেয়।

ভিডিওতে দেখুন ইয়ারমুকের যুদ্ধ যেখানে হয়েছিল।

অন্যদিকে পূর্বদিক থেকে পারসিয়ান সাসানীদরাও বিকাশমান এই মুসলিম সম্প্রদায়কে ধ্বংস করার লক্ষ্যে তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। এই কাজে তারা গুপ্তচর এবং উস্কানিদাতাদের নিয়োগ করেছিল। একজন একজন করে পারসিয়ান এজেন্ট পাকড়াও করার বদলে ওমর এই সমস্যার মূলোৎপাটন করার সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি মুসলিমদেরকে আহবান করলেন সাসানীদ সাম্রাজ্যের পতন ঘটানোর। তখনকার বস্তবতায় এ ছিল এক অবিশ্বাস্য দুঃসাহসিক চিন্তা: অনেকটা পিপড়ারা যদি এক বড়সড় কুকুরকে ফেলে দেয়ার কথা চিন্তা করে তার মতোই।

১৫ হিজরীর দিকে কাদিসিয়া নামে এক শহরের কাছে ত্রিশ হাজার যোদ্ধার এক আরব সেনাদল ষাট হাজার সুপ্রশিক্ষিত সৈন্যের এক সাসানিদ বাহিনীর মুখোমুখি হয়। দুই দলের মাঝখানে ছিল শুধু একটা নদী। আরব সেনাপতি ওয়াক্কাস বেশ কয়েকবার সাসানিদ সেনাপতি রুস্তম এর সাথে নেগোশিয়েট করার জন্য দূত প্রেরণ করেন। কথিত আছে যে সেই দূতদের একজনকে জেনারেল রুস্তম জিজ্ঞাসা করলেন যে তিনিই মুসলিম সেনাদলের নেতা কি না।

মুসলিম দূতঃ নাহ, আমরা মুসলিম, আমাদের মধ্যে কোন উচ্চ বা নিম্ন পদস্থ বলে কিছু নেই।

রুস্তমঃ দেখ আমি জানি তোমরা আরবরা গরীব আর ভুখা। তোমরা নিশ্চয় নিরুপায় হয়েই চারিদিকে দাংগা হাঙ্গামা করে বেড়াচ্ছ। আমার কথা শোন, তোমাদের প্রত্যেককে আমি দুই সেট করে কাপড় আর এক ব্যাগ করে খেজুর দেব। তাহলে কি তোমরা যেখান থেকে এসেছ সেখানে ফেরত যাবে?

মুসলিম দূতঃ আমরা আপনার কাছ থেকে কিছু নিতে এখানে আসিনি। আমরা আপনাকে দিতে এসেছি- ইসলাম। আপনি দোজখের পথে চলেছেন, আমরা আপনাকে জান্নাতে যাওয়ার পথ দেখিয়ে দিতে চাই।

রুস্তম শুধু হাসলেনঃ তোমাদেরকে দেখে আমার সেই ইঁদুরটির কথা মনে পড়ে, যে কিনা দেয়ালের একটা ছিদ্র দিয়ে শস্য গুদামে ঢুকে পড়েছিল। সে যতক্ষণ পারল খেতেই থাকলো। যখন সে আর খেতে পারছিল না তখন সে চাইল বের হয়ে যেতে। কিন্তু এত বেশী খেয়ে সে মোটা হয়ে গিয়েছিল তাই সে দেয়ালের ছিদ্র দিয়ে বের হতে পারল না। তার লোভের কারনে সে গুদামে আটকা পড়ল আর বিড়াল এসে তাকে মেরে ফেললো। তোমরা লোভী আরবরা ঠিক সেরকমভাবেই আমাদের শস্যগুদামে ঢুকেছ এবং ফাঁদে পড়েছ। তোমাদের সবার মৃত্যু হবে এখানেই।

নানান বাতচিতের একপর্যায়ে মুসলিমরা রুস্তম কে বলল – ‘ঠিক আছে, আপনি যদি ইসলাম গ্রহণ না করতে চান, তাহলে আমাদেরকে ট্যাক্স (জিজিয়া) পরিশোধ করেন। তাহলে আর আপনার কোন ক্ষতি করা হবে না’।

'ক্ষতি'? 'ট্যাক্স'? - রুস্তম ব্যঙ্গ করে বললেন। তিনি তার কর্মচারীদের বললেন মুসলিমদের হাতে এক ব্যাগ ধুলা ধরিয়ে দিতে, যার মাজেজা হলো- 'এই ধুলায় তোদের কবর হবে'।

কিন্তু মুসলমানরা আনন্দের সঙ্গে সেটি গ্রহণ করেন- 'আপনি আমাদেরকে আপনার মাটি (রাজ্য) দিতে চান? আমরা নিলাম'!

গুগল ম্যাপঃ কাদিসিয়া-র অবস্থান ইরাকের রাজধানী বাগদাদ থেকে ২০০ কিঃমিঃ দক্ষিণে।

উভয় পক্ষই তারপর যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হল। লোভী-ইঁদুরের গপ্প ফাঁদা সত্ত্বেও, নদী পেরিয়ে মুসলিমদের আক্রমণ করার ভুলটি রুস্তম নিজেই করলেন। ফলে তার বাহিনীর পিছন দিকে সরে যাওয়ার কোনো সুযোগ থাকলো না। কাদিসিয়ার যুদ্ধ চার দিন স্থায়ী হয়েছিল- পার্সিয়ানরা হাতির পিঠে আর আরবরা উটের। তৃতীয় দিনে যুদ্ধ সারারাত ধরে চলে এবং চতুর্থ দিনে যখন সাসানিদরা হাল ছেড়ে দিল তখন তাদের হাজার হাজার নাস্তানাবুদ যোদ্ধা সাঁতার দিয়ে নদী পার হয়ে পালানোর চেষ্টা করে এবং ভারী বর্মের কারনে ডুবে মারা যায়।

যোদ্ধাদের পাশাপাশি বেশ কিছু কবি (মহিলা সহ) এই যুদ্ধের ময়দানে গিয়েছিল। তারা বেশ সমৃদ্ধ এক গল্পের ভাণ্ডার নিয়ে এই যুদ্ধের ময়দান থেকে ফেরত গিয়েছিল, এইসব কাহিনী কাদিসিয়া-কে পৌরাণিক লেভেলে নিয়ে যায়, অনেকটা গ্রীক উপকথার ট্রয়ের যুদ্ধের মতো (আলবৎ, তুলনামুলকভাবে কাদিসিয়ার যুদ্ধটি ছিল স্বল্পস্থায়ী)।
[লোকজন কাদিসিয়ার যুদ্ধের স্টেপ বাই স্টেপ অগ্রগতি নিয়ে স্লাইড শো ও বানায় ফেলছে, এখানে দেখতে পারেনঃ
view this link]

অনেক কাহিনীর একটি কাহিনী এরকম- জয় নিশ্চিত হওয়া মাত্রই সুসংবাদটি নিয়ে এক ঘোড়সওয়ার বার্তাবাহক আরবের দিকে রওয়ানা দিল। মদিনার উপকণ্ঠে আসার পর রাস্তার পাশে এক লোকের সাথে তার দেখা হল- সাদাসিধা লোক, যার পরনে ছিল তালি দেয়া কাপড়। লোকটি তাকে জিজ্ঞেস করল যে সে কাদিসিয়া থেকে আসছে কি না। 'হ্যা', বার্তাবাহক বলল। 'খবর কি, খবর কি?' বয়স্ক ব্যক্তিটি ব্যাস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করল। থামার সময় নাই- বলে বার্তাবাহক চলতে থাকলো। বৃদ্ধ লোকটি তার পিছন পিছন ছুটতে থাকলো আর প্রশ্ন করতে থাকলো। শহরে ঢোকার গেটে ঘোড়সওয়ারকে দেখে কিছু লোকজন জড়ো হল। 'আমার সামনে থেকে সরে যাও, এই মুহুর্তে আমাকে খলিফার সাথে দেখা করতে হবে। খলিফা ওমর কোথায়'? এ কথা শুনে লোকজন হাসিতে ফেটে পড়ল- 'ওই যে তোমার ঠিক পিছনের বৃদ্ধ লোকটাই খলিফা'।

এমনই আড়ম্বরহীন ছিলেন ওমর, লিজেন্ড তাই বলে।

কাদিসিয়ার পরে আরবরা সাসানিদ রাজধানী সেতিফন বিজয় করে, এরপর তারা শত শত বছরের পুরনো সাসানিদ সাম্রাজ্যের অন্যান্য অংশ দখল করতে করতে এগিয়ে যেতেই থাকে। তিন বছরের মধ্যে তারা সাসানিদ সাম্রাজ্য পুরোটাই দখলে নিয়ে নেয়। অথচ এই সাসানিদরাই শত শত বছর ধরে রোমান সাম্রাজ্যের সাথে পাল্লা দিয়ে টিকে ছিল।

ওদিকে অন্যান্য আরব সেনাদল ভূমধ্যসাগর উপকূল ধরে বাইজান্টাইনদেরকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল, মিশরের মধ্য দিয়ে একেবারে উত্তর আফ্রিকার ভিতর পর্যন্ত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিজয় ছিল জেরুজালেম, যেটা মক্কা ও মদিনার পর মুসলিমদের কাছে তৃতীয় পবিত্র স্থান। ওমরকে নিয়ে বিখ্যাত কাহিনীগুলোর একটি এই জেরুসালেম বিজয়ের পরবর্তী ঘটনা নিয়েই। জেরুসালেমের আত্মসমর্পণের সময় উপস্থিত থাকতে খলিফা একজন ভৃত্য সাথে নিয়ে রওয়ানা দিলেন। তাদের বাহন বলতে ছিল একটিমাত্র গাধা। তাই তারা পালা করে হেঁটে এবং গাধায় চড়ে যাচ্ছিলেন। যখন তারা জেরুসালেম পৌঁছালেন তখন ভৃত্যটি ছিলেন গাধার পিঠে আর ওমর হাঁটছিলেন। সেখানকার মানুষ ওমরের ভৃত্যকে খলিফা ভেবে সম্ভাষণ জানানো শুরু করল। তখন তাদেরকে বলে দেয়া লাগল যে হেঁটে আসা ব্যাক্তিটিই খলিফা।

সেখানকার খ্রিস্টানরা মনে করল বিজয়ের নিশানা হিসাবে মুসলিমদের খলিফা হয়ত তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চার্চটিতে মুসলিম কায়দায় প্রার্থনা করতে চাইবেন। কিন্তু তিনি কোন চার্চ-এ ঢুকতেই অস্বীকৃতি জানালেন এই বলে যে, আজকে আমি যদি এটা করি তবে ভবিষ্যতে কোন মুসলিম এটাকে উদাহরণ হিসাবে দেখিয়ে এই ভবনটি দখল করে নেবে আর একে একটি মসজিদে রুপান্তরিত করবে। আমরা এ ধরনের কোন কিছু করতে এখানে আসিনি। মুসলিমরা এসব করেনা। তোমরা নিজেদের মত করে থাকো এবং উপাসনা চালিয়ে যাও। শুধু এটা জেনে রাখো যে এখন থেকে আমরা মুসলিমরা তোমাদের মাঝেই বাস করবো এবং নিজেদের মত করে উপাসনা করবো। আমরা উত্তম উদাহরন স্থাপন করে যাব। সেটা যদি তোমাদের ভাল লাগে তাহলে আমাদের সাথে যোগ দিতে পার। নাহলে নাই। আল্লাহ আমাদেরকে বলেছেন যে ধর্মের ব্যাপারে জোর করা যাবে না।

পরবর্তীতে মুসলিমদের সাথে তাদের বিজিত ভূখণ্ডসমূহের বাসিন্দাদের সম্পর্কের প্রকৃতি কিরকম হবে তার নকশা তৈরি হয় জেরুজালেমের প্রতি ওমরের ট্রিটমেন্ট থেকে। খৃস্টানরা দেখল যে মুসলিম শাসনামলে তাদেরকে জিজিয়া নামক একটি বিশেষ কর দিতে হবে- এটি হল খারাপ সংবাদ। আর ভাল সংবাদ হল এই যে- আগের বাইজান্টাইন শাসকদেরকে যে কর তারা দিত তার তুলনায় জিজিয়া করের পরিমান ছিল কম। তার উপর বাইজান্টাইন শাসকরা তাদের ধর্মীয় কর্মকান্ডে খবরদারি করত, কারণ নিজেরা খৃষ্টান হওয়াতে খৃষ্ট ধর্মের বিভিন্ন মাজহাবের মধ্যে বিশ্বাস এবং আচারের পার্থক্যগুলো তাদের কাছে ম্যাটার করত। অন্যদিকে মুসলিমদের এসব নিয়ে কোনো মাথাব্যথা ছিল না- তাদের কাছে এরা সবাই ছিল নিছকই খ্রিস্টান। কম কর আর বেশি ধর্মীয় স্বাধীনতা- দুইয়ে মিলে মুসলিম শাসন সেখনকার অধিবাসীদের কাছে বেশ ভাল ডিল-ই মনে হল। এ কারণে প্রাক্তন বাইজান্টাইন এলাকায় মুসলিমদেরকে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিরোধের মুখোমুখি হতে হয়নি বললেই চলে। এমনকি অনেক সময় খৃস্টান আর ইহুদিরা বাইজান্টাইনদের বিরুদ্ধে মুসলিমদের হয়ে যুদ্ধে যোগ দিয়েছে।


শুরুর পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আগের পর্ব এখানে
পরের পর্ব এখানে

[তামিম আনসারী’র Destiny Disrupted: A History of the World Through Islamic Eyes বইয়ের অনুবাদ।
https://www.goodreads.com/book/show/6240926-destiny-disrupted
https://www.amazon.com এ প্রিভিউ এবং রিভিউ দেখতে।]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.