নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"মস্তিষ্ক বিকৃত, কিন্তু বিক্রীত নয়\" (never care for what they say......)

পুরোনো পাপী

"তোমার মনের মইধ্যে আলেকের বাস, সে না কাউরে শোনে, না কাউরে বোঝে। তুমি যা বোঝাও সে তাই বোঝে।"

পুরোনো পাপী › বিস্তারিত পোস্টঃ

"কে বলে মানুষ মরে?"

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৩৬

মানুষ মরে নাকি?? মাঝে মাঝে মরার পরের অবস্থা জানার ইচ্ছা হয় আমার। মৃত্যু আর জীবনের মাঝামাঝি কোন কিছু কি আছে কিনা সেইটাও জানিনা। আসলেই কি কিছু আছে কিনা তা জানার ইচ্ছাও যে হয় না সেই ব্যাপারেও অস্বীকার করতে পারব না। কিংবা মৃত্যুর পর মানুষের অবস্থা কি হয়? আত্মার কি আসলেই মৃত্যু ঘটে? না ঘটলে আত্মাগুলো কোথায় যায়? কোথাও না গেলে কি এই বিশ্বব্রক্ষ্মান্ডেই ঘুরতে থাকে? কি হয় আসলে এর পর? তা জানতে হলে নিজেকে একবার মরে দেখতে হবে সম্ভবত। সেই ইচ্ছাও যে হয়নি তা ভুল, কিন্তু সাহস সঞ্চয় করা আসলে সহজ ব্যাপার না।
একটা গান মাথায় ঢুকার পর ইচ্ছাগুলো আবারো মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে।

//কে বলে মানুষ মরে
মানুষ মরলে পরে বিচার হবে তার
ওরে ক্ষ্যাপা আমি বুঝলাম না ব্যাপার//


মানুষের সকল কৃতকর্মের বিচার হওয়ার কথা সৃষ্টিকর্তার দরবারে। মানুষ যদি মরেই তবে বিচার হওয়ার জন্যে আসলেই অবশিষ্ট্য কি থাকবে? তার মানে দাড়াচ্ছে মানুষ মরলেও সেই মৃত্যু পুরোপুরি ডিসল্ভ হয়ে যাওয়া নয়। পুরোপুরি হারিয়ে যাওয়া নয়। মৃত্যু শুধুই দেহের। কিন্তু এইখানেও যদি দেহের মৃত্যু ঘটে তবে শাস্তির জন্যে অবশিষ্ট্য কি থাকে আর? কারণ ধর্মগ্রন্থ গুলোর অনুসারে দৈহিক শাস্তির কথাই বলা হয়েছে প্রতিবার প্রতি স্থানে। তবে মৃত্যু ঘটে কার??


//পরম থাকে নিরাকারে
খেলছেন খেলা নীরে তে
জীবাত্মা জীবিত থাকে
পরম আত্মার জোরে তে
আদি সত্য পরম যিনি
জীব দেহ চালাচ্ছেন তিনি
জন্ম মৃত্যু নাম ধরিয়া
চালাইছেন কোন কারবার//


এখানে প্রথমেই একটা কথা বলে নেই। ইসলাম ধর্মের অনুসারে আল্লাহ তায়ালার বানী "আমি এই বিশ্ব ব্রক্ষ্মান্ড খেলাচ্ছলে সৃষ্টি করি নাই"। এই কথার জের ধরে অনেকেই বাংলা অনেক রচনায় রূপক শব্দ খেলা কে সৃষ্টি কর্তার কথার সাথে সাঙ্গঘর্ষিক দাবী করেন। কিন্তু এই ধরণের প্রতিটা গান বা রচনার "খেলা" শব্দটি রূপক অর্থেই ব্যাবহৃত।
এখন আসি পরমাত্মা আর জীবাত্মার ব্যাপারে। পরমাত্মা হচ্ছেন সৃষ্টিকর্তা। তিনি নিরাকারে বাস করেন। আর জীবাত্মা মানুষের অন্তরাত্মা যা একমাত্র পরমাত্মার চাহিদাতেই বিদ্যমান। পরমাত্মা নিরাকারে আছেন ঠিকই কিন্তু সৃষ্টির সকল কিছুই তার ঠিক করা, তার রচিত খেলার অংশই সকল কিছু। সব কিছু যদি সৃষ্টিকর্তারই খেলার অংশ হয়ে থাকে তবে জন্ম মৃত্যু নামক খেলার কি দরকার? আর যদি সকল কিছুই তার নিজের মতই সাজানো থাকে তবে সেখানে মানুষের বিচার কার্য্যের কি দরকার?


//পঞ্চ আত্মা পঞ্চ রূহু
হিসেবে তে পাওয়া দায়
ওরে একের হতে দুইয়ের জন্ম
পরম আত্মার মরণ নাই
পরম আত্মার কর্ম লইয়া
জীব দেহ যায় বিলীন হইয়া
ওরে এমন সোনার দেহ খানি
হইয়া যায় বেকার//



এইখানে এসেই সবচাইতে কঠিন ব্যাপার গুলো আরো কঠিনতর হচ্ছে।

আত্মার প্রকারভেদ করলে আমরা পাই,
আত্মা পাঁচ (৫) প্রকার- ১.ভূতাত্মা (পঞ্চভূত) ২.মানবাত্মা (মন), ৩.মহাত্মা (জ্ঞান) ৪.জীবাত্মা (সাঁই) ও পরমাত্মা (কাঁই)।

এছাড়া নিম্নরূপেও আত্মার বিভাগ করতে দেখা যায়।
(ক) ১.ক্ষিতি ২.অপ ৩.তেজ ৪.মরুৎ ও ৫.ব্যোম (সংস্কৃত)।
(খ) ১.পরমাত্মা ২.ভূতাত্মা ৩.জীবাত্মা ৪.প্রেতাত্মা ও ৫.গোআত্মা (বাউল)।
(গ) ১.আগুন ২.জল ৩.মাটি ৪.বাতাস ও ৫.বিদ্যুৎ (আত্মতত্ত্ব)।
(ঘ) ১.পরমাত্মা ২.ভূতাত্মা ৩.জীবাত্মা ৪.আত্মারাম ও ৫.আত্মারামেশ্বর (পুরাণী)।
(ঙ) ১.রুহে জিসমানি (رُوحِ ﺟﺴﻤﺎﻨﻰ) ২.রুহে সুলত্বানি (رُوحِ ﺴﻟﻄﺎﻨﻰ) ৩.রুহুল আমিন (رُوحٌ ﺍﻟﻤﻴﻦ) ৪.রুহুল কুদুস (رُوحٌ ﺍﻟﻘﺪﺲ) ও ৫.রুহুল্লাহ (رُوحٌ ﺍﻠﻟﻪ) (কুরানী)।


এখানে আসলে আসলে পরমাত্মা আর জীবাত্মা তাদের জট খোলা শুরু করে আসলে। প্রথমে সকলকে কিছুটা কনফিউজড করতে চাইছিলাম কারণ এই কনফিউশনটা আমার বহুদিন ছিল যতদিন না আত্মার প্রকারভেদ জানা ছিল।
জীবাত্মা হচ্ছে মানুষের আত্মা। একেই সাঁই বলা হয় কারণ "সকলের মনের মধ্যেই আলেকের বাস" খুজে পেতে হয় শুধু। মানুষ মরলেও আত্মার মরন হয়না। আর পরমাত্মা সৃষ্টিকর্তা। পরমাত্মার জোরেই সকল জীবাত্মার বেঁচে থাকা। সকল কিছুর জন্মই এক থেকে। দুই হতে হলে যেমন একের প্রয়োজন তেমনি তিন, চার, পাঁচ যদি ব্যাপার গুলোকে রূপকার্থে চিন্তা করি একের হতেই সকল কিছুর জন্ম হয়। তাই বলা হয়েছিল, "পঞ্চ আত্মা পঞ্চ রূহ হিসেবেতে পাওয়া দায়" হিসেব করে আসলে আত্মা বা রূহ এর হিসাব মিলানো সম্ভব হয়। কিন্তু এই টুকু তো আমরা বুঝতেই পারি যে সকল কিছুর সৃষ্টির আদি থেকে। আর আদিতে আছে একমাত্র ১ বা শুরু। যেহেতু সকল কিছুর মূলেই পরমাত্মা জীবাত্মাও জীবিত থাকার একমাত্রই পরমাত্মা। পরমাত্মার জীরেই সকল কিছুর বা সকল জীবের জীবিত থাকা। কিন্তু আবারো যদি সেই একই জায়গায় ফেরত যাই, মৃত্যু কিভাবে ঘটে? বা কেন ঘটে?
"পরমাত্মার কর্ম লইয়া জীবদেহ যায় বিলীন হইয়া" জীব দেহ বিলীন হয়ে যায় কিন্তু তার কর্মবিলীন হয়না এবং সেই কর্মের মূল পরমাত্মাই। অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা সকল কিছুর জন্যে দায়ী। দায়ী করছি সেইটা একান্তই আমার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। কারো যদি দায়ী করার ইচ্ছা না থাকে তবে তার কথা আলাদা। ব্যাক্তিগত ব্যাপার সম্পর্কে ঘাটাঘাটি না করার অনুরোধ জানানো গেল। আমার কাছে তিনি দায়ী ঠিক যেমন আমি তার কাছে দায়ী।

//সাগর থেকে পানি আসে
নদীতে ভেসে বেড়ায়
আবার যথা হতে আসে পানি
তথায় আবার ফিরা যায়
ওরে জোয়ার ভাটায় ঘোরে ফেরে
সাগর আমার শুকায় না রে
ওরে তেমনি মানুষ ঘোরে ফেরে
মনসুর কয় "বারেহ বাহ!//


সকল কিছুর সমাপ্তি আদিতেই রহিত। সাগর থেকে পানি যেমন এসে নদীতে পৌছায় আবার নদীর পানি ফেরত যায় সাগরেই। অন্যত্র যাওয়ার জায়গাও তেমন নেই আসলে। জোয়ার ভাটার কথা চিন্তা করলে সহজেই তা বুঝতে পারি আমরা। এত কিছু হয় কিন্তু সাগর কিন্ত শুকায় না। সাগর সব সময়েই পানিপূর্ণই থাকে। সাগরের পানিতে কখনোই যেমন কমতি হয় না তেমনই মানুষ পৃথিবীতে ঘুরতে থাকে অবিরাম কিন্তু আসলেই কি তারা তাদের এই ঘোরাফেরার আসল কারণ জানে? জানলেও কয় জন মানুষ জানে?
গানটি লেখা মনসুর নামের এক পাগলের। অনেক দিন যাবত গানটা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল কিছু একটা লিখতে ইচ্ছা হচ্ছিল অনেক দিন। কিছু কিছু জায়গায় এমন ভাবেই প্যাচ লেগে যাচ্ছিল মাথায় আসলে সাহস করা হয়ে ওঠে নি এতদিন। আজকে কি মনে হল জানিনা ঘুম থেকে উঠেই এই এক গান শুনছিলাম। এই ধরণের গান বিশ্লেষণ করার সামর্থ্য মা ক্ষমতা কোনটাই আমার নেই। যা করি তা মাঝে মাঝে বিক্ষিপ্ত মনের চিন্তা গুলো লিখে রাখি। কারো দেখার উদ্দেশ্যে লেখা না। কারণ এই ধরণের ব্যাপারে মানুষের আগ্রহ নাই আসলে । না থাকুক, ব্যাপারটা শুধুই নিজের জন্যে করা। বিশ্লেষণের চেষ্টা মাত্র। কতটুকু সঠিক নিজেও জানিনা। ভুল থাকলে ধরিয়ে দেয়ার জন্যে আমন্ত্রণ রইলো।


গানের লিংকঃ https://www.youtube.com/watch?v=8up0s5V_KGs

মূল পোস্টঃ Click This Link

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:০৩

মহা সমন্বয় বলেছেন: স্বপ্নপূরণের ফাইনাল আজ :D

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৭

পুরোনো পাপী বলেছেন: খেলা শুরুর অপেক্ষাতেই এই আজাইরা পোষ্ট লেখা :)

২| ০৬ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:১৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: মৃত্যু বিষয়ে আমার কৌতুহলটা প্রায় ফ্যাসিনেশনের পর্যায়ে চলে গেছে। এরকম একটা পোস্ট পড়ে খুব ভালো লাগলো। আমিও তো এরকম করেই ভাবি অনেকটা! অনেক ভালো লাগা রইলো।

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৬

পুরোনো পাপী বলেছেন: ধন্যবাদ মাহবুব ভাই :)

আমার মতন ভাইবেন না, আমি পাগল মানুষ, মাথার তার চাইর পাঁচ টা ছিড়া :)

৩| ০৬ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:২২

আলামিন১০৪ বলেছেন: vi, monsur pagol ta ke?

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৭

পুরোনো পাপী বলেছেন: একজন সাধারণ বাউল হয়তো :)

৪| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ভোর ৪:২৬

পোয়েট ট্রি বলেছেন: গানের রচনাকার কে? সে তথ্য কিন্তু পেলাম না....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.