নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"তোমার মনের মইধ্যে আলেকের বাস, সে না কাউরে শোনে, না কাউরে বোঝে। তুমি যা বোঝাও সে তাই বোঝে।"
মানুষের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কি কি আছে? মানে সাধারণ ভাবে জিজ্ঞাসা করলে কেউ কি বলবে? হাত, পা, মাথা, চোখ, নাক, কান ইত্যাদি (না মানে অন্য দিকে না যাই আরকি )। এর যে কোন একটা অঙ্গ ছাড়া মানুষ পরিপূর্ণ না। শুধু যদি চোখের কথাই ধরি, এখন যেমন সাধারণ চোখে সব কিছু দেখতে পাচ্ছেন তেমনি যদি হঠাৎ কখনো চোখে কিছু না দেখতে পান? মনে করেন কারওয়ান বাজারের সিগনালে দাঁড়িয়ে আছেন। পাশে আন্ডার পাস থাকলেও আপনি রাস্তাটা রাস্তা দিয়েই পাড় হবেন। এই দেখলেন গাড়ির প্রেসার কিছুটা কম হঠাৎই দিলেন দৌড় রাস্তা পাড় হওয়া দিয়ে কথা। রাস্তার মাঝামাঝি পৌছে গেছে লক্ষ্য থেকে অল্প একটু দূরে। হঠাৎই দেখতে পেলেন না কিছু। একদম ব্লাইন্ড, কালো নিকষ অন্ধকার সব কিছু আপনার সামনে। কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। হাত বাড়িয়ে হাতড়ে বেড়াচ্ছেন কাউকে বা কিছুকে ধরার জন্যে। ব্যাপারটা একবার চিন্তা করে দেখেন। কেমন লাগবে তখন?? শুধু শুধু চোখের কথা কেন বললাম? কারণ, আমার আলোচনা আসলে ওইটা নিয়েই। সমগ্র মানব জাতিই আসলে এইরকমই অন্ধত্ব নিয়েই চলাফেরা করে।
“বেদ বিধির পর শাস্ত্র কানা
আরেক কানা মন আমার
এসব দেখি কানার হাট বাজার”
কাউকে শাস্ত্র বিশ্লেষণ করতে বললে কোন পর্যন্ত যেতে পারবেন?? আপনার পড়াশুনার পরিধির বাইরে নিশ্চয়ই না। আপনার জানার পরিধি যতদূর ঠিক তেমনই আপনার দৌড়ও তত দূর। অথবা একজন মুসলিম মানুষকে যদি বলা হয় কোন একটা ব্যাপারে বিশ্লেষণ করতে সে কোরআন শরীফের রেফারেন্স টানবে অবশ্যই। আবার তেমনি হিন্দু ধর্মাবলম্বী কেও বেদ গীতা, খ্রীস্টান কেউ বাইবেল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করবে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। কিন্তু এর পর?? আসলেই কি এর পর আর কোন জ্ঞান অবশিষ্ট্য আছে নাকি তার পরেই অন্ধকার আসলে। কারোই জানা নেই হয়ত এইসব ব্যাপারে। ধার্মিক অধার্মিক কিংবা নাস্তিক নির্বিশেষে সকলের জ্ঞানই ওই গ্রন্থগত বিদ্যার পর্যন্তই। এর পরের কোন কিছু জানা বা এর পরের কোন জ্ঞান কি আসলেই আছে বা আসলেই কি এর পরে কিছু জানা সম্ভব কিনা মনে হয় না কেউ তার সঠিক উত্তর দিতে পারবেন। সম্ভবত লালন সাঁইজি তার কথা গুলোয় এইসবই বলতে চেয়েছিলেন। অন্তত আমার ধারণা তাই।
“এক কানা কয় আরেক কানারে
চল এবার ভব পাড়ে
নিজে কানা পথ চেনেনা
পর কে ডাকে বারং বার”
এইবার আসি সবচেয়ে মজার অংশে। আমাদের আশে পাশে ভন্ড ভালমানুষরূপী শয়তানের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। কারো বা পরিচিতি দরকার, সেই লোকটাই হয়ত কিছুদিন আগে ধর্ম নিয়ে বেশ ধার্মিক ছিল হঠাৎই সে নাস্তিক হয়ে উঠলো শুধুই পরিচিতি পাবার উদ্দেশ্যে। এমন উদাহরণ আমাদের সামনে অনেক। আমাকে জিজ্ঞাসা করলেই গোটা কয়েকের লুঙ্গি টানাটানি পরবে। যাক সেই দিকে না যাই। তেমনই অনেক অনেক ধার্মিক ভন্ডও আছে। একটা প্রশ্ন করি। কখনো কি কোন হুজুরের বাসায় কেউ খাওয়ার দাওয়াত পেয়েছেন? আমি পাইনি। কারণ তারা মানুষের বাসায় দাওয়াত খেয়ে বেড়ান। আর সেই খাওয়া দাওয়ার পরবর্তি শুকরানা হিসাবে হালকা পাতলা দোয়ার ব্যাবস্থা হয়। তাদের কিন্তু মানুষকে দাওয়াত খাওয়ার আগে থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত কখনোই বলতে দেখবেন না যে ভাই আপনি যা জানেন আপনি জা পারেন সেইভাবেই সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করেন আমরা সামিল হচ্ছি। গৎবাঁধা কিছু কোরআন এর আয়াত সহ কিছু দোয়া হাদীস ঝেড়ে তাদের দোয়া শেষ হয়। কিন্তু এই দোয়াটুকুই নিজে করলে কি আল্লাহ্ তায়ালা আরো বেশি খুশি হতেন না?? আমার মনে হয় না আল্লাহ্র সান্নিধ্য পাওয়ার জন্যে আমার আর তার মধ্যে অন্য কোন মিডিয়ার প্রয়োজন আছে। প্রয়োজন আছে জ্ঞানের। কিভাবে তার সান্নিধ্য পর্যন্ত যেতে পারি সেই জ্ঞানের। কিন্তু সত্যি বলতে কি আমাদের সেই জ্ঞান আহরণের চাইতে সেই জ্ঞানের বাই পাস ওয়ে বেশি পছন্দের। কারণ সেই খানে আমাদের সময় কম লাগে। আর সেই ভন্ড শ্রেণীর হুজুর গুলোও আপনাকে বা আমাকে বুঝাতে চান না যে আপনি আমাকে দিয়ে দোয়া না করিয়ে নিজে আমার কাছে কিছুটা শিক্ষা নিন যাতে করে আপনিও আপনার চাওয়া অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তার কাছে যেতে চেহশটা করেন। আমার ধারণা বাকি ধর্মের লোকগুলোও ঠিক এমন। মানুষ সব সময়েই অন্যকে ভয় দেখিয়ে উপার্জন করতে ভালবাসে, কারণ বিনা পরিশ্রমে এই উপায়ে উপার্জন সম্ভব। ভবপাড় যদি এত সহজেই যাওয়া যাইত তবে হুজুর গুলা মেয়ে ছাত্রী পাইলে নষ্টামী করতেন না। হ্যা অবশ্যই ভাল আছেন তবে আমার নিজের এক্সপেরিয়েন্স বলে আমাদের দেশের প্রায় সব মেয়েদেরই বাসায় আরবী শিক্ষাকালীন সময়ে হুজুর কতৃক কিছুনা কিছু বাজে এক্সপেরিয়েন্স রয়েছে।
“পন্ডিত কানা অহংকারে
সাধু কানা অনবিচারে
মোড়োল কানা চুগলখোরে
আন্দাজে এক খুটি গাড়ে
জানেনা সীমানা কার”
এইতো এইখানে আসলেই আসল কথা বের হয়ে যাচ্ছে যা আসলে বলছিলাম উপরের অংশের কথা বলতে গিয়ে। পন্ডিত তার জ্ঞান নিয়ে অহঙ্কার করেন বলেই জ্ঞানটা পুরোটা কাউকে দান করতে চান না সাধারণত। আবার মোড়লের কাছে তার পাইক পেয়াদা গোছের লোক গুলোর কানে কানে বলা চুগোলখুরির কারণে অনেক অসহায় নির্দোষ মানুষকেও শাস্তি পেতেই হয়। বাংলাদেশের ইতিহাস ঘাটলেও এমন মোড়ল দুই তিনজন ব্যাতিরেকে সবাইকেই চোখে পরবে। যার থেকে আমাদের জাতীয় বড় বড় নেতারাও কেউ বাদ পরেন না। জি হ্যা বৎস, আপনাদের ধারণা যা আমিও তার কথাই বলছি। যাক সে কথা, ইতিহাস তো আলোচ্য বিষয় না। সেইটা জানতে চাইলে নাহয় অল্প বিস্তর ঝগড়া ঝাটি শুরু হবে। সত্যি কথা সহ্য হবেনা অনেকেরই। সেই ক্ষেত্রে পরের কথায় যাই। এখন যদি আপনাকে বলি প্রমাণ আছে আপনার সৃষ্টিকর্তাই আসল? আমাকে মারতে ধর্ম গেল ধর্ম গেল বলে ছুটে তো আসবেন। কিন্তু এইসব কি আসলেই প্রমাণযোগ্য কোন বিষয়?? উত্তর হল “না”। অনেক কিছু আছে যা প্রমাণযোগ্যতা ছাড়াই অনড়। যেমন ভালবাসা প্রমাণ করতে হয়না। যদি সত্যি ভালবাসেন আরকি। আপনার মা বাবা আপনাকে ভালবাসে। এইটা কি প্রমাণ করতে পারবেন?? আমার বেশ কিছু বন্ধু আছে যারা আমার মা বাবা কে দেইখা যদি তুলনা করতে যায় তবে সিওর তারা বলতেই পারে তাদের বাবা মা তাদেরকে একটুও ভালবাসে না। কিন্তু মোদ্দা কথা কি কোন বাবা মাই তার ছেলেকে ভালবাসেনা এইটা সম্পূর্ণ ভুল। সকল মানুষেরই ভালবাসার ধরণ কারণ উপায় ভিন্ন। এক এক জন মানুষ এক এক রকম ভাবে ভালবাসে। আমি যেমন বৃক্ষ মানব তেমন অনেক লুতুপুতু মানবও আছে। তেমনি সৃষ্টিকর্তা একটাই। খালি আলাদা আলাদা নামে আলাদা আলাদা বেশে এক একজনের কাছে বিরাজমান।
“কানায় কানায় ওলা মেলা
বোবাতে খায় রসগোল্লা
আবার লালন বলে মদনা কানা
ঘুমের ঘোরে দেয় বাহার”
মনে করেন আপনি আর আমি আমরা দুইজন। আমার হাতে এক কেজি মিষ্টি একটা প্লেটে। আপনার সাথে আমি মারামারি করতেছি। রসগোল্লার প্লেটটা সাইডে এক জায়গায় রেখে। কারন তখন আমার প্রায়রিটি যুদ্ধে জয়লাভ। রসগোল্লা নয়। তাতে করে কি হচ্ছে, কিছুক্ষন পরেই দেখা যাবে আশে পাশে মানুষ জর হয়ে যাবে। তার মধ্যে থেকে কয়েকজন মিষ্টি মুখে দিবে আর বলবে, “বাহ ডান পাশের পোলাডা তো দেখা যায় আজকে জিত্যাই যাইব মুনে লইতাছে”। কি বলতে চাচ্ছি কিছুটা আঁচ করতে পারছেন নিশ্চয়ই, আপনার আমার মারামারিতে লাভ তৃতীয় পক্ষের যে কিনা আমাদের মধ্যে মিল মিশ না করার চেষ্টা করে চুপ রয়ে গেল। আমাদের ভন্ডহ ধর্মযাজকেরা ঠিক সেই মধ্য ব্যাক্তিটির অভিনয়ই করে যান সারাটি জীবন আমাদের আর সৃষ্টি কর্তার মাঝে। যেমন তারা কখনো দাওয়াত খেতে এসে বল্বেনা আপনি দোয়া করেন ভাই আমি সামিল হই।
অনেক বক বক করে ফেললাম যার অনেক কিছুই না বুঝে অনেকে লাফাইতেই পারে যে ধর্মকে কুটি কুটি কইরা ফালাইয়া দিতেছি। আবার অনেকে বাহবা বাহবা বেশ বইলা ভাবতেই পারে যে নাস্তিকদের দল (থুক্কু বাংলাদেশে কোন নাস্তিক নাই আমার দেখা, সব ইসলাম বিদ্বেষী) ভারী হইতেছে। তাদের সকলের জন্যেই সমবেদনা।
আর শেষ কথা ওইটাই রইল যা সব সময়ে বলি, মহাত্মা লালন সাঁইজির কথা বিশ্লেষণ করার মতন ক্ষমতা আমার মতন এই ক্ষুদ্র মস্তিষ্কযুক্ত প্রাণীর এখনো হয়নি কোন দিন হবে কিনা তাও জানিনা। এই গুলা আমার নিজের উপলব্ধি মাত্র। এর বেশি কিছুই না।
বাই দ্যা ওয়ে, “ওলা-মেলা” শব্দটুকুর আক্ষরিক অর্থ বুঝতে পারিনি। কারো যদি জানা থাকে অবশ্যই জানাবেন। আর কোথাও ভুল ক্রুটি থাকলে সংশোধনের জন্যে সাদরে আমন্ত্রণ।
মূল পোষ্টঃ আন্দাজে এক খুটি গাঁড়ে, জানেনা সীমানা কার
১০ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:২০
পুরোনো পাপী বলেছেন: প্রয়োজনীয় কথা অপ্রোয়জনীয়তেই নিহিত। সোজা ব্যাখ্যা দিতে গেলে আমি নাস্তিক হমু আপনেগো মাধ্যমেই
২| ১০ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৪৪
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মহাত্মা লালন সাঁইজির কথা বিশ্লেষণ করার মতন ক্ষমতা আসলেই আমাদের মতন এই ক্ষুদ্র মস্তিষ্কযুক্ত প্রাণীর এখনো হয়নি ...
যে মহাসত্য উচ্চারণ করে গেছেন শত বছর আগে তা ভাবতেও বিস্ময় লাগে!
ভোগবাদী জীবন বুঝলেও এড়িয় চলতে যায়-
আজো মনের ঘোল গেলনা তত্ত্বে
পোষ্টে +++++++++
১০ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:১৪
পুরোনো পাপী বলেছেন: বার জিগ্স্
৩| ১০ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:৩৩
রুরু বলেছেন: ভালো লাগলো বিশ্লেষণ।
১০ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:১৪
পুরোনো পাপী বলেছেন: বিশ্লেষণ আর কই করতে পারলাম ভাই, আমার বুঝার ব্যাপারটুকুই বলা এর বেশি কিছুনা
আর সত্যি বলতে কি অনেক অজানা কিছু অজানাই থাকতে দেয়া উচিৎ
৪| ১০ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:৫১
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: ভাল“ওলা-মেলা” এর আক্ষরিক অর্থ সম্ভবত "উঠাবসা"।
আন্দাজে এক খুটি গাড়ে
জানেনা সীমানা কার
এটার মানের ধারে কাছেও যেতে পারেননি আপনি।
এখানে লালন স্পষ্টভাবে সমস্ত ঈশ্বর ও তাদের অনুসারীদের অস্বীকার করেছে। যে তারা নিজেরা নিজেদের মত আল্লাহ, ভগবান, কোরআন, গীতা তৈরী করে নিয়েছে। প্রকৃত স্রষ্টার খোঁজ না জেনেও।
১০ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:২৬
পুরোনো পাপী বলেছেন: ধন্যবাদ। আমি পোস্ট করার পর পরেই জানতে পারলাম ওলামেলা অর্থ
সিলেটী একটা কথা আছে - "ঘাট ফারৈতে উলামেলা , ঘাট ফারৈলে খেয়ানি হালা".. মানে হৈলো প্রয়োজনের সময় একজন আরেকজনের বন্ধু, প্রয়োজন ফুরাইলে "তুই কে?"
আমি সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী মানুষ। তাই আমি আমার মতন চিন্তা করি আমার ঈশ্বর আছেন আমার কাছেই। অবিশ্বাসী হইতে চাই না
আর সত্যি কথা বলতে কি সব কিছু নেয়ার মতন মেন্টালিটি মানুষের হয় নাই। আপনাকে কথায় কথায় নাস্তিক ছাগু রাজাকার বানাইয়া দিবে, আর এদের সাথে বাহাসেও যাওনের ইচ্ছা নাই এখন। তাই ওইভাবে না বলে এইভাবে বলা আর আমি অসাধারণ জ্ঞানের অধিকারীও কেও নই যে আমি লালন সাঁইজি র কথাকে বিশ্লেষণ করতে পারব আমি আমার মতন করে বুঝার চেষতা করি। আমার চাইতে যদি কারো ধারণা আরো বেশি ক্লিয়ার থাকে তবে আমন্ত্রণ সকল ক্ষেত্রেই থাকে আমাকে সেই জ্ঞান টুকু দান করার জন্যে
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্যে
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:১৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
অনেক লিখেছেন, প্রয়োজনীয় কিছু লিখেননি