নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রায়আন৫৬৩

আবু রায়আন

ছাত্র

আবু রায়আন › বিস্তারিত পোস্টঃ

তিতিরি

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৫

তিতিরি
লিয়েফ তলস্তয়

অনুবাদ: জাহীদ রেজা নূর
অলংকরন: মাকসুদ হেলাল

তিতির তার ছানাপোনাদের নিয়ে চলে গেলে যব খেতে। সেখানেই তাদের থাকতে বলল। কিন্তু ওর মনে ভয় যদি জামির মালিক এসে কেটে নিয়ে যায় যব। তাই সে যখন খাবার আনার জন্য উড়ে গেলো অনেক দূরে, তখন ছানাপোনাদের বলে গেল, 'মানুষেরা এখানে এস কি কথা বলে, তা মন দিয়ে শুনবি। আমি খাবার নিয়ে ফিরলে সব কথা বলবি।'
সন্ধ্যা বেলা খাবার নিয়ে ফিরে এলো তিতির।
ছানাপোনাদের জিজ্ঞাস করল, 'মানুষেরা এসে কি বলল রে?'
'খুব খারাপ কথা, মা! জামরি মালিক তার ছেলেকে নিয়ে এসেছিল। বলল, যবগুলোতো পেঁকেছে। কাটার সময় হয়েছে। তুই প্রতিবেশীদের বাড়ি গিয়ে বল, আমি ওদের যব কাটতে আসার করেছি। মা, আমাদের অন্য কোথাও নিয়ে যাও, নইলে কাল এসে ওরা যব কেটে নিয়ে যাবে। আমারা কোথায় থাকবো?'
মা সব শুনে বলল,'ভয় পাসনে তোরা। এখনো মানুষের যব কাটবে না। তোরা আরো কিছি দিন এখনে থাকতে পারবি।'
পর দিন আবার খাবারের সন্ধানে উড়াল দিলো মা। আর পই পই করে বলে গেল,'মানুষেরা কি কথা বলে মন দিয়ে শুনবি।'
সন্ধ্যায় ফিরল মা। বাচ্চারা বলল, 'আজও জমির মালিক ছেলেকে সঙ্গে করে এসেছিল,মা। সারা দিন প্রতিবেমীদের জন্য অপেক্ষা করেছে। কিন্তু কেউ আসেনি। তখন জমির মালিক ছেলেকে বলেছে, এবার তুই গিয়ে আমার জামাই, চাচাতো ভাই, মামাতো ভাইদের বল, খেতে এসে আমাদের যব কাটতে। বলবি, আমি অনুরোধ করেছি।'
'ভয় নেই, কালও যব কাটা হবে না। তোরা নিশ্চিন্তে থাক এখানে।'- এই বলে মা সান্ত্বনা দিলো ছানাপোনাদের।
পর দিন আবার খাবারের খেঁজে বের হলে তিতির। ছানাপোনাদের ডেকে একই কথা বলে গেল।
সন্ধ্যায় ফেরার পর মা তিতির জিজ্ঞাস করল,'আজ কি হয়েছে, বল তো!'
'আজও জামির মালিক তার ছেলেকে নিয়ে সারা দিন ছিলো খেতে। আত্মীয়স্বজনদের জন্য অপেক্ষা করেছিল। কিন্তু কেউ আসেনি। তখন জমির মালিক বলল, দেখতেই তো পাচ্ছিস, কেউ আমাদের জামির যব কাটাতে আসছে না। কারও জন্য অপেক্ষা করে কাজ নেই। কাল ভোরবেলা যন্ত্রপাতি নিয়ে আমার দুজনেই চলে আসবো যব কাটতে।'
মা তিতির বলল,'এবার আমাদের যাওয়ার সময় হলো। মানুষের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেরাই যখন নিজেদের কাজ করতে চাইছে, তখন কাজটা করেই চাড়বে তারা। এই জমি ছেড়ে অন্য কোথাও যাবার সময় হয়েছে আমাদের।'

((লিয়েফ তলয়েস্তয়: রুশ লেখক। জন্মেছিলেন ১৮২৮ সালের ২৮ আগষ্ট, ১৯৯০ সালের ৭ নভেম্বর তিনি মৃতু্বরণ করেন। রুশ সাহিত্যের স্বর্ণযুগের প্রতিনিধি তিনি।))

(সংগ্রহকৃতঃ প্রথম আলো, ম্যাগাজিন: গোল্লাছুট; শুক্রবার, ৮ জানুয়ারি ২০১৬)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কারো জন্যে অপেক্ষা নয়- নিজের কাজ নিজে করাতেই আনন্দ বেশি!

সুন্দর গল্পে +

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.