নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যতদিন লেখার ক্ষমতা থাকবে ততদিনই লিখব, একটুও বেশি না

বঙ্গতনয়

ভালবাসি ভালবাসি ভালবাসি।

বঙ্গতনয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি কি পারবো?

২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৩৮


(ছবিটি নেট থেকে নেয়া, আমার বাবারই বয়সী চেহা্রায় লেবাসেও মিল আছে)

অনার্স শেষ করে বসে আছি। রেজাল্ট দিয়েছে , মধ্যম মানের ছাত্রের জন্য এক রাত পড়ে এর চেয়ে ভালো আশা করা যায়? ৪ এ ৩.৭৩।
বাবার ৬৫ পার হলো।
সেদিন দাদীকে কবরস্থ করার জন্য বাড়ি গিয়ে বাবার মুখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না। মাকে বললাম বাবাকে বলো অনার্সের রেজাল্টটা দিক, দেখো আমি কিছু একটা করব এবার। এবার আর উনাকে দিনমজুরি করতে হবেনা। মাস্টার্স নাহয় পরেই করব।
রেজাল্ট পাওয়ার পর জব সার্কুলার দেখি বন্ধুদের পিসিতে বসে। কোথাও অনার্সের ভাত নাই। এদেশের কম্পিউটার অপারেটর পদের জন্যও রেপুটেড ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স লাগে।
সেলুকাস!

এর মধ্যে দুয়েকটি সার্কুলার পেলাম তাতে আবেদন করা, সার্টিফিকেট তোলা দিয়ে হাজার দেড়েক টাকা লাগে। কই পাই এত টাকা? বিসিএস এর আবেদন করতে লাগবে আরো ৭০০, শিক্ষক নিবন্ধন করতেও আরো।

আমি ছাপোষা ছাত্র, মেসের সিট ভাড়া বাদে যা থাকে তাতে একবেলা করে মার দিয়ে মাস কাবার করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স শেষ করতে গিয়ে টিউশনি সহ্য না হওয়ায় শুভাকাংখীদের পকেট থেকে প্রায় ৭০/৮০ হাজার টাকা ঋণ করেছি। দেনাদারেরা ছিড়ছে এখন।
কোথায় যাই? বন্ধুরা জিজ্ঞেস করে মাস্টার্সের ক্লাস কেন করছিনা, কেন ভর্তি হচ্ছিনা। আমি কিছু না বলে পাশ কাটিয়ে যাই একটা মুচকি হাসি দিয়ে।

আজ মনে হচ্ছে আমার মাস্টার্স করা দরকার। মা'কে ফোন দিলাম।
বাবার মায়ের (দাদীর) থেকে পাওয়া জমির একটু অংশ বাবা বিক্রি করতে চেয়েছিল। ওখান থেকে আমাকে কিছু টাকা দিতে পারেন কিনা। সরাসরি বাবাকে বলতে লজ্জা হচ্ছিল।

রাত ৮টায় ফোন দিলেন আমি লজ্জায় কিছু বলতে পারিনি। উনি গোপালগঞ্জে আছেন দিনমজুরি করতে এসেছেন। প্রতিদিন ৩৬০ টাকা। আমি বললাম টাকা লাগবেনা। আব্বা বললেন কিন্তু তোমাকে যে ভর্তি হতে হবে। ধার করে চালাও আমি শোধ করে দেবো বাড়িতে গিয়ে জমি বিক্রি করে।

ফোন রাখার পর কষ্টে বুক ভেঙে যাচ্ছিলো। উনার বয়সে সবাই দাদা হয়ে অবসর নেন। বাড়িতে বসে নাতি নাত্নী আদর করেন। আর উনি শেষ বয়সে এসে নতুন করে কোদাল কাস্তে হাতে নিয়ে জাতিকে শিক্ষিত করছেন। উনার দুই মেয়ে এক ছেলে ঢাবিতে অধ্যয়নরত। দুজন JSC পরীক্ষার্থী।

বাবা তোমাকে আর বেশিদিন কষ্ট করতে দেবোনা। এই তো কয়েকটা মাস লাগবে হয়ত...........................

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৪৫

প্রামানিক বলেছেন: বলেন কি!!!

২| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:০৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



চাকুরী খোঁজেন, না পাওয়া অবধি সিএনজি চালান।

৩| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৩:৫৮

মানবী বলেছেন: বাবা গোপালগঞ্জে গেছেন প্রতিদিন ৩৬০ টাকায় দিনমজুরি করতে আর আপনি টিউশনি সহ্য না হওয়ায় শুভাকাংখীদের পকেট থেকে প্রায় ৭০/৮০ হাজার টাকা ঋণ করেছেন!!

ভয়ংকর ব্যাপারটা ধরতে পেরেছেন কিনা বুঝতে পারছিনা!!
আবেদন পত্রের টাকা না থাকা বা মাস্টার্সের টাকা না থাকার চেয়েও উপরে উল্লেখিত কন্ট্রস্টটি অনেক বেশি পীড়াদায়ক মনে হলো।


আমি যেহেতু আপনাকে কখনও একটি পয়সা দিয়েও সাহায্য করিনি আপনার সমালোচনা করার অধিকার আমার নেই। তবে ওপেন প্ল্যাটফর্মে নিজেই কথাগুলো তুলে ধরেছেন দেখে পাঠক হিসেবে প্রতিক্রিয়া জানালাম মাত্র। আশা করি কিছু মনে করবেননা।

ভালো থাকুন। আপনার বাবা যেনো সুস্থ সুন্দর ও দীর্ঘজীবি হন এই প্রার্থনা।

২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:১৫

বঙ্গতনয় বলেছেন: আসলে ঐ টাকা আমি নিজের জন্য ঋণ করিনি। আমি টিউশনি না করলেও পার্টটাইম কাজ করে নিজেরটা চালিয়ে নিতাম। কিন্তু আমার আরেক ভাই এবং এক বোনকে ভর্তি করাতে। সেটেল করতে গিয়েই মূলত ঋণ হয়েছে। টিউশনি না করলেও একেবারে বেকার কখনোই ছিলামনা। ধন্যবাদ আপনাকে।

৪| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৮

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: আহা জীবন। ঢাকাতে দুই তিনটা টিউশনি করলেও তো ভালো ইনকাম হয়। কিছু না পেলে আবার টিউশনি শুরু করুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.