নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছিলাম বইয়ের পোকা, এখন ইন্টারনেটের ।

সাদা মনের মানুষ

বিশ্ব জোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র --নানা ভাবে নতুন জিনিস শিখছি দিবা রাত্র 'মুর্খরা সব শোন, মানুষ এনেছে গ্রন্থ, গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোন'

সাদা মনের মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গাছি

১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৮:৪৪


বটেশ্বর বাজারের পাশের অশথ্থ গাছের নিচের চা দোকানটায় সব সময় কম বেশী মানুষ থাকে। ছোট একটা টং ঘর, সামনে বাঁশ দিয়ে বানানো বেঞ্চিটা সব সময়ই নড়বড়ে থাকে। অশথ্থের কয়েকটি শেকড় আঁকিবুকি কেটে এমন ভাবে দোকানটার পাশে সেটে আছে যে, ইচ্ছে করলে ওখানেও কয়েকজন আরাম করে বসা যায়। আগে নাড়ুদা’র ( আসল নাম নারায়ন ) দোকানের চা আমরা খেতাম দুই টাকায়। তারপর জিনিস পত্রের দাম বাড়ার সাথে সাথে চায়ের দাম বেড়ে এখন পাঁচ টাকা। শুধু চা বেচে জীবন চলেনা বলে ইদানিং সন্ধ্যে বেলায় পুড়ি সিঙ্গারা, আলুর চপ, ডিম চপ ইত্যাদিও বিক্রি করে থাকেন। নাড়ুদা’র বয়স কখনো বাড়ে না, আমরা ছোট থাকতে যেমনটি দেখেছিলাম এখনো সেই একই রকম মধ্য বয়সী নাড়ুদা। টং দোকানটা পুবমুখো হওয়ায় শীতের সকালটা রোদ পোহানোর জন্য হলেও গ্রামের অনেক লোক এখানে জড়ো হয়।

ফরিদপুরের একজন গাছি ছিলো, যিনি পাশের গ্রাম রসুলপুর ও কান্দাপাড়া এলাকায় খেজুর গাছগুলো থেকে রস সংগ্রহ করতেন। গ্রামে ঘুরে রস বিক্রি করার পর সব সময়ই কিছুটা রস থেকে যেত। তখন সেই গাছি ( ওনার নামটা জানা নাই ) বটেশ্বর বাজারের নাড়ুদা’র চায়ের টং এর সামনেই এসে বসত বাকি রসটা বিক্রি করার জন্য। তো অনেকে কম টাকায় রস খাওয়ার জন্য এই সময়টায় ওনার কাছে আসতো। কারণ বেলা যতো বাড়ে রসের মান ততোই কমে যায়।

গাছি ব্যাটা আমাকে বেশ খাতির করতো, প্রতি বছর এসেই আমার সাথে দেখা করে বলতো আপনার জন্য অমুক দিন রস নিয়ে আসবো, কতোটা লাগবে বলে দিন। আমিও পৌষ-মাঘে দুই তিন বার ওনার কাছে চাহিদা পেশ করে রস নিতাম। মাঝে মাঝে বিকেল বেলা রস খাওয়ার জন্য বন্ধু বান্ধব নিয়া ওনি যেখানে গাছ কাটে ওখানেও চলে যেতাম। রোগা পাতলা মানুষটা থাকতো কয়েকটি খেজুরের ডাল পাতা দিয়ে বানানো একটা ত্রিভুজের ভেতর, যার ভেতর হামাগুড়ি দিয়ে ঢুকে কোন মতে শোয়া যেতো।

তিন বছর আগে গাছির সাথে যখন শেষ দেখা তখন তিনি কানে বেশ কম শুনতেন আর শরীরটাও বেশ ভাঙ্গা মনে হয়েছিলো। তাও বটেশ্বর এলাকার মানুষদেরকে সেবা দিয়ে গেছেন। কিন্তু গত দুই বছর উনার আর কোন হদিস পাচ্ছিনা। মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন না বলে ওনার বাড়ির কোন নাম্বারও জানা নেই আমার। আজ কুয়াশা ভেজা ভোরে একজন রস বিক্রেতাকে দেখে মনের ভেতরটা মোচর দিয়ে উঠল। জানিনা আমাদের সেই গাছি লোকটা এখন কোথায় কেমন আছে। সারা বছর ভুলে থাকলেও এই পৌষে ছিপ ছিপে গড়নের ঐ মানুষটা মনে পড়ছে ভীষণ। শুধু একটি বার সেই কাধে বার বয়ে চলা মানুষটা দেখতে খুব খুব ইচ্ছে করছে……….

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৮:৫৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



হয়তো, বয়সের কারণে আর গাছে উঠতে পারেন না

১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৪৩

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: হুমম হতে পারে, ধন্যবাদ।

২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
গাছিদের নিয়ে বাংলা সাহিত্যে তেমন কোনো গল্প উপন্যাস নাই।

তবে ইমদাদুল হক মিলন নূরজাহান উপন্যাসে গাছিদের নিয়ে লিখেছেন।

১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৪৫

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: ধন্যবাদ রাজিব ভাই, ইমদাদুল হক মিলনের উপন্যাস পড়া হয়নি আমার।

৩| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: আপনাকে কি আজ সময় টিভিতে দেখিয়েছে?
সংবাদে? রেল লাইন নিয়ে বলছিলেন??

১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৪৬

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: ঘোড়াশাল স্টেশনে বসে অলস সম কাটাচ্ছিলাম পরে কোন একটা টিভি চ্যনেলের লোকেরা এসে রেল লাইন নিয়ে কিছুটা জানতে চেয়েছিলো, তাই কিছুটা বলেছিলাম। দেখিয়েছে কিনা জানিনা, ধন্যবাদ।

৪| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৪৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: খেজুর গাছের মতোই, ভাজে ভাজে যন্ত্রনার খাজ লয়ে তারা জীবনটা পারি দেয়!
হয়ত কেউ হঠাৎ মনে করে, আপনার মতো, অথবা তাও নয়...
শীত এলে যেমন গাছের কদর বাড়ে রসের আশায়
তাদের্ মনে হয় এমনি হঠাৎ -বুকের কনে মচর দিয়ে ওঠে মহাকালের শুন্যতার খেলায় - - -

১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৫৬

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: দারুণ বেছেন ভাই। আমি বলবো এটা একটা বিদ্রোহী কবিতাই। রস খাওয়ার আসায় ওর কথা মনে হলো, অন্যথায় কি সতয়িই মনে পড়তো?...........শুভ সকাল।

৫| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: নূরজাহান উপন্যাসটা পড়তে পারেন। খুব ভালো।

আজ সকালে সময় টিভিতে খবরে দেখলাম। বেশআত্মবিশ্বাসের সাথে রেল লাইন্নের সমস্যার কথা বলছেন।

১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৮

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: রাজু ভাইয়ের লিঙ্কে গিয়ে দেখে এলাম।

৬| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৫২

হাসান রাজু বলেছেন: এইতো পাইছি । যে ব্যাপারে রাজিব ভাই বলছিলেন।

[link|https://www.youtube.com/watch?v=Pvr46LD-4K8&feature=youtu.be|সময় টিভির সেই ক্লিপ।

১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৮

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: ধন্যবাদ রাজু ভাই, আমিও দেখে এলাম।

৭| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ছবি টবি বাদ দিয়ে স্মৃতিচারণ লিখছেন, টিভিতে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন, আর এদিকে আমাকে ভুল মোবাইল নম্বর দিয়ে হয়রান করছেন। ইয়া আল্লাহ, তুমি নরসিংদীতে ব্যালেস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ কর।

১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৮

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: মোবাইল নাম্বার ভল দিছি এমনটা বলে আপনি একজন ভদ্র লোককে অপমান করতে পারেন না। দূর্ঘটনা ক্রমে আপনার নাম্বারটাও আমার মোবাইলে নাই :D

৮| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৮

ঢাবিয়ান বলেছেন: আহারে কত কষ্টের জীবন গাছির ! মনটা খারাপ হয়ে গেল জেনে

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫৫

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: হুমম, ওদের জীবনটা সত্যিই অনেক কঠিন।

৯| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১০

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: রাজু ভাইয়ের লিঙ্কে গিয়ে দেখে এলাম।

ইয়েস।
দেখেছেন আমি আপনাকে চিনে ফেলেছি। অথচ কোনোদিন আমাদের দেখা হয়নি। কথা হয় নি।

১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:২৫

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: আপনি সত্যিই জিনিয়াস ভাই

১০| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:১৪

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: শীতের দিনের সরস পোস্ট।
খেজুরের রস আমারো প্রিয় ।
গাছিদের জীবনটা বয়স হলে অবসর সময় ধরে নেয়া যায় ।
তবে মর্মস্পর্শি তো বটেই । তাদের জীবনের জীবিকার সিকিউরিটি অধরা চাঁদ।

১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪২

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: এতো শীতেও এবার এখনো রস খাওয়া হয়ে উঠেনি। আগে গাছিটা ছিলো বলে খেতে পেতাম অনেক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.