নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হাতে সময় মাত্র বিশ মিনিট! এর মধ্যেই এই স্যান্ডিয়াগো শহরের ওয়েস্টফিল্ড ইউটিসি থেকে প্রথম বাসটি ধরতে হবে। তারপর ফ্যাশান ভ্যালি থেকে আরেকটি বাস। সেটি ‘পাঠশালা’র কাছাকাছি পোৗছবে দুপুর ২টা ১৭ মিনিট। এমনিতে সাথে নেই কোন মোবাইল ফোন! তারপর আবার ১ মিনিট দেরি করলেই ওখান থেকে ভদ্রলোক আমাদের পিক করতে পারবেননা। কেননা তাকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ‘পাঠশালা’ খুলতে হবে। তবু ঠিক করলাম, যেভাবেই হোক যাবো। অতপর পাঠশালা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় শেষ পর্যন্ত পৌছলাম গন্তব্যে।
দেওয়াল জুড়ে হাসছে ‘অ-আ-ক-খ’। সাথে ছোট্ট সোনামনিরাও। স্কুলের নামটাও বেশ ! ‘পাঠশালা’। কিন্তু, ক্লাসে ঢুকে একটু ভড়কে গেলাম। ২৪-২৫ বছরের এই যুবক শিশুদের চেয়ারে বসে কী করে! ভাবলাম হয়তো বাচ্চাদের পড়াবে। কিন্তু না। শিক্ষক তো আছেন’ই, বোর্ডে লিখছেন। পরে জানলাম এই যুবকও ছাত্র। ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন করেছেন রিদোয়ান। কাজও করছেন। আফসোস কেবল ভালো করে শেখা হয়নি বাংলা।
রিদোয়ানের মতো আফসোস করতে চাইনা নওরিন, অয়ন, ওমরান, আয়রাহ, ইউসুফ, তাজরিনসহ আরো অনেকে। অন্তত দু-এক বছর অন্তর দেশে গিয়ে যদি নানু-দাদুর সাথে তাদের ভাষায় একটু কথা’ই বলতে না পারে তাহলে কি হয়!
দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামলো। সমুদ্র থেকে ঠান্ডা বাতাশ বইছে। তাই রোদটাও মিষ্টি। স্কুলের বারান্দায় বসে কফিতে প্রথম চুমুক দিয়েই আঁতকে উঠলাম। উহফ! জিহ্বা পুড়ে গেছে। বুঝলাম আমার সামনে বসা এই বৃদ্ধা দাদুর গল্পে আমি পুরোই মগ্ন ছিলাম। নিজ চোখে দেখা ব্রিাটশ শাসন, পাকিস্তানী আমল, ভাষা আন্দোলন অতপর মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলছিলেন তিনি। তার আমেরিকান আন্ডারগ্রাড নাতী সাদিবকে বাংলা শেখাতে নিয়ে এসেছেন এই ‘পাঠশালায়’।
ইংরেজি শব্দের শাসনে গড়া জিহব্া-স্বরযন্ত্র কে অনেক কষ্টে নিয়ন্ত্রণ করে যখন টুনটুনিরা হাট্টিমাটিম...টিম পড়ছিলো তখন গর্বে যেন বুকটা ভরে উঠলো। স্কুলের ৪ থেকে ৬ বছরের শিশুদের ক্লাসের নাম টুনটুনি। এরপর ৬ থেকে ৮ বছরের শিশুরা মেঘনা, ৮ থেকে ১০ বছরের শিশুদের নাম সুরমা এবং ১০ বছরের উপরে বয়সী শিক্ষার্থী যমুনা। তবে বয়স যা’ই হোক বাংলা জানার লেভেল অনুযায়ী যে কাউকে যেকোন ক্লাসে পড়তে হতে পারে। বর্তমানে পড়ছে ২১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ভারতীয় বাঙালীও রয়েছে।
বাংলা ভাষা ও এর ইতিহাস যাতে নতুন প্রজন্মের কাছে দুর্বদ্ধ এক গল্প হয়ে না থাকে সেই প্রচেষ্টা থেকেই পাঠশালার এই উদ্দোগ। সারা সপ্তাহ অক্লান্ত পরিশ্রম করেও নিজেদের সাপ্তাহিক ছুটিটি বিসর্জন দিয়ে স্বেচ্ছায় যারা কাজ করে যাচ্ছেন তাঁদেরই একজন স্যান্ডিয়াগো স্টেট ইউনিভার্সির এ্যাসোসিয়েট প্রফেসর জহির চৌধুরী। মূলত তিনিই এটি সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করছেন। এছাড়া নিয়মিত কাজ করছেন আরাফাতুর রাব্বি, সারমিন এ্যানি, ফারহানা লুবনা, তাবাস্সুম কনিসহ আরো অনেকে। সহযোগিতা করছে স্যন্ডিয়াগোর বাংলাদেশী কমিউনিটি সংগঠন ‘অগ্রযাত্রা’। বিশেষ দিনে বিভিন্ন মেলা কিংবা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ভাষা ও সংষ্কৃতিতে তুলে ধরতেও কাজ করছে পাঠশালা পরিবার। কখনো বিদেশী শিশুদের শাড়ী পরিয়ে, কখনো মেহেদী রাঙিয়ে অথবা নাচে গানে বিশ্বের কাছে তুলে ধরছেন বাংলাদেশকে।
প্রফেসর জহির চৌধুরী জানান, পাঠশালার স্বপ্ন বহুদূর। ২০১২ সালে ৪টি রুম ভাড়া নিয়ে এটি যাত্রা শুরু করলেও অনন্ত পথ পাড়ি দিতে চাই পাঠশালা। বাংলাকে শুধু বাংলাদেশীদের মাঝে না, বরং তা অ-বাঙালিদের মাঝেও ছড়িয়ে দিতে চান তারা।
অগ্রযাত্রা পরিচালনা বোর্ডের সদস্য মইনুল খান বলেন, শুধু ভাষা নয়, আমাদের নতুন প্রজন্মেকে তাদের শেকড়ের সন্ধান দিতে আমরা পাঠশালা খুলেছি। আমাদের স্বপ্ন বহুদূর।
যুক্তরাষ্ট্রের সমুদ্র ঘেরা ক্যালিফোর্নিয়া স্টেটের এই ছোট্ট একটি শহরে হাজার খানেক বাংলাদেশীর মধ্যেও যে বাংলা ভাষা টিকিয়ে রাখার আন্দোলন চলছে, দেখে গর্ব হলো। ফেরার পথে মনে মনে বললাম, স্যান্ডিয়াগো পেরিয়ে আরো বহুদূর এগিয়ে যাক আমাদের প্রাণের বাংলাভাষা। অনন্তকাল ধরে নতুন প্রজন্মের সাথে মিশে থাক প্রিয় বর্ণমালা!
লাকমিনা জেসমিন সোমা
স্যান্ডিয়াগো, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র
১৯ নভেম্বর।
১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১৯
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: ধন্যবাদ....।
২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫১
টয়ম্যান বলেছেন: স্যান্ডিয়াগো পেরিয়ে আরো বহুদূর এগিয়ে যাক আমাদের প্রাণের বাংলাভাষা।
++++++
১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৪
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: :-) ধন্যবাদ
৩| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৬
মামুন রশিদ বলেছেন: স্যান্ডিয়াগো পেরিয়ে আরো বহুদূর এগিয়ে যাক আমাদের প্রাণের বাংলাভাষা। অনন্তকাল ধরে নতুন প্রজন্মের সাথে মিশে থাক প্রিয় বর্ণমালা!
চমৎকার!
১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৪
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: ধন্যবাদ..।
৪| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০২
বলেছেন: ++++++++
১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৫
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন:
৫| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৪
আর চক্রবর্ত্তী বলেছেন: খুব ভাল লাগল জেনে....!!!!
২৩ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪১
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: জ্বী!
৬| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪১
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: চমৎকার পোস্ট । চমৎকার বিষয়বস্তু +++++++
ভালো থাকবেন , শুভকামনা ।
২৩ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৩
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: ধন্যবাদ, আপনিও অনকে ভালো থাকবেন...
৭| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫৯
নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: শুভেচ্ছা সবার প্রতি
২৩ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৪
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: হুম। আপনােকেও...।
৮| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২০
কলমের কালি শেষ বলেছেন: চমৎকার বিষয় নিয়ে পোষ্ট । বাংলা ভাষা ছড়িয়ে পড়ুক সারা বিশ্বে ।
২৩ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৬
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: হোপ...সো :-)
৯| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫১
তুষার কাব্য বলেছেন: স্যান্ডিয়াগো পেরিয়ে আরো বহুদূর এগিয়ে যাক আমাদের প্রাণের বাংলাভাষা।
ভালবাসি বাংলা,ভালবাসি মা মাটি ও দেশ ...
২৩ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৭
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: ধন্যবাদ তুষার কাব্য ।
১০| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৩
ডি মুন বলেছেন:
বাংলা ভাষা ছড়িয়ে যাক বিশ্বব্যাপী।
++++++++++++
২৩ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩২
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: আমাদেরও প্রত্যাশা...!
১১| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৬
শ রায়হান বলেছেন: বহুদূর এগিয়ে যাক আমাদের প্রাণের বাংলাভাষা
২৩ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৮
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: সহমত!
১২| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:৪৩
সুমন কর বলেছেন: বাংলা ভাষা ছড়িয়ে পড়ুক-বিশ্বব্যাপী।
শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা রইলো।
চমৎকার পোস্ট ।
২৩ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৯
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: ধন্যবাদ ।
১৩| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৫
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: মহান উদ্দ্যেগ আর তোলে ধরার জন্য আপনাকে শুভেচছা সহ শুভকামনা রইল।
০২ রা মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:০৫
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: ধন্যবাদ....
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪৫
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট। আসলে বিভিন্ন ভাবে বাংলা ভাষার গুরুত্ব বাড়ছে এই পৃথিবীতে। কিছু কিছু জায়গায় পাঠশালা এর স্থলে পাটশালা আছে , ঠিক করে নিবেন অনুগ্রহ করে।
লেখায় ++