নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্ন বীথি

স্বপ্ন বীথি › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইতিহাসের সাক্ষী বেনারসি

০১ লা জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৪১



বেনারসি শাড়ীর কদর পূর্বেও যেমন ছিল এখনও তেমনি। নামেই বোঝা যায় বেনারসি শাড়ি এসেছে ভারতের বেনারস থেকে। এই বেনারসি শাড়ি কোনোভাবেই ঘরোয়া শাড়ি নয়। উৎসব, অনুষ্ঠানের আনন্দকে শরীরে জড়িয়ে নিতেই যেন বেনারসি শাড়ি পরেন নারীরা। বেনারসি শাড়ির রঙিন জমিন, উজ্জ্বল সূতার কাজ উৎসবের আনন্দে রোশনাই আরো বাড়িয়ে দেয়। বিয়েতে নতুন বউকে বেনারসি কাতান দেওয়া ঢাকার আদি বাসিন্দাদের মাঝে রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। ঈদে ঐতিহ্যবাহী বেনারসি শাড়ির প্রতি সহজাত একটা টান মেয়েদের। সে জন্যই মিরপুরের বেনারসি পল্লিতে মেয়েদের আনাগোনা শুরু হয়েছে রোজার আগেই। বেনারসি শাড়ির মূল ডিজাইনের ধারা সৃষ্টি হয়েছে মোগল ঘরানা থেকে। ফুল ও আল্পনার মোটিফ, কালগা ও বেলপাতার নকশা। সেসব নকশায় শাড়ির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে বা রূপালি সোনালি সূতার জমাট কাজ। বেনারসি শাড়িতে রয়েছে আভিজাত্যের ছাপ। এসব শাড়ির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো পাকা রঙ আর ওজনে হাল্কা। দামও নাগালের মধ্যেই। তাই সবার কাছেই এ শাড়ির কদর রয়েছে। শাড়ির নামগুলোও মনকাড়া। ফুলকলি কাতান, দুলহান কাতান, মিরপুরি রেশমি কাতান, মিলেনিয়াম কাতান, বেনারসি কসমস, অরগ্যান্ডি কাতান, ব্রোকেট কাতান, রেশমি কাতান, প্রিন্স কাতান, রিমঝিম কাতান, টিস্যু কাতান, মিরপুরি গিনি গোল্ড কাতান, জর্জেট গিনি গোল্ড কাতান, চুনরি কাতান ইত্যাদি। তাই ঈদের অনেক আগে থেকেই বেনারসি পল্লিতে ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়। এবারের ঈদেও কারিগরদের কাজে নতুন নতুন আয়োজনের কোনো কমতি নেই। আর নতুন নতুন সেসব ডিজাইনের টানে ভিড় জমেছে ঢাকার মিরপুর বেনারসি পল্লিতে। ১৯৪৭ সালে দেশ-বিভাগের পর ভারতের বেনারসের কয়েকশ’ মুসলিম তাঁতী পরিবার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আসে। তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ব্যবসা শুরু করে। এদের বড় অংশটি ছিল প্রায় ২০০ পরিবারের, যারা ঢাকার মিরপুরে বসতি স্থাপন করে। তবে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরে স্থানীয়রা এ পেশায় ব্যাপকভাবে জড়িত হবার পরই ঢাকায় বেনারসি শিল্পের প্রসার বাড়তে থাকে। এর সূতা আসে বিদেশ থেকে। সে সূতা প্রথমে রঙ করা হয়। এরপর সাবান ও গরম পানিতে ধুয়ে রোদে শুকানো হয়? এরপর কয়েকটা সূতাকে একসঙ্গে করার জন্য কারখানায় পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে গ্রাফ মাস্টারদের দেওয়া ডিজাইন অনুযায়ী সে সূতা দিয়ে তাঁত শ্রমিকরা বোনে বেনারসি শাড়ি। মিরপুর ১০ ও ১১ নম্বরের বিশাল একটা অংশ জুড়ে বেনারসি পল্লি গড়ে উঠেছে। পুরো এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে শত শত কাতান আর বেনারসি শাড়ির দোকান। প্রায় প্রতিটি দোকানেরই রয়েছে নিজস্ব কারখানা। নিজেদের দক্ষতা, ঐতিহ্যবাহী নকশা আর রুচির সমন্বয়ে তৈরি হয় কাতান-বেনারসি। কাতানের দাম নির্ভর করে নকশা, উপকরণ আর জরির কাজের ওপর। এসব দোকানে সাধারণত ১৩০০-১৫০০ টাকায়ই ভালো মানের শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। ভালো মানের কাতান শাড়ির দাম শুরু হয় ৩০০০ থেকে। নকশা আর কাপড়ের মান অনুযায়ী এসব কাতানের দাম ১৫ হাজার পর্যন্ত হয়ে থাকে। বেনারসি কাতানের মধ্যে যে শাড়ির ওজন যত কম, তার দাম তত বেশি। ঐতিহ্যবাহী বিশ্বখ্যাত মসলিনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে বেনারসি পল্লীতে। ভুঁইফোঁড় ব্যবসায়ীদের এই ধরনের দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ না হলে বেনারসি তার ঐতিহ্য ও মানুষের আস্থা হারাবে। পুরানো ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বেনারসির আরও উন্নতি হোক এ প্রত্যাশা সবার।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৩

দ্যা ফয়েজ ভাই বলেছেন: প্রত্যাশা রইলো।দুর্নীতি সবখানেই আছে,শাড়ির বাজারেও।বেনারসিরর দাম এতটা কম হবে বুঝি নি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.