নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বীকৃতি প্রসাদ বড়ুয়া\nআমি ভালোবাসি মানুষকে। তুমি ভালোবাসো আমাকে।

স্বীকৃতি প্রসাদ বড়ুয়া

আমি ভালোবাসি মানুষকে, তুমি ভালোবাস আমাকে

স্বীকৃতি প্রসাদ বড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

রম্যগল্প : কলিগ

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৭

কলিগ
স্বীকৃতি প্রসাদ বড়ুয়া
কলিগ হয় অনেকপ্রকার। সেই অনেক প্রকার থেকে কয়েক প্রকার কলিগের বর্ণনা।
ইনভিসিবল কলিগ : এই ধরণের কলিগ আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়বে।তুমি তাকে দেখতেই পাবে না। কেবল বুঝতে পারবে, তোমাকে দেখামাত্র তোমার বসের মুখ গোমড়া হয়ে যাচ্ছে।
সৎমা কলিগ : এই সমস্ত কলিগের চোখে সর্বদাই আপনি সৎছেলে। কাজেই, নিজের সুযোগ সুবিধের দিকে তার যত না নজর, তার চেয়ে বেশি নজর তোমার সুযোগ সুবিধার দিকে। তোমার একটুখানি সুবিধে হয়ে গেল কি গেল না, অমনি তোমার সৎমা কলিগর মুখে আষাঢ়ের মেঘ জমতে শুরু করবে।
মাসি কলিগ : মাসি কলিগ আরও মারাত্মক। মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি তো, তাই দেখা হলেই তোমার মাসি কলিগটি তোমায় বলবে : শরীর টা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছে তোমার। ইস্ কী রোগা হয়ে গিয়েছ। কিংবা, আর কত মোটা হবে তুমি? এই বার ডাক্তার দেখাও।নইলে-। শুনেই তোমার হার্ট বিট, ব্লাড প্রেসার তরতর করে বাড়তে থাকবে।একজন উর্দু কবি শায়েরিতে বলেছিল : ভুলেও তোমার জখমের জায়গাটা তোমার তথাকথিত বন্ধুদের দেখাবে না, কেন না, তোমার ক্ষতস্থানে ঘষে দেয়ার জন্য তারা সবাই মুঠোর মধ্যে লবণ নিয়ে রেডি হয়ে আছে।
মশা কলিগ : এই জাতের কলিগরা কম মারাত্মক নয়। তারা নিরন্তর তোমার রক্তে প্রাণ ধারণ করবে, আবার তোমাকেই হুলের জ্বালায় অস্থির করে তুলবে। তোমার কাছ থেকে সারাক্ষণ উপকার নেবে, তোমার প্যাকেট থেকে সিগারেট ধ্বংস করবে, তোমার পয়সায় চা খাবে, তোমার থেকে কিস্তিতে কিস্তিতে লোন নেবে, আবার তোমার পিছনে সবার আগে কাঠি দেবে।তোমার থেকে নেয়া লোনের টাকাটি পকেটে পুরতে পুরতেই সে তোমার হিসাব বহির্ভুত আয়ের উৎস নিয়ে গবেষণা জুড়ে দেবে।
মাছি কলিগ : এই মাছি কলিগরা সারাক্ষণ তোমার চারপাশে ভনভন করবে। তুমি জ্ঞানে অজ্ঞানে যেই না কারো সম্পর্কে একটা মন্তব্য করলে-অমনি কথাটি মুখে করে বয়ে নিয়ে মাছি কলিগটি উড়ে চলল। এবং একটু বাদেই তোমার বলা নিরীহ উক্তিটিকে নিজের মুখের লালায় ভিজিয়ে নিয়ে উজাড় করে দিল তোমার বিরোধীপক্ষকে।
কাঁচি কলিগ : নাপিতের কাঁচি চালানো দেখেছো তো? একবার দু’এক গাছি চুল কাটছে তো দশবার ক্যাঁচ ক্যাঁচ আওয়াজ করে নিজের কর্মতৎপরতা জানান দিচ্ছে সবাইকে। কাঁচির আওয়াজ শুনলে মনে হবে, বুঝি মাথার সব চুলই লোপাট হয়ে গেল। কিন্তু এ হল নাপিতের কাঁচি। কাটে যত, ক্যাঁচ ক্যাঁচ করে আওয়াজ তোলে তার দশগুণ।কাঁচি কলিগেরাও তেমনই। কাজ করবে যত, ফাইল হাতে ছুটে বেড়াবে তার দশগুণ। দেখতে দেখতে তোমার মুগ্ধ বস দশ মুখে সুখ্যাতি করবে ওর। অর্থাৎ কাঁচি কলিগের দাপটে বসের চোখে তুমি একটি অকর্মার ধাড়ি।
হাঁচি কলিগ : সে সারাক্ষণ তোমার পেছন হাঁচবে। তোমার শুভ কাজে কনস্ট্যান্ট বাগড়া দিয়ে যাবে। কোথাও বেরোচ্ছো নাকি? বস কিন্তু ডাকতে পারে। কোথায় চললে? সাড়ে চারটায় অফিস কাটছো নাকি? প্রোডাকশন ইউনিটে বদলি নিতে চাইছো শুনলাম। ইউনিয়নকে নাকি ধরেছো। সাহেব জানে? ইয়ার এন্ডিংএর রিপোর্ট কমপ্লিট না করিয়ে বস তোমায় ছাড়বে বলে মনে হয় না। তার জবাবে তুমি যদি বল, ছাড়বেই না যদি, তবে অ্যাপ্লিকেশন ফরোয়ার্ড করলো কেন? তার জবাবে হাঁচি কলিগ বলে উঠবে, বসের হয়তো বা মনে নেই। মনে পড়লেই আটকে দেবে। এবং ঠিকই তাই হলো। পরের দিন বস তোমাকে ডেকে সাফ জানিয়ে দিল, ইয়ার এন্ডিংয়ের রিপোর্ট না পাঠিয়ে তোমার প্রোডাকশন ইউনিটে যাওয়া হবে না। রাতারাতি বস মত বদলাল কেন? কারণ ইতিমধ্যে তোমার হাঁচি কলিগটি তোমার বসের কাছে গিয়ে হেঁচে দিয়ে এসেছে।
পেটে ব্যথা হলে তাকে ইংরেজিতে বলে কলিক পেইন। কর্মক্ষেত্রে যে যন্ত্রণা মানুষকে অহরহ ভোগ করতে হয়, তাকে বলে কলিগ পেইন। যাঁরা ভুক্তভোগী তারাই বোঝেন, কী যন্ত্রণাময় তা।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৬

চন্দ্রপ্রহরী বলেছেন: ভালো লাগলো।

২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫৭

কামরুল ইসলাম রুবেল বলেছেন: দাদা বলেন তো আমি কেমন কলিগ? যার সাথে কোনদিনই কথা হয়নি। :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.