![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার নাম আব্দুল আহাদ। বর্তমানে পাবনা জেলা স্কুলে লেখা পড়া করছি। অর্থাৎ আমি একজন স্কুল ছাত্র। এছাড়াও অামি একজন স্কাউট। আরো অান্তর্জাতিক রোটারী আন্দোলনের কিশোর সদস্য একজন ইন্ট্যরেক্টর আমি। শিশুদের অধিকার নিয়ে বর্তমানে কাজ করছি পাবনা জেলা শহরে। ন্যাশনাল চিলড্রেন’স টাস্ক ফোর্সে ”সাধারণ সদস্য” -পাবনা জেলা শাখা। আমার ধর্ম ইসলাম এবং মহানবী (স) এর আদর্শ অনুযায়ি সকল ধর্মের মানুষকে সম্মান করি। আমি আমার দেশেকে ভালোবাসি। ভালোবাসি পৃথিবীকে। আমার আগ্রহের বিষয় গুলোর ভেতর আছে পদার্থবিজ্ঞান, মহাকাশ বিদ্যা, সামরিক বাহিনী, সমাজ তন্ত্র, রাষ্ট্রতন্ত্র, কম্পিউটার, সাধারণ মানুষ, খেলাধূলা, ভ্রমণ ইত্যাদ। বিঃদ্রঃ নিজেকে ভালোবাসবেন এবং অন্যকে ভালোবাসবেন, অবশ্যই আমি আপনার প্রকৃত বন্ধু হব! কথা দিলাম!
কিছুদিন আগে পাবনায় জেলা প্রশাসক আয়োজিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় অংশগ্রহন করে পাবনা জেলা শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েরা। বিজ্ঞান মেলায় দুই দিন ব্যাপি প্রদর্শনী- ৩রা মে ও ৪ঠা মে ২০১৭খ্রীঃ। বিজ্ঞান মেলায় আমি জীবণে বহু প্রোজেক্ট দেখে আসছি কিন্তু এই প্রথম অদ্ভুত প্রোজেক্ট ও তার উপস্থাপন দেখলাম। প্রোজেক্টটা ছিল পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি মেয়ের কল্পনাকে নিয়ে। মেয়েটির নাম ******** ******** *******। তাদের স্টলে দুইজন। সে আর তার বান্ধবী। তারা সৌরজগতের একটা ত্রিমাত্রিক কাঠামো নিয়ে আসেছিল এবং মাল্টিমিডিয়া প্রোজেক্টরে সৌর জগতের ছবি, মহাকাশের ছবি দেখাচ্ছিল আর কিসব যেন বলছিল!!! প্রথমে মনে করি যে তারা হয়ত সৌরজগতের মডেল নিয়ে আসছে আর তার বর্ণনা করছে, একি মেলায় উপস্থাপনের মত কোন প্রোজেক্ট হল!! অন্যসব স্টলের ভূরি ভূরি প্রোজেক্টের কাছে তা যেন নগ্যন। আসলেও তো নগন্য!! সেটা তো আমাদের দৈন্দিন জীবণে কোন কাজে আসবেনা। আবার বিজ্ঞান মেলায় সেই প্রোজেক্টের মার্ক তত বেশি যা আমাদের দৈন্দিন জীবণকে যত সহজ করে। তাই এসবের কাছে তার প্রোজেক্টের মার্ক একেবারেই নেই বলেই চলে। কিন্তু যখন তাদের স্টলের কাছে গেলাম তখন মেয়েটির কথা শুনে অবাক!!! মানুষের কল্পনা শক্তি, বিশেষ করে আমাদের মত কিশোর-কিশোরীর কল্পনার জগত কত বড় হতে পারে ওর প্রোজেক্ট তার নিদর্শন। সে এভাবে বর্ণনা করছিল যে, আমাদের সৌরজগতের কেন্দ্রের নক্ষত্র আর সকল নক্ষত্রের মত একদিন স্বাভাবিক নিয়মে ধ্বংস হবে। কিন্তু তা হলে আমাদের সৌরজগত বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে। আমরা আর শক্তি পাবো না। পৃথিবী-মঙ্গল সব বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে। এমনও তো হতে পারে যে আমাদের নতুন গ্রহের সন্ধান করতে হবে। সৌরজগতের বাইরেও আছে নানান গ্রহ যাতে মানব বসতি সম্ভব। এখন থেকেই গ্রহটা খুজব, যদি গ্রহটা কোন বাঙালি খুজে পায় তবে গ্রহটার নাম হবে “বাংলাদেশ”। সেটা হতে পারে কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরের কোন একটি গ্রহ। মানব জাতি অত দূরেও একদিন পৌছে যাবে…………ইত্যাদি ইত্যাদি – কথাগুলো শুনে মনে হচ্ছিল যেন বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী পড়ছি। মেয়েটা সবার সামনে তার ইচ্ছাকেও প্রকাশ করল যে সেই ওই গ্রহকে খুজে বেড় করবে এবং সেটাই হবে আমাদের বসতি যার নাম বাংলাদেশ!!!
তার কাল্পনিক সব কথা শুনে লোকজন তাদের স্টল থেকে দূরে গিয়ে তাদের প্রোজেক্ট নিয়ে তামাশা করছে, কেউ কেউ তাদের সামনেই বাজে মন্তব্য করে তামাশা করছিল। আরো অপ্রাঙ্গিক কথা বলছিল। সবাই তাদের প্রোজেক্টের মূল্যায়ণ করছিল, আর আমি তার স্বপ্নকে মূল্যায়ন করেছিলাম। আসলে এই সব বিজ্ঞান মেলায় যারা ঘুড়তে আসে তারা যে মহা পন্ডিত!! যেন অন্য জনের ভুল না ধরলে পেটের ভাত হজম হয় না। অন্যজনকে তামাশার পাত্র বানাতেই হবে! অনেক সময় দেখা যায় সেই সব তামাশা বড় বড় কল্পনাকে ছোট করে শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে নিয়ে আসে।
সেই দিন দুপুর বেলা তারা স্টল খালি করে চলে যায় আর দ্বিতীয় দিন তারা আর স্টলেই আসে নি! তারা হয়ত ধরেই নিয়েছিল তারা টিকবে না!!!
হায় আফসোস!
যারা লেখাটি পড়ছেন তাদের জন্য বলছি, মানুষে আজকে যেটা কল্পনা করে কালকে তা বাস্তব করে! আজকের স্বপ্ন আগামীতে বাস্তব। ভাবুন তো, ২০০ বছর আগেও যদি এই ইন্টারনেট নিয়ে কেউ যদি কোন বিজ্ঞান মেলায় গল্প শোনাত; তা নিয়ে মানুষ হাসাহাসি করত না!! অবশ্যেই করত! কিন্তু আজ এই ইন্টারনেট বাস্তব! মানুষ চাদে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল, তা সম্ভব হয়েছে। ১৮০ দিনে বিশ্ব ভ্রমণ এককালে ছিল কৌতুক, আর এখন ১৮০ ঘন্টায় পৃথিবী ঘোরা স্বাভাবিক বিষয়! এককালে পানির তলদেশ ছিল যা মানুষের কল্পনার রাজ্য, এখন সাবমেরিনের জন্য তাও বাস্তব জগতে পরিনত।
আসলে আমরা যারা সাধারণ মানুষ তাদের মহাকাশবিদ্যার প্রতি ততটা আগ্রহ নেই। কারণ মহাকাশ গবেষণার ফলাফল আমাদের প্রতিদিনের জীবণের কোন পার্থক্য ঘটায় না। মহাকাশ গবেষণার ফলাফল সাধারণ মানুষের তাৎক্ষনিক উপকারে আসে না। সাধারণ দৃষ্টিতে, মহাকাশ গবেষণার ফলে নতুন কোন প্রযুক্তি আবিষ্কার হচ্ছে না। কারণ, সাধারণ জনগন প্রতিবছর খোজ নেয় বাজারে নতুন কোন প্রযুক্তি আসল। কিন্তু তারা খেয়াল করে না যে এই মহাকাশ গবেষণার ফলে ও মহাকাশ গবেষণার জন্যই আবিষ্কার হয়েছে না না প্রযুক্তি; আজকের দিনটাকে সহজ করেছে। যেমন, যখন মানুষ চাদ নিয়ে গবেষণা করত এতে তৎকালিন মানুষের কোন উপকারে আসত না। এটা যেন বৈজ্ঞানিক বিলাসিতা। কিন্তু একটু খেয়াল করে দেখুন যে তখন ওই গবেষণা হয়েছিল বলেই আজকে কৃত্রিম উপগ্রহ সম্ভব। আজকের ইন্টারনেট, ফোন কল, যোগাযোগ, গোয়েন্দা, আবহাওয়ার অবস্তা নির্নয়; সব সম্ভব হচ্ছে।
আমরা তো সার্থপর ভক্ষক। আমরা শুধু প্রযুক্তির মজা লুটে যাই, জ্ঞানের মজা লুটতে পারি না। যারা স্বপ্ন দেখায় তাদের হাসির পাত্র বানাই। যুগে যুগে কত বিজ্ঞানি আর গবেষক পরিশ্রম করে গেল, কিন্তু বদলে তারা কি পেল? তামাশা!। কিন্তু যখন আজকে তারা নেই তাদের সব ফর্মূলা ব্যবহার করেই আমরা জীবণটাকে করছি সুন্দর।মনে করুন, আজও কেউ হয়ত এই মুহূর্তে তামাশার পাত্র হচ্ছে।
©somewhere in net ltd.