![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই ব্লগের যেকোন লেখা বিনা অনুমতিতে কপি-পেষ্ট করা যাবে
بسم الله الرحمن الرحيم
সকল প্রশংসা আল্লাহর। অসংখ্য দরুদ নাযিল হোক তাঁর নবীর উপর বারবার।
ভালো মন্দের চূড়ান্ত মাপকাঠি হলো একমাত্র ধর্ম
১-এই কাজটা ভালো। এই কথার কি অর্থ ? উত্তর এলো, ভালো মানে হলো এটা একটি উত্তম কাজ।
২-উত্তম কাজ ! এর মানেই বা কি? উত্তর এলো, আরে উত্তম মানে আবার কি? মানে হলো এটা ন্যায়।
৩-এ্যা! ন্যায়! এই ন্যায় মানে কি? উত্তর এলো, ন্যায় মানে,... ন্যায় মানে এটা করা উচিৎ।এটা ভালো।
৪-আরে ভাই আপনি ঘুরে ফিরে এক কথাই বলছেন। বাদ দেন সংজ্ঞা। আসল কথা জিজ্ঞাসা করি।এটা করা উচিৎ , এই কথা আপনাকে কে বলেছে? আপনি বা অন্য কেউ বললেই আমাকে সেটা মানতে হবে কেন? আর ধরেন মানলাম উচিৎ, তো, তাতে কি হয়েছে? উচিৎ হলে করতে হবে ,অনুচিত হলে করা যাবে না, এই বাধ্যবাধকতা কে আরোপ করলো? আপনি বা সমাজ বললেই আমাকে মানতে হবে কেন? ........................
এই এক ঝগড়া, ভালো খারাপ নিয়ে, চলে আসছে অনেক আগে থেকে। ভালো খারাপ কাকে বলে? কিভাবে আমরা বুঝবো যে কোন কাজটা ভালো আর কোন কাজটা খারাপ? কি হবে এর মানদণ্ড ? কে নির্ধারণ করে দিবে এই মানদণ্ড?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর যাই হোক, তার আগে আসেন আমরা দেখি মানুষ মোট কয়ভাবে ভালো খারাপ নির্ণয় করে। কোন কিছু ভালো বা খারাপ আমরা বিবেচনা করি মোটামুটি চারভাবে।(কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক সে প্রশ্ন আপাতত থাক।)
১।ধর্মীয় মানদণ্ডঃ বিশ্বাসীরা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ভালো মন্দ বিবেচনা করে । ধর্ম যেটাকে ভালো বলেছে তারা সেটাকে ভালো বলে,এবং ধর্ম যেটাকে খারাপ বলেছে সেটাকে তারা খারাপ বলে।
২।নাস্তিকদের মানদণ্ডঃ নাস্তিকরা নাস্তিক্যবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে ভালো মন্দ বিচার করে। তারা যেহেতু ধর্মকে মানে না,তাই ধর্মীয় আদেশ নিষেধের কোন মূল্য তাদের কাছে নেই। আর সামজিক দৃষ্টিকোণকে তারা একেক জন একেক হিসাবে দেখে।একেক সামাজিক প্রথার ক্ষেত্রে তারা একেক রকম আচরণ করে। বরং সামাজিক অনেক প্রথাকেও তারা যুক্তি ও বিজ্ঞানের মাপকাঠিতে যাচাই করে। নাস্তিকদের দৃষ্টিকোণটা মনে হয় এরকম যে,যে যেটা ইচ্ছা করতে পারে, তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে করে অন্যের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং বিবাহপূর্ব প্রেম, যৌনতা, মদপান, গান-বাজনা, বিবাহ ছাড়া এক সাথে জীবন যাপন ইত্যাদি তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে কোন অন্যায় নয়। (((আসলে নাস্তিকরা যেহেতু সৃষ্টিকর্তাকে মানেনা, সেই হিসাবে তাদের এই ভিত্তি ঠিকই আছে মনে হয়। ইসলামপন্থীরাও মনে হয় অনেকটা এরকমই বলে যে, আল্লাহ মানুষকে ঐ সকল কাজ করার আদেশই করেছেন যেটা তে মানুষের নিজেরও মঙ্গল, অপরেরও মঙ্গল, দুনিয়ার জীবনেরও মঙ্গল, আখেরাতের জীবনেরও মঙ্গল। অন্যদিকে আল্লাহ মানুষকে ঐ সকল কাজ করতেই নিষেধ করেছেন যেগুলো করলে মানুষের নিজের ক্ষতি বা অপরের ক্ষতি বা দুনিয়ার ক্ষতি বা আখেরাতের ক্ষতি।কিন্তু যেহেতু মানুষ নিজে বিবেক,বুদ্ধি,যুক্তি খাটিয়ে সবসময় এবং নির্ভুলভাবে এটা বুঝতে পারে না যে কোন কাজে তার মঙ্গল আর কোন কাজে তার অমঙ্গল, তাই আল্লাহ যুগে যুগে নবী পাঠিয়ে এটা জানিয়ে দিয়েছেন ।)))
কোন গোঁরা নাস্তিক বলতে পারে যে, আমার কোন কাজে কারো কোন ক্ষতি হলে সেটা খারাপ, সেটা করা যাবে না এটা কে নির্ধারণ করলো? কোন ভিত্তিতে নির্ধারণ করলো? কারো মন চাইলে সে এই বাধ্যবাধকতা মেনে চলুক, কিন্তু সে আমার উপর এটা চাপিয়ে দিতে পারেনা। আমার দরকার হলে আমি অবশ্যই চুরি, ডাকাতি, খুন করবো, রাস্তাঘাটে মেয়েদের জোর করে ধর্ষণ করবো , ঘরবাড়ি , দোকানপাঠ, যানবাহন ভাংচুর করবো ইত্যাদি ইত্যাদি যা খুশী তা করবো। দরকার না হলেও করতে পারি , আবার বিরত থাকতেও পারি । আমার সোজা কথা হলো ভালো খারাপ বলে কিছু নাই। যেটা মন চায় সেটাই আমি করতে পারি। মন চাইলে ভালো থাকতে পারি মন চাইলে খারাপ থাকতে পারি।
তখন সাধারণ নাস্তিক বলতে পারে যে, মানুষ যেহেতু সমাজবদ্ধ জীব, তাই আমাদেরকে সমাজবদ্ধ হয়ে একসাথে থাকতে গেলে, এবং পৃথিবীতে মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে এই আইন মেনে চলতেই হবে যে অপরের ক্ষতি হয় এমন কাজ করা যাবে না।
এবার গোঁরা নাস্তিক বলতে পারে যে, হ্যাঁ, এটা বলো যে আমাদের নিজেদের স্বার্থে আমাদেরকে অপরের ক্ষতি হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। এখানে ভালো খারাপ বলে কোন কথা নাই।
৩।সামাজিক মানদণ্ডঃ আবার আমরা অনেকে সমাজের প্রথা বা চল হিসাবে ভালো মন্দ বিচার করি। সমাজের মানুষের মাঝে কোন একটা বিষয় খারাপ বা অনুচিত বা বেয়াদবী বলে গণ্য হলে আমরাও সেটাকে খারাপ হিসাবে দেখি। সমাজের মানুষ কোন একটা কাজকে ভালো বা খারাপ বললে আমরাও সেটাকে ভালো বা খারাপ বলি।
সমাজের এইসব প্রথা গড়ে উঠার পিছনে অনেক কিছুর প্রভাব থাকে, সেগুলোর মধ্যে ধর্মও একটি শক্তিশালী প্রভাবক। অনেক সময় ধর্মের রীতি আর সমাজের রীতির মধ্যে সংঘর্ষও হয়।সেক্ষেত্রে প্রকৃত ধার্মিকরা ধর্মীয় রীতি তথা সৃষ্টিকর্তার আদেশ নিষেধকে অগ্রাধিকার দেন।
আবার অনেক সময় কোন ধর্মীয় রীতি সমাজেরও রীতি হয়ে যায়। যেমন ঈদ, শবে বরাত ইত্যাদি । তখন প্রকৃত ধার্মিকরা সেটাকে ধর্মীয় নীতি হিসাবেই পালন করেন, দুর্বল ঈমান, বংশ সূত্রে মুসলমান যারা তারা সেটাকে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে হয়তো সমাজের রীতি হিসাবেই পালন করে।সবাই করছে ,না করলে কেমন দেখা যায়, লোকনিন্দার ভয়, পাছে লোকে কিছু বলে।
এখানে একটি অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে যে, আমি এক সমাজের রীতি দিয়ে কখনো অন্য রীতির সমাজের কোন মানুষকে মন্দ বলতে পারিনা।বর্তমানের সমাজের বা আমার নিজের সমাজের কোন প্রথার উপর অন্ধ ভক্তির কারণে অতীতের কোন সমাজের বা বর্তমানেরই ভিন্ন কোন সমাজের মানুষকে আমি খারাপ বলতে পারিনা। যেমন ধরেন আমাদের দেশের কোথাও কোথাও এই প্রথা আছে যে ঈদের দিন বা কোথাও বেড়াতে গেলে মুরুব্বীদের পা ধরে সালাম করতে হয়, না করলে বেয়াদবী মনে করা হয়, বলা হয় যে, আদব কায়দা কিছু শিখেনি। এখন এই কদমবুসির রীতির সমাজের মানুষ কিন্তু ভিন্ন রীতির আরেক সমাজের কাউকে কদমবুসি না করার কারণে বলতে পারেনা যে, আদব কায়দা কিছু শিখেনি বা অভদ্র ইত্যাদি। এরকম আরো অনেক রীতি আপনারা খুঁজলেই পাবেন। কথায় বলে এক দেশের গালি আরেক দেশের বুলি।এই বিষয়টি আর একটু ভালো করে বুঝতে হলে সামুর প্রখ্যাত নাস্তিক ব্লগার জনাব পারভেজ আলমের এই লেখাটি পড়ে দেখতে পারেন
আবার আপনি আপনার সমাজের কোন রীতিকে ভিন্ন সমাজের রীতির চেয়ে শ্রেষ্ঠ বলতে পারেন না এই হিসাবে যে এটা আপনার সমাজের রীতি। তাহলে ভিন্ন সমাজের লোকেরাও তো একই কথা বলবে। তেমনিভাবে আপনি বর্তমানের কোন রীতিকে অতীতের সমাজে প্রচলিত কোন রীতির চেয়ে ভালো বলতে পারেন না। সবার কাছেই তো নিজেরটা ভালো লাগবে। আপনার সমাজের রীতি তো অতীতের সমাজের রীতিকে ভেঙ্গেই তৈরী হয়েছে। অথচ তখন সেটাই ভালো ছিলো সমাজ হিসাবে।তাহলে ভালোকে ভেঙ্গে যেটা আসলো সেটা কি ? আবার বর্তমানের রীতিও পাল্টে যাবে একসময়।
এখন আপনি যদি বলেন যে, এমনি এমনি তো আমার সমাজের রীতিকে শ্রেষ্ঠ বলবো না , কোন যুক্তির ভিত্তিতেই বলবো। তাহলে কিন্তু আপনি আর এই ৩নং গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত রইলেন না ,যারা নাকি সামাজিক প্রথাকেই ভালো খারাপ নির্ণয়ের মানদণ্ড বা ভিত্তি মানে। আপনি তাহলে যুক্তির ভিত্তিতে ভালো খারাপ নির্ণয়কারীদের গ্রুপে পরবেন।
এখন ধরেন যদি আপনি কদমবুসি রীতি পালনকারী সমাজের পক্ষে যুক্তি দেন যে, এই রীতিটা ভালো, কেননা এতে করে বড়দের প্রতি বেশী সম্মান প্রকাশ পায়। তখন ঐ সমাজের মানুষ বলবে, বড়দের সম্মান করা বা একটু বেশী সম্মান করা যে ভালো এটা আপনি বললেন কোন যুক্তিতে। এখন যদি আপনি বলেন যে, আরে ভাই এটা সাধারণ বিবেকেই বুঝা যায়, আপনাদের বিবেক কি বলে ? এই কথা বললে তো আপনি যুক্তিবাদী গ্রুপের থেকে লাফ দিয়ে বিবেককে ভালো খারাপের মানদণ্ড নির্ধারণকারী গ্রুপের সদস্য হয়ে গেলেন। এখন তাহলে কথা হলো বিবেক কি ভালো খারাপের মানদণ্ড হতে পারে কিনা । এ ব্যাপারে সামনে আলোচনা আসছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে আপনি ভালো খারাপ নির্ধারণ করার কোন ভিত্তি বা মানদণ্ড খুঁজে পাচ্ছেন না।
৪।বিবেকের মানদণ্ডঃ অনেকে বলেন বিবেক দিয়ে ভালো মন্দ নির্ণয় করতে হবে। বিবেক কি? সহজ ভাষায় বলা যায়, মানুষের ভিতর একটি শক্তি এমন আছে যেটা তাকে ভালো কাজ করতে বলে, খারাপ থেকে বিরত থাকতে বলে। এটাকে আমরা বিবেক বলি।(বা সু প্রবৃত্তিও বলি। ভুলে গেলে চলবে না যে মানুষের মাঝে কিন্তু খারাপ কাজের প্ররোচনা দানকারী কু প্রবৃত্তিও আছে) কিন্তু কথা হলো ভালো কাজ করতে আর খারাপ কাজ না করতে বলার আগে, ভালো খারাপ, উচিত অনুচিত নির্ধারণও কি বিবেকই করে? নাকি পূর্বের তিন ভিত্তির আলোকে মনের মধ্যে আগে থেকে নির্ধারিত ভালো খারাপকে বিবেক করতে বলে বা বিরত থাকতে বলে? যদি বলি বিবেক ভালো খারাপ নির্ধারণও করে তাহলে প্রশ্ন আসবে বিবেক ভালো খারাপ নির্ধারণ কিসের ভিত্তিতে করে ? বিবেক যে সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত দিবে সেটার কি নিশ্চয়তা? বিবেকে বিবেকে তো মতভেদ হয়। এখন এক বিবেক সঠিক হলে অন্য বিবেক ভুল। তাহলে তো বুঝা গেলো কারো কারো বিবেক ভুল করতে পারে। এখন কার বিবেক সঠিক সিদ্ধান্ত দিলো আর কারটা ভুল সিদ্ধান্ত দিলো এই ফায়সালা কে করবে? কোন ব্যাক্তি বা গোষ্টি কি বিনা যুক্তিতে বিনা বিচারে নিজেদের বিবেকের সিদ্ধান্তকে অন্য কারো উপর চাপিয়ে দিতে পারে? নিজের বিবেকের ফায়সালা মতো সে কি অন্য কারো কোন কাজকে খারাপ বলতে পারে? এখন যদি উভয় দল, এটা ফায়সালা করার জন্য বসে যে, কাদের বিবেকের সিদ্ধান্ত সঠিক ; তাহলে যেটার উপর ভিত্তি করে ফায়সালা করবে সেটাইতো ভালো মন্দের মাপকাঠি হয়ে গেলো, বিবেক আর মাপকাঠি রইলো না।(যদি ফায়সালার ভিত্তিটা যুক্তি হয় তাহলে আবার সেই আগের ৩নং পয়েন্টের চক্করে পরতে হবে, অনেকটা ডিম আগে না মুরগী আগে সেরকম অবস্থা আরকি) তাই আমার মনে হয় বিবেক কোন ভালো মন্দ নির্ণয়ের মাপকাঠি নয়, বরং ধর্ম, সমাজ, শিক্ষা, যুক্তি ইত্যাদির প্রভাবে একটা মানুষের মনে ভালো মন্দের যে একটা মোটামুটি লিস্ট তৈরী হয় সুস্থ বিবেক তাকে সেই লিস্ট থেকে ভালোটা করতে বলে আর মন্দটা থেকে বিরত থাকতে বলে। আবার এই বিবেকটুকুও কিন্তু খুব দুর্বল বা প্রায় মৃত হয়ে যেতে পারে, বারবার বিবেকের অবাধ্য হয়ে মন্দ কাজ চালিয়ে যেতে থাকলে। (বা কথাটা এভাবেও বলা যায় যে- এবং এভাবে বলাটাই অধিক শুদ্ধ মনে হচ্ছে- সুস্থ বিবেক ভালো মন্দ নির্ণয় করতে পারলেও, মতভেদের জায়গায় এটা ফায়সালা করা যায় না যে কার বিবেক সুস্থ আর কারটা অসুস্থ, কার বিবেকের সিদ্ধান্ত সঠিক আর কারটা ভুল। এই ফায়সালা একমাত্র তিনিই করতে পারেন যিনি ভালো মন্দকে সৃষ্টি করেছেন, সৃষ্টি করেছেন বিবেককে। তাই ধর্ম তথা আল্লাহর আদেশ নিষেধই হতে পারে ভালো মন্দ নির্ধারণের একমাত্র স্থির মাপকাঠি; ধর্মকে মাপকাঠি বিশ্বাস করলেই যে কেউ খারাপ কাজ করবে না এমন নয়। এই বিশ্বাস অনুযায়ী জীবন চালানোর জন্য লাগবে আল্লাহ্র শাস্তির ভয় , এবং এই পরিমাণ ভয় যে, যেসব জিনিষ (যেমন, রাগ, হিংসা, অহংকার, লোভ ইত্যাদি)মানুষকে খারাপ কাজের দিকে চালিত করে সেসবের উপর যেন তার ভয় জয়ী হতে পারে। )
আবার দেখুন, বিবেক বা সু প্রবৃত্তি শুধু ভালোর দিকে আপনাকে আহ্বান করতে পারে কিন্তু বাধ্য করতে পারেনা। সেই সাথে মানুষের মাঝে রয়েছে কু প্রবৃত্তি, যেটা মানুষকে খারাপ কাজের দিকে প্ররোচনা দেয়। মানুষ অভাবে পরলে টাকার জন্য , বিপদে পরলে তা থকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য, এক কথায় দুঃখকষ্ট , বিপদ আপদ থেকে বাঁচার জন্য এবং সুখ শান্তি, আরাম আয়েশ, ভোগ বিলাসের জন্য শতভাগের কাছাকাছি মানুষ নিজের বিবেকের কথা না শুনে নিজের কু প্রবৃত্তির কথা শুনে অনৈতিক কাজ করে, অপর মানুষের ক্ষতি করে। তাই সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য, এক মানুষকে অপর মানুষের ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য পুলিশ আদালত,জেল জরিমানা ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়েছে; যাতে করে মানুষ এসবের ভয়ে সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্টকারী কোন কাজ না করে। কেননা, দুনিয়াতে খুব কম মানুষই শুধুমাত্র বিবেকের কথা স্বেচ্ছায়, কোন ধর্মীয় বা রাষ্ট্রীয় বা বৈষয়িক ভয় ও প্রলোভন ব্যতীত শোনে। আর যদি এমন হয় যে বিবেকের কথা শুনলে বরং দুনিয়াবী কোন ক্ষতি হতে পারে বা লোভনীয় কোন কিছু হাত ছাড়া হতে পারে ,তাহলে তো আর কথাই নেই ।অবলীলায় তখন মানুষ রাষ্ট্রীয় , সামাজিক, পারিবারিক ইত্যাদি সকল আইন পদদলিত করে। দুর্বল বিশ্বাসের সাধারণ মানের ধার্মিক, এবং যে নাকি ধর্মকে আল্লাহ্র হুকুম হিসাবে মানে না বরং সামাজিক প্রথা হিসাবে মানে এরা তখন সহজেই বিবেকের কথা অমান্য করে আল্লাহ্র আইন লঙ্ঘন করে ফেলে। বেশীরভাগ মানুষ নিজের ক্ষতি করে , লস করে বা নিজের সুবিধা, আরাম ত্যাগ করে শুধু বিবেকের কথায় সৎ পথে চলবে না, রাষ্ট্রের আইন মানবে না, সমাজের রীতি মানবেনা। কোন কিছুর ভয় বা আশা তার সামনে থাকতেই হবে।এই জন্য সর্ব যুগেই আইন ছিলো, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ছিলো। কিন্তু পুলিশ তো প্রত্যেক ঘরে ঘরে, অফিসে অফিসে পাহাড়া দিতে পারে না। যার ফলে খারাপ লোকেরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঠিকই অবৈধ কাজ করে যাচ্ছে। দিন দিন বাড়ছে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অনাচার,খুন-রাহাজানি-ব্যভিচার,নির্যাতিত হচ্ছে মানবতা, নিষ্পেষিত হচ্ছে মানবাধিকার।বাতাসে ভাসে ক্ষুধার্ত, আহত শিশুদের ভয়ার্ত আর্তনাদ, বেদনার হাহাকার। নিয়ত ঘটছে শত অন্যায়-অত্যাচার, দুঃশাসন-ব্যভিচার, আর লুটপাট-রাহাজানি ; নিপীড়িতের হাহাকার কেউ নাই শুনিবার। এখন তাহলে কি উপায়? একটাই উপায় আছে, আর সেটা হলো মানুষের মাঝে আল্লাহ্র ভয় সৃষ্টি করা। আর আল্লাহর ভয় পুলিশের চেয়ে অনেক বেশী কার্যকরী, আইন শৃঙ্খলা রক্ষায়। কেননা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কারো বেডরুমে পুলিশী প্রহরা বসাতে না পারলেও আল্লাহর ভয় কিন্তু বেডরুমে, রাতের অন্ধকারে, নির্জন প্রান্তরে সব জায়গায় পুলিশ হিসাবে কাজ করবে, যদি অন্তরে আসলেই আল্লাহর ভয় থাকে। এখান থেকেই আপনি বুঝুন ধর্মের তথা আল্লাহ ভীতির কি প্রয়োজনীয়তা। যেই কারণে পুলিশের, জেলখানার প্রয়োজন সেই কারণেই ধর্মেরও প্রয়োজন এবং তুলনামূলক বহুগুণে বেশী প্রয়োজন। আল্লাহ্র ভয় কিভাবে মানুষকে খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে তা জানতে হলে এখান থেকে একটু ঘরে আসুন। নীচে ৫নং কমেন্টেও এই লিংকের বক্তব্য দিয়ে দিলাম।
তাহলে আমরা একদম উপরের ৩নং ও ৪নং মানদণ্ডের আলোচনা থেকে বুঝতে পারলাম যে, ধর্মই হতে পারে ভালো খারাপ নির্ণয়ের একমাত্র স্থির মাপকাঠি।
এরপর আমরা বুঝতে পারলাম সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় ধর্মের কত প্রয়োজন। (ধর্মের সত্যতার কোন প্রমাণ যদি কেউ নাও পায় , তবুও তাকে সমাজের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য একটি সঠিক ধর্মের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করতে হবে)
এরপর আমরা নাস্তিকদের এ সম্পর্কীয় কিছু অযৌক্তিক প্রশ্নের উত্তর জানতে পারব কমেন্টে। আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ্র দয়ায় ১ম পর্ব শেষ হলো।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:২১
মূসা আলকাজেম বলেছেন: না, ধর্ম বিশ্বাস থাকা না থাকা বরাবর , এটা বুঝা গেলো না; বরং এটা বুঝা গেলো যে তার ধর্ম বিশ্বাস দুর্বল। তার ধর্ম বিশ্বাস ও আল্লাহ ভীতি আরো বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে করে তার বিশ্বাসের শক্তি বা আল্লাহ ভীতি লোভ, কৃপণতা, ভীরুতা ইত্যাদির উপর জয়ী হতে পারে। পুলিশ থাকতেও সমাজে অন্যায় হয়, তাই বলে কি পুলিশ উঠিয়ে দিতে হবে নাকি পুলিশী প্রহরা আরো মজবুত করতে হবে, কোনটা? হ্যাঁ, ধর্মের বিশ্বাসটা সত্য না মিথ্যা সেটা আলাদা প্রশ্ন।এখানে শুধু প্রয়োজনীয়তা ও উপকারিতার কথা বললাম।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:২২
মূসা আলকাজেম বলেছেন: আরেকটা কথা হলো , যার মধ্যে ধর্ম বিশ্বাস থাকার পরও সে বিবেকের কথা মত সৎ পথে চলে না, তার যদি ধর্ম বিশ্বাস দূর হয়ে যায় তখন তো সে আরো বেশী খারাপ হয়ে যাবে। পুলিশী প্রহরা থাকতেই যে ব্যাক্তি চুরি করে, পুলিশী প্রহরা উঠিয়ে দিলে তো সে ডাকাতি করবে।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১১:৫৬
মূসা আলকাজেম বলেছেন: আবার দেখুন, সুজন যদি সুমনকে বলে যে , ঐ রাস্তায় পুলিশ আছে বলে খবর পেয়েছি, সেখানে ছিনতাই করতে যেও না। এরপর যদি সুজন নিজেই আবার ছিনতাই করতে সেই রাস্তায় যায় তাহলে সুমন বা অন্য কেউ কি এই পুলিশ প্রহরার ব্যবস্থার সমালোচনা করবে নাকি এটা মনে করবে যে সুজন হয়তো নিজেই তার দেয়া খবরের উপর ঠিকমত বিশ্বাস করে না বা এটা মনে করবে যে, সুজন পুলিশ আছে এটা নিজে জেনে এবং অন্যকেও সাবধান করে আবার নিজেই যাচ্ছে , সেতো ভারী দুঃসাহসী এবং বোকা। অথচ কোন ধর্মে বিশ্বাসের দাবীদার কোন ধর্ম বিরোধী কাজ করলে অনেক নাস্তিক বোকার মত ঐ নির্দিষ্ট লোকের সমালোচনা না করে ধর্মের সমালোচনা করে, একজনের অপরাধে পুরা ধর্ম বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের সমালোচনা করে। কোন ডাক্তার যদি সিগারেট খায় বা নেশা করে তাহলে আপনি কি ঐ ডাক্তারকে বোকা বলবেন নাকি ডাক্তারী বিদ্যাটাকেই অপ্রয়োজনীয় বলবেন? আপনি কি সমস্ত ডাক্তারকেই বোকা বলবেন নাকি শুধু ঐ ডাক্তারকেই বোকা বলবেন ?
২| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:২৪
মূসা আলকাজেম বলেছেন: প্রশ্নঃ২- অনেক নাস্তিক তো আল্লাহর ভয় ছাড়াই সৎ পথে চলে বিবেকের তাড়নায়।তো বুঝা গেলো আল্লাহ্র ভয় না দেখিয়ে মানুষকে বিবেকবান হিসাবে গড়ে তুলেলেও মানুষ সৎপথে চলবে।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৩১
মূসা আলকাজেম বলেছেন: এ প্রশ্নের জবাবে বলতে হয়ঃ
১ম কথা হলো এরকম নীতিবান মানুষের সংখ্যা খুব কম যে নাকি কোন ধর্মীয় বা রাষ্ট্রীয় কোন ভয় ছাড়াই সৎপথে চলবে।
২য় কথা হলো খোঁজ নিলে দেখা যাবে তার আসলে দুর্নীতি করার কোন প্রয়োজন নেই। সে যথেষ্ট সচ্ছল।
৩য় কথা হলো, কিছু লোক পুলিশ না থাকলেও চুরি করে না , তার মানে কি এই যে পুলিশের দরকার নাই।এই দুই একজনের কথা চিন্তা করে কি আমরা পুলিশ উঠিয়ে দিবো। আর যে নাস্তিক সৎপথে চলছে এতে তার নাস্তিকতার কোন প্রভাব নেই, এমন নয় যে সে নাস্তিক বলেই সৎপথে চলছে।সে তার বিবেকের কারণে বা কোন আবেগের কারণে বা মানুষকে এটা দেখানোর জন্য যে, দেখো নাস্তিকরা কতো ভালো বা সে সচ্ছল বলে বা অন্য কোন কারণে সৎপথে চলছে। এই ৩নং পয়েন্টটি বুঝার জন্য একটি উদাহরণ দিচ্ছি, ধরেন, কোন এলাকায় পুলিশী প্রহরা নেই, তবুও সেই এলাকার কিছু লোক চুরি করে না, এখন কোন পাগলেও কি এই কথা বলবে যে , পুলিশ না থাকার কারণে চুরি করে না। আর এই দুই একজনের কথা বিবেচনা করে কি এই কথা বলা যাবে যে, পুলিশ না থাকলেও তো দুই একজন চুরি করে না, অতএব বুঝা গেলো পুলিশ না থাকলেও চলে। তাই পুলিশী প্রহরার দরকার নেই।দুই একজন ভালোর কথা বিবেচনা করে পুলিশী প্রহরা উঠানো হবে এটা তো অনেক দূরের কথা বরং সব লোক ভালো হয়ে গিয়ে দুই একজন খারাপ থাকলেও পুলিশী প্রহরা রাখা হবে। তাহলেই দেখেন এই যে কিছু নাস্তিক আমাদেরকে দুই একজন নীতিবান নাস্তিকের উদাহরণ টেনে বলে যে ধর্মীয় বিশ্বাস ও আল্লাহ ভীতির প্রয়োজন নেই , তারা কেমন অযৌক্তিক কথা বলছে।
৪র্থ কথা হলো যে আল্লাহকে বিশ্বাস না করেও অভাবের সময় ঘুষ খায় না সে হলো ডবল বোকা, কি মানে আছে তার এই অযথা কষ্টের। আবার যে আল্লাহকে বিশ্বাস করেও ঘুষ খায় সে তো আরো ডবল বোকা এবং ভীষণ দুঃসাহসী।
৫ম কথা হলো আপনি মানুষকে বিবেকবান হিসাবে গড়ে তুলবেন কি, সব মানুষ তো বিবেক নিয়েই জন্মায়। কথা হলো সে বিবেক বা সু প্রবৃত্তির কথা শুনবে কিনা? যেই অল্প কিছু মানুষ বিবেক মত চলে তাদের কি কেউ এর জন্য ট্রেনিং দিয়েছে? না, বরং কিছু মানুষের মাঝে বিবেক মত চলার গুনটি জন্মগতভাবেই থাকে। কিন্তু বেশীরভাগ মানুষই কু প্রবৃত্তির কথা মত চলে সাধারণ অবস্থায়। কারণ এতে আছে মজা, ফুর্তি, আরাম, বিলাসিতা।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৮:০০
মূসা আলকাজেম বলেছেন: প্রত্যেক মানুষের মাঝেই একটা উচিৎ অনুচিতের অনুভূতি তৈরী হয়। সে একটা কাজকে ভালো হিসাবে জানে আবার আরেকটা কাজকে খারাপ হিসাবে জানে। একই যুগের একই সমাজের মানুষদের এই উচিৎ অনুচিতের অনুভূতিতে খুব একটা পার্থক্য সাধারণত হওয়ার কথা নয়। কিন্তু একটা মানুষের বয়স বাড়লে যদি সে সমাজের গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে না দিয়ে চিন্তাশীল হয় তাহলে ধর্ম ,নাস্তিকতা, যুক্তি, বিজ্ঞান ইত্যাদির প্রভাবে দেখা যায় তার উচিৎ অনুচিতের অনুভূতি সমাজের একজন সাধারণ মানুষের থেকে বেশ ভিন্ন হয়ে যায়।
এটা হলো একটা বিষয় যে প্রত্যেক মানুষের মধ্যে উচিৎ অনুচিতের একটা অনুভূতি থাকে, সবার মনে ছোটবেলা থেকে বিভিন্ন জিনিষের প্রভাবে ভালো খারাপের একটা লিস্ট তৈরী হয়।
দ্বিতীয় বিষয় হলো কোন মানুষের মধ্যে ভালো খারাপের যে লিস্ট আছে সে তার এই নিজের ভালো খারাপের নীতির উপর চলবে কিনা।
এখানেই দেখা যাচ্ছে যে, আমরা আসলে আমাদের নিজেদের নীতি যেটা বা যে ভালো খারাপের নীতিকে আমরা সত্য বলে বিশ্বাস করি আমরা বেশীরভাগ সেই নীতি অনুসারে চলিনা। আমরা বেশীরভাগ চলি আমাদের নিজেদের স্বার্থ, সুবিধা, আরাম , সম্মান ইত্যাদি হিসাব করে। সোজা কথায় যে কাজ করলে আমার ব্যক্তিগত লাভ হবে সেটা আমরা করে ফেলি,যদিও সেটা আমার বিশ্বাস অনুযায়ী খারাপ। আবার যে কাজ করলে আমার কোন ধরণের লস বা ক্ষতি হতে পারে সেটা আমরা করিনা, যদিও সেটা আমার বিশ্বাস অনুযায়ী ভালো কাজ এবং সেটা করা উচিৎ ছিলো।
যে নাকি মরণের পরের শাস্তি বা পুরষ্কারে বিশ্বাস করে না তার জন্য কিন্তু এটা চিন্তা করাই স্বাভাবিক যে, তাইতো, নিজের স্বার্থ ও আরামের দিকে খেয়াল করেই তো চলতে হবে। ঐ নীতি ফিতি মেনে চলতে গিয়ে অযথা কষ্ট করে কি লাভ?উচিৎ যেটা সেটা করতে হবে আর অনুচিত যেটা সেটা করা যাবে না; এই নিয়ম কোথা থেকে আসলো? সব নাস্তিক এভাবে চিন্তা করে না, অনেক নাস্তিক বিবেকের কথা মত তার নিজস্ব উচিৎ অনুচিতের নীতি অনুযায়ী চলে । এরকম আসলে ঐসব নাস্তিকরাই করে যারা সচ্ছল।
বিপদে পড়লে কেউ নিজের বিবেকের কথা মত চলে না। আর যদি কোন নাস্তিক অভাবে থেকেও দুই নম্বরী না করে তাহলে তার মত বোকা আর হয় না।
৩| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:১২
মূসা আলকাজেম বলেছেন: প্রশ্নঃ৩- আরে মিয়া! অমুক নাস্তিক দেশের মানুষ আল্লাহর ভয় ছাড়াই অনেক মুসলমান দেশ থেকে অনেক ভালো আছে।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:২২
মূসা আলকাজেম বলেছেন: এই প্রশ্নের জবাবও আমার উপরের ২নং প্রশ্নের জবাব থেকেই বের করা যাবে। এক দুইটা ব্যাতিক্রমী দেশের কথা বলে অন্য সব ভিন্ন পরিস্থিতির দেশেও একই ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা একেবারে যুক্তিহীন।
এখানে কাঙ্গাল মুরশিদ নামক এক ব্লগারের একটি কমেন্ট তুলে ধরছি,
""" আমার একটা বিষয় ভাবতে বেশ অবাক লাগে - আপনারা মানুষকে ভাল বানানোর জন্য পুলিশ, আদালত, রাস্ট্রীয় ব্যাবস্থা সবকিছুর ভয় দেখাতে পারেন, কোন সমস্যা হয় না - আর ইসলাম দোযোখের ভয় দেখিয়েছে বলেই আপনাদের কাছে তা অগ্রহনযোগ্য। আপনি যদি বলতে চান যে মানুষকে নৈতিকতা শিক্ষা দেয়ার জন্য (অর্থাৎ বিবেকের নির্দেশ মত চলার জন্য)কোন কিছুর ভয় দেখানোর প্রয়োজন নেই - তাহলে পুলিশ এবং আদালত ব্যাবস্থা তুলে দিন - তারপর দেখুন মানুষ কতটা ভাল থাকে। বাস্তবতা হচ্ছে ধর্মহীন কমিউনিস্ট রাস্ট্রে পুলিশি ব্যাবস্থা আরো কঠোরভাবে প্রতিস্ঠা করতে হয়। আর সেই সাথে এটাও বাস্তব সত্য যে পুলিশী ব্যাবস্থা দিয়ে কোন দেশে কোন কালে সকল অনৈতিক কাজ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।""""
কেননা পুলিশ তো আপনার বেডরুমে, আপনার অফিস রুমে এসে বসে থাকবে না। একমাত্র আল্লাহ্র ভয়ই সব জায়গায় আপনার সাথ থেকে আপনাকে সতর্ক করবে। যদিও আল্লাহ্র ভয় থাকলেও মানুষ অনেক সময় তার কু প্রবৃত্তির কাছে পরাজিত হতে পারে, কিন্তু সেটার পরিমাণ খুব কমই হবে এবং অতটুকুর দ্বারা সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা খুব বেশী নষ্ট হবে না।
৪| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:২০
রাতুলবিডি বলেছেন: ভালো মন্দ নির্ণয়ের মাপকাঠি আমি বুঝি ৩টি :
১। ব্যাক্তিগত ( মা-মেয়ে বিয়ে করা হালাল হটে পারে )
২। সমাজিক ( প্রচলিত সমাজ ব্যবস্হা )
২.১ রাষ্ট্রীয় ২.২ পারিবারিক ২.৩ এলাকা ভিত্তিক ইত্যাদী
৩। ধর্মীয়
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:২৬
মূসা আলকাজেম বলেছেন: জাযাকাল্লাহ। আপনি আমার সাথে সহমতই পোষণ করেছেন, তবে একটু ভিন্ন ভাষায়। আমি বলেছি নাস্তিকদের মানদণ্ড আর আপনি বলেছেন ব্যাক্তিগত মানদণ্ড। এতে করে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়েছে।
আরেকজন বলেছিলেন মনচাহী মানদণ্ড।
৫| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:৩৪
মূসা আলকাজেম বলেছেন: দুধে পানি মিশানোর ঘটনাঃ
খলিফাতুল মুসলিমীন হযরত উমর ফারুক ( রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু ) স্বীয় শাসন আমলে মানুষের অবস্থা জানার জন্য রাতের বেলা মদীনার অলি-গলিতে ঘুরে বেড়াতেন। যদি কারও ব্যাপারে জানতে পারতেন যে, অমুক ব্যক্তি অভাব-অনটনে নিমজ্জিত আছে, তখন তাকে সাহায্য করতেন। যদি জানতে পারতেন যে, অমুক ব্যক্তি কোন মুসীবতে আছেন, তখন তার মুসীবত দূর করার চেষ্টা করতেন। আর যদি কাউকে কোন অন্যায় কাজ করতে দেখতেন, তবে তা সংশোধন করার চেষ্টা করতেন। একদিন তিনি তাহাজ্জুদের সময় মদীনার একটি গলিতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। হঠাৎ এক ঘর থেকে দুজন মহিলার কথার আওয়াজ শুনতে পেলেন। আওয়াজ থেকে অনুভব করতে পারলেন যে, একজন বয়স্ক, আরেকজন যুবতী। আর যুবতী মেয়েটি সে বয়স্ক মহিলার মেয়ে। মা মেয়েকে লক্ষ্য করে বলছে যে, তুমি যে দুধ দোহন করে এনেছ, এতে কিছু পানি মিশিয়ে নাও। তাহলে দুধের পরিমাণ একটু বেড়ে যাবে। তারপর তা সকালে বিক্রি করে দিবে। উত্তরে সে মেয়ে বলল, আমীরুল মুমিনীন হযরত উমর ফারুক ( রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু ) এ আদেশ জারি করেছেন যে, কোন ব্যক্তি যেন দুধের সাথে পানি না মেশায়। তাই আমি পানি মেশাতে পারব না। তখন উত্তরে সে বৃদ্ধা মহিলা বলল, এখানে তো আর আমীরুল মুমিনীন বসে নেই। আর এখন অন্ধকার রাত, এখন পানি মিশালে কেউ তোমাকে দেখতে পারবে না। কেউ, বুঝতেও সক্ষম হবে না যে, তুমি দুধে পানি মিশিয়েছ। এর উত্তরে সে বলল, যদিও আমীরুল মুমিনীন দেখছেন না, আমীরুল মুমিনের আমীর আল্লাহ তাআলা তো নিশ্চয়ই দেখছেন। তাই আমি এ কাজ কিভাবে করি? হযরত উমর ( রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু ) গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে সব কথা শুনছিলেন। যখন রাত গড়িয়ে সকাল হল, তখন তিনি সে মেয়েটির খোঁজ-খবর নিলেন। কে এ মেয়ে? যার হৃদয় খোদাভীতিতে ভরপুর। খোঁজ-খবর নেয়ার পর এই যুবতীর সাথে স্বীয় পুত্র প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর ( রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু )-এর বিবাহের প্রস্তাব দিলেন। অবশেষে এ ভাগ্যবতী মেয়েটির বংশধর থেকেই হযরত উমর ইবনে আব্দুল আজিজ ( রহমতুল্লাহি আলাইহি ) জন্ম নিয়েছিলেন।
আরেকটি শিক্ষণীয় ঘটনাঃ
একবার হযরত উমর ফারুক ( রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু ) সফরে ছিলেন। সফরের যা সরঞ্জামাদি ছিল তা সবই ফুরিয়ে গেল। দেখলেন যে, জঙ্গলে ছাগলের পাল চরে বেড়াচ্ছে। আর আরববাসীদের মধ্যে এ নিয়ম ছিল যে, তারা মেহমানদারী হিসেবে মূল্য ব্যতীত দুধ পান করাত। তাই তিনি পালের রাখালের নিকট গিয়ে বললেন, আমি একজন মুসাফির। আমার সফরের সব সরঞ্জামাদি শেষ হয়ে গেছে। তুমি একটি বকরীর দুধ দোহন করে আমাকে দাও, আমি পান করব। রাখাল উত্তর দিল, আপনি একজন মুসাফির, আপনাকে দেওয়ার জন্য আমি সম্পূর্ণ প্রস্তুত। কিন্তু সমস্যা হল, এ সমস্ত বকরীর মালিক আমি নই। এগুলোর মালিক অন্য একজন। আমার শুধু এগুলো চালানোর দায়িত্ব। এগুলো মার নিকট আমানত স্বরূপ। তাই শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে আমি আপনাকে এগুলোর দুধ পান করানো বৈধ মনে করি না।
এরপর হযরত উমর ফারুক ( রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু ) আরও কঠিনভাবে পরীক্ষা করতে গিয়ে বললেন, দেখ ভাই! আমি তোমাকে একটি লাভের কথা বলছি। যার ভিতরে তোমারও ফায়দা রয়েছে, আমারও ফায়দা রয়েছে। আর সেটি হচ্ছে যে, তুমি এ সমস্ত বকরীগুলো হতে একটি বকরী আমার কাছে বিক্রি করে দাও। তুমি টাকাগুলো পেয়ে গেলে, আর আমি বকরী পেয়ে গেলাম। পথে যেখানেই দরকার হবে, সেখানেই বকরীর দুধ পান করে নিব। বাকী রইল মালিকের কথা। তুমি মালিককে গিয়ে বলবে, হুজর একটি বকরীকে বাঘে খেয়ে ফেলেছে আর সে তোমার কথা বিশ্বাসও করবে। কারণ সাধারণত জঙ্গলে বাঘ বকরী খেয়েই থাকে। এভাবে আমরা উভয়েই লাভবান হয়ে যাব। রাখাল এ সব প্রস্তাব শুনে বলে উঠল, হে ভাই! যদি আমরা এসব করি তবে আল্লাহ কোথায় গেলেন? আমরা ইচ্ছা করলে একাজ এখানে করে ফেলতে পারি এবং মালিককেও সন্তোষজনক জবাব দিতে পারব। কিন্তু এ মালিকের আরও একজন মালিক আছে। তার কাছে গিয়ে কি জবাব দিব? তাই আমি এ কাজ করার জন্য প্রস্তুত নই।
হযরত উমর ( রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু ) –এর পরীক্ষা নেয়া উদ্দেশ্য ছিল। তাই যখন তিনি রাখালের এ জবাব শুনলেন, তখন বলে উঠলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমার মত মানুষ এ পৃথিবীতে বাকী থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোন জালেম অন্যের উপর জুলুম করতে পারবে না। আর যতক্ষণ মানুষের অন্তরে আল্লাহর ভয়, আখিরাতের চিন্তা, আল্লাহর সন্মুখে দাঁড়িয়ে জবাবদিহীর কথা স্মরণ থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত অন্যায় ও জুলুম করতে পারবে না। আর বাস্তবে এটাকেই তাকওয়া বা আল্লাহভীতি বলে।
৬| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:৪৮
পারভেজ আলম বলেছেন: বেশ খেটে লিখেছেন। আলোচনার অনেক স্পেস আছে এই পোস্টে। কিন্তু তেমন আলোচনা নাই কেনো বুঝলাম না। যুক্তি তর্ক গঠনমূলক আলোচনায় লোকজনের আগ্রহ কমে গেছে মনে হয়।
যাই হউক, আমার যেই পোস্টের লিংক দিছেন সেখানে নৈতিকতার ভিত্তি ও উৎস যে আসলে বহুত এবং তা যে নানান সামাজিক প্রয়োজনেই তৈরি, পরিবর্তন ও বিবর্তন, বিলুপ্তি হয় তা নিয়া আলাপ করেছিলাম। ঐ আলাপ একেবারেই অভিজ্ঞতাবাদী, তত্ত্বালাপ করিনাই। বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছি এবং করেছি সবাইকে।
তবে আপনের থিসিস ইন্টারেস্টিং। আপনে ব্যক্তি পর্যায়ে সঠিক নৈতিক জীবনযাপন সম্ভব কোন ধর্মীয় কর্তৃত্ত্ব ছাড়াই সেটা মেনে নিচ্ছেন, কিন্তু দাবি করছেন যে সমাজের অধিকাংশ মানুষএর ক্ষেত্রে এইটা প্রযোজ্য হবেনা, কারন অনুশাসন, ভয়, পুরস্কার ইত্যাদি ছাড়া অধিকাংশ মানুষ সৎ এবং ভালো কাজ করবেনা। এইটা একটা ইন্টারেস্টিং আলোচনা। দেখেন, বর্তমানের বেশিরভাগ নাস্তিক বা মুক্তমনা নিজের নৈতিকতা বিষয়ক মুক্তচিন্তার ভিত্তি হিসাবে গন্য করে পাশ্চাত্যের এনলাইটেনমেন্টএর ভাবধারাকে, যেইটারে এনলাইটেনমেন্টের বিখ্যাত দার্শনিক ইম্যানুয়েল কান্ট তার ওয়াজ ইস্ত ওফকলারাং (হোয়াট ইজ এনলাইটেনমেন্ট) প্রবন্ধে বিশদ আলোচনা করেছেন। কান্ট দাবি করেছেন যে উপযুক্ত শিক্ষা এবং সুযোগ পেলে সব মানুষই নিজে থেকে ভালো মন্দের স্বিদ্ধান্ত নিতে পারবে, এর জন্যে কোন ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রিয় কর্তৃত্বের দরকার হবেনা।
কান্টএর এই তত্ত্ব আধুনিক যুগের অধিকাংশ মুক্তমনাই মেনে নিয়েছেন। এইক্ষেত্রে ধারণা করা হয়যে শিক্ষা আর সুযোগ প্রত্যেকটা মানুষকেই নিজ নিজ বুদ্ধি বিবেক খাটিয়ে সঠিক স্বিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দেয় বা দেবে। এর বিপরীতে যে কোন সমালোচনা নাই তা না। উত্তর আধুনিক দার্শনিকরা অনেকেই এর সমালোচনা করে দেখিয়েছেন যে বিষয়টা এমন না, ঐতিহাসিক বাস্তবতা এই থিওরির বিপরিতে যায়। শিক্ষিত শব্দটাও সব যুগে এক অর্থ বহন করেনা। ব্যক্তিগতভাবে আমি ভবিষ্যতের কথা জানিনা। তবে বাস্তবতার খাতিরে এটা মানি যে প্রত্যেক মানুষের পক্ষে সামাজিক ও রাষ্ট্রিয় বিধি বিধান ছারা নৈতিক জীবন যাপন করা সম্ভব না। ভবিষ্যতে হতে পারে, কিন্তু এটাও বুঝতে হবে যে নৈতিকতা জিনিসটাই একটা সামাজিক জিনিস। সেই হিসাবে নৈতিকতা জিনিসটা সমাজবদ্ধ স্বিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে, আর সমাজ তা রক্ষার জন্যে অথরিটিও নিযুক্ত করে। ভবিষ্যতে এর পরিবর্তন হবে কিনা তা অবশ্য আমি জানিনা। হইলে সেইটা বেহেশতি ব্যাপার স্যাপার হবে।
কিন্তু আপনের আলোচনায় সবচেয়ে ত্রুটির জায়গা যা তা হচ্ছে যে নৈতিকতা বিষয়ক এই আলোচনারে আপনে সহজ সরল আস্তিক বনাম নাস্তিক মেরুকরণে নিয়া আসছেন। আবার ধর্ম বনাম অধর্মের সরল মেরুকরনে আনছেন। এটাও ভুল। প্রথমত, দুনিয়ায় অনেক নাস্তিক ধর্ম আছে, যেমন বৌদ্ধ, জৈন, কমিউনিজম ইত্যাদি। সুতরাং নাস্তিক মাত্রেই অধার্মিক না। অর্থাৎ নাস্তিক হলেও একজন ব্যক্তি তার নাস্তিক ধর্মের নৈতিকতা অনুসরণ করে থাকেন। আবার যেই নাস্তিকএর কোন প্রচলিত ধর্মমতে আস্থা নাই তিনিও পুরাপুরি ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে নৈতিকতাকে সবসময় বিশ্লেষণ করেন তা না, এইক্ষেত্রে তার রাজনৈতিক, এলাকাভিত্তিক, পারিবারিক, দার্শনিক নানান রকম মানদন্ড থাকে। একি কথা আস্তিকদের ক্ষেত্রেও খাটে। জগতের সকল আস্তিকই এক ধর্মের না। আবার কোন ধর্মে আস্থা নাই কিন্তু ইশ্বরে বিশ্বাস করেন এমন আস্তিকেরও অভাব নাই। আবার ধর্মের নৈতিকতারে মৌখিক সমর্থন দেন, কিন্তু আধুনিক সেকুলার রাষ্ট্রের ও পুজিবাদী অর্থনীতির নৈতিকতার সমর্থন করেন বাংলাদেশের অধিকাংশ মুসলমান। সুতরাং এইসব আলোচনায় এইরকম সহজ সরল আস্তিক-নাস্তিক, ধার্মিক-অধার্মিক মেরুকরণ সঠিক না।
ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করিযে একেবারেই নিজের বিবেক বুদ্ধিতে সঠিক নৈতিকতার স্বিদ্ধান্ত নিতে এবং দিতে পারেন সমাজের হাতেগোনা কয়েকজন ব্যক্তি। প্রাচীনকাল থেকে এদেরকে আমরা নবি, রাসুল, দার্শনিক, আউলিয়া, বুদ্ধিজীবী নানান নামে ডাকি।
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:০৩
মূসা আলকাজেম বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
কান্ট দাবি করেছেন যে উপযুক্ত শিক্ষা এবং সুযোগ পেলে সব মানুষই নিজে থেকে ভালো মন্দের স্বিদ্ধান্ত নিতে পারবে, এর জন্যে কোন ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রিয় কর্তৃত্বের দরকার হবেনা।
পারভেজ ভাই আপনি ২নং কমেণ্টের জবাবের ২য় অংশ দেখুন। আসলে শিক্ষা দেয়া হোক বা না হোক মানুষের মনে ভালো খারাপের একটা লিস্ট তৈরী হয় অটোমেটিকভাবেই।আর কান্টের এই দাবী যদি আমরা সত্য ধরেও নেই, তো কি হলো? বুঝলাম মানুষ সিদ্ধান্ত নিতে পারলো, তাতে কি? আসল কথা হলো সে নিজের এই সিদ্ধান্ত বা নীতির উপর চলবে কিনা সেটা। এটাই আমি বলছি যে শত ভাগের কাছাকাছি মানুষ নিজের নীতির উপর চলবে না । রাগ , লোভ, হিংসা, শত্রুতা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে সে নিজের নীতিকে লঙ্ঘন করবে। সে তার নিজের ব্যক্তিগত জীবনের সুখ সাচ্ছন্দ , আরাম আয়েশকে নীতির চেয়ে অগ্রাধিকার দিবে, দিচ্ছে। সে নিজের ব্যাক্তিগত সুখের জন্য অপরের ক্ষতি করবে। এটা সর্ব যুগের সব মানুষই উপলব্ধি করতে পেরেছে। এইজন্য সব যুগেই ভয় দেখিয়ে নীতির উপর বা রাষ্ট্রীয় আইনের উপর চালানোর জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ছিলো। কিন্তু ঐ যে বললাম, পুলিশ তো আর ঘরে ঘরে , অফিসে অফিসে, গলিতে গলিতে পাহাড়া দিতে পারবে না। তাই মানুষের মাঝে যদি প্রকৃত পক্ষে আবারো বলছি প্রথাগত নয় প্রকৃত আল্লাহ্র ভয় বা এমন কিছুর ভয় আনা যায় যেটা তাকে সব সময় সবখানে পাহাড়া দিবে তাহলেই সে স্বার্থ থাকা সত্ত্বেও আইন বিরোধী বা বিবেক বিরোধী কাজ করা থেকে বিরত হতে পারবে ।৫নং কমেন্টের ঘটনা দুটো পড়ে দেখুন।
আবারো স্বীকার করছি আল্লাহ্র ভয় থাকার পরেও অনেক সময় সে রাগ,লোভ ,শত্রুতা ইত্যাদির প্রবলতায় নিজের নীতি তথা ধর্ম বিরোধী কাজ করে ফেলতে পারে এবং করেও ; কিন্তু সেটার পরিমান হবে খুব কম এবং সে তা করে ফেলার পর যখন তার রাগ বা লোভ (টাকার বা নারীর প্রতি) প্রশমিত হয়ে যাবে তখন সে অনুশোচিত হবে এবং আগের অন্যায়ের ক্ষতিপূরণের জন্য চেষ্টা করবে। ইসলামের স্বরনযুগের মনিষীদের ঘটনাবলী এর উত্তম দৃষ্টান্ত।
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:১১
মূসা আলকাজেম বলেছেন: প্রথমত, দুনিয়ায় অনেক নাস্তিক ধর্ম আছে, যেমন বৌদ্ধ, জৈন, কমিউনিজম ইত্যাদি। সুতরাং নাস্তিক মাত্রেই অধার্মিক না। অর্থাৎ নাস্তিক হলেও একজন ব্যক্তি তার নাস্তিক ধর্মের নৈতিকতা অনুসরণ করে থাকেন। আবার যেই নাস্তিকএর কোন প্রচলিত ধর্মমতে আস্থা নাই তিনিও পুরাপুরি ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে নৈতিকতাকে সবসময় বিশ্লেষণ করেন তা না, এইক্ষেত্রে তার রাজনৈতিক, এলাকাভিত্তিক, পারিবারিক, দার্শনিক নানান রকম মানদন্ড থাকে। একি কথা আস্তিকদের ক্ষেত্রেও খাটে। জগতের সকল আস্তিকই এক ধর্মের না। আবার কোন ধর্মে আস্থা নাই কিন্তু ইশ্বরে বিশ্বাস করেন এমন আস্তিকেরও অভাব নাই। আবার ধর্মের নৈতিকতারে মৌখিক সমর্থন দেন, কিন্তু আধুনিক সেকুলার রাষ্ট্রের ও পুজিবাদী অর্থনীতির নৈতিকতার সমর্থন করেন বাংলাদেশের অধিকাংশ মুসলমান।
আপনার এই কথাটির সাথে তো আমিও একমত। তাহলে দুজনের মাঝে ভুল বুঝাবুঝি হচ্ছে কোন জায়গায়।
কিন্তু আপনের আলোচনায় সবচেয়ে ত্রুটির জায়গা যা তা হচ্ছে যে নৈতিকতা বিষয়ক এই আলোচনারে আপনে সহজ সরল আস্তিক বনাম নাস্তিক মেরুকরণে নিয়া আসছেন। আবার ধর্ম বনাম অধর্মের সরল মেরুকরনে আনছেন। এটাও ভুল।
এই কথাটি দিয়ে আসলে কি বুঝাতে চাচ্ছেন, আর একটু সরল করে বুঝালে আমার সুবিধা হয়। আমার বক্তব্যের কোন অংশ থেকে এটা মনে হয়েছে। আমি কিন্তু অত পড়ালেখা করা মানুষ নই। বড় বড় দার্শনিকদের বই আমি পড়িনি। আমি চিন্তা করি স্বাধীনভাবে।
৭| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১২:২৫
মূসা আলকাজেম বলেছেন: নাস্তিকরা কীভাবে ভালো খারাপ বিচার করে এ সম্পর্কে সামান্য ধারণা লাভ করতে নীচের পোষ্ট গুলো থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
View this link
View this link
View this link
উপরের প্রথম লিংকটি থেকে ব্লগার কাঙ্গাল মুর্শিদের একটি কমেন্ট (১৬নং)এখানে তুলে দিলাম।
আপনি নাস্তিকদের জন্য খুব উৎসাহমুলক একটা বিষয়ের অবতারনা করেছেন। ওনারা যৌনাচারের ব্যাপারে কোন ধরনের বিধি নিষেধ মানতে রাজি নন। দুনিয়ায় ঐ জিনিসই ওনাদের সর্বাধিক কাম্য - যেভাবে যতটুকু উপভোগ করে নেয়া যায় জীবন ততই সফল। কাজেই এ ক্ষেত্রে ধর্ম তো নয়ই এমনকি সামাজিক বা রাস্ট্রীয় বিধানও ওনারা মানতে রাজি নন। শুধুমাত্র বিকলাঙ্গ শিশুর দ্বায়িত্ব নিতে যা আপত্তি - অর্থাৎ ওনারা চান দ্বায়িত্বহীন ভোগের অবাধ সুযোগ। এ'জন্যই একটা প্রবাদ আছে - মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত আর নাস্তিকের দৌড় গনিকালয় পর্যন্ত।
যাই হোক, আসিফ মহিউদ্দিন ও অন্যান্য নাস্তিকরা ব্যাক্তি স্বাধীনতাকে যেভাবে বড় করে দেখে তাতে প্রশ্ন এসে যায় - যদি ব্যাক্তি স্বাধীনতাই চুড়ান্ত হয় তাহলে তারা যে দুজনের সম্মতির কথা বলছে অন্যরা তা মানতে বাধ্য কেন? ধরুন মুহাম্মদ(স.) কোরআনের মাধ্যমে যে বিধান দিয়েছেন তা মানলে যদি ব্যাক্তি স্বাধীনতা খর্ব হয় তাহলে আসিফ মহিউদ্দীন যা বলছে তা মানলে কেন ব্যাক্তি স্বাধীনতা খর্ব হবে না? আসিফ মহিউদ্দীন বলছে যৌনাচারের ব্যাপারে দুজনের সম্মতি থাকতে হবে - অন্য একজন ব্যাক্তি সেই ব্যাক্তি স্বাধীনতার জোরে এই মত অগ্রাহ্য করে বলতেই পারে যে জোর করে যৌনাচারও বৈধ। তখন নাস্তিকরা কিসের ভিত্তিকে তার বিরোধীতা করবে? নাস্তিক আসিফ মহিউদ্দীনও একজন মানুষ আর জোর করে যৌনকামী/অজাচারকামী/শিশু নির্যাতনকামী ব্যাক্তিও একজন মানুষ - আসিফ মহিউদ্দীন বা অন্য কোন নাস্তিকের কী এমন বৈশিস্ট আছে যে তার মতামত অন্যদের মানতে হবে??
আসলে নাস্তিকতা বা অবাধ ব্যাক্তি স্বাধীনতা কখনই গ্রহনযোগ্য কোন সমাধান নয়। একটা না একটা নীতিমালা মানুষকে মানতেই হয়। আমরা মুসলমানরা আল্লাহর কুরআন ও তাঁর রাসুল(স.) এর সুন্নাহ মানি আর অন্যরা তাদেরইমত কোন মানুষের তৈরী নীতিমালা মানে। পুর্ণ স্বাধীন, সকল প্রথাবিরোধী নাস্তিক - কার পক্ষেই হওয়া সম্ভব নয়। তাই নীতিমালা যখন মানতেই হবে তখন অতী সীমিত জ্ঞানের মানুষের তৈরী নিতির চেয়ে অসীম/পরম জ্ঞানের আল্লাহর দেয়া নীতিমালা মানা এবং তার ভিত্তিতে অজাচারেরমত সামাজিক ব্যাধি প্রতিহত করাই মঙ্গল জনক নয় কি?
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১২:৫১
মূসা আলকাজেম বলেছেন: ১ম লিংটিতে নাস্তিকদের নৈতিকতার ভিত্তি সম্পর্কে জানার জন্য বেশ মূল্যবান কিছু আলোচনা আছে।
এই লিংকের ৫নং কমেন্টেও একটি আলোচনা আছে।
এই ৫নং কমেন্টের উপর আবার একটি পোষ্ট আছে এখানে দেখুন ।
এখানে একটি সুন্দর আলোচনা আছে, যদিও এটা নাস্তিকদের সাথে সম্পর্কিত না।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:১৯
মূসা আলকাজেম বলেছেন: প্রশ্নঃ১- অনেক ধার্মিক লোক তো খারাপ কাজ করে । সুতরাং বুঝা গেলো যে ধর্ম বিশ্বাস থাকা না থাকা বরাবর।