![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের কিছু নিঃশর্ত বা অবলিগেটরি অনুসিদ্ধান্ত থাকে। যেমন-মায়ের কাছে তার সন্তান সবার সেরা , নিজের দেশ , নিজের ভাষা ইত্যাদি সেই অব্লিগেশন থেকে সেরা।অনুভুত সব আবেগের ক্ষেত্রে ও এই কথা প্রযোজ্য। ছোটবেলায় আরবি হরফে লেখা কিছু রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেতা সযত্নে কুড়িয়ে নিয়ে চুমু খান নি এমন লোক বিরল।তো এধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্বহীনতা প্রশ্নহীনতা নিঃশর্ততা ধর্মীয় অনুসঙ্গে প্রবলতম । রাজনীতিতে ও বিদ্যমান।আরব বিশ্ব সম্বন্ধে আর সব মুসলমান সম্প্রদায়ের মত আমারও এ জাতীয় ইয়োটোপীয় ধ্যানধারনা ছিল।সময়ের প্রবাহে সেটা ধীরে ধীরে কেটে গেছে।আরবিয় আলখাল্লা আর মাথায় কালো ব্যান্ড মানেই-স্বর্গীয় সুষমা মণ্ডিত ফেরেশতাসম বুজুর্গ কেউ নন।আরবদের মনোজগৎ ইসলামের সব ত্যাগ তিতিক্ষা সৌন্দর্যে টইটুম্বুরও নয়।আরবের সমাজ মানেই অনাবিল প্রশান্তিময় আর শাসক মানেই বাদশা হারুন নন মোটেই। বরং আরব বিশ্ব সম্পর্কে আমার এখনকার যে মুল্যায়নতা এতো পীড়াদায়ক যে মনে হয় না জানলেই ভালো ছিল সব মুসলিম ভাই ভাই , আমির গরীব ভেদাভেদ নাই-- এমন সাম্যের চেতনা আমাদের সমাজে নেই, তাই ভাবতাম ইসলামের সুতিকাগারে নিশ্চয়ই তা আছে।আপনি আপনার কাছের সৌদি প্রবাসি শ্রমিক ভাইটিকে জিজ্ঞেস করে দেখুনতো , সে কি জবাব দেয়; গরীব দেশের মুসলিম ভাই বলে তাকে অন্য ধর্মধারী শ্রমিকের চেয়ে বাড়তি কোন খাতির করে কিনা;বাড়তি খাতিরের প্রয়োজন নেই, সে তার মিনিমাম মজুরি আর প্রাপ্য সম্মানটুকু পায় কিনা; অনেকে বলবেন বাংলাদেশিরা অপরাধপ্রবন তাই এমন ভাবে ট্রিটেড। তাই যদি হয় তবেতো তারা বাংলাদেশিদেরকে অপরাধী বা এজাতীয় কোন নামে ডাকতো "মিসকিন" ডাকে কেন?মিসকিন মানে ফকির, ভিক্ষুক । এই ডাকটাতে আপনি কি খুঁজে পান জানিনা- আমি দেখিধন সম্পদের অহঙ্কার, গৌরব,শ্রেণীবিভেদের ঘৃনা।মিডল ইস্টে নেপাল ফিলিপাইন শ্রীলংকান মেয়েরা
গৃহকর্মে নিযুক্ত হয় বেশী, বছর দুয়েক আগে এক শ্রীলংকান মেয়ে জানালা থেকেঝাঁপিয়ে পড়ে পালাতে গিয়ে মরতে বসেছিল , কুয়েতে।তাকে উদ্ধারের পর দেখাগেল তার সমস্ত শরীরে নেইল বা পেরেক দিয়ে ভর্তি। ৪০-৫০ নেইল বের করা হয়েছিল। অর্থাৎ তার যে মালিক (ভুল পড়েন নি বিদেশী শ্রমিকদের একজন মালিকের অধীনে থাকতে হয়) তার উপর শারীরিক মানসিক ও যৌন নির্যাতন চালাত।বেতন তো দুরের কথা সবারআগে যেটি খোয়া যায় তা হল ইজ্জত।সম্প্রতি নেপাল সরকার মিডল ইস্টে মেয়েদের পাঠানো বন্ধ করে দেয়,বাংলাদেশথেকেও তাই।
এগুলো কোন বিচ্ছন্ন ঘটনা নয়, আরবের লোকেরা মনে করে শ্রমিকদের দেহের উপর তাদের অধিকার রয়েছে, পুরুষ হল দাস, মহিলা দাসী, ইসলামের ইতিহাস জানায় দাসীদের সাথে যৌন কর্ম বৈধযথাযথ অর্থের বিনিময়ে। ।ইতিহাস আরবের ঐতিহ্য সাথে ধন সম্পদের নগদ ক্ষমতার কল্যাণেযারাই(মহিলা) ওখানে শ্রমিক হিসেবে যায় ,যৌন দাসত্ব বাধ্যতা মূলক। আর এ ক্ষেত্রে আইন ন্যাটিভদের পক্ষে।তাইতো কুয়েতের পারলামেন্টের একজন মহিলা মেম্বার দাবী তুলেছিল এই যৌন সম্ভোগের বিনিময় মুল্য নির্ধারণ করে দিতে।
স্ল্যাভারি বিষয়ক ঐতিহ্য , তার সাথে আরবের সংস্কৃতি ও বর্তমান সময়ে সৌদি পুরুষদের কর্মজীবী নারীদের প্রতি বর্বর , সীমাহীন অন্যায় আচরনের শেকড়টা ঐ রীতিতে প্রোথিত - এ ব্যাপারে আমি নিঃসন্দেহ। তাছাড়া রাসুল(সাঃ) দাস প্রথার বিলুপ্তি যে অন্ততঃ আরবের বুক থেকে সহসা দূর হবেনা জানতেন বলেই এদের প্রতি সদয় আচরনের নির্দেশনা দিয়ে গেছেন, বিলুপ্ত করে যান নি। পাথক্য আগের দাস দাসীরা ছিল আরব পেনিনসুলার বড়জোর সাবসাহারান আফ্রিকার , আরবী ভাষী, আর আধুনিক দাস- দাসীরা অনারব দুর্ভাগ্যজনক ভাবে কিছু অংশ আমাদেরই ভাই বোনেরা ।
আরব বিশ্ব এক সীমাহীন প্রতারনার নাম। তার সাথে আমাদের নানামুখী যোগাযোগের কারনে যা বিস্তারিত আলোচনার দাবী রাখে। বিশেষ করে নিচের বিষয় গুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা থাকা দরকার-
১ আনুষ্ঠানিক কঠোর আইন কানুন ও অন্দরের ফসকা গেড়ো।
২ রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি ও ইসলামী আইনের মৌলিক বরখেলাপ।
৩ স্বদেশী ও বিদেশীদের মধ্যে আইনের বৈষম্য।
৪ নীতি বহির্ভূত যৌন অনাচার ।
৫ হজ্জের ব্যবসায়িক দৃষ্টি ভঙ্গী ও তার সম্প্রসারন।
আলাদাভাবে আলোচনার সুযোগ কম, এটি একটি ওভারভিউ, অর্থাৎ চিন্তার খোরাক
তৈরিই এ লেখার উদ্দেশ্য। উপরের সব বিষয় গুলো ই আসবে প্রাসঙ্গিক ভাবে। সৌদি আরবে
শরিয়া আইন চালু আছে , আর তাই সবাই ভাবে আদর্শ ইসলামিক খেলাফতের মৌলিক ও প্রধান শর্ত পূরণ হয়ে গেছে। প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড , হাত কাটা , হুইপিং সব স্টেরিওটাইপ ইসলামিক পানিশমেন্ট আমাদের এই ধারনাই দেয়। শরিয়া আইন একটি লিখিত বিধান, যেটি তৈরি করেন ইসলামি পণ্ডিতগণ,অবশ্যইরাসুল(সাঃ) এর সময়ের আইন যা কোরআন ও হাদিস সমর্থিত।কিছু কন্ট্রোভারসি আছে , আছে ভিন্ন ভিন্ন প্রস্তাবনা। মোদ্দা কথা আইন হিসেবে কঠোর , জিরো
টলারেন্স নীতি , চোখের বদলে চোখ, জানের বদলে জান ইত্যাদি লিস্ট ফ্লেক্সিবিলিটি দিয়ে তৈরি।কিন্তু রাষ্ট্রীয় অনুমোদনে রাষ্ট্রের ভেতরের রাষ্ট্রটিতে এর কোন প্রয়োগ নেই। হ্যাঁ আমি রাজপরিবারের কথা বলছি। ভেতরের রাষ্ট্রটির প্রসঙ্গে পরে আসছি। শিয়া সুন্নী দ্বন্দ্ব, আধাত্মিক ও এপ্লায়েড ইসলামী
আইনের দ্বন্দ্ব সংস্কারের দাবী ইত্যাদি নানা সংকট পেরিয়ে আজকের আধুনিক সৌদি আরবের জনক বাদশা সৌদের নামের দেশটির নাম Kingdom of Saudi Arabia, অর্থাৎ সৌদের আরবীয়
রাজতন্ত্র । রাজারা বংশপরম্পরায় দেশ চালাবে। আরও সোজা ভাষায় রাজাদের দেশ, ইন ফ্যাক্ট তাই । দেশটির সব তেল ক্ষেত্রের মালিকানা রাজপরিবারের সদস্যদের মাঝে ভাগ করে দেয়া । যারা দয়া করে লভ্যাংশের কিছু অংশ কেন্দ্রীয়তহবিলে দাণ করে। কৃষি শিল্প নেই রেভিনিউ বলতে টুরিজম, মানে হজ্জের আয়। অবাক শোনাচ্ছে তো? হ্যাঁ তাই। দেশটি একটি পরিবারের প্রাইভেট প্রপার্টি, তো এখানে ইসলাম কোথায়? তারাই কিনা শরিয়া আইন চালু রেখেছে!! রয়্যাল ফ্যামিলি অর্থাৎ রাজ পরিবারের ব্যাপারে আপনি যত ই জানবেন ততই বিস্মিত হবেন। প্রথমে আসুন রাষ্ট্র তাদের কিভাবে দায় মুক্তি দেয় , সুরক্ষা দেয়। রয়্যাল ফ্যামিলির কোন সদস্যের গাড়ি লাগেজ সহ কোন কিছুর তল্লাশির অনুমতি পুলিশের নেই, কাস্টমস , ইমিগ্রেশানের আওতা বহির্ভূত তারা। তাদের প্রাসাদের ত্রিসীমায় পুলিশ সহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যাবার অনুমতি নেই। অঢেল অর্থ কিভাবে খরচ করছে তার
কোন অডিট নেই। তাদের আছে নিজস্ব বোয়িং, নিজস্ব এয়ারপোর্ট। তারা বডিগার্ড রাখে আফ্রিকান পেশীবহুল কালো মানুষদের নিজস্ব অস্ত্র লাইসেন্সের প্রয়োজন নেই। সরকারী প্রতিষ্ঠানে যেমন এয়ারপোর্টে কিং এর মর্যাদা । প্রিন্স প্রিন্সেস দের সাথে সাধারন আরব নাগরিকের তফাৎ রাজা প্রজা বা প্রভু ভৃত্যের তো বটেই কোন কোন ক্ষেত্রে মানুষ অমানুষের। তাদের কেউ কেউ নাস্তা করে প্যারিসে , লাঞ্চ মেক্সিকোতে ,
জুয়া খেলতে লাসভেগাসে, নারিসঙ্গের প্রয়োজনে ইজিপ্টে । অবিশ্বাস্য লাগবে যখন জেনে যাবেন অবাধ যৌনাচার , মদ্যপান, জুয়া , ব্যভিচার , হত্যা র মত অপরাধের যেখানে কঠোর প্রয়োগ নাগরিকদের উপর হয় সেখানে তারা থাকে ধরা ছোঁয়ার একেবারে আলোকবর্ষ দূরত্বে। এই যে দ্বৈত নীতি এর
কারনেই সেখানে রাজপরিবারের সন্তান হয়েও একজন ওসামা বিন লাদেনের জন্ম হয় । লাদেন বাবার কন্সট্রাকশান ব্যাবসা ছেড়ে একটা বিপ্লবেরসূচনা করেছিলেন , বিপদ দেখে তার বাবার উপর চাপ প্রয়োগ করে তাঁকে দেশ ছাড়া করা হয়। আরও প্যারাডক্স দেখুন এমেরিকা হন্যে হয়ে লাদেন কে খুজেছে এবং শেষ পর্যন্ত হত্যা করেছে। অথচ সৌদি তন্ত্র মন্ত্র একটা বিবৃতি দেয়ার
প্রয়োজন বোধ করেনি।আল্লাহর উপর অগাধ আস্থা ও বিশ্বাস যাদের থাকে তারা কখনও নন মুসলিম সেনার তত্ত্বাবধানে দেশের নিরাপত্তার ভার অর্পণ করতনা। এক আজব ব্যবস্থা মক্কা মদিনা পাহারা দেয় এমেরিকার সৈনিকেরা আর মক্কা মদিনায় অমুসলিমদের প্রবেশ নিষেধ। আপনাদের নিশ্চই মনে
আছে ২০১০ সালে এক সৌদি প্রিন্স লন্ডনের এক হোটেলে উঠেছিল এক পুরুষ আফ্রিকান বডিগার্ড সহ। লিফটের সি সি ক্যমেরায় ধারন করা ফুটেজে দেখা যায় প্রিন্স সেই আফ্রিকান বডি গার্ডটিকে প্রহার
করছে, এবং সেই আফ্রিকানের মৃতদেহ পাওয়া যায় হোটেলে। ইংল্যান্ডের আইনে বিনা বিচারে কোন বিদেশিকে প্রত্যার্পনের কোন সুযোগ না থাকায় সেই প্রিন্স এখন বৃটেনের লাল দালানে। কোর্টে বিচার চলছে। এক হত্যার দায় আর দুই হত্যার পূর্বে সডমীর আলামত ও পরে ডাক্তারি পরীক্ষায় প্রমানিত
হয় তার সাথে তার দেহরক্ষীর বাইল্যাটারাল হোমোসেক্সুয়েল রিলেশন ছিল। বলবেন বিচ্ছিন্ন ঘটনা, আমি বলব মোটেই তা নয় । আরবের কাম , তার প্রকৃতি, ব্যাপকতা ও চর্চা এক আলাদা গবেষণার বিষয় । অবরুদ্ধ কাম কত বিচিত্র পথ বের করে নেয় , কত শতধা তার চোরাস্রোত , আর কত গভীর এই বিকৃতির শেকড় তা জানাটা আপনার জন্যে পীড়াদায়ক আর না জানাটা
অপরাধ বলেই গণ্য করি । তার ওভার ভিউ নিয়ে আগামিতে লিখব।
২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:২৯
Adil বলেছেন: ধন্যবাদ আমার ব্লগে মন্তব্য করার জন্যে। সমস্যাটা হইল ধর্ম নিয়া আলোচনায় চর্বিত চর্বণ পূজনীয়, কিন্তু অযৌক্তিক কোন কিছুর দিকে আঙ্গুল উঠাইলে হায় হায় রব উঠে, যেটা সত্য জানার পথে বিশাল বাঁধা। শরিয়া আর রাজতন্ত্রের ফিউশান কে সোনার পাথর বাটি বললেও বেখাপ্পা থেকে যায়।
২| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৩৬
অথৈ সাগর বলেছেন: ভাল লেখা । াপনার লেখার হাত ভাল।
২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:২৪
Adil বলেছেন: ধন্যবাদ অথৈ সাগর, অনুপ্রেরনা পেলাম।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৪৬
আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: এত কিছুর পরেও মূর্খ বাংগালীর কাছে আরব নাকি বেহেস্তের প্রবেশ দ্বার! আরবের খেজুর ছাড়া নাকি ইফতার হয় না। আমাদের ধর্মে এই ধরনের রাজতন্ত্র হারাম, কিন্তু সবাই মনে করে তারাই ইসলামের আসল রক্ষক!