![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটা সময়ের কথা ভাবুন , আজ থেকে ১০০ বছর পর
এই মুহূর্তে যারা বেঁচে আছে, সদ্য জন্ম নেয়া শিশুটি থেকে
অশীতিপর বৃদ্ধমানুষটি পর্যন্ত , প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে
কেউই বেঁচে থাকবেনা। বিশ্বরেকর্ড ধারী ওকিনা দ্বীপপুঞ্জের
১৩৬ বছর বেঁচে থাকা নারীটি বা সুইজারল্যান্ডের ১২০
বয়সী বৃদ্ধ লোকটিকে হিসেবের বাইরে ধরে নিন না হয়।
ভাবুন তো , ভাবতে কেমন লাগে? এই ভাবনাটা অনেক
দিন থেকে আমার মাথায় ঘুর ঘুর করছে, সেই ছোট বেলা
থেকে । বেশী ভাবতে গেলে চিন্তারা জট পাকিয়ে যেত,
নিজেকে পাগল পাগল লাগতো। অনেকটা আকাশে কত
তারা আছে – এই হিসেবটার করতে যাওয়ার সময় যতটা
অসহায় লাগতো , ততটাই বা তারও বেশী। কত আয়োজন
করে বেঁচে থাকা, কত যুদ্ধ, কত সংগ্রাম। তারপর কি ?
এখন বেঁচে আছি ,কোন একবেলায় ফুসফুস আর হৃৎযন্ত্র
সমন্বয় করে কাজ করতে ভুলে যাবে। আপনার ডেথ
সার্টিফিকেটে লেখা থাকবে – DEATH IS DUE TO
CARDIORESPIRATORY FAILURE CAUSED BY “””””””””””
শরীরের কোষে কোষে প্রানের কাঁচামাল সরবরাহ বন্ধ হয়ে
গেলে, কিছুকাল অপেক্ষায় থেকে থেকে কোষ গুলো নিজেদের
ইন্টেগ্রিটি হারিয়ে ফেলবে। অর্গানাইজেশন নষ্ট হয়ে বিবর্ণ
হয়ে যাবে, প্রতিটি কোষ , প্রতিটি অনু বিচ্ছিন্ন ভাবে নষ্ট
হয়ে যাবে। তাদের কোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কাজ করবেনা।
আপনারই আশ্রয়ে, তক্কে তক্কে থাকা ব্যাক্টেরিয়া , ভাইরাস,
ফাঙ্গাস ও অন্যান্য অনুজীবেরা প্রতিরোধহীনভাবে কোন বাধা
ছাড়াই ছিন্ন ভিন্ন করে দেবে আপনাকে, নির্দয় ভাবে । কোষ
গুলো পচে গলে দুর্গন্ধ ছড়াবে। কেউ আগে , কেউ তৎক্ষণাৎ,
কেউ ধীরে ধীরে তবে সবাই ই একই পরিণামের দিকে যাত্রা
করবে। তার অনেক আগেই প্রাণবায়ু অজানায় পাড়ি জমাবে।
কোন স্নায়ু কাজ করবেনা বলে এই অসহ্য যন্ত্রণাদায়ক পীড়নে
মৃতেরা কষ্ট পাবেনা বলেই ধরে নেয়া যায়।আপনার পক্ষে
কি মৃত্যু পরবর্তী সময়টার কিছু প্রত্যক্ষ করা সম্ভব? অলৌকিক
কিছু না হলে সে চিন্তা বাদ দিন, বরং আমরা সেটাই তাত্ত্বিকভাবে
বোঝার চেষ্টা করি। মরে যাওয়া বেড়াল বা কুকুর পচে যাওয়ার
সময়টা যদি কেউ দেখে থাকেন, হয়তো অনেকেই বাস্তবে
দেখেছেন, আর বাস্তবে না দেখে থাকলেও টিভিতে হয়তো
দেখেছেন। লাখ লাখ হৃষ্টপুষ্ট ধবধবে সাদা পোকাদের কিলবিল
করতে দেখে থাকলে আপনার তো জানাই আছে যে পুরো
মাথাজুরে চোখ নিয়ে অবিশ্বাস্য দ্রুততায় উড়ে যাওয়া ছাড়াও
ডমেস্টিক ফ্লাই বা সাধারন মাছি গুলো তার চেয়েও অবিশ্বাস্য
দ্রুততায় একটা প্রমান সাইজের গলমান পচে যাচ্ছে এমন
একটি প্রানীদেহকে একেবারে গুম করে দেবার ক্ষমতা রাখে।
বিশ্বাস হয়না , তাইনা ? এই ধাড়ি সাইজের একেকটা সাদা
ধবধবে নাদুস নুদুস পোকা গুলোই মাছি হয়ে যায়।মাছি
খুঁজে খুঁজে মৃতদেহ বের করে তার গায়ে ডিম পেড়ে আসে ,
সেই ডিম থেকে লার্ভা। আমিও প্রথমে এই সিনারিওটা
দৃশ্যকল্পে আনতে ব্যর্থ হয়েছি । হ্যা মাছিদের জীবন চক্রটাই
এমন অদ্ভুতুড়ে। পরিণত অবস্থাটা চক্রের মাঝখানের
শক্তিশালী জায়ান্ট লার্ভাটির চেয়ে হাস্যকর রকম শীর্ণ
হলেও বেঁচেবর্তে থাকার জন্যে ওটাই বেশী উপযোগী।
বিধাতাকে আমার প্রায় সময়েই রিজনেবল মনে না হলেও তিনি
অবশ্যই রিজনেবল, দেখুন না সারা জীবন মানুষের তাড়া
খাওয়া এই মাছিরা প্রতিশোধ পর্ব শৈশবে সেরে ফেলে বাকী
জীবন পালিয়ে বেড়ায়, রিভার্স প্যারাডক্স বলা যেতে পারে ।
আর যদি ও কোন ভাবে মাছির আওতার বাইরে চলে যান
সমস্যা নেই ব্যাক্টেরিয়া ভাইরাস ফাঙ্গাসরাতো আছেই,
আপনার শরীরের প্রতিটি অক্সিজেন, কার্বন, নাইট্রোজেন,
ফসফরাস ইত্যাদি একটা একটা করে খুলে এনে বাতাসে
ছড়িয়ে দেবে। সেটা অবশ্য দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। প্রসেসিং
শেষ হলে আপনার শরীরের কিয়দংশ গাছের পাতায় কার্বন
হয়ে , কিছু মুক্ত হাওয়ায় ঘুরে বেড়াবে ,কিছু নাইট্রোজেন
হয়ে আপনার বাড়ীর শীম গাছটির গোড়ায় জমে থাকবে
কিছু কাল, বড্ড বিস্তৃত হয়ে গেলেন ? আচ্ছা বাদ দেন
আমরা বরং আরও রিয়েলিস্টিক মাটির উপরের
প্রক্রিয়াজাতকরণটা খেয়াল করে দেখি। যদিও এটি মাছির
রচনা নয় পরীক্ষায় যেমন ১৫ বা ২০ নম্বরের গৃহপালিত
প্রাণী বা পোষা বেড়ালের বা ন্যুনতম গরুর রচনা টাইপ
কিছু, তবুও তাদের হাস্যকর রকম হাস্যকর কিছু
ফিজিওলজী না জেনে মরে গেলে আপনার জীবনটাই
অর্থহীন রয়ে যাবে, যদিও সাজানো সুখশান্তির জীবনটা
এমনিতেই অর্থহীন । সে বিষয়ে পরে আসছি, ধরুন
আপনার সামনে প্লেটে সাজানো আছে আপনার সবচেয়ে
পছন্দের খাবারটি, আপনি যথেষ্ট ক্ষুধার্ত ও বটে । কিন্তু
একি ! হঠাৎ প্লেটের উপরই বমি করে দিলেন যে ?
তারপর স্বাভাবিক ভঙ্গীতে টিস্যু দিয়ে মুখ মুছে কাটা
চামচ দিয়ে সেই বমি মেশাচ্ছেন খাবারের সাথে। না
আর এগুনো যাচ্ছেনা সত্যি সত্যি বমি পাচ্ছে। কিন্তু
আপনি এখানেই থেমে গেলেন না, উপরন্তু সেই বমি
মেশানো খাবার মুখে দিয়ে চোখ বুজে স্বাদটুকু ম্যাক্সিমাইজ
করার তালে আছেন। দুঃখিত বিবমিষা জাগানোর জন্যে।
কিন্তু মাছিরা তা ই করে , খাবারটা খাওয়ার উপযুক্ত কিনা
সেটা জানার জন্যে আগে পা দিয়ে নেড়ে চেড়ে সিওর হয়ে
তার উপর বমির মত করে গ্যাস্ট্রিক জ্যুস অর্থাৎ পাচক
রস ঢেলে খাবারটা তরল করে নেয়। তারপর ন্যাচারাল
স্ট্র দিয়ে টেনে টেনে খাবার খায়। তাদের ফুটপ্যাডে সেন্সর
লাগানো স্নায়ুর রিসেপ্টরের ইনপুটের মাধ্যমে জেনে নেয়
এটির মধ্যে ফুডভ্যালূ যুক্ত কিছু আছে কিনা। মাছিদের
এই অসাধারন সব ব্যাপার জানার পর সত্যি সত্যি তাদের
প্রতি রেসপেক্ট বেড়ে গেছে। যাক যা বলছিলাম, এভাবেই
লাখ লাখ অনুজীব আর মাছিদের জীবন চক্রের হিস্যা
হতে কেমন লাগছে আপনার ? কেমন লাগা উচিৎ ?
ভেবে দেখবেন, শ্রেষ্ঠত্বআর বুদ্ধিমত্তার গৌরব দেখুন
কিভাবে কোথায় চূর্ণ হয়েযায়, খান খান হয়ে যায়,
তাও আবার হীন বা দুর্বল সবপ্রতিপক্ষের হাতে,
আরও পরিষ্কার করে বললে, হীনদেরহাতেও না ,
তাদের মাছুম সন্তানদের হাতে অথবা চোখে
দেখা যায়না এমন নগণ্যদের হাতে ।
হাঃ হাঃ হাঃ “””””” অট্ট হাঃ হাঃ হাঃ ”””””””””’ ।
©somewhere in net ltd.