নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হার না মানা হা‌রেই অা‌মি পরা‌জিত

ANIKAT KAMAL

ANIKAT KAMAL › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্র‌তি‌বেদন ও সে‌চেতনতা

১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:২৯

হারবাল চিকিৎসার চালচিত্র
অনিকেত কামাল

মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে চিকিৎসা অন্যতম মানবিক চাহিদা। সুস্থ ও সুন্দর জীবনের জন্য সু-স্বাস্থ্যের বিকল্প নেই। সৃষ্টির সূচনা হতেই মানুষ ভালো থাকার জন্য রোগ ব্যাধির সাথে অাপোষহীন সংগ্রাম করে অাসছে। কখনো সফল হয়েছে কখনো হয়েছে ব্যর্থ। কিন্তু অাজ অবদি থেমে যায়নি মানুষের প্রচেষ্টা। প্রকৃতির বুকেই মানুষ খুঁজে অাবিস্কার করেছে রোগ মুক্তির ওষুধ। গাছ- গাছড়া, লতা-পাতা, শিকড়-বাকড়ের মাধ্যমে মানুষ ওষুধ তৈরি করছে। যীশু খ্রী: জন্মের প্রায় ৮৬০ - ৩৩৭ বছর অাগে হিপোক্রেটস গ্রিস দেশে চিকিৎসা বিজ্ঞানের বুনিয়াদ স্থাপন করেন। পরে প্লেটো, এরিস্টটল, সক্রেটিস, ইবনে সিনা প্রমুখ মহামনীষীরা একে এগিয়ে নেন। মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা পরে গ্রিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাথে পরিচিত হয় এবং একটা অাধুনিক চিকিৎসা সেবা অাবিস্কারে সক্ষম হন। এদের মধ্যে ইবনে সিনা, অাল - রাজি, অাল- বিরনীর নাম অন্যতম। বিজ্ঞানের অাবিস্কার ও প্রসারের ফলে চিকিৎসা পদ্ধতিও পরিবর্তন হয়েছে। ইউনানি, অায়ুর্বেদ, এলোপ্যাথিক, হোমিও, কবিরাজি, থেরাপি প্রভৃতি পদ্ধতিতে মানুষ চিকিৎসা সেবা গ্রহন করেন। এদের মধ্যে হারবাল চিকিৎসার প্রতি মানুষের সহজাত দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় মানুষের এ দুর্বলতাকে পুঁজি করে এক শ্রেণীর লোভী প্রতারক চক্র হাজার হাজার কিংবা লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বললেও অত্যক্তি হবেনা। চিকিৎসা সেবা দিনে দিনে বানিজ্য সেবায় পরিণত হচ্ছে। চিকিৎসা সেবার উদ্দেশ্য ব্যহত হচ্ছে। যে সব অনিয়মের ভিত্তিতে হারবাল চিকিৎসা সেবা নয় হারবাল ব্যাবসা পরিচালিত হচ্ছে তা নিম্নে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। সৃষ্টিকর্তার পরেই একজন অসুস্থ মানুষ ডাক্তারের কাছে অাসেন বড় অাশা করে সুচিকিৎসার জন্য। ‌কিন্তু তিনি জানেন না সে ডাক্তার কতটা যোগ্যতা সন্পন্ন বা বিশেষজ্ঞ। বাংলাদেশে যে সব হারবালের রমরমা ব্যাবসা চলছে সেখানে বেশিরভাগ ডাক্তারের সার্টিফিকেট নেই । বড়জোড় বি-ক্যাটাগরী সার্টিফিকেট রয়েছে। তাও অাবার অর্থের বিনিময়ে অনেকে জোগাড় করে থাকেন। ডি এ এম এস এবং ডি ইউ এম এস চি‌কিৎস‌কের সংখ্যা অতি নগন্য। ডিসের চ্যানেলগুলোতে বিভিন্ন অাকর্ষনীয় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। টাকার বিনিময়ে রোগ মুক্তি প্রমানের সাক্ষাতকারও দেওয়া হয়। ‌বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কোলাহল মুখর স্হানগুলোতে বিশেষ করে বাস, ট্রাক, ‌সি,এন,জি, অাটোরিক্সা, ‌দোকানপাট, নৌযান, বাস স্টেশন, রেল স্টেশন প্রভৃতি স্থানে পোস্টার লাগানো হয়। কার্ড, প্রচারপত্র বিলি করা হয়। তাদের মধ্যে মিরাক্কলের মতো ডায়লক উপস্থাপন ক‌রেন, যেমনঃ- অামাদের ওষুধ সেবনের সাথে সাথে ফলাফল। চব্বিশ ঘন্টায় রোগ হতে চির মুক্তি। বিদেশ যেতে পারছেন না? Hbs(Ag)+ কোন চিন্তা নেই। ১০০% গ্যারান্টি। যাদুকরী ক্রিম বা লোশনের মাধ্যমে ব্রণ, মেসতা, কালোদাগ মুহূতেই নির্মল করা হয় কিংবা সাতদিনে ফর্সা করা হয়। বিয়ে করতে ভয় পাচ্ছেন? অাপনার গোপন অঙ্গকে লৌহ দন্ডের মতো শক্ত করবে। অামাদের হর্স পাওয়ার ম্যাসেজ ওয়েল ব্যবহারে ৭/৮ ইঞ্বি লম্বা হবে। অামাদের হালুয়া কিংবা ক্যাপসুল সেবনে ৩০/৩৫ মিনিট সময় পাবেন। ৫/৬ বার মিলনেও কোন প্রকার ক্লান্তি নাই। বিফলে মুল্য ফেরত। এক ফাইলই যথেষ্ঠ ইত্যাদি ইত্যাদি।

একজন ডাক্তারের কাছে রোগী এলে প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব বা কর্তব্য যাই বলিনা কেন, রোগীকে মানসিক ভাবে অভয় দেওয়া। কিন্তু হারবালের ডাক্তারের কাছে রোগী এলে রোগীর মধ্যে ভীতি ও অাতঙ্ক সৃষ্টি করে দেওয়া হয়। হারবালের প্রতারক চক্র মানুষকে মানুষিক রোগী বানাচ্ছেন। হারবালের চিকিৎসা নিয়ে মানুষের প্রাকৃতিক জীবনের বিশুদ্ধ জীবনী শক্তি হারিয়ে ফেলছেন। যৌন উত্তেজক ক্যাপসুল, টেবলেট, হালুয়া, সিরাপ সেবন করে রোগী সাময়িক অানন্দ লাভ করলেও প্রকৃতপক্ষে ক্ষতির দিকটা বেশি হচ্ছে। স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য প্রাণীদের ওষধ মানুষদের খাওয়ানোর ফলে অকালে কিডনী লিভারে পানি জমছে কিংবা অকালে নষ্ট হচ্ছে। ফলে মানুষের অায়ু কমে যাচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একই চিত্র বিরাজ করছে। হারবালের ডাক্তাররা বিদেশী ঔষধ বা বিদেশী ফরমুলায় তৈরি বলে সীমাহীন দামে বিক্রয় করেন। কখনো নিজেদের তৈরি ঔষধ বলেন অথচ তারা দেশী ঔষধের বোতলের লেবেল তুলে বিক্রি করেন। অালাদা কোটায় ঔষধ দেন। বলতে গেলে হেন কোন অপরাধ কিংবা মহাপাপ নেই যা বেশির ভাগ ব্যক্তি মালিকানাধীন হারবাল প্রতিষ্ঠান গুলোতে ঘটে না। জাতীয় ইউনানী অায়ুর্বেদিক বোর্ড, হারবাল সোসাইটি, কিংবা প্রসাসনিক বা সরকার যথ সামান্য ব্যাবস্থা নিলেও বিভিন্ন ফাঁকফোঁকর ও প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় বা প্রশাসনের কালো হাতের ইশারায় হারবাল ব্যাবসা ঠিকই পরিচালিত হচ্ছে। হারবালের একজন হাকিমের সাথে কথা প্রসঙ্গে বললেন "অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাই করা নয়, বরং রোগীকে বুঝিয়ে প্রয়োজনে সমস্ত কৌশল অবলম্বন করে হলেও নি:স্ব করাই অামাদের কাজ।" হারবাল চিকিৎসার সত্যিকার চিত্র তুলে ধরতে পারলে সেই সাথে মানুষ সচেতন হলে অদুর ভবিষ্যতে হারবালের ব্যবসা বা চিকিৎসা সেবা অস্তিত্ব বিলিনের পর্যায়ে চলে যাবে এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। তবে সত্যিকার নিয়মের ভিত্তিতে হারবালের চিকিৎসা সেবা পরিচালিত হলে প্রকৃতির পরিশুদ্ধ সেবা অার কোথাও পাওয়া যাবেনা। এসব অনাকাঙ্খিত প্রতারনার ফলে হারবাল চিকিৎসা সেবা দিনে দিনে তার ঐতিহ্য হারাচ্ছে। অার এসব কারনেই মানুষের বিশ্বাসে ধরছে ফাটল। সর্বত্র প্রায় একই চিত্র। সুস্থ থাকার প্রত্যাশা মানুষের দূরাশা। বিশেষ করে হারবাল চিকিৎসা ‌সেবাকে যুগোপযোগী ও অাধুনিকরনের জন্য কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার মতো ঘৃণ্য মানসিকতার পরিবর্তন চাই। অপচিকিৎসা বা ব্যবসায়িক চিকিৎসা নয় , সু- চিকিৎসাই অামাদের কাম্য।
DR.A H M KAMAL HOSSAIN

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:৩৯

সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: সুন্দর

২| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:৪৭

ঢাকাবাসী বলেছেন: বাঙালীরাই সবচাইতে বড় প্রতারক। ভাল লিখেছেন।

৩| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৮:০৮

হুমম্‌ বলেছেন: +++++++++++++++

৪| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:১৫

ANIKAT KAMAL বলেছেন: সা: ই: বাবু ভাই সত্য সুন্দ‌রের স্বপ্নময় পৃ‌থিবী‌তে অাপনার বাস ব‌লেই হয়ত এমন ক‌রে সুন্দর ক‌রে অ‌ন্যের লেখা‌কে পর্য‌বেক্ষণ ক‌রেন শুভ কামনা অাপনা‌র জন্য অন্তত কাল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.