নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মহৎ ত্যাগের অমর প্রতিদান
অনিকেত কামাল Good morning & happy new year my dear dream Sweet heart friends
অরুপ অার বিশাল দু'জন ঘনিষ্টতম বন্ধু। অরুপের বাড়ি উত্তর বঙ্গে অার বিশালের বাড়ি দক্ষিন বঙ্গে। নিয়ন গ্রুপ অব কোম্পানীতে চাকরীর সুবাদে দু'জনার পরিচয়। দক্ষতা অার অভিজ্ঞতায় ভরা প্রশিক্ষন ক্লাশের প্রশিক্ষক অাবীর হোসেন সোহরাফ স্যারের ব্যতিক্রমী উপস্থাপনা সবাইকে বিমুগ্ধ করে। অরুপ অার বিশাল তিন মাসের কঠোর প্রশিক্ষন শেষে চাকরী নিশ্চিত করে বিশাল চলে যায় কক্সবাজার অার অরুপের কর্ম এলাকা হয় রাঙ্গামাটি। রুপ অার শালের বন্ধুত্ব চাকরীর প্রয়োজনে দূরত্বের পাহাড় সৃষ্টি করলেও মোবাইলের কল্যানে বন্ধুত্ব অারো বেড়ে যায়। সু প্রসন্ন ভাগ্য অরুপের বদলি কক্সবাজার হয়ে যায়। অবশ্য বিশালের চেষ্টায় সেটা সম্ভব হয়েছে। সত্য বলতে কি দু'জনের গভীর বন্ধুত্ব হওয়ার পিছনে সুনির্দিষ্ট কোন কারন নেই। তাছাড়া দু'জনের জীবন ধারা দু'রকম। বিশাল খুব সুনিয়ন্ত্রিত অার অরুপ জীবন জীবিকার তাগিদে চাকরীর প্রয়োজনে কিছুটা সময় গোছানো পরিপাটি অার বাকি সময়টা সম্পূর্ণ অালাদা। ভিতরে ভিতরে খড়কুটোার মতই এলেমেলো। বিশালের অাদর্শ বাস্তব অার অরুপের অাদর্শ অদৃশ্য। কল্পিত অাদর্শের রুপক অরুপ কখনো কখনো হাসির অাড়ালে দুঃখের কথা ভুলতে চায়। বিশাল খুব পর্যবেক্ষনী বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। পাঁচ বছরে বিশাল লক্ষ্য করেছে অরুপের মাঝে লোভ লালসা স্বার্থপরতার লক্ষন নেই। সন্পূর্ণ স্বাধীনচেতা ব্যতিক্রমী একজন বন্ধু। অরুপকে অাবিস্কার করার অনুসন্ধানী চোখ থাকলেও ওকে সরল বিশ্বাসেই অামি বন্ধুত্বের অাবীর ছড়ানো ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখতে চেষ্টা করি। অরুপের ত্যাগ স্বীকার করার মত সুন্দর একটি মন রয়েছে যার ফলে কর্তব্য পালনেও অামাকে যথেষ্ঠ সহযোগিতা করে। কেউ কেউ অাদর করে ভালোবেসে অরুপকে পাগলা বলেও ডাকে। এতে অরুপ কখনই মন খারাপ করে না। অরুপ শান্ত ধীরস্হির স্বভাবের। অমায়িকতাই তার প্রকাশ। রুপ অার শাল একই রুমে থাকে কিন্তু খাটটা অালাদা। কেউ কারো খাটে ঘুমানো তো দূরের কথা বিছানায় শরীরও এলিয়ে দেয়না। অরুপ অসুখের কারনে অনেকদিন অনেক সময় অফিস করতে পারেনি বিশাল চলিয়ে নিয়েছে। বিশালের কখনো অসুখ করেনা। অফিসের দায়িত্ব তারা একই সময়ে পালন করে। ব্যত্যয় যে ঘটেনা তা নয়। একদিন বিশাল অসুস্থ হয়ে পড়ে। অরুপকে অফিসের যাবতীয় কাজ করতে হয়। ওদের মাঝে চমৎকার বন্ধুত্বের সেতুবন্ধন। বিশালের বিছানাটা শক্ত বিধায় বিশাল অরুপের বিছানায় শুয়ে পড়ে। অরুপ নিচু বিছানায় ঘুমাতে পারলেও বিশাল পারেনা। এজন্য বিশাল অরুপের বালিশটা পাশে রেখে নিজের বালিশটা অানে। কিন্তু বালিশটা রাখতে গিয়ে অনুভব করল বালিশের নিচের পাশটা ভেজাভেজা। ভাবল হয়ত পানি পড়তে পারে। অরুপের বিছানাটা নরম হওয়া সত্বেও শালের মনে হল বিছানার নিচে শক্ত কিছু অাছে। তোষক উঠিয়ে লক্ষ্য করল একটি ডাইরি। অাগ্রহভরে তুলে নিল হাতে। শাল দেখল ডাইরির উপরে ধুলোবালি তেমন জমেনি।শেষের দিকের পাতা উল্টিয়ে তারিখ বিশ্লেষনে শালের বুঝতে বিলম্ব হল না এটা দু'তিন দিন পর পরই লেখা হয়। শেষের দিক হতে প্রথম দিকে এসে শাল চমকে উঠে ! একি ! স্থির হয়ে যায় দৃষ্টি। রক্ত কালিতে বড়বড় অক্ষরে কি লিখেছে রুপ। শাল চোখ বন্ধ করে অনেক ক্ষন নিজেকে সংযত করার চেষ্টা করে। পরে ধৈর্যের একরাশ সংযোমী সাহস বুকে ধারন করে ডাইরী পড়তে অারম্ভ করে। একটু পড়ার পর অার নিজেকে সামলে রাখতে পারেনা। ভালোভাবে দরজা বন্ধ করে অাবার পড়তে চেষ্টা করে। কিন্তু না কিছুক্ষন পড়ার পর অাবার হাউমাউ করে কেঁদে উঠে। বাসায় কেউ ছিলবলে অাবেগের অস্ফুট কান্না কেউ শুনলনা। মনে মনে বলতে লাগল অরুপ, বন্ধু অামার অামি কখনো কাঁদতে জানিনা কিন্তু তোমার রক্ত কালির অশ্রুলেখা অার পড়তে পারছিনা। পৃথিবীতে তোমার এত অব্যক্ত কষ্টের বেদনা যা তুমি লুকিয়ে রেখেছ বুঝতে দেওনা। তোমার হাসির অাড়ালে একি রচনা করে চলেছ। হে দয়াময় প্রভু রুপের দুঃখের নীরব সাথী হবার ক্ষমতা অামাকে দাও। বিশালের জীবনে ধর্মের প্রতি বিশ্বাস থাকলেও নামাজ রোজা কায়েম করতনা। সেদিন দু'রাকাত নামাজ কায়েম করে অাল্লাহর নিকট সাহায্য কামনা করে। অস্থতার অজুহাতে বিশাল একসপ্তাহ অফিসে না গিয়ে রুপকে অাবিস্কার করে নেই। অরুপ তার মা বাবা ভাই বোন অত্নীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশিকে এতোটাই বেশি ভালবাসে সেটা ভাষাই প্রকাশ করা যায়না। তোমার ডাইরীর পাতায় পাতায় শুধু স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনার কাহিনী রচিত। তোমাকে মাঝেমাঝে দেখি ভীষন কষ্টের মাঝে হাসির ঢেউ তোল অবলিলায়। সৃষ্টিকর্তার নামে শফত করে তোমার ডাইরী ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করছি বন্ধু তোমার জন্য কিছু করব তোমার অাড়ালে।
শিল্প জগতের অনুকরনীয় অভিনেতা অামি।পরজিত শব্দ অামার অভিধানে নেই। পারতে অামাকে হবেই। তোমার অাশার স্বার্থক রুপায়ন অামি ঘটাবই। বিশালের মধ্যে স্রষ্টা এমন ক্ষমতা দিয়েছেন যার ফলশ্রুতিতে অন্যের কন্ঠ নকল করে কথা বলতে পারেন। প্রতিদিন বিশাল রুপের কন্ঠ নকল করে অরুপের মাবাবা ভাই বোনের সাথে কথা বলেন। মাসে মাসে টাকা পাঠান কিন্তু বাড়িতে যাওয়া নিয়ে অসুবিধা রয়ে যায়। তবে কাজের অজুহাতে এড়িয়ে যায়। কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম তো অার কারো জন্য অপেক্ষা করেনা। রুপের প্রতিজ্ঞা বা অভিমান সময়কে তো অার ধরে রাখতে পারেনা। স্বাভাবিক নিয়ম মানলে অরুপ একজন পরাজিত মানুষ। স্রষ্টার সাথে তার চির বিদ্রোহ অাশার সীমান্তে না পৌঁছা পর্যন্ত। ইস্পাত কঠিন প্রতিজ্ঞা অরুপকে একবিন্দু নড়াতে পারেনা।অরুপের মা ভীষন অসুস্থ। ছোটভাই সন্তু সাধ্যের বিত্ত থেকে বাঁচানোর সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থতায় রুপ নেই। দুঃসংবাদ ভেসে অাসে। রুপকে জানালে অভিমানী পাথর সিদ্ধান্ত নড়চড় করবে না। বিশালের মাথায় অাকাশ ভেঙ্গে পড়ে। সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা ফোন দেয় বন্ধু পোলকের কাছে। পোলক ছুটে অাসে গাড়ি নিয়ে। ঠিক করে রাতে দুধের সাথে ঘুমের বড়ি খাওয়াবে। প্রায় দশ ঘন্টা বিদ্যুৎ বেগে গাড়ি এগিয়ে চলছে । বড় জোড় ১০ হতে ১৫ মিনিটের মধ্যে গাড়ি পৌছে যাবে। হঠাৎ সামনে অাইল্যান্ড দেখে দ্রুত ব্রেক করে। ঘুম ভেঙ্গে যায় অরুপের চোখ মেলে নিজেকে গাড়িম মধ্যে অাবিস্কার করে কিছু বুঝে উঠার অাগে গাড়ি পৌঁছে যায় অরুপের বাসার সামনে। মাইক্রোবাসের গেট খুলে প্রথমে বেরিয়ে অাসে পোলক পরে বিশাল। বহু মানুষের ভিড়। কান্নার রোল বাগির ভেতর হতে বেরিয়ে অাসে। অনেকেই এগিয়ে অাসে ভিগ জমায়। সবাই বিষন্ন বিমর্ষ বিমুড়। অরুপের চোখে অবিশ্বাস্য মনে হওযার অাগেই বিশাল রুপকে বলে স্বাভাবিক থাকবি। এটাই তোমাদের বাড়ি। যে স্বপ্ন তুমি ডাইরীর পাতায় পাতায় রচনা করেছিলে। পরে তোমাকে সব বলব। বলতেই অরুপের বড়বোন এসে রুপকে জড়িয়ে সেকি কান্না ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। কঠিন কষ্টের অাবেগ যেখানে প্রবল সান্ত্বনার ভাষা সেখানে স্থির। পোলক রুপের কাছে এসে বলে শান্ত হও ধৈর্য ধর। জীবন মৃত্যুর নির্মম নিষ্ঠুর সত্যকে তো অার অাবেগ কান্না দিয়ে পরিবর্তন করতে পারবি না। রুপের বোন অনন্যা বলে কে অাপনি এখন তো খুব সান্ত্বনার বানি শুনাচ্ছেন। এতোদিন একবারে কি মনে হয়নি বন্ধুকে বাড়িতে পাঠাতে হবে। এখন বন্ধুত্ব দেখাচ্ছেন মহত্বের পরিচয় দিচ্ছেন। পারবেন কি মায়ের শেষ মিনুতি ভরা করুন ভাষার অাকুতি ফিরিয়ে দিতে।শেষ বারের মতো ভাইটিকে দেখার মায়ের সেকি কান্না!!! চলে যান অাপনারা। এমন ভাই অামাদের প্রয়োজন নেই। যে ভাই তার রক্তের বাঁধনকে দুরে ঠেলে সাফল্য অর্জনের অাশায় দুরে থাকে সেরকম ভাইয়ের কোন প্রয়োজন নেই অামাদের। পোলক এসে শান্ত করতে চেষ্টা করে বলে অাপা নিয়তির বিধানকে অামরা অস্বীকার করতে পারিনা। প্লিজ শান্ত হন ধৈর্য ধরুন। তিনজন তিনদিন রুপের বাসায় ছিলেন। শোক সন্তপ্ত পরিবার যখন কিছুটা স্বাভাবিক হয় তখন তারা কর্মস্থলে ফিরে অাসে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রুপের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তারা সাগর সৈকতে গিয়ে একত্রিত হয়। রুপের ইচ্ছে পুরো বিষয়টা অবগত হওয়া। দু'একটা বিষয় নিয়ে অালোনার পর অরুপ গম্ভীর হয়ে যায় এবং বিশালকে বলে বিশাল তুমি কোন কথা বলতে নিষেধ করেছিলে অামি বলিনি এখন তোমাকে সব বলতে হবে। বিশাল একটু গম্ভীর হয়ে যায়। রুপ অাবার বলে বন্ধু প্লিজ বল !! শোন তাহলে তোমার সাথে পরিচয় অার বন্ধুত্ব হওয়ার পর হতে অামি উপলদ্ধি করতে শুরু করলাম অামার জীবনের শ্রেষ্ঠ বন্ধুদের মধ্যে তুমি অন্যতম। তোমার হাসির অাড়ালে লুকানো ব্যথা সেদিনই অাবিস্কার করতে শুরু করলাম যেদিন তোমার গোপন ডাইরী পড়লাম। চমকে উঠল অরুপ। জানি এটা অামার অন্যায় হয়ে গেছে। অরুপ কিছু বলতে চেয়ে নিরব হয়ে গেলো। বিশাল এবার শুরু করল এভাবে, প্রতিভার রাজ্যে অামি সুনাম সুখ্যাতি ও সাফল্য অর্জন করতে না পারলেও প্রতিভাকে তোমার জন্য কিছুটা কাজে ব্যবহার করতে পেরেছি তাতেই অামার সান্ত্বনা। তুমি তো জানো ভাইদের সাথে অামার অর্থবিত্ত তুলনা করতে না পারলেও একটু বাড়িয়ে বললে বলতে হয় প্রেমের সাফল্যে অামাদের বিয়ে এবং শ্বশুর এর বিশাল ব্যাবসার অায়ের অনেকাংশ অামার একাউন্টে জমা হয়। অার সবচেয়ে বেশি যেটা কাজে লাগিয়েছি সেটা হচ্ছে তোমার কন্ঠ নকল করে প্রায় প্রায় তোমার ছোট ভাই মা বোন দুলা ভাইয়ের সাথে কথা বলতাম। একদিন তো রিতিমত ঘাবড়ে গিয়েছিলমি। তারপর হতে বেশি কথা বলতাম না। ফোন এলে ব্যস্ততার অজুহাতে এড়ায়ে যেতাম। তোমার সাথে যখন গভীরভাবে মিশে কথা বলতাম তখন সন্পূর্ন কথায় স্পাই মেমোরিতে কেকর্ড করতাম পরে অবসরে সবকিছু তোমার মত করে নিতাম। শুকনো পাতার মতো ঝরে যাওয়া স্বপ্নের পাঁপড়িগুলোকে যেভাবে তুমি ডাইরির বুকে রক্ত কালিতে সাজিয়ে রেখেছ অামি তার রুপকার হিসেবে কাজ করেছি। বিশেষ করে তোমার স্বপ্নের একটি সুন্দর বাড়ি,একটি বাগান,একটি পুকুর অার...বলতেই রুপ রেগে গিয়ে বলল অার একটি তাজমহল। বাহ! চমৎকার। মন্ধুত্বের মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাওনা!! অারে কি করে তুমি ভাবলে অামি তোমার করুনা নিয়ে ...। পোলক বলল রুপ চুপ কর, একে তুই করুনা বলছিস ? রুপ বলল তুই চুপ কর পোলক। তোরা দু'জনে মিলে...। বিশাল বলল তোমার যা বলার অামাকে বল। পোলক এসব ব্যাপারে কিছু জানে না। রুপ বলল না জানেনা বলেই দু'জনে রাতের অাঁধারে ঘুমের বড়ি খাইয়ে নাটক করেছ। অারে শাল গরীব হতে পারি, তাই বলে তোমাদের দয়া ভিক্ষে করে অামার স্বপ্নের স্বার্থক রুপায়ন ঘটাতে হবে এটা ভাবলে কি করে। পোলক বলল থাম তো এসব বিষয়ে অার কথা না। পোলককে অাবার গুরু দেবের মতো মান্য করে।
রুপ পোলক বলে পাঁচ বছরের মধ্যে যদি এর প্রতিদান দিতে না পারি তাহলে তোকে একটা দায়িত্ব দিব যদি পারিস করিস তাহলে হয়ত মরেও কিছুটা শান্তি পাব। সময় বয়ে চলে কালের অঘোম নিয়মে অার রুপের ভাবনা হারিয়ে যায় সময়ের হিসেবে। দিন মাস বছর চলে যায় জাগতিক নিয়মে। মানুষের সমস্ত ভাবনার উর্ধ্বে রয়েছেন সৃষ্টিকর্তা। সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে ওদের চাকরী হওয়ায় উৎসব অামেজে সবাই যখন অাত্নীয় পরিজন নিয়ে অানন্দে বিভোর সেসব দিনগুলোতে সেবা অার দায়িত্বের কঠিন নিয়মে বন্দী থাকতে হয়। কেননা অাত্নত্যাগ ব্যতীত অন্যের কল্যাণ সাধিত হয়না। কিন্তু দায়িত্ব কর্তব্যের কঠিন নিয়মকে উপেক্ষা করে কখনো কখনো ছুটে যেতে হয় অাত্নার বন্ধন রক্তের অাহ্বানে চির পরিচিত মুখগুলোর সান্নিধ্যে। সব বিষয় সবার ক্ষেত্রে এক রকম হয়না। বিশাল তো চাকরীটা করে সামাজিক মযর্দা ধরে রাখার জন্য। বেতন দিলে না দিলে কোন সমস্যা নেই। এজন্য শাল একটু অন্য রকম। ঈদের ছুটিতে বিশাল সবার জন্য চমকে দেবার মত ঈদ মার্কেট করে রুপকে বলে ,এবার অনেকদিন থাকব। বিশাল অাবার বাড়িতে গেলে মোবাইল নং বন্ধ থাকে।একমাস ঊনিশ দিন পর হঠাৎ রুপের নং এ শালের ফোন অাসে। রিসিভ করতেই ভরাট কন্ঠে একজন বললেন....। জীবন কখনোই নিয়ম মেনে চলেনা। একসিডেন্টে বিশাল বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। দেশে মাসাধিক চিকিৎসার পর ডাঃ অাতিক চৌধুরী বিদেশ নিয়ে যেতে বলেন এবং এতে প্রায় এককোটি টাকার প্রয়োজন হবে। বিশাল অংকের টাকা বিশালের পরিবার ম্যানেজ করা কোন ব্যাপার না। অরুপ ভাবনার সমুদ্রে পড়ে যায়। কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। অরুপ সিদ্ধান্ত নেই জীবন দিয়ে হলেও অামি এই সময়ে বিশালের পাশে থাকব এবং এ ঋন থেকে মুক্তি পেতে চেষ্টা করব। একটা ডিপিএস করা অাছে প্রায় ত্রিশ লাখ পাবে , বীমা কোম্পানী থেকে চল্লিশ লাখ পাবে,অারো ৩০/৪০ লাখ প্রয়োজন হবে। জীবনের প্রয়োজনে মানুষকে কখনো কখনো হার মানতে হয়।যে প্রীতির সাথে অরুপের চ্যালেন্জ ছিল সে প্রীতির কাছে অাত্নসমর্পনের সিদ্ধান্ত নেই। প্রীতি ৪০ লাখ দেই। বিদেশ পাঠানো যাবতীয় কাজ সমাপ্ত হওয়ার পর অরুপ বিশালের বাড়িতে ফোন করে বলে বিশাল কোম্পানীর কাজে দুই মাসের জন্য বিদেশ যাচ্ছে। অরুপের কাছে প্রীতির দু'টি পান্ডুলিপি ছিল। প্রীতির পান্ডুলিপি প্রকাশনীতে জমা দেয়। বই প্রকাশ করে প্রকাশনী। কি অপূর্ব ভাষা শৈলিতে পাঠক পাঠিকা বিমুগ্ধ হয়। সংবাদ শিরোনামে উঠে অাসে প্রীতির নাম। অালোড়ন পড়ে যায় সারা দেশ ব্যাপী। প্রিতির যে মোবাইল নং দেওয়া হয় সে নং বন্ধ। প্রীতির ছবি চ্যানেলে দেখানো হয়। বইটি প্রকাশে যার ভূমিকা ছিল অগ্রগন্য প্রকাশক ছুটে অাসে। কিন্তু না অরুপকেও পাওয়া যায় না। বাকী যাকিছু সবকিছুউ উইল করে যায় প্রীতির নামে।ওদিকে উন্নত চিকিৎসার কল্যানে বিদেশ হতে সুস্থ হয়ে ফিরে অাসে বিশাল। ইতিহাসের ভিতর ইতিহাস গড়ে। একটি ডাইরী তুলে দেয় বিশালের হাতে। সবকিছুই সহজ সরল ভাষায় লিপিবদ্ধ করে দেয়।প্রীতি বিশাল পোলক একত্রিত হয়। ততক্ষনে রুপ নিরুদেশ। বিশালের ধারনা পরিস্কার হয়েছে মহত্বের ভিতরে ত্যাগের দৃষ্টান্ত যুগেযুগে এভাবেই রচিত হয়। যে হারিয়ে যায় তাকে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিন্তু যে পালিয়ে যায় তাকে ধরা কঠিন। তবু জল স্থল অন্তরীক্ষে অামি শাল লক তোমাকে খুঁজে বের করবই । জীবন সংক্ষিপ্ত জানি । এই সংক্ষিপ্ত জীবনে তোমার দেখা না পায় তবু তোমার মুখোমুখি হবার সাধনা থাকবে নিরন্তর। প্রয়োজন যেমন তোমাকে পরাজিত করেছে তেমনি অনুশোচনাও একদিন তোমাকে অামাদের মাঝে ফিরে অানবে। তুমি গ্রহনের মাঝে অানন্দিত না ত্যাগের মাঝে তোমার মূল্যায়ন। গোলাকার পৃথিবীর সীমান্ত ভেদ করে তো অার চলে যেতে পারবে না। পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে অামাদের বন্ধুত্বের পর্যবেক্ষনী চোখ বসিয়ে রাখব। তুমি পালিয়ে যেতে পার ভীরুর মতো অামরা হারিয়ে যেতে দিবনা বীরের মত। 01813782573
©somewhere in net ltd.