নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অন্ধ মায়ের ভালোবাসা
অনিকেত কামাল
অাবীর বংশের একমাত্র সন্তান। অাবীরের পিতা অাব্বাস খান তিন ভাই হওয়া সত্ত্বেও কোন ভাইয়েরর ছেলে সন্তান ছিল না। অাবীর ছোটবেলা থেকেই প্রখড় মেধাবী। ভাগ্য স্রষ্টার অপার দয়া কলারশিপ নিয়ে ১৯৯৯ সালে জাপান চলে যায় অাবীর। চার বছর পর দেশে এলে মায়ের অনুরোধ রাখতে বিয়েতে মত দেন। মাকে বলেন অাম্মু তোমার কথা রাখব কিন্তু অামার পছন্দ মতো মেয়েকে বিয়ে করব। মায়ের অাশা ছিল মামাতো বোনের সাথে বিয়ে দিবেন। ছেলের খুশির জন্য মা বললেন , খোকা মনে মনে তাহলে কি কাউকে পছন্দ করে রেখেছিস । কই কখনো তো বলিছনি বাবা মা তুমি যা ভাবছ সেটা না। তোমার সন্তান দেশের একজন রত্নমানিক হয়ে কি যাকে তাকে বিয়ে করতে পারে। মা মিস্টি হেসে বললেন ও তাই বল।
বিয়ের কথা শুনে অত্র এলাকার মেয়ে পক্ষের লোকজন হুমড়ি খেয়ে অাবীরের বাড়িতে অাসতে শুরু করল। শহরের বিশিস্ট নামজাদা ব্যবসায়ী খান অারিফ চৌধুরীর মেয়ের সাথে বিয়ে হয়ে। খুব ভালো চলছিল সবকিছু। ধনীর অাদরের দুলালী সিনথিয়া সব কিছু তার মনের মতো করে নিতে পারছিল না। অাধুনিকতার রঙ মেখে সে চলতে চাই। অাবীরকে বিদেশ থেকে এককারে দেশে চলে অাসতে বলে অাবীরের মা। সিনথিয়ার চলাফেরা অাবীরের মায়ের ভালো লাগে না। বেশির ভাগ সময় এখানে সেখানে ফোনে কথা বলে। ঘুরতে বেড়ায় বন্ধু বান্ধবের বাসায় যায়। অাাবীরের মা বৌমাকে ছায়ার মতো রাখতে চাইলেও সেটা সম্ভব হয়না। বাধ্য হয়েই মা অাবীরকে বলল খোকা তোর বিদেশ থাকতে হবেনা অামার শরীটা ভালো যাচ্ছে না। তুমি চলে এসো। মায়ের কথা অাবীর শ্রষ্টার বাণীর মতই অলঙ্ঘনীয় মনে করেন। অাবার চলে অাসে দেশে।
জীবন সংসার অাবীর মনের মতো না হলে অাবীর মানিয়ে চলার মতো একজন অাদর্শবাদী মানুষ। সময় গড়িয়ে চলে সময়ের মতো করে। অাবীরের মনে প্রশ্ন দেখা দেয় মেয়েরা কি অাসলেই লোভী । বিলাসী জীবনের রং হালকা হলে ভালো থাকতে পারেনা। সংসার জীবন অালোকিত করে অাসে পুত্র সন্তান নয়ন। সময় সবার জীবনে সব সময় এক রকম থাকে না। অাবীর বুঝতে পারে সে জীবন সংসারে ধীরে ধীরে হেরে যাচ্ছে। বিয়ের পর সংসারে মায়ের অাসন বাঙালী পরিবারে কেন এলেমেলো হয়ে যায়। চাইলেও কেন মনের মতো হয় না। এটা কি অামাদের অক্ষমতা নাকী স্ত্রীর প্রতি অামাদের গভীর ভালোবাসা অার বিশ্বাসের পরিমাণ বেশি দেওয়া । মা তো মাই।মায়ের তুলনা শুধুই মা।
সময়ের ধারাবাহিকতায় জীবনের ধারা কখনো কখনো এমন হয়ে যায়ে যে পরিস্থিতি ভাবনার বাহিরে চলে যায়। সবকিছু লাগাম ধরে রাখার পরিস্থিতিও অায়ত্তের বাহিরে চলে যায়। বউ তাকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে । মাকে যদি বৃদ্ধাশ্রমে না রেখে অাসা হয় সিনথিয়া অার তার সাথে সংসার করবেনা।
এখন অাবীর প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছে নিজের মরে সাথে। কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। যে মা তার কাছে জান্নাত সেই মাকে কি করে কষ্ট দিব। গভীর রাতে পৃথিবী ঘুমিয়ে গেলে অাবীর স্রষ্টার দরবারে সিজদায় পড়ে যায়। বৃদ্ধা মায়ের জন্য স্ত্রীর পায়ে ধরে বলে তুমি একটা মাস সময় দাও। স্ত্রীর এককথা হলে ও শেষ বারের মতো অাবীর সবকিছু ঠিক রাখার জন্য চেষ্টা করে । সত্যিই অাল্লাহ কত মহান । মা ২৩ দিন পরেই দুনিয়া ছেড়ে চলে যায়।
জীবন সুখের জন্য চির লালায়িত হলেও কারো কারো জীবনে সুখ অধরাই রয়ে যায়। অামার জীবনটা ব্যতিক্রম। উথ্যান পতনের লীলাখেলা।
মায়ের মৃত্যুর পর প্রতিদিন লুকিয়ে লুকয়ে মায়ের ঘরে গিয়ে অাবীর কান্না করে। মায়ের কবরে গিয়ে কান্না করে । কান্নাই হয়ত অাবিরের সান্ত্বনা। মায়ের চলে যাবার পরেও অাবীরের সংসারে সুখ ফিরে অাসেনি । স্ত্রীর বিলাসী জীবনের চাহিদা পূরনে ঘাতটি অাসায় স্ত্রীও তাকে ছেড়ে চলে যায় । এ সে ভাবল এখন থেকে মায়ের ঘরে থাকবে এজন্য মায়ের ঘর গোছাতে গিয়ে তোষকের নিচে একটা চিঠি পায়।
তাতে লিখা ছিল।
কোন সন্তানের উপর মায়ের কোন অভিযোগ থাকে না। অামারও নেই । একটা সত্য তোকে বলি । অামার জন্য সমাজে তোর সম্মানের উপর মানসিক কষ্ট অাসে অামি বুঝি । এজন্য অামি ইচ্ছে করে অভিভাবক হিসেবে তোর সম্মানের জায়গায় যখন অামাকে সম্মানিত করতে কোন সামাজিক মাধ্যমে ডাকা হতো অামি যেতাম না। যেহেতু তোর বাবা নেই তাই মাঝ্মোঝে যেতাম অনিচ্ছা সত্ত খোকা জানিস অাজ অামি অন্ধত্বের কলংক নিয়ে অন্য জগতের বাসিন্দা । ১২ বছর বয়সে তুই যখন গাছ থেকে পড়ে গিয়ে চোখ নষ্ট হয়েগিয়েছিল অামি ই তোকে একটা চোখ দিয়েছিলাম তেুই কোনদিন জানতেও চাসনি মা তুমি ,,,,,,
মা মারা যাওয়ার কিছু দিন পর,,, মায়ের ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে মায়ের হাতের লেখা একটি চিঠি পায় তার একমাত্র ছেলে,।
চিঠিতে লেখা ছিল,,, খোকা, এই চিঠি যখন তোর হাতে পড়বে তখন আমি তোর কাছ থেকে অনেক দুরে চলে যাবো,,, যেখান থেকে কেউ কোনো দিন ফিরে আসে না,।
খোকা, তোর অনেক কথাই মনে নেই,,, তাই এই চিঠিতে লিখে গেলাম তোর মনে না থাকা সেই কথা গুলি,,,,। তুই যখন ছোট্ট ছিলি একবার তোর জ্বর এসেছিলো,,, আমি তিন রাত ঘুমাতে পারিনি তোকে বুকে নিয়ে বসে ছিলাম,,, কারন তোকে বিছানায় শোয়ালেই তুই কেঁদে উঠতি,,,।
তোর বাবা আমাকে বলেছিলো তোকে শুইয়ে রাখতে কিন্তু আমি পারিনি...! সে জন্য আমাকে অনেক কথা শুনিয়েছিলো তোর বাবা,,,।
তোকে যখন রাতে বিছানায় শোয়াতাম,,,, তুই প্রশ্রাব করে বার বার বিছানা ভিজিয়ে ফেলতি তখন আমি তোকে আবার শুকনো জায়গায় শোয়াতাম,,, আর আমি তোর প্রশ্রাবে ভেজা জায়গায় শুয়ে থাকতাম,,,।
তোর বাবা যখন মারা গেলো,,, তখন অনেক কষ্টে আমাকে সংসারটা চালাতে হয়েছিলো,,, একটা ডিম ভেজে দুই টুকরো করে তোকে দু'বেলায় দিতাম,,, এমনও দিন গেছে শুধু লবন দিয়ে ভাত খেয়েছি আমি,,, কিন্তু তোকে বুঝতে দেই নাই আমি,,,। একদিন রান্না করার মতো কোনো চাল ছিলো না ঘরে,,, তখন কোনো উপায় না পেয়ে একবাড়িতে কাজ করে কিছু চাল এনে ভাত রেঁধে খাইয়েছিলাম তোকে,,,।
হয়তো তুই ভুলে গেছিস,,, যখন তোর HSC পরিক্ষিার ফি দিতে পারছিলাম না তখন তোর বাবার দেয়া শেষ স্মৃতি নাকফুলটা বিক্রি করে দিয়েছিলাম,,, আরো অনেক কথা আছে যা লিখতে গেলে হয়তো খাতা শেষ হয়ে যাবে,,, কিন্তু লেখা শেষ হবে না,,,।
ভাবছিস এতো কথা তোকে কেন লিখে গেলাম,,, খোকা তুই যখন বড়ো হলি একটা ভালো চাকরি পেলি,, এর কিছুদিন পরে বিয়ে করলি,,, তখন আমি তোদের নিয়ে ভালোই ছিলাম,,,।
মনে আছে খোকা..? একদিন ঘর থেকে কিছু টাকা চুরি হলো,,, সেদিন তুই আমাকে জিগ্যেস করেছিলি আমি তোর টাকার ব্যাপারে কিছু জানি কি না,,, তুই আমাকে সরাসরি কিছু না বললেও আমি বুঝতে পেরেছিলাম তুই আমাকে চোর ভেবেছিলি,,,।
এর কিছুদিন পর তুই আমাকে চোরের অপবাদ দিয়ে অন্য একটি ঘরে রেখে দিলি,,,। খোকা আমার সেই ঘরটিতে থাকতে অনেক ভয় করতো,,, কারন ঘরটি তোদের কাছ থেকে অনেক দুরে ছিলো,,, খোকা তোকে একদিন বলেও ছিলাম আমার একা একা থাকতে ভয় লাগে,,, তুই বলেছিলি মরন আসলে যে কোনো যায়গায় আসবে,,,,।
আমার হাঁটুর ব্যাথাটা বেড়ে ছিলো তাই তোকে বলেছিলাম খোকা, আমাকে কিছু ঔষদ কিনে দিবি,,, তুই বলেছিলি এই বয়সে ঔষধ খাওয়া লাগে না,,, এমনি এমনি ঠিক হয়ে যাবে,,,। খোকা বিছানা থেকে উঠতে পারতাম না,,, শরীরে ফোসকা পড়ে গিয়েছিলো,,, শরীর থেকে পঁচা গন্ধ আসতো,,,
কতো দিন যে স্নান করিনি তা ঠিক বলতে পারবো না,,, খোকা তোর ঘরটা ছিলো আমার ঘরের থেকে অনেক দুরে,,, কখন আশিস কখন চলে যাস আমি কিছুই দেখতে পারতাম না,,, তবুও পথের দিকে তাকিয়ে থাকতাম,,, খোকা, তুই যখন ছোট ছিলি আমি খেতে বসলে তোকে কোলে নিয়ে খেতে বসতাম,,, তবুও কখনো তোকে চোখের আড়াল হতে দিতাম না...।
খোকা, যখন তুই আমার কোলে পায়খানা করে দিতি,,,তোর পায়খানা পরিস্কার করতে আমার একটুও ঘৃনা লাগতো না,,, কিন্তু তুই যখন আমার কাছে আসতি তখন নাকে রুমাল দিয়ে আসতি,, ক্যানোরে খোকা আমার শরীর দিয়ে গন্ধ আসতো বলে,,,? এক কাপড়ে আমাকে কতো মাস যে থাকতে হয়েছে তা আমি ঠিক বলতে পারবো নারে, খোকা,,,।
তুই যখন অনেক দিন পর একবার আমাকে দেখতে এসেছিলি আমার খুব ইচ্ছে ছিলো তোকে বুকে জড়িয়ে ধরি কিন্তু খোকা পারিনি তোকে বুকে জড়িয়ে ধরতে,,,কারণ, আমার শরীরে তো অনেক ময়লা ছিলো,,, তাতে যদি তোর দামি সার্ট প্যান্ট নষ্ট হয়ে যায় এই ভয়েতে তোকে বুকে নিতে পারিনি সেদিন,,,।
খোকা কখনো আমাকে একবারও জিগ্যেস করিসনি, মা তোমার কিছু খেতে মন চায়,,,খাওয়ার কথা থাক,, কতদিন যে তোর মুখে মা ডাক শুনিনি,, তাও ঠিক বলতে পারবো না,,,।
খোকা, আমার কি অপরাধ ছিলো,,, যে আমাকে তোর কাছ থেকে অনেক দুরে রাখলি,,, খোকা, তুই কি পারতি না আমাকে তোর কাছে রাখতে,,,? খোকা তুই কি পারতি না,, আমাকে একটা কাপড় কিনে দিতে,,,,? খোকা, তুই কি পারতি না,, আমাকে একটা ডাক্তার দেখাতে,,,?
আমাকে একটা ডাক্তার দেখালে হয়তো এই পৃথিবীতে আরো কিছুদিন থাকতে পারতাম,,, খোকা, কোনো মা তার সন্তানের কাছে পেট ভরে খেতে চায় না,,, শুধু মন ভরে *_মা_* ডাক শুনতে চায়,,, যা তুই কখনোই বুঝতে চাসনি,,,।
খোকা তোকে একটি শেষ অনুরোধ করছি,, আমার এই চিঠিটা তোর সন্তানদের পড়ে শোনাবি,,, কারণ, তুই বৃদ্ধ হলে তোর সাথে তোর সন্তানেরা যাতে এরকমটি আর না করে,,,,।
ভালো থাকিশ খোকা,,,,,।
ইতি,,,,,,,,,,,,,
তোর,,,,,,, মা,,
হয়ত: গল্প ...! কিন্তু পড়তে গিয়ে কতবার যে কেঁদেছি তার কোন হিসেব নেই...!
তাই বলছি...প্লিজ, শেয়ার করুন... সবার জানা দরকার...যাতে এমন ভুল আর কেউ না করে...!
*মা*
আপনাকে অ-নে-ক ভালোবাসি..!
লেখাটি কপি করে এনেছি । ভীষণ কষ্ঠ হচ্ছে। এই লেখা পড়ার অাগে বিশ্ব মানবতার অাগে মৃত্যু হওয়া উচিত ছিল । হদয় বিদারক কাহিনী । কিন্তু কথা হচ্ছে ফেসবুকে সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য অনেকে পোস্ট করে থাকেন এই ধরণের লেখা পোস্টের অাগে নাম ঠিকানা মোবাইল নং বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা উচিত । এসব ঘটনা অামরা চাই একশত ভাগ সত্য হোক । অার অামরা সামাজিক নেটের মহান প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে মানবতার মহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারি কিনা!!!
আজ ঢাকা থেকে রাজশাহী বাড়ি ফির চালাম দেখি একটি বৃদ্ধা মহিলা বাসের জানালা দিয়ে মুখ বাহির করে কাদছে আর বুলছে বাবু আমাকে কতি পাঠাচ্ছিস আমাকে নিয়ে যা ,বাবু আমাকে নিয়ে যা বাপ ,আর কাদছে ।আমি বাসে তার সিটে যেয়ে বসলাম,তোতো খুনে বাসছেড়ে দিয়েছে।দেখি বৃদ্ধা মহীলা টি কেদেই চলেছে।আমি ওনাকে শান্তো করার চেষ্টা করলাম অনেক খুন পর মহিলা টি আমাকে বুললো বাবা পানি হবে ?আমি বললাম মা আমিতো রোজা আছি মা সামনে কথায় গাড়ি থামুক আমি পানি এনে দিচ্ছি।আমি বৃদ্ধাকে জিগাশা করলাম বাবু কে ?সে যেটা বুললো সেটা শুনে আমি পুরা টাসকি খেয়ে গেলাম বাবু আর কেউ নোয় তার ছেলে।তাকে ডাক্তার দেখানার নাম করে বাসে উঠিয়ে পালিয়েছে।ছেলের বউ তাকে অত্যাচার করে প্রায় প্রতিদিন তার ছেলে কিছূ বুলে না তাকে বাহিরে শুতে দেয়।খাবার বেলা সকালে ১টা বিস্কট দুপুরে এক গাল ভাত রাতে একটি রুটি।বাড়ির ভিটা টা তার নামে ছিল ৫ দিন আগে সেটা লিখিয়ে নিয়েছে ।তাই তার ছেলে তাকে এখানে বাসে তুলে পালিয়েছে।একটি পামপে গাড়ি থামলো আমি পানি আনতে গেলাম পানি নিয়ে এসে বৃদ্ধা কে জিগাসা করলাম আপনাকে যদি আমি একটি বৃদ্ধা শ্রমে রেখে আশি থাকবেন ?সে বুললো হু ।তাকে রাজশাহির একটি বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসলাম।
২| ১৫ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: আমার মা আমাকে এই ঈদে একটা দশ হাজার টাকা দিয়ে জুতো কিনে দিয়েছে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই জুন, ২০১৮ রাত ৮:২২
সনেট কবি বলেছেন: ঈদ মোবারক।