নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবাই ভালো থাকুন

এ আর ১৫

এ আর ১৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শারিয়ার রজম (প্রস্তরাঘাতে মৃত্যুদণ্ড)

২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:০২

ব্যভিচার কি ? ব্যভিচার বা পরকীয়া হলো যার সাথে বিয়ে হয়নি তার সাথে অবৈধ দৈহিক সম্পর্ক। পশ্চিমের আইনে নর-নারী রাজি থাকলে পরকীয়া অপরাধ নয়, তাই সেখানে আজকাল পরকীয়া খুব বেড়ে গেছে। এর ফলে পশ্চিমে পারিবারিক বন্ধন নষ্ট হবার পথে। কোরাণে ব্যভিচারকে বর্জন করার সুস্পষ্ট নির্দেশ আছে (সুরা বনি ইসরাইল ৩২, মুমতাহানা ১২, ইত্যাদি)।- ব্যভিচারিণীদের শাস্তি হিসেবে বলা আছে আজীবন ঘরে বন্দি রাখতে অথবা আলাহ অন্য কোন পথ নির্দেশ না করা পর্যন্ত − সুরা নিসা, আয়াত ১৫।- আর আছে ব্যভিচারী নারী-পুরুষকে একশ’ করে চাবুক মারতে − সুরা নূর, আয়াত ২।- অথচ শারিয়া আইনে আছে বিবাহিত বা বিবাহিতা অপরাধীর শাস্তি জনগণের সামনে পাথরের আঘাতে মৃত্যুদণ্ড, যাকে রজম বলা হয়। আর যার বিয়ে হয়নি তাকে একশ’ চাবুক − (সূত্র : হানাফি আইন হেদায়া পৃষ্ঠা ১৭৮, বিধিবদ্ধ ইসলামি আইন ১ম খণ্ড, ধারা ১২৯, পাকিস্তানের হুদুদ আইন ৭-১৯৭৯, অর্ডিন্যান্স ২০-১৯৮০ দ্বারা পরিবর্তিত, আইন নম্বর ৫ (২)-এর “অ” ইত্যাদি). অর্থাৎ এ-আইন কোরাণকে লঙ্ঘন করেছে।

অনেকে এ-আইনের সমর্থনে হাদিস পেশ করেন মিশকাত (২৬ অধ্যায়ের ১ম পরিচ্ছেদ) আর সহি বোখারী থেকে (হাফেজ মহাম্মদ আবদুল জলিল সম্পাদিত বাংলায় বোখারি শরীফের মোটামুটি হাদিস নম্বর ১২৩৪ থেকে ১২৪৯ পর্যন্ত, মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসিন খানের অনুবাদ ও মওলানা আজিজুল হক সাহেবের অনুবাদ ২৬৮ নম্বর হাদিস)। –সব হাদিসে বলা আছে, নবীজী বিবাহিত/তা-দের মৃত্যুদণ্ড, আর অবিবাহিত/তা-দের একশ’ চাবুক ও এক বছরের নির্বাসন দিয়েছিলেন।

তাহলে আমরা দেখছি, কোরাণের আয়াতের সাথে হাদিসগুলো মিলছে না। কেন এমন হচ্ছে ? তাহলে নবীজী কি সুরা নূর নাজিল হবার আগে পরকীয়ায় বিবাহিত/তা-দের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন ? এ-প্রশেড়বর জবাব আছে ১২৪২ নম্বর হাদিসে, সাহাবী বলেছেন তিনি তা জানেন না। আমরা ধরে নিতে পারি যে নবীজী রজম করে থাকলে এ-সব আয়াত নাজিল হবার আগেই করেছিলেন, পরে নয়। কেননা পরে করলে তা কোরাণের বিপক্ষে যেত, সেটা সম্ভব নয়।

এবারে একটা বিখ্যাত হাদিস দেখা যাক। সহি বোখারি হাদিস ১২৩৭, ১২৩৮, ১২৩৯, এবং মিশকাত ২৬-এর ১ (“মুসলিম জুরিসপ্র“ডেন্স অ্যাণ্ড দ্য কোরাণিক ল’ অফ μμাইম্স্” থেকে) হাদিস থেকে আমরা দেখি :

মায়াজ নামের সাহাবি নবীজীকে বলল তাকে পবিত্র করতে।
নবীজী তাকে হাঁকিয়ে দিলেন এই বলে − দূর হও, অনুতাপ কর ও ক্ষমা চাও।
মায়াজ ফিরে গিয়ে আবার ফিরে এসে একই কথা বলল। নবীজী একই কথা বললেন।
তিনবার এটা ঘটার পর নবীজী জিজ্ঞেস করলেন − ব্যাপার কি। মায়াজ বলল সে
ব্যভিচার করেছে।
তারপর নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন, মায়াজ কি পাগল ? নেশা করেছে ? লোকেরা বলল, না।
নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন − মায়াজ কি বিবাহিত ? লোকেরা বলল, হ্যাঁ।
তখন নবীজী তাকে পাথর মেরে হত্যা করতে নির্দেশ দিলেন।
এ-হাদিস সত্যি হলে নবীজী অন্তত তিনবার তাকে অনুতাপ-ক্ষমার দিকে ঠেলেছেন, শাস্তি এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেছেন, শেষে একান্ত বাধ্য হয়েই রজম ঘোষণা করেছেন। শারিয়ার আইনে এই সুনড়বত মেনে কোন ‘অপরাধী’-কে তিনবার ফিরিয়ে দেয়ার নিয়ম নেই। পাগলামি বা নেশার কথা জিজ্ঞেস করাও নেই। আমরা জানি মানুষ ভ্রান্তিময়, অপরাধ এক হলেও সব অপরাধী এক হয় না। একই অপরাধ কেউ করে অভাবে, কেউ করে স্বভাবে, খাসলতে। একই অপরাধ কেউ করে উত্তেজনার গরম মাথায়, কেউ করে পরিকল্পনা করে ঠাণ্ডা মাথায়। সে-জন্যই একই অপরাধের সর্বদা একই শাস্তি হতে পারে না। অথচ শারিয়ার হুদুদে ঠিক তাই’ই হয়, হঠাৎ-অপরাধ ও খাসলতের অপরাধে বিচারককে একই শাস্তি দিতে হয়, তাঁর হাত-পা বাঁধা থাকে।

লোকেরা মায়াজকে পাথর মারা শুরু করতেই ব্যথার চোটে হতভাগার মনে হল যে পবিত্র হয়ে এখনই পটল তোলার চেয়ে তওবা টওবা করে আরও কিছুদিন বেঁচে থাকাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। লেজ তুলে সে দিল দৌড়। কিন্তু লোকেরা ওকে ধরে মেরে ফেলল। এঘটনা শুনে নবীজী কি বললেন ? কি করলেন ? মৃদুকণ্ঠে উচ্চারিত হল তাঁর লিখিত আইন ভাঙ্গা অলিখিত আইন − “লোকটাকে তোমরা যেতে দিলে না কেন ?” − মিশকাত ২৬-এর ১, সহি ইবনে মাজাহ ৪র্থ খণ্ড হাদিস ২৫৫৪ ও সহি সুনান আবু দাউদ হাদিস ৪৪০৫ ও ৪৪০৬ . এই হলেন রহমতুলিল আল্ আমিন, এই হল ভ্রান্তিময় অনুতপ্ত মানুষের প্রতি তাঁর অগাধ দরদ, অসীম ক্ষমা। তাঁ র গভীর অন্তদৃর্ িষ্ট শুধ ু শাস্তির দিকেই নয়, ক্ষমার দিকেও। স্বভাব-অপরাধীর খাসলত আর ভালো মানুষের হঠাৎ পা পিছলে যাবার মধ্যেকার বিরাট ফারাকটা জানেন বিশ্বনবী।

আবার কোরাণে ফিরে আসি। সুরা নিসা, আয়াত ১৬ : “তোমাদের মধ্য হইতে যেই দুইজন সেই কুকর্মে লিপ্ত হয়, তাহাদিগকে শাস্তি প্রদান কর। অতঃপর যদি উভয়ে তওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করে, তবে তাহাদের হইতে হাত গুটাইয়া নাও।”

কোথায় পাথর, কোথায় মৃত্যুদণ্ড ? মেরে ফেলার পর তার লাশ কি তওবা করবে নাকি, নিজেকে সংশোধন করবে নাকি ? এর চেয়েও কঠিন প্রমাণ আছে কোরাণে : সুরা নিসা, আয়াত ২৫ − দাসী-স্ত্রী পরকীয়া করলে তাকে “স্বাধীন-নারীদের অর্ধেক শাস্তি” দিতে হবে। এ-আয়াতের ব্যাখ্যায় শারিয়াপন্থীরা বলেন স্বাধীন নারী মানে স্ত্রী নয়, অন্য অবিবাহিতা নারী যাকে একশ’ চাবুক মারার বিধান আছে। কিন্তু চাবুক মারার আয়াত আছে তো সব ব্যভিচারীর বেলায়। আয়াতটা পড়ে দেখুন, স্পষ্ট বোঝা যায় দাসী নয় এমন নারীকে বিয়ে করা স্ত্রীর কথাই বলা হচ্ছে। তাকে মৃত্যুদণ্ড দিলে দাসী-স্ত্রীর কি শাস্তি হবে ? মৃত্যুদণ্ডের তো অর্ধেক হয় না।

আসলে পরকীয়ার মৃত্যুদণ্ডের বিধান এসেছে ইহুদী-কেতাব ডিউটেরোনমি থেকে। “যদি কাহাকে অন্য লোকের স্ত্রীর সহিত বিছানায় দেখা যায় তবে তাহাদিগকে মরিতে হইবে … তখন তোমরা উহাদিগকে নগরের ফটকে লইয়া আসিবে এবং পাথর দ্বারা আঘাত করিবে যাহাতে তাহারা মরিয়া যায় …।”

শারিয়ার পক্ষে হজরত ওমরের নামে বিখ্যাত এক হাদিস আছে, সহি মুসলিম ২য় খণ্ডের ৬৫ পৃষ্ঠাতে (মুহিউদ্দীন খানের বাংলা-কোরাণ, পৃষ্ঠা ৯২৬) আর সহি বোখারী ১২৪৩ ও ১২৪৯ (হাফেজ আবদুল জলিল), বোখারী ৮ম খণ্ড হাদিস ৮১৭ (ডঃ মুহসিন খান, মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়) এবং ইবনে হিশাম/ইশাক -৬৮৪ পৃষ্ঠায় : “আলাহতালা যাহা নাজেল করিয়াছেন তাহার মধ্যে রজমের আয়াতও রহিয়াছে … রসুলুলাহ (দঃ) রজম করিয়াছেন তাই আমরাও তাঁহার পরে রজম করিয়াছি … রজমের আয়াত পাঠ মনসুখ (বাতিল) হইয়া গিয়াছে কিন্তু হুকুম ও বিধান চালু রহিয়াছে।” কিন্তু সেই বাতিল আয়াতটা কি ? কোথায় সেটা উধাও হল ? আয়াতটা হল -“কোন বয়স্ক নর ও নারী ব্যভিচার করিলে তাহাদিগকে পাথর মারিয়া হত্যা কর” − সহি ইবনে মাজাহ্ ৪র্থ খণ্ড হাদিস নং ২৫৫৩। কিন্তু এর মধ্যে ফাঁক আছে। কারণ আইন বাতিল হলে তার শাস্তি চালু থাকতে পারে না। আয়াতটা কোথায় উধাও হল তা লেখা আছে ইমাম হাম্বলের দলিলে আর সহি ইবনে মাজাহ ৩য় খণ্ড হাদিস নং ১৯৪৪-এ। এ-এক মারাত্মক হাদিস, দেখুন − “বর্ণিত আছে যে বিবি আয়েশা (রাঃ) বলিয়াছেন, “রজমের আয়াত নাজিল হইয়াছিল। অবশ্যই ইহা একটি কাগজের উপরে লিখা হইয়াছিল যাহা আমার কুশনের নীচে রাখা ছিল। রসুল (দঃ)-এর ইন্তেকালের পর আমরা যখন তাঁহার সৎকার করিতে ব্যস্ত ছিলাম তখন একটি গৃহপালিত ছাগল ঘরে ঢুকিয়া উহা খাইয়া ফেলে।” এর ফটোকপি দেয়া হলো।





বিশ্ব-মুসলিমের জন্য এ-এক মারাত্মক হাদিস। কারণ সুরা হিজ্র্, আয়াত ৯-এ আলাহ সুস্পষ্ট বলেছেন − “আমিই এই উপদেশগ্রন্থ নাজিল করিয়াছি এবং আমিই উহা সংরক্ষণ করিব।” আলাহ পাক-এর কালাম ছাগলে খাওয়া ছাড়াও এ হাদিস আরও এক ভয়াবহ সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তা হলো, নাজিল হওয়া আয়াত কোরাণে নেই। অন্যান্য আয়াত বাতিলের হাদিসও আছে, বুখারী ৪র্থ খণ্ড ৬৯. কিন্তু কে কবে কোথায় আলাহর কালাম বাতিল করল কেন ও কোন্ অধিকারে করল তার দলিল পাওয়া যায়নি।

এবারে কোরাণ থেকে শেষ প্রমাণ। সুরা আন-নূর, আয়াত ২৬ ও ৩ : “দুশ্চরিত্রা নারীরা দুশ্চরিত্র পুরুষদের জন্য ও দুশ্চরিত্র পুরুষরা দুশ্চরিত্রা নারীদের জন্য … ব্যভিচারী পুরুষ কেবল ব্যভিচারিণী নারী বা মুশরিকা নারীকেই বিবাহ করে এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী বা মুশরিক পুরুষই বিবাহ করে।”

অর্থাৎ ব্যভিচারী পুরুষ-নারীকে মৃত্যুদণ্ড দিলে তাদের লাশের সাথে লাশের বিয়ে দিতে হয়। সেটা সম্ভব নয়। কোরাণ একেবারে নীরব হলেও নাহয় কথা ছিল, যে কোন আইন বানাবার সুযোগ ছিল। কিন্তু কোরাণে তো ব্যভিচারীদের বিয়ের কথা বলা আছে। আরও একটা অকাট্য প্রমাণ দেখুন। সারা জীবন এত কষ্ট করে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার পর মুসলমানের প্রতি স্বয়ং নবীজীর সর্বশেষ নির্দেশ কত গুরুত্বপূর্ণ ! সেই বিদায় হজ্ব-এর ভাষণে তিনি বলেছেন, “স্ত্রী অশীল কর্মে অর্থাৎ জ্বেনায় লিপ্ত হইলেই কেবল তাহাকে হালকা মারধর করা যাইবে, মারাত্মকভাবে নয়” − বিধিবদ্ধ ইসলামি আইনের ৩য় খণ্ড ৮৫২ পৃষ্ঠা। না, ব্যাভিচারিণীর মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেননি আলার রসুল। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর নির্দেশ উপেক্ষা করে, কোরাণের নির্দেশ উপেক্ষা করে শারিয়ায় অনেক আইনের মত এ আইনও ঢোকানো হয়েছে।
পরকীয়া একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু শারিয়া আইনে যে মৃত্যুদণ্ড আছে তা কোরাণের খেলাফ ॥

লেখক পরিচিতি

হাসান মাহমুদ

[email protected]
http://www.hasanmahmud.com/

In SHARIAKIBOLE.COM it is written as:-

সদস্য – ওয়ার্ল্ড মুসলিম কংগ্রেস উপদেষ্টা বোর্ড
সাধারণ সম্পাদক- মুসলিমস ফেসিং টুমরো- ক্যানাডা
রিসার্চ এসোসিয়েট- দ্বীন রিসার্চ সেন্টার, – হল্যান্ড
প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, আমেরিকান ইসলামিক লিডারশীপ কোয়ালিশন
ক্যানাডা প্রতিনিধি, ফ্রি মুসলিমস কোয়ালিশন
প্রাক্তন ডিরেক্টর অফ শারিয়া ল’ ও প্রেসিডেন্ট, মুসলিম ক্যানাডিয়ান কংগ্রেস

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:১৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


পাথর মারা কথা যারা বলে, সেসব পাথরের যুগের লোকদের পায়ুপথে পাথর ঢুকানো হবে।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৯

এ আর ১৫ বলেছেন: ভাই কথাটা একটু বেশি কড়া হয়ে গেল । তাদের মানুষরা চাপাতির ভাষায় কথা বলে যেটা ওনাদের মানায় তাই বলেকি এই ধরনের কথা বোলতে হয় !!!

২| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:৪৭

অাজব জাহাঙ্গীর বলেছেন: ধন্যবাদ

২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৯

এ আর ১৫ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ !!

৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৫

আশাবাদী অধম বলেছেন: আগের পোস্টে জবাব না দিয়ে পুরাতন লেখা ক'দিন পরপর রিপোস্ট দিবেন। তাও লেখক যে কে আর পোস্ট দাতাই বা কে আল্লাহ মা'লুম। ভালো বুদ্ধি।

৪| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৫

আশাবাদী অধম বলেছেন: আগের পোস্টে জবাব না দিয়ে পুরাতন লেখা ক'দিন পরপর রিপোস্ট দিবেন। তাও লেখক যে কে আর পোস্ট দাতাই বা কে আল্লাহ মা'লুম। ভালো বুদ্ধি।

৫| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:০৯

আশাবাদী অধম বলেছেন:
"হযরত উমর (রাঃ) তার এক দীর্ঘ খুতবায় বলেন,নিশ্চয় আল্লহ তা'আলা মুহাম্মদ (সাঃ) কে সত্য ধর্ম দিয়ে পাঠিয়েছেন এবং তার উপর কুরআন অবতীর্ণ করেছেন।আল্লহ তা'আলা তার উপর যা অবতীর্ণ করেন তার মধ্যে রজমের আয়াতও ছিল।আমরা তা পড়েছি,মুখস্ত করেছি ও বুঝেছি।অতঃপর রাসূল (সাঃ) রজম করেছেন এবং আমরাও তার ইন্তেকালের পর রজম করেছি।আশঙ্কা হয় বহু কাল পর কেউ বলবেঃ আমরা কোরআন মাজীদে রজম পাইনি।অতঃপর তারা আল্লহ তা'আলার পক্ষ থেকে নাযিলকৃত একটি ফরয কাজ ছেড়ে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে।হযরত উমর (রাঃ) যে আয়াতের ইঙ্গিত করেছেন তা হচ্ছে,"বয়স্ক (বিবাহিত) পুরুষ ও মহিলা যখন ব্যভিচার করে তখন তোমরা তাদেরকে সন্দেহাতীতভাবে পাথর মেরে হত্যা করবে।এটিই হচ্ছে আল্লহ তালার পক্ষ থেকে তাদের জন্য শাস্তিস্বরুপ এবং আল্লহ তালা পরাক্রমশালী ও সুকৌশলী।


উক্ত আয়াতের তিলাওয়াত রহিত হয়েছে। তবে বিধান চালু রয়েছে।


আরো হাদিস দেখুনঃ
১) "হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ রাঃ হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি হযরত উমর রাঃ কে বলতে শুনেছেনঃ " লোকেরা বলে যে,তারা রজম করার কথা কুরআনে পাই না।কুরআনে কেবল চাবুক মারার হুকুম রয়েছে।জেনে রেখো যে, স্বয়ং রাসূল সাঃ রজম করেছেন,তারপর আমরাও করেছি।
" কুরআন যা নেই, উমর রাঃ তা লিখিয়ে নিয়েছেন" এ কথার ভয় যদি আমি না করতাম তবে রজমের আয়াত আমি লিখিয়ে নিতাম যেভাবে ওটা অবতীর্ণ হয়েছিল।(মুসনাদে আহমদ)


২) হযরত সাঈদ ইবনে মুসাইয়ার রাঃ হতে বর্ণিত যে, হযরত উমর রাঃ বলেছেন, " তোমরা রজমের হুকুম অস্বীকার করার ধ্বংস থেকে বেঁচে থাকো।(ইমাম আহমদ বর্ণনা করেছেন,ইমাম তিরমিযী রাঃ এটা আনয়ন করেছেন এবং বিশুদ্ধ বলেছেন)



৩) কাসীর ইবনে সালত রাঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,আমরা মারওয়ানের নিকট উপবিস্ট ছিলাম।সেখানে হযরত যায়েদ ইবনে সাবিতও ছিলেন।তিনি বলেনঃ "আমরা কুরআনে পড়তাম- বিবাহিত পুরুষ বা নারী ব্যভিচার করলে তোমরা অবশ্যই রজম করবে।" মারওয়ান তখন জিজ্ঞেস করেন," আপনি কুরআন কারীমে এটা লিখেন না যে? উত্তরে তিনি বলেনঃ আমাদের উমর রাঃ বলেন, আমি তোমাদের স্বান্তনা দিচ্ছি যে, একটি লোক একদা নবী সাঃ এর কাছে আগমন করে।সে তার সামনে এরুপ বর্ণনা দেয়।আর সে রজমের বর্ণনা দেয়।কে একজন বলে, হে রাসূল সাঃ আপনি রজমের আয়াত লিখিয়ে নিন।রাসূল সাঃ বলেন আমি তো এটা লিখিয়ে নিতে পারি না।(আহমদ ও নাসাঈ)


বিস্তারিতঃ Click This Link


এসব হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, রজমের আয়াত পূর্বে লিখিত ছিল।তারপর তিলাওয়াত রহিত হয় তবে হুকুম বাকি আছে।


হযরত উমর (রাঃ) এর হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারছি যে,আয়াতটি মানসুক বা রহিত হয়েছে।এখন এ রহিত আয়াত যদি ছাগলে খায়,তাহলে কুরআনের বিশুদ্ধতার কি পরিবর্তন আসে বলুন।রহিত আয়াত ছাগলে খেল কি গরুতে খেল এতে কি আসে যায় বলুন।মূল কুরআনের তো কোনো ক্ষতি হয় নি।এটাই কুরআনের বিশুদ্ধতার প্রমান।আর যদি ছাগলে নাও খেত,তাহলে কুরআন সংকলনের সময় হয়তো এগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হতো।এখন আপনারা হয়তো বলবেন,কুরআন কেন পুড়ানো হল?

৬| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৯:১০

গেম চেঞ্জার বলেছেন: রজমের আয়াত যদি রহিত হয় তাহলে এর পক্ষে হাদীস কিভাবে টিকে থাকে!! :| বুঝতে পারছি না। তাহলে পাথর মারার ব্যাপারটা মুফতীদের দ্বারাই প্রচলিত?

২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:০২

এ আর ১৫ বলেছেন: এটা একটা কোরান বিরুধী আইণ এবং সো কল্ড মুফতিদের সৃষ্ঠি এবং এই আইণের উৎস ---- আসলে পরকীয়ার মৃত্যুদণ্ডের বিধান এসেছে ইহুদী-কেতাব ডিউটেরোনমি থেকে। “যদি কাহাকে অন্য লোকের স্ত্রীর সহিত বিছানায় দেখা যায় তবে তাহাদিগকে মরিতে হইবে … তখন তোমরা উহাদিগকে নগরের ফটকে লইয়া আসিবে এবং পাথর দ্বারা আঘাত করিবে যাহাতে তাহারা মরিয়া যায় …।”

৭| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:৪৬

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: যে যেভাবে পারেন ব্যাখ্যা হাজির করেন। কিচ্ছু জানিনা, কিচ্ছু কমুনা...

৮| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:৫৫

শ্রাবণধারা বলেছেন: চমৎকার তথ্যভিত্তিক, যুক্তিশীল একটা পোস্ট । বিষয়টা পরিষ্কার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা । আপনার লেখা পড়ে "The Stoning of Soraya M" মুভিটার কথা মনে পড়লো ।

চাঁদগাজী ভাইয়ের সাথে একমত যারা এইসব উৎকট নিকৃষ্ট আইনের সমর্থক তাদের ডিম থেরাপীর মত করে পাথর থেরাপী দেয়া হোক, তারপর আফগানী গুহায় বা আফ্রিকার জঙ্গলে পাঠিয়ে দেয়া হোক । সভ্য পৃথিবীর উচিত নয় এই বর্বরদের জায়গা দেয়া ।

৯| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ২:০৯

পাউডার বলেছেন: প্রস্তরাঘাতে হত্যার কোন আইন কোরআনে নাই। তাহলে বর্তমান মুসলিমরা কোথায় পেলেন এই আইন?

এই আইন রয়েছে বাইবেলে (ওল্ড টেস্টামেন্ট, দ্বিতীয় বিবরণ ২২, আয়াত ২৪)ঃ এই রকম ঘটলে তুমি অবশ্যই তাদের দুজনকে নগরের দ্বারে সকলের সামনে নিয়ে এসে পাথর মেরে হত্যা করবে। ...।

এটা পরিষ্কার নবিজী কোরআন এর বাইরে কিছু বলেননি কিংবা করেননি। কিন্তু আমাদের মুসলিম আলিমরা মুখে কোরআন মানলেও আদতে বাইবেলকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।

১০| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ২:১৯

পাউডার বলেছেন: @আশাবাদী অধম - উমর, যায়েদ, আবদুর, কাসীর, সাঈদ এরা সবাই মিলে সারাজীবন চিৎকার করে বললেও কি আল্লাহর হুকুমের বিপক্ষে যাওয়া উচিৎ হবে?

৭:৪০ - নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলেছে এবং এগুলো থেকে অহংকার করেছে, তাদের জন্যে আকাশের দ্বার উম্মুক্ত করা হবে না এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। যে পর্যন্ত না সূচের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ করে। আমি এমনিভাবে পাপীদেরকে শাস্তি প্রদান করি।

৭:৪১ - তাদের জন্যে নরকাগ্নির শয্যা রয়েছে এবং উপর থেকে চাদর। আমি এমনিভাবে জালেমদেরকে শাস্তি প্রদান করি।

১১| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৭:২৯

আশাবাদী অধম বলেছেন: @পাউডার -
"উমর, যায়েদ, আবদুর, কাসীর, সাঈদ এরা সবাই মিলে সারাজীবন চিৎকার করে বললেও কি আল্লাহর হুকুমের বিপক্ষে যাওয়া উচিৎ হবে?"

উত্তর:

উমার কি চিৎকার করে আল্লাহর হুকুমের বিপক্ষে যেতে আহবান করেছেন? বরং উমার তো আল্লাহর হুকুম প্রতিষ্ঠা করতেই চিৎকার করেছিলেন। আশংকা করে বলেছিলেন-
"বহু কাল পর কেউ বলবেঃ আমরা কোরআন মাজীদে রজম পাইনি।অতঃপর তারা আল্লহ তা'আলার পক্ষ থেকে নাযিলকৃত একটি ফরয কাজ ছেড়ে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে।"
আসলেই আল্লাহ উমারের (রা) মাঝে দূরদর্শিতা দিয়েছিলেন। আপনাদের দেখেই আজ টের পাওয়া যাচ্ছে উমার (রা) এর করা ভবিষ্যতবাণী কতটা নির্মম সত্য।


(৭:৪০-৭:৪১) আয়াতের রেফারেন্স দিয়ে কি উমার কে জাহান্নামী সাব্যস্ত করলেন?
আরেকটি আয়াতও জেনে রাখলে ভালো করবেন-

৯:১০০-আর যারা সর্বপ্রথম হিজরতকারী ও আনসারদের মাঝে অগ্রগামী, এবং যারা তাদের অনুসরণ করেছে, আল্লাহ সে সমস্ত লোকদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আর তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন জান্নাত, যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত প্রস্রবণসমূহ। সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। এটাই হল মহান কৃতকার্যতা।


আরেকটি বিষয়- সাহাবীদের প্রতি ন্যূনতম সম্মান দেখাতে না পারলেও ফতেমোল্লাদের জন্য ভক্তিতে আপনাদের হৃদয় উজাড়।


এ জাতীয় লোকেরা চিৎকার করলে মনে হয় আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধে যাওয়া বৈধ হয়ে যায়।

যারা জিবরীলকে আল্লাহর বাণী নিয়ে রাসূলের (সা) নিকট আগমন করতে সরাসরি দেখেছে তারা কুরআন বুঝেনি, ইসলাম বুঝেনি। আপনাদের দৃষ্টিতে তারা ইসলামের সবচেয়ে বড় কালপ্রিট।

আর কুরআন বুঝেছে সেই সব লোকেরা যাদের সব কথা মিলে যায় ইসলাম বিদ্বেষীদের সাথে। যাদের গলায় গলায় ভাব নাস্তিকদের সাথে। যারা মূলধারার মুসলিমদেরকে মূর্খ ঠাওরায়। আলেমদেরকে উপহাসের পাত্র মনে করে।
ফতেমোল্লার (এই পোস্টের মূল লেখক) নিজের ওয়েবসাইটে তার সম্পর্কে বলা হয়েছে-

Hasan is a lifelong leader in the fields of cultural events, recitals, music, host of TV shows, actor in dramas and movies etc. He authored many songs, poems, dramas, short stories; book on history of Bengal and is an expert performer in Indian classical music concerts.

যাত্রাপালার অভিনেতা মার্কা লোকদের কথা তো অবশ্যই উমার, সাঈদ উনাদের কথার চেয়ে মূল্যবান হবে। এতে আর সন্দেহ করার কি আছে?

১২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:৩৯

সামহোয়্যার ব্লগ বলেছেন: … আমাদের দেশে কি রজম করা হয়? হয়না আমাদের দেশের সংবিধান আছে সেই হিসাবে অপরাধী র শাস্তি হবে। এখন একজন পরকীয়া কারী কে যদি একদিনের জেইল দেয় বা মৃত্যুদণ্ড তার জন্যে আমাদের জবাবদিহি করতে হবেনা। দেশে র সরকার আছেন, তিনি জবাবদিহি করবেন তবে হ্যা আমি কাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছি তার জবাব আমাকেই দিতে হবে।

হাদীস, পালটা হাদীস দিয়ে তর্ক করে লাভ নেই।
আল্লাহ্‌ তালা কুর আনে বলেছেন: "তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কর না।"
আপনারা দেখি অনেকটা সেই রকমি করছেন।

শাস্তি কি হবে না হবে তা অনেক আগে থেকেই নির্ধারণ করা।
যেভাবে আল্লাহর রাসূল ও খেলাফত গণ করে এসেছেন সেভাবেই আমাদের করতে হবে।
রজম বিলুপ্তি করে কি করবেন?
আমি আর আপনি তো পরকীয়া করছিনা।
যারা করছে তারা ই না হয় এই নিয়ে ভাবুক!!

১৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:৫০

এ আর ১৫ বলেছেন: আশাবাদী অধম ---- আপনি কি ভালোভাবে আর্টিকেলটা পড়েছেন কি ? আপনি যে ধরনের যুক্তি নিয়ে হাজির হয়েছেন রজমের পক্ষে তার দালিলিক জবাবই দেওয়া হয়েছে এই লেখাতে -
"হযরত উমর (রাঃ) তার এক দীর্ঘ খুতবায় বলেন,নিশ্চয় আল্লহ তা'আলা মুহাম্মদ (সাঃ) কে সত্য ধর্ম দিয়ে পাঠিয়েছেন এবং তার উপর কুরআন অবতীর্ণ করেছেন।আল্লহ তা'আলা তার উপর যা অবতীর্ণ করেন তার মধ্যে রজমের আয়াতও ছিল।আমরা তা পড়েছি,মুখস্ত করেছি ও বুঝেছি।অতঃপর রাসূল (সাঃ) রজম করেছেন এবং আমরাও তার ইন্তেকালের পর রজম করেছি।আশঙ্কা হয় বহু কাল পর কেউ বলবেঃ আমরা কোরআন মাজীদে রজম পাইনি।

অনেকে এ-আইনের সমর্থনে হাদিস পেশ করেন মিশকাত (২৬ অধ্যায়ের ১ম পরিচ্ছেদ) আর সহি বোখারী থেকে (হাফেজ মহাম্মদ আবদুল জলিল সম্পাদিত বাংলায় বোখারি শরীফের মোটামুটি হাদিস নম্বর ১২৩৪ থেকে ১২৪৯ পর্যন্ত, মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসিন খানের অনুবাদ ও মওলানা আজিজুল হক সাহেবের অনুবাদ ২৬৮ নম্বর হাদিস)। –সব হাদিসে বলা আছে, নবীজী বিবাহিত/তা-দের মৃত্যুদণ্ড, আর অবিবাহিত/তা-দের একশ’ চাবুক ও এক বছরের নির্বাসন দিয়েছিলেন।

তাহলে আমরা দেখছি, কোরাণের আয়াতের সাথে হাদিসগুলো মিলছে না। কেন এমন হচ্ছে ? তাহলে নবীজী কি সুরা নূর নাজিল হবার আগে পরকীয়ায় বিবাহিত/তা-দের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন ? এ-প্রশেড়বর জবাব আছে ১২৪২ নম্বর হাদিসে, সাহাবী বলেছেন তিনি তা জানেন না। আমরা ধরে নিতে পারি যে নবীজী রজম করে থাকলে এ-সব আয়াত নাজিল হবার আগেই করেছিলেন, পরে নয়। কেননা পরে করলে তা কোরাণের বিপক্ষে যেত, সেটা সম্ভব নয়।
এবার দেখি কোন কোন আয়াত রজমের বিপক্ষে যায় . কোরাণে ব্যভিচারকে বর্জন করার সুস্পষ্ট নির্দেশ আছে (সুরা বনি ইসরাইল ৩২, মুমতাহানা ১২, ইত্যাদি)।- ব্যভিচারিণীদের শাস্তি হিসেবে বলা আছে আজীবন ঘরে বন্দি রাখতে অথবা আলাহ অন্য কোন পথ নির্দেশ না করা পর্যন্ত − সুরা নিসা, আয়াত ১৫।- আর আছে ব্যভিচারী নারী-পুরুষকে একশ’ করে চাবুক মারতে − সুরা নূর, আয়াত ২।- অথচ শারিয়া আইনে আছে বিবাহিত বা বিবাহিতা অপরাধীর শাস্তি জনগণের সামনে পাথরের আঘাতে মৃত্যুদণ্ড, যাকে রজম বলা হয়। আর যার বিয়ে হয়নি তাকে একশ’ চাবুক − (সূত্র : হানাফি আইন হেদায়া পৃষ্ঠা ১৭৮, বিধিবদ্ধ ইসলামি আইন ১ম খণ্ড, ধারা ১২৯, পাকিস্তানের হুদুদ আইন ৭-১৯৭৯, অর্ডিন্যান্স ২০-১৯৮০ দ্বারা পরিবর্তিত, আইন নম্বর ৫ (২)-এর “অ” ইত্যাদি). অর্থাৎ এ-আইন কোরাণকে লঙ্ঘন করেছে।
আবার কোরাণে ফিরে আসি। সুরা নিসা, আয়াত ১৬ : “তোমাদের মধ্য হইতে যেই দুইজন সেই কুকর্মে লিপ্ত হয়, তাহাদিগকে শাস্তি প্রদান কর। অতঃপর যদি উভয়ে তওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করে, তবে তাহাদের হইতে হাত গুটাইয়া নাও।”

কোথায় পাথর, কোথায় মৃত্যুদণ্ড ? মেরে ফেলার পর তার লাশ কি তওবা করবে নাকি, নিজেকে সংশোধন করবে নাকি ? এর চেয়েও কঠিন প্রমাণ আছে কোরাণে : সুরা নিসা, আয়াত ২৫ − দাসী-স্ত্রী পরকীয়া করলে তাকে “স্বাধীন-নারীদের অর্ধেক শাস্তি” দিতে হবে। এ-আয়াতের ব্যাখ্যায় শারিয়াপন্থীরা বলেন স্বাধীন নারী মানে স্ত্রী নয়, অন্য অবিবাহিতা নারী যাকে একশ’ চাবুক মারার বিধান আছে। কিন্তু চাবুক মারার আয়াত আছে তো সব ব্যভিচারীর বেলায়। আয়াতটা পড়ে দেখুন, স্পষ্ট বোঝা যায় দাসী নয় এমন নারীকে বিয়ে করা স্ত্রীর কথাই বলা হচ্ছে। তাকে মৃত্যুদণ্ড দিলে দাসী-স্ত্রীর কি শাস্তি হবে ? মৃত্যুদণ্ডের তো অর্ধেক হয় না।
এবারে কোরাণ থেকে শেষ প্রমাণ। সুরা আন-নূর, আয়াত ২৬ ও ৩ : “দুশ্চরিত্রা নারীরা দুশ্চরিত্র পুরুষদের জন্য ও দুশ্চরিত্র পুরুষরা দুশ্চরিত্রা নারীদের জন্য … ব্যভিচারী পুরুষ কেবল ব্যভিচারিণী নারী বা মুশরিকা নারীকেই বিবাহ করে এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী বা মুশরিক পুরুষই বিবাহ করে।”

অর্থাৎ ব্যভিচারী পুরুষ-নারীকে মৃত্যুদণ্ড দিলে তাদের লাশের সাথে লাশের বিয়ে দিতে হয়। সেটা সম্ভব নয়। কোরাণ একেবারে নীরব হলেও নাহয় কথা ছিল, যে কোন আইন বানাবার সুযোগ ছিল
আসলে পরকীয়ার মৃত্যুদণ্ডের বিধান এসেছে ইহুদী-কেতাব ডিউটেরোনমি থেকে। “যদি কাহাকে অন্য লোকের স্ত্রীর সহিত বিছানায় দেখা যায় তবে তাহাদিগকে মরিতে হইবে … তখন তোমরা উহাদিগকে নগরের ফটকে লইয়া আসিবে এবং পাথর দ্বারা আঘাত করিবে যাহাতে তাহারা মরিয়া যায় …।” ------ জী এইটা হোল রজম ( পাথর ছুড়ে হত্যা করার আইণের মুল উৎস)


অতঃপর তারা আল্লহ তা'আলার পক্ষ থেকে নাযিলকৃত একটি ফরয কাজ ছেড়ে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে।হযরত উমর (রাঃ) যে আয়াতের ইঙ্গিত করেছেন তা হচ্ছে,"বয়স্ক (বিবাহিত) পুরুষ ও মহিলা যখন ব্যভিচার করে তখন তোমরা তাদেরকে সন্দেহাতীতভাবে পাথর মেরে হত্যা করবে।এটিই হচ্ছে আল্লহ তালার পক্ষ থেকে তাদের জন্য শাস্তিস্বরুপ এবং আল্লহ তালা পরাক্রমশালী ও সুকৌশলী।
সেই আয়াতটা কোথায় --- দলিল বলে ছাগলের পেটে এবং এই আয়াতটা যে নাজিল হওয়া ৪ টি আয়াতের বিপক্ষে যায় এবং এই ৪ টা আয়াতকে বিশ্লেষন করলে কোন ভাবেই মৃর্তু দন্ড দেওয়া যায় না । হাসান মাহমুদ সাহেব বলেছেন -- আমরা ধরে নিতে পারি যে নবীজী রজম করে থাকলে এ-সব আয়াত নাজিল হবার আগেই করেছিলেন, পরে নয়। কেননা পরে করলে তা কোরাণের বিপক্ষে যেত, সেটা সম্ভব নয়।সেই রজমের মাধ্যমে মৃর্তু দন্ডের বিপক্ষের আয়াত গুলো হোল -- সুরা নুর ২৬ ও ৩, সুরা নিসা আয়াত ১৬ এবং ২৫ । যে আয়াত বাতিল এবং যার বিপক্ষে ৪টা আয়াত আছে তাহোলে বিধান কি ভাবে চালু থাকে সেটা কি কোরানের লংঘন নহে । এবার আসি আদৌ রজম করার কোন আয়াত নাজিল হয়েছিল কিনা যেটা বাতিল হয়ে যায় । দলিলে বলে --- আয়াতটা কোথায় উধাও হল তা লেখা আছে ইমাম হাম্বলের দলিলে আর সহি ইবনে মাজাহ ৩য় খণ্ড হাদিস নং ১৯৪৪-এ। এ-এক মারাত্মক হাদিস, দেখুন − “বর্ণিত আছে যে বিবি আয়েশা (রাঃ) বলিয়াছেন, “রজমের আয়াত নাজিল হইয়াছিল। অবশ্যই ইহা একটি কাগজের উপরে লিখা হইয়াছিল যাহা আমার কুশনের নীচে রাখা ছিল। রসুল (দঃ)-এর ইন্তেকালের পর আমরা যখন তাঁহার সৎকার করিতে ব্যস্ত ছিলাম তখন একটি গৃহপালিত ছাগল ঘরে ঢুকিয়া উহা খাইয়া ফেলে।------- তাহোলে দলিল অনুযায়ি রসুল (সা) এর কাছে মৃর্তুর ঠিক আগে( সুরা নিসা আ্য়াত ১৬ ও ২৫ এবং সুরা নুর ৩ ও ২৬ সাথে সাংঘর্ষিক) এই আয়াত নাজিল হয় যেটা বিবি আয়েশ (রা) কাগজে লিখে বালিসের নিচে রেখেছিলেন এবং আয়াতটাতে কি লেখাছিল শুধু তিনি জানতেন এবং এর পর রসুল (সা) মারা যান এবং গৃহপালিত ছাগল এসে আয়াতটা খেয়ে ফেলে । এ ক্ষেত্রে আয়াতটা শুধু বিবি আয়শা (রা) মিমোরিতে ছিল কিন্তু মুখস্ত ছিল কিনা জানা যায় না । সেই আয়াত কি করে বাতিল হোল ??? রসুল (সা) তখন মারা গেছেন তাহোলে তিনি ব্যথিত আর কারো পক্ষে আল্লাহর নাজিল কৃত আয়াত বাতিলের নির্দেশ পাওয়া তো সম্ভব নহে । এই রকম তো কখনো হতে পারে না । আল্লাহর নাজিলকৃত আয়াত কোরানে নাই এটা হতেই পারে না -- এই প্রসঙ্গে লেখক বলেছেন --- বিশ্ব-মুসলিমের জন্য এ-এক মারাত্মক হাদিস। কারণ সুরা হিজ্র্, আয়াত ৯-এ আলাহ সুস্পষ্ট বলেছেন − “আমিই এই উপদেশগ্রন্থ নাজিল করিয়াছি এবং আমিই উহা সংরক্ষণ করিব।” আলাহ পাক-এর কালাম ছাগলে খাওয়া ছাড়াও এ হাদিস আরও এক ভয়াবহ সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তা হলো, নাজিল হওয়া আয়াত কোরাণে নেই। অন্যান্য আয়াত বাতিলের হাদিসও আছে, বুখারী ৪র্থ খণ্ড ৬৯. কিন্তু কে কবে কোথায় আলাহর কালাম বাতিল করল কেন ও কোন্ অধিকারে করল তার দলিল পাওয়া যায়নি।-------
সুতরাং রজমের আয়াত নাজিল হওয়ার গল্পকে মিথ্যা না বলে কোন উপায় নাই । রসুল (সা) মৃর্তুর আগের মুহুর্তে নাজিল হওয়া আয়াত যা ছাগলে খেয়ে ফেল্লো অতপর তিনি মারা গেলেন সে আয়াত বাতিলের কোন নির্দেশ না দিয়ে এবং যে আয়াতের সাথে অনন্ত কোরানের ৪ টা আয়াত মেলে না ।


উক্ত আয়াতের তিলাওয়াত রহিত হয়েছে। তবে বিধান চালু রয়েছে। --- কে সে অধিকার দিয়েছে বাতিল হওয়া আয়াতের বিধান চালু রাখতে যেখানে কোরানে ৪ খানা আয়াত আছে যে গুলোর স্টাটাস হোল অবাতিলকৃত আয়াত এবং যেগুলো ব্যভিচারিকে হত্যা করার বিপক্ষে যায় । তার মানে বাতিলকৃত আয়াতের বিধান থাকবে কিন্তু অবাতিলকৃত কোরানে অবস্থানকারী আয়াতের বিধান তাকবে না । ----- কোথায় পাইছেন এমন ফরমুলা ??? আপনি লিখেছেন উক্ত আয়াতের তিলাওয়াত রহিত হয়েছে কিন্তু দলিল বলে বাতিল হয়েছে এবং এই ধরনের কোন আয়াত আদৌ নাজিল হয়েছিল কিনা সেটার সম্পর্কে যে দলিল পাওয়া যায় ছাগলে খাওয়ার কাহিণী রসুল (সা) এর মৃর্তুর পর সেটা রুপ কথাকে হার মানায় । এবার বলুন রসুল (সা) মৃর্তুর পর তার পক্ষে কি ভাবে কোন নাজিল হওয়া ( অনন্ত ৪ টা আয়াত বিরুধী ) আয়াত বাতিল করা সম্ভব ??? আপনারা কি ভবের জগতে বসবাস পরেন নাকি অন্য কোথাও ।
কেমন বে আক্কেলের মত কথা --- যাত্রাপালার অভিনেতা মার্কা লোকদের কথা তো অবশ্যই উমার, সাঈদ উনাদের কথার চেয়ে মূল্যবান হবে। এতে আর সন্দেহ করার কি আছে? ---- আমারতো মনে হয় হযরত ওমর (রা) এই ধরেন কোন কথা বলেন নি যেখানে ব্যভিচারিকে হত্যা করার বিপক্ষে ৪ খানা কোরানের আয়াত আছে ।
হাসান মাহমুদ সাহেবের কালচারাল ব্যাক গ্রাউন্ড আছে এবং সেই সাথে তিনি গত ৩০ বৎসরের উপরে শরিয়া আইন কোরান ও হাদিসেের উপর গবেষনা করেছেন এবং শরিয়া আইনের উপর বই লিখাছেন এবং প্রমাণ করেছেন বহু শরিয়া আইণ কোরান বিরধী যেমন শরিয়া রজম , মুরতাদ হত্যা ইত্যাদি। কোথায় পাইছেন এই ধরনের রঙ্গের কথা মানুষের বহুমুখি প্রতিভা তাকতে পারবেনা এবং থাকলে কোরান বিরুধী । কোথায় পাইছেন এমন কথা। হুমায়ুন আহমেদ ক্যামেস্ট্রির লোক হোলেও সাহিত্যিক হয়েছেন , মান্নাদে কুস্তিগীর ছিলেন পরে গায়ক হয়েছেন ---- তাতে কি কোন অসুবিধা আছে ??
জাকির নায়েক একজন চিকিৎসক, তিনি যে ইসলামিক লেকচার দেন তাতে কি কোন ক্ষতি হয়েছে ?? যে জাকির নায়েকের ফটোগ্রাফিক মিমোরি এবং কথার বানে মানুষকে নাজেহাল করে ফেলেন তিনি কিন্তু একবার এক বিতর্ক থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন যখন তিনি জানতে পারলেন তার বিপক্ষে হাসান মাহমুদ আছেন যদিও তারা স্মৃতি শক্তি অত প্রচন্ড নহে এবং হাতে বই এবং রেফারেন্স পেপার নিয়ে বিতর্কে আসেন ।
এর আগে একজনের চেহারা খবিশের মত তাই তার কথা ভুল এই রকমের যুক্তি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন কিন্তু এবার হাসান মাহমুদের চেহারা নিয়ে কোন মন্তব্য করতে পারেন নি । এবার ইসু হোল হাসান মাহমুদ একজন বহু মুখি প্রতিভাবান তাই ওনার সব কথা ভুল ???? এই হোল আপনার দৃষ্টিভঙ্গি !!!!!!

১৪| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:১৯

এ আর ১৫ বলেছেন: আশাবাদী অধম লিখেছেন ----- ফতেমোল্লার (এই পোস্টের মূল লেখক) নিজের ওয়েবসাইটে তার সম্পর্কে বলা হয়েছে-

Hasan is a lifelong leader in the fields of cultural events, recitals, music, host of TV shows, actor in dramas and movies etc. He authored many songs, poems, dramas, short stories; book on history of Bengal and is an expert performer in Indian classical music concerts.


কিন্তু সেই সাথে তার সম্পর্কে এই সমস্ত কথা লিখেন নাই ---
সদস্য – ওয়ার্ল্ড মুসলিম কংগ্রেস উপদেষ্টা বোর্ড
সাধারণ সম্পাদক- মুসলিমস ফেসিং টুমরো- ক্যানাডা
রিসার্চ এসোসিয়েট- দ্বীন রিসার্চ সেন্টার, – হল্যান্ড
প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, আমেরিকান ইসলামিক লিডারশীপ কোয়ালিশন
ক্যানাডা প্রতিনিধি, ফ্রি মুসলিমস কোয়ালিশন
প্রাক্তন ডিরেক্টর অফ শারিয়া ল’ ও প্রেসিডেন্ট, মুসলিম ক্যানাডিয়ান কংগ্রেস
-------- এই ধরনের একজন হাই ক্যালিবারের বহুমুখী প্রতিভা মানুষের পক্ষেই কাটমোল্লা কনস্পেটের বিপক্ষে দালিলিক প্রমাণ ও জবাব দেওয়া সম্ভব । যিনি ৩০ বৎসরের ও বেশি বৎসর ধরে শরিয়া কোরান ও হাদিস নিয়ে গবেষনা কোরছেন এবং বই নাটক কবিতা গান লিখছেন সুর কোরছেন ।

১৫| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:৩৪

আশাবাদী অধম বলেছেন: টরন্টোতে আসার পর ধীরে ধীরে বাংলাদেশী সমাজের সাথে মিশতে শুরু করি - অভিবাসী কথা থাকায় তখন ছোট ছোট অনুষ্ঠান হতো। সেই অনুষ্ঠানে এক ভদ্রলোক নিয়মিত হাজিরা দিতেন - কবিতা পড়তেন - প্রবন্ধ পড়তেন। সব কিছুরই মুল বিষয় ছিলো ইসলাম ধর্মের অন্ধকার দিকটাকে ফুটিয়ে তোলা। ভদ্রলোকের প্রিয় বিষয় ছিলো "হিলা" বিয়ে। লোকজনের মুখে শুনলাম উনি একজন ধর্ম বিষয়ক পন্ডিত - হাদিস কোরান উনার নখের আগায় থাকে। উনার বিষয়ে বেশ আগ্রহী হলাম। ভদ্রলোকের একটা প্রকাশিত বই কিনলাম। ইন্টারনেটে বিভিন্ন গ্রুপে ভদ্রলোকের লেখা পড়ি। সব কিছু দেখেশুনে একটা বিষয়ে সন্দেহ জমাট বাঁধতে থাকলো - তা হলো ভদ্রলোক এতো বড় পন্ডিত - মনে হয় কোরান পড়েননি। সন্দেহটা আরো ঘনীভুত হলো সেপ্টেম্বর ১১ এর পর। তখন আমেরিকাসহ পশ্চিমে শুরু হয়েছে ইসলাম বিরোধী জেহাদ। সেই জেহাদী কাফেলায় দেখলাম আলি সিনার দলে উনিও যোগ দিলেন। সেখানে মুক্তমনাদের অনেকেই ইসলামের বিরুদ্ধে লিখে নিজেকে ধন্য করছিলো। কিন্তু সবাই কেমন যে অন্যর মুখে ঝাল খাচ্ছে বলে মনে হলো। বিশেষ করে বাঙ্গালী মুক্তমনারা কোরান থেকে যা উদ্ধৃতি দিতো তা বেশীর ভাগই বিকৃত ছিলো।



এই অবস্থায় টরন্টোর একমাত্র বাংলা সাপ্তাহিকের মালিক-সম্পাদক ফোনে দাওয়াত দিলেন একটা উইকএন্ডের উনাদের অফিসে সংলাপ হবে। বিষয়বস্তু হলো ৯/১১ পূর্ব পশ্চিমে বাঙ্গালী মুসলামনদের প্রবাস জীবন ও করনীয়। গেলাম সংলাপে। রুমে ২৫/৩০ জন লোক হবে। মডারেটর সম্পাদক নিজেই আর প্রধান আলোচক আমাদের মুক্তমনা ধর্মীয় গবেষক সাহেব। বলে নেওয়া ভাল - ইতোমধ্যে টরন্টোর বাংলা পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে উনাকে একজন "বিশিষ্ঠ ধর্মীয় গবেষক" হিসাবেই পরিচয় দেওয়া হতো।



অনুষ্ঠান শুরুতে মডারেটর একটা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য বক্তব্যে নর্থ আমেরিকায় মুসলিম যুবকদের উপর নির্যাতন - বিনা বিচারে গ্রেফতার - সিকিউরিটি আইনের নামে মানবাধিকার লংঘন নিয়ে একটা বক্তব্য দিলেন। এরপরই মুক্তমনা সাহেব বত্তৃতা শুরু করলেন। উনার বত্তৃতার শুরু থেকেই নর্থ আমেরিকার মুসলমানদের দুর্দশার জন্যে ইসলাম ধর্ম - বিশেষ করে কোরানকে দায়ী করলেন। আগ্রহ নিয়ে শুনছিলাম উনার কথা। কারন কোরানের নির্দেশ পালন করতে গিয়ে যদি মুসলমানরা নিজেদের দুর্দশা ডেকে আনে - তবে তো মহা চিন্তার কথা।



উনি এক পর্যায়ে বললেন - কোরানের পাতায় পাতায় রক্তের দাগ আছে।



এই অব্স্থায় চুপ করে বসে থাকা সম্ভব ছিলো না। কারন উনার কাছ থেকে শুনতে চাচ্ছিলাম সুনির্দিষ্ঠ আয়াতগুলো যা কিনা উনার দৃষ্টিতে মুসলমানদের দুর্দশার জন্যে দায়ী - উনি তা না করে একটা পাইকারী কথা বলে যাচ্ছিলেন - যা তখন টিভি বা রেডিওতে নিয়মিত আলোচনার বিষয় ছিলো। দাড়িয়ে জিজ্ঞাসা করলাম - কোরানের কোন পাতায় রক্তের দাগ আছে দয়া করে জানানো যাবে কি? ভদ্রলোক কিছুটা বিরক্ত হলেন - আর মডারেটর আমাকে বসিয়ে দিতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু আমি নাছোর বান্দার মতো বললাম - অন্তত একটা আয়াত বলুন যা আপনার কাছে মনে হয়েছে ৯/১১ এর মতো রক্তপাতের জন্যে কোরান মানুষকে উৎসাহিত করেছে।



যে রুমে অনুষ্টানটা হচ্ছিলো - সেখানে একটা সেলফে কোরানের বাংলা অনুবাদ দেখা যাচ্ছিলো। আমি মডারেটরকে অনুরোধ করলাম দয়া করে পিছন থেকে বইটা আনুন - উনাকে দিন - কোন পাতায় উনি রক্তের দাগ দেখেছেন তা উনাকে বলতে হবে। এই সময় দর্শকদের একটা অংশ আমাকে সমর্থন দিতো শুরু করলো। আর আমার বিশ্বাস দৃঢ় হলো উনি কখনও কোরান পড়েননি।



এক পর্যায়ে উনি যা বললেন তাতে অবাক হলো সবাই - উনি বললেন - উনি আয়াত বিষয়টি ঠিক বলতে পারবেন না - কিন্তু গতরাতে ভ্যাংকুভারের একটা রেডিও চ্যানেলের এক টক শোতে একজন রাবাই বিভিন্ন আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমান করেছে যে ইসলাম হলো একটা হিংসাত্বক ধর্ম আর কোরানের পাতায় পাতায় রক্ত। ইসলামী গবেষক যখন রাবাই এর কাছ থেকে জ্ঞান নিয়ে কোরানে রক্ত দেখেন তাইলে আর কি বলার বাকী থাকে! তারপরও উনাকে একটা প্রশ্ন করলাম - যা করাটা শোভন ছিলো না - কিন্তু উনার মুখোশটা খুলে ফেলার শেষ সুযোগটা কাজে লাগানোর লোভ সামলাতে পারলাম না বলেই প্রশ্নটা করা। জানতে চাইলাম - উনি কি আদৌ কোরান বা কোরানের বাংলা অনুবাদ পড়েছেন কিনা?



উনি সোজা জবাব দিলেন - না পড়া হয়নি।



বলাই বাহুল্য - বাকী অনুষ্ঠানটা তেমন আর জমেনি।



কাহিনীটা এখানে শেষ হলেই ভাল হতো। কিন্তু আবারো দেখা গেল ভদ্রলোক ইয়াহু মুক্তমনা ফোরামে একটা লেখা দিয়েছেন যেখানে উনি কোরানের আয়াত তুলে দিয়েছিলেন। মনে হলো উনি কোরান পড়া শুরু করেছেন। তবে উনার প্রিয় বিষয় হিলা নিয়ে উনার নাটক নভেল লেখা থেমে থাকলো না। সেই অবস্থায় একদিন একটা অনুষ্টানে দেখা হলে উনিই এগিয়ে এসে হ্যান্ডশ্যাক করে আমাকে লজ্জিত করলেন। কথা হলো কিছুক্ষন - আমি বললাম ভাই, একটা বিষয় আমাকে বলেন - হিলাতো শুধু গ্রামের অর্থনৈতিক ভাবে পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠীর সমস্য - এই বিষয়টা মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্তের মধ্যে নাই কেন? উনি বললেন - তাইতো, বিষয়টা সেভাবে ভাবিনি। তারপর হিলার কারনে গ্রামের মেয়েদের যে কি পরিমান লাঞ্ছনার শিকার হতে হয় তার উপর একটা নাতিদীর্ঘ আলোচনা করলেন। উনার সাথে একমত হয়ে বললাম - হিলা বিয়ে যে একটা ভুল তা কি জানেন - আর এটা আরেকটা ভুলকে জায়েজ করার জন্যে অশিক্ষিত মোল্লাদের একটা আবিষ্কার। উনি বললেন - কেন ভুল হবে। আমি বললাম - কোরানের বিধান মতে যে ভাবে তালাক হওয়ার কথা অর্থাৎ তিন পিডিয়ড সময়কাল ধরে যদি স্বামী বা স্ত্রী সিদ্ধান্তে থাকে অটল যে ওরা আর একসাথে থাকবে না - তা হলে কি আপনি মনে করেন তিন পিডিয়ড পর যখন ডিভোর্স হয়ে যাবে তখন সাথে সাথেই তারা আবার একসাথে থাকার জন্যে ব্যাকুল হয়ে উঠবে - আর একটা জক্ষুবুড়াকে ধরে এনে বিয়ে দিয়ে রাতটা কোনরকম পার করে দিয়ে আবার দাম্পত্য শুরু করবে?



উনি চুপ মেরে গেলেন। বুঝা গেল উনি কোরানের যে আয়াতকে শর্টকাট করে তালাক-হিলার নাটকটা হয় সেই বিষয়ে জানেন না। পরের দিন ফোন করে উনি জানতে চাইলেন - আমার কাছে কোরানের বাংলা অনুবাদ আছে কিনা - বললাম আছে - তবে দেওয়া যাবে না। (অভিজ্ঞতা বলে জ্ঞানী মানুষরা বই ধার নিলে ভুলে যায় ফেরত দিতে - তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি বই আর ধার দেবো না) আপনার প্রয়োজনীয় আয়াত ফটো কপি করে দিতে পারি। তাই দিয়েছিলাম।



ইতোমধ্যে আলি সিনার গ্রুপ থেকে ইতোমধ্যে মুক্তমনাদের অনেকেই সরে এসেছেন সেখানকার ইসলাম বিরোধী প্রপাগান্ডার নির্লজ্জতা সহ্য করতে না পেরে। তারপর উনাকে দেখলাম - মুক্তমনার দল থেকে ধীরে ধীরে সরে গিয়ে নিজেই একটা ওয়েব সাইট খুলে বসলেন।



ভদ্রলোক নিজের ওয়েব সাইটের হেডিং এ কোরানের একটা আয়াত কাটছাট করে ব্যবহার করা শুরু করলেন - যার অর্থ করলে দাড়ায় মুহাম্মদ (স:) আল্লার নির্দেশ অমান্য করে দেশ শাসন করেছেন এবং নিজে মুসলিম অর্গেনাইজেশনের শারিয়া বিষয়ক ডাইরেক্টর হিসাবে আত্নপ্রকাশ করলেন। তারপরও উনার কোরান পড়ে উদ্ধৃতি দেবার মতো সময় হলো না - সেই বিষয়টি পরের পর্বের জন্যে থাকলো।
সূত্রঃ https://www.amarblog.com/eskimo/posts/64987

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:৫২

এ আর ১৫ বলেছেন: Ah what a beautiful answer of his article by pasting a fabricated article. Where is your answer of his research work about Rosm. Suppose he is very bad man then that doesn't mean his research work is meaning less। You peoples are shading blood on quran by killing some one without support from the devine and he tries to clean that blood to purify the religion.
This is intention to shading blood by killing people by violating devine and he is trying to prove this activities are against the devine .
What a beautiful answer of the article. Rosm is shading blood on the Quran and you people are supporting such blood shading .

১৬| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:২৭

এ আর ১৫ বলেছেন: Mr Adhom . Just see the movie hilla from the link and find out which one against the devine and just see how you peoples are shading blood on the devine..Hilla movie

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.