নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বসে আছি অন্ধকারে, \nআমাকে বুঝতে দাও \nমানুষ কেন আলোর \nপ্রত্যাশা করে!

আসোয়াদ লোদি

জীবন ও যন্ত্রণার মরুচরে আমি প্রপাতের ধারা ।

আসোয়াদ লোদি › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি বন্ধুত্বের কবিতা ও কিছু কথা

১১ ই মে, ২০১৪ রাত ১১:৪০

জাপানি সাহিত্যে পঞ্চপদি কবিতা দেখা যায় । যাকে তারা ‘ তাঙ্কা ‘ বলে । ‘তাঙ্কা’ কবিতার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে একটি কবিতা রচনার জন্য দুজন কবির প্রয়োজন হয় । প্রথম জন রচনা করবেন কবিতার প্রথম তিন লাইন এবং দ্বিতীয় জন লিখবেন চতুর্থ ও পঞ্চম লাইন । ১৯৬৯ সালে প্যারিসে অক্তাভিও পাজ ও আরও তিনজন কবি ( চার্লস টমলিনসন , জ্যাকস রৌবার্ড , এডুয়ারডো স্যাঙ্গুইনেত্তি ) মিলে এরকম একটি কবিতা ‘ রেঙ্গা ‘ ( Renga ) লিখেছিলেন ।



অক্তাভিও পাজ পুনর্বার ভারতে আসেন ১৯৮৪ সালে । । ভারত সরকার তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ১৯৮৪ সালে জওহরলাল নেহরুর স্মমানে আয়োজিত বার্ষিকীতে ভাষণ দেবার জন্যে । ইন্দিরা গান্ধীর অনুরোধে তিনি আমন্ত্রণটা পেয়েছিলেন । একই বছর তাঁকে জাপান ফাউন্ডেশনও আমন্ত্রণ জানিয়েছিল । তিনি প্রথমে জাপান ও পরে দিল্লী যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন । স্ত্রী মেরি হোসে এর সাথে তিনি যখন কোয়েটা-তে অবস্থান করছিলেন, তখন সংবাদ পেলেন দুজন শিখ দেহরক্ষীর হাতে ইন্দিরা গান্ধী নিহত হয়েছেন । এর কিছুদিন পর তিনি দিল্লী এসে পৌঁছান । তিনি প্রত্যাশা করেছিলেন ভাষনটি মূলতবি করা হবে । এবং তাই হয়েছিল । নতুন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী আমন্ত্রণটি নবায়ন করেছিলেন । তিনি ভাষণটি দিয়েছিলেন ১৯৮৫ সালে । এটি ছিল ভারতে তাঁর শেষ ভ্রমণ । সেই সময়ে লেখক শ্যামলাল তাঁর বাড়িতে একদল বন্ধুর পুনর্মিলনের আয়োজন করেছিলেন । ওখানেই শ্যামলাল প্রস্তাব দিয়েছিলেন হিন্দি কবিদের দিয়ে একটি ‘রেঙ্গা’ রচনা করা যায় কিনা । পাজ রাজী হয়েছিলেন ।



শ্যামলাল অক্তাভিও পাজ, আজায়া ( এস বাৎসানন ) ও শ্রীকান্ত ভার্মা এই তিনজনের হাতে তিন টুকরা কাগজ ধরিয়ে দিলেন । শ্যামলালের বাড়িতেই রচিত হল একটি অসাধারণ বন্ধুত্বের কবিতা ।



বন্ধুত্বের কবিতা



অক্তাভিও পাজ - বন্ধুত্ব হলো একটি নদী আর একটি আংটি ।

আজায়া - নদী বয়ে যায় একটি আংটির ভিতর দিয়ে ।

আংটিটি নদীর বুকে একটি দ্বীপ ।

শ্রীকান্ত ভার্মা - নদী বলেঃ আগে এখানে ছিলনা কোনো নদী,

পরে শুধুই একটি নদী কেবল ।

পূর্ব এবং পরঃ বন্ধুত্ব মুছে যায় যেখানে ।

অক্তাভিও পাজ - মুছে যায় ? আংটি তৈরি করে নদী বয়ে যায় ।

আজায়া -বন্ধুত্ব মুছে ফেলে সময়ের দাগ আর এইভাবে মুক্ত করে আমাদের ।

প্রবহমান এই যে নদী, উদ্ধার করে আংটিগুলো ।

শ্রীকান্ত ভার্মা - নদীর বালুকা বেলায় আমাদের পদচিহ্ন মুছে যায় ।

নদীকে আমরা খুঁজি বালুকা বেলায়ঃ কোথায় গেল সে চলে ?

অক্তাভিও পাজ- বিস্মরণ আর স্মৃতির ভিতরে আমাদের বসবাসঃ

এই মুহূর্তটি হলো

অন্তহীন সময়ে পোড় খাওয়া একটি দ্বীপ ।





( কবিতার অনুবাদ- মোরশেদুর রহমান

ইন লাইট অফ ইন্ডিয়া

মূল- অক্তাভিও পাজ )



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.