নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অ্যা সান অফ দ্য গুড আর্থ

হয়তো একদিন হারাবো ঐ মেঘের দেশে , হয়তো শ্রাবণের কোন এক সন্ধ্যায় , বারি হয়ে ঝরবো তোমাদের এ আঙিনায় ।

অ্যা সান অফ দ্য গুড আর্থ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রেরণা

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:১৯

ছন্দ সিনেমা হল থেকে সামসু মিয়া বেরিয়ে আসে । ২২ বছরের তরুণ । অনেকদিন পর একটা সিনেমা দেখা হলো । তার প্রিয় নায়ক সাকিব খান । তার বহু দিনের শখ একদিন তার স্বপ্নের মানুষটার সাথে দেখা করার , তার ভাললাগার কথাটা একবারের জন্য সামনা সামনি বলার।



সামসু মিয়া পশ্চিম দিকের ফুটপাত ঘেষা দোকানটায় গিয়ে ঢুকে । ৩৫ টাকা দিয়ে এক প্লেট বিরানী কিনে খায় । খাওয়া শেষে রাস্তার পাশে রাখা তার রিকশার কাছে এসে পৌঁছায় । তৃপ্তির ঢেকুর তোলে পকেট থেকে বিড়ি বের করে একটাতে ধরায় । পায়ের ওপর পা তোলে সুখ টান দেয় বেশ আয়েস করেই । মুখ ভরে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে তাকিয়ে থাকে কুন্ডলির দিকে ।



অনেক দিন পর এই সময়ে সে অবসর পেল । নতুন রিকশাটা কেনার জন্য তাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে । সকাল , দুপুর কলা আর বনরুটি দিয়ে চালিয়ে রাতে একবেলা ভাত খেয়ে থেকেছে আর টাকা জমিয়েছে মাটির ব্যাংকে । একবছর একই রকম কষ্ট করে জমানো টাকা দিয় একটা রিকশা কিনেছে । আজ থেকে তার নতুন রিকশা , শুধুই তার । এতো অল্প বয়সে রিকশা কিনতে পেরে সে মহা খুশি । আর মহাজনকেও প্রতিদিন ১০০ টাকা করে জমা দেওয়া লাগবে না ।

প্রতিদিন এই সময়টাতে সে শাহবাগ এলাকাতে রিকশা বায় । তার প্রথম টার্গেট হলো প্রেমিক যুগল , কেননা তারা অনেক সময় নিয়ে রিকশায় ঘুরে আর যা দাবি করে সেই ভাড়াই দেয় । তাই ইনকাম একটু ভাল হয় । আজ তেমন কাউকে পাচ্ছে না । ঈদের ছুটিতে সব ফাঁকা ।



রিকশা কিনতে গিয়ে হাতে আর টাকা নেই , তাই সে এবার ঈদে গ্রামে যেতে পারছে না । নানাভাবে ভুলে থাকার চেষ্টা করছে যেতে না পারার আক্ষেপ ।



মিষ্টি একটা কন্ঠ শুনে সামসু মিয়া চোখ মেলে তাকায় । ৫-৬ বছরের ছোট্ট মেয়ে তার বাবার হাত ধরে তার রিকশার সামনে দাঁড়িয়ে আছে । তাদের নিয়ে সে জাতীয় শিশু পার্কের দিকে রওয়ানা হয় ।



প্রচন্ড ভ্যাপসা গরম । সামসু মিয়া ঘেমে গোসল করে ফেলেছে । আজ কেন যেন পা দুটো নড়তে চাইছে না । রিকশায় বসে থাকা ছোট মেয়েটা তার বাবাকে কতোই না প্রশ্ন করে চলেছে । সামসু মিয়া মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শুনছে আর মনে মনে হাসছে মেয়েটার পাকামো দেখে ।





সামসুর মনে পড়ে যায় তার একমাত্র ছোট বোন ফুলির কথা , কতো দিন দেখে না তাকে , তার বাবা মাকে । পরেরবার সে অবশ্যই তার বোনকে শহরে নিয়ে আসবে , তার কেনা নতুন রিকশায় চড়িয়ে শহর দেখাবে ।

ফুলির মায়াবি মুখখানা সামসু মিয়ার চোখে ভাসতে থাকে । মুহূর্তে মনের মাঝে জমে থাকা কষ্টগুলো যেন বাষ্প হয়ে উড়ে যায় । মন ফুরফুরে হয়ে উঠে । সে শক্তি ফিরে পায় । নতুন উদ্যমে রিকশার পেডেলে পা চালায় জোরে , আরো জোরে.....................

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.