![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আওয়ামীলীগ একটি সুপ্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল । বহু চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে তারা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসে । সরকার গঠন করে । সরকারে থাকা অবস্থায় বিগত পাঁচ বছরে নানামূখী উন্নয়ন কর্মকান্ড করলেও মূলত বেশ কিছু কারনে ক্ষমতার শেষদিকে এসে তাদের জনপ্রীয়তায় একদমই ভাঁটা পড়ে যায় । তারা এখন খুব ভালভাবে বুঝতে পারছে একটি সুষ্ঠ ও সকলের অংশগ্রহনে নির্বাচন হলে তাদের পতন নিশ্চিত । কিন্তু তারা ক্ষমতা ছাড়তে সম্পূর্ন নারাজ ।মূলত দুটি কারনেঃ
১) নির্বাচনে হারলে তাদের উপর নেমে আসবে বিএনপি-জামাতের ভয়াবহতম নির্যাতন যা ২০০১১ নির্বাচনের পরবর্তী ঘটনা ও তাদের ২০০৯ এ ক্ষমতা গ্রহণের পরে জামায়াত-বিএনপির উপর চালানো নির্যাতনকেও হার মানাবে।
২)তারা দেশের উন্নয়নের সাথে সাথে রাজনীতিতে আমূল পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখে বিশেষ করে তারা চায় স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি হিসাবে জামায়াতকে পুরোপুরি নিশ্চিন্ন করে দেয়া ও ক্ষমতার দূরতম গোলার্ধেও ঘেষতে না দেয়া । তাই ক্ষমতায় আসার পরে অত্যন্ত চতুরতার সাথে দুটি কাজ করে । ১)৭১ এ মানবতাবিরোধী অপরাধকারীদের বিচার অনুষ্ঠান,২)সংবিধানের আমূল পরিবর্তন ।
মূলত ক্ষমতা হস্তান্তরের কাছাকাছি সময়ে এসে তাদের রাজনৈতিক কৌশলটি ছিল জামায়াত মাইনাস করা । কিন্তু বিএনপি তাতে রাজী না হওয়ায় সমীকরণটি দাঁড়ায় বিএনপি-জামায়াত মাইনাস পলিসি । এক্ষেত্রে এরশাদকে বিরোধী দলে বসিয়ে আওয়ামীলীগ আবার ক্ষমতায় বসার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে । সর্বশেষ এরশাদ বেঁকে যাওয়ায় অন্যপথে এগুতে হতে পারে আওয়ামীলীগকে । আওয়ামীলীগের নির্বাচনী জোট ১৪ দলকে ভেঙে সবাই এককভাবে নির্বাচন করা ও ছককশা পাঁতানো নির্বাচনে আওয়ামীলীগ এককভাবে ক্ষমতায় আসা । এবং প্রয়োজনে গৃহপালিত বিরোধীদল থেকেও মন্ত্রীত্ব দিয়ে আরো বেশি গণতান্ত্রীক ভাব দেখানো । এছাড়াও অন্য যেপথগুলো একএক করে অনুসরণ করা হতে পারে তা হলোঃ
১)তফসীলের মেয়াদ পিছিয়ে বা পুর্নতফসীল ঘোষনা করে শেষপর্যন্ত আওয়ামীলীগ এরশাদকে বুঝিয়ে কিংবা অন্য যেভাবেই হোক নির্বাচনে নিয়ে আসবে ।
২)২৪ জানুয়ারী শেষ হোয়ার আগ পর্যন্ত এরশাদকে আবার নির্বাচনমূখী করার সব চেষ্টা করা হবে না হলে, ১৫ই জানুয়ারীর পরপর এই পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে তখন সংবিধানের ১২৩(৩) (খ) অনুচ্ছেদ অনুসরণ করতে হবে । যার ফলে এ সরকারের মেয়াদও ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত বেড়ে যাবে । ইলেকশন কমিশনও এই অজুহাতের দোহাইয় দিয়ে ২৪ জানুয়ারী থেকে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুযোগ পাবে ।
এরমধ্যেও যদি কোন ব্যবস্থা না হয় তাহলে সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসাবে আপাতত একটি পাতানো নির্বাচনের পরিবর্তে পাতানো ক্যু তৈরী করে সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে । তারা আপাতত চালাতে থাকবে মন্দের ভালো হিসাবে এবং পরবর্তীতে সময় আসলে আবার একটা ইলেকশনের আয়োজন করে আবার বেশ কিছুদিন পর আওয়ামীলীগকে বসানো হবে । তবু, কোনক্রমেই প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে এ মূহুর্তে সুষ্ঠ নির্বাচন দিয়ে বিএনপি জামাতের ক্ষমতায় বসার পথ করে দেবেন না । বিএনপি-জামায়াতপন্থী অফিসারদের এতোদিনে নিশ্চয় গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা চিহ্নিত করে ফেলা সম্ভব হয়েছে। এদের মধ্যে অনেক অফিসারদেরই বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে, যেদুই একজন বিএনপি মনা আছে তাদেরকে ঢাকার বাইরে রাখা হয়েছে । জুনিয়র অফিসারদের ওভাবে চিহ্নিত করা কঠিন তারপরও তাদের দিকে বাড়তি নজর রাখা হবে । সন্দেহজনক মনে হলে তাদের বিরুদ্ধে তৎক্ষনাৎ ব্যবস্থা নিতে হবে । ফলে পালটা ক্যু ঘটার তেমন কোন সম্ভাবনা থাকবে না । মূলত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী আওয়ামীলীগের অনুগত সিনিয়র অফিসাররাই পর্দার অন্তরালে এক রকম শেখ হাসিনার নির্দেশেই উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দেশ চালাবেন । বাইরে শেখ হাসিনা বলবেন, ক্যু হয়েছে, আমি সরে যেতে বাধ্য হয়েছি । কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ক্যুটি হবে নির্বাচনের মতোই পাতানো ।
আওয়ামীলীগ কখনই এ ধরনের ক্যুতে কিংবা সেনা হস্তক্ষেপে বিশ্বাস করে না, চায়ও না কিন্তু উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বিএনপি-জামায়াতকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসাবে এটিই অনুসরন করা হতে পারে । এতে করে আওয়ামীলীগের যে কয়েকটি সুবিধা হবেঃ১)বিএনপি-জামায়তকে ক্ষমতায় যাওয়া থেকে বিরত রাখা যাবে ।২) এতে করে বিএনপির মতো সুবিধাবাদী দল আন্দোলন করতে করতে একরকম ভেঙে পড়বে আর জামায়াতকেও প্রায় নিশ্চিন্ন করে দেয়া সম্ভব হবে । ৩)নিজেরা ক্ষমতায় না থাকলেও নিজেদের অনুগত অফিসাররাই ক্ষমতায় থাকবে, পর্দার পিছনের কলকাঠি মূলত আওয়ামীলীগ নেতারায় নাড়াবে কিন্তু বাইরে অন্যকথা বলতে হবে ।
শেষপর্যন্ত যদি এ পর্যন্ত যেতেও হয় এরমধ্যে কয়েকটি ঘটনা ঘটতে পারে, যেমন১)বিরোধীদলের অধিকাংশ নেতাকে সাড়াশী অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে ফেলা,
২)বিরোধীদলের নেতাকে সরাসরি গ্রেপ্তার না করলেও অতিরীক্ত নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে রেখে পুরোপুরি জনবিচ্ছিন্ন করে ফেলা ।
৩)সরাসরী বিরোধী আচরণ করছে এরশাদসহ এমন অন্যান্য বিরোধী নেতাদেরও নামেও মামলা করা ও আটক করা ।
৪)প্রয়োজনে জরুরী অবস্থা জারী করা
৫)নির্বাচন কমিশন এরমধ্যে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা বলে শেষ সময় পর্যন্ত তফসীল পিছাতে থাকবেন । কেননা সহিংসতা চলতেই থাকবে । দুপক্ষকেই সহিংসতা অব্যাহত রাখতেই হবে । আওয়ামীলীগকে রাখতে হবে কারন,১)তারা বাইরে আরো ভালভাবে বলতে পারবেন,বিরোধী পক্ষ সন্ত্রাসী সংগঠন তারা নির্বাচন চায় না । ২)সহিংসতা চললে বিরোধী নেতাদের আটকের গ্রহনযোগ্যতা বাড়বে ।
৩)তলে তলে সব রাজনৈতিক দলগুলোকেই নির্বাচনে আসার জন্য সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ ও লোভ দেখানো অব্যাহত থাকবে কিন্তু শেষপর্যন্ত না আসলে সহিংসতা চললে ইমারজেন্সি দেয়া ও পাতানো ক্যুর নাটক করা খুব সহজ ব্যাপার হবে।
আর বিএনপি-জামায়াতকে সহিংসতা চালিয়ে যেতে হবেই(যদিও তারা শেষপর্যন্ত কতদূর পারবেন সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে)।
১)তারা যে পরিস্থিতি তৈরী করেছে তাতে যদি সফল না হয় তাহলে তারা আর ক্ষমতায় যেতে পারবে না । কারন বাংলাদেশে এ যাবৎ কালে যতসব সরকার বিরোধী আন্দোলন হয়েছে তা রাজপথেই সমাধান হয়েছে । ২) বিরোধী দলের শীর্ষ নেতারা সাড়াশী অভিযানে গ্রেপ্তার হয়ে গেলে তারা লাগাতার হরতালের ডাক দেবেন । ৩)এখন বিএনপি যদি কোন কারনে তার উদ্দেশ্য সফল হওয়ার আগেই আন্দোলন থেকে সরে আসে তাহলে একদিকে যেমন নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হবে অন্যদিকে সাধারণ মানুষের হাসির বস্তুতে পরিনত হবে ।৪)আর তারা খুব ভালভাবে জানে,এই ভয়ঙ্ক্র পরিস্থিতিতে রাজপথে শক্তি প্রদর্শন করাই তাদের জন্য এখন একমাত্র খোলা পথ । তাই আগামী দিনগুলোতে সহিংসতার পরিমান আরো বহুগুনে বৃদ্ধি পাবে ।।
০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৪৫
এ ইউ জেড প্রিন্স বলেছেন: হা, স্বাধীন বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যতগুলো সরকার এসেছে কেউ মসনদ ছাড়তে চায় নি । সবাই ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে শেষ্ পর্যন্ত সব ধরনের চেষ্টা করে গেছে । এদের মধ্যে দুই জন সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন,কয়েকজন সেনাবাহিনীর নির্দেশে ক্ষমতা তাদের হাতে তুলে দিয়েছে, আর সবাই রাজপথে জনগনের প্রচন্ড চাপের মুখে ক্ষমতা থেকে সরে দাড়াতে বাধ্য হয়েছে(১৯৯০,১৯৯৬,২০০৬), ব্যতিক্রম ছিল শুধু ২০০১ । তাই এরা এবার আর এ ভুল করতে চাচ্ছে না ।।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ২:২১
কপোতাক্ষের তীরে এক অসামাজিক বলেছেন: আপনার বিশ্লেষণ যদি ঠিক ধরেই নিই, তাহলে এটা পরিষ্কার যে বাকশালী কুকুরদের মতো জটিল কুটিল বদবুদ্ধি বাংলার ইতিহাসে আর কারও ছিলো না, এমনকি মীর জাফরদেরও নয়।
তবে বাংলার জনগণ ঠিক সময়ে সবসময়ই সঠিক জবাব দিয়েছে এই সব কুচক্রিদের বিরুদ্ধে।