নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাজিদ উল হক আবির

সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯)

সাজিদ উল হক আবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

সূতির খালের হাওয়া - ৮ঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, এবং \'লেখক - চিন্তক\' পরিচিতির নির্মাণ - বিনির্মাণ

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:২৭



১।
শরৎচন্দ্র রায় ব'লে একজন কে দেখা করতে এসেছিল, আমি দেখা করলুম না। বাঙালির ছেলেকে একবার ঘরের মধ্যে ঢোকালে, বের করে দেওয়া দায় হয়ে ওঠে ...'

ছিন্নপত্রাবলীর একটি চিঠিতে রবিঠাকুরের এই বক্তব্য পড়ে চমকে উঠেছিলাম। দ্বিধাগ্রস্থ চিত্তে চিন্তা করছিলাম, যাকে রবিঠাকুর দেখা করবার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করলেন, তিনি বাংলা সাহিত্যে জনপ্রিয় ধারার প্রবর্তক শরৎচন্দ্র কি না। স্মৃতির পাতা খানিকটা ওলটপালট করতেই ভ্রম ভাঙলো। সাহিত্যিক শরৎ বাবুর টাইটেল চট্টোপাধ্যায়। যাকে রবীন্দ্রনাথ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি শরৎচন্দ্র রায়। নামের শেষে শিরোনামের অবিমিশ্রতার অভাবে বাংলা সাহিত্যের জগত এক দারুণ মুখরোচক গল্প থেকে বঞ্চিত হল বটে, তবে রবিঠাকুরের চরিত্রের বিশেষ এক দিক সূক্ষ্মভাবে প্রস্ফুটিত হল এখানে। তিনি তার নিভৃতচারী জীবনকে মূল্য দিতেন অনেক, অপরিচিত লোকদের সঙ্গে অনর্থক আলাপচারিতায় তার আগ্রহের অভাব ছিল। ফলশ্রুতিতে তার মানসিক শক্তির পুরো স্রোতটাকে তিনি পরিচালিত করতে পারতেন সৃজনশীলতার পথে - পড়ায়, চিন্তায়, বা লেখায়।

এমন নয় যে নিমগ্ন ও জনবিচ্ছিন্ন সাধনা ছাড়া পৃথিবীতে কেউ সাহিত্যের সৃষ্টি করেন নি। ভিক্টোরিয়ান ঔপন্যাসিক, এবং নারী সাহিত্যের পথিকৃৎ জেন অস্টিনের ব্যাপারে আমরা জানি যে - তার জীবনের প্রায় সব উল্লেখযোগ্য উপন্যাস তিনি লিখেছেন বাড়ির ড্রয়িংরুমে বসে। বাড়ির সদস্যদের আসা-যাওয়া, গপ্প - আড্ডাবাজি, হইহল্লার ফাঁকে। এমন নয় যে ভিড়ের মাঝে লিখলে তার চিন্তা বেশী খোলতাই হতো, বরং স্বাধীনভাবে পড়া - চিন্তা করা - লেখার জন্যে একটা নিজস্ব কামরার অভাব হয়তো ছিল তার অপারগতাই। কিন্তু, তা তার সাহিত্যিক জীবনে বড় বাঁধা তৈরি করতে পারে নি। এদিকে, আবার অনেক সাহিত্যিক প্রকৃতিতেই গপ্পোবাজ। যে বা যারা নিজের পুরো জীবনটাই তুলে এনে ছুঁড়ে দিতেন লেখার পাতায়।

সৃজনশীল কাজে, বা আরও সংক্ষিপ্ত পরিসরে বললে সাহিত্য চর্চার ক্ষেত্রে একাকীত্ব কতোটুকু গুরুত্বপূর্ণ - এ প্রশ্নের কোন সর্বজনীন উত্তর আমাদের জানা নেই। কিন্তু যা আমরা জানি, তা হল, পৃথিবীর অসংখ্য কবি, সাহিত্যিক একাকীত্ব পছন্দ করতেন, একাকীত্ব খুঁজতেন, নিজেদের মহৎ সব সৃষ্টির পেছনে একাকী থাকার ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা এবং দ্ব্যার্থহীনভাবে কৃতজ্ঞতাস্বীকার করেছেন।

২।

বিগত এক যুগে একাকীত্ব, এবং জনসংযোগের প্রায়োগিক অর্থ বদলে গেছে। এ বদল ঘটেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিস্ফোরক অগ্রগতিতে। আপনার পরিচিত মানুষজনের মধ্যে সবচে মৃদুভাষী ব্যক্তিটিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, তথা ফেসবুক - ইন্সটাগ্রাম - টুইটার - কমিউনিটি ব্লগে নিয়মিত নিজের চিন্তাভাবনা ভাগ করে নেয়ার জন্যে বাকপটু পরিচিতি লাভ করতে পারে। অপরদিকে, বন্ধুদের আড্ডায় সবচে প্রাণবন্ত সদস্যের যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন অ্যাকাউন্ট না থাকে, তবে তাকে আপনি - আমি অভিহিত করি অসামাজিক বলে।

এই পরিবর্তিত বাস্তবতায় লেখক - সাহিত্যিকদের একাকীত্ব, বা জনবিচ্ছিন্নতার বিষয়টিও বদলে গেছে। ব্যক্তিজীবনে যে যেমনি হোন, দেশী বিদেশি জনপ্রিয় কবি - প্রাবন্ধিক - কথা সাহিত্যিকদের এক বিশাল অংশকে আমরা আবিষ্কার করছি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দারুণ সোচ্চার অবস্থায়। হাতে গোনা অল্প ক'জনই আছেন, যাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপস্থিতি অনুজ্জ্বল। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খ্যাতিসম্পন্ন সাহিত্যিকদের প্রায় সবারই একটি করে ভেরিফাইড ফেসবুক - টুইটার - ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট আছে। তার সবগুলিই যে সাহিত্যিকরা নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করেন, এমনটা নয়। ক্ষেত্রবিশেষে তাদের এজেন্টরাও তাদের হয়ে তথ্যগুলি তাদের পেইজে শেয়ার করেন। আবার কোন কোন সাহিত্যিককে দেখা যায় নিজেই নিজের পেইজে অনেক সক্রিয় অবস্থায়। উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করা যেতে পারে পর্তুগিজ ভাষার আন্তর্জাতিক বেষ্টসেলার পাওলো কোয়েলহো, বা তুর্কি - ইংরেজি ভাষার জনপ্রিয়তম কথাসাহিত্যিক এলিফ শাফাককে। তারা প্রায়ই নিজ নিজ ফেসবুক - ইন্সটাগ্রাম পেইজ থেকে সাম্প্রতিক সময়ের ইস্যু নিয়ে স্ট্যাটাস দেন, ভিডিও শেয়ার করেন। পাঠকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন।

আবার একই সময়ে আমরা জাপানিজ লেখক হারুকি মুরাকামিকেও পাই, যিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে এড়িয়ে চলেন তো বটেই (যদিও তার একটা ভেরিফাইড পেইজ ফেসবুকে আছে, যাতে প্রতিনিয়ত তার নতুন লেখা/ সাক্ষাৎকার শেয়ার হয়), অনলাইনে যার ভিডিও ইন্টারভিউ বা বক্তৃতাও খুব একটা নেই। মুরাকামির এক সাক্ষাৎকারে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাপারে তার মতামত পড়েছিলাম একবার যার ভাবার্থ অনেকটা এরকম যে - 'ফেসবুক বা টুইটারে অসংখ্য মানুষের অগণিত শব্দের মাধ্যমে প্রকাশিত অনুভূতি আমার মধ্যে ভীতির সঞ্চার করে। মানুষ খুব সম্ভবত শব্দের বিস্ফোরক শক্তির ব্যাপারে এখনো পুরোপুরি সচেতন হয়ে ওঠে নি।'

৩।
প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন হল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সূত্রে প্রাপ্ত এই পরিবর্তিত গনসংযোগের পদ্ধতি আমাদের লেখক সমাজকে কীভাবে প্রভাবিত করছে, এবং কীভাবে তাদের পরিচয়কে নতুন করে নির্মাণ - বিনির্মাণ করছে।

সন্দেহ নেই যে নিউ মিডিয়ার উসিলায় অনেক প্রতিভাবান লেখক দ্রুতগতিতে নিজের পাঠকের কাছে পৌঁছতে পারছেন, নিজের একটা ফ্যানবেইজ দাঁড়া করাতে পারছেন, নিজের একটা মার্কেট ভ্যালু তৈরি করতে পারছেন। আমাদের পত্রিকার সাহিত্যপাতাগুলোর এক বড় অংশ গোত্রপ্রীতিতে আক্রান্ত, তাদের মধ্যেও এলিটিজম কাজ করে, এবং সহজে সাহিত্যপাতার সম্পাদকদের নেকনজর পাওয়া যায় না বলে তরুণ লেখকদের অনেকেই বেছে নিচ্ছেন ফেসবুক, বা ব্লগের পাতাকে - নিজের সাহিত্যকর্ম প্রকাশের এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় আজকের দিনে জন্মালে বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে একটি লেখা পত্রিকায় ছাপিয়ে বীরদর্পে বাংলা সাহিত্যের ভুবনে পদার্পণ করতে পারতেন কি না তা নিয়ে আমরা সংশয়ী। হয়তো তাকেও স্লেট হিসেবে বেছে নিতে হতো নীল মুখবইয়ের সাদাপাতা। তবে, ফেসবুকে মানিকের চে' বেশী ফ্যান ফলোয়ার, এবং 'লাইক' কামানো কোন লেখক মানিককে সাহিত্যিক হিসেবে পুঁছতেন কিনা, তাও ভেবে দেখবার ব্যাপার।

এবং এই প্রশ্নটি থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুব এঙ্গেইজড থেকে সাহিত্যচর্চার প্রয়াসকে সন্দিঘ্ন চোখে দেখার পথ প্রসারিত হয়। ফেসবুকে একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক শব্দের মধ্যে লেখা পোস্ট মানুষের মধ্যে ছড়ায় দ্রুতগতিতে। সেই ২০০ - ৪০০ শব্দের ছাঁচে ক্রমাগত চিন্তা ও লেখার অভ্যাস গড়ে উঠলে ২০০০ - ৩০০০ শব্দের গণ্ডিতে একটা গল্প, বা আরও বড় পরিসরে, বিস্তীর্ণ পটভূমিতে উপন্যাস লিখবার চর্চা হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে কি, যেমন টি - ২০ 'র চক্করে পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে ওয়ান ডে' ক্রিকেট, বা টেস্ট ম্যাচের সৌন্দর্য?

পরিশ্রমের পাশাপাশি লেখকের অন্যতম আর একটি গুণ হচ্ছে একলব্যের মতো স্থির দৃষ্টিসম্পন্ন হওয়া। রাষ্ট্র - সমাজ - অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয়ে প্রত্নতাত্ত্বিকের মতো নিজের পূর্বের লেখকদের মতামত ক্রমাগত খুঁড়ে খুঁড়ে, ফের স্থপতির মতো স্থৈর্যে নিজের বক্তব্য গঠন করা। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে হলে আপনাকে প্রতিটা গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ইস্যু গরম থাকতে থাকতেই নিজের ফেসবুক পেইজে তা নিয়ে একটা প্রমাণ সাইজের স্ট্যাটাস দিয়ে চিন্তার প্রাসঙ্গিকিকরন করতে হয়। এভাবে প্রাসঙ্গিক থাকা যায়, কিন্তু চিন্তার ধারাবাহিকতা রক্ষা সম্ভব হয় কি?

সাহিত্য চর্চা কে কীভাবে করবেন - এটা ঠিক করে দেয়ার অধিকার কারো নেই। কিন্তু এও তো একজন সচেতন লেখকের পক্ষে অগ্রাহ্য করা সম্ভব নয় যে, আমাদের মনের এক সুপ্ত বাসনা কালোত্তীর্ণ সাহিত্যকর্মের সৃজন, যা আমাদেরকে আমাদের মৃত্যুর পরেও প্রাসঙ্গিক করে রাখবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। আমাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চর্চিত সাহিত্যকর্ম কী আমাদের সেই অমরত্বের দিকে নিয়ে যাচ্ছে? আমাদের সমাজ, আমাদের সময়, আমাদের দেশ, আমাদের পৃথিবী নিয়ে পরিকল্পিত, পরিশ্রমী, ও স্থায়ী কোন বক্তব্য তৈরিতে সহায়তা করছে, যেমনটা সম্ভব হয়েছে 'খোয়াবনামা', 'জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা', বা 'আগুনপাখি'র মতো সুপরিকল্পিত ও সুলিখিত উপন্যাসে? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অল্পকথায় প্রকাশিত খণ্ডিত বক্তব্য আমাদের অধিক সংখ্যক লাইক - কমেন্ট - ফ্রেন্ড - ফলোয়ার হয়তো এনে দিচ্ছে, কিন্তু তা কি আমাদের আরও ছড়িয়ে, আরও সৃজনশীল উপায়ে গল্প বলার যোগ্যতাটুকু কেড়ে নিচ্ছে না? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উদ্ভূত উড়ো মন্তব্যের জেরে ঝগড়াঝাটি কি আমাদের অবসর সময়টুকুকেও আরও বিপন্ন, বিষণ্ণ করে তুলছে না? সাময়িক ইস্যুতে প্রকাশিত সাময়িক মতামতের জেরে পাওয়া সাময়িক লাইক - কমেন্ট - ফলোয়ারের ভারে ভারাক্রান্ত মস্তিষ্কে আমরা কি আরও সূক্ষ্মভাবে চিন্তা করবার যোগ্যতা হারাচ্ছি না?

হ্যাঁ বা না - এ উপরের প্রশ্নগুলির উত্তর দেয়া মুশকিল। তবে প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও অগ্রগতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে গিয়ে চিন্তক - লেখকদের আইডেন্টিটি কিভাবে নির্মিত - বিনির্মিত হচ্ছে, এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক দৃষ্টি রাখা উচিৎ, এ প্রস্তাবনায় হয়তো আমরা একমত হতে পারি।

(ঈষৎ সম্পাদনাসহ লেখাটি আজকের ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে প্রযুুক্তির অগ্রগতি ও চিন্তাশীলদের পরিচিতি শিরোনামে। )

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৫৫

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: এখনকার দিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনেকাংশেই লেখক-পাঠকের মধ্যকার সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো লেখক কোনো নির্দিষ্ট লেখায় যদি বেশি লাইক ,শেয়ার পেয়ে যান,তাহলে বেশি লাইকের ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি সাধারণত একই ধরণের লেখা বারবার পোস্ট করতে চান। ফলে লেখক যেমন একটি নির্দিষ্ট ধারায় অভ্যস্ত হয়ে যান, তেমনি পাঠকও সেই ধারার বাইরের কোনো লেখাকে সহজে স্বাগত জানায় না।ফলে একটা নির্দিষ্ট গণ্ডিতে আটকে যায় সেই লেখকের সাহিত্য।আর তাই সুচিন্তিত,সুলিখিত,সময় নিয়ে লেখা উপন্যাস বা বড়ো গল্প তাঁর লেখা হয়ে ওঠে না।আর এখনকার দিনে লেখার সাথে জনপ্রিয়তাও একটা মানদণ্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোতে সাধারণ পাঠকেরা সবসময়েই খোঁজেন যে, তাদের প্রিয় লেখক কী বললেন এ ব্যাপারে? যদি পাঠকের মতের সাথে মিলে যায় তো ভালো,না মিললে গালি খেতে হয় লেখককে।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:১০

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: মন্তব্যে ধন্যবাদ তমাল সাহেব। দুটো পয়েন্ট উদ্ধৃত করলেন, তার মধ্যে প্রথমটা, নিজের তৈরি হয়ে যাওয়া পাঠক সার্কেল ধরে রাখার জন্যে একই ধাঁচের লেখা লিখতে থাকা - এ সমস্যাটা বোধয় প্রাচীন, সোশ্যাল মিডিয়া - অনলাইন স্ফিয়ারের আগেও ছিল। এবং এটা মিউজিক কম্পোজারদের ক্ষেত্রেও খাটে, নয় কি? আমার আগ্রহ ছিল মূলত সোশ্যাল মিডিয়ার আবির্ভাব লেখক - চিন্তকদের জীবনে নতুন কি কি সুবিধা - অসুবিধা তৈরি করেছে তাতে ফোকাস করা। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় যে পয়েন্ট আপনি রাইজ করলেন, তাতে আমি সহমতজ্ঞাপন করছি। পাঠকের মতের সঙ্গে লেখকের মত মিলে গেলে যত দ্রুত তারা লেখককে মাথায় তুলে নেন, আবার মতের অমিল হলে তারচেয়েও দ্রুতগতিতে আছড়ে মাটিতে ফেলেন।

২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:২৮

রানার ব্লগ বলেছেন: রবি বাবু কিন্রু শরৎচন্দ্রের উপর রুষ্ঠ ছিলেন কারন বাংলা সাহিত্যে ততকালীন সময় রেভ্যুলেশন ঘটিয়েছিলেন। তখন সবাই রবীন্দ্রনাথের লেখার স্টাইল ফলো করতো সেই রাবেন্দ্রিক যুগে একমাত্র শরৎচন্দ্র নিজের স্টাইল দার করাচ্ছিলেন।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:১৬

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: রবীন্দ্রনাথ শরতচন্দ্রের উপর রুস্ঠ ছিলেন, এমনটা আপনি কি পড়েছেন কোথাও, নাকি নিজের মতামত দিলেন? রবীন্দ্রনাথের ছিন্ন পত্রাবলী পড়ে দেখার অনুরোধ। ওটা তার ২৫ - ৩০ বছরের মধ্যে লেখা চিঠির কালেকশন। এই গঠনকালীন সময়েই তিনি নিজের যোগ্যতার ব্যাপারে এতটা শক্তভাবে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, আমার মনে হয় না শরৎচন্দ্রের প্রতি হিংসা পোষণ করে সময় নষ্ট করার কোন প্রয়োজন তার ছিল। বিশেষত, ১৯১৩ সালে সাহিত্য নোবেল পাওয়ার পর তার স্থান হয় পৃথিবীর শীর্ষ কবিদের কাতারে। সারা দুনিয়া ঘুরে বেরিয়ে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চিন্তক - লেখক - কবি - দার্শনিকের সঙ্গে তিনি মতবিনিময় করে বেড়িয়েছেন, বক্তৃতা দিয়েছেন। এসব কিছু মাথায় রেখে, রবীন্দ্রনাথের শরৎচন্দ্রের প্রতি রুস্ঠ হওয়া , তাও স্রেফ তার স্টাইল ভিন্ন ছিল বলে, আপনার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, আমার কাছে খুব একটা যৌক্তিকও মনে হয় না।

৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: ছিন্নপত্রাবলি আমার হাতে। বিভিন্ন পাতায় চোখ বুলাচ্ছিলাম। তখন ই আপনার পোষ্ট চোখে পড়লো।
অতি মনোরম লিখেছেন।

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৩১

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ছিন্নপত্রাবলীর উপর একটা পোস্ট দেন রাজীব ভাই। ধন্যবাদ পাঠে ও মন্তব্যে।

৪| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:৫৪

মাসুদুর রহমান (শাওন) বলেছেন: আমার কেমন জানি কারো সাথে মিশতে তেমন একটা ভালো লাগেনা...

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৩২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: যেটা ভালো লাগে না, সেটা জোর করে না করাই ভালো। শুভকামনা।

৫| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৫১

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: +++++

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৩১

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ, মাইদুল ভাই!

৬| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:০৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: লেখা আস্তে আস্তে হিট হইতেছে

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৩৫

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: পত্রিকায় লিখি অনেক দিন নেওয়াজ ভাই। ২০০৯ এর ফেব্রুয়ারি থেকে। অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যে।

৭| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:১৭

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: রবি ঠাকুর একজন উঁচুদরের লেখক ছিলেন ঠিকই কিন্তু তিনি সাধারনের লেখক ছিলেন না।তাছাড়া তিনি সাধারন লোকও ছিলেন না।তিনি ছিলেন একজন জমিদার,অনেক বিলাসী জীবন ছিল তার।যৌবনের প্রথম দিকটা বিলাতে কাটিয়েছেন।
তিনিও আড্ডাবাজই ছিলেন,তবে সমাজের উচ্চস্তরের লোকজনদের সাথে সাধারনের সাথে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.