নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন জেনারেল ব্লগারের নিজের সম্পর্কে বলার কিছু থাকে না ।

আবদুর রব শরীফ

যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!

আবদুর রব শরীফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

খোঁজ দি সার্চ \'কালো মেয়ে\'

২০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:৩৩

গল্পটি সিরাজগঞ্জের একটি মেয়ের মায়ের গল্প! যে গল্পের বাবা তার নানার বাসায় তিন বেলা খাওয়ার বিনিময়ে কাজ করতেন! গরু ছাগল দেখা শুনা করতেন!
.
অত্যন্ত সৎ এবং কর্মঠ হওয়ায় স্থানীয় জমিদার তার মেয়েকে রাখাল ছেলের কাছে বিয়ে দেয়! গল্পের সূচনা এখানেই.....!
.
শ্বশুরের কাঠের ব্যবসার সুবাধে জামাই বাবাজিও কাঠের ব্যবসা শুরু করেছিলেন! এভাবে চলছিলো দিন!
.
জায়গা জমির বিরোধের জের ধরে একদিন মেয়েটির বাবাকে তার চাচারা লাঠি দিয়ে আঘাত করে! মেয়েটির ভাইকেও আঘাত করে! মা কেও আঘাত করে!
.
এলাকাবাসী নীরবে দাঁড়িয়ে দেখছিলো সব! ওদের একটি সিএনজি ছিলো! সিএনজি চালক কে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে এসে মেয়েটি সবার পা ধরলো প্লিজ তার বাবা মা ভাইকে একটু সিএনজিতে তুলে দিতে!
.
নির্বাক দর্শকের মতো তাকিয়ে ছিলো গ্রামবাসী......!
.
ঘটনার কিছু পরে কিছু মানুষের বিবেকবোধ জাগ্রত হয়
.
সময় পেরিয়ে গেলে মেয়েটি আরো দুই একজনের সহযোগিতায় তার বাবা মা ভাইকে সিএনজিতে তোলে!
.
চাচারা মনে করেছিলো মেয়েটি ওদের নিয়ে থানায় যাচ্ছে তাই বার বার সিএনজি আটকানোর চেষ্টা করছিলো! এভাবে পনের মিনিটের রাস্তা হাসপাতালে পৌঁছতে আধা ঘন্টা হয়ে গিয়েছিলো!
.
হাসপাতালে তার বাবার মাথায় দশ সেলাই ভাইয়ের মাথায় চার সেলাই দিলো! কিন্তু কিছুক্ষণ পর খবর এলো তার মা আর নেই!
.
মেয়েটির মা কোন মহিলা মারা গেলে তার শরীল ধৌত করে দিতো! মেয়েটিরও শখ ছিলো কাজটি শিখার কিন্তু মা বলতো তুমি ছোট মানুষ কাজটি শিখতে গেলে ভয় পাবে!
.
সেই মেয়ে নিজ হাতে তার মৃত মাকে গোসল করিয়ে দিলো! কাফন পড়িয়ে দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে শেষ বিদায় দিলো!
.
মা মারা যাওয়ার পর তাদের বাসায় শত শত মানুষ দেখতে আসলো! মেয়েটি চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বললো, আমার মাকে যখন মারা হয় তোমরা তখন কোথায় ছিলে! নীরব দর্শকের মতো কেনো দাঁড়িয়ে ছিলে বলে বলে সবাইকে গেট থেকে বাহির করে দরজা লাগিয়ে কান্না করতে থাকলো!
.
কেউ কেউ মেয়েটিকে সান্ত্বনা দিতে থাকলো!
.
মেয়েটির মা বেঁচে থাকতে মেয়েটির জন্য একটি ছেলে ঠিক করে রেখেছিলেন! ছেলেটি মাস্টার্স পাশ বেকার ছিলো তাই টিউশনি করতো আর ছোট মুরগীর খামার দিয়ে কোন রকম চলছিলো!
.
ছেলেটি ক্লাশ টেন থেকে মেয়েটিকে পছন্দ করে আসছিলো! মেয়েটিও দেখতো সে কলেজে আসা যাওয়ার সময় একটি ছেলে দাঁড়িয়ে থাকতো এতোটুকুই!
.
মেয়েটির বাবা খোঁজ নিয়ে দেখলো ছেলে শিক্ষিত এবং ফ্যামেলিও মন মতো! ছেলেটি তার পর থেকে মেয়ের বাবা , মা এবং মামার সাথে কথা বলতো
.
মেয়েটির বান্ধবী একদিন বললো ছেলেটি ভালো ইংরেজি পড়ায়! সে দুদিন ইংরেজী পড়তে গেলো এবং দেখলো ভালো ই পড়ায়!
.
মেয়েটির বাসায় ইংরেজি মাষ্টার এসে পড়িয়ে যেতো বিধায় সে আর গেলো না! ছেলেটি মেয়েটির নাম্বার নিয়ে সব খুলে বললো! তার ভালো লাগার কথা! পারিবারিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার কথা
.
মেয়েটিও স্বপ্ন দেখতে থাকলো
.
মা মারা যাওয়ার পর ছেলেটি তাদের বাসায় এসে কবর জিয়ারত করে গেলো এবং মেয়েটিকে বললো তুমি আমাকে কখনো ছেড়ে যেও না! মেয়েটি বললো, আমি তো এখন এতিম হয়ে গেছি উল্টো তুমি আমাকে ছেড়ে যেও না!
.
বাঁধ সাধলো ছেলের বড় বোন! সে কালো আর বেটে মেয়ের সাথে তার ভাইয়ের বিয়ে দিবে না! আল্টিমেটাম হিসেবে বললো তুই যদি ঐ মেয়ে বিয়ে করোস তাহলে আমাদের সাথে তোর আর কোন যোগাযোগ নেই!
.
ছেলেটি মেয়েটিকে বললো তার জীবনের চেয়ে তার ভাই বোন অনেক প্রিয়! সে মেয়েটিকে বুদ্ধি দিলো তুমি আমার বোনের কাছে গিয়ে তাকে বুঝিয়ে বলো আমাদের কথা!
.
মেয়েটি তাদের বাসায় গিয়ে তার বড় বোনের পা ধরে কেঁদে কেঁদে বললো তাদের ভালবাসার কথা! বড় বোন বললো আচ্ছা ঠিক আছে তুমি বাসায় যাও আমি দেখি কি করা যায়!
.
মেয়েটি বাসায় চলে আসলো দুদিন পর ছেলেটি ফোন দিয়ে ক্ষমা চেয়ে বললো এই সম্পর্ক রাখা সম্ভব না! সে মেয়েটি এবং ফ্যামেলি ছেড়ে বহুদূরে চলে যাবে!
.
তারপর ছেলেটি ঢাকায় চলে যায়! একটি চাকরি পেয়ে যাওয়ায় মাস শেষে টাকাগুলো ভাই বোনের কাছে পাঠায় আর মেয়েটিকে তার বন্ধুরা ফোন করে বলে সে কখনো বাড়িতে আসবে না! তার ভাই বোনের যখন শুধু টাকা দরকার ওরা টাকা নিয়ে সুখে থাকুক!
.
আপাতত গল্পটি এখানে শেষ হয়নি! গত ছয় মাসে শেষ বিকেলের মেয়ের জীবনে ঘটে যাওয়া গল্পের কিছু অংশ তুলে ধরা হলো মাত্র!
.
গল্পটি শেয়ার করতে গিয়ে সে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ার কারণে ফোনের লাইন কেটে দিয়ে গল্পটি লিখতে বসলাম! সে কেঁদে চলছে!
.
ফোনে লাইন কেটে দেওয়ার পিছনে আরেকটি কারণ আছে, মেয়েটি বলেছিলো ভাইয়া আমি কালো বেটে এটা কি আমার দোষ!
.
তার ধারণা আমি গল্প লিখি বলে এই প্রশ্নের উত্তরও আমার কাছে আছে! শোন মেয়ে, সব প্রশ্নের উত্তর থাকে না!
.
গল্পে আমিও তো কত নীতি বাক্য বলি! স্লোগান দিই! কিন্তু সামনে বিয়ে করার মানসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেল লাইনে বসে সুন্দর লম্বা মেয়ের খোঁজ করি! খোঁজ দি সার্চ!

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:৫০

শামচুল হক বলেছেন: গল্প ভালো লাগল।

২০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:৫৭

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: বাস্তব ঘটনার আলোকে

২| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৩৪

এই স্বাধীনতা চাইনি আমি বলেছেন: ওহ !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.