নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন জেনারেল ব্লগারের নিজের সম্পর্কে বলার কিছু থাকে না ।

আবদুর রব শরীফ

যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!

আবদুর রব শরীফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আসিতেছে...আসিতেছে....!

২০ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:১৮

একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য থুক্কু স্বল্প দৈর্ঘ্য ছিঃনেমা

জয়া কি জওয়ানি

১.
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের রাস্তায় শরীফ তার বন্ধুদের সাথে হাঁটছিল। হঠাৎ এক সুগন্ধি নাকে থাবড়া দিল।আহা! কী সুবাস!!
উৎস খুঁজতে গিয়ে টাসকির উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ল।সাথে সাথে হৃদয়ে বেজে উঠল Kenny G এর স্যাক্সোফোন,রবি শংকরের সেতার,জুয়েল আইচের বাঁশি,না জানি আরো কত কি?
কি দেখে এমন টাকসিত??
সে যে তার দাদার আমলের ক্রাশ জয়া

২.
আহা! কী দেখিলাম!!

বেচারা শরীফ! তার 'রাতোঁ কি নিঁদ' নিয়ে গেছে চবি'র চেয়ারম্যানের মেয়ে। না খেতে পারে, না হাগতে পারে।
দিন রাত শুধু জয়া আর জয়া। হোক না সে শরীফের দাদীর বয়সী। 'ক্রাশ তো ক্রাশ হোতা হ্যায়।'
বন্ধুরা ডাকে,'ওই শরীব্বাই?"
শরীফ শুনে, "ওই জয়ার জামাই!"

অবস্থা খুব খারাপ। জগ থেকে পানি টেবিলে পড়ে কোথায় কোথায় গড়ায় সে খেয়াল কে রাখে? খেতে গিয়ে কতবার আমের বদলে আলু করলায় কামড় দিচ্ছে। শরীফের মা ভীষন চিন্তিত। কারণ এই লক্ষণ অনেক পুরোনো। শরীফের দাদীও চিন্তিত, লক্ষণ সব মিলে যাচ্ছে।

৩.
ইদানীং শরীফের নতুন ঠিকানা,নবীন চেয়ারম্যানের বাড়ীর সীমানা। 'আহা! জয়া যদি তার চাঁদ বদন নিয়ে সুপারি গাছের তলায় দাঁত মাজতে আসে!'
জয়ার বড় ভাই আজাদ। ভীষণ খাটাশ! বাড়ীর চারিদিকে এতো উঁচা দেয়াল দিছে বেচার শরীফ পাঁচ ফুট দশ ইঞ্চি নিয়েও চারটা ইটের উপর দাড়িয়ে মশার কামড় খায়,আর জয়ার ছাই দিয়ে মাজা কালো দাঁতগুলো দেখে।

'এই শরীব্বা, তুই এইখানে কি?' সানি এসে শরীফের কলার ধরে বলল।শরীফ পাটকাঠি শরীর নিয়ে তেড়ে গেল.
'তা তে তোর কি?- শরীফ।
সঙ্গে সঙ্গে সানি ঘুষি মেরে শরীফকে ফেলে দিল।সানি চ্যালা গাজী গিয়া শরীফকে রামধোলাই দিল।
সানি জয়ার বাবার বন্ধু বিশিষ্ট চোরাকারবারি রোহান সাহেব আর নীলি বেগমের পুত্র। সানির বড় ভাই অর্ণব তার একটা বউ আছে তারপরও জয়ার দিকে কুনজর দেয়।
যাউগ্গা!

সানি এবং তার চ্যালার কাছে মার খেয়ে শরীফ এদিকওদিক তাকিয়ে দেখল কেউ আছে কিনা। কেউ না থাকলে অবশ্যই সানির হাত ঠ্যাং ধরে জান নিয়ে ভেগে যেত। কিন্তু জয়া -মেরি জানে জিগার- কালো ছাই দিয়ে মাজা দাঁত দেখিয়ে তাকিয়ে আছে।

শরীফঃ সানি তুই আমার গায়ে হাত দিয়ে ভালো করিস নাই।আমি তোকে দেখে নেব।
সানিঃ জয়ার দিকে দেখেছিস তো তোর চোখ তুলে মারবেল খেলুম।
শরীফঃ আমি জয়ারে ভালবাসি। তুই সইরে যা সানি।
সানিঃ জয়া আমার, তোরে যেন আর এই এলাকায় না দেখি। যদি দেখি তোর দেড় ফুটের ঠ্যাং আধাফুট কইরা দিমু,মাইন্ড ইট!
শরীফঃ আঁই জয়ারে ছাড়া বাঁইচতান্ন। জয়া আমার জান।আইস আঁরার শোভাকলোনীত। তুই সানিরে লিওনি বানাই দিয়ুম।

ওদিকে সানি হনহন করে চেয়ারম্যান বাড়িতে ঢুকে গেল। জয়ার দিকে তাকিয়ে বিটকেলে হাসি দিয়ে বললো, 'তুই জয়া আমার দিল জিত লিয়া। আজিয়ে তোর বাপর লগে কথা কমু!'

সানি হনহন করে হেঁটে চেয়ারম্যান সাহেবের কাছে গেল।
সানিঃ আংকেল আই ওয়ান্ট টু জয়ারে বিয়া করতে চাই।
চেয়ারম্যানঃ ওরে মারে! আহো ভাতিজা, আহো!
পাশ থেকে জয়ার ভাই বললো,
'সানি,বন্ধু। আজ থেকে জয়া তোমার। আসো আমরা এক সাথে পান্তা খাইয়া সেলিব্রেট করি!'

৪.
জয়া দাঁত মাজতে মাজতে চিন্তা করছে, শরীব্বা ছেলেটা একটু পাটকাঠি হলেও সুন্দর আছে। তাঁর কী সুন্দর সজারুর মতো গোঁফ।
'এই নিয়ে আমার প্রেমিক সংখ্যা কত হলো?' বেচারি একটু চিন্তায় পড়ে গেছে। অবশ্য শরীফের বাবা,দাদাসহ হিসেব করলে তিন প্রজন্ম মিলে পাঁচ-সাতশ তো হবেই!

ঘরে এসে ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় নিজের দিকে তাকায় জয়া।
"সুন্দরী, তোমার কোনো অধিকার নেই তিন প্রজন্মকে এভাবে ঝুলিয়ে রাখার। বাকি সবতো বুড়া তাই ওরা বাদ। এবার শরীফ!" -জয়ার ভেতর থেকে কে যেন কথাগুলো বললো।
(এখানে একটা গান -জওয়ানি জানেমান)
এমন সময় জয়ার রুমে ঢুকল সানি।
সানিঃ জয়া ডার্লিং, আংকেল আমাদের বিয়ের জন্য রাজী হয়েছে। এবার আর কেউ আটকাতে পারবে না।তুমি শুধু আমার!
জয়াঃ নিজের চেহেরা দেখছস আয়নায়? তোর চাইয়া ঢ্যাংগা শরীব্বা অনেক সুন্দর। আই লাভ শরীফ!
সানিঃ কী বললি তুই? এটা আমি হতে দেব না। তুই শুধু আমার।
কথা শেষ করেই একপ্রকার দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে গেল সানি। বাইরে এসে সাঙ্গপাঙ্গদের সাথে গাড়ী চড়ে বসল।

সানিকে চিন্তিত দেখে ওর ছোঁকরাগুলো দায়িত্ব দেখিয়ে বললো,
সাজ্জাতঃ বস, আপনার কি হইছে?
রোহানঃ বস,কন কি অইছে? কোন হালায় কি করছে?
নীরবতা ভেঙে সানি বললো,
'শরীব্বারে সাইজ করতে হইব। আমার জানে জিগারের দিকে নজর দিছে। শরীব্বাআআআআ, আমি তোরে দেইক্কা লমু!'

বাসায় আসতেই অর্ণবের সাথে দেখা সানির।
সানিঃ ভাই,আমি জয়ারে বিয়া করতে চাই। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিয়ার আয়োজন করো!
'জয়া তো আমার' মনে মনে বললো অর্ণব।
তবু মুখে বললো, আচ্ছা, ঠিক আছে?

অর্ণব তার বাবা রাহাত সাহেবের রুমে যায়।
উনি বসে বসে হুঁক্কা টানছিলেন, আর ভাবছিলেন " বিড়ির দাম বাড়ল কেন? মাঝে মাঝে বিড়িতে সুখটান দিয়ে চেয়ারম্যানের মেয়ে জয়ারে ভাবতে কত ভাল লাগত! হুঁকা টেনে শুধু অর্নবের মা রচনা বেগমের কথা মনে পড়ে। মুখটা বিস্বাদ হয়া যায়। "

'ড্যাডি, সানি জয়ারে বিয়া করবার চায়' বললো অর্ণব।
'আহ্, জয়ায়য়য়য়য়য়য়য়' রাহাত সাহেব মনে মনে ভাবে। তবু মুখে বলে,
'ঠিক আছে, আমি নবীন চেয়ারম্যানের লগে কথা কমুনে এহন যাও!'

রচনা বেগম আর অর্ণবের বউ পপি বেগম দরজায় দাঁড়িয়ে সব শুনছিল।
রচনা বেগম মনে মনে ভাবে, 'বুইড়া খাটাস, এখনো জয়ার নাম শুনলে কেমন ছোঁকছোঁক করে!'
'এক পোলার বাপ হইছে এখনো মাইয়া মাইনষের দিকে নজর। আমি কি কম সুন্দরী? হুহ্- পপিও মনে মনে অর্ণবকে গাল দেয়।
বউ শাশুড়ী একজন আরেকজন জনের দিকে তাকিয়ে বলে 'হুহ্'।
'আমি তো জুয়েল্লারে বিয়া করতাম চাইছি,আব্বাই এই অর্ণবরে বিয়া দিয়া আমার জীবন ত্যানা ত্যানা করে দিল-পপি মনে মনে বলল।
*আমি শুনতে পাইনি কিছু


৫.
শরীফের বাপ ইমরান মিয়া গরীব মাষ্টার। শরীফের বড় বোন লতা বানু সুন্দরী মেয়ে। তাঁকে পছন্দ করে বাপ্পি। অবশ্য লতার পছন্দ শুধু একজন, সে সানিইইইইই।
যাউগ্গা।

ইমরান মিয়াঁঃ লতা মা,শরীব্বার কি হইছে তুই কিছু জানস? এইবার ও চাইর বিষযে ফেল!
লতাঃ না তো, আব্বা। আর ফেইল করলে এমুন কি? আমাদের বংশে সবাইতো ফেইল করছে। ক্যান, আপ্নেও তো ফেইল করছিলেন!
ইমরান মিয়াঁঃ এই ছেমড়ি,তুই এতো বেশি কথা বলস ক্যান?ভাই বোন দুইজনই আকাম্মার ধাড়ি।
ইমরান মিয়াঁ মনে মনে চিন্তা করে এই মাইয়া আর ঘরে রাখা যাইতো না।দেখি বাপ্পির বাপের সাথে কথা বলে দেখি।আহা! সেদিন যদি জয়ারে ভাল না বাসতাম তাহলে আমিও পাশ করে যেতাম।

শরীফের বন্ধু জুয়েল, জাহেদ আর শুভ ঘরে ঢুকল।
জুয়েল ঃ লতা বু, শরীব্বা কই? আজ কয়দিন ধরে দেখি না।
জুয়েল লতা বু ডাকলেও মনে মনে একটু লতাকে ভালোও বাসে। যাউগ্গা!
লতাঃ শরীব্বা,হেইদিন সানির হাতে কেলানী খাইয়া বিছানায় পইড়া আছে!
জুয়েলঃ কী! সানির এতো বড় সাহস! শরীব্বার গায়ে হাত তোলে?
' হইছে, যে একখান রবিউলের মতো বডি,সে আবার সানিরে নিয়া কথা কয়- লতা মনে মনে বললো।
"এক কাজ কর যাইয়া সানিরে ভাইরাল কইরা দে।এই জুয়েইল্লা, তুই মিছকা হাসি দেস কেন?- লতা
(জুয়েল লতারে নিয়ে একটা গান গাইবে মনে মনে তাই শোনার দরকার নাই)
লতা মনে মনে ফুলে আরো বললো, 'পাশের বাড়ির রোমানা সেদিন বলছিল সানি নাকি জয়ারে বিয়া করতে চায়। এত্তো বড় সাহস! ইটিসপিটিস আমার সাথে,বিয়া করব জয়া রে। এ আমি হইতে দিমু না। কাভি নেহি!'

লতাঃ তোদের বন্ধুরে মারছে তোরা তো কিছুই করলি না!যাউগ্গা শরীব্বা তো আর একলা না, হেতির পিছে আব্বা গিয়াও মাইর খাইছিল,দাদাও হিহিহি'।
ওরা তিনজন ঘরে ঢুকে দেখে শরীফ কাইত হইয়া কোঁ কোঁ করছে।
জুয়েলঃ শরীফ, দোস্তির কসম, তোর গায়ে যে হাত তুলছে তার হাত আমি ভাইঙা দিমু!
জাহেদঃ ছিঁড়রা দিমু!
শুভঃ কাইট্টা লমু!
' আরে রাখ তোদের কাটা ছিঁড়া।আঁই জয়ারে চাই। হেতিরে ন পাইলে আঁই পূর্ণিমারে জড়াই ধরি কান্দুম!' ব্যাথিত কন্ঠে বলে শরীফ।


পরিচালনায়, তাসনূভা ঝিনুক
সার্বিক সহযোগিতায়, কলমের অধিকার গ্রুপ ৷
Stay tuned......

[গল্পের নায়ক আবদুর রব শরীফ জয়া আহসান নিয়ে স্ট্যাটাস দিতে দিতে এতো পপুলার হয়ে গেছে যে তাকে নিয়ে চলচ্চিত্র হচ্ছে ]

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:১৯

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: জয়া নিয়া এত কাহিনী। ৪০/৪৫ বছর বয়সেই কী দাদী নানী হয়ে যায় তাও বর্তমান যুগে :(

২| ২০ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: আপনাকে অনুরোধ করবো দূর্নীতিবাজদের নিয়ে কিছু লিখুন।

৩| ২০ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৪২

নেওয়াজ আলি বলেছেন: চমকপ্রদ
অনাবিল ভালো লাগলো ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.