নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু সিদ

আবু সিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

যাদুর আয়না (উপন্যাস) - ৪র্থ পর্ব

২১ শে জুন, ২০১৪ সকাল ১১:১৫

এতক্ষণ নাচ গান আর হৈ হল্লা করে এরা ক্ষুধার্ত ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। এদের অনেকে দুপুরে খায় নি। অনেকে সকালে একটু কিছু খেয়েছে। কিন্তু টাকা কোথায় এখন যে এতগুলো লোক খাবে? বুড়ি গায়িকা তবু বলে উঠল, আমার কাছে এই দশটাকা ছিলো- এই দিলাম! সে তার দশটাকা সবার সামনে রেখে অন্যদের বলল, যার যেমুন আছে দিয়া দ্যান। জব্বর ক্ষুধা লাগছে! এমুন এককান সুন্দর দিনে সবাই মিলে কিছু খাওন যাক। একে একে সবাই এক টাকা দু’টাকা পাঁচটাকা দিলো। অনেকের শূন্য হাত, তারা কিছু দিতে পারলনা। শায়ার কিছু দিলোনা কারণ তার অবশিষ্ট টাকা মরিয়ম নিয়ে নিয়েছে! সে মনে মনে উদ্বিগ্ন, মরিয়ম কি আদৌ কিছু দেবে? তাকে অবাক করে মরিয়ম বাকি সব টাকা দিলো আজ রাতের জন্য। এত ভালো আর কখনো লাগে নাই। নিজেরে এত সুন্দর কক্ষনো মনে হয় নাই। আমার খুব ভাল্লাগতাছে, শায়ারকে বলল সে।

এই বৃষ্টি ভেজা রাত করোটায় কোনো খাবারের দোকান খোলা থাকবে কিনা তা জানা নেই। খাবারের দোকান খোলা থাকলেও খাবার যে মিলবে তার নিশ্চয়তা কি ? তবু তারা জনা পাচেক নেমে পড়ল রাস্তায়। অনেক খুজে এক ছোট্ট সরু গলির ভিতর তারা বের করল যেনতেন একটা খাবারের দোকান। দোকানটায় শুধু সস্তা বিরানী পাওয়া যায়। চালের সাথে সস্তা মাংস আর একটু তেল দিয়ে ওরা বানায় এটা। মাংসটা আবার আসে অদ্ভুত উপায়ে। গত দিনে ফাষ্ট ফুডের দোকানে অপচয় হওয়া বা উপচেপড়া মাংস তারা কিনে নেয় শস্তায়। সেখান থেকে এই বিরানী। এখন দরিদ্র এসব হাভাতে লোকজন দেখে দোকানের ছোট্ট ভুড়ির মালিক যেন আশার আলো দেখল! তার বেচা বিক্রি আজ অনেক অনেক কম। আবার সেও যাচ্ছিল দোকান বন্ধ করতে। ভাগ্যিস মানুষগুলো এসে গেল! নাইলে সব নষ্ট হইত! নিজের লোকসানের হিসেব করে সে।



মাত্র দুশো দশ টাকায় বিকোবার মত জিনিস নয় এটা - দোকানদার বার বার তাদের বোঝায়। তারা কাকুতি মিনতি শুরু করল, ভাই, গরীব মানুষ আমরা। ব্যবসা তো সারা জীবন করলেন আজকা মানুষের একটু উপকার করেন! তার অপরিচ্ছন্ন খোচা খোচা দাড়িময় মুখে সে আতকে উঠল তাদের কথা শুনে। এখন তার কিছুতেই মনে পড়লনা যে কয়েক মিনিট আগে দোকান বন্ধ করলে এই দুশো দশ টাকাও তার লোকসান হতো। তার চোখ লাল হয়ে উঠল। যখন কিছুতেই তাকে রাজী করানো গেলনা, এদের একজন তার হাতের আঙটিটা খুলে দিলো। দোকানদার এতে খুশী হলনা! ‘এই দু’একশো টাকা দাম হইব’ বলতে বলতে সে টাকা আর আঙটিটা তার ক্যাশ বাক্সে রাখল। এবার খাবার দেয়ার সময় সে তিনশ টাকার হিসাবে দিলো।



দরিদ্র দলটার একজন বলল, আপনার বিরানী যে রাইখা দিলেন ওডি তো নষ্ট হইব। দোকানদার তার চোখ গরম করে বলল, এই মিয়া, নষ্ট হইলে হইব। আমার জিনিস আমি বুঝুম, আপনাগো কি? এমন কথায় এরা চুপসে গেল। আর কোন কথা হলোনা। দোকানদার তার দোকান বন্ধ করতে শুরু করল। এরাও জোরে পা চালাল এই পৃথিবীর দরিদ্রদের থেকে দরিদ্র, ক্ষুধার্তদের ভিতর ক্ষুধার্ত আর সবার থেকে বেশি বঞ্চিত মানুষদের উদ্দেশ্যে।

দু’চার মুঠো করে ভাগে পড়ছে সবার। এরা এতে খুশী। এদের অনেকের হয়ত না খেয়ে কাটত আজ রাত, কেউবা খেত কোনরকম। কিন্তু এখন সবাই যা হোক কিছু খাচ্ছে তাতে সবার ভিতর আনন্দ! দুঃখ ভাগাভাগি করে নিলে কমে যায় আর সুখ ভাগাভাগি করলে তা বেড়ে ওঠে। আজ রাতে অপূর্ব এই আশ্চর্য আয়নাটাতে ফুটে উঠছে অসাধারন এক ছবি। একদল মানুষ, সুখী শক্তিময়, রাতের খাবার খাচ্ছে। তাদের চারদিকে ঐশ্বর্য প্রাচুর্য আর পৃথিবীর সব থেকে দামী জিনিস। তাদের খাওয়ার ছবি আয়নায় যেন কোন রাজপ্রাসাদের সব থেকে উপাদেয় আর দামী খাবার। প্রত্যেক মানুষ এখানে উচ্চ মহান। খাওয়া শেষে তারা তৃপ্ত। তারা কারও ক্ষতির চিন্তা করছেনা। তাদের মনে কারও প্রতি হিংসা বিদ্বেষ নেই। সবার মনে সবার জন্য আস্থা বিশ্বাস আর ভালোবাসা।



খাওয়া শেষ হলো রাত দুটোয়। মরিয়ম আর শায়ার ভাবছে ঘরে ফেরার কথা। এত রাতে ফিরমু ক্যামনে? মরিয়ম ভাবছে। শায়ার বলল, চল এবার যাওয়া যাক। বৃদ্ধ লোকটা তার পাশে বসে। ক্যামনে যাইবা ভাই? গাড়ি কি পাবা? মরিয়মের মনে ভয় হলো, টাকাও তো নাই! এহন যামু ক্যামনে ? সে শায়ারকে বলল, হাইটা গেলে কতক্ষণে বাসায় পৌছামু? শায়ার কোনভাবে বিশ্বাস করতে পাছেনা যে তার পুঁজিবাদী বউ সব টাকা দিয়ে দিয়েছে আজ রাতের আসরে। বৃদ্ধ লোকটা বলল, হঁ, রাত অনেক হইচে- চল তুমারারে আগাইয়া দিই। তার কথায় আরও তিন চারজন দাড়িয়ে পড়ল তাদের এগিয়ে দিতে। মরিয়ম উঠে দাড়াল। আয়নার সামনে থেকে সরে যেতে মন চাইছে না তার। আবার সে আয়নার দিকে তাকাল। অপূর্ব, অনিন্দ্য সুন্দর এক নারী, যেন স্বর্গলোক থেকে আসা, তাকিয়ে আছে তার দিকে আয়নার ভিতরে।



রাস্তার জমে থাকা পানি প্রায় সবটা নেমে গেছে। রাস্তা ঘাট দোকানপাট কোথাও মানুষের চলাচল নেই। এই ছোট সমাাবেশে যারা এসেছিল তাদের অনেকে ঘরের উদ্দেশ্যে চলতে শুরু করল। অনেকের কোন ঘর নেই। অনেকের ফুটপাথ সম্বল। আজ বৃষ্টির কারনে এদের কোন গতি নেই। অনেকে যেখানে খেল সেখানে শোয়ার আয়োজন করছে। মরিয়ম শায়ার হেটে চলছে তাদের বাসার দিকে। হঠাৎ একটা ভাঙাচোরা পুরনো বাস ভোঁ জোরে বেরিয়ে যেতে যেতে এদের দেখে থামল। শায়ার বলল যে তাদের কাছে কোন পয়সা নেই।





বাসের হেল্পার বলল, আরে পয়সা লাগবনা। এই রাতে যাইবেন ক্যামনে, উইঠা পড়েন। তারা উঠে পড়ল যাত্রীবিহীন বাসটাতে। যেতে যেতে শায়ার বলল, ভাই একটু খারাপই লাগতাচে- ভাড়া না দিয়া যাইতাচি! বাসের ড্রাইভার তাকে সান্ত¡না দিলো, আপনাগো দেইখা ভাল্লাগছে। আপনাগো সেবা করার একটু সুযোগ দেন! যেতে যেতে বাসের ড্রাইভার হেল্পার মরিয়ম ও শায়ার সবার মনে হলো, এই পৃথিবীতে ভালো মানুষ এখনও অগণিত!



বাস থেকে নেমে ঘরের দরজায় এই মাত্র পৌছল তারা। সমস্ত বস্তি সারা পৃথিবী সাড়াশব্দহীন। বর্ষার দিন বলে হয়ত একটা কুকুরও বাইরে নেই, কোন ঘুপচি বা চালার ভিতরে ঠাঁই নিয়েছে। কতগুলো ব্যাঙের ’ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ’ শব্দ ভেসে আসছে দূর থেকে। তার মাকে জাগানোর কথা মনে করলনা শায়ার। মরিয়ম মনে মনে কামনা করছে যেন শাশুড়ি তার জেগে না থাকে। এত রাতে ঘরের বাইরে ছিল, লজ্জায় পড়ে যাবে সে!



তাদের কামনাকে ব্যর্থ করে রাতের বাতাসে ভেসে উঠল শাশুড়ির কণ্ঠস্বর, ফিরচোস ! এত দেরি করলি ক্যা ? খাইচোস কিছু? শায়ার কোন রকমে ‘হ্যাঁ’ ‘না’ ধরনের উত্তর দিয়ে ঘরে ঢুকে পড়ল।



বিছানায় শুয়ে মরিয়মের মনে ভেসে এল অপূর্ব সে আয়নায় দেখা তার অনিন্দ্য সৌন্দর্য। সে উঠে বাতি জ্বালাল। নিজের ঘরে রাখা আয়নায় মুখটা দেখল একবার। ‘নাহ’! হতাশ হলো সে, ‘এ তো সেই আগের ছবি’! শায়ার পাশ ফিরে শুতে শুতে জিজ্ঞেস করল, আবার উঠছো ক্যান? মরিয়ম এক নিমেষে বাতি নিভেয়ে ছিলো। স্বামীকে বলল, এমনি। এখন বুকভরা আফসোস তার, আয়নাডা যদি নিয়াসতে পারতাম!



সূর্যের আলোয় আজ ঝলমল চারধার। চর্তুদিকে জীবনের ব্যস্ততা আর মানুষের ভিড় দেখে বোঝার উপায় নেই যে গেল কদিন বৃষ্টিতে এলমেলো ছিল সব। নিউমার্কেটের কর্মচারী দোকানদার সবাই এসে গেছে নিজ নিজ কাজে। কেনা- কাটা করতে মানুষ ও আসছে দু’একজন করে, কখনও বা দল বেঁধে। বিশাল উঁচু আয়নাটার সামনে দিয়ে যেতে যেতে কেউ কেউ নিজের চুল, জামা-কাপড়ের স্টাইল দেখে নেয়। দ্রুত ব্যস্ত ছুটে চলতে হয় বলে কেউ আর খেয়াল করেনা বেশি। আয়নায় কী ফুটে উঠছে, কার ছবি তাতে সেদিকে মনোযোগ এতক্ষণ যাবৎ কারো পড়েনি। এখন এক ভবঘুয়ে যুবক এসে দাড়াল আয়নার সামনে। ছেলেটা মেয়েদের পটাতে এবং তাদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতেই পছন্দ কওে বেশি। তার জীবনের একটাই স্বপ্নঃ একজন ধনীলোকের একমাত্র মেয়েকে যেভাবে হোক বিয়ে করা। সে তার বন্ধুদের আড্ডায় মাঝে মাঝে বলেও ফেলে, মেয়ে যাই হোক বড়লোক শ্বশুর চাই আমার! সেই যে শ্বশুর বাড়ি গিয়ে উঠব আর নামব না ! শ্বশুরের পা টিপে দেব, শরীর মালিশ করে দেব। শাশুড়িকে ’মা’ বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলব! বন্ধুরা যখন তাকে বলে, তোর মান সম্মান ইজ্জত বলে কিছু নেই? সে সোজা জবাব দেয়, ইজ্জত দিয়ে হবেটা কি, অ্যাঁ ? শ্বশুর যদি সকালের নাস্তায় ডাক দেয়, ওরে শোরের বাচ্চা জামাই! নাস্তা করে যা, তাহলে সেই নাস্তা খাব না না-খেয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াব? বাপের নেই সে আমার দুর্ভাগ্য কিন্তু শ্বশুরের যদি না থাকে তবে সে হবে আমার বোকামী !



সে তার সুন্দর চেহারা নিয়ে গর্ব ভরে এতক্ষণ নিজের জামা-প্যান্ট ঠিক মতো ফিটিং হয়েছে কিনা দেখছিল। নিজের সুন্দর চেহারার এপর তার আস্থা এত প্রবল যে সে তার মুখের দিকে তাকালোই না। এখান থেকে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতে অনিচ্ছাকৃতভাবে হঠাৎ আয়নায় নিজের মুখের ওপর ছোখ গেল তার। একজন কদাকার মুখের মানুষকে সে সেখানে দেখতে পেল। প্রথমত সে চমকে গেল। পরে ভাবল, হয়ত অন্য কেউ! কিন্তু না, সে এবার দাড়িয়ে গেল। অনেক ভালোভাবে নিজেকে পরখ করল। আয়নায় কুষ্ঠরোগীর মতো বিশ্রী একজন মানুষ। জামা কাপড়ের রঙ যেন রঙচটা ! তাকে আয়নায় দেখতে একজন হীন জঘন্য আর শ্রীহীন মানুষ। যেন বছর দশ সে কবরের মধ্যে শুয়ে ছিল! বুকের মধ্যে তার ঢাস ঢাস শব্দ শুরু হয়ে গেলো। হাতের ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে সে বেলা সাড়ে বারোটা। ম্যানিলাকে সে কথা দিয়েছিল যে আজ তাকে নিয়ে পার্কে বেড়াবে আর চাইনিজে খাবে! কোন কাজ না করায় টাকা পয়সা সে জোগাড় করত তার বান্ধুবীদের পার্টস থেকে, অথবা কৌশলে তাদের গহনা বা মোবাইল সরিয়ে নিয়ে।



এখন করবটা কি? এই অবস্থায় কি করতে পারি? সে খুব ঘাবড়ে গেল। তার চেহারার এ দৃশ্য তাকে ভীষণ ভাবিয়ে তুলল। আবার এখানে বেশিক্ষণ দাড়াতেও সে সাহস পেলনা পাছে ম্যানিলার আত্মীয় স্বজনদের কেউ তার এই চেহারা দেখে ফেলে! নিউমার্কেটে ম্যানিলার বাবার তিন তিনটে দোকান। সে তড়িঘড়ি আয়নার সামনে থেকে সরে দ্রুত রাস্তায় নামল। কোন দিকে না তাকিয়ে হন হন হাটা শুরু করল।

একটা কিশোর ছেলে এতক্ষণ ব্যাপারটা দেখছিল। সে খুব অবাক হয় এমন সুন্দর চেহারা যে মানুষের আয়নায় তাকে অমন বিশ্রী দেখে। এমনকি লোকটা যখন হন হন হাটতে শুরু করে তখনও সে তার দিকে তাকিয়ে ছিলো। কিশোরটা নিউমার্কেটের এখানে সেখানে শুয়ে রাত পার করে। দিন যায় তার এ-দোকান সে-দোকানে মানুষের ফরমাশ খেটে। সে চা পানি বিস্কুট এসব এনে দেয় তাদের। সারাদিন সে এসবই খায়। অন্যদের মতো দুপুর বা রাতে আরাম করে ভাত খাওয়াটা তার হঠাৎ হঠাৎ ঘটে। সুন্দর চেহারা বা পোশাকের মানুষদের সাথে তাই তার খুব বেশি যোগাযোগ হয় না। এখন একটা দোকানে চা দিয়ে ফেরার পথে সে চলে যাওয়া লোকটাকে দেখছিল। পুরো বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করে সে ধাধায় পড়ে গেল। দেখতে সুন্দর কিন্তু আয়নায় লাগতাচে ভুতের লাহান- বিষয়ডা কি? তার মনে হলো, আয়নাডায় কোন সমস্যা নাই তো? সে আয়নার সামনে এসে দাড়িয়ে পড়ল।



আয়নার চেহারার সাথে তার বাস্তব চেহারার কোন অমিল তার চোখে পড়লনা। সে একজন সাধারন চেহারার, ছিমছাম মানুষ। আয়নায়ও তাকে তেমন দেখাচ্ছে। সে এতে বিভ্রান্ত হলো। নাকি আমার দেখতে ভুল হইচে? নিজের মনে ভাবল সে, নাহ! স্পষ্ট দ্যাখলাম। অবশ্য লোকটার লগে কতা বলতে পারলে বুজা যাইত বিষয়ডা কি। মনা? মনা? ওই হালার পুত! চা লইআই। আয়নার মদ্যে হান্দাইচোস ক্যাঁ? পাশের দোকান থেকে কে একজন ডাকল। আইতাছি বছ, দৌড় দিতে দিতে মনা বলল। এতক্ষণে লোকটা আরও একটা কথা ছুড়ে দিলো বাতাসে, মনেঅয় বিয়া বইতে যাইতাচোস?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.