![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুপুর গড়িয়ে যত বিকেল হয়, বিকেল পেরিয়ে যত রাত হয় নিউমার্কেটের দোকানগুলো ততো জমে ওঠে। সারাদিন অফিস বা কাজের পর অনেকে কেনাকেটা করতে আসে। অনেকে তাদের বন্ধু বান্ধবের সাথে দেখা করে, আড্ডা দেয়। অনেকে আবার প্রেমিক প্রেমিকার সাথে দুরন্ত সময় কাটায়। প্রথমত মোবাইলে পরিচয় তারপর বহুদিন ধরে বোমাইলে প্রেম। সেই সূত্রে আজ বিকেলে একটা মেয়ে নীরবে তার কান্না মুছতে মুছতে এই আয়নাটার সামনে এসে দাড়ায়। ছেলেটা তাকে বলেছিল যে বিয়ের আগে তারা একবার অন্তত দেখা করুক। দেখা করতে এসে ছেলেটার যেন জনমান্তর হলো। সে বিস্নয় প্রকাশ করল নিজের কাছে, এত সুন্দর কইবা কতা কয়, এত শুদ্ধ কইরা কয় আর অহন দেকতাচি একটা কাজের বেঠির লাহান! নিজেকে সে সাস্ত¡না দেয়, তাও ভালো! দেকা করবার চাইচি। তার ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুও এসেছে। তাকে আক্ষেপ করে সে বলছে, হালায় দেখতেও যেমুন বডিটাও তেমুন। ফিগার বইলা কিছু নাই! এরে বিয়া কইয়া কি হইব ? সে মেয়েটাকে এক ঝুড়ি খারাপ কথা বলল। নিজেরে একবারও আয়নার সামনে দেখছ? এই চেহারায় প্রেম করনের সাধ জাগে ক্যামনে?
যার সাথে গেল নয় মাস সে কথা বলেছে, যাকে সে তার বন্ধু বলে মেনে এসেছে তার এসব কথায় মেয়েটা ভীষণ কষ্ট পেল। সে নীবরে চোখের জল মুছছে আয়নাটার পাশে এসে । আয়নায় নিজের চেহারা দেখবার কোন ইচ্ছা তার নেই! সে যে অপূর্ব সুন্দরী কোন নারী নয় একথা তার জানা আছে, কিন্তু নিজের সরলতা আর সততার সাথে সে কোনদিন আপোষ করেনি। যাইহোক, এখন যেন হঠাৎই মুখের ভংগী বদলে গেল তার। মনের ভিতর জেগে ওঠা ব্যথার মেঘ সরে গিয়ে তৃপ্তির একটা চাঁদ জেগে উঠল। বেশ কিছুক্ষণ এভাবে তাকিয়ে রইল সে। হঠাৎ মনা এসে এখানে হাজির। সে আয়নাটার যা-ইচ্ছা- তাই আচরণের রহস্য জানতে আজ যখন সময় পাচ্ছে তখনই এসে হাজির হচ্ছে এখনে। সে পিছন থেকে আয়নায় আকষণীয় এক নারীর প্রতিমূর্তি ফুটে উঠতে দেখে মেয়েটার পিছনে দাড়িয়ে বলে উঠল, আরে! আপারে তো দারুন লাগতাচে ! সেইরকম! সরল সৎ মেয়েটা একটু লজ্জার মধ্যে পড়ে গেল এতে। সে কোন রকমে ঘুরে হাটতে শুরু করল। মনা আজ সারাদিন যে রহস্য মাথায় নিয়ে ঘুরছিল তার কিছুটা বুঝে ওঠার চেষ্টা করল। মেয়েটা দ্রুত চলে গেলেও সে তার চেহারা দেখে নিতে পেরেছে। নিজের মনে সে একটা ব্যাখ্যা দাড় করাল। তার মানে যে দেখতে ভালো তারে আয়নায় খারাপ দেখাইতাচে আর যারে দেখতে খারাপ তারে সুন্দর লাগতাচে! তাইলে আমারে একই রকম লাগতাচে ক্যান?
আয়নার সামনে তাকে আবারও দাড়িয়ে থাকতে দেখে আরেকটা দোকান থেকে আরেকজন চিৎকার করে উঠল। ওই শুয়ার! কি করতাচোস? মাইয়া মানুষ মাতায় ঢুকছে নাকি, খালি আয়নার সামনে গিয়া খাড়ায় থাকতাচোস? কথাটাকে মনা সতর্কবার্তা হিসাবে নিলো। সে ঠিক করল যে এখন থেকে আয়নার বিষয়টা সে সাবধানে খেয়াল করবে।
রাত প্রায় ন’টা। নিউমার্কেটের দোকানগুলো একে একে সব বন্ধ হচ্ছে। হঠাৎ করে মনা দূর থেকে খেয়াল করল যে এক বুড়ি আয়নার দিকে পিছন করে দাড়িয়ে আছে কিন্তু আয়নায় ফুটে উঠেছে এক তরুনীর প্রতিচ্ছবি। সে আবারও ধাধায় পড়ে গেল। দুপুরের সতর্কবার্তাটা সে ভুলে গেছে এখন। একপা দু’পা করে এদিকে এগিয়ে আসতে আসতে দেখল যে বুড়িটা একজনের হাত ধরে হাটতে হাটতে রাস্তার দিকে যাচ্ছে। দ্রুত পা চালিয়ে এসে সে দেখতে পেল যে বুড়ির সাদা চুলের পরিবর্তে কালোচুল দেখা যাচ্ছে আয়নায়। সে আসতে আসতে বুড়ি একটা গাড়িতে উঠে পড়ল। মনার আফসোস হলো, ধুত! কিছু বুজা যাইতেছেনা।
মনাকে এবার হাতে নাতে ধরে একটা শিক্ষা দেয়ার ইচ্ছা হলো এক দোকানদারের। সে গেঞ্চি গায়ে লুঙ্গিটা একটু উচু করে ধরে মনার পাছায় একটা লাথি কষে বলল, বাঞ্চোৎ! কি করতাচোস আজ সারাদিন ! আয়নার মধ্যে কি পাইচোস তুই? এবার আয়নার দিকে তাকিয়ে সে অবাক বনে গেল। তার ভুড়িটা একহাত উচু হয়ে গেছে। মাথায় যেন একটা টাক! সে কিছু বুঝতে পারলনা। আয়নায় মনার প্রতিচ্ছবিটা আসল মনার মতো হওয়ায় সে বেশ ঘাবড়ে গেল। কে একজন তাকে বলেছিল যে মরার আগে আগে মানুষের চেহারা বদলে যায়! সে ভীষণ ভয় পেয়ে গেল।
ঘাবড়ে যাওয়া দোকানদার বাড়িতে ফিরেও বিশ্রাম নিতে পারছে না। খাওয়াতেও তার অরুচি। কি করবে ভাবতে ভাবতে তার রাতটা পার হলো। এখন সকালে সে যাচ্ছে এক হুজুরের বাড়ি। মনে আশা, হুজুর যদি দোয়া দুরুদ কিছু পইড়া দেন! ঝাড় ফুকের দিকে তার মন না টানলেও আজকে সে যাচ্ছে - জীবন মরন বলে কথা!
হুজুরের কাছে এসেও তার ভালোলাগছেনা। বার বার মনে পড়ছে আয়নায় দেখা নিজের চেহারাটা। তার সাথে আরও কয়েকজন মানুষ বসে আছে হুজুরের সাথে দেখা করতে। তার সময় এল আর সে পড়িমরি করে হুজুরের ঘরে ঢুকে পড়ল।
এখানে অনাবিল শান্তি। হুজুরের চেহারা বা চোখে বেদনার কোন ছাপ নেই। ঘরটাও দামী আসবাবে পূর্ণ! এই বেটা, কি হইচে তোর? হুজুর জিজ্ঞেস করল। হুজুর হাতটা একটু দ্যাহেন দেহি - আয়ু শ্যাষ হইয়া গ্যাল কিনা! খালি উল্টা পাল্টা দেহি! দেখি হা কর তো। জিব বার কর! এবার তার হাত ধরে হুজুর চোখ বন্ধ করে বলল, তোরে পানি শোধন করছে। এই জন্য উল্টাপাল্টা লাগতাচে! এই খানে তাবিজ আছে রূপার, কিনা লইয়া যা- সব ঠিক হয়ে যাবে।
বাজারে যে জিনিস বিশ টাকায় পাওয়া যায় সেই জিনিস সে সাতশ চল্লিশ টাকা দিয়ে কিনলো। তবু স্বস্তি তবু আনন্দ! হুজুর! তাইলে দোয়া রাইখেন - চোখ মুখে তার বিশ্বাস আর তৃপ্তির ছোঁয়া!
আজ সকালে আর সবার থেকে আগে এসেছে মনা। গত এক সপ্তাহ ধরে তার মনে চিন্তা, আয়নাটায় শুধু মানুষরে উল্টোপাল্টা লাগছে নাকি সব কিছুই তাতে উল্টোপাল্টা? আজ ভোরে সে তার থাকার জায়গা থেকে একটা তেলাপোকা আর একটা টিকটিকি ধরে এনেছে। এখন সে-দুটোকে সে আয়নার সামনে ছেড়ে দিলো। আয়নায় তেলাপোকাকে তেলাপোকা আর টিকটিকিকে টিকটিকি দেখাল- এমনকি তাদের গায়ের রঙ পর্যন্ত আগের মতো। নাহ! এইডা তাইলে শুধু মানুষরে উল্টাপাল্টা দেখাইতাচে। আয়নার রহস্য সে এখনও পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারল না। মনে তার চিন্তা, সারাদিন আয়নাটার সামনে থাকবার পারলে দারুন হয়! দোকানের মালিকদের কথা ভেবে ভয়ও হয় তার, চড় থাপ্পড় মারবো। ‘তা মারুক!’ সে সাহস সঞ্চয় করে। আয়নাটার অদ্ভুত আচরনের ব্যাখ্যা জানার জন্য চড়-থাপ্পড় খেতে আপত্তি নেই তার। সে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলো। যাই হোক, এইডা আমার জানা দরকার! জানার আনন্দ যাকে পেয়ে বসে বাধা বিপত্তি নির্যাতন বা জুলুম তার কাছে হার মানে।
হুজুরের কাছ থেকে যে লোকটা তাবিজ কিনেছিল আজ দোকানে এসে প্রথমে সে মনার খোজ করছে। মনা এখন অন্য কারও কাজে ব্যস্ত। আগে মনাকে সে যাই বলে থাকুক না কেন আজ সে ’ছোট ভাই’ বলে মনের সাথে কথা শুরু করে। এটা ওটা বলার পর সে আয়না সম্পর্কে জানতে চায়। মনা বেশি কথা না বলে তার সুবিধা আদায় করে নিতে বলে, বছ। আপনি আমারে একটু সময় দ্যান। আয়নার বৃত্তান্ত সব জানামু! দোকানদার খুশী হয়ে মনার পিঠ চাপড়ে দেয়। খুশীর চোটে সে বলে, আজকা দুপুরে তোরে বিরানী খাওয়ামু।
ব্যবসায়ীরা হর হামেশা ব্যাংক থেকে লোন নেয়। কখনও কাগজপত্রে ফাকি থাকে, কখনও আবার জাল কাগজপত্রও তৈরি হয়। দুপুর বেলা মনা বিরানী খেয়ে আয়নার থেকে দূরে দাড়িয়ে আয়নাটা খেয়াল করছে এমন সময় দু’জন কোটটাই পরা লোক এখানে এসে হাজির। তারা হোটেল শেরাটনে খেতে যাচ্ছে। ব্যাংকের কর্মকর্তা আর ব্যবসায়ী দুজনকেই আয়নায় লাগছে বিদঘুটে। এর মধ্যে ব্যবসায়ীকে অপেক্ষাকৃত ভালো মনে হচ্ছে। ‘আপনি স্যার বিশ লাখ পাইবেন! কোটিতে এক লাখ। সরকারি টাকা লোন দিবেন, মধ্যে পড়ে আপনার লাভ।’ ‘ওই আরকি?’ ব্যাংকের কর্মকর্তা যখন কথা বলল মনার মনে হলো একটা সাপ যেন হিস হিস করে উঠল। লোকটা আয়নার দিকে তাকিয়ে হা হয়ে গেল। ডযধঃ ঘড়হংবহংব - কি উদ্ভট আয়না! সে বিরক্ত হলো। এই মিয়া! আপনি আমারে কয় নিয়াসছেন? সে জোরে, আয়নায় একটা লাথি কষলো। লাথিটায় পা তার মুচড়ে গেল। ধুৎ! সে ‘ইস’ ‘উহ’ করে মাটিতে বসে পড়ল। ব্যবসায়ী লোকটা এমন ঘটনায় বিব্রত অথচ আয়নাটার ব্যাপারে কিছু সে জানেনা। আয়নায় তার নিজের চেহারা আদুরে শেয়ালের মতো দেখা গেলে সে ভেবেছিল তার ভুল হচ্ছে। এখন লোন আটকে যেতে পারে এ আশঙ্কায় সে ব্যাংক কর্মকর্তাকে স্যার! কি হলো স্যার? বলে টেনে তুলল। আশেপাশে তার কর্মচারী বা সেক্রেটারি কেউ নেই। কি করবে ভাবতে ভাবতে পাশের দোকানদারকে উদ্দেশ্য করে সে বলল, পথের মাঝখানে এই বেজন্মা আয়নাডা কে রাখছে? সে কোন চিন্তা ভাবনা ছাড়া চিল্লাতে শুরু করল, মাকের্ট কমিটির লোকজন কই? আয়নাডা এইখানে আসলো ক্যামনে? সব খালি ফাঁকি বাজি। কাজ কাম না করে লুটে পুটে খাও। যাত্তোসব! এই জন্যে তো দেশটার কিছু হয়না। সব ধান্দাবাজ! সব ধাপ্পাবাজ লোক!
পা-টা মনে হয় ভেঙে গেল! ব্যাংক কর্মকর্তা ব্যথায় কাতরাতে লাগল। ধনী ব্যবসায়ী এতে দারুন বিপত্তিতে পড়ে গেল। আশপাশের লোকের সহযোগিতায় তারা গাড়িতে উঠল। আজ আর তাদের হোটেল শেরাটনে গিয়ে রঙীন পানীয় খাওয়া হলোনা। এখন তারা হাসপাতালে ছুটছে ঔষুধ আর ইঞ্চেকশন নিতে।
দুপুর বিকেল পেরল। সন্ধ্যা হয়েছে ঘন্টা দুই হবে। মনা ভাবছে যে সে তার ডেরায় ফিরে থাবে। এমন সময় লম্বা এক তরুন, বেটে খাটো একজন বয়স্ক লোক আর এক মধ্যবয়সী নারীর আগমন এখানে। যুবকটা এসেছে তার হবু বৌর জন্য বিয়ের শাড়ি কিনতে। মনে তার চালাকি, বছ আমার নরম সরম ভালো মানুষ আছে। তার টাকা দিয়েই যদি শাড়িটা....। বয়স্ক লোকটা সাধারনত এসব কেনা কাটা করতে আসেনা। সে এসব বোঝেও না। তাই তার সুদর্শন স্ত্রীকে নিয়ে এসেছে সে। মধ্যবয়সী মহিলা আয়নার সামনে নেহায়েত শাড়ি ঠিক আছে কিনা দেখতে থামল। তরুনটি তার বছকে পটাতে ব্যস্ত। স্যার, আপনি আমার বাবার মতো। আপনার পছন্দই আমার পছন্দ। আপনার হাতের ছোয়া যদি শাড়িতে লাগে বউ আমার চিরসুখী হবে। তাদের চোখ আয়নায় যাওয়ার আগে মনা একজন সুন্দর মধ্যম উচ্চতার মানুষ আর দাঁড়কাকের মতো একজন ঢ্যাঙা মানুষকে দেখতে পেল। দৃশ্যটা আরেকজন দোকানদারের চোখেও পড়ল। নিজের অজান্তে লোকটা বলে উঠল, এই- কাউয়ার পাশে আপারে ভালো লাগতাচে না। চোখ দুইটা ও কুত কুত করতাচে। বয়স্ক লোকটার মনে হলো এসব তাকে নিয়ে বলা হচ্ছে। মাথায় তার টাক, চেহারাটা সুন্দর নয় আবার উচ্চতাটাও সুবিধায় নয়। এমনিতে সে এখানে আসতে চায়নি তার ওপর সারাদিন অফিস করে ক্লান্ত। তার মনে পড়ল বিয়ের পর প্রথম প্রথম সে তার স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে বেরলে অনেকে বলতে, এ যে কাউয়ার পাশে রানী! সবকিছু মিলে তার খুব খারাপ লাগল। সে কোন রকম বলল, সজীব! সরি। আজ আর ভালো লাগছেনা! সে দ্রুত তার গাড়ির দিকে হাঁটতে শুরু করল।
নিজের শাড়ি ঠিক করতে ব্যস্ত থাকায় তার স্ত্রী এসব কথাবার্তা বা চিন্তা খেয়াল করার সুযোগ পায়নি। হঠাৎ তার স্বামীকে গাড়ির দিকে ছুটতে দেখায় সে ’কি হলো?’ ‘কোথায় যাচ্ছ?’ বলতে বলতে তার পিছু নিলো। তরুন অফিসারটি এই প্রথম আয়নায় তাকাল। চেহারাটা তার কুঙসিত চোখ, জোড়া কুত কুতে। সে বুঝতে পারলনা বিষয়টা। ভাবল তার বছ হয়ত পিছেনে দাঁড়িয়ে। পিছনে তাকিয়ে সে দেখল বছের গাড়ি চলতে শুরু করেছে। শাড়িটা তাহলে নিজের টাকায় কিনতে হবে!, আফসোস করতে করতে সে আয়নায় নিজের কদাকার মুখের মানে খোঁজার চেষ্টা করল। ও দিকে বয়স্ক নিরীহ বছ গড়িতে বসে বসে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ছে। আফসোস হচ্ছে তার, মানুষের চোখ জ্বল জ্বল করে আর আমার চোখ করে কুত্ কুত্ !
শুধু দেইখা কিছু বুজতে পারতাছিনা, মনা ভাবল। নিজে সে বয়সে ছোট হওয়ায় ঢ্যাঙা লোকটার কাছে বয়স্ক লোকটার চলে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চায়তে পারছেনা। সে যখন দ্বিধা দ্বন্দ্বে আছে এমন সময় দোকান বন্ধ করতে থাকা লোকটা প্রশ্ন করল, স্যার চইলা গ্যালেন যে! সুন্দর করে কথা বলতে না পারা মানুষদের অবজ্ঞার চোখে দেখে সজীব। অনিচ্ছা নিয়ে সে জবাব দিলো, শরীর খারাপ লাগছে মনে হয়। মানুষের লগে দিন রাত কারবার। দেইখাই বুইজা ফেলছি আপনার বছ মনে হয় আপনারে পছন্দ করবার পারে নাই। কমদামী কাপড় চোপড় পরা অশিক্ষিত দেখতে দাড়ি গোফ ওয়ালা লোকটার কথায় সে আপমানিত হলো। কি বলছেন ? উনি আমার হবু বৌর জন্য নিজ হাতে শাড়ি কিনতে এসেছিলেন! তা দাওটা মারবার পারলেন না! দোকানদার সজীবকে ব্যঙ্গ করার সুযোগটা নষ্ট হতে দিলোনা। ’কি কস মনা? কাল দেখা হইব’ সে বাড়ির পথ ধরল।
©somewhere in net ltd.