নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু সিদ

আবু সিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

যাদুর আয়না (উপন্যাস) - ৬ষ্ঠ র্পব

২৩ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ২:৫৭

নিজের বাস্তব চেহারার সাথে আয়নায় দেখা চেহারা ভিন্ন হওয়ায় আবদার আলী ঘাবড়ে গিয়েছিল। পড়িমরি করে সে হুজুর কেবলার কাছ থেকে রূপার তাবিজ নিয়ে এসেছে। গেল কিছু দিন সে নিশ্চিন্তে ছিল। গতরাতে মনাকে আয়নার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করায় মনা তাকে বলেছে, ওস্তাদ! মনে বদ মতলব থাকলে আয়নায় দেখতে খারাপ লাগতাচে। কি কইতাচোস হারামজাদা! সে মনার পাছায় একটা লাথি দেয়। মনে মনে হিসাব ঘাটলে সে দেখতে পায় যে দুশো টাকার মাল হাজার টাকায়ও সে বিক্রি করেছে। ’তয় তাবিজও তো একটা লইয়াইচি’সে সান্ত¡না খুজতে চেষ্টা করে। অপকর্মের দীর্ঘ তালিকা মনে করে সে শিউরে ওঠে। হৃদকম্পন তার বেড়ে যায়। আজ সকাল সকাল তাই সে এসে গেছে একান্ত নিজে নিজের চেহারা অবয়ব ভালোভাবে দেখতে।



‘নাহ!’ আগের মতোই খারাপ লাগতেচে দেখতে! হুজুরের তাবিজ তাকে আবার ধাধায় ফেলে দিলো। সে অবশ্য হুজুরকে আয়নার ঘটনা বলেনি। না, সে কাউকে তার অপকর্মের ফিরিস্তি দিতে পারবেনা। তাইলে হজ কইরা আসি। কালো পাথরে চুমা দিবো আর পাথর আমার সব পাপ চুষে নেবে! ক্যামনে চুষে নেবে পাপ? পাথর কি চুষতে পারে? আর পাপ-ই বা থাকে কোথায় যে তা চুষে নেবে? সে বিভ্রান্ত হচ্ছে। তাইলে মানুষ যে কয়? আব্দার আলী হজ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল।



আলতাফ হোসেন ব্যাঙ্ক থেকে কয়েকশ কোটি টাকা লোন নিতে পারলনা। ব্যাংক কর্মকর্তা এখন ভাঙা পা- নিয়ে ছুটিতে। এই পরিণতির জন্য আয়নাটাকেই দায়ী মনে হচ্ছে তার। কোথাকার কোন বেজন্মা আয়না নিউমার্কেটের মধ্যে, চিন্তা করা যায়? আজ সকাল থেকে আয়নাটার একটা ব্যবস্থা করার জন্য সে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সে তার ম্যানেজারকে নিয়ে হাজির এখন আয়নাটার সামনে। ম্যানেজার হলো তার নানা বাড়ির এক কাজের মহিলার একমাত্র সন্তান। মহিলাটার স্বামী বউবাচ্চা ফেলে আবার বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করায় তাকে আলতাফের নানার বাড়ি কাজ করতে হয়।



আজকের ম্যানেজারের ছোটবেলায় লেখাপড়ার প্রতি একটা প্রবল ঝোঁক ছিল। মনিবের বাড়ির গরু-ছাগলের দেখাশোনা করত সে। সকালে ভোরে উঠে গরু ছাগল নিয়ে মাঠে বেরিয়ে পড়ত। তাদের মাঠে দিয়ে সে পাশের স্কুলে গিয়ে বসত। ক্লাসের বেঞ্চে বসে সে জানালা দিয়ে দেখে নিতো গরু-ছাগল সব ঠিকমতো আছে তো! এরকম করে সে স্কুল পেরিয়ে কলেজে উঠেছিল। তারপর অবশ্য পড়াশোনাটা তার জন্য সহজ হয়ে যায়- সে টিউশনি করতে শুরু করে।



ছোটবেলা তার প্রায় না খেয়ে কাটতো। একবার ক্ষুধার তাড়নায় সে গরুর জন্য রেখে দেয়া ভাতের মাড় খেয়ে স্কুলে গিয়েছিল। ছোটবেলার এসব বেদনা ও কষ্ট তাকে অনেক দয়ালু করে তুলেছে। দয়া ছাড়াও বিনয় তার জীবন যাপনের একটা পদ্ধতি। আলতাফ তার ’মনিবের নাতি মনিব’ না হলেও সে একই ভাবে তাকে সম্মান দেখাত। আজ আলতাফ এখন ’চাকরের ছেলে চাকর’কে সাথে নিয়ে আয়নায় সামনে দাড়িয়ে অবাক! তাকে লাগছে জমিদারের মতো- আলতাফের নানাকে একসময় এমনটা দেখাত। আর আলতাফকে দেখতে লাগছে যেন এক উজবুক ভবঘুরে। আয়নায় এমন যাদু দেখে রমিজ একটু অবাক হলো। বিষয়টা তার জানা ছিলনা। আলতাফ বিরক্তির সাথে বলল, মাদারচোদ আয়নার কান্ড দেখছিস? জমিদাররে দেখাইতাচে চাকর আর চাকররে কইরা তুলছে জমির্দা! সে আয়নায় জোরে একটা লাথি মারল। আয়নাটা যথেষ্ট শক্ত। আলতাফ‘ইস’! করে পায়ে ব্যথা পেল। এই বাঞ্চোঙ আয়নাডারে এই খান থাইকা সরানোর ব্যবস্থা কর।



শান্ত মাথার রমিজ একটু ভেবে নিয়ে বলল, স্যার!কিছু মনে নিয়েন না। কাল আমি মন্ত্রীরে মার্কেটে দেখলাম। উনার মেয়ের বিয়ে - আয়নাটা উনি কেনেন নাই তো! উনার বা এরকম কারও জিনিস হলে তো আমরা বিপদে পড়ব। ঠিক কইতাচোস? আলতাফ বলল। আজও পত্রিকায় এ নিয়ে লেখা বের হইচে। তা একটু সময় নিয়া ভাইবা দেখেন। রমিজের পরামর্শ আলতাফের মনে ধরল।



দু’একদিন চিন্তা করে আলতাফ একটা দারুন সিদ্ধান্ত নিলো। সে ভাবল যে আয়নাটা যদি মন্ত্রীমহোদয় কিনে থাকেন আর আমি সেটা সুরক্ষার ব্যবস্থা করি তাহলে লোনটা পেতে সুবিধা হতে পারে। আর যদি তা না হয়, এ নিশ্চয় কোন ধনী ব্যবসায়ী বা সরকারী কর্মকর্তার - আয়নাটাতো আর আকাশ থেকে পড়েনি! তা ধনী কোন ব্যবসায়ির হলে তার সাথে সুসম্পর্ক আর ব্যবসায় লাভ করার সুযোগ। আর যদি সরকারী কর্মকর্তার, ইনকাম ট্যাক্স বা কাস্টমস এর লোকের হয় তাহলে তো সুযোগ আর সুযোগ! নামমাত্র ট্যাক্স দেব! কাস্টমসে দেব ফাকি! মনে মনে সে খুশী হয়ে উঠল। এসব না হয়ে সরকারের অন্য কোন বিভাগের লোক হলেও সুবিধা! এ যদি কোন পুলিশ কর্মকর্তার হয় তাও সুবিধা। এ যে দেখা যাচ্ছে না চাইতে সুযোগ! সে সুবিশাল আয়নাটার চারদিকে চমৎকার স্টিলের চেন দিয়ে ঘিরে দিলো। এখন কেউ আর কাছে গিয়ে আয়না দেখতে পারবেনা। যারা কৌতূহলী হয়ে আয়নায় হাত দিয়ে পরীক্ষা করত তারাও আর হাত দিতে পারবেনা। আয়নাটার সামনে আলতাফ ছোট্ট একটা স্টিলের পাতে লিখিয়ে রাখল, ‘ এটি বিশিষ্ট জনের আয়না। দয়া করে কাছে আসবেন না বা হাত দেয়ার চেষ্টা করবেন না।’





আগে মানুষজন কেনাকাটার সময় বা আসা যাওয়ার পথে আয়নাটার দিকে তাকাত। কেউ তেমন মনোযোগ দিতোনা। কেউ কেউ আয়নাটার অদ্ভুত চরিত্র খেয়াল করলেও সেটাকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। একমাত্র কিশোর মনা এদিকে তার সব মনোযোগ দিয়েছে। জগত সংসারের লাভ লোকসানের হিসাব সে করেনা। নিজের কিছু নেই বলে তার লোভ নেই। থাকার মধ্যে তার আছে শুধু কৌতূহল। জানবার বাসনা, বোঝবার ব্যাকুলতা। এখন আয়নাটার গায়ে যখন ’এটি বিশিষ্ট জনের আয়না’ কথাটা ঝুলিয়ে দেয়া হলো আয়নাটা তখন বেশি বেশি মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে শুরু করল।



বহুদিন পর আকরাম আর জুবায়ের দু’বন্ধুর দেখা। আজ ওরা ঠিক করে এসেছে যে একসাথে সারা বিকেল আড্ডা দেবে।

রাতের খাবার একসাথে খেয়ে বাসায় ফিরবে। দীর্ঘ বিশ বছর পর তারা দু’বন্ধু একসাথে হবার সময় সুযোগ করতে পেরেছে। আকরাম অনেক বছর পর বিদেশ থেকে ফিরল আর জুবায়ের বাংলাদেশে ডাক্তারি করে। ওদের বন্ধুত্ব সেই ক্লাস থ্রি থেকে। আকরাম যখন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষে সড়ক ও জনপথ বিভাগে যোগ দিলো জুবায়ের তখন প্রাকটিস করা শুরু করেছে। বছর কয়েকের মধ্যে আকরাম অনেক ধন সম্পত্তির মালিক হলো আর বিদেশে ইমিগ্রান্ট হয়ে পাড়ি জমাল। জুবায়ের সেই যে রোগী দেখা শুরু করল আর থামল না। আজ বিশ বছর পর তার পসার অনেক বেড়েছে। এখন তার রোগী দেখার গতি ঘন্টায় বিশ জন। ঢাকায় তার কয়েকটা বাড়ি। পরিবারের প্রত্যেকের একটা করে গাড়ি। নামও হয়েছে বেশ। এরকম একজন খ্যাতনামা ও গতিশীল ডাক্তারের জন্য সারা বিকেল নষ্ট করাটা একধরনের অর্থের অপচয়। আকরামের কথায় সে সারা বিকেল কাটাবার কথা দিলেও এখন মনে তার আফসোস। আসতে যাইতেও দুই ঘন্টা সময় লাগে! দুই ঘন্টায় অন্তত চল্লিশটা রোগী দেখা যাইত। এক এক রোগীর জন্য আটশ টাকা। তাইলে কত টাকা লোকসান হইল? চল্লিশ গুন আটশ!





লোকসানের হিসাব করতে করতে জুবায়ের আর শেয়ার বাজারে লাভের চিন্তা নিয়ে আকরাম বিশিষ্টজনের আয়নার সামনে এসে গেল। আয়নাটা বিশেষ যতœ সহকারে রাখা হয়েছে দেখে তারা একটু মনোযোগ নিয়ে সামনে এগিয়ে এল। আয়নার দিকে তাকিয়ে তাদের তো চক্ষু চড়ক গাছ। তারা একজন আরেক জনকে বলল, এই! কি দেখতেছি আয়নায়? তোরে তো চোর চোর লাগতেচে। অপরজন বলল, তোরে লাগতেচে খুনী খুনী। কি বলতেচিস হারামজাদা,আমি তো সার্জন না, কনসালট্যান্ট। শুধু রোগী দেখি। আমি খুনী হলাম ক্যামনে? তোর চেহারাটা আয়নায় দেখ। একদম চোরা লাগতেচে। তা তুই তো কয়েক বছরে বহুত টাকা বানাইয়া ভাইগা গেলি। টাকাগুলান কই পাইচিলি? আমি বহুত ভাবছি এটা নিয়ে।



আকরাম এমন কথা শোনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলানা। সে মনে মনে ভাবল এত বছর পর দেশে ফিররাম। আত্মীয় স্বজনের সাথে দেখা সাক্ষাত না কইরা বন্ধুর সাথে দেখা করতে আসছি আর সেই বন্ধু কিনা বলে ’চোর’! মেজাজ খারাপ হয়ে গেল তার। তুই তো ডাকাতেরও অধম! আকরাম বলল, ঘন্টায় দেখিস বিশটা রোগী। প্রেসক্রিপশন লিখিস কখন আর রোগীর কথা শুনিছ কখন? দেশটারে তো তোরা গোল্লায় দিলি! আজ কত টাকা লস হলো সেই চিন্তায় জুবায়ের কষ্টে আছে। এখন বন্ধুর মুখে ’ডাকাত’ অপবাদ শুনে সে আর সহ্য করতে পারলনা। কষ্ট করে রোগীর নাড়ি টিপে টাকা নিই। তোর মতো গরীব মানুষের টাকা মেরে দিয়ে বিদেশ যাইনি- বেয়াদব লোকজন সব। সে হন হন ছুটতে শুরু করল।



দেলোয়ার উকিল সাধারনত মার্কেটে আসতে পছন্দ করেনা, বিশেষত তার মুটিয়ে যাওয়া বৌর সাথে। রূপসী সুন্দরী ভালো ফিগার-আলা কোন মেয়ে হলে কথা ছিলনা, ও শালী হয়ে উঠেছে ধুমসী! নিজের বৌর কথা ভেবে বিরক্ত সে। বিরক্ত যতই হোক বৌর সাথে আজ তাকে নিউ মার্কেটে আসতে হয়েছে বাচ্চার জন্মদিনের উপহার কিনতে। কেনাকাটা করতে করতে সে আবদার আলীর দোকানে ঢুকে পড়ে। সেখানে তখন মনা আরেক জনের সাথে আয়না নিয়ে কথা বলছিল। পাঁচশ টাকার জিনিস তিনহাজার টাকায় কেনার পর লোকটা আবদারকে জিজ্ঞেস করে, ভাই! কি একটা আয়না নাকি এসেছে নিউমার্কেটে তা সে আয়নাটা কোথায় ? বেশি লাভ করতে পারায় আবদারের মন ছিলো ফুরফুরে। সে মনাকে বলে, স্যাররে আয়ানাটা দেখায়া দিয়াই তো। একটা আয়না নিয়ে এত কথা শোনায় দেলোয়ার আবদারের কাছে জানতে চাইল, ভাই আয়নার ব্যাপারটা কি? আবদার বলল, আয়নাটা মানুষের মনের কথা বলতে পারে। বুঝলাম না, দেলোয়ার বলল। আবদার তাকে বোঝানোর জন্য বলল, মানে আপনার মনে বদ মতলব থাকলে আয়নায় আপনার চেহারা খারাপ আইবো।



দেলোয়ার তার বৌর ওপর সব সময় বিরক্ত। তার মনে ক্ষোভ, শালীকে একটা শিক্ষা দেয়া দরকার! কি জোর জবরদস্তি করেই না আমারে নিউমার্কেটে নিয়ে আসলো। মনে বৌর চেহারাটা আয়নায় দেখানোর চিন্তা।



মনের কথাটা কাউকে বুঝতে না দিয়ে দেলোয়ার তার বউকে নিয়ে আয়নার সামনে হাজির। আয়নায় প্রথমে চোখ গেল তার বৌর চেহারার দিকে। বাস্তব চেহারার থেকে এ চেহারা বেশ মলিন দেখে মনে মনে সে খুশী । এবার দেখ, মনের অবস্থা কি তোমার! কথাটা শেষ না করতে নিজের চেহারার ওপর দৃষ্টি পড়ল তার! হা! হা! হেসে উঠল তার বউ। তোমারে তো লাগতেচে ফকিরের মতো। আশেপাশে আর যারা আয়নার দিকে উকি ঝুকি দিচ্ছে তাদের সবার সামনে নিজেকে অপমানিত লাগলো দেলোয়ারের। দাত কড়মড় করে সে ধমক দিলো বউকে, ফাজলামি করার আর জায়গা পাওনা, না ? এইখানে নিয়াসছো অপমান করতে? মহিলা স্বামীর এরকম আচরণে অবাক। আয়নার ব্যাপারে তার কোন আগ্রহ ছিলোনা। তুমিই তো এখানে - কথাটা শেষ না করে সে থেকে গেল। বাইরের লোকের সামনে সে আর কথা বাড়ালনা। নিজের স্বামীকে হাড়ে হাড়ে চেনে সে।



কয়েক সপ্তাহর মধ্যে নিউমার্কেটে নিয়মিত ক্রেতা আর দোকানদারদের মধ্যে অদ্ভুত এ আয়নাটায় খবর ছড়িয়ে পড়ল। খবরটা আরও বড় হয়ে উঠল যখন অমিয় রহমান নামের জনৈক সাংবাদিক আয়নাটার অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য নিয়ে পত্রিকায় একটা কলাম লিখল।



এক বিকেলে অমিয় এসেছিল নিউমার্কেটে তার বন্ধুদের সাথে আড্ডা জমাতে। তখনও কেউ আসেনি বলে সে অকারন ঘোরাঘুরি করে চারদিক দেখছিলো। হঠাৎ কাকতালীয়ভাবে সে এসে পড়ে রহস্যময় এই আয়নার সামনে। প্রথমে সে বুঝতে পারেনি যে আয়নাটা আর সব আয়নার থেকে আলাদা। এটা বড় কিন্তু পৃথিবীতে এর থেকে অনেক বড় বড় আয়না তৈরি হয়েছে এবং মানুষ তা ব্যবহার করেছে। খুব ভালোভাতে আয়নায় তার চেহারা দেখার চেষ্টা করলে সে এক ভিন্ন চেহারা দেখতে পায়। চেহারাটা দেখে তার মনে হয় বেশির ভাগ ভালো চিন্তা করলেও অসৎ চিন্তার খপ্পর থেকে সে পুরোপুরি মুক্ত নয়। প্রথম বার সে ভেবেছিল এটা বুঝি তার বিবেকের তাড়না। পরে আবার খেয়াল করলে তার মনে হয়, আয়নাটায় কোন সমস্যা নেই তো ? সে সামনে পিছনে ডানে বায়ে ঘুরে আয়নাটাকে চর্তুদিক থেকে পর্যবেক্ষণ করে। না, সব তো ঠিক আছে।



যাইহোক, কোন কিছু না বুঝে ছেড়ে দেয়ার পাত্র সে নয়। সে বহুক্ষণ আয়নার আশেপাশে ঘাপটি মেরে থাকলো। কখনো চা খাওয়ার ছলে কখনো কোন দোকানের জিনিসপত্র কেনার উছিলায়, সে খুটিনাটি সব বোঝার চেষ্টা করল। লম্বা খাটো, ধনী-দরিদ্র, সুন্দর-অসুন্দর, সাধারণ অনন্যসাধারণ, নারী-পুরুষ, তরুন-বৃদ্ধ-শিশু সব ধরনের সব বয়সের অজস্র মানুষের প্রতিচ্ছবি সে আয়নাটায় ফুটে উঠতে দেখল। এভাবে চার-পাঁচ ঘন্টা দেখেও পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পারলনা অমিয়। পর পর আরও দু’তিনদিন পর্যবেক্ষণ করে সে সিদ্ধান্তে এলো। এ আয়নায় মানুষের শরীরের নয়, মানুষের মনের চেহারা ফুটে উঠছে। সে এটাকে নাম দিলো মনের আয়না। এর ওপর সে পত্রিকায় একটা কলামও লিখলো। কলামটা সে শুরু করল এভাবে, নিজের সততার ওপর যদি শতভাগ আস্থা থাকে, নিজের নৈতিকতাকে যদি সব সময় আগলে রেখে থাকেন, তাহলে নিজেকে পরীক্ষা করে নিন আপনিও একবার!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৬

হৃদয়ের স্পন্দন বলেছেন: বাহ ++
চালিয়ে যান

২| ২৩ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:২৮

শুঁটকি মাছ বলেছেন: আগের গুলো পড়তে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.