নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু সিদ

আবু সিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

যাদুর আয়না (উপন্যাস) - ৯ম র্পব

২৬ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৫৬

আজ রাত বারটার পর হাসমত আর তার দলবল হাজির নিউমার্কেটে। কিছু লোক তার এদিক ওদিক ছড়িয়ে পড়ল নেতাকে তাদের নিরাপত্তা দিতে। বাকি পাঁচ ছয় জন মানুষ নিয়ে উপস্থিত সে যাদুর আয়নার সামনে। আয়নাটার মুখোমুখি দাড়িয়ে নিজের চুল সে ঠিক করল। এমনভাবে সে আয়নার দিকে তাকিয়ে আছে যেন তাকে দেখাচ্ছে রাজপুত্রের মতো। তার পাশে দঁাঁড়ানো একজন বলে উঠল, ভাই, আপনারে তো নেমকহারামের মতো লাগতাচে। এই হালারপুত, হাসমত পশ্চাদ্দেশে তার লাথি কষল, তুই কেমনে বুঝলি নেমকহারামের মতো লাগতাচে? বছ, আয়নায় আপনারে দেইখাই মনের মধ্যে ’নেমকহারাম’ কথাটা চইলা আইল। এই বদ! কার লগে নেমকহারামি করছি? ভাই, রাগ কইরেন না। আপনার জ্ঞাতি ভাই বইলা আপনার জন্যে মহব্বতটা আমার একটু বেশিই আছে। তাও কই, জনগণের লগে নিমকহারামি করছেন!



পিছনে থেকে ভেসে এল চিৎকার, হাসমত ভাই! হাসমত ভাই! হাসমত পিছনে ঘুরে দেখল যে এই লোকের কাছ থেকে তার লোকজন আজ দুপুরে কয়েক লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছে।



ওদিকে হাসমতের সাঙ্গপাঙ্গরা ধরে ফেলেছে লোকটাকে। এদের একজন আজ দুপুরে এসেছিল চাঁদাটা নিতে। লোকটা তাকে চিনতে পারল। বলল সে, আরে ভাই! কেমন আছেন? এই মিয়া তুমি আমারে চিনো? চাদা দেয়া লোকটা বলল, আজ দুপুরে না আপনার লগে ...। থাম মিয়া। আমারে তুমি দেখ নাই। কেডা না কেডা আসছিলো আর তুমি আমারে পাইছো এখন।



সাঙ্গপাঙ্গদের একজন ধমক দিয়ে উঠল এবার, এই মিয়া ভাগেন! হাসমত ভায়ের নিরাপত্তার প্রশ্ন এখন। আপনার লগে ভাই পরে যোগাযোগ করবো।



এদিকে হাসমত বলছে তার জ্ঞাতি ভাইকে, শাজাহান! ধর একজন সুন্দর দেইখা মানুষ খুইজা পাইলি, আমার সমান লম্বা চওড়া। এই আয়নার মতো লম্বা একটা আয়নার ফ্রেম বানাইলি। আয়নাডার ভিতরে কাচ থাকবনা। ঠিক এই জায়গায় নিয়াইসা ফ্রেমটার একপাশে সেই লোক আর একপাশে আমি। আমারে তাইলে রাজপুত্রের লাহান লাগবো নেমকহারাম কইয়া আর কারো চিল্লানি লাগবনা। ভাই, খরচ তো বেশি হইবো। আরে রাখ তোর খরচ! আরেকজন বলল, সিটি করর্পোরেশনে কত কাজ। ভাই মেয়র হইলে সব টাকা উইঠা আইব। আর ভাই যদি না জিতে চাদা আদায় কইরা নিমু। হাসমত লোকটার মুখে একটা আদরের চড় ছিলো। আরে ওই হাওয়ার নাতি, আমি না জিইত্যা কি ওই মপিজ্জ্যা জিতবো? ওর টেংরি খুইলা নিমু না!



আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে পত্র-পত্রিকায় লেখালিখি শুরু হয়েছে। টিভি চ্যানেল গুলোতে শুরু হয়েছে কথাবার্তা। কোন কোন চ্যানেলের কর্তারা ভাবছে মেয়র পদপ্রার্থীদের নিয়ে কোন লাইভ শো করা যায় কিনা ? সেখানে মানুষ যদি সরাসরি প্রশ্ন করতে পারে তাহলে ব্যাপারটা আরও চমৎকার হয়।



সব শুনে মেয়র পদপ্রার্থী তিনজনই বেকে বসলেন। এক কথা তাদের, কি না কি প্রশ্ন করবে সবার সামনে একটা বেইজ্জতির ব্যাপার। অনুষ্ঠানের নির্মাতারা ভাবলেন,তাহলে ফোন-ইন হলে কেমন হয়? আপনারা স্টুডিওতে থাকবেন, দর্শক ফোনে আপনাদের প্রশ্ন করবে। মেয়রপ্রার্থীদের মনে যেমন বেকায়দায় পড়ে যাওয়ার ভয় আছে তেমনি আছে আশা। দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর ঠিক মতো দিতে পারলে এর একটা সুফল নিশ্চর ভোটা ভুটিতে পাওয়া যাবে। তারা রাজি সবাই।



মনে তবু ভয়, যদি বেকায়দায় পড়ে যাই। তারা অনুষ্ঠানের ফোন অপারেটারকে হাত করলেন। বেকায়দা প্রশ্ন যদি এসেই যায়, নাছোড়বান্দা দর্শক যদি গোয়র্তুমি করেই ফেলে ক্যাচ করে কেটে দিতে হবে ফোনের লাইন। অনুষ্ঠানে বলতে হবে, যান্ত্রিক গোলযোগের জন্য যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আমরা দুঃখিত।



হাসমতের ওপর একটা দাও মারার চিন্তায় আছে মফিজ। সে ভাবছে, যদি অপারেটরকে আরেক দফা ঘুষ দিয়ে দেয়া যায়! ও শুধু আমাকে করা বেকায়দা প্রশ্নের লাইন কাটবে - হাসমতেরটা কাটবেনা। বেকায়দায় পড়ুক হাসমত। মাথায় চুল টাক হয়ে যাক।



কয়েক দফা ঘুষ লেনদেনের পর অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব আজ সন্ধ্যায়। স্টুডিওতে এখন মেয়র পদপ্রাথীরা বসে।



প্রথম প্রশ্নঃ আমি আমাদের এলাকার কাউন্সিলর মফিজ ভাইকে প্রশ্নটা করছি। আমাদের মহল্লার চৌরাস্তার পাশের জায়গাটা দখল করে রখেছে একটা গাড়ি সারায়ের গ্যারেজ। এতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। গতবার আপনি বলেছিলেন যে কাউন্সিলর হলে আপনি গ্যারেজটা সরানোর ব্যবস্থা করবেন। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, কাউন্সিলর হয়ে কেন আপনি কাজটা করলেন না? নাকি ভাবছেন একই কথা বলে এবার মেয়র নির্বাচনে ভোট চাইবেন?



মফিজ তো তো করছে। তার এক চ্যালা গিয়ে ধমক দিলো অপারেটরকে, কাট! লাইন কাট! ওই গ্যারেজ মফিজ ভায়ের শালার! অপারেটর কট করে লাইন কেটে দিলো। লাইনটি মনে হয় কাজ করছেনা, উপস্থাপিকা বললেন। হ্যালো! আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন ? ওপার থেকে কোন উত্তর নেই। মফিজের মনে আনন্দের ঢেঊ।



উপস্থাপিকাঃ এবার একটা লাইন পাচ্ছি আমরা। প্রিয় দর্শক, অনুগ্রহ করে আপনার নামটা প্রথমে বলুন। পরে আপনার প্রশ্নটি কি এবং তা কার কাছে সেটি উল্লেখ করুন।

দর্শকঃ আমি মতলেব হোসেন। আমার প্রশ্ন হাসমত ভায়ের কাছে। প্রশ্নটি হচ্ছে আমরা মধ্যবিত্তরা কষ্ট করে ট্যাক্স দিই কিন্তু সেই টাকায় আমাদের রাস্তা ঘাট ঠিক হয় না। আমাদের ট্যাক্সের টাকা কোথায় যায় মেয়র হলে কি সে হিসাব আমাদেরকে দেয়া হবে?



হাসমতঃ আপনাদের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে আমরা আপনাদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু পরিমাণে তা খুবই কম।



মতলেবঃ গত মাসে উইকিলিকস একটা অনুসন্ধানী রিপোর্টে বলেছে যে বাংলাদেশের কমপক্ষে পাঁচশ লোকের একাউন্ট আছে সুইচ ব্যাংকে। আপনারও নাম আছে তার মধ্যে। রাজনীতি ছাড়া আপনি কোন কাজ করেননা, তাহলে এত টাকা আপনি কোথায় পেলেন?



হাসমতঃ একটার বেশি প্রশ্ন আপনি করতে পারবেন না। উপস্থাপিকা এরকম নিয়মের কথা না বললেও অপারেটর লাইন কাট করে দিলো। মফিজ বিরক্ত এতে। হারামির পোলা কাটল ক্যান লাইনটা? ধরা খাইয়া যাইত এখনই! টাকা নিয়া কাম করল না, বেঈমান হালাই একটা।

উপস্থাপিকাঃ এবার লাইনে যিনি আছেন আপনার প্রশ্ন বলুন প্লিজ।



দর্শকঃ আমি বাণী ইসলাম। পেশায় একজন ইকনোমিস্ট। আমার প্রশ্ন আসলে জাতির বিবেকের কাছে। মেয়র পদপ্রাথীদের দু’জন দুটো প্রশ্নের উত্তর অলরেডি দিয়েছেন। এই উত্তরটা যদি তৃতীয় জন দেন-



উপস্থাপিকাঃ প্রশ্ন বলুন প্লিজ।



বাণীঃ গত কয়েক বছর ধরে আমাদের অর্থনীতিতে এক ধরনের বেলেল্লাপনা চলছে। লুটপাট আর টাকা হাতানোর একটা প্রক্রিয়া যেন দেশে শুরু হয়ে গেছে। এসব হয়েছে খারাপ পলিসি আর মনিটরিং এর অভাবে।



তৃতীয় পদপ্রার্থীঃ আমি কেবল ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ওপর প্রশ্নের উত্তর দেব।



বাণীঃ মাননীয় মেয়রপ্রার্থী, হাজার হাজার দর্শক অনুষ্ঠানটা দেখছে। আপনারা এভাবে প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে পারেন না। আপনার যে মেয়র হবার জন্য যথেষ্ট জ্ঞান আছে এর উত্তরের মাধ্যমে তা বোঝা যাবে।



উপস্থাপিকাঃ আপনার প্রশ্ন অনেক দীর্ঘ হয়ে গেছে। আমরা দুঃখিত, এ প্রশ্ন আমরা নিতে পারছিনা।



আবারও কাটা গেল লাইন।



বেহায়া লোকজন। ঠিক মতো প্রশ্ন করতেও শেখে নাই, বলে উঠল হাসমত। হালার নাতি ফাপরে আছে, মনে মনে ভাবছে মফিজ। শালা, সুইস ব্যাংকে যে ওর একাউন্ট আছে এইডা জানা ছিলনা। ক্যাবলা ক্যাবলা ভাব নিয়া টাকা ঠিকই টাইনা নিছে। এবার নিতে হইব আমার।



অনুষ্ঠানে অনেক ভালো ভালো প্রশ্ন আসছে। সব কটার উত্তর এদিক সেদিক দিয়ে যাচ্ছেনা। সবাই পাশ কাটানো উত্তর দিয়ে গা বাচাতে চাইছে। দর্শকেরা হতাশ। মনভরা আফসোস তাদের, সত্যবাদি মানুষ জন কি আর নির্বাচনে অংশ নেবেনা? সব মারো ধরো খাও!



মানুষের প্রতিক্রিয়া আরো ভালোভাবে প্রকাশ পাচ্ছে আজকের সকালে। গতকালের অনুষ্ঠান এবং মেয়র পদপ্রার্থীদের অতীত দিনের কাজ নিয়ে ছোট বড় সব সংবাদপত্রই কিছু না কিছু ছেপেছে।



জনগণ যেন সব সচেতন হয়ে উঠেছে। অধিকার ও দাবীর ব্যাপারে তারা যেন আজ সব একাট্টা। বড় দুটো সংবাদপত্র নগরবাসীদের ওপর জরিপ করে প্রতিবেদন তৈরি করেছে। সেখানে স্পষ্ট কথা, দল টল বুঝিনা; যে ভালো কাজ করবে তাকে ভোট দেব। জনগণের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেললে লাখি দিয়ে খেদাব। এক রসিক লোক মন্তব্য করেছে, যাদুর আয়নায় চেহারা দেখে তবে দেব ভোট। কার মনের শয়তান কত বড় তা যেন নগরবাসী এবার দেখেই ছাড়বে!



পত্রিকাগুলোতেও প্রবল দাবী উঠেছে, সবগুলোরে দাড় করাও আয়নার সামনে। দেখি ওদের মনে কি আছে। এমনকি কিভাবে কবে যাদুর আয়নার সামনে মেয়রপ্রার্থীরা দাড়াবে তারও একটা পরিকল্পনা এক পত্রিকা ছেপেছে। তারা বলছে, সরকারী ছুটির দিনে সব শ্রেণী পেশার প্রতিনিধিদের সামনে তিন প্রার্থীকেই দাড়াতে হবে আয়নার সামনে। আমরা মানুষ দেখে ভোট দেব। আমরা কোন রঙচঙ মাখানো মিথ্যা প্রতিশ্রুতি চাই না। তাদের প্রতিশ্রুতি সব ভিডিও করে রাখা হবে। মানুষের সাথে অতীতে জোচ্চুরি করার কোন সুযোগ না পাওয়ায় তৃতীয় মেয়রপ্রার্থীর মনে কোন আশংকা নেই। ভোটে জেতার কোন স্বপ্নও তার নেই। সে শুধু পরিচিতি পেতে চায়!





তার মা বাবা কোথায় এবং কেমন আছে তা জানে না মনা। সেই ছোট বেলায় জীবনের স্রোতে ভেসে নিউমার্কেটে এসেছিল সে। এখন সে তের-চৌদ্দ বছরের কিশোর। অনেক কিছু সে ভালো বোঝে না, কিন্তু নানান ধরনের মানুষ দেখতে দেখতে তাদের সাথে মিশতে মিশতে মানুষ সম্পর্কে যথেষ্ট ধারনা তার তৈরি হয়ে গেছে। মানুষের মুখ চোখ আর চলা ফেরার ধরন দেখে সে অনেকটা বুঝতে পারে। সে আচ করতে পারে, মানুষটা কি করতে যাচ্ছে।



এখন সন্ধ্যার আধার নেমে আসছে নিউমার্কেটের গায়। চারদিকে রাস্তার লাইট একে একে সব উঠছে জ্বলে। জবরদস্ত আয়নাটা যেখানে রাখা আছে তার কাছাকাছি একটা দোনকানের সামনে দাড়িয়ে খবরের কাগজ দেখছে সে। হঠাৎ বাইরের রাস্তা থেকে কে একজন ডাকল, এই মনা! শুইনা যা। প্রতিদিন এমন কত লোকই মনাকে ডাকে। সে ডাক শুনে বাইরের রাস্তায় এল। বাইরের রাস্তায় বের হবার সাথেই দু’জন তাগড়া জোয়ান তাকে গপ করে ধরে ফেলল। দু’জন দুহাত দিয়ে মনাকে ভালো রকম ধরল। এদের একজন তার আরেক হাত দিয়ে মনার মুখ চেপে ধরল। মনা দেখতে পেল রাস্তার ওপাশে একটা কালো গাড়ির দরজা খুলে আরও দু’জন দাড়ানো। মনা সাথে সাথে সতর্ক। সে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে হাত পা ছুড়ল। চিৎকার করল। যে তার মুখ চেপে ধরেছিল তার হাত কামড়ে ধরল। যে লোকটার দোকানের সামনে দাড়িয়ে মনা খবরের কাগজ দেখছিল সে বাইয়ে উঁকি দিয়ে অবাক। এক দৌড়ে সে রাস্তায় নেমে এল।



নিউমার্কেটের দোকানদারদের কাছে মনা খুব পরিচিত মুখ। ফুটপাথের ওপরের দু’একজন দোকানীও ঘটনাটা দেখল। একযোগে চিৎকার করে উঠল সবাই। ধাওয়া দিলো তারা। ছুটল কয়েকজন। গাড়ির সাথে দাড়ানো লোকগুলো গাড়িতে উঠে দিলো চম্পট। যে দু’জন মনাকে ধরেছিল তারা তাকে ফেলে এক দৌড় দিলো। সামনের পাচিল টপকে তারা নিমেষে অদৃশ্য হয়ে গেল।



যেখানে গাড়িটা দাড়িয়ে ছিল সেখানে নেই কোন লাইট। গাড়ির নম্বর বা কিডনাপারদের চেহারা তাই ঠিকমতো দেখা গেলনা। মনা কিছুক্ষণ খক খক কেশে সোজা হয়ে দাড়াল। আশপাশের দোকানদারদের কাছে ঘটনাটা খুব অবাক লাগল। তাইলে মনারে কিডনাপ করতে চাইছিল! ক্যান? মনে প্রশ্ন তাদের।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:১২

আহসানের ব্লগ বলেছেন: ক্যান ?

২| ২৭ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ২:৫৯

আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: সবগুলা পর্ব পড়ে নিই আগে..

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.