নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু সিদ

আবু সিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি প্রিয় পুস্তক

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০৫

‘যে কোন বই-ই একটা বই’ বলেছিলেন কবি বায়রন (১৭৮৮-১৮২৪) প্রায় দু’শো বছর আগে। আমরা পড়তে চাই নিজেদের রুচিমাফিক আনন্দদায়ক, উৎসাহদাত্রী, আবেগপ্রবণ, জ্ঞানময় ইত্যাদি নানা ধরনের বই। হয়ত একটা বই, যা আমার ভালো লাগছে না অন্যে তাতে পাচ্ছেন অতুলনীয় কিছু। আবার এমন বই রয়েছে অনেক যার চল আছে বাজারে এমনকি অত্যন্ত জনপ্রিয় সেগুলো, এবং তা আমার পড়া হয়নি। ব্যাপক পাঠক প্রিয়তা সত্ত্বেও একটি বই পাঠক বিশেষের কাছে হতে পারে উপেক্ষিত। তবে পাঠককুলের ব্যাপক উপেক্ষা সত্ত্বেও যখন কোন বই মহাকালের রাজ-প্রাসাদে তার আসন করে নেয় তখন জানি অনেকের উপেক্ষার পরও সেটি উপেক্ষণীয় নয়। কারন কেবল মহৎ সৃষ্টিরই রয়েছে সকল প্রতিকূলতার ক্ষুদ্ধ সাগর পাড়ি দিয়ে এগিয়ে যাবার দক্ষতা। কালের ধোপে যা টেকে না তা গাছের পাতার মতো, আর টেকে যা তাদের প্রত্যেকে জলস্রোতের মতো চিরপ্রবহমান যেমন, হোমার কালিদাস ইবসেন দস্তয়ভস্কি রবীন্দ্রনাথ এবং আরও অনেকে।

এরা হলেন সেইসব সাহিত্যরচয়িতা যারা মননশীল। এবং কারা মননশীল? শিল্পের লোকে এবং জ্ঞানের সকল আলোকলোকে তারাই মননশীল যাদের যুক্তিবোধের সাথে হৃদয়দুয়ার খোলা। তারা বিশ্বপ্রকৃতিকে জানার সাথে জানতে চেয়েছেন মানব ও জীব সত্ত্বাকে। নিরেট জ্ঞানকে চেয়ে চেয়ে তারা নি®প্রাণ হয়ে যাননি। বরং সজীবতায় পূর্ণ হয়ে উঠেছে তাদের শিল্পরস ধারা। অনেক কাল আগে তারা এ পৃথিবী ছেড়ে গেলেও আজও আমাদের অনেক বন্ধুর থেকে তারা অনেক বেশি অকৃত্রিম বন্ধু। এ যেন বিপুল পানোপযোগী সুপেয় জলাধার। এখানে শুধু ইচ্ছামতো পান করা যতটা চাই ততটা। যখন ইচ্ছা যত জনের ইচ্ছা পান করতে পারেন। তা ফুরায় না। অনিঃশেষ তার ধারা জীবন যৌবন আয়ু।

একথা বলতে দ্বিধা নেই যে বাংলা সাহিত্য বিশ্বসাহিত্য বৃক্ষের একটি শাখা মাত্র। যারা জগত জুড়ে জীবনের মানে ও মহিমা খুঁজে খুঁজে হয়রান তাদের অনেকে স্মরণ নেন সাহিত্যের। অনেকে শুধু তাদের নিজ ভাষার সাহিত্যের ধারা চেনেন, অনেকে অবগাহন করেন বিশ্ব সাহিত্যের রকমারী ধারায়। সেসব ধারায় রয়েছে তাদের নিজ নিজ স্থান ও কালের মানব কৃত্য-কর্ম-গাঁথা, ভাব-অনুভব-আবেগ। মানুষের সাথে মানুষের চিরকালীন যে মিতালী তা বাস্তব হয়ে ধরা দেয় সাহিত্য পাঠকের মনে।

বিশ্বসাহিত্য পর্যবেক্ষণ করলে দেখি বিশেষ বিশেষ সময়ে বিশেষ বিশেষ ভাষায় গড়ে উঠেছে সাহিত্যের প্রাচুর্য। যেমন প্রাচীন ভারতে, খ্রীষ্টপূর্ব গ্রীসে, মধ্যযুগের পারস্যে, রেনেসাঁসপূর্ব জার্মানীতে ও ফ্রান্সে, বলশেভিক বিপ্লবপূর্ব রাশিয়াতে। আবার বিশেষ এক বা অল্প কিছু সাহিত্য ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন লক্ষ্যণীয় কখনও কখনও। যেমন উনিশ শতকের শেষে জিব্রান বা লেরকা বা ইবসেন। আবার সব থেকে বিচিত্র আর নিঃসঙ্গ এবং অভাবনীয় আগমনও ঘটেছে কারও কারও। যেমন, প্রাচীন যুগের ঈশপ।
সাহিত্য ঘটাতে চায় চেতনার মুক্তি, যেমন বলা আছে ‘শৃঙ্খলিত প্রমিথিউস’ এ । কিন্তু কখনও কখনও স্বয়ং সাহিত্য রচয়িতাদের চেতনা হয়ে পড়ে বন্দী অন্য প্রবলতম কোন সাহিত্য স্রষ্টার প্রভাবে। যেমন, হোমার গ্যোটে বা রবীন্দ্রনাথ ।

অনেক বছর আগে প্লেটো বলেছিলেন, যেমন জনগণ তেমন সরকার। প্লেটোর সেই কথাটা সত্যি শিল্প সাহিত্য আর জ্ঞানবিজ্ঞানের অন্য শাখার জন্যও। যেখানে গড়ে ওঠে পরিবেশ সেখানে কালে কালে আসেন জ্ঞানবিজ্ঞানকে প্রাচুর্যের উপঢৌকন ভরে দিতে হাজারো মানুষ। এমন ঘটেছে জার্মান ভাষায়, যেমন তা সাহিত্যে তেমনি তা গণিতে দর্শনে এবং বিজ্ঞানে।

যেখানে বাংলায় লেখা বেশির ভাগ বই অজ্ঞতার অপুষ্টিতে আচ্ছন্ন সেখানে ’আশার ছলনে ভুলি’ বইটি সাবলীল স্বাস্থ্যময়। বইটি বাংলা ভাষার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান একজন কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন কাহিনী। এর ভিতরে আছে থাকা উচিত এমন সকল তথ্য। এতে রয়েছে বোধের ব্যাপকতা যা সত্যের প্রতি নিবেদিত। বইটি একটি জীবনীগ্রন্থ কিন্তুতা গালগল্পের বাহুল্য হতে মুক্ত। অনেকে ভাবতে পারেন, জীবনীসাহিত্য যখন তখন সত্য ঘটনা বলতে হবে বৈকি! কিন্তু ইতিহাস নির্ভর উপন্যাস বা সাধারণ অর্থে উপন্যাসের জন্যও সত্য-নিষ্ঠতা সমান দরকার। ‘ওয়ার এন্ড পীস’ উপন্যাসের জন্য টলস্টয় যেমন উপাত্তের অনুসন্ধান করেছেন বা ‘পদ্মানদীর মাঝি’র জন্য মানিক বন্দোপাধ্যায় যেমন জেলে কুটিরে দিন কাটিয়েছেন সেসবই আসলে করণীয়।

আমাদের ভাষার ও সাহিত্যের এমন অনেক কৃষক এই পৃথিবী ছেড়ে গেছেন নীরবে তবে যারা আজও আছেন বেঁচে তাদের ভিতর জনাব গোলাম মুরশিদকে কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙীন শুভেচ্ছা।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:২০

মামুন রশিদ বলেছেন: আলোচনা ভালো লেগেছে ।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৭

আবু সিদ বলেছেন: ধন্যবাদ, মামুন ভাই।

২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫০

অন্ধবিন্দু বলেছেন:
আবু সিদ,

এ সময়ের সাহিত্য কোথায় ?

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:১১

আবু সিদ বলেছেন: প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ, কিন্তু প্রশ্নটা যথেষ্ট পরিষ্কার নয়। অর্থাৎ, আপনি কি বর্তমান বাংলা সাহিত্য বা বিশ্ব সাহিত্যের কথা বলছেন না বাংলায় গবেষণা নির্ভর সাহিত্যের কথা বলছেন? ধরে নিচ্ছি, ’আশার ছলনে ভুলি’ বইটির মতো অন্য গবেষণাধর্মী বইয়ের কথা বলছেন। বর্তমান বাংলা সাহিত্যে এ ধারার লেখা আমার চোখে পড়েনি। অনুমান করি, রবীন্দ্রনাথ বা আরও কোনো কোনো সাহিত্য ব্যক্তিত্ব্যের ওপর কেউ কেউ কাজ করেছেন বা করছেন তবে সেগুলোর মান নিয়ে নিশ্চিত নই যেহেতু পড়া হয়নি। কারও কাছ থেকে জানতে পারলে খুশী হব।

অন্ধবিন্দু, আপনি যদি ঠিক উত্তরটি পেয়ে না থাকেন তাহলে অনুগ্রহ করে বিস্তারিত লিখুন; আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে খুশী হব।

৩| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৩৮

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ভালো লাগলো খুব ।

শুভেচ্ছা নিবেন ।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:১৩

আবু সিদ বলেছেন: ধন্যবাদ অপূর্ণ। যে কারও ভালোলাগা প্রত্যেক লেখকের জন্য এক ধরনের অনুপ্রেরণা।

৪| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১০

স্বপ্নচারী গ্রানমা বলেছেন:
ভালো লাগলো আপনার লেখাটি ! ++

বই নিয়ে আমিও একটা পোস্ট দিয়েছিলাম !

আপনার ব্লগিং যাত্রা দীর্ঘ হোক ।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫৬

আবু সিদ বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার লেখাটা পড়তে পারলে ভালো লাগবে; লেখার শিরোনামটা জানাবেন কি?

৫| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:০২

স্বপ্নচারী গ্রানমা বলেছেন:
অফেরত একটি বইয়ের বেদনা এবং
বৈশাখী ঝড় দেখা সংক্রান্ত…!


ভালো থাকুন ।

৬| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৮

কলমের কালি শেষ বলেছেন: ভালো আলোচনা । ++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.