নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু সিদ

আবু সিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রতিজন মানুষের মহিমা

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫৯

প্রতিজন মানুষ অধিপতি অনেক গল্প কাহিনী উদাহরণ ও উপমার। অনেক সময় নিজেদেরকে আমাদের ক্ষুদ্র নগণ্য মনে হয়। আমরা মনে করি, কী-ই বা করতে পারে আমার মতো মানুষ! আমি তো রাজ রাজড়া মন্ত্রী উপমন্ত্রী বা রাষ্ট্রদূত নই! এমনকি আমি নই ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার লেখক শিল্পী নেতা বা ধনবান আর কেউ! আবার এমনও হতে পারে যে আমি আসলে ধনবান, আসলে রাষ্ট্রক্ষমতার কেউ অথবা প্রভাবশালী কোন ব্যক্তি। সেক্ষেত্রে নিজেকে মহীয়ান, সকল কাজের কাজী ভাবতে পারি। আর অন্যদের মনে হতে পারে ‘সামান্য সব মানুষ।’ কিন্তু বাস্তবতা কি তাই? একটু নিবিড় করে দেখলে বুঝতে পারব যে মহিমান্বিত প্রতিজন মানুষ তা তিনি যেখানে জন্মান আর যা কিছুই করেন না কেন। প্রতিজন মানুষ এই পৃথিবীতে জীবনকালে সৃষ্টি করেন অনেক ঘটনা, গল্প ও কাহিনী। তিনি তৈরি কনে অনেক উদাহরণ উপমা, এবং নিজেও পরিণত হন উদাহরণ বা উপমায়। যেমন, ওপাড়ার আক্কাসের মতো দিলখোলা মানুষ আর দেখা যায় না। আবার মৃত্যুর পর আমরা যেমন হয়ে যাই স্মৃতি তেমনি হই গল্প, কাহিনী উদাহরণ বা আদর্শ। যেমন, জগদীশ চন্দ্রের মতো বিজ্ঞানী হও তো দেখি। এখানে জগদীশ চন্দ্র একটি আদর্শ।

সব মানুষ গভীরভাবে বিজ্ঞান পড়বেন না বা সবার বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা-গবেষণা করার সুযোগ বা সৌভাগ্য হবে না। কিন্তু এই পৃথিবীতে আগত প্রতিজন মানুষ-ই কোন না কোন পরিবার সমাজ বা সভ্যতার অংশ হবেন। তখন তাদের সামনে কাদের উদাহরণ থাকবে? কোন আদর্শের তারা অনুসরাী হবেন? মানুষ সাধারণত অনুসরণ করে চলতি আদর্শের। যখন দেখা যায় পরিবারে বা সমাজে শঠতা, লোক ঠকানো এসব রেওয়াজ হয়ে দাড়িয়েছে তখন একজন নবজাতক ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে শঠতা ও লোকঠকানোকে খারাপ হিসাবে না দেখে। সে যদি দেখে তার মা-বাবা, অপর আত্মীয়-প্রতিবেশীরা একে অন্যকে সাহায্য করতে সদা তৎপর, তাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ দৃঢ় তখন তার ভিতর এসবের অভ্যাস গড়ে ওঠে, ব্যতিক্রমকে আমরা এ আলোচনায় আনছি না।

শিশু জন্মের পর সবচেয়ে বেশি থাকে তার পরিবার পরিবেশ ও সমাজের প্রভাবের আওতায়। সমাজে বেড়ে ওঠা ও বসবাস করতে থাকা কোন শিশু যখন তার মাতাপিতার ও অন্যদের মুখে ধনবানদের গল্প শুনে তাদের প্রতি অপরিময়ে ভক্তির পরিচয় পেয়ে কিশোর হয়ে ওঠে তখন তার অবচেনত মনে ধনলিপ্সাই জাগ্রত হয়। জ্ঞানতৃষ্ণা ও ন্যায়পরায়নতা তাকে উদ্বুদ্ধ করতে পারে না। কোন প্রভাব বিস্তারকারী পুস্তক বা ব্যক্তির প্রভাব তাকে স্পর্শ করে যৎসামান্য। আবার একটি চমৎকার গ্রামের সহজ সরল মানুষদের সন্তানেরা তাদের সামনে পেতে পারেন দারুণ সব মানুষদের উদাহরণ যার প্রভাব সুদূর রাজধানীর প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর রাজনীতিক বা বিত্তবান বা শিল্পী কিংবা লেখকের প্রভাবের থেকে অনেক অনেক বেশি। উদাহরণ উপমা ও কাহিনীতে ভরা মানব জীবন। আমরা যখন কোন অনুচিত বা গর্হিত কাজ করি তখন নিজেকে প্রবোধ দিতে মনেকরি কত ঘটনা বা উদাহরণ। অফিসে যখন ঘুষ খাই তখন এই ভেবে নিজের অপরাধ বোধ দূর হয় যে, আমার ওপরওয়ালাও তো খাচ্ছে! যখন আমাদের চারপাশে মন্দের উদাহরণ বেড়ে যায় তখন খারাপ কাজ করাটা সহজ হয়ে পড়ে। একইভাবে প্রতিদিন সব সুকৃতি বা চমৎকার সব কাজ যদি আমাদের সামনে ঘটে তাহলে কষ্টে থাকলেও ঘুষ নিতে বাধবে আমাদের। মন্দ আমাদের প্ররোচিত করলেও আমাদেরকে দিয়ে সে খারাপ কাজ করাতে পারবে না।

আমরা যত ক্ষুদ্র তুচ্ছ আর নগণ্যই হই এই পৃথিবীতে থাকাকালীন যদি অজস্র ভালো উদাহরণ সৃষ্টি করে যাই আমাদের কাজের মাধ্যমে তাহলে তার সুফল ভরে উঠবে আগামী প্রজন্ম। হয়ত কেউ আমাদের নাম জানবে না, হয়ত কোন প্রশংসা বাণী আমাদের কান জুড়াবে না কিন্তু আমরা প্রতিজন মানুষ যে মহিমান্বিত জীবন যাপন ফেলে যাব পিছনে তা কাহিনী গল্প উদাহরণ ও উপমা হয়ে অনুপ্রাণিত করবে আমাদের পরের প্রজন্মকে। তা বয়ে যাবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। মানব জীবন ক্ষণস্থায়ী কিন্তু তার কাজের প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী। এই কাজ যেমন কোন বিখ্যাত মানুষের তেমনি তা নাম না জানা সব কৃষকের মজুরের ব্যথিতের নির্যাতিতের। ব্যবধান কেবল এইটুকু যে তাদের নাম কেউ বইপুস্তুকে লিখে রাখে না, তাদের জন্মদিন বা মৃত্যুবার্ষিকী পালন করে না। কিন্তু জীবনের মহিমায় তা কারও থেকে নগণ্য নয়। ভাস্মর ও ক্রিয়াশীল তা সমাজ ও সংষ্কৃতির চিরপ্রবাহমানতার মাঝে।

মানুষ মরে মিলিয়ে যায় মাটিতে অগ্নিতে বায়ুতে বা জলে কিন্তু তার জীবনের ঘটনা ও কর্ম গল্প কাহিনী উদাহরণ ও উপমা হয়ে জীবন যাপন করে হাজারো মানুষের মনে সুদীর্ঘ সময় ধরে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:২০

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন +

যদিও আপনার সব লেখাই ভালো হয় । সবসময় আসতে পারি না বলে দুঃখিত ।

সব মানুষেরই গুরুত্ব আছে , স্থান আছে , তার নিজস্ব পরিধির ভিতরে সে অবশ্যই কোন না কোনভাবে গুরুত্ব বহন করে ।

ভালো থাকবেন খুব :)

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:০৪

আবু সিদ বলেছেন: প্রিয় অপূর্ণ, অনেক ধন্যবাদ। আপনার ও সবার ছোট বড় যে কোন মন্তব্য আমায় এনে দেয় নতুন প্রাণশক্তি, জাগায় আরো লেখার অনুপ্রেরণা। ভালো থাকবেন আপনিও।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.